অর্থপাচার
অর্থপাচার মামলায় হাইকোর্টে জামিন পেলেন বগুড়ার তুফান
অর্থপাচার মামলায় বগুড়ার বহিষ্কৃত শ্রমিকলীগ নেতা তুফান সরকারকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বুধবার এ রায় দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের বেঞ্চ।
তবে জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
তিনি বলেন, হাইকোর্টে বিভিন্ন মামলায় তুফান দীর্ঘদিন ধরে কারাভোগ করছেন বিবেচনা করে জামিন দেয়া হয়েছে। এই বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রফিকুল ইসলাম সোহেল।
গত বছরের ২৯ অক্টোবর বগুড়া থানায় অর্থ পাচারের অভিযোগে এ মামলা করেন সিআইডির উপ-পরিদর্শক মো. সফিউল আলম। মামলায় অবৈধ মাদক ও নেশা জাতীয় দ্রব্যের ব্যবসার মাধ্যমে মোট ৩৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা স্থানান্তর ও রুপান্তর করার অভিযোগ আনা হয়।
২০১৭ সালের জুলাইয়ে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে তুফানের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। ওই ঘটনায় চুপ করিয়ে দেয়ার চেষ্টায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তার মাকে তুলে নিয়ে চার ঘণ্টা ধরে নির্যাতন ও পরে তাদের মাথার চুল কেটে দেয়া হয় বলে প্রতিবেদনে উঠে আসে।
আরও পড়ুন: দুদকের মামলায় হাইকোর্টে বগুড়ার তুফান সরকারের জামিন
বগুড়ার সেই তুফান সরকারের জামিন আপিল বিভাগেও খারিজ
পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্সে নাম আসাদের বিরুদ্ধে নেয়া পদক্ষেপ জানতে চায় হাইকোর্ট
বিশ্বজুড়ে আলোচিত পানামা পেপার্স ও প্যারাডাইস পেপার্স কেলেঙ্কারিতে নাম আসা বাংলাদেশি অর্থপাচারকারীদের ব্যাপারে গৃহীত পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডিকে) আগামী ৯ জানুয়ারির মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ সুইচ ব্যাংকসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থপাচার বন্ধে ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার দাবিতে করা এক রিট আবেদনের এবং একই বিষয়ে স্বত:প্রণোদিত হয়ে জারি করা এক রুলের ওপর শুনানিকালে এই আদেশ দেন।
একই সঙ্গে অর্থ পাচারকারীদের ব্যাপারে তথ্য চাওয়ার চার বছর পার হলেও দুদককে কেন তথ্য দেয়া হয়নি এবং এক্ষেত্রে ব্যর্থতার কারণ উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ গোপনে বিদেশে পাচারকরা অর্থ অবিলম্বে ফেরত আনতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস।
রিটে অর্থসচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল, বাণিজ্যসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ ১৪ জনকে বিবাদী করা হয়।
আরও পড়ুন: কেরোসিন-ডিজেলের মূল্য নির্ধারণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না: হাইকোর্ট
এ রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে বিবাদীদের চরম ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। পানামা পেপার্স এবং প্যারাডাইস পেপার্সে যাদের নাম আসছে তাদের বিষয়ে তদন্ত শুরু করার জন্য বিবাদীদের প্রতি কেন নির্দেশ দেয়া প্রদান করা হবে না এবং এ বিষয়ে প্রতি মাসে কেন অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
একইসঙ্গে সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে বাংলাদেশি নাগরিকদের অতীতের এবং বর্তমানে এ ধরনের অর্থপাচার ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে একটি বিশেষ কমিটি গঠনের নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে অর্থপাচারকারীদের নাম-ঠিকানা ও তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা জানতে চান আদালত। সে অনুযায়ী সিআইডির কাছে তদন্তাধীন ৮টি অর্থ পাচার মামলার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন গত ১৭ অক্টোবর দাখিল করা হয়। এরপর গত রবিবার দুদক অর্থপাচারে জড়িত ৪৩ জনের একটি তালিকা হাইকোর্টে দাখিল করেন। প্যারাডাইস পেপারর্সের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার পরিবারের সদস্য নাসরিন ফাতেমা আউয়াল, তাবিথ আউয়াল, তাফসির আউয়াল ও তাজওয়ার মো. আউয়ালসহ মোট ২৯ জনের একটি তালিকা দাখিল করা হয়।
এছাড়া পানামা পেপার্সে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে ১৪ জনের একটি তালিকা দাখিল করে দুদক। তবে পানামা পেপার্স ও প্যারাডাইস পেপার্সে আসা বাংলাদেশি পাচারকারীদের নামের তালিকা ছাড়া তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য দিতে পারেনি দুদক।
আরও পড়ুন: নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বঙ্গবন্ধুর ছবি অন্তর্ভুক্তিতে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
তালিকা দাখিলের পর শুনানিতে অংশ নিয়ে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতে বলেন, বিদেশে ব্যাংক একাউন্ট খোলা, অফশোরসহ অন্যান্য কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন বা সম্পত্তি অর্জন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য মূলত বিএফআইইউ সর্বাধিক উপযুক্ত মাধ্যম। কিন্তু অভিযুক্তদের ব্যাপারে অনুসন্ধানের জন্য বিএফআইইউ’র কাছে তথ্য চেয়ে পাওয়া যায়নি। এছাড়া আইন অনুযায়ী দুদক শুধু ঘুষ ও দুর্নীতির তদন্ত করতে পারে। যদি বিএফআইইউ দায়িত্ব না দেয় তাহলে দুদক অর্থ পাচারের তদন্ত করতে পারে না। যাদের নাম এসেছে এদের ব্যাপারে তদন্তের ক্ষেত্রে দুদকেরি আইনি সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ কারণে তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান ও তদন্ত এগোয়নি।
শুনানির একপর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, ২০১৬, ২০১৭ সালের ঘটনা, কিন্তু এখনও ব্যবস্থা নেই। আমরা তাদের ব্যাপারে আপডেট জানতে চাচ্ছি। এখনই শুরু না করলে দূরে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা অন্তত শুরু করতে না পারলে এগুলো বাদ দেয়ার কথা বলে দেন। আমাদেরতো দেশের প্রতি কিছু দায়িত্ব আছে। এসব চিন্তায় মাঝে মাঝে ঘুম হয় না।
আদালত বলেন, আমাদের দেশে নানা ধরণের সংগঠন থাকলেও দুর্নীতিবিরোধী কোনো সংগঠন আছে? ভারতে কিন্তু আছে। তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও আন্দোলন করে। আমরা কেউই চাই না, এত রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে অর্জিত এদেশে দুর্নীতি হোক, অর্থপাচার হোক। এখানে তথ্য চাওয়া হলে নানা অজুহাতে দেয়া হয়না। বলা হয় এই টার্মস আছে, কন্ডিশন আছে। কিন্তু ইন্ডিয়ার আদালতের রায় দেখেন। সব অযুহাত উড়িয়ে দিয়েছে। আদালত চাইলেই সব তথ্য দিতে বাধ্য।
এসময় রিটকারী আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, পানামা পেপার্স ও প্যারাডাইস পেপার্সে নাম আসার পরপরই ইন্ডিয়া কিন্তু বিষয়টি তদন্তে একটি বিশেষ কমিটি করে দিয়েছে। এটা করাতো সরকারের দায়িত্ব। এটাতো দেশের জন্য কলঙ্ক। হাইকোর্ট এ বিষয়ে আদেশ দেয়ার পরে সিআইডি ছাড়া অন্য বিবাদীদের কেউই আসেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক আসেনি, বিএফআইইউ আসেনি। অন্য ১০-১২জন বিবাদীও আসেনি। তাদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করার পর আদেশ দিয়েছেন,তারপর আজও তারা আসেনি। এটা আদালতের আদেশের অবমাননা।
তিনি বিবাদীদের প্রতি আদালত অবমাননার রুল জারি করার আর্জি জানালে আদালত বলেন, আগে একটা আদেশ দিই, তারপর তখন না আসলে দেখা হবে। পরে হাইকোর্ট আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: দেশের সব নদীর তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
৮টি অর্থপাচার মামলার তথ্য হাইকোর্টে দাখিল করেছে সিআইডি
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)’র ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমের অধীনে তদন্তাধীন আটটি অর্থপাচার মামলার তথ্য হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবিরের স্বাক্ষরে এই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আটটি মামলায় অর্থপাচারে অভিযুক্ত যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, এনামুল হক আরমান, খালেদ মাহমুদ ভুঁইয়া, বহিষ্কৃত কমিশনার মোমিনুল হক সাঈদ, রাজীব হোসেন রানা, জামাল ভাটারা, শরিফুল ইসলাম, আওলাদ হোসেন, শাজাহান বাবলু, নাজমুল আবেদীনসোহেলা আবেদীন, একেএম জাহিদ হোসেন, এ এন্ড বি আটারওয়্যার এন্ড নর্ম আউটফিট এন্ড একসেসরিস লি:, সিইপিজেড, চিটাগাংয়ের নাম রয়েছে।
এছাড়াও প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে নেয়া টাকার বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। এ ঘটনায় অপরিচিত হ্যাকাররা অভিযুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মোট ৮১ মিলিয়ন ইউএসডি ফিলিপাইনে এবং ২০ মিলিয়ন ইউএসডি শ্রীলংকায় পাচার করা হয়েছে। এ টাকার মধ্যে ফিলিপাইন থেকে ১৪ দশমিক ৬১ মিলিয়ন ইউএসডি এবং শ্রীলংকায় পাচার হওয়া ২০ মিলিয়ন ইউএসডি উদ্ধার হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
আরও পড়ুন: এস কে সিনহার দুর্নীতি মামলা: ২১ অক্টোবর পর্যন্ত রায় স্থগিত
প্রতিবেদনে ছয়টি দেশে অর্থ পাচারের তথ্য রয়েছে। এছাড়া আটটি মামলার মধ্যে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও এনামুল হক আরমানের বিরুদ্ধে করা মামলায় সবচেয়ে বেশি দুইশত ৩২ কোটি ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯১ টাকা সিঙ্গাপুরে পাচারের বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনটি আগামী সপ্তাহে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা হবে। রবিবার সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, এর আগে বিদেশে কারা অর্থপাচার করছে তাদের বিষয়ে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিলেন। এ বিষয়ে সিআইডির পক্ষ থেকে একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এই তালিকা পুলিশের আইজির মাধ্যমে আমাদের হাতে এসেছে। এফিডেভিটও করেছি। শুনানির দিন (২১ অক্টোবরের পর) এ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করব।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত দাবি টিআইবির
এর আগে এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে অর্থপাচারকারীদের নাম-ঠিকানা ও তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানতে চান আদালত।
গত ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ গোপনে বিদেশে পাচারকরা অর্থ অবিলম্বে ফেরত আনতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়। ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম খান ও অ্যাডভোকেট সুবীর নন্দী দাস এ রিট করেন।
আরও পড়ুন: দুর্নীতিবাজদের শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
রিটে অর্থসচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল, বাণিজ্যসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ ১৫ জনকে বিবাদী করা হয়।
সংসদ সদস্য পদ ফিরে পেতে পাপুলের রিট আপিলেও খারিজ
মানব ও অর্থপাচারের দায়ে কুয়েতের আদালতে দণ্ডিত লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের এমপি পদ বাতিল ও আসন শূন্য ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজের আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: এমপি পাপুলের সাজা: রায়ের কপি পেয়েছে সরকার
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
এর আগে গত ৭ জুন পাপুলের এমপি পদ বাতিল ও আসন শূন্য ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট সরাসরি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন :এমপি পাপুলের স্ত্রী-মেয়ের জামিন বাতিল বিষয়ে হাইকোর্টের রুল
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি মানব ও অর্থপাচারের দায়ে কুয়েতের আদালতের রায়ে দণ্ডিত পাপুলের সদস্য পদ বাতিল করা হয়। সংসদ সচিবালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
আরও পড়ুন: পাপুলের স্ত্রী-মেয়ের জামিন আবেদনে নথি জালিয়াতি তদন্তের নির্দেশ
এদিকে লক্ষ্মীপুর-২ আসন শূন্য ঘোষণা করে আগামী ২১ জুন ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এরপর পাপুলের এমপি পদ বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন তার বোন নুরুন্নাহার বেগম। রিটে লক্ষ্মীপুর-২ আসন শূন্য ঘোষণার বৈধতাও চ্যালেঞ্জ করা হয়।
গত ২৮ জানুয়ারি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন কুয়েতের আদালত। পাশাপাশি তাকে ১৯ লাখ কুয়েতি রিয়াল বা ৫৩ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। গত বছরের ৬ জুন রাতে কুয়েতের বাসা থেকে আটক করা হয় তাকে। আটকের সাড়ে ৭ মাস আর বিচার প্রক্রিয়া শুরুর সাড়ে ৩ মাসের মাথায় দণ্ডিত হন কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল।
দুর্নীতি আমাকেও মর্মাহত করে: অর্থমন্ত্রী
আগামী ৬ মাসের মধ্যে অর্থপাচার প্রতিরোধে বিদ্যমান কয়েকটি আইনের সংশোধনসহ আরও ১৫টি আইন সংসদে পাস করা হবে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দুর্নীতি দেখলে অন্যদের মতো তিনিও মর্মাহত হন।
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, সংসদে এই আইনগুলো পাস হওয়ার পর আপনারা দুর্নীতির যথেষ্ট অবনতি দেখতে পাবেন।’
আরও পড়ুন: করোনায় ২.৫ কোটি মানুষ দরিদ্র হবার দাবি নাকচ অর্থমন্ত্রীর
অর্থমন্ত্রী জানান, যখন অর্থপাচার দেখেন তখন তিনিও জনগণের মতোই একই কষ্ট অনুভব করেন।
মুস্তফা কামাল বলেন, ‘অর্থ পাচারকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। যারা চিহ্নিত ছিল তাদের কারাগারে সাজা দেয়া হয়েছে বা বিচার চলছে।’
মন্ত্রী বলেন, দুটি কারণে অর্থপাচার হয়, প্রথমত অনেকেই এটিকে বিনিয়োগের অন্যতম মাধ্যম মনে করেন, দ্বিতীয়ত লোভের কারণে অনেকেই এটি করে থাকে।
আরও পড়ুন: বাজেট: ক্রমবিকাশের পথে সুবিধা এবং চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরেলেন অর্থমন্ত্রী
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা যদি বিনিয়োগের ভালো পরিবেশ তৈরি করতে পারি তাহলে যারা বাইরে বিনিয়োগ করেন তারা তা দেশে করবেন।
এর আগে ৭ জুন সংসদে মন্ত্রী বলেন, ‘এমন একটা সময় ছিলে যখন সিমেন্টের নাম করে বালু আসত। এক পণ্যের নাম করে আরেকটা পণ্য আসত। তবে এখন আন্ডারইনভয়েসিং, ওভারইনভয়েসিং খুব কমই হয়। তবে একদম বন্ধ হয়ে গেছে বলব না। আমরা পত্রপত্রিকায় এমন খুব কমই দেখতে পাই।’
আরও পড়ুন: আর্থিক খাতে দুর্নীতির ব্যাপারে সরকারের জিরো টলারেন্স: অর্থমন্ত্রী
তিনি বলেন, 'আমি জানি কীভাবে এগুলো হয়, তবে কারা করে জানি না। অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, অকার্যকারী ব্যবস্থাপনার কারণে এগুলো হয়। এই বিষয়গুলো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হবে।' ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে দায় নিয়ে কাজ করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দিতে নতুন নতুন আইন করা হবে বলে মন্ত্রী জানান।
১৩৯৩১ বাংলাদেশির বৈধ দ্বৈত পাসপোর্ট রয়েছে
দেশে বৈধ দ্বৈত পাসপোর্টধারী ও দ্বৈত নাগরিক মোট ১৩ হাজার ৯৩১ জন। এসব দ্বৈত পাসপোর্টধারীর তালিকা অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে দাখিল করা হয়েছে।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ দেশে দ্বৈত পাসপোর্টধারী ও দ্বৈত নাগরিকদের তালিকা দাখিল করতে বলেন। সে অনুযায়ী এসবি পুলিশের পক্ষ থেকে ১৩ হাজার ৯৩১ জন দ্বৈত পাসপোর্টধারী দ্বৈত নাগরিকের তালিকা দাখিল করা হয়েছে।
‘এটা হলো যারা বৈধভাবে দ্বৈত নাগরিক ও দ্বৈত পাসপোর্টধারী তাদের তালিকা। এর বাইরেও কিন্তু অবৈধ দ্বৈত পাসপোর্টধারী ও দ্বৈতনাগরিক রয়েছে। আমরা এসবি পুলিশের দাখিল করা এই তথ্য এফিডেভিট আকারে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে দাখিল করব। এরপর এ বিষয়ে শুনানি হবে,’ বলেন তিনি।
গত বছরের ২১ ডিসেম্বর অর্থপাচার ও দুর্নীতির মাধ্যমে যারা বিদেশে বাড়ি নির্মাণ করেছেন অথবা কিনেছেন, সেই বাংলাদেশিদের মধ্যে যাদের দ্বৈত নাগরিকত্ব ও পাসপোর্ট আছে এবং যারা দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশে-বিদেশে ঘন ঘন যাতায়াত করছেন, তাদের তালিকা চায় হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত বছরের ২২ নভেম্বর একই বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এক আদেশে বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সব ধরনের তথ্য চান।
আরও পড়ুন: অর্থপাচারকারী দ্বৈত পাসপোর্টধারীদের তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট
সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে টাকা পাচারকারীদের তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট
অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ বিভিন্ন বিদেশি ব্যাংকে পাচারকারীদের তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট।
সুইস ব্যাংক থেকে টাকা ফেরত বিষয়ে রিটের আদেশ বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ গোপনে বিদেশে পাচার করা অর্থ অবিলম্বে ফেরত আনতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি বুধবার শেষ হয়েছে।
পিকে হালদারের আরও ২ সহযোগী গ্রেপ্তার
অর্থপাচারের দায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারের আরও দুই সহযোগীকে রবিবার গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অর্থপাচার তদারকিতে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের তালিকা চায় হাইকোর্ট
অর্থপাচার রোধ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তদারক-নিয়ন্ত্রণে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের আভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে গত এক যুগে কোন কোন কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন, তাদের নাম, পদবী, ঠিকানাসহ বিস্তারিত জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট।