নির্বাচন
বাংলাদেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর
বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল, তাদের সমর্থক ও নিরাপত্তা বাহিনীকে একটি ‘শান্তিপূর্ণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করে অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার জেরেমি লরেন্স বলেন, ‘আগামী বছরের নির্বাচনের জন্য যেসব দল প্রচার চালাচ্ছে তাদের সবার জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আমরা আহ্বান জানাই। যাতে বহুদলীয় রাজনীতি ও ভিন্ন মত প্রকাশের চর্চা বজায় থাকে। একই সঙ্গে সবার মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতাকে শ্রদ্ধা করতে হবে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের এই মুখপাত্র বলেন, বিরোধী দলের বেশ কয়েকটি সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, সাধারণ পোশাকধারী কিছুসংখ্যক মানুষের পাশাপাশি পুলিশকে বিক্ষোভকারীদের মারতে হাতুড়ি, লাঠি, ব্যাট ও লোহার রড ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে 'বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক' নির্বাচনের কথা বলেছে জাতিসংঘ
এই মুখপাত্র বলেন, ‘বিরোধী দলের অনেক সমর্থকদের পাশাপাশি কিছু পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। বিরোধী দলের সিনিয়র নেতাদের প্রকাশ্য দিবালোকে মারধর করা হয়েছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মীদের পরিচয় দিয়ে তাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে।’
জেরেমি লরেন্স বলেছেন, সমাবেশের আগে এবং চলাকালীন শত শত বিরোধী নেতা ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই তাদের মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে এবং জনগণকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগ করার অনুমতি দিতে হবে। একই সঙ্গে তৃতীয় পক্ষের দ্বারা সেই অধিকারগুলোর প্রয়োগকে দমন বা সীমিত করার প্রচেষ্টা থেকে রক্ষার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, আমরা পুলিশকে তা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করছি, খুবই প্রয়োজন হলেই তবেই বল প্রয়োগ করার জন্য। যদি তা করা হয় তাহলে বৈধতা, সংযম ও সমানুপাতিকতার নীতিগুলোর সঙ্গে সম্পূর্ণ সম্মতি জানানো হবে।
জাতিসংঘের এই মুখপাত্র বলেন, ‘অত্যধিক বলপ্রয়োগের বিষয়ে অবিলম্বে তদন্ত করা উচিত এবং দায়ীদের জবাবদিহি করতে হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সকল পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ারের
সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে: জাতিসংঘ
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য-ভারতের কথায় মাথা ঘামানোর দরকার নেই: মির্জা ফখরুল
দেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারত কী বলে, তা নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দরকার, আমাদের মানুষ কী বলে। মানুষ খুব পরিষ্কার করে বলছে, বিদায় হও। আর সময় নেই। যেতে হবে। এই সরকারকে যেতেই হবে।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শুক্রবার (আগস্ট) আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে আ. লীগ দেশে সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
তিনি বলেন, পৈশাচিক সরকারের বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য প্রতিরোধ গড়ে তুলে তাদের অবশ্যই পরাজিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের পুরো জাতিকে একত্রিত করে এবং মৃত্যুর ভয়কে সাহসী করে একটি ভয়ানক লড়াই চালিয়ে এই শাসনকে পরাজিত করতে হবে এবং অপসারণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই সরকারকে সরাতে হবে। আমাদের সামনে বিকল্প কোনো পথ নেই। ফিরে যাওয়ার কোনো পথ নেই। আমাদের অস্তিত্বের জন্য, জাতির অস্তিত্বের জন্য সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, জনগণের সরকার গঠন করতে হবে। বর্তমান শাসনের পতন ঘটলে মিথ্যা মামলা ও তাদের নির্দেশিত রায় টিকবে না। আসুন সবাই সেই সংকল্প নিয়ে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে এগিয়ে যাই।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, জেল, সাজা, এমনকি মৃত্যুদণ্ড দিয়েও বিএনপিকে দমন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমরা রাস্তায় নেমেছি এবং আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। এই শাসনের পতন নিশ্চিত করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ, উত্তর মহানগর ও জেলা ইউনিট।
এদিকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী টানা বৃষ্টিতে নয়াপল্টন এলাকায় হাঁটু পানিতে হেঁটে দল ও সহযোগী সংগঠনের সমাবেশে যোগ দেন। দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নয়াপল্টন এলাকায় বৃষ্টির পানিতে জমে যাওয়ায় এক ঘণ্টা দেরি হয়।
এ ছাড়া দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মুখে বিএনপি নেতা-কর্মীরা মিছিলে সমাবেশস্থলে জড়ো হয়ে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। কর্মসূচি শেষ হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে জল এবং বৃষ্টির মধ্যে অবস্থান করে।
বিএনপি মহাসচিব দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করার জন্য দলীয় পদমর্যাদা ও ফাইলের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, আমি জানি আপনারা কঠোর পরিশ্রম করছেন। আপনারা এখানে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন।
তিনি বলেন, পুলিশের অভিযানে আপনারা রাতে ঘুমাতে পারেন না।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দিনের বেলায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। কিন্তু বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে রাতে তাদের বাড়িতে অভিযান চালায়।
রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার না করে রাজপথে বিএনপির মোকাবিলা করতে ক্ষমতাসীন দলকে আহ্বান জানিয়েছেন এই নেতা।
বিচারের দিনে (কেয়ামতের দিনে) বিচারকরাই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি জবাবদিহি করবেন উল্লেখ করে তিনি বিচারকদের প্রতি অন্যায়ভাবে শাস্তি না দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আমাদের নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য আপনাকেও একদিন দেশের জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
ফখরুল বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাট করে বিপুল অর্থ উপার্জন করছে।
বিএনপি নেতা আক্ষেপ করে বলেন, সরকার দেশকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরাও এখন দুর্নীতিতে লিপ্ত হচ্ছেন।
তিনি বলেন, এ বছর ডেঙ্গুতে রেকর্ড সংখ্যক লোক মারা গেছে। কিন্তু সরকার এ নিয়ে কম চিন্তা করছে। কারণ তাদের একমাত্র ফোকাস হচ্ছে কীভাবে নির্বাচন ছাড়াই আবার ক্ষমতায় আসা যায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা তাদের এটি করতে দেব না।
এর আগে গত বুধবার ঢাকার একটি আদালত ২০০৭ সালের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি দুর্নীতির মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই রায় দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপির। এর প্রতিবাদে দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা ডাক দেয় দলটি।
আদালতের রায়ের প্রতিবাদে বিএনপির অন্যান্য মহানগর ও জেলা শাখাও একই ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে।
আরও পড়ুন: ইইউ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বৈঠক
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন মির্জা ফখরুল
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে: নির্বাচন প্রসঙ্গে এমইএ মুখপাত্র
বাংলাদেশের জনগণ কীভাবে নির্বাচন করতে চায় তার ভিত্তিতে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নির্ধারণ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (এমইএ) মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) নয়া দিল্লিতে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘পুরো বিশ্ব এতে মন্তব্য করতে পারে কিন্তু ভারত ভারতের মতোই। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।’
এই বছরের ডিসেম্বর বা আগামী বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই প্রথম ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করল।
আরও পড়ুন: 'সন্ত্রাস শিল্পের মুখপাত্র': পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশে যা ঘটে সেটি তাদের প্রভাবিত করে।
তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমি মনে করি সেখানে অনেক ধরনের কার্যক্রম চলছে। লোকজন সম্ভবত সেগুলোর সম্পর্কে মন্তব্যও করছে।’
ঢাকায় তাদের একটি হাই কমিশন রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অবশ্যই, ভারত ঘনিষ্ঠভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
আরও পড়ুন: গুজরাটে ভারতের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কামালের সাক্ষাত, দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা
এই মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা আশা করি সেখানে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। কোনো সহিংসতা হবে না। নির্বাচন পরিকল্পনা অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।’
বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার অবশ্যই কোনো মন্তব্য নেই।
যুক্তরাষ্ট্রসহ দেশগুলো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করে আসছে এবং বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছে।
এদিকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে ভারতের সহায়তাপুষ্ট ৩ মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন: হাইকমিশনার
নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক কোনো চাপে নেই আওয়ামী লীগ: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ কোনো আন্তর্জাতিক চাপে নেই।
তিনি বলেন, ‘কেন আমরা চাপ অনুভব করব? অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান আমাদের অঙ্গীকার। আপনারা যদি চাপের কথা বলেন, তাহলে এটা আমাদের বিবেকের চাপ।’
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় কাদের বলেন, ‘আমেরিকার সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে, আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখি। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আমাদের পার্টি অফিসে এসেছিলেন। তারা আগে কখনো আমাদের অফিসে আসেনি। তিনি এসেছেন ও দেখেছেন।’
আরও পড়ুন: আ.লীগের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছি। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমরা সবার সঙ্গে কথা বলছি। এটা দেশের মানুষের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার।’
এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘গণতন্ত্র রক্ষা করা আমাদের পবিত্র কর্তব্য। আমরা এই কর্তব্য পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন আছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা কোনো অভিযোগ নিয়ে কথা বলিনি। মার্কিন রাষ্ট্রদূত তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সংসদ ভেঙে দেওয়া বা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের কথা উল্লেখ করেননি। আমরাও অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা বলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমেরিকানরা আমাদের কোনো পরামর্শ দেয়নি এবং সংলাপের বিষয়েও কোন কথা হয়নি।’
আরও পড়ুন: বিএনপির ওপর মার্কিন ভিসানীতি প্রয়োগ করা উচিত: ওবায়দুল কাদের
খেলা হবে তারেক ও হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে: ওবায়দুল কাদের
বাংলাদেশে 'বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক' নির্বাচনের কথা বলেছে জাতিসংঘ
জাতিসংঘ বাংলাদেশে 'শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক' নির্বাচনকে উৎসাহিত করেছে।
৩১ জুলাই জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ‘নির্বাচন প্রসঙ্গে জাতিসংঘ বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনকে উৎসাহিত করে।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বলেন যে জাতিসংঘ শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের উদারতার প্রশংসা করে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র বলেন, ‘এবং আমরা আশা করি এটি অব্যাহত থাকবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সব পক্ষকে মৌলিক স্বাধীনতা ও আইনের শাসনকে সম্মান করার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
তিনি আরও বলেন, ‘মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদ নিয়ে মন্তব্য করা আমার কাজ নয়। এই সিদ্ধান্ত নেওয়া মূলত সদস্য দেশগুলোর কাজ।’
সাংবাদিক লাভলু আনসার বলেন, ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তা সত্ত্বেও তিনি বলেন যে তথাকথিত নাগরিক সমাজের কিছু মানুষ, মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা কিছু সংগঠন এমনকি মার্কিন কংগ্রেসের কিছু সদস্যও জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন থেকে বাংলাদেশকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।
তথাকথিত নাগরিক সমাজ ও মার্কিন কংগ্রেসের কিছু সদস্য বাংলাদেশের আসন্ন সংসদ নির্বাচন জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন ওই সাংবাদিক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
শেষ মুহূর্তের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা সারাদিনের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রতিফলিত করেনা: শাহরিয়ার
সম্প্রতি ‘কূটনৈতিক নিয়ম লঙ্ঘন করে’ একটি যৌথ বিবৃতি জারি করায় ‘অকূটনৈতিক আচরণের’ জন্য ঢাকায় ১৩ রাষ্ট্রদূতের কাছে হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
এ প্রসঙ্গে বুধবার (২৬ জুলাই) বিকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জনাব আশরাফুল আলমকে কেন্দ্র করে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে কূটনৈতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করে ঢাকাস্থ যেসকল দূতাবাস গণমাধ্যমে একটি যৌথবিবৃতি দিয়েছিলেন, আজ দুপুরে সেসব রাষ্ট্রদূতকে আমরা ডেকেছিলাম। তাদের কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত আচরণে আমরা আমাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছি। ওনাদের যৌথ বিবৃতিটি ঘটনা প্রবাহের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণভাবে যথাসময়ের অনেক আগেই তড়িঘড়ি করে অপরিণতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করি আমাদের আজকের আলোচনার পর তারা সেটি নিশ্চয়ই উপলব্ধি করবেন এবং ভবিষ্যতে এমন অকূটনৈতিক আচরণ থেকে বিরত থাকবেন। ঘটনা সম্পর্কে জানার সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাচন কমিশন এবং সরকার ত্বরিত ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছে।’
তিনি বলেন, এসময় কূটনীতিকদের ভিয়েনা কনভেনশনের কথা মনে করিয়ে গঠনমূলক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
শাহরিয়ার আলম বলেন, কূটনীতিকদের সতর্ক করা হয়েছে যে সরকারকে পাশ কাটিয়ে ‘বস্তুনিষ্ঠতা, নিরপেক্ষতা ও পক্ষপাতহীনতা বর্জিত আচরণ’ কেবলই পারস্পরিক আস্থার সংকট তৈরি করবে।
আরও পড়ুন: বিএনপির এক দফা দাবি সংবিধানের পরিপন্থী: শাহরিয়ার আলম
তিনি বলেন, কিছু মৌলিক ত্রুটি ছিল যা বাংলাদেশ নির্দেশ করেছে এবং এ ধরনের পুনরাবৃত্তি না করার আহ্বান জানিয়েছে।
ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে একজন প্রার্থী লাঞ্ছিত হওয়ার পর সম্প্রতি যৌথ বিবৃতি জারি করা ১৩টি বিদেশি মিশনের রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনারদের তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে হিরো আলম নামে পরিচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলমের ওপর হামলার পূর্ণ তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে বিদেশি মিশনগুলো বলেছে, ‘আমরা ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার নিন্দা জানাই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সহিংসতার কোনো স্থান নেই।’
ঢাকার কূটনৈতিক মিশনগুলো বলেছে, ‘আসন্ন নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকেরই নিশ্চিত করা উচিত যে তা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।’
যৌথ বিবৃতিতে কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদলের দূতাবাস/হাইকমিশন স্বাক্ষর করেছেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, তারা কূটনীতিকদের জানিয়ে দিয়েছেন যে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে সারাদিনের শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনকে মূল্যায়ন করা ঠিক হবে না।
তিনি বলেন, অন্য প্রার্থীরা কোনো সহিংসতা বা অন্য কোনো অনিয়মের অভিযোগ করেননি।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি কেন্দ্রের শেষ মুহূর্তের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাটিকে গুটি কয়েক কূটনীতিক যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তা কখনোই সারাদিনের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রতিফলিত করেনা। দ্রুত একটি প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তারা তাদের মূল্যায়নটির বস্তুনিষ্ঠতার প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেন নি।’
আরও পড়ুন: পশ্চিমাদের অবশ্যই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে হওয়া পাক গণহত্যার কথা স্বীকার করতে হবে: শাহরিয়ার
ঘটনাটি জানাজানি হলে নির্বাচন কমিশন ও সরকার তাৎক্ষণিক ও আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘১৯শে জুলাই তারিখে কূটনীতিকবৃন্দের বিবৃতি দেওয়ার অনেক আগেই কিন্তু দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও এই কূটনীতিকরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন, যা অযাচিত ও অপ্রয়োজনীয়।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি, যে দ্রুততা ও গুরুত্বের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন ঘটনাটির সমালোচনা তারা করেছেন, সেই গুরুত্ব ও দ্রুততার সঙ্গে কিন্তু তারা সরকারের গৃহীত তাৎক্ষণিক ও ত্বরিত আইনানুগ ব্যবস্থাকে তারা মূল্যায়ন করেননি।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তাই যৌথ বিবৃতিটির বস্তুনিষ্ঠতা ও উদ্দেশ্য নিয়ে ভাবনার অবকাশ থেকেই যায়।’
আরও পড়ুন: বিদেশি মিশনের সঙ্গে নথি শেয়ারের কারণ জানালেন শাহরিয়ার আলম
নির্বাচন নয়, দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় বিএনপি: রোমে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন চায় না, বরং বিরোধী দল দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অবশ্যই অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি জানে যে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। ভোট কারচুপির কারণে যারা বিতাড়িত, জনগণ কেন তাদের ভোট দিতে যাবে? তারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়।’
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ইতালির রাজধানী রোমে তার আবাসস্থলে আয়োজিত এক কমিউনিটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যার পর বিএনপি কীভাবে ভোট চাইতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘তারা নির্বাচন চায় না। তারা তাদের কিছু বিদেশি প্রভুর পা চাটে এবং তারা চায় দেশের মানুষ তাদের (বিদেশি প্রভুদের) দ্বারা কষ্টভোগ করুক। তারা দেশ ও জনগণের চলমান উন্নয়নের ধারাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি কখনোই এ দেশের মানুষের কল্যাণ চায় না। সবাইকে এটা মাথায় রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘তাদের উদ্দেশ্যই হলো ঘোলা পানিতে মাছ শিকার। সুতরাং, তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশের এই অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করা।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘের ফুড সিস্টেমস সামিটে যোগ দিতে রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে এবং এই অশুভ শক্তির (বিএনপি) হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, ‘তারা বাংলাদেশকে আবারও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে চায়। তাই এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’
দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে হবে উল্লেখ করে তিনি আগামী নির্বাচনে আবারও তার দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়েছেন।
র্যাব কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের দ্বারা আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করেছি, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আমরা এর রহস্য বুঝতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করেনি, তারা এখন বিভিন্নভাবে আমাদের দেশকে নিয়ে খেলা করতে চায়। তাদের খেলতে দেওয়া যাবে না। দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন: নেপালকে পায়রা বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশি শ্রমিকদের বৈধ অভিবাসনে গুরুত্বারোপ ইতালির প্রধানমন্ত্রীর
বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে দলের মধ্যে বড় বিস্ফোরণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যদি নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে দলের (বিএনপি) মধ্যে বড় বিস্ফোরণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে কোনো সংকট নেই। বিএনপি সংকট তৈরির চেষ্টা করছে, কিন্তু পারেনি। বরং তাদের দলের মধ্যে সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। সেটার প্রভাব দেশের মানুষের মধ্যে নয়, বিএনপির মধ্যেই পড়বে। বিএনপির ভিতর থেকে তাদের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটবে।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক অপরাধ থেকে সমাজ রক্ষায় কাজ করুন: তথ্যমন্ত্রী
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে গ্রন্থমোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যেদিন সমাবেশ ডাকবে, সেদিন এতবড় শহরে অন্য কেউ সমাবেশ ডাকতে পারবে না এমন তো নিয়ম নেই। বিএনপি যখন সমাবেশ ডাকে জনগণ তখন আতংকে থাকে৷
তিনি বলেন, সরকারি দল হিসেবে আওয়ামী লীগ কিংবা এর সহযোগী সংগঠনগুলোর দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের পাশে থাকা। কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে খেয়াল রাখা। এটা তাদের দায়িত্ব। সে কারণেই ২৭ জুলাই ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ যৌথভাবে সমাবেশের ডাক দিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা কখনোই সংঘাত তৈরি করতে চাই না। কারণ আমরা সরকারে আছি। দেশে যদি কোনো সংঘাত সৃষ্টি হয় তবে সরকারেরই বদনাম হয়। তাই আমরা সংঘাত চাই না। বিএনপিই সংঘাত তৈরি করার অযুহাত খুঁজছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, এর আগে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বে আমরা এবং তারা বড় সমাবেশ করেছি। সেখানে কোনো সংঘাত হয়নি। সেখানে আমাদের দল সর্বোচ্চ সংযমের পরিচয় দিয়েছে। আমরা এখনো চাই বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ পালন করুন।
তিনি বলেন, বিএনপি অতীতে সময়ে সময়ে মানুষের সহায় সম্পত্তির ওপর হামলা করেছে, পুলিশ, পথচারী, গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আগুন দিয়েছে এবং সম্পদের ক্ষতি করেছে। আমরা সরকারি দল হিসেবে দায়িত্ববোধ থেকে ২৭ তারিখ সমাবেশ ডেকেছি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে কোনো সংকট নেই। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সংকট রয়েছে। তাদের নেতাকর্মীরা নির্বাচন করতে চাই, কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের থেকে তারা সিদ্ধান্ত পায় না৷ এটা একটি বড় সংকট।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদূতদের বিবৃতি ভিয়েনা কনভেনশনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, বিএনপি এমন একটি রাজনৈতিক দল যারা নেতাকর্মীদের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনও করতে দেয় না। এমনকি সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর পদেও নির্বাচন করতেও বারণ করছে। এটি একটি দলের অভ্যন্তরীণ সংকটেরই বহিঃপ্রকাশ। অথচ তারা গণমানুষের দল হিসেবে নিজেদের দাবি করে।
তিনি আরও বলেন, কখন যে সেই দলের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটে সেটাই এখন সময়ের অপেক্ষা।
মন্ত্রী বলেন, এভাবে যদি তাদের নেতাকর্মীদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখা হয় তাহলে দ্রুতই দলের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটবে। এরই মধ্যে ছোটখাটো একটা বিস্ফোরণ অবশ্য ঘটেছে। নির্বাচনে তাদের দলীয় নেতা কর্মীদের অংশগ্রহণ করতে বারণ করেছিল।
কিন্তু নির্বাচনে তাদের কয়েকজন নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেছেন। কেউ কেউ নির্বাচনে জয়ীও হয়েছেন। তাদের আক্ষেপ আমরা পত্র-পত্রিকায় ও টিভির পর্দায় দেখেছি ও শুনেছি। আগামী সংসদ নির্বাচনে তারা যদি বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে দলের মধ্যে বড় বিস্ফোরণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সেটার প্রভাব দেশের মানুষের মধ্যে নয়, বিএনপির মধ্যেই পড়বে। বিএনপির ভেতর থেকে তাদের মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটবে।
শোকের মাসে জামায়াতের কর্মসূচির অনুমতির প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, জামায়াত ডাকতে চেয়েছে এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সিদ্ধান্ত দিবে৷ শোকের মাসের ভাবগাম্ভীর্যের বিষয়টি মাথায় রেখেই আইনশৃংখলা বাহিনী সিদ্ধান্ত দিবে। জামায়াত চেয়েছে তারা চাইতেই পারে কিন্তু সব কিছু বিবেচনা করে করতে হবে।
জামায়াত এক আগস্ট বিক্ষোভ করবে সে বিষয়টি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা বিক্ষোভ করতেই পারে। যদি সে বিক্ষোভ সহিংস না হয় তাহলে দোষের কিছু নেই। এ বিক্ষোভ যদি অতীতের মতো বিএনপির সঙ্গে যোগ দিয়ে সহিংসতা ছড়ানোর জন্য অপচেষ্টা হয়, তাহলে সেটা বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর আমাদের দলও বসে থাকবে না।
বিএনপি বলেছে, বর্তমানে দেশে যে সংকট চলছে এ সংকট সমাধানের কোন পথ সরকার খোঁজে পাবে, এ বিষয়ে মতামত জনতে চাইলে তিনি বলেন, দেশে কোনো সংকট নেই৷
তিনি বলেন, বিএনপি একটি সংকট তৈরি করতে চেষ্টা করছে, কিন্তু তারা সেটি পারেনি। ২০১৪ সালেও তারা চেষ্টা করেছিল। তখনো তারা সফল হয়নি। তারা ভেবেছিল সরকার তিন মাসের মধ্যে পড়ে যাবে কিন্তু সরকার পাঁচ বছর মেয়াদ পূরণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে তারা চেষ্টা করেছিল। ভেবেছিল সরকার মনে হয় টিকবে না। নানা দেন-দরবার করেছিল বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকদের কাছে। দেশ বিদেশে লবিং করেও তারা কিছুই করতে করতে পারেনি। দেশের মধ্যে তারা কোনো সংকট তৈরি করতে পারেনি। বরং বিএনপির মধ্যেই সংকট ঘনীভূত হয়েছে৷
আরও পড়ুন: সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন, ইইউ-মার্কিন সফর ইতিবাচক: তথ্যমন্ত্রী
নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা পরিবেশ নষ্টের সামিল: হাছান মাহমুদ
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচন যে কেউ বর্জন করতে পারে, তবে নির্বাচন প্রতিহত করার অধিকার কারো নেই। কেউ যদি নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় তবে সেটি নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার সামিল হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে অত্যন্ত সুন্দর নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনের পরিবেশ কেউ এখন নষ্ট করছে কি না; সেটি দেখার বিষয়।
আরও পড়ুন: তথ্য সংগ্রহ আর চুরি এক জিনিস নয়: হাছান মাহমুদ
সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সচিবালয় বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) নবনির্বাচিত কমিটির সৌজন্য সাক্ষাৎ ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করে বিরোধীদল দমনের চেষ্টা করছে এবং জনগণের অধিকার হরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, মির্জা ফখরুলকে অনুরোধ জানাব, পেছনে ফিরে তাকানোর জন্য।
তিনি বলেন, তারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন ৫০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতেন। এখন বাংলাদেশে ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। গ্রামের গৃহবধূ, স্কুলের শিক্ষার্থী, রিকশাওয়ালা, খেতে কাজ করা ব্যক্তিও এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।
তিনি বলেন, এই ইন্টারনেটকে সর্বজনীন করেছে বর্তমান সরকার।
মন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আমাদের স্লোগানই ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ। কারণ, ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্যতম লক্ষ্য ছিল, সবার কাছে ইন্টারনেট সহজলভ্য করা। গ্রামে গ্রামে ব্রডব্যান্ড সংযোগ দেওয়া।
এ ছাড়া গ্রামে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করে এমন অনেক যুবক আছেন।
তিনি বলেন, আমরা কোনোভাবে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করি না বরং সহজলভ্যতার সুযোগ গ্রহণ করে বিএনপি তাদের পেইড এজেন্ডা দিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী থেকে শুরু হরে সরকারদলীয় নেতাদের চরিত্র হনন করছে।
তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে তাদের অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে। যারা বিভিন্ন দেশে বসে সরকারের বিরুদ্ধে, সরকারি দলের নেতাদের চরিত্র হনন করে, তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করে তারেক রহমান।
সেই বৈঠকের ছবিও আমাদের কাছে আছে। এটা কেবল ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার কারণে করতে পারছে; যা কখনো সমীচীন না। এগুলো ডিজিটাল অপরাধ। ডিজিটাল অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সারা পৃথিবীতে আইন আছে।
তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্প্রতি একটি আইন পাস করেছে। সেখানে অনেক দেশ সায় দিয়ে আইন পাস করেছে। আমরা এখনো করিনি। তাদের অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় খুবই আন্তরিক: সংসদে হাছান মাহমুদ
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, মির্জা ফখরুল ডিজিটাল অপরাধীদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য কাল সংবাদ সম্মেলন করছেন। কিন্তু তার উচিত সরকারকে ধন্যবাদ জানানো।
কারণ, তিনি ভিডিও কনফারেন্সে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে মিটিং করেন, সেটা শেখ হাসিনার জন্য হয়েছে। এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানানো দরকার।
বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে, তারা বর্তমান সরকারের অধিনে নির্বাচনে যাবে না, আর সরকার বাহিনী দিয়ে বিএনপির নেতাদের নামে হামলা-মামলা করছে, এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা চাই, বিএনপি পূর্ণশক্তি নিয়ে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের মতো নয় বরং পূর্ণশক্তি নিয়ে অংশ নিক।
একদিকে তারা বলছেন, নির্বাচনে যাবেন না, আবার বলছেন আমাদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে চাচ্ছে। আমরা কাউকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখতে চাচ্ছি না। আমরা চাই, বিএনপি নির্বাচনে আসুক এবং সংবিধান মেনে যে নির্বাচন হবে সেখানে অংশ নিক।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের মধ্যেই স্পষ্ট, তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চান। কিন্ত কোনো অদৃশ্য শক্তির কারণে নির্বাচনে আসতে পারছেন না। কোনো অদৃশ্য শক্তির কারণে নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না তাদের নেতৃত্ব। এটি মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে স্পষ্ট। আমি তাদের অনুরোধ জানাই, অদৃশ্য থাবা থেকে মুক্ত হয়ে বিএনপি দলটাকে জনগণের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও একটি পর্যবেক্ষক দল আগামী ২৮ জুলাই ঢাকায় আসবে। তারা নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে একটি প্রতিবেদনও দেবে, এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিনিধি দল আসতেই পারে, এলে তো ভালো। বাংলাদেশের নির্বাচন কেমন হবে; সেটা দেখার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমরাও চাই তারা আসুক, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করুক।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন কত সুষ্ঠু হয়েছে। একটা ঘুষিকে সামনে এনে গণমাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। পশ্চিম বাংলায় যেখানে ৩৯ জন মারা গেছেন, সেখানে এখানে একটা ঘুষি মারা হয়েছে। তাহলে পরিবেশ কোথায় ভালো?
হাছান মাহমুদ বলেন, ঢাকা ১৭ এর নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। কেন্দ্রের বাইরে একজন প্রার্থীকে হেনস্তা করা হয়েছে। এটা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। আমরা সেটার নিন্দাও জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, সেখানে ৮ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জামায়াতকে দিয়ে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করার বিষয়ে বলিয়েছে বিএনপি: হাছান মাহমুদ
নির্বাচনের আগে আরও দুটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল আসবে বাংলাদেশে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আগামী ২৮ জুলাই ও ১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের আরও দুটি দল বাংলাদেশ সফর করবে।
সোমবার (২৪ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ফোরাম (ইএমএফ) জানায়, তাদের আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দ্বিতীয় দল বাংলাদেশ সফর করবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্ব পরিস্থিতি ও পরিবেশ মূল্যায়নে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দল বাংলাদেশ সফরসহ ইএমএফের ধারাবাহিক কার্যক্রম বিষয়ে জানাতেই সংবাদ সম্মেলনে করা হয় বলে জানায় আয়োজক সংস্থাটি।
তারা জানান, ২৮ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও চীনের ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসেবে আসবে। তারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি ও পরিবেশ মূল্যায়নে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন।
আরও পড়ুন: উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম, তবে অনিয়মের অভিযোগ নেই: পর্যবেক্ষক দল
সফরে আসা দ্বিতীয় দলে রয়েছেন- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিশ্লেষক মি. টেরি এল ইসলে, আয়ারল্যান্ড থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনীতিবিষয়ক সিনিয়র সাংবাদিক মি. নিক পল, দক্ষিণ কোরিয়ার মানবাধিকারকর্মী মি. পার্ক চুং চাং, জাপান থেকে সমাজকর্মী মি. ইউসুকী সুগু, যুক্তরাজ্যের লেখক ও গবেষক মি. মাইকেল জন শেরিফ এবং চীনের রাজনৈতিক বিশ্লেষক মি. এন্ডি লিন।
এরপর আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের তৃতীয় টিম বাংলাদেশে সফর করবেন।
ওই টিমে থাকবেন মালদ্বীপ, নেপাল, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশের প্রতিনিধিরা।
আগামী ২৮ জুলাই পর্যবেক্ষকদের দলের নেতৃত্ব দেবেন আয়ারল্যান্ড থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাজনীতিবিষয়ক সিনিয়র সাংবাদিক মি. নিক পউল।
সফরকালে প্রতিনিধিরা আগামী ২৯ জুলাই সকালে নির্বাচনপূর্ব পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক পরিবেশ মূল্যায়ন শীর্ষক নাগরিক সংলাপে অংশগ্রহণ করবেন।
৩০ ও ৩১ জুলাই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের জন্য কমনওয়েলথের পর্যবেক্ষক চান প্রধানমন্ত্রী
এ ছাড়াও আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জাতীয় পার্টি (জাপা), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, জাকের পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, কৃষক শ্রমিক জনতালীগ, জাসদ, ইসলামী ঐক্যজোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের কর্মসূচি রয়েছে।
এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের আমন্ত্রণে জার্মান, নেপাল, ভারত ও ভুটানসহ চার দেশের আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের প্রথম টিম বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।
তারা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনসহ দেশের বেশকিছু রাজনৈতিক দলের নেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে মতবিনিময় করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ আবেদ আলী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহফুজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, ইকবাল বাহার, মনির হোসেন ও সুলতানা রাজিয়া শিলা।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সম্পৃক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর উন্মুক্ততার প্রশংসা যুক্তরাষ্ট্রের