দ্বিতীয় এলিজাবেথ
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে শেষ বিদায় জানাল ব্রিটেন ও সারাবিশ্ব
রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার মধ্যদিয়ে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে শেষ বিদায় জানিয়েছে ব্রিটেন ও সারাবিশ্ব। সোমবারের এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্ট, রাজা, রাজপুত্র এবং প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। প্রিয় রানিকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে শোকার্ত জনতা লন্ডনের রাস্তায় ভিড় করেছিল।
উইনস্টন চার্চিলের পর প্রথমবার রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সাক্ষী হলো ব্রিটেন। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জীবনের প্রতিটি বছরের জন্য একবার করে ৯৬ বার তোপধ্বনি দেয়া হয়। তারপরে ১৪২ জন রয়্যাল নেভির সদস্য কামানবাহী গাড়িতে করে রানির কফিন ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে নিয়ে আসা হয়। এরপর ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে গির্জার ভিতরে কফিনটি নিয়ে যাওয়ার আগে বিশ্ব নেতা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসেবা কর্মী পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার মানুষ রানিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে জড়ো হয়েছিল।
রানিকে বহনকারী কফিনটি রাজকীয় পতাকা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল এবং এর ওপর ইম্পেরিয়াল স্টেট ক্রাউন বসানো ছিল।
আরও পড়ুন: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যারা থাকছেন
কফিনটির পেছনে এলিজাবেথের বংশধররা একে একে গির্জায় প্রবেশ করেন। কফিনের ওপরে একটি ফুলের তোড়ার ওপরে একটি হাতে লেখা নোট ছিল। যাতে লেখা ছিল ‘ইন লাভিং এন্ড ডেভোটেড মেমোরি’ এবং তাতে চার্লস আর (রেক্স বা রাজা) বলে স্বাক্ষর রয়েছে।
শেষকৃত্যের শুরুতে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে-র ডিন ডেভিড হোয়েল শোকার্তদের বলেন, ‘এই সেই স্থান, যেখানে রানি এলিজাবেথের বিয়ে হয়েছিল এবং তাকে মুকুট পরানো হয়েছিল। আমরা সারা দেশ থেকে, কমনওয়েলথ থেকে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে, আমাদের ক্ষতির জন্য শোক করতে এবং দীর্ঘজীবনে তার নিঃস্বার্থ সেবার স্মরণ করার জন্য একত্রিত হয়েছি।’
যুক্তরাজ্যজুড়ে দুই মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। তারপর উপস্থিতরা জাতীয় সঙ্গীত গায়, যার শিরোনাম এখন ‘গড সেভ দ্য কিং’।
সোমবার এলিজাবেথের সম্মানে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর ৯৬ বছর বয়সে মারা যান রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ঐতিহাসিক মুহুর্তে অংশ নিতে কয়েক হাজার লোক সেন্ট্রাল লন্ডনের রাস্তায় নেমেছিল। রাজধানীর রাস্তা দিয়ে কফিন নিয়ে যাওয়া দেখতে তারা ফুটপাতে ভিড় করে দাঁড়ায়। কফিনবাহী মিছিলটি শহরের রানির সরকারি বাসভবন বাকিংহাম প্যালেস অতিক্রম করার সঙ্গে সঙ্গে সকলে মাথা নত করে এবং সম্মান জানায়।
টেলিভিশনে লাইভ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় আরও কয়েক লাখ মানুষকে দেখা যায়। লাইভে রানির কফিনবাহী মিছিল দেখতে যুক্তরাজ্য জুড়ে পার্ক ও পাবলিক স্পেসে মানুষ ভিড় জমায়। এমনকি গুগল তাদের ডুডলটি আজকের জন্য রানির সম্মানে কালো করেছে।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে সন্ধ্যায়, চার্লস যুক্তরাজ্য ও সারা বিশ্বের লোকদের ধন্যবাদ জানিয়ে একটি বার্তা দেন।
তিনি তাতে বলেন, তিনি ও তার স্ত্রী ক্যামিলা রানিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যাচ্ছেন।
ব্রিটেনজুড়ে মানুষেরা রাত ৮টায় এক মিনিটের নীরবতা পালন করে।
আরও পড়ুন: পর্দায় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতিকৃতি বিশিষ্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার এখন কি করা হবে?
২ বছর আগে
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে যোগ দেন।
এসময় ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে-তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও ছিলেন শত শত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে। এখানেই ১৯৮৭ সালে রানির বিয়ে হয়েছিল এবং ১৯৫৩ সালে রানি হিসেবে তার অভিষেক হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ‘একজন অভিভাবকের বিদায়’: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে শেষ শ্রদ্ধা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
পতাকায় মোড়া রানির কফিনের ওপর ইম্পেরিয়াল স্টেট ক্রাউন রেখে রয়্যাল নেভির নাবিকেরা একটি কামানবাহী গাড়িতে করে চার্চে নিয়ে আসে।
এর আগে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে যোগ দিতে শেখ হাসিনা তার রাষ্ট্রীয় সফরে ১৫ সেপ্টেম্বর লন্ডন পৌঁছান।
যখন রানির কফিনটি নিয়ে যাওয়া হয় তা দেখার জন্য শোকার্তরা বাকিংহাম প্যালেসের চারপাশের রাস্তায় সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
শেষ যাত্রায় কফিনটি লন্ডনের মধ্য দিয়ে যাবে এবং দ্বিতীয় আনুষ্ঠিকতার জন্য উইন্ডসর ক্যাসেলে নিয়ে যাওয়া হবে।
আরও পড়ুন: রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার নিরাপত্তায় খরচ হবে ৭ মিলিয়ন ডলার!
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যারা থাকছেন
২ বছর আগে
‘একজন অভিভাবকের বিদায়’: রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে শেষ শ্রদ্ধা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যে যোগ দিতে ১৫ সেপ্টেম্বর সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছান।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ওয়েস্টমিনস্টারের প্রাসাদে গিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
শেখ হাসিনা রাজপ্রাসাদের ওয়েস্টমিনস্টার হলে যেখানে দ্বিতীয় এলিজাবেথের মরদেহ শায়িত অবস্থায় রাখা হয়েছিল সেখানে প্রয়াত রানির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ টিকা গবেষণা ও উন্নয়নে অংশ নিতে আগ্রহী: প্রধানমন্ত্রী
এর আগে, ওয়েস্টমিনস্টারে পৌঁছালে ব্রিটিশ স্পিকারের প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রী ও তার ছোট বোনকে স্বাগত জানান।
পরে ল্যাঙ্কাস্টার হাউসে খোলা শোক বইয়ে বাংলায় শোকবার্তা লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর প্রধানমন্ত্রীকে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে ক্যামেরার সামনে তিনি রানির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
ল্যাঙ্কাস্টার হাউসে, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভিকি ফোর্ড তাকে স্বাগত জানান।
এসময় প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন যে তিনি প্রয়াত রানির সঙ্গে আট বা নয়বার দেখা করেছিলেন এবং পরবর্তীতে তাকে তার প্রথম নামেই চিনতেন।
তিনি যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে রানির বিষয়ে বলেন,‘তিনি আমার কাছে একজন মাতৃতুল্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন।…মনে হচ্ছে একজন অভিভাবক চলে গেছে।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাজা তৃতীয় চার্লস
সৈয়দা মুনা তাসনীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা দু’জনেই ১৯৬১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) সফরকালে রানিকে দেখেছিলেন।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, প্রয়াত রানি একজন ‘বৈশ্বিক অভিভাবক’ ছিলেন এবং তার মৃত্যুতে একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছে।
শোক বইয়ে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমি বাংলাদেশের জনগণ, আমার পরিবার এবং আমার ছোট বোন শেখ রেহানার পক্ষ থেকে গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ হাইকমিশনার বলেন, ‘শেখ রেহানা একজন ব্রিটিশ নাগরিক, তিনি লিখেছেন ‘তিনি আমাদের হৃদয়ের রানি এবং সর্বদাই হৃদয়ে থাকবেন’।
আরও পড়ুন: আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
২ বছর আগে