নাহিদ ইসলাম
শোকজের জবাব: নাহিদের সম্মতিতেই কক্সবাজার গিয়েছেন হাসনাত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ কারণ দর্শানোর নোটিশের (শোকজ) জবাবে জানিয়েছেন, দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সম্মতি দেওয়ার পরেই তিনি কক্সবাজার গিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন বরাবর দেওয়া শোকজ নোটিশের জবাবে হাসনাত লেখেন, ৪ আগস্ট রাতে প্রথমে তিনি নাহিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাকে না পেয়ে দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে কক্সবাজার ভ্রমণ প্রসঙ্গে জানান এবং অনুরোধ করেন নাহিদকে জানাতে।
প্রায় ৩০ মিনিট পর নাসীরুদ্দীন জানান, নাহিদ হাসনাতকে কক্সবাজার যাওয়ার সম্মতি দিয়েছে। পরবর্তীতে তার সঙ্গে এনসিপির বাকি নেতারা যুক্ত হোন বলে জানান হাসনাত।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তির দিনে কক্সবাজার সফরে যাওয়ার কারণ জানিয়ে হাসনাত লেখেন, ‘সরকারের উচিত ছিল এমন একটি ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা, যা সেই মানুষগুলোর আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিনিধিত্ব করবে। কিন্তু আমি এবং অনেকেই ব্যথিত হই, যখন দেখি যে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের সময় সেই মানুষদের কথা সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা হয়েছে, যারা অভ্যুত্থানের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন। শহীদ পরিবার, আহত এবং নেতৃত্বদানকারীদের অনেকেই মতামত প্রদানের সুযোগ পাননি এমনকি অন্তর্ভুক্তির ন্যূনতম সম্মানটুকুও পাননি।’
‘আমার এ সফর ছিল অসম্পূর্ণ জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রতি আমার নীরব প্রতিবাদ।’ লেখেন হাসনাত।
তিনি বলেন, 'ঘোষণাপত্রের চূড়ান্ত খসড়ায় এমন কিছু উপাদান দেখি, যা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যেমন— ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে সংবিধান সংস্কারের জন্য জনগণ পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের ওপর দায়িত্ব অর্পণের অভিপ্রায় প্রকাশ করেছে। এই দাবিটি অসত্য এবং সংবিধানে মৌলিক পরিবর্তন আনার পথে একটি বড় অন্তরায়।'
পড়ুন: শোকজের জবাব দিয়েছেন এনসিপি নেতারা, সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পরে
শোকজের জবাবে হাসনাত বলেন, 'আমরা শুরু থেকেই দাবি করে আসছি গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে, যা রাষ্ট্রের কাঠামোতে মৌলিক পরিবর্তন আনবে এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ঘটাবে। উপরন্তু, ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় জানতে পারি যে আমাদের আন্দোলনের আহত এবং নেতৃত্বদানকারী অনেক ভাইবোনকে এই অনুষ্ঠান থেকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি আমার কাছে শুধু রাজনৈতিক নয়, নৈতিক ব্যর্থতা বলেই মনে হয়েছে।'
হাসনাত বলেন, 'আমি ব্যক্তিগতভাবে এই অনুষ্ঠানে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। যেখানে ঐক্যের পরিবর্তে বিভাজনকে, শহীদ ও আহতদের পরিবর্তে কিছু মুষ্টিমেয় গোষ্ঠীর কথা এবং মতামতকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, সেখানে উপস্থিত থাকার কোনো ইচ্ছা বা প্রয়োজন আমি বোধ করিনি। কাজেই, এরপরের দিন ঢাকার বাইরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। উদ্দেশ্য ছিল এই গুরুত্বপূর্ণ সময়টিতে পূর্বে গৃহীত সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো বোঝার চেষ্টা করা এবং পরবর্তী করণীয় নিয়ে চিন্তা করা।'
কক্সবাজার ভ্রমণ প্রসঙ্গে হাসনাত বলেন, কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার পর যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিমানবন্দর থেকে এনসিপি নেতাদের প্রতিটি পদক্ষেপের ছবি ও ভিডিও করে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা মিডিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিছু মিডিয়া সেখানে ক্রাইম মুভির মিউজিক জুড়ে ইচ্ছেমতো মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর অভিযোগসহ সেইসব উপস্থাপন করেছে।
ক্ষোভ ঝেড়ে হাসনাত বলেন, ‘কিছু মিডিয়া ও গোয়েন্দা সংস্থার যোগসাজশে আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপকে অপরাধপ্রবণ এবং সন্দেহজনক হিসেবে উপস্থাপন করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। এমনকি গুজব ছড়ানো হয়েছে, যে আমরা পিটার হাসের সঙ্গে গোপন বৈঠকে যাচ্ছি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করতে। অথচ তিনি তখন বাংলাদেশেই ছিলেন না।
‘রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এই প্রবণতা, যেখানে কাউকে টার্গেট করে রাষ্ট্রদ্রোহী বানিয়ে ফেলা যায়, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে চলতে পারে না। গোয়েন্দা সংস্থা ও মিডিয়ার এই সম্মিলিত ডিমোনাইজেশন টেকনিক আজকে আমাদের টার্গেট করেছে। ভবিষ্যতে অন্য যে কাউকে করতে পারে। সবচেয়ে আশঙ্কাজনক ব্যাপার হলো, গোয়েন্দা সংস্থা এবং কিছু মিডিয়া এই একই প্যাটার্নে হাসিনার আমলেও বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাদের নামে প্রোপাগান্ডা ক্যাম্পেইন পরিচালনা করত। নতুন বাংলাদেশেও গোয়েন্দা সংস্থা এবং কিছু মিডিয়ার এই পুরনো অপরাধপ্রবণতা আমাকে একইসঙ্গে অবাক এবং ক্ষুব্ধ করে।’ বলেন হাসনাত।
৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়ে কক্সবাজারে ঘুরতে যান এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা ও যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ। পরদিন দলের পক্ষ থেকে তাদের শোকজ করা হয়।ৎ
১১৯ দিন আগে
এনসিপির নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার প্রকাশ
২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবির এক বছর পূর্তিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বহুল আলোচিত ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
‘জুলাই আন্দোলনের’ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দলটি বিচার প্রতিষ্ঠা, কাঠামোগত সংস্কার এবং একটি নবতর রাজনৈতিক দর্শনের কথা তুলে ধরা হয়েছে। ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন আন্দোলনের সময়কার ছয় কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের একজন ও বর্তমানে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
এনসিপির ঘোষণায় বলা হয়েছে—নতুন সংবিধান তৈরি, গত বছরের জুলাই গণআন্দোলনের স্বীকৃতি, সেই সময় নিপীড়নের শিকারদের বিচার, বিচারব্যবস্থা ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জবাবদিহি এবং দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র গঠনের দাবি জানানো হয়েছে।
দলটির নেতারা বলেন, ‘জুলাইতে ছাত্র আন্দোলনের ডাকের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সরকার পতন হয়েছিল। এবার সেই জুলাই ঘোষণাপত্রকে সংবিধানে যুক্ত করতে হবে।’
তারা গত এক বছরে গুম, হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় বিচার নিশ্চিত না করায় জনগণের কাছে প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করেন।
দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র অবশ্যই সংবিধানে জায়গা পেতে হবে। জনগণই এখন নতুন বাংলাদেশের রক্ষক।’
তিনি বলেন, ‘বিচারব্যবস্থা যেন আর কোনো রাজনৈতিক দলের নিয়ন্ত্রণে না থাকে। সরকার যা করবে, তা জনগণের জানার অধিকার নিশ্চিত করে করতে হবে।’
দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যদি আমাদের ভয় দেখানো হয়, আমরা রাজনৈতিকভাবে প্রতিরোধ করব। প্রয়োজনে জীবন দিয়ে হলেও আমাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করব।’
এনসিপির ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা
১২৩ দিন আগে
জুলাই অভ্যুত্থানে শিবিরের নির্দেশে কাজ করার তথ্য মিথ্যা: নাহিদ ইসলাম
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা থেকে একক নেতৃত্ব দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এ সময়ে শিবিরের নেতৃত্বে কাজ করার তথ্যকেও ‘মিথ্যাচার’ বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, শিবির নেতা সাদিক কায়েম সম্প্রতি একটি টকশোতে বলেছেন, ছাত্রশক্তির গঠনপ্রক্রিয়ায় শিবির যুক্ত ছিল। শিবিরের নির্দেশে আমরা কাজ করতাম— এটা মিথ্যাচার।
‘সাদিক কায়েম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সমন্বয়ক ছিলেন না। কিন্তু ৫ আগস্ট থেকে এই পরিচয় তিনি ব্যবহার করেছেন। অভ্যুত্থানে শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে সাদিক কায়েমকে প্রেস ব্রিফিংয়ে বসার সুযোগ দেওয়া হয়।’
অভ্যুত্থান শিবিরের একক ছিল না দাবি করে তিনি বলেন, ‘সাদিক কায়েমরা অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে ঢালাও প্রচারণা চালিয়েছে যে, এই অভ্যুত্থানে ঢাবি শিবিরই নেতৃত্ব দিয়েছে, আমরা শুধু সামনে পোস্টার ছিলাম। অভ্যুত্থানে শিবিরের ভূমিকা কেউ অস্বীকার করেনি। কিন্তু এই অভ্যুত্থান শিবিরের একক ছিল না, শিবিরের নির্দেশ বা নেতৃত্বও ছিল না। আমরা সব পক্ষের সাথে যোগাযোগ করেই সিদ্ধান্ত নিতাম। আর কারা ক্ষমতার ভাগ–বাঁটোয়ারা করতে চাইছে, গোষ্ঠীস্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে— সে বিষয়ে অন্যদিন বলব।’
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘গুরুবার আড্ডা’ পাঠচক্রের সাথে জড়িত একটি অংশ এবং ঢাবি ছাত্র অধিকার থেকে পদত্যাগ করা একটি অংশ মিলে ছাত্রশক্তি গঠিত হয়। সঙ্গে জাবির একটি স্টাডি সার্কেলও যুক্ত হয়। একটি নতুন ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুবার আড্ডা পাঠচক্রে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করা হয়েছে।
‘আমরা ক্যাম্পাসে আট বছর রাজনীতি করেছি। ফলে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য সব সংগঠন ও নেতৃত্বকে আমরা চিনতাম এবং সব পক্ষের সাথেই আমাদের যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিল। সেই কারণে ঢাবি শিবিরের সাথেও যোগাযোগ ছিল। তবে যোগাযোগ, সম্পর্ক বা কখনো সহযোগিতা করা মানেই এই নয় যে তারা আমাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল।’
আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি ইসলামী ছাত্রশিবির। তবে জামায়াতে ইসলামীর এ ছাত্র সংগঠন যে গোপনে সক্রিয় ছিল, তা প্রকাশ্যে আসে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাদিক কায়েম ২১ সেপ্টেম্বর এক ফেসবুক পোস্টে জানান, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি।
সমন্বয়কের তালিকায় নাম না থাকলেও জুলাই মাসে চলা ছাত্র আন্দোলনে সামনের কাতারেই ছিলেন সাদিক কায়েম। তালিকাভুক্ত সমন্বয়কদের সঙ্গে বিভিন্ন ছবিতেও তাকে সে সময় দেখা যায়।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠানে সাদিক কায়েম বলেন, ২০১৭ সাল থেকে লম্বা সময় ধরে যখন তার যে পদ ছিল, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমরা তা জানতেন।
সাদিক কায়েম বলেন, পরিচয় জেনে কো-অর্ডিনেশন করে আমরা সবাই মিলে একসাথে কাজ করেছি। সুতরাং এখানে পরিচয় গোপন করার কিছু নেই। ওই সময়ে পরিচয় ঘোষণা দিয়ে কাজ করার মতো পরিস্থিতি ছিল না। সে কারণে শিক্ষার্থীদের সব দাবির সঙ্গে ছিলাম, কিন্তু ঘোষণা দিয়ে কাজ করার মতো অবস্থা ছিল না। কারণ, আমাদের মেরে ফেলা বৈধ ছিল।
১২৬ দিন আগে
ছাত্র উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে, পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে: নাহিদ
অন্তর্বর্তী সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা এনসিপির কেউ নয়—তারা গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি। তাদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করে, পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকালে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে নরসিংদী পৌরসভার সামনে এনসিপির দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা শেষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অ্যাডভোকেট শিরিন আক্তার শেলী।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সামান্তা শারমিন, আব্দুল্লাহ হিল লিমন, আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল প্রমুখ।অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
সারা দেশে জুলাই পদযাত্রায় হামলা ও বাধা সৃষ্টি করে এনসিপিকে থামানো যাবে না উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামী নির্বাচনে দেশের জনগণের সমর্থনে এনসিপি জয়লাভ করবে।
এর আগে পথসভায় মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আগামী ৩ আগষ্ট ঢাকায় এনসিপির সমাবেশ ঘিরে যারা নেতাকর্মীদের উপর হাত তুলবে, তাদের জবাব দেওয়া হবে।
পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারকে ভুল পদক্ষেপ, গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্তের বিষয়ে সতর্ক করলেন তারেক
নাসিরুদ্দিন আরও বলেন, এখন ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজদের ভয়ে আতঙ্কে থাকেন। এনসিপি ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা চায় না। দেশের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায়। এসময় তিনি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চব্বিশের ছাত্র জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যান্য দলগুলোর ক্ষোভ ভুলে আবারো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। পথসভায় দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
এর আগে নরসিংদী ক্লাবে জুলাই-আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এনসিপি নেতারা। এ সময় তারা প্রতিটি শহীদ পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান।
বিকালে ঢাকা-সিলেট সড়কের জেলখানা মোড় (শহীদ তাহমিদ চত্ত্বর) থেকে শুরু হয়ে পদযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নরসিংদী পৌরসভা প্রাঙ্গনে অস্থায়ী মঞ্চে গিয়ে মিলিত হয়।
১২৭ দিন আগে
পুরোনো আইনে বাংলাদেশকে আর চলতে দেবো না: নাহিদ ইসলাম
মৌলভীবাজার, ২৬ জুলাই (ইউএনবি): জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, পুরোনো সিস্টেমের পুরোনো আইনে বাংলাদেশকে আর চলতে দেবো না।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে মৌলভীবাজারের বেরিরপাড়ে জুলাই পথযাত্রা কর্মসূচির শেষে পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, অভ্যুত্থানের পরে নানা শক্তি দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে চাই।
তিনি বলেন, পুলিশ হত্যাকে সামনে তুলে ধরে এর দায় অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতাকে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা ৩ আগস্ট এক দফায় স্পষ্ট করেছি, আমাদের লড়াই শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে। আমাদের যে দমন-পীড়ন করা হয়েছে, আমরা বাধ্য হয়েছিলাম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। আমাদের লড়াই ছিল ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও ফ্যাসিস্ট বাহিনীর বিরুদ্ধে।
পড়ুন: নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়: ফখরুল
‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনেক দাবি ছিল। কিন্তু আমাদের সব দাবিকে নির্বাচনের দাবিতে রূপান্তর করে ফেলা হয়েছে। আমরা বলেছি, আমরা নির্বাচন চাই, আমরা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, ভোটাধিকারের পক্ষে লড়াই করা শক্তি,’ বলেন নাহিদ।
সংবিধান প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আমরা বলেছি, আমাদের নতুন সংবিধান প্রয়োজন—যেই সংবিধানে বাংলাদেশের মানুষের অধিকারের কথা লেখা থাকবে, সব ঐতিহাসিক লড়াইয়ের স্বীকৃতি থাকবে, সকল জাতি-ধর্ম-বর্ণের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
এর আগে শহরের শহীদ মিনার থেকে এনসিপির জুলাই পদযাত্রাটি বের হয়। শহরের কোর্ট রোড ও শাহ মোস্তফা সড়কে পথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বস্তরের মানুষ যোগদান করেন।
মৌলভীবাজার জেলার প্রধান সমন্বয়কারী ফাহাদ আলমের সভাপতিত্বে পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার, জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মারুফ আল হামিদ, জাকারিয়া ইমন প্রমুখ।
১৩১ দিন আগে
জুলাই আন্দোলনের নেতাদের পদযাত্রায় বাধা দিয়ে ফেরানো যাবে না: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমাদের পূর্ব ঘোষিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। গোপালগঞ্জকে এই ফ্যাসিস্টরা তাদের আশ্রয় কেন্দ্র বানিয়েছে। এই জেলার সাধারণ মানুষকে মুজিবাদ থেকে মুক্ত করব। আমরা সাধারণ মানুষের পাশে আছি।
ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী প্রত্যেককে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে কোনো সাধারণ মানুষকে হয়রানি না করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ফরিদপুরে জুলাই পদযাত্রার পথসভায় নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সেখানে চারজন মানুষ বিচার বহির্ভূতভাবে মারা গিয়েছে, আমরা সন্ত্রাসীদেরও মানবাধিকার বিশ্বাস করি। আমরা ৫ আগস্ট বলেছিলাম, বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। কিন্তু এখনও তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
এনসিপি নেতা বলেন, প্রশাসনের ভেতর তাদের দোষর রয়েছে। আমি তাদের বলতে চাই অপরাধীদের বিচার না করা পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ছি না। এখনও সময় দিচ্ছি ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করুন।
১৪০ দিন আগে
গোপালগঞ্জের প্রতিটি উপজেলায় ও গ্রামে গিয়ে কর্মসূচি করবো: নাহিদ ইসলাম
গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না বরং বাংলাদেশপন্থীদের হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আবারও গোপালগঞ্জে গিয়ে প্রতিটি এলাকায় কর্মসূচি পালন করারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক পোস্টে এসব বলেন নাহিদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা আবারও গোপালগঞ্জে যাব। আমরা জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রত্যেকটা উপজেলার প্রত্যেকটা গ্রামে কর্মসূচি করব। গোপালগঞ্জের প্রতিটা ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থীদের হবে।’
নাহিদ বলেন, ‘আমরা কথা দিয়েছিলাম (কমিট করেছিলাম) আমরা গোপালগঞ্জে যাব। আমরা গিয়েছি এবং শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে ঘোষণা করেছি, মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দেব না।’
তবে গোপালগঞ্জের অধিবাসীদের প্রতি এনসিপির কোনো রাজনৈতিক বৈষম্য নেই বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: এনসিপি নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে গোপালগঞ্জে সশস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে: নাহিদ
নাহিদ বলেন, ‘গোপালগঞ্জের অধিবাসীদের প্রতি রাজনৈতিক বৈষম্যের আমরা বিরোধিতা করি। গোপালগঞ্জ ও পুরো বাংলাদেশকে আমরা মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করব। আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ ধরে গোপালগঞ্জের মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বেইনসাফি করেছে। আমরা বলেছি, আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাব।’
এ সময় ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের এত হত্যাযজ্ঞের পরেও ৫ আগস্টের পরে অনেকে রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ আনতে চেয়েছিল। তাদের মনে রাখা উচিত, আওয়ামী লীগ আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটা একটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে নির্দেশনা (ইনস্ট্রাকশন) দিয়েছে, সকালের নাশকতার পরেও নিরাপত্তা ছাড়পত্র (সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স) পেয়েই আমরা গোপালগঞ্জে প্রবেশ করেছি। পদযাত্রা করিনি, পথসভা করেছি শুধু। গোপালগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের লোকজনকে আসতে দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন জায়গায় বাস আটকে দেওয়া হয়েছে। এরপরও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পথসভা শেষ করেছি। যাওয়ার পথে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে আমরা সেভাবেই সেখান থেকে বের হয়েছি।’
আরও পড়ুন: দেশে নতুন করে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম দেখা যাচ্ছে: নাহিদ ইসলাম
এ সময় গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রাকে ঘিরে গতকালের হামলা ও হতাহতের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান নাহিদ। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘আমরা চারজনের মৃত্যুর কথা শুনেছি। কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে আমরা সমর্থন করি না, প্রত্যাশাও করি না। সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে।’
নাহিদ অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিত তাহলে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এ দায়ভার সরকার ও প্রশাসনকে নিতে হবে। আমরা পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করছি।’
১৪০ দিন আগে
রাজনৈতিক দলগুলো গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: নাহিদ
গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলো গণঅভ্যুত্থান ও জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেছেন, ‘ফ্যাসিস্টদের, গণহত্যাকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আমরা বলছিলাম, ফ্যাসিস্ট হাসিনার রাষ্ট্রপতি থাকতে পারে না, এই প্রজন্ম ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সরিয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো সেই চুপ্পুকে সরাতে ভয় পেয়েছে। তারা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।’
সোমবার (৭ জুলাই) রাত ১১টার দিকে পাবনা শহিদ চত্বরে এনসিপির জুলাই পদযাত্রার পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: মুজিববাদী ৭২’র সংবিধান বদলে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি করতে হবে: নাহিদ
নাহিদ বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, মিডিয়া, পুলিশ, আমলা, সেনাবাহিনী ও সংবিধানের সংস্কার লাগবে। সংস্কারের মাধ্যমেই নতুন বাংলাদেশ গড়ব। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্কুল-কলেজের দেওয়ালে আমাদের ছাত্ররা যে গ্রাফিতি এঁকেছিল, সেই গ্রাফিতির মাধ্যমেই নতুন সংবিধান লেখা হয়ে গেছে। সেসব গ্রাফিতির মাধ্যমেই ৫ আগস্ট-পরবর্তী গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার কথা লেখা হয়ে গিয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগামীর সংবিধান রচনা করব। সেই সংবিধানের মাধ্যমেই আগামীর বাংলাদেশ পরিচালিত হবে। ৩ আগস্ট নতুন সংবিধান, বিচার সংস্কারের দাবিতে গণমানুষের মুক্তির ইতিহাস জাতির সামনে প্রস্তাব করব। সেইদিন সবাইকে আসার আহ্বান রইল।’
পথসভায় দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পাবনার আহ্বায়ক বরকতউল্লাহ ফাহাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
১৫০ দিন আগে
মুজিববাদী ৭২’র সংবিধান বদলে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি করতে হবে: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনিসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ৭২’র সংবিধান হলো মুজিববাদী সংবিধান, ওটা আওয়ামী লীগের সংবিধান। ওই সংবিধান পরিবর্তন করে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি করতে হবে।
সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের মুক্তির সোপান চত্বরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত জুলাই পদযাত্রার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, ‘আমরা যে লক্ষ্য নিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাস্তায় নেমেছিলাম, যে পরিবর্তন আমরা চেয়েছিলাম, সেই পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি না। আমাদের চাওয়া ছিল, জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ। জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ নিয়েও এখন তালবাহানা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার ধ্বংসের মধ্য দিয়ে নতুন দেশ গড়ার লড়াইয়ে যখন আমরা মাঠে নেমেছিলাম, সিরাজগঞ্জের মতো বাংলাদেশের সব জেলার মানুষ আমাদের সমর্থন দিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিল।’
‘এই যে গণহত্যা হয়েছে, আপনার সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে, গুম করা হয়েছে, আয়নাঘর তৈরি করা হয়েছে; সেইসবের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা নির্বাচনের দিকে এগোতে পারি না।’
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘সকল অন্যায়ের অবশ্যই বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি সংস্কারও করতে হবে। আমরা পুরনো সিস্টেমে ফিরে যেতে চাই না, যেতে দেওয়া হবে না। এমনভাবে সংস্কার করতে হবে যাতে বাংলাদেশে আর কখনো কেউ স্বৈরাচারী হতে না পারে।’
আরও পড়ুন: নতুন বাংলাদেশ পুরোনো ব্যবস্থায় চলতে পারে না: নাহিদ ইসলাম
তিনি বলেন, ‘বিচারব্যবস্থা সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতেও আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ৭২’র সংবিধান হলো মুজিববাদী সংবিধান, ওটা আওয়ামী লীগের সংবিধান, যে সংবিধান গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করেনি। বাংলাদেশকে অন্তর্ভূক্তিমূলক রাষ্ট্রেও পরিণত করতে পারেনি। তাই ওই সংবিধান পরিবর্তন করে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান তৈরি করতে হবে। যে সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ, গণঅভ্যুত্থান ও বৃটিশবিরোধী সংগ্রামের কথা থাকবে।’
সিরাজগঞ্জের মাটি প্রতিরোধের ঘাঁটি উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, ‘আমরা সেই প্রতিরোধ দেখেছি জুলাই গণঅভুত্থানেও। জুলাই গণঅভুত্থানের সময় সিরাজগঞ্জে ১৩ জন শহিদ হয়েছে। সিরাজগঞ্জ থেকে ফ্যাসিবাদী হটানোর যে লড়াই শুরু হয়েছে, সেই লড়াইকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আগামী বাংলাদেশে সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্য পৃথিবীর সামনে তুলে ধরব। কর্মসংস্থান করা হবে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের সুব্যবস্থা করা হবে।’
জনতার উদ্দেশে এই এনসিপি নেতা বলেন, ‘জুলাই গণঅভুত্থানের মত জাতীয় নাগরিক পার্টির ওপর আস্থা রেখে, আমাদের সমর্থন দিয়ে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত সিরাজগঞ্জ গড়ে তুলুন।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন এনসিপির মূখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকার, যুগ্ম সদস্য সচিব সাঈদ মুস্তাফিজ প্রমুখ।
১৫০ দিন আগে
নতুন বাংলাদেশ পুরোনো ব্যবস্থায় চলতে পারে না: নাহিদ ইসলাম
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা পুরোনো ব্যবস্থায় চলতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
রবিবার (৬ জুলাই) চাঁপাইনবাবগঞ্জে ‘বিচার, সংস্কার, তারপর নির্বাচনের’ দাবিতে চলমান জুলাই পদযাত্রার পথসভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। এরআগে পাশের জেলা নওগাঁ থেকে দুপুর ২টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শান্তিমোড়ে উপস্থিত হন এনসিপির নেতারা। এরপর পদযাত্রা শুরু হয়।
পরে এটি বাতেনখাঁ মোড়, নীমতলা মোড়, বড় ইন্দারা মোড়, গাবতলা মোড় ও ক্লাব সুপার মার্কেট হয়ে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন নতুন এই রাজনৈতিক দলের নেতারা।
পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা এসেছি, জুলাই অভ্যুত্থানের বার্তা নিয়ে, যে বার্তা একটি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র কায়েমের স্বপ্ন দেখায়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখায়।’
‘গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা নতুন বাংলাদেশ চেয়েছি, আমরা রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার চেয়েছি, আমরা গণত্যাকারীদের বিচার চেয়েছি। আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র এবং জুলাই সনদ চেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ খাতে বৈষম্যের শিকার। বাংলাদেশের সব জেলায় এমন বৈষম্য দূর হবে আমরা সেই স্বপ্ন দেখি।’
সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কঠোর সমালোচনা করে নাহিদ বলেন, ‘সীমান্তে বিএসএফ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে গ্রেনেড মারে, এখানে বোমার বিস্ফোরণ ঘটনায়। আমরা কিন্তু এইসব আগ্রাসন আর মেনে নেব না।’
আরও পড়ুন: ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ককে বাণিজ্যের চোখে দেখে ওয়াশিংটন: কুগেলম্যান
‘সীমান্তে দাদাদের বাহাদুরির দিন শেষ হয়েছে। আর আগ্রাসন চালানো হলে, আমার ভাইদের হত্যা করা হলে আমরা লং মার্চ ঘোষণা করবো। আমাদের সীমান্ত আমরাই রক্ষা করবো।’
দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চলনায় বক্তব্য রাখেন, সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ওপর দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ নির্মম নির্যাতন করেছে। সেই নির্যাতনকে সায় দিয়ে দিল্লির সরকারও সীমান্তে হত্যা চালিয়েছে।’
সাবেক এই ছাত্র নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াই চলবে। ভারত আর কোনোদিন আঙুল উঁচিয়ে কথা বলতে পারবে না। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ আঞ্চলিক বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। আগামীর বাংলাদেশে আর কোনো বৈষম্য দেখতে চাই না। ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে যে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হয়েছে, আর পুরোনো সিস্টেমে চলতে পারে না ‘
এ সময়ে এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিতি ছিলেন। পরে এনসিপির চাঁপাইনবাবগঞ্জ কার্যালয় উদ্বোধন শেষে রাজশাহীর উদ্দেশে রওয়ানা দেন তারা।
১৫১ দিন আগে