পদ্মা সেতু
৬ষ্ঠ দিনে পদ্মা সেতু থেকে রেকর্ড ৩.১৬ কোটি টাকা টোল আদায়
যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার ৬ষ্ঠ দিনে শুক্রবার পদ্মা সেতু পার হওয়া যানবাহন থেকে টোল আদায়ের মাধ্যমে সরকার রেকর্ড ৩ দশমিক ১৬ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) সুপারিনটেনডিং ইঞ্জিনিয়ার আবুল হোসেন ইউএনবিকে বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত তিন দশমিক ১৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ আয়।
তিনি বলেন, এই সময়ে প্রায় ২৬ হাজার ৩৯৪টি যানবাহন সেতুটি অতিক্রম করেছে।
গত ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটির উদ্বোধন করেন এবং পরদিন সকালে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: দ্বিতীয় দিনে ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার টোল আদায়
পদ্মা সেতু কোরবানির আয়োজনে অভাবনীয় সুযোগ তৈরি করেছে: মন্ত্রী
পদ্মা সেতু নতুন বাংলাদেশের প্রতীক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশের নিজস্ব সম্পদে নির্মিত সদ্য উদ্বোধন হওয়া পদ্মা সেতু নতুন বাংলাদেশের প্রতীক যা সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সফলতা অর্জনে সক্ষম বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন।
পর্তুগাল ও কেনিয়ার যৌথ আয়োজনে চলমান দ্বিতীয় জাতিসংঘ মহাসাগর সম্মেলন ২০২২-এর সাইডলাইনে শুক্রবার লিসবনে পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জোয়াও গোমেস ক্রাভিনহোর সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.মোমেন এ কথা বলেন।
এটি ছিল পররাষ্ট্র পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু কোরবানির আয়োজনে অভাবনীয় সুযোগ তৈরি করেছে: মন্ত্রী
ড.মোমেন তার পর্তুগিজ সমকক্ষ ড. জোয়াও গোমেস ক্রাভিনহোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার পাশাপাশি দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন।
এসময় পর্তুগিজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে তার সরকারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
তিনি পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের পর্তুগিজ অর্থনীতিতে অবদানের প্রশংসা করার পাশাপাশি পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করার আশ্বাস দেন।
উভয় পক্ষ দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় স্তরে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ষড়যন্ত্রে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ২ বছর পিছিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রথম দিনে এক্সপ্রেসওয়ের টোল আদায়ে ধীরগতি, দীর্ঘ যানজট
পদ্মা সেতু সংযোগের এক্সপ্রেসওয়ে সড়কের ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার বগাইল টোল প্লাজায় শুরু হয়েছে টোল আদায়। তবে টোল আদায়ের কাউন্টার সংখ্যা কম থাকায় প্রথমদিনেই দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। এতে গাড়ির যাত্রী ও চালকেরা দুর্ভোগে পড়েন। পরে টোল আদায়কারী কাউন্টার বাড়ানো হলে বিকাল ৫টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজার ইনচার্জ ফারুক হোসেন বলেন, সেখানে টোল আদায়ের ১০টি কাউন্টার রয়েছে। তবে প্রথমদিনে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা ফ্লাইওভারমুখী পয়েন্টে তিনটি কাউন্টার দিয়ে এবং বিপরীত দিকে পদ্মা সেতু অভিমুখী সড়কের একটি কাউন্টার দিয়ে টোল আদায় শুরু করেন।
যাত্রী ও চালকেরা অভিযোগ করে জানান, টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে সেখানে রাতেই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা টোল প্লাজার সামনে যানজটে আটকে থাকেন। সকাল নাগাদ যাত্রীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং টোল আদায়কারীদের সাথে উচ্চ স্বরে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে যানবাহনের চাপের মুখে টোল আদায়ের কাউন্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়।
গাড়ির চালক ও যাত্রীরা টোল আদায়ে চরম ধীরগতির অভিযোগ করেন। এভাবে চললে ঈদের আগে পরিস্থিতি আরও নাজুক হবে বলে তারা আশঙ্কা করেন।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হামিদউদ্দিন বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে আউটের জন্য তিনটি এবং সেতুতে ইনের জন্য একটি কাউন্টার চালু করা হয় বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে। এতে সেখানে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে সেখানে গাড়ি চালক ও যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। এসময় তাদের সাথে উত্তপ্ত বাদানুবাদ হলে ১১টার দিকে কাউন্টার সংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন সাতটি কাউন্টার দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিকাল ৫টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
পড়ুন: পদ্মা সেতু কোরবানির আয়োজনে অভাবনীয় সুযোগ তৈরি করেছে: মন্ত্রী
ষড়যন্ত্রে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ২ বছর পিছিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা সেতু কোরবানির আয়োজনে অভাবনীয় সুযোগ তৈরি করেছে: মন্ত্রী
পদ্মা সেতু কোরবানির আয়োজনে অভাবনীয় সুযোগ তৈরি করেছে এবং কোরবানিকেন্দ্রিক অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।শুক্রবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘পদ্মা সেতুর সম্ভাবনা: দেশীয় পশুতে কোরবানি, খামারিদের সমস্যা ও করণীয়' -বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি, আত্মবিশ্বাস, সততা, দৃঢ়তা ও দেশপ্রেমের অকল্পনীয় সিদ্ধান্তে পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে দিয়েছে পদ্মা সেতু।
তিনি বলেন, এ সেতু আমাদের বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করেছে। কোরবানির পশু নিয়ে এক সময় ঘাটে এসে দুই-তিনদিনও অপেক্ষা করতে হতো। পদ্মা সেতু দিয়ে যারা ঢাকা ও দেশের অন্যান্য জায়গায় কোরবানির পশু নিয়ে আসবেন তাদের জন্য পশু পরিবহনের ক্ষেত্রে অভাবনীয় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, এতে একদিকে যেমন কোরবানির জন্য সম্প্রসারিত জায়গা হচ্ছে, অপরদিকে রাস্তা-ঘাটে ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি হচ্ছে না। দেশের প্রান্তিক পর্যায় থেকে ঢাকা বা ঢাকা থেকে অন্যত্র পশু পারাপারে এখন ফেরি পার না হলেও চলে। ফলে ফেরিঘাটকেন্দ্রিক খামারিদের বিড়ম্বনা এখন নেই। পদ্মা সেতুর কারণে কোরবানির পশু পারাপার সহজ হয়েছে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় সম্পদ, বিরোধীরা জাতির শত্রু: হাইকোর্ট
তিনি আরও বলেন, এ বছর আমরা নিয়ম করে দিয়েছি, যিনি কোরবানির পশু নিয়ে আসবেন তিনি পশু ঢাকায় না সিলেটে কোথায় বিক্রি করবেন সেটা তার ব্যাপার। পথে কোন বাজারে তাকে পশু নামাতে জোর করা যাবে না। খামারিদের আরেকটি সুযোগ করে দেয়া হয়েছে, বাড়িতে বা রাস্তায় পশু বিক্রি করলে তাদের কোনো হাসিল দিতে হবে না। কেউ খামারিদের বাজারে এনে পশু বিক্রিতে বাধ্য করতে পারবে না। কোরবানির পশু বাড়িতে বিক্রি করলে নিকটবর্তী বাজার ইজারাদার চাঁদা আদায়ের কথা বলতে পারবে না।শ ম রেজাউল করিম বলেন, রাস্তাঘাট অথবা যেখানে যান চলাচলে বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি হয় সেখানে কোন পশুর হাট বসতে পারবে না। নির্ধারিত জায়গায় হাট বসবে। প্রতিটি স্বীকৃত হাটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি মেডিকেল ব্যবস্থাপনা থাকবে, যাতে অস্বাস্থ্যকর ও রোগগ্রস্ত পশু কেউ যেন সামনে নিয়ে না আসে অথবা সেটা বিক্রি যেন না হয়। হাটে বিনামূল্যে পশু পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও এবারের গরুর হাটে আর্থিক লেনদেনের জন্য স্মার্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থা থাকবে। এভাবে ক্রেতা-বিক্রেতা ও ভোক্তার জন্য একটি নিরাপদ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হবে।মন্ত্রী বলেন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এবার বৃহত্তর সিলেট ও ঢাকার একটি অংশে প্রাণিসম্পদ খাতে যে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে, সেটা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রণোদনা দিয়ে খামারিরা যাতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে এবং এ খাত যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তিনি বলেন, বৃহত্তর সিলেটে স্মরণাতীতকালের বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস হলেও পশু মৃত্যুর সংখ্যা বিশাল নয়। তারপরও ওই অঞ্চলের ক্ষতির বিষয়টি মাথায় রেখে বরিশালসহ দেশের অন্যান্য এলাকার উদ্বৃত্ত পশু এ সব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিপণনের জন্য উৎপাদকদের নিয়ে যেতে হবে। পশু পরিবহনে পথে কোন বাধা থাকবে না। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের কারণে দ্রুততার সাথে এক অঞ্চলের পশু অন্য অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া এখন সহজ। এক্ষেত্রে খামারিদের এগিয়ে আসতে হবে।ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সমস্যা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে বলেও এ সময় জানান মন্ত্রী। এ সমস্যা সমাধানের উপায় বের করতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়ার বিষয়টিও আশ্বস্ত করেন তিনি।ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি এম এ জলিল মুন্না রায়হানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ভেটেরিনারি হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. শফিউল আহাদ ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম সুমন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: খুলনার পর্যটন শিল্পের দুয়ার উন্মোচন
পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানালেন দ. এশীয় নেতারা
পদ্মা সেতু: যশোর থেকে বিমান যাত্রী কমেছে ৫০ শতাংশ
পদ্মা সেতুর প্রভাব পড়েছে দেশের বিমান সেক্টরে। সেতু উদ্বোধনের পাঁচদিনের মধ্যে যশোরে উড়োজাহাজে যাত্রী কমেছে ৫০ ভাগ। বিশেষ করে খুলনা ও সাতক্ষীরার যাত্রীরা এখন বিমানবন্দরমুখী হচ্ছে না। তারা সরাসরি পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহনে অল্প সময়েই ঢাকায় পাড়ি জমাচ্ছেন। এ কারণে প্রায় অর্ধেক সিট খালি রেখেই যশোর থেকে তিনটি এয়ারলাইন্সের বিমান ঢাকার উদ্দেশে উড়াল দিচ্ছে।
দেশে ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়ে বিমান সেক্টরে। জরুরি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া মানুষ তখন জেলার বাইরে যাতায়াত করতেন না। এক পর্যায়ে সরকার দেশের অভ্যন্তরিণ রুটে যাত্রীবাহী বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের শেষ নাগাদ করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে প্রাণ ফিরে আসে বিমান সেক্টরে।
বর্তমানে যশোর বিমানবন্দর থেকে ১৪টি বিমান যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করে। এরমধ্যে বাংলাদেশ বিমানের দুটি ফ্লাইট রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি সংস্থা ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের সাতটি ও নভোএয়ার এয়ারলাইন্সের পাঁচটি ফ্লাইট চলাচল করছে। কিন্তু পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ব্যাপকহারে বিমানের যাত্রী কমতে শুরু করেছে।
গত ২৫ জুন সেতু উদ্বোধনের মাত্র পাঁচদিনের মাথায় যশোর-ঢাকা রুটে বিমানের যাত্রী কমেছে ৫০ ভাগ বলে সূত্রটি জানিয়েছে। কমে যাওয়া যাত্রীদের বেশিরভাগই খুলনা ও সাতক্ষীরার। আরও যাত্রী কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দুটি জেলার বিমান যাত্রীরা পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহনে দ্রুততম সময়ে ঢাকায় চলে যাচ্ছেন। এ কারণে তিনটি এয়ারলাইন্সের ১৪টি ফ্লাইটে ধারণ ক্ষমতার প্রায় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে যশোর-ঢাকা রুটে চলাচল করছে। এতে তাদের ব্যাপক লোকসান হচ্ছে। এ লোকসান এড়াতে বেসরকারি এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ নানা চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতির অবনতিতে ওসমানী বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ
এদিকে যাত্রী ধরে রাখতে বাংলাদেশ বিমান ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স ঈদুল আজহা উপলক্ষে নতুন অফার দিয়েছে। শুক্রবার (১ জুলাই) থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত শুধুমাত্র যশোর থেকে ঢাকা যাত্রী প্রতি নতুন ভাড়া নির্ধারণ করেছে তিন হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ রুটে সকল বিমানে গড় ভাড়া ছিল সাড়ে চার হাজার টাকা। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা আগামীতে ভাড়া কমিয়ে আনার চিন্তা করছে বলেও সূত্রটি জানিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের যশোর স্টেশন ইনচার্জ সাব্বির হোসেন টুটুল বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বিমানে তাদের যাত্রী কমেছে। খুলনা ও সাতক্ষীরা মিলিয়ে যশোরের সব এয়ারলাইন্সে গড়ে ৫০ ভাগ যাত্রী ইতোমধ্যে কমে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি আরও জানান, একটি এয়ারলাইন্স বৃহস্পতিবার থেকে তাদের দুটি ফ্লাইট কমিয়ে দিয়েছে। যদিও বিষয়টি তারা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয়নি।
তিনি বলেন, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স খুলনায় তাদের যাত্রী ধরে রাখতে চলতি সপ্তাহে নতুন তিনটি অত্যাধুনিক বাস যুক্ত করেছে। শুধুমাত্র খুলনার যাত্রীদের জন্য তাদের এয়ারলাইন্সে ছয়টি বাস চলাচল করে ও সাতক্ষীরায় একটি মাইক্রোবাস যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করে। যশোর থেকে বিমানের ঢাকা রুট আগের মত যাত্রী সরগরম নেই।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় সম্পদ, বিরোধীরা জাতির শত্রু: হাইকোর্ট
পদ্মা সেতু: প্রথম দিনে ২ কোটি টাকার বেশি টোল আদায়
ড. ইউনূস শাক দিয়ে মাছ ঢাকছেন: তথ্যমন্ত্রী
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার (২৯ জুন) যে বিবৃতি দিয়েছেন সেটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। একই সঙ্গে পদ্মা সেতু নিয়ে যারা বিরোধিতা করেছেন তারা সারা দেশের মানুষের উল্লাস দেখে লজ্জিত।
তিনি বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে ষড়যন্ত্র ও সেতুর বিরোধিতা করেছেন সেটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। এভাবে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করে কস লাভ নেই। প্রয়োজনে আরও প্রমাণ দেয়া হবে।’
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন্তব্য করেন।
পদ্মা সেতু অর্থায়ন বন্ধের বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস জড়িত নন বলে যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তিনি যে বিবৃতি দিয়েছেন এটি সত্যের অপলাপ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি যে বিরোধিতা করেছেন সেটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট। ড. ইউনূস আগে কখনও এ কথা বলেনি যে আমি এ অপচেষ্টা চালাইনি। বরং বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ হলো তখন দম্ভ করে নানা জায়গায় কথা বলেছেন। যেগুলো এখনও বাতাসে ভেসে বেড়ায়।
তিনি বলেন, 'পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধে অনেকেই বিরোধিতা করেছিলেন। তার মধ্যে অন্যতম প্রধান ব্যক্তি হচ্ছেন, তার প্রতি যথাযথ সম্মান-শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাই, পদ্মা সেতুর বিরোধিতাকারী বিশেষ করে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের বিরোধিতাকারী অর্থায়ন বন্ধের ক্ষেত্রে যারা কুশীলব হিসেবে কাজ করেছিল তার মধ্যে অন্যতম প্রধান ব্যক্তি হচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
হাছান মাহমুদ বলেন, ড. ইউনূসের সাথে হিলারি ক্লিনটনের বিশেষ সখ্যতা থাকার সুবাদে হিলারি ক্লিনটনের মাধ্যমে পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধের যে চেষ্টা চালিয়েছেন, বন্ধ করার ক্ষেত্রে মূল কুশীলবের ভূমিকা পালন করেছিলেন, সেটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট, সেটি দেশ-বিদেশের সবাই জানে।
বিবৃতিতে পদ্মা সেতু হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এটা কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা পদ্মা সেতুর বিরোধিতা করেছিল সারা দেশ যখন উল্লাসিত, তখন তারা প্রচণ্ড লজ্জিত। যারা বিরোধিতা করেছিল তারা লজ্জা ঢাকতে এই বিবৃতি দিয়ে অপচেষ্টা করেছেন।
পড়ুন: আ’লীগের হাত ধরে বাঙালি জাতির সব অর্জন এসেছে: তথ্যমন্ত্রী
মানবিক রাষ্ট্র গড়তে এগিয়ে আসুন: সাংবাদিকদের প্রতি তথ্যমন্ত্রী
ষড়যন্ত্রে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ২ বছর পিছিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের কারণে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ দুই বছর পিছিয়েছে। বুধবার জাতীয় সংসদে তিনি এ কথা বলেন।
২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী দেশের দীর্ঘতম, বহু কাঙ্ক্ষিত সেতুটির উদ্বোধন করেন। দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক প্রত্যাখ্যান করার পর বাংলাদেশ নিজের অর্থায়নে এই মেগা প্রকল্প নির্মাণ করেছে।
আওয়ামী লীগের সিরাজগঞ্জ জেলার সংসদ সদস্য মেরিনা জাহানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, ‘পদ্মা সেতুর ৪২টি পিলার একটি সাহসী বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। আমাদের আবেগ, আমাদের সৃজনশীলতা, আমাদের সাহস, আমাদের সহনশীলতা এবং আমাদের প্রতিশ্রুতি এই পদ্মা সেতুর সঙ্গে জড়িত। সেতুটি নির্মাণে আমরা অনড় ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘অবশেষে আমরা অন্ধকার ভেদ করে আলো ফুটতে দেখলাম। পদ্মার ওপরে লাল, নীল, সবুজ ও সোনালি আলো জ্বলছে।’
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে ঠিকাদার নিয়োগের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হলে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা এবং আইডিবি প্রকল্পের বিভিন্ন প্যাকেজ নির্মাণ তদারকিতে পরামর্শক সংস্থা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে ঋণ চুক্তি স্থগিত করে।
‘২০১৭ সালে কানাডার টরন্টোতে একটি আদালতে দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে, বিশ্বব্যাংক প্রকল্পে ফিরে আসার ঘোষণা দেয়’, প্রধানমন্ত্রী বলেন।
তবে দেশ ও জনগণের স্বার্থে আমরা বিশ্বব্যাংকের ঋণ না নিয়ে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বহুল কাঙ্খিত পদ্মা সেতু প্রকল্পের উদ্বোধন আজ স্বপ্ন নয়, দৃশ্যমান বাস্তবতা, তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সেতুটি দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্রকে চূর্ণ করে দাঁড়িয়েছে, সব চ্যালেঞ্জকে জয় করেছে এবং হার না মানার দৃঢ় মনোবল দেখিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, সেতুটি উদ্বোধনের পর লাখ লাখ বাংলাদেশির সঙ্গে তিনিও খুশি, গর্বিত ও উচ্ছ্বসিত।
তিনি আবারও বলেন, ‘এই সেতুটি শুধু ইট, সিমেন্ট, ইস্পাত, লোহা ও কংক্রিটের একটি অবকাঠামো নয়। এটি আমাদের গর্ব, আমাদের ক্ষমতা ও মর্যাদার প্রতীক। এই সেতুটি বাংলাদেশের জনগণের।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন দেশের দুই অঞ্চলকে একীভূত করে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, প্রশাসনিক, সাংস্কৃতিক ও সার্বিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। বহুমুখী সেতুটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপন, ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন, কৃষি, ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প, ক্ষুদ্র শিল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুকে ঘিরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেকারত্ব কমানোর পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য উপযুক্ত জবাব: প্রধানমন্ত্রী
এছাড়াও, সরাসরি সড়ক ও রেল যোগাযোগ সাধারণ মানুষের কর্মঘণ্টা কমাবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।
জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার অর্থনীতির গতি বজায় রেখে পণ্যের দাম সাধ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে।
তিনি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীল করতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
লক্ষ্মীপুরের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর নিজস্ব প্রযুক্তিতে একটি ছোট পরিসরের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ বিমান এবং মনুষ্যবিহীন এরিয়াল ভেহিকল (ইউএভি) তৈরির কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এই প্রচেষ্টার কৌশলগত দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে বাংলাদেশ একদিন উচ্চ প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার এবং মনুষ্যবিহীন আকাশযান তৈরি করতে সক্ষম হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: যোগাযোগ জাতীয় উন্নয়নের চাবিকাঠি: প্রধানমন্ত্রী
ড. ইউনূস-হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দাবি নিক্সনের
পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থ বরাদ্দ বন্ধের ষড়যন্ত্রের জন্য নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের স্ত্রী চেরি ব্লেয়ারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়েছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন।
ফরিদপুরের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমি ড. ইউনূস, হিলারি ক্লিনটন এবং টনি ব্লেয়ারের (চেরি ব্লেয়ার) স্ত্রীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার দাবি জানাচ্ছি, যাতে তারা দেশের বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র করতে না পারে।’
মঙ্গলবার (২৮ জুন) সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি জানান।
দেশের যারা পদ্মা সেতুর বিরদ্ধে ষড়যন্ত্রে জড়িত তাদের রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর বলেন, বাংলাদেশিদের মধ্যে অন্যতম হলেন ড. ইউনূস, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে তারেক জিয়া।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে তথাকথিত দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর ভাই মজিবুর রহমান চৌধুরীকে দুর্নীতি দমন কমিশন কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে কানাডার আদালতে প্রমাণিত হয়েছে যে এই প্রকল্পে কোনো দুর্নীতির ষড়যন্ত্র ছিল না।
নিক্সন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করে প্রমাণ করেছেন কোনো অপরাধী রেহাই পাবে না।
পড়ুন: ইউনূস সেন্টারের আয়োজনে দ্বাদশ বার্ষিক সামাজিক ব্যবসা সম্মেলন শুরু ২৭ জুন
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. ইউনূসকে আমন্ত্রণ
ড. ইউনূসের মামলার কার্যক্রম দুই মাস স্থগিত থাকবে: আপিল বিভাগ
বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্রী সায়মা ওয়াজেদের মমত্ববোধ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা এবং জাতির পিতার দৌহিত্রী ও বাংলাদেশের অটিজম আন্দোলনের পথিকৃৎ সায়মা ওয়াজেদের জনসাধারণের প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসা এবং মমত্ববোধের এক অনুপম দৃষ্টান্তের নিদর্শন মিলেছে।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েসের ফেসবুকে নিজের ফেরিফাইড পেইজে ‘মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু দৌহিত্রী'র অনুভব-মমত্ববোধ’ শিরোনামে দেয়া একটি স্ট্যাটাস থেকে এ বিষয়টি জানা যায়।
সেখানে সায়মা ওয়াজেদ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিন সেতুর ওপরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অবস্থানকালীন নিজের ক্যামেরায় যে ছবি তুলেছিলেন তাতে বিটিভির কর্তব্যরত দুজন ক্যামেরা পারসনেরও ছবি তিনি তোলেন। পরবর্তীতে ওই ক্যামেরাম্যানদের ছবি তাদের কাছে পৌঁছে দিতে তাঁকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে। এর মাধ্যমে জনসাধারণের প্রতি তাঁর মমত্বাবোধের এক অনুপম দৃষ্টান্ত ফুঠে উঠে উঠেছে বলেও স্ট্যাটাসে উল্লেখ করা হয়। স্ট্যাটাসটি হুবহু নিচে তুলে ধরা হলো-
‘মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু দৌহিত্রী'র অনুভব-মমত্ববোধ’
গত ২৫ জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হিসেবে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগদানের সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। মাওয়া প্রান্তের সুধী সমাবেশে বক্তব্য, টোলপ্লাজায় টোল দেওয়া এবং উদ্বোধন ফলক উন্মোচন শেষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর গাড়িবহর নিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠেন। পরবর্তীতে সেতুর মাঝ বরাবর একটি স্থানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট উপভোগের জন্য শেখ হাসিনা অল্প সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি করেন। এ সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী তাঁর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল একটি ক্যামেরায় বিভিন্ন ছবি তুলতে থাকেন।
পদ্মা সেতুতে দায়িত্বপালনরত বিটিভির দু'জন ক্যামেরাপারসনের একটি ছবি পাঠিয়ে গত পরশু সন্ধ্যায় আমার হোয়াটসঅ্যাপে প্রধানমন্ত্রীর এডিসি টেক্সট করেন যে, ছবিটি আমি যেন ঐ দুই ক্যামেরাম্যানকে পৌঁছে দেই। বিষয়টি ভালোভাবে বোঝার জন্য এডিসিকে ফোন দিলে উনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর কন্যা পুতুল তাঁর নিজ ক্যামেরায় ওই ছবিটি তুলেছেন এবং তাঁর কাছে যেহেতু ঐ ক্যামেরাপারসনদের কন্টাক্ট নম্বর নেই, তাই তিনি এটা তাদের কাছে পৌঁছে দিতে বলেছেন।
কিছুক্ষণ আমি স্থবির হয়ে পড়ি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দৌহিত্রীর মানুষের প্রতি প্রগাঢ় অনুভব আমাকে অভিভূত করে! ঐতিহাসিক ঐ মুহূর্তে অচেনা-অজানা বিটিভির দু'জন ক্যামেরাম্যানের ছবি তিনি না-ই তুলতে পারতেন; আর তুলেই যখন ফেলেছেন, পরবর্তীতে অপ্রয়োজনীয় ছবি হিসেবে তিনি এটি ডিলিট করে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি! এটিই জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের গণমানুষের প্রতি নিখাদ ভালোবাসা ও মমত্ববোধ।
পড়ুন: পদ্মা সেতু: দ্বিতীয় দিনে ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার টোল আদায়
পদ্মা সেতু: দ্বিতীয় দিনে ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার টোল আদায়
পদ্মা সেতুতে যান চলাচলের দ্বিতীয় দিনে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত যানবাহন থেকে টোল আদায় করে সরকার এক কোটি ৯৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা রাজস্ব আয় করেছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হোসেন ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে ১৫ হাজার ২৭৪টি যানবাহন সেতু পারাপার হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটির উদ্বোধন করেন এবং রবিবার সকালে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রতি মাসে ১৩৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা টোল আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। সেই টাকা ১৪০ কিস্তিতে পরিশোধ করা হবে। এ জন্য সরকার বছরে এক হাজার ৬০৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা টোল আদায় করতে চায়।
বিবিএ জানায়, আগামী ৩৫ বছরের মধ্যে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় উঠে যাবে বলে আশা করছে সরকার।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: প্রথম দিনে ২ কোটি টাকার বেশি টোল আদায়
অর্থ মন্ত্রণালয় বিবিএকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে এবং তা ৩৫ বছরের মধ্যে এক শতাংশ সুদের হারে পরিশোধ করতে হবে।
এদিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
এছাড়া সেতুতে যানবাহন থামানো, হাঁটা ও ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষেধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
এ নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে মন্ত্রিসভা।
এছাড়া সেতু পার হওয়ার সময় সবাইকে টোল দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু: প্রথম ৮ ঘণ্টায় ৮২ লাখ টাকার বেশি টোল আদায়
পদ্মা সেতু: টোল বাবদ বছরে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা