নদী
দৌলতদিয়ায় ৩ কিমি. দীর্ঘ যানজট
কয়েক দিনের টানা ছুটি, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে নদী পাড়ের অপেক্ষায় রয়েছে কয়েকশ’ গাড়ি। দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট ছাড়িয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গাড়ির যাত্রীরা দুই-তিন ঘন্টার বেশি ধরে আটকে রয়েছেন।
রবিবার বিকালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুপুর থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ঢাকামুখী যাত্রীবাহী পরিবহনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের গাড়ির চাপ বাড়ে। সেই সঙ্গে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ফরিদপুরের আটরশিগামী গাড়ি ফিরতে থাকায় বাড়তি চাপ তৈরি হয়। এসব গাড়ি মিলে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট ছাড়িয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন তৈরি হয়।
এছাড়া শারদীয় দূর্গাপূজা সহ সাপ্তাহিক ছুটিতে থাকা অনেকে কর্মস্থলের দিকে ছুটছে। ওই সব মানুষবাহী গাড়ির চাপও রয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর এই প্রথম যানবাহনের এতবড় লম্বা লাইন তৈরী হয়েছে।
কয়েক দিনের টানা ছুটি, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে নদী পাড়ের অপেক্ষায় রয়েছে কয়েকশ’ গাড়ি। দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ক্যানাল ঘাট ছাড়িয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গাড়ির যাত্রীরা দুই-তিন ঘন্টার বেশি ধরে আটকে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীর উত্তরা থেকে মহাখালী পর্যন্ত যানজট, যাত্রী দুর্ভোগ চরমে
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ১৬টি ফেরির মধ্যে বর্তমানে চলাচল করছে মাত্র ১০টি ফেরি। এরমধ্যে ৫টি রো রো (বড়), ৪টি ইউটিলিটি (ছোট) এবং ১টি কেটাইপ ফেরি চালু রয়েছে। অবশিষ্ট ফেরি পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানা মধুমতিতে রাখা হয়েছে। এছাড়া দৌলতদিয়া প্রান্তে ৭টি ঘাটের মধ্যে বর্তমানে সচল রয়েছে ৪টি ঘাট। এরমধ্যে পানির নাব্যত কমতে থাকায় ৭নম্বর ঘাটের একটি পকেট বন্ধ রয়েছে। পন্টুনের সংস্কার কাজ চলায় রবিবার সকাল থেকে পকেটটি বন্ধ রাখা হয়েছে। ৬ নম্বর ঘাটটি ইউটিলিটি (ছোট) ফেরির জন্য। সবচেয়ে ব্যস্ততম এবং বড় ৫ নম্বর ঘাট নদী ভাঙনের কবলে পড়ায় ৬ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। ৪নম্বর ঘাট শুধুমাত্র ভিআইপি ফেরির জন্য সচল থাকে। ৩নম্বর ঘাটটি গতকাল শনিবার সারাদিন একটি পকেট যান্ত্রিক সমস্যায় বন্ধ ছিল, বর্তমানে সচল রয়েছে। বাকি ১ এবং ২ নম্বর ফেরি ঘাট ২০১৯ সালে ভাঙনে বিলীন হয়। পরে সংস্কার করলেও ঘাট দুটি চালু হয়নি।
দৌলতদিয়া ঘাট পরিবহন শ্রমিক মো. রানা শেখ বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি সংখ্যা বেশি থাকলেও গাড়ির স্বল্পতায় সবকটি ফেরি চালু করা হয়না। শনিবার সাপ্তাহিক ও ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটিতে অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষ গ্রামের বাড়ির দিকে ছুটছে। আবার পূজাসহ সাপ্তাহিক ছুটি কাটিয়ে কেউ কর্মস্থলের দিকে ছুটতে থাকায় শনিবার রাত থেকে দৌলতদিয়া এবং পাটুরিয়া ঘাটে গাড়ির চাপ পড়ে। এরপর সবকটি ফেরি চালু না করায় দৌলতদিয়া প্রান্তে গাড়ির লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে।
ফরিদপুরের আটরশি ফেরত আলামিন শেখ নামের এক বাসযাত্রী বলেন, গতকাল শনিবার রাতে তারা গাজীপুর থেকে তিনটি বাস বোঝাই করে আটরশিতে যান ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করতে। রাত শেষে সকালে মিছিল ও দোয়া অনুষ্ঠান শেষে দুপুরের পর রওনা করেন। তাদের মতো এরকম শতাধিক আটরশি ফেরত গাড়ি দুই ঘন্টার বেশি লম্বা লাইনে আটকা রয়েছে।
আরও পড়ুন: নতুন অফিস সময়: সকালেই রাজধানীতে তীব্র যানজট
কুষ্টিয়া থেকে আসা লালন পরিবহনের ঘাট তত্বাবধায়ক ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, রবিবার দুপুর থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। অনেকে রয়েছেন যারা সাপ্তাহিক ছুটি শেষে নিজ গন্তব্যে ফিরছেন। অনেকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি কাটাতে ছুটছেন। এছাড়া ফরিদপুরের আটরশি ফেরত অনেক গাড়ি আসায় বাড়তি চাপ দেখা দিয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর প্রথম ঘাট থেকে প্রায় দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার যানবাহনের লাইন তৈরি হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলে ১৬টি ফেরি রয়েছে। যানবাহনের চাপ না থাকায় মাত্র ১০টি ফেরি চালু রেখে বাকিগুলো পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানায় বসিয়ে রাখা হয়। রবিবার দুপুর থেকে ছুটি ও ঈদে মিলাদুন্নবীর কারণে চাপ বাড়তে থাকায় গাড়ির লম্বা তৈরি হয়েছে। প্রয়োজনে আমরা বসিয়ে রাখা ফেরিগুলো নামাতে পারি।
আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনার জেরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিমি দীর্ঘ যানজট
কুশিয়ারা নদী থেকে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
সিলেটের বিয়ানীবাজারে কুশিয়ারা নদীতে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুশিয়ারা নদীর বিয়ানীবাজার উপজেলার কাকরদিয়া তেরাদল এলাকা থেকে লাশটি ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
নিহত ব্যক্তির বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বলে ধারণা করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ক্যালিফোর্নিয়ায় নিখোঁজের দুই দিন পর বাগান থেকে শিশুসহ ৪ ভারতীয়ের লাশ
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুশিয়ারা নদীর কাকরদিয়া তেরাতল এলাকায় স্থানীয় লোকজন লাশটি ভেসে যেতে দেখে পুলিশকে খবর দেন।
বিয়ানীবাজার থানার পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। পরে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, লাশটি ভারত থেকে ভেসে এসেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। লাশটি দীর্ঘ সময় পানিতে থাকায় অনেকটা গলে গেছে, এতে চেহারা চেনা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, পুলিশ নিহত ব্যক্তির নাম পরিচয় জানার চেষ্টা করছে। ময়নাতদন্তের জন্য শনিবার লাশটি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুর্গম পাহাড় থেকে কাঠুরিয়ার লাশ উদ্ধার
চট্টগ্রামের হালদা নদীতে নিখোঁজ কিশোরের লাশ উদ্ধার
অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করুন, দুর্যোগ এড়ান: ফারাক্কা কমিটি
আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) রবিবার এক বিবৃতিতে এই অঞ্চলের সমস্ত অভিন্ন নদী থেকে নিরবচ্ছিন্ন জলপ্রবাহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে যে কোনো আসন্ন পরিবেশগত বিপর্যয় এড়াতে সকল অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহ অপরিহার্য।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের কুশিয়ারা নদী থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহারের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর জনগণের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের কোনো ইঙ্গিত না থাকলেও হঠাৎ করেই কুশিয়ারাকে সামনে আনা হয়েছে।
আইএফসি বলেছে, শুষ্ক মৌসুমে অভিন্ন নদীর পানি থেকে বাংলাদেশকে বঞ্চিত করার সুস্পষ্ট পদক্ষেপ দৃশ্যমান। ৫৪টি অভিন্ন নদীর মধ্যে ৫২টি নদীর পানির প্রবাহ ইতোমধ্যেই প্রত্যাহার করা হয়েছে।
লীন মৌসুমে এখন শুধুমাত্র ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীতে পানির প্রবাহ পাওয়া যায়, সেগুলো বা তাদের উপনদীর উজানে অসংখ্য ব্যারেজ থাকা সত্ত্বেও। কুশিয়ারা ও সুরমা বরাক নদীর শাখা নদী, যা ভারত সীমান্তের কাছে দুই ভাগে ভাগ হয়েছে।
ইতোমধ্যে আসামের ফুলেরতলে বরাকের ওপর একটি ব্যারেজ নির্মাণ করে ১০ হাজার কিউসেক পানি প্রত্যাহার করেছে। কুশিয়ারা ও সুরমার পানি প্রত্যাহারে মেঘনা ও সিলেটের হাওরগুলো শুকিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: বিহারে বন্যা সামাল দিতে ফারাক্কার সব গেট খুলে দিয়েছে ভারত
উল্লেখ্য, ফারাক্কা ব্যারাজ চালু হওয়ার পর থেকে গঙ্গার বার্ষিক জলপ্রবাহ ৫০০ বিলিয়ন বিসিএম থেকে ৫০ বিলিয়ন বিসিএমে নেমে এসেছে।
এর ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল পরিবেশগত বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে।
সুপেয় পানির প্রবাহের অভাবে ইউনেস্কো বলেছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের পানিতে অত্যধিক লবণাক্ততার জন্য বিপর্যয়ের সম্মুখীন। সাগর থেকে দেশের গভীরে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্ট পর্যন্ত লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়েছে।
তিস্তা চুক্তি এখনও নিশ্চয়তার পর্যায়ে রয়েছে-পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বক্তব্য উদ্ধৃত করে আইএফসি আরও বলেছে, প্রায় দুই দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গের গজলডোবা ব্যারাজ থেকে পুরো তিস্তার পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
আইএফসি বলেছে, দেশের অন্যতম প্রধান এই নদীর পানি প্রবাহের অভাবে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল মরুকরণের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
একসময় যে গোমতিকে কুমিল্লার দুঃখ বলা হতো, এখন বর্ষা মৌসুমেও সে নদীতে পানি থাকে না।
আরও পড়ুন: ফারাক্কার প্রভাবে ভাঙছে নবগঙ্গা-মধুমতি
এতে বলা হয়েছে, সহস্রাব্দ বছর ধরে অভিন্ন নদী দ্বারা সৃষ্ট বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ বাংলাদেশের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়েছে, কেননা এটি প্রাকৃতিক ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নদীমাতৃক এ দেশের পরিবেশ, বাস্তুসংস্থান, বাস্তুতন্ত্র, জীবন-জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আইএফসি বলেছে, মানবসৃষ্ট কারণে সৃষ্ট পরিবেশগত বিপর্যয় থেকে দেশকে বাঁচাতে অভিন্ন নদীর পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য সরকারের অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন- আইএফসির চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালু, মহাসচিব সৈয়দ টিপু সুলতান, আইএফসি নিউইয়র্ক শাখার সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমদ,
সিনিয়র সহ-সভাপতি ড. এসআই খান, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইরফানুল বারী এবং আইএফসি বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও আইএফসি সমন্বয়কারী মোস্তফা কামাল মজুমদার।
আরও পড়ুন: ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ায় নাটোরে পানি ক্রমশ বাড়ছে
চট্টগ্রামে নদীতে পড়ে নিখোঁজ ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদী পার হওয়ার সময় নৌকা থেকে পড়ে নিখোঁজ ব্যবসায়ী মো. বাহারুল আলম বাহারের (৬২) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (১ অক্টোবর) সকালে শাহ আমানত সেতুর নিচ থেকে তার লাশ পাওয়া যায়। পরে নগরীর সদরঘাট নৌ-থানার পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে আ.লীগ নেতা হত্যায় সন্দেহভাজন কিশোরের ‘আত্মহত্যা’
ব্যবসায়ী মো. বাহারুল আলম বাহার চট্টগ্রাম বন্দর লাইটারেজ ঠিকাদার সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও মেসার্স বিজয় শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং এজেন্সির মালিক। ভোলার দৌলতখান এলাকার মৃত বেলায়েত হোসেন হাওলাদারের ছেলে বাহারুল। দীর্ঘদিন ধরে কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সদরঘাট নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. একরাম উল্লাহ বলেন, স্থানীয়রা সকালে লাশ ভাসতে দেখে খবর দেয়। এরপর শাহ আমানত সেতুর নিচ থেকে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য- গত বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ২টায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়িতে ফেরার জন্য সদরঘাটে গিয়ে নৌকায় ওঠার সময় ব্যবসায়ী বাহার পা পিছলে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন। পরে খবর পেয়ে নদীতে তল্লাশি শুরু করে নৌ-পুলিশ। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরীরাও তল্লাশি চালায়।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
উলিপুরে গলায় ফাঁস দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা
বর্তমান সরকার নদী রক্ষায় সচেতন: প্রতিমন্ত্রী
বর্তমান সরকার নদী রক্ষায় সচেতন বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি বক্তব্যে নদী রক্ষার কথা বলেন। এতে বুঝতে হবে বর্তমান সরকার নদী রক্ষায় কতটা সচেতন। কেননা শরীরে রক্ত চলাচলে যেমন শিরা উপশিরা প্রয়োজন তেমনি নদী দেশের সকল ধরণের প্রবাহ রাখতে সহযোগিতা করে।’
রবিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আয়োজিত 'রাইটস অব রিভার্স' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নদী রক্ষায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় উল্লেখ করে খালিদ মাহমুদ বলেন, নদীকে দখলমুক্ত করার জন্য আমরা যথাযথ চেষ্টা করছি। তবে নদী রক্ষা ও উদ্ধার কার্যক্রমে বেশ কিছু বাধা পেয়েছি। নদীর তীরে নদীর জায়গায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মন্দিরের মত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠা স্থাপন করা হয়েছে। এ নিয়ে আমরা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এ বিষয়ে আমাদের সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে আরও ৩টি মেরিন একাডেমি স্থাপন করা হবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জনগণকে নদীমুখী করতে পারছি-এটা আমাদের সফলতা। সরকার গঠনের পর বলেছি নদীকে আলোচনায় আনতে হবে, নদী নিয়ে জনগণকে ভাবতে হবে জনগণ এখন নদী নিয়ে ভাবছে, নদীর সঙ্গে চলে এসেছে, এটা আমাদের সফলতা। বঙ্গবন্ধু জলাভূমি ও নদী নিয়ে কথা বলেছেন।
নদী ও জলাভূমি রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, নদীর নাব্যতা রক্ষায় বঙ্গবন্ধু বিআইডব্লিউটিএ'র জন্য অনেকগুলো ড্রেজার সংগ্রহ করেছিলেন, সেগুলো এখনও সচল আছে এবং নাব্যতা রক্ষায় কাজ করছে। বঙ্গবন্ধু মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যা এবং নেনরাজবাড়ীর পাংশায় নদী খনন কাজে অংশ নিয়েছিলেন। নদী রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর পদক্ষেপগুলো নিয়ে কাজ করতে পারলে-আজকে নদীর নাব্য তা ও দূষণ নিয়ে কথা বলতে হতো না। এখন বাস্তবতা হলো-নদীর প্রবাহ ও নাব্যতা কমে গেছে দূষণে ব্যবহার অনুপযোগী হয়েছে।
খালিম মাহমুদ বলেন, নদী রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন গঠন করেছেন, ঢাকার চারপাশে মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটি গড়ে তোলা এবং ১৯৯৯ সালে দূষণরোধে প্রকল্প নেয়ার কথা বলেছিলেন, কিন্তু সেগুলো হয়নি, আরও বেশি দূষণ হয়েছে। সকলের সহযোগিতায় নদী তীর দখলমুক্ত করার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস নিয়ে কাজ করছি, তিনি আমাদের উৎসাহিত করছেন এবং সাহস যুগিয়েছেন। বিআইডব্লিউটিএ'র মাধ্যমে ৯০ ভাগ নদীর জায়গা দখলমুক্তের কাজ হয়েছে।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিজ গোয়েন লুইস। মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন ড. আইনুন নিশাত। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান ও সভাপতিত্ব করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরের প্রত্যেক গেইটে স্ক্যানার বসানো হবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দিব: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
ইলিশ মাছ ধরতে গিয়ে নদীতে পড়ে ফেরির লষ্কর নিখোঁজ
ইলিশ মাছ ধরতে গিয়ে ভোলার তেঁতুলিয়া নদীতে পড়ে ‘কৃষ্ণচূড়া ফেরি’র এক লষ্করের নিখোঁজ হয়েছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় ভোলা সদরের ভেদুরিয়া ফেরিঘাটে এ ঘটনা ঘটে। ভোলা-বরিশাল নৌরুটে চলাচল করে ‘কৃষ্ণচূড়া ফেরি’।
নিখোঁজ আমিরুল ইসলাম (২৫) ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার সালতা গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, এ ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস, নৌ-পুলিশ ও কোস্ট গার্ড যৌথ অভিযান শুরু করেছে। কিন্তু বিকাল পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় নদী থেকে নিখোঁজ যুবকের লাশ উদ্ধার
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভোলার ভেদুরিয়া ফেরিঘাটে ফেরি কৃষ্ণচূড়া লোড হচ্ছিল। লোড শেষে ফেরিটি বরিশালের লাহারহাট ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। ফেরিতে গাড়ি লোড হওয়ার একপর্যায়ে লষ্কর আমিরুল ইসলাম ফেরির পাশ দিয়ে ভাসমান একটি ইলিশ মাছ দেখতে পান।ওই ইলিশ মাছটি উঠাতে গিয়ে ফেরি থেকে পা পিছলে নদীতে পরে যান তিনি। নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় মুহুর্তের মধ্যে তিনি ফেরির নিচে চলে যায়। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করতে ফেরিতে থাকা অন্য স্টাফরা এগিয়ে আসলেও আমিরুল পানিতে তলিয়ে যায়।
এদিকে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ডুবুরি দল নিখোঁজ আমিরুলকে উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে।
ভোলা ফায়ার সার্ভিসের সদস্য মো. হাফিজুর রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে ভোলা ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক উদ্ধার অভিযান চালায়।
তিনি বলেন, তবে ভোলায় ডুবুরি দল না থাকায় বরিশাল থেকে একটি ডুবুরি দল এসেছে। তারা নদীতে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসির ভেদুরিা-লাহারহাট ফেরি সার্ভিসের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) কাওছার আহমেদ খান জানান, বিকাল পর্যন্ত নিখোঁজ আমিনুলের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাকে উদ্ধারে অভিযান চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীর পদ্মায় নৌকাডুবি, নিখোঁজ ৩
নিউজিল্যান্ডে তিমির সঙ্গে ধাক্কা লেগে নৌকাডুবে নিহত ২, নিখোঁজ ৩
ঘিওরে ইছামতি নদীর প্রবল ভাঙন, দুর্ভোগে নদী তীরবর্তী মানুষ
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ইছামতি নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহের ভাঙনে লণ্ড ভণ্ড হয়ে গেছে প্রায় দুইশ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী পুরাতন গরুর হাটের অধিকাংশ জায়গা। হাট সংলগ্ন প্রায় ৫০টি বসতবাড়িও চলে গেছে ইছামতির পেটে। গত তিনদিনের বৃষ্টি আর উজানের ঢলের পানিতে নতুন করে ভাঙনের শিকার হয়েছে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঘিওর-গোলাপনগর রাস্তা, কুস্তা বেইলি ব্রিজ, দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সেতু-কালভার্টসহ নদী তীরবর্তী ১৬টি গ্রাম।
বৃহস্পতিবার থেকে ইছামতি নদীর ওপর নির্মিত কুস্তা এলাকায় বেইলী ব্রিজের দুই পাশের পাদদেশে ভাঙন শুরু হয়। গার্ডারের কাছ থেকে মাটি সরে সংযোগ সড়ক থেকে ব্রিজের মাঝে প্রায় দুই ফুট ফাঁকা হয়ে পড়ে। যে কোন সময় নদীগর্ভে ধসে পড়তে পারে ব্রিজটি। ঝুঁকি এড়াতে ব্রিজের ওপর দিয়ে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে আশপাশের অন্তত ২০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পড়েছে চরম ভোগান্তিতে।
আরও পড়ুন:কপোতাক্ষের ভাঙন: হুমকির মুখে পাইকগাছার বিস্তীর্ণ অঞ্চল
সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকের বাড়ির অর্ধেক অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আসবাবপত্র, অন্যান্য সামগ্রী অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ভাঙনে কুস্তা কফিল উদ্দিন দরজি উচ্চবিদ্যালয় ও কুস্তা ব্রিজ, কুস্তা কবরস্থান, ঘিওর-গোলাপ নগরের রাস্তা, বেপারীপাড়া কবরস্থান, রসুলপুর গ্রামের বসতবাড়ি, বেপারীপাড়া কবরস্থানটি হুমকির মধ্যে রয়েছে। যেকোনো সময় নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে এসব স্থাপনা ও বসতবাড়ি।
এছাড়া পুরাতন ধলেশ্বরী নদীর ভাঙনে শ্রীধরনগর, মাইলাগী, ঘিওর পূর্বপাড়া, ঘিওর নদীর উত্তর পাড়ের বাজার, উপজেলা খাদ্য গুদাম, ব্রিজসহ ১২-১৩টি প্রতিষ্ঠান হুমকির মধ্যে রয়েছে। খাদ্য গুদামের সামনের বেইলি ব্রিজটিও যেকোনো মুহূর্তে চলে যাবে।
ইছামতি নদী পাড়ের বাসিন্দারা বলেন, হঠাৎই এই রকম ভাঙন তারা এর আগে দেখেননি। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১০-১২টি গ্রামের বেশ কিছু এলাকা তছনছ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় ভয় ও আতংকে তাদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে।
ঘিওর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম বলেন, ভয়াবহ ভাঙনে আমার ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক স্থাপনা ইতোমধ্যে নদীগর্ভে চলে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা সাহায্যের পরিবর্তে ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চান। এখন ভাঙন রোধে ভরা নদীতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এসব বালুর বস্তায় কোন কাজই হচ্ছে না। স্থায়ী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ না করলে এই ভাঙন রোধ সম্ভব হবে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।
ঘিওর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) হামিদুর রহমান বলেন, ঘিওর কুস্তা বেইলি ব্রিজের গার্ডারের কাছ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। আপাতত যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্রিজটি রক্ষায় এরই মধ্যে দুই পাড়ে ব্রিজের গাইড ওয়ালসহ জিও ব্যাগ রক্ষার চেষ্টা চলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, ইছামতি নদীটি খালের মত সরু। এর উৎস মুখে খনন করায় পানি প্রবাহ বেড়েছে। এতে হঠাৎই ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে সাড়ে ৮ হাজার জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর কাজ শুরু হয়েছে। আর বেইলী ব্রীজ রক্ষায় গাইড ওয়ালসহ জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। পানির প্রবাহ কমে গেলে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:শহররক্ষা বাঁধে ভাঙন: পাইকগাছা পৌরসদরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
কুড়িগ্রামে ধরলার ভাঙন মুখে তিন শতাধিক পরিবার
তিতাস নদীতে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীতে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘নৌকা বাইচ’ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন এ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় ৫ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা
করোনা মহামারি পরিস্থিতির জন্য বিগত দুই বছর এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তাই ভাদ্রের প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে এসেছেন নদীর দুই পাড়ের ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ। তারা তীরবর্তী ভবনের ছাদ, বিভিন্ন ঘাট ও নৌযানের ওপর বসে প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। আবার কেউ কেউ নৌকা ভাড়া নিয়ে পরিবার পরিজন, বন্ধু-বান্ধবকে সঙ্গে নিয়ে নৌকা বাইচ উপভোগ করেন।
তিতাস নদীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার শিমরাইল কান্দি গাঁওগ্রাম পয়েন্ট থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে পৌর এলাকার মেড্ডা সরকারি শিশু পরিবার পর্যন্ত (প্রায় দেড় কিলোমিটার) গিয়ে প্রতিযোগিতা শেষ হয়।
প্রতিযোগিতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার ১৩টি নৌকা অংশ নেয়। এরমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের ছয়টি করে এবং কিশোরগঞ্জের একটি নৌকা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত
প্রথম চারটি ধাপে ১৩টি নৌকা প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়। প্রত্যেকটি ধাপ থেকে একটি করে বিজয়ীসহ চারটি নৌকা চুড়ান্ত প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়।
বিকাল আড়াইটায় তিতাসের শিমরাইলকান্দি গাঁওগ্রাম পয়েন্টে বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
উদ্বোধনের পর রং-বেরঙের বাহারি পোশাক পরিহিত প্রতিযোগী নৌকা বাইচের মাঝিদল তাদের সুসজ্জিত নৌকা নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এসময় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে মাঝিদের ভাটিয়ালী গান আর পানিতে বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দে পুরো এলাকা মুখরিত হয়।
এ সময় বাইচ নির্বিঘ্ন করতে নদীতে জেলা পুলিশ ও নৌ পুলিশসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল দেয়।
প্রতিযোগিতা শেষে বিকালে মেড্ডা সরকারি শিশু পরিবার পয়েন্টে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলমের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ফাহিমা খাতুন প্রমুখ।
প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অধিকারী নৌকাকে এক রাখ টাকা, ২য় অধিকারী নৌকাকে ৬০ হাজার টাকা ও ৩য় অধিকারী নৌকাকে ৩০ হাজার টাকা পুরষ্কার প্রদান করা হয়। এছাড়া বাকি অংশগ্রহনকারী প্রত্যেক দলকে ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়।
নৌকা বাইচে সহযোগীতায় ছিলেন দারাজ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানী লিমিটেড ও ইউনিভার্সেল মেডিকেল সার্ভিস লিমিটেড।
আরও পড়ুন: ধলেশ্বরীতে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত
বরিশালে ৯ নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে
পূর্ণিমা ও সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় বরিশালের গুরুত্বপূর্ণ ৯টি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), বরিশাল।
জানা গেছে, কীর্তনখোলা নদী, ঝালকাঠীর বিষখালী নদী ও ভোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর পানি বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। দৌলতখানের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিনের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বরিশালে ৫ নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে
কুড়িগ্রামে কমেছে নদ-নদীর পানি, বেড়েছে ভাঙন
এছাড়া, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের পায়রা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯সেন্টমিটার ও বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বিষখালী নদীর পানি বিপদসীমার ৫৩ সেন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
অন্যদিকে, পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টমিটার ও উমেদপুরের কঁচা নদীর পানি বিপদসীমার ১২ সেন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
তবে বরগুনা সদরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বিষখালী নদীর পানি এখনো বিপদসীমার নিচে অবস্থান করছে।
পাউবোর জলানুসন্ধান বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুম জানান, আরও দুই দিন জোয়ারের সময়ে পানি বাড়বে। পানি বৃদ্ধির কারণে বিভাগের নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া বরিশাল নগরীর নিম্নাঞ্চলসহ জেলা-উপজেলা সদরের নিচু এলাকায় পানি ঢুকেছে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জেষ্ঠ্য উচ্চ পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল জানান, রবিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৬৩ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় দক্ষিণাঞ্চলের ওপর দিয়ে দমকা ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রপাত এবং হালকা থেকে মাঝারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলে এক থেকে দুই ফুটেরও বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে। পানির উচ্চতা আরও দুই থেকে তিন ফুট বাড়তে পারে। পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন ও বরিশাল নদী বন্দরকে এক নম্বর সতকর্তা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বরিশালে বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রী হ্রাস ও রাতের তাপমাত্রা অপরবর্তীত থাকতে পারে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাকে তীরে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র-ধরলা নদীর পানি বাড়ছে, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
ফরিদপুরের নদ-নদীর পানি বাড়ছে, ডুবছে ফসল
চুয়াডাঙ্গায় নদী থেকে নিখোঁজ যুবকের লাশ উদ্ধার
চুয়াডাঙ্গায় পুলিশের হাত থেকে পালাতে গিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়ার একদিন পর মাথাভাঙ্গা নদী থেকে ২৫ বছর বয়সী এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত টোকন আলী আলমডাঙ্গা উপজেলার নতুনপাড়া এলাকার অদুচ্ছ উদ্দিনের ছেলে।
আরও পড়ুন: শ্বশুরবাড়ির টয়লেট থেকে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর যুবকের লাশ উদ্ধার
হাটবোয়ালিয়া পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জাহিদুল হক জানান, বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ভাঁবাড়িয়া গ্রামের নদীর তীরে ঝোপের নিচে তাস খেলায় চারজনকে ধাওয়া করে তারা। চারজনের মধ্যে দুজনকে আটক করা হলেও বাকি দুজন নদীতে ঝাঁপ দেন।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে আবর্জনা থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
এএসআই জানান, টোকন আলী নামে এক সবজি বিক্রেতা সাঁতার না জানার কারণে প্রবল জোয়ারে ভেসে যান। আর অন্য একজন সাঁতরে নিরাপদে স্থানে যেতে সক্ষম হন। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন বুধবার নদীতে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে সারাদিন তাকে খুঁজে পায়নি।
বেআইনি কিছু না পাওয়ায় আটক দুজনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: যমুনায় নিখোঁজের দুই দিন পর যুবকের লাশ উদ্ধার
পরে বৃহস্পতিবার বিকালে খুলনা ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল নতিডাঙ্গা ঘাট সংলগ্নের নদী থেকে নিখোঁজ যুবকের লাশটি উদ্ধার করে।
এই ঘটনাকে অপ্রত্যাশিত বলে উল্লেখ করেছেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার আনিসুজ্জামান লালন।