বিএনপি
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের লক্ষ্যে ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফখরুল দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সকাল ৭টায় সাভারের জাতীয় সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
পরে তারা দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলানগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সেখানে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আয়োজনে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জামানত হারাবে: ফখরুল
এছাড়া সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
দিবসটি পালনে জাতীয় পত্রিকায় ক্রোরপত্র প্রকাশের ব্যবস্থাও নেবে বিএনপি।
আগামী ২৫ মার্চ মহানগর নাট্যমঞ্চে বা নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আলোচনা সভা করবে দলটি।
আগামী ২৭ মার্চ, বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা শাখা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ’ করবে।
আরও পড়ুন: যমুনা নদী সংকীর্ণকরণ প্রকল্প বাতিলের দাবি বিএনপির
সারাদেশে বিএনপির সকল জেলা, উপজেলা ও পৌরসভা শাখা এবং দলের সকল সহযোগী সংগঠনও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করবে।
সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকায় এবার স্বাধীনতা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ‘স্বাধীনতা দিবস এখন আরও প্রাসঙ্গিক এবং এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।’
তিনি বলেন, তাদের দল ১০ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশের স্বাধীনতা রক্ষার নতুন শপথ নেবে।
স্বাধীনতা দিবসের আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ অন্য রাজনৈতিক রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ ‘অস্বাভাবিক চোর’: ফখরুল
আওয়ামী লীগ ‘অস্বাভাবিক চোর’: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন (এসসিবিএ) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ক্ষমতাসীন দলকে 'অস্বাভাবিক চোর' বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তাদের (আ. লীগের) লক্ষ্য একটাই, চুরি করা। আমরা সাধারণত তাদের ভোট চোর বলি। তারা জাতীয় নির্বাচনে এমনকি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও কারচুপি করে। ‘এখন তারা সুপ্রিম কোর্ট ও ঢাকা বারে ভোট কারচুপি করেছে। আসলে, তারা অস্বাভাবিক চোর।’
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়েছে সরকার: ফখরুল
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ফখরুল আরও বলেন, আওয়ামী লীগ চুরি ছাড়া কিছুই করে না। ‘তারা চুরি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে এবং এটি তাদের পেশা এবং নেশা... তারা চুরির মাধ্যমে দেশের সম্পদও নষ্ট করেছে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দল ব্যাপক চুরি করে দেশের বিদ্যুৎ খাত ধ্বংস করেছে।
সুপ্রীম কোর্ট বার নির্বাচনের বিষয়ে ফখরুল বলেন, নির্বাচনের আগের রাতে (মঙ্গলবার রাতে) ভূয়া ও স্ট্যাম্পযুক্ত ব্যালট পেপার পাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে তোলপাড় শুরু হয়। ‘তারা (আ.লীগপন্থী আইনজীবীরা) আমাদের সাতবারের নির্বাচিত সুপ্রিম কোর্ট বারের সেক্রেটারিকে (মাহবুবউদ্দিন খোকন) লাঞ্ছিত করে আহত করেছে।’
এ ঘটনায় খোকনসহ বিএনপিপন্থী এক হাজার আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিএনপি নেতা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা এখন কোন দেশে বাস করি? এই দেশকে আমরা কোথায় নিয়ে এসেছি? এর জবাব জনগণের কাছে আওয়ামী লীগকে দিতে হবে। তারা এ দেশকে চরম ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। তারা আমাদের সকল সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করেছে। তারা আমাদের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
বুধবার সকাল ১০টার দিকে এসসিবিএ নির্বাচনে দুই দিনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়, কিন্তু কিছু বিএনপিপন্থী আইনজীবী একজন নিরপেক্ষ ব্যক্তির নেতৃত্বে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালে তা স্থগিত করা হয়।
জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের লেখা ‘আমার রাজনীতির রোজনামচা’ বইয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে এ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: সরকার আহমদিয়াদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অনুমতি দিল কেন ফখরুলের প্রশ্ন, এটিকে ‘বিতর্কিত’ বলেছেন
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জামানত হারাবে: ফখরুল
যমুনা নদী সংকীর্ণকরণ প্রকল্প বাতিলের দাবি বিএনপির
'যমুনা নদী সংকীর্ণকরণ প্রকল্প' অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। এতে পরিবেশ ও জলবায়ুর ওপর মারাত্মক খারাপ প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে দলটি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন,সোমবার আমাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সরকারের বিপজ্জনক 'যমুনা নদী সংকীর্ণকরণ প্রকল্প' নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, তাদের দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের পরিবেশ, প্রকৃতি, মানুষের জীবন-জীবিকা এবং জলবায়ুর মারাত্মক ক্ষতি করবে।
তিনি বলেন, আমরা এ ধরনের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, যমুনা নদীর প্রস্থ ১৫ কিলোমিটার থেকে কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার করতে এক হাজার ১১০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে 'যমুনা নদী তীর রক্ষা ও ঝুঁকি প্রশমনের জন্য টেকসই অবকাঠামো' শীর্ষক প্রস্তাবিত প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে।
প্রকল্পের তীব্র বিরোধিতা করে ফখরুল বলেন, এই পাইলট প্রকল্পের জন্য সরকার ইতোমধ্যে অর্থ বরাদ্দ করেছে। ‘এটি একটি মারাত্মক এবং আত্মঘাতী প্রকল্প। সরকারের সমস্যা হলো যে দেশের জন্য জরুরি প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতে তাদের মনোযোগ নেই।’
তিনি বলেন, বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীকে দূষণমুক্ত করার কোনো উদ্যোগ বা প্রকল্প নেই। কার স্বার্থেই তারা হাজার বছর ধরে প্রবাহিত যমুনা নদীকে সংকুচিত করতে চায়।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জামানত হারাবে: ফখরুল
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, সরকার একটি নদী ধ্বংস করে বিপুল পরিমাণ জনগণের টাকা লুটপাট করার প্রকল্প নিয়েছে। ‘এই প্রকল্প অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং এই প্রকল্প সম্পর্কে জনগণকে স্পষ্ট ধারণা দিতে হবে।’
ফখরুল আরও বলেন, সরকার দুর্নীতির প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে বিদ্যুৎ খাতকে বেছে নিয়েছে এবং তারা এ খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারও জনগণের টাকা লুট করতে একের পর এক বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: সরকার আহমদিয়াদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অনুমতি দিল কেন ফখরুলের প্রশ্ন, এটিকে ‘বিতর্কিত’ বলেছেন
সরকার আহমদিয়াদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অনুমতি দিল কেন ফখরুলের প্রশ্ন, এটিকে ‘বিতর্কিত’ বলেছেন
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সাম্প্রতিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজনে সরকারের অনুমতি দেয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। একই সঙ্গে তাদের ধর্মসভাকে ‘বিতর্কিত’ বলে অভিহিত করেছেন।
ফখরুল গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন তোলেন যে সরকার কেন এমন বিতর্কিত অনুষ্ঠানের অনুমতি দিল? – যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশবাসীর মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
গত ৩ মার্চ পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সাম্প্রদায়িক হামলায় দুজন নিহত ও ৫০ জনের বেশি আহত হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা আহমেদনগরে অবস্থিত আহমদিয়া সম্প্রদায়ের প্রায় ২০টি বাড়িও লুট করে।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়েছে সরকার: ফখরুল
ফখরুলের মন্তব্য এমন সময়ে এসেছে যখন জামায়াতে ইসলামীর টুইটার অ্যাকাউন্ট বাশেরকেল্লা- আহমদিয়া ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ঘিরে সহিংসতা বন্ধে পুলিশের পদক্ষেপের নিন্দা করেছে এবং সম্প্রদায়কে ‘বয়কট’ করার আহ্বান জানিয়েছে। আহমদিয়া সম্প্রদায় এটিকে তাদের বিরুদ্ধে একটি ‘ঘৃণাত্মক প্রচারণা’ বলে অভিহিত করেছে।
এদিকে, জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম ৫ মার্চ একটি বিবৃতিতে সরকারকে আহমদিয়া সম্প্রদায়কে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘অমুসলিম’ ঘোষণার দাবি জানান।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জামানত হারাবে: ফখরুল
উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বাগেরহাট বিএনপির ১৫ নেতা
বাগেরহাটে নাশকতা মামলায় কারাগারে থাকা বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। সোমবার (১৩ মার্চ) বিকালে হাইকোর্টের বিচারপতি এমডি সেলিম এবং বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের দ্বৈত বেঞ্চ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. নিতাই রায় চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান, বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহবায়ক এটিএম আকরাম হোসেন তালিম, সাবেক সভাপতি এমএ সালাম, বিএনপি নেতা শাহেদ আলী রবি, সোহেল তরফদার, শহিদুল ইসলাম, এমডি সাইদ শেখ, রফিকুল নকিব, মো. আবুল হাসান, মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার, মো. ফিরোজ বিশ্বাস, শেখ সিরাজুল ইসলাম, মীর মোশাররফ হোসেন, আমিরুল শেখ ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আইয়ুব আলী মোল্লা বাবু।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে বিএনপির পদযাত্রা থেকে ২৫ নেতাকর্মী আটক
বিএনপি নেতাদের আইনজীবী ওয়াহিদুজ্জামান সোহেল বলেন, নিম্ন আদালতে নেতাকর্মীদের জামিন না হওয়ায়। আমরা উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করি। বিচারপতি এমডি সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের দ্বৈত বেঞ্চ আমাদের ১৫ নেতাকর্মীকে জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে তারা কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।
এর আগে গেল ২৫ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ সালামের মুনিগঞ্জস্থ বাসভবন এবং পুরাতন বাজারসহ শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির ৩০ নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। পরে নাশকতার মামলা দায়ের করে আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেই থেকে বাগেরহাট জেলা কারাগারে রয়েছে আটক নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের ৪ মামলায় বিএনপির ১০২ নেতাকর্মীর আগাম জামিন লাভ
খুলনায় নাশকতার মামলায় বিএনপির ৬৬ নেতাকর্মী কারাগারে
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ জামানত হারাবে: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না।
তিনি বলেন, নির্বাচনকালে নিরপেক্ষ সরকারে আওয়ামী লীগের আপত্তির একটাই কারণ, তারা জানে যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন হয়, তাদের কারও জামানত থাকবে না।
সোমবার (১৩ মার্চ) ঠাকুরগাঁয়ের নিজ বাড়িতে জেলা বিএনপি আয়োজিত বর্ধিত সভায় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পঞ্চগড়ের সহিংসতা সরকারের পাতানো ঘটনা। সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদেই এই ঘটনা ঘটেছে। এর সম্পূর্ণ দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এবং আসল আসামিদের আড়াল করতেই বিএনপি’র ওপর দোষ চাপাচ্ছে। আর এর সঙ্গে তো সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো রয়েছেই।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়েছে সরকার: ফখরুল
রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়েছে সরকার: ফখরুল
পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলাকে পূর্বপরিকল্পিত আখ্যায়িত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,সরকার প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতেই এই হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলন থেকে জনগণের মনোযোগ অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে এবং দেশে-বিদেশে বিএনপি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পরিকল্পিতভাবে এটি করা হয়েছে। সরকার তার নিজের লোকদের দিয়ে এটা করেছে।’
রবিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাম্প্রদায়িক ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির সদস্যদের প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।।
এসময় মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার মূলত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য বিএনপির চলমান আন্দোলনকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছে এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে জড়িয়ে দেশে ও বিদেশে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেছে।
ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের দোষারোপ করে সরকার নৃশংস দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, বিরোধী দলকে দমন করতে এবং চলমান আন্দোলন বানচাল করতেই তারা এটা করেছে।
ফখরুল বলেন, যে কোনো ঘটনা নিজে ঘটিয়ে অন্যের ওপর দোষ চাপানো আওয়ামী লীগের পুরনো অভ্যাস। তারা অতীতেও অগ্নিসংযোগের জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি গত ৮ মার্চ সহিংসতা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ভুক্তভোগী,এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন তৈরি করে।
তিনি বলেন, পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট একটি অমানবিক ও মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা দেশে এ ধরনের ঘটনা দেখতে চাই না।
আরও পড়ুন: ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার নীলনকশা তৈরি করছে সরকার: ফখরুল
ফখরুল বলেন, সরকার ও পুলিশের চরম দায়িত্বে অবহেলার কারণে, এ ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত কি না তা নিয়ে জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার এখন এক হাজার চিহ্নিত ব্যক্তিসহ ১২ হাজার জনের বিরুদ্ধে ২০টি মামলা করে সহিংসতা কবলিত এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে।
ফখরুল বলেন, পুলিশ ইতোমধ্যে ১৮১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, 'আমরা মনে করি প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার জন্যই সরকার পাইকারিভাবে মানুষকে গ্রেপ্তার করছে। তারা তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এটি করছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য জনগণের আন্দোলনকে পুরোপুরি দমন ও বিচ্যুত করার জন্য সরকার এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনার পরিকল্পনা করেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি সবসময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সব ধর্মের সমান অধিকারে বিশ্বাস করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের অভাব ও সরকারের জবাবদিহিতার অভাবে দেশে পঞ্চগড়ের মতো ঘটনা ঘটছে। বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠাই এ ধরনের সমস্যার একমাত্র সমাধান।
উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ পঞ্চগড় জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য দুজন মুসলমানকে হত্যা করেছে বলে গুজব ছড়িয়ে দেয় একটি স্বার্থান্বেষী মহল।
গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর কিছু যুবক লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে, অগ্নিসংযোগ করে এবং আহমদিয়া সম্প্রদায়ের দোকানপাট ও বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুট করে।
আরও পড়ুন: ১৮ মার্চ সব মহানগরে সমাবেশের ঘোষণা বিএনপির
বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না, ইইউকে জানালো বিএনপি
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে বিএনপি। এসময় দলটির নেতারা রাষ্ট্রদূতদের বলেছেন, তাদের দল বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না।
রবিবার বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মতোই সব গণতান্ত্রিক দেশও বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচনের পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা ইইউ রাষ্ট্রদূতদের স্পষ্ট করে বলেছে যে তাদের দল বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না।
তিনি বলেন, ইইউভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি, আইনের শাসন, মানবাধিকার, বাকস্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পর্যবেক্ষণের চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার নীলনকশা তৈরি করছে সরকার: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে যেহেতু দেশ এবং এর বাইরেও পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে, স্বভাবতই বিষয়টিতে তাদের (ইইউর) দৃষ্টি রয়েছে। সেইদিক থেকে আমরা আজ (রবিবার) তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’
গুলশানের এবিসি হাউসে দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির নেতৃত্বে ফ্রান্স, ইতালি, সুইডেন, জার্মানি, স্পেন, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন আমির খসরু, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান।
আগামী নির্বাচন নিয়ে তারা কী আলোচনা করেছেন জানতে চাইলে খসরু জানান, 'বেআইনি' সরকার ক্ষমতায় থেকে দেশের জনগণের ভোটাধিকার 'ছিনিয়ে' নেয়ায় বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা কীভাবে ভেঙে পড়েছে তা নিয়ে তারা কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে দেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারলে বাংলাদেশ সংকটে পড়বে বলে বিদেশিরাও আশঙ্কা করছে। ‘এই শঙ্কা থেকে তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) আগামী নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এবং কীভাবে এটিকে নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করা যায় তা জানতে চায়।’
তিনি বলেন, বিশ্বের যেসব দেশ বাংলাদেশকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, তারা স্পষ্টই জানে যে এদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না এবং বর্তমান ‘দখলকারী সরকারের’ কারণে তারা তাদের প্রতিনিধি, সরকার ও সংসদ নির্বাচন করতে পারবে না। ‘তারা (ইইউ দেশগুলো) এই সত্যটি সম্পর্কে সচেতন এবং তারা এর পিছনের কারণগুলোও জানে।’
নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে খসরু নেতিবাচক জবাব দেন।
আরও পড়ুন: আ.লীগ দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলেছে: বিএনপি মহাসচিব
আদানির সঙ্গে বিদ্যুতের চুক্তি বাতিলের দাবি বিএনপির
২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার নীলনকশা তৈরি করছে সরকার: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার নীলনকশা অনুযায়ী আরেকটি 'সাজানো' নির্বাচন করতে চায়।
শনিবার এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার জন্য প্রতিবেশি দেশের জন্য ঘুষ হিসেবে ভারতীয় আদানি গ্রুপের সঙ্গে একটি রাষ্ট্রবিরোধী বিদ্যুত চুক্তি সই করেছে।
দেশের সব মহানগর ও জেলায় যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ মহানগর শাখা। ফখরুলের নেতৃত্বে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মসূচিতে দল ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।
এসময় বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার সংবিধানকে ‘বিকৃত’ করেছে এবং একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা করেছে।
ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দুটি নির্বাচন হয়েছে জনগণের ভোট ছাড়াই… এখন তাদের ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা রয়েছে। সেই নীলনকশা নিয়ে তারা ২০২৪ সালেও একই পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে চায়।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদেরকে দেশের মালিক মনে করে, আর জনগণ তার প্রজা।
আরও পড়ুন: ১৮ মার্চ সব মহানগরে সমাবেশের ঘোষণা বিএনপির
১৮ মার্চ সব মহানগরে সমাবেশের ঘোষণা বিএনপির
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে ১৮ মার্চ দেশের সব মহানগরে সমাবেশ করবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
শনিবার ঢাকাসহ দেশের সব জেলা শহর ও ১৩টি সাংগঠনিক বিভাগীয় শহরে বিরোধী দলের মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে যুগপৎ আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বিএনপি ও তার জোটের শরিক দলগুলোর জ্যেষ্ঠ নেতারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা, অন্যান্য শহর ও জেলায় মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন এবং ১৮ মার্চ একই ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বিরোধী দলগুলোর প্রতিবাদ, ক্ষমতা ছাড়তে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে বিনা শর্তে মুক্তি দেয়া, খালেদা জিয়াসহ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে 'মিথ্যা' মামলা প্রত্যাহার এবং দলের ১০ দফা দাবি মেনে নেয়ার লক্ষ্যেই এই কর্মসূচি।
আরও পড়ুন: সব মহানগর ও জেলায় মানববন্ধন করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো