ড. জামিল
দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে নাটক বন্ধ করতে হয়েছে: ড. জামিল
জাতীয় নাট্যশালার বাইরে একদল লোক বিক্ষোভ করায় শনিবার (নভেম্বর ২) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে দেশ নাটকের মঞ্চ নাটক ‘নিত্যপুরাণ’ বন্ধ করা হয়েছিল।
এই পদক্ষেপের পেছনের কারণগুলো সম্পর্কে রবিবার ভার্চুয়ালি কথা বলেছেন শিল্পকলার মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
ড. জামিল বলেন, নাট্যশালায় দর্শকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নাটকটি বন্ধ করতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: আদানির সময়সীমা নিয়ে আমরা খুবই মর্মাহত: প্রেস সচিব
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান উন্মুক্ত মঞ্চে (মুক্তমঞ্চ) 'যাত্রা উৎসব' অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শনিবার রাতে ড. জামিল সেখানেই ছিলেন। ফেসবুকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে 'অপমানজনক' করায় দেশ নাটক দলের সেক্রেটারি এহসানুল আজিজ বাবুর বিরুদ্ধে জনগণ বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে জাতীয় নাট্যশালার গেটে পৌঁছান।
আকস্মিকভাবে নাটকটি বন্ধ করে দেওয়ার কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেন ও শিল্পী-কর্মীদের সমালোচনার মুখে পড়েন ড. জামিল ও একাডেমি।
ড. জামিল বলেন, 'সবার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ওই সময় আমাদের যে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন মনে হয়েছিল, সেটাই নিতে হয়েছে।’
‘সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশের ২২টি স্থানে শিল্পকলা একাডেমিতে আক্রমণ করা হয়েছে এবং এমন সম্ভাবনা ছিল যে উত্তেজিত জনতা নাটক চলাকালীন আরও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এবং দর্শকদের আক্রমণ করতে পারে। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাকে মঞ্চে উঠতে হয়েছে এবং দর্শকদের কাছে ক্ষমা চাইতে হয়েছে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য।’
তিনি আরও বলেন, 'আন্দোলনকারীরা যে ফেসবুক পোস্টের বিরোধিতা করছেন, তা সত্যিই আপত্তিকর। আমি বাবুকে তিরস্কার করে বললাম যে ফেসবুকে এমন ঘৃণিত মন্তব্য না লিখতে। প্রশাসনের বিরোধিতা না করে নাট্য সৃষ্টির দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিলাম। এর আগে, আমি ক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেছিলাম এবং জানিয়েছিলাম যে দেশ নাটকের বেশ কয়েকজন সদস্য জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং আহত হয়েছিলেন, কিন্তু তারা বুঝতে নারাজ ছিলেন।’
নাটক বন্ধের কারণে যে সমালোচনা শুরু হয়েছে সে বিষয়ে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, 'আমি জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও তারা মঞ্চ দখলের চেষ্টা করে, দেয়াল টপকে এমনকি গেট ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে, তাই আমরা দেশ নাটকের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে নাটক বন্ধের সিদ্ধান্ত নিই। আমি অনেক চেষ্টা করেছি যাতে নাটক প্রদর্শন অব্যাহত রাখা হয়। আমি স্বীকার করছি- আমি একটা খণ্ডযুদ্ধে হেরে গেছি কিন্তু যুদ্ধে জিতব, যদি আপনারা সবাই আমাদের পাশে দাঁড়ান।’
সেনাবাহিনী কেন হস্তক্ষেপ করল না-এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. জামিল বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে ছিল এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত ছিল, কিন্তু আমরা তাদের জনতার মুখোমুখি করতে চাইনি।
তবে দর্শক ও নাট্যকর্মীদের নিরাপদে বের হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তারা।’
ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিগত সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি (শিল্পকলা একাডেমি) গত ৭ অক্টোবর সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করলে জাতীয় নাট্যশালার মূল থিয়েটার এবং ১ ও ২ নম্বর কক্ষ পরিবেশনা ও মহড়ার জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ১১ অক্টোবর বাংলাদেশ থিয়েটারের প্রযোজনায় 'সি মোরগ' দিয়ে আবারও মঞ্চ নাটকের নিয়মিত প্রদর্শনী শুরু করে।
আরও পড়ুন: মুন্সিগঞ্জে রোগীর মৃত্যু, নার্স ও ওয়ার্ডবয়দের মারধর
২ সপ্তাহ আগে