������������������
তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের জন্য বিচারপতি খায়রুলকে ইতিহাস ক্ষমা করবে না: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের জন্য 'অনৈতিকভাবে' (রাজনীতির) মাঠ তৈরি করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার জন্য ইতিহাস কখনই সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে ক্ষমা করবে না।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য হাস্যকর: মির্জা ফখরুল
রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে সচেতন নাগরিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং তাদের অস্তিত্ব সাধারণ নির্বাচন পরিচালনায় একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘সংসদ আইন পাস করেছে (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে), কিন্তু বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক এর জন্য ভিত্তি তৈরি করেছেন। এর জন্য ইতিহাস তাকে কখনো ক্ষমা করবে না। তিনি প্রথমে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন এবং পরে অবসর গ্রহণের ১৬ মাস পর বেসামরিক হিসেবে সংক্ষিপ্ত সংস্করণটি পরিবর্তন করে অনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ রায় দিয়েছিলেন।’
নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৯৪ সালে সর্বপ্রথম একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের দাবি নিয়ে আসে এবং ১৭৩ দিন হরতাল (সাধারণ ধর্মঘট) জারি করে। সে সময় তাদের দাবি ছিল দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না।
পরে ফখরুল বলেন, দেশ স্বাধীনের পর গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যথাযথ বিকাশ না হওয়ায় বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিবেচনায় খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন বিএনপি সরকার সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চারটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ২০৪১ সাল পর্যন্ত জনগণের ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় থাকার এবং বিরাজনীতিকরণের চক্রান্তের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ এটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) বাতিল করে দেয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে তারা শ্মশান করে দিয়েছে: চট্টগ্রামে মির্জা ফখরুল
দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশ যুবক উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সুস্থ রাজনৈতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য তরুণদের সংগঠিত করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, যারা বলপ্রয়োগ ও রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় থেকেছে অতীতের সব ঔপনিবেশিক ও পাকিস্তানি নিয়ম এবং এইচ এম এরশাদের স্বৈরাচারী শাসনকে ছাড়িয়ে গেছে আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন। ‘আওয়ামী লীগ সরকার তার দুঃশাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’
ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ করা উচিত:
‘বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প সরকারের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে’- সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, অপরিকল্পিত এই প্রকল্পের কারণে যাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি দেখছি বিআরটি প্রকল্পের রাস্তার মাঝখানে দোকান এবং টিকিট কাউন্টার তৈরি করা হচ্ছে… আমি বুঝতে পারছি না তারা ঠিক কী নির্মাণ করছে। ওবায়দুল কাদের আজ (রবিবার) বলেছেন যে এটি (বিআরটি) গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা একটা নির্লজ্জ মন্তব্য। তারা নিজেরাই এই প্রকল্প নিয়েছে, তাই এই মন্তব্য করার আগে তার পদত্যাগ করা উচিত ছিল।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, সরকার গাজীপুর থেকে বিআরটি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১০ বছর ধরে ঢাকা নগরবাসীকে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
তিনি বলেন, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সদস্যরা সরকারের অপকর্ম ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছেন না। ‘এই সরকার কী ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে আমরা এখন তাদের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করতে ও স্বাধীনভাবে লিখতে ভয় পাচ্ছি। সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। বাংলাদেশের এমন পরিস্থিতি আমরা কখনো কল্পনাও করিনি।’
বিচার বিভাগকে রাজনীতিকরণ থেকে মুক্ত করে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারে সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য তরুণ আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
আরও পড়ুন: পুলিশ ‘অবৈধভাবে’ বিরোধীদের তথ্য সংগ্রহ করছে: মির্জা ফখরুল
শক্তিশালী আন্দোলনের তোড়ে ভেসে যাবে আ.লীগ: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রের নামে 'স্বৈরাচার' কায়েম করেছে। কিন্তু মানুষ এখন জেগে উঠেছে। বিরোধীদের শক্তিশালী আন্দোলনের তোড়ে সরকারের এ ধরনের দমন-পীড়ন ধুয়ে মুছে যাবে। শনিবার ময়মনসিংহে বিভাগীয় গণ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশাল সমাবেশের বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনের সাম্প্রতিক উপনির্বাচন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না বলে বিএনপির যে আশঙ্কা তা সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
‘আওয়ামী লীগের দেহের রসায়নে সন্ত্রাস ও চুরি আছে যেখান থেকে তারা বের হতে পারে না। তাই, তারা প্রায়ই চিৎকার করে, লাঠি দিয়ে মানুষকে আক্রমণ করে এবং হুমকি ও সতর্কতা জারি করে। বাংলাদেশের জনগণ তাদের (আ.লীগের) ঔদ্ধত্য ও হুমকিতে আর ভীত নয়। মানুষ এখন জেগে উঠেছে।’
ময়মনসিংহে চলছে বিএনপির দ্বিতীয় বিভাগীয় সমাবেশ
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ময়মনসিংহ নগরীতে বিএনপির দ্বিতীয় বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দেন দলটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী। শনিবার দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠে ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সমাবেশস্থলের আশপাশে এবং শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে বিএনপির সমাবেশে পুলিশের গুলিতে দলের পাঁচ নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহে ‘অঘোষিত’ পরিবহন ধর্মঘট
বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহে ‘অঘোষিত’ পরিবহন ধর্মঘট
বিএনপির সরকারবিরোধী সমাবেশকে সামনে রেখে শনিবার ময়মনসিংহ বিভাগে ‘অঘোষিত’ পরিবহন ধর্মঘট জারি করা হয়েছে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স ইউএনবিকে বলেন, শনিবার বিকালে ময়মনসিংহের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে বিএনপি নেতাকর্মীরা যাতে সমাবেশে যোগ দিতে না পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষ এ ধরনের ধর্মঘটের আয়োজন করেছে।
তিনি বলেন, সকাল থেকে ‘সরকারের নির্দেশে’ আন্তঃজেলা রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে তাদের দলীয় কর্মীরা সমাবেশে যোগ দিতে সমস্যার মুখে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে চলছে বিএনপির দ্বিতীয় বিভাগীয় সমাবেশ
তবে বাস অপারেটররা বলেছেন যে অনেক বাস কোম্পানি তাদের গাড়ির ক্ষতির আশঙ্কায় তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছে, কারণ সম্প্রতি চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে এমন ঘটনা ঘটেছে।
প্রিন্স ইউএনবিকে বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীরা এখনও হেঁটে বা মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি বা অন্যান্য ছোট যানবাহনে সমাবেশে আসছেন। ময়মনসিংহে আসার জন্য আগে ভাড়া করা অনেক প্রাইভেট গাড়ি হঠাৎ করে নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে আমাদের লোকদের বহন করতে অস্বীকৃতি জানায়।’
বিএনপির পরিকল্পিত বিভাগীয় সমাবেশের অংশ হিসেবে দলটির ময়মনসিংহ মহানগর শাখা দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশের আয়োজন করেছে। ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে প্রথমটি অনুষ্ঠিত হওয়ায় এটি হবে দলের দ্বিতীয় বিভাগীয় সমাবেশ।
ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ইউএনবিকে বলেন, চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে অনেক যানবাহন ভাঙচুর করায় যানবাহন মালিকরা নিরাপত্তার কথা ভেবে পরিবহন পরিষেবা বন্ধ করে দেন।
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভূঁইয়া জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তারা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছেন।
চলমান বিদ্যুৎ সংকট ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দলটির করা সরকার বিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে বিরোধী দলের পাঁচ নেতাকর্মী নিহতের ঘটনায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি শহরে বিভাগীয় পর্যায়ে জনসভা করার ঘোষণা দেয় বিএনপি।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে বিশাল সমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে দলটি।
আরও পড়ুন: বিএনপির সামনে কোনো বাধাই এখন দাঁড়াতে পারবে না: ফখরুল
১০ ডিসেম্বর থেকে দেশ চালাবেন খালেদা-তারেক: আমান
বিএনপির সামনে কোনো বাধাই এখন দাঁড়াতে পারবে না: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার ‘পুনরুদ্ধার’-এর চলমান আন্দোলন কোনও বাধার মুখে বন্ধ করবে না তার দল।
শুক্রবার ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদর সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সুশৃঙ্খল ও গণতান্ত্রিকভাবে আমাদের আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা ফিরিয়ে দিতে চাই সভা-সমাবেশ করার অধিকার। আমরা কোনও বাধার কাছে হার মানবো না এবং দেশের জনগণও মানবে না।’
এর আগে বিএনপির এই নেতা বুধবার তার স্থানীয় বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, চট্টগ্রামের জেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত সর্বস্তরে তাদের দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দশটি বিভাগীয় সমাবেশের প্রথমটিতে ব্যাপকভাবে যোগ দিয়ে দেখিয়েছেন কীভাবে সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হয়।
তিনি বলেন, শনিবার ময়মনসিংহে তাদের দলের ঘোষণা অনুযায়ী দ্বিতীয় বিভাগীয় সমাবেশ করার কথা থাকলেও আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করে একই দিনে সমাবেশ ডেকেছে। এটি স্থানীয় প্রশাসনকে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করতে পারে। সমাবেশের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে যে কাউকে সমাবেশ করতে বাধা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: পুলিশ ‘অবৈধভাবে’ বিরোধীদের তথ্য সংগ্রহ করছে: মির্জা ফখরুল
ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা অনেক আগেই সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম, সে অনুযায়ী কর্মসূচির প্রচারণা চলছে। ফলে একই দিনে আওয়ামী লীগের সমাবেশ ডাকার কোনও কারণ নেই। এতে প্রতীয়মান হয়েছে যে তারা(আ.লীগ) গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না।’
তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দল রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায় সন্ত্রাসের আশ্রয় নেয়, কারণ তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। ‘তারা এখন দেশকে দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রে পরিণত করছে। আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। এ আন্দোলন চলবে। কোনও বাধাই আমাদের থামাতে পারবে না।’
বিএনপি নেতা বলেন, তারা জনগণের স্বার্থে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, তারা চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে তাদের দ্বিতীয় ধাপের আন্দোলন শুরু করেছে: ‘তবে সমাবেশে যাওয়ার পথে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এমনকি অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বর্তমান আন্দোলনে তাদের পাঁচ নেতা নিহত হয়েছেন। ক্ষমতাসীন দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহিংসতার ঘটনায় বিরোধী দলের প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
তিনি বলেন, দেশে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) একা দায়ী নয়, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য সরকারও দায়ী। ‘সুতরাং, সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা প্রয়োজন। দেশের জনগণ ইতোমধ্যে তাদের(সরকার) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, তাদের দল আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে দেবে না এবং দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন করতে দেবে না। তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তী সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোনও নির্বাচন হবে না।
বিএনপি নেতাদের কাছ থেকে ইঙ্গিত নিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরও এখন বলছেন যে বাংলাদেশ একটি স্বৈরাচারী শাসনের কবলে রয়েছে, উল্লেখ করেন ফখরুল। ‘এটি এখন একটি সত্য এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত যে বাংলাদেশ একটি স্বৈরশাসকের অধীনে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে তারা শ্মশান করে দিয়েছে: চট্টগ্রামে মির্জা ফখরুল
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান হবে: ফখরুল
১০ ডিসেম্বর থেকে দেশ চালাবেন খালেদা-তারেক: আমান
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বিশিষ্ট অধিকারকর্মী সুলতানা কামালের তীব্র সমালোচনা করার কয়েকদিন পর বিএনপির আরেক শীর্ষ নেতা প্রকাশ্যে সরকারকে ‘উৎখাত’ করার হুমকি দিয়েছেন।
বিএনপির অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা আমানউল্লাহ আমান বলেন, আর বেশি দেরি নয় ‘১০ ডিসেম্বরের পর দেশ চালাবেন আমাদের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান’।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান বলেন,‘প্রস্তুত হন, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। কাঁচপুর ব্রিজ,টঙ্গী ব্রিজ,মাওয়া রোড,আরিচা রোড,টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া এবং রূপসা থেকে পাথুরিয়াসহ পুরো বাংলাদেশ অবরোধ করা হবে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সমাবেশ: বিএনপির নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে হামলা, আহত ৩০
অর্থ পাচার ও শেখ হাসিনার ওপর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন। অন্যদিকে এতিমদের অর্থ আত্মসাতের দায়ে সাজা ভোগ করছেন খালেদা জিয়া।
একজন শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলছেন,‘এই দুজন দেশ চালাবে এমন হুমকি সরকারে পতনের জন্য রাস্তার লড়াইয়ের একটি সহিংস পর্যায়ের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার দিকে নির্দেশ করে’।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে তারা শ্মশান করে দিয়েছে: চট্টগ্রামে মির্জা ফখরুল
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরও বলছেন,খালেদা-তারেক ‘দেশ চালাবেন’ বলতে বিএনপি বোঝাচ্ছে শীর্ষ পদের জন্য লড়াইয়ে নামা।
১৯৭৫ সালের গণহত্যার ওপর লেখা ‘মিডনাইট ম্যাসাকার’-বইয়ের লেখক সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, ‘বিএনপির এসব কথা বলার কারণ হলো- কামাল হোসেন বা জিএম কাদের নয়, বিরোধী দল ক্ষমতায় এলে জিয়া পরিবার ছাড়া অন্য কাউকে উচ্চপদে নিয়োগ দেয়া উচিত হবে না, তা বোঝানো।’
আরও পড়ুন: পুলিশ ‘অবৈধভাবে’ বিরোধীদের তথ্য সংগ্রহ করছে: মির্জা ফখরুল
চট্টগ্রামে সমাবেশ: বিএনপির নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে হামলা, আহত ৩০
বিএনপির চলমান সরকার বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে বিভাগীয় সমাবেশে যাওয়ার পথে নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বারইয়ারহাট, মিঠাছড়া, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, নিজামপুর ও কমলদহ এলাকায় প্রায় ১৫টি গাড়িতে হামলা চালানো হয়।
দাগনভ‚ঞা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আকবর হোসেন জানান, চট্টগ্রামে বিভাগীয় গণসমাবেশে যাওয়ার পথে দাগনভ‚ঞা উপজেলা বিএনপির ১০/১২টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে।
ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, বুধবার সকালে ফেনী থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে বারইয়ারহাট, মিঠাছড়া, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড, নিজামপুর ও কমলদহ অংশে ১৫টি গাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করা হয়। এ সময় আহত হন ৩০ জন নেতাকর্মী।’
আলাল আরও বলেন, শত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত গাড়ি ও গণপরিবহনে করে ফেনী থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী বিভিন্নভাবে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিয়েছে।
বাংলাদেশকে তারা শ্মশান করে দিয়েছে: চট্টগ্রামে মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকার অনির্বাচিত সরকার। এদেশের মানুষ কিন্তু তাদের মেনে নেয়নি। বাংলাদেশকে তারা শ্মশান করে দিয়েছে। এই শেখ হাসিনা সব লুট করে বিদেশে পাচার করছে। তাই এই স্বৈরাচার সরকারকে হঠিয়ে আমরা আমাদের গণতন্ত্র ফিরে পেতে চাই। জনগণের বাক স্বাধীনতাসহ আমাদের সব অধিকার ফিরে পেতে চাই। তাই এ লড়াই অনেক বড় লড়াই, শক্ত লড়াই। এ লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে। আমরা হয় জিতবো, না হয় মরে যাব। তাই আমরা মাথা উচু করে দাঁড়াতে চাই।’
তিনি বুধবার (১২ আক্টোবর) বিকালে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পুলিশের গুলিতে পাঁচ নেতাকর্মী নিহত ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপির আয়োজনে বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এদিকে জনগণ না খেয়ে মরছে। প্রতিটা তরকারির দাম তিন থেকে পাঁচ গুণ বেড়েছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির দাম বাড়িয়েছে। শুনছি, বিদ্যুতের দাম আবার বাড়াবে। এরা লুটপাট করে কানাডার বেগমপাড়ায় বাড়ি বানায়। আর জনগণ কষ্টে দিনাতিপাত করছে। দুমুঠো খাবার পায় না মানুষ। মানুষের নিরাপত্তা নেই, দিনদুপুরে ডাকাতি, ছিনতাই হয়।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির এই সমাবেশ আর সমাবেশ নেই, তা এখন মহাসমাবেশে পরিণত হয়েছে। আজকে আমরা এমন একটা জায়গা থেকে কথা বলছি যার অদূরে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র। সেখান থেকে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন জিয়াউর রহমান। আমি চট্টগ্রামের মানুষকে বলব, এই সমাবেশকে আপনারা সফল করেছেন।’
আরও পড়ুন: অচিরেই দেশব্যাপী সরকার পতন আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে: মির্জা ফখরুল
তিনি আরও বলেন, আজ জাতিসংঘ পরিষ্কারভাবে বলেছে, এখানে গুম হয়। ৭৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার নাই। এখানে হত্যা হয়, গুম হয়। আমাদের সব নেতার ওপর মিথ্যা মামলা দিয়েছে।
বিএনপির নেতাকর্মীদের আসতে পদে পদে বাধা দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে দলের এ নেতা বলেন, আজ জনসভায় আসার আগে আপনাদের গাড়ি আটকে দিয়েছে। কিন্তু আপনারা এখানে এসেছেন সব বাধা পেরিয়ে। ঠিক একইভাবে সব বাধা ডিঙিয়ে আমরা শেখ হাসিনাকে গদি থেকে সরিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। নিরপেক্ষ সরকার, তত্ত্বাধায়ক সরকার ছাড়া আমরা কোন নির্বাচন মানি না। মানব না।
খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেত্রী আজ বন্দি। তিনি ঠিকমত চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তারা আমাদের ভয় দেখান আমাদের নেত্রীকে আবার জেলে পাঠাবেন। খালেদা জিয়া জেলকে ভয় পান না। আপনাদের নেতা আসলাম চৌধুরী ছয় বছর ধরে জেলে আছেন। এরা বিচারবিভাগ, প্রশাসন, পুলিশ, র্যাবকে দলীয়করণ করেছেন। আজ সারাদেশের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ আর ছাত্রলীগের কর্মীরা জনগণের পকেট কেটে বিদেশে পাচারে সহযোগিতা করছে।’ তারা বলছে, দেশে দুর্ভিক্ষ আসছে। তেল কম খান, বিদ্যুৎ কম জ্বালান। আর আমরা বলি, তাহলে আপনারা ক্ষমতায় আছেন কেন? আজই পদত্যাগ করেন।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. খন্দকার মোশারফ হোসেন, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মো. শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, ঢাকা উত্তর সভাপতি আমানুল্লাহ আমান, ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি এম এ সালাম, উপদেষ্টা জয়নাল আবেদিন ফারুক গোলাম আকবর খন্দকার, জয়নাল আবেদীন ভিপি, এসএম ফজলুল হক, বিএনপি'র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, যুবদলের সভাপতি সালাউদ্দিন টুকু, মৎস্যজীবী নেতা, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক উদ্দিন মজুমদার হারুনুর রশিদ বিএনপি নেতা বেলাল আহমেদ উপদেষ্ঠা আবুল খায়ের ভূঁইয়া সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী ও ওয়াদুদ ভূইয়া প্রমুখ।
এদিকে দুপুরের আগেই বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন থানা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে শ্লোগান ও ব্যান্ড দলের বাদ্য বাজিয়ে সমাবেশস্থলে যোগ দেন। নেতাকর্মীদের ভীড়ে একপর্যায়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয় চট্টগ্রামের বিশাল পলোগ্রাউন্ড মাঠ।
সমাবেশ পরিচালনা করেন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।
এদিকে বিএনপির বিভাগীয় এ সমাবেশকে ঘিরে নগরীতে উত্তেজনা বিরাজ করলেও। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ছাড়াই শেষ হয় সমাবেশ।
তবে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, সমাবেশে যোগ দিতে আসার পথে খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, ফেনী মিরসরাই, সীতাকুণ্ডসহ বিভিন্নস্থানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এতে বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: পুলিশ ‘অবৈধভাবে’ বিরোধীদের তথ্য সংগ্রহ করছে: মির্জা ফখরুল
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য হাস্যকর: মির্জা ফখরুল
চট্টগ্রামে বিএনপির মহাসমাবেশ বুধবার, আওয়ামী লীগের হুঁশিয়ারি
চট্টগ্রামে বুধবার বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশ নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। মহাসমাবেশকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ চাঙ্গা ও উৎসাহ দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে মহাসমাবেশের সর্বশেষ প্রস্তুতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
এর আগে বিএনপির এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংবাদ সম্মেলন করে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর নেতারা বলেছেন, ১২ অক্টোবর নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশের নামে কোনো নৈরাজ্য করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবশ্যই অ্যাকশনে যাবে। আর সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতানকর্মীরাও বসে থাকবে না।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, প্রতিপক্ষ হিসেবে পাল্টা কোনো বিকল্প কর্মসূচিও দিতে রাজি নয় আওয়ামী লীগ। তবে আন্দোলনের নামে বিএনপি কোন ধরনের নৈরাজ্য করলে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা জবাব দিতে প্রস্তুত আছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির শক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর বাংলাদেশের মানুষের শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া মানে বিএনপির শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া।
আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনের পাল্টা জবাবে আমীর খসরু বলেন, মহাসমাবেশ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো আতঙ্ক নেই। যদি অন্য কারো মধ্যে আতঙ্ক থাকে তারা তা বলতে পারবে। যাদের মধ্যে আতঙ্ক আছে তারা চেষ্টা করবে এই সভাকে অন্যদিকে ডায়ভার্ট করার। যারা জনগণকে ভয় পায়, জনসমাবেশকে ভয় পায় তারা অনেক কিছু করবে। প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে সমাবেশে তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখবে।
তিনি বলেন, বুধবার বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে সব বিভাগের জনগণের মধ্যে জাগরণ উঠেছে, আমাদের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। সবাই যার যার এলাকায় মাঠে আছেন। সবাই কার্যক্রম চালাচ্ছেন এই গণসমাবেশকে সফল করার জন্য। আমরা জনগণের বিশাল উদ্দীপনা আগ্রহ দেখে, চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় মাঠ রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে গণসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আরও পড়ুন: ২০০৭ সালের নির্বাচনের আগে ‘৩০০ দলীয় ক্যাডার’ নিয়োগ দিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত: জয়
সমাবেশে কোনো রূপরেখা থাকবে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার নির্বাচনী সব ব্যবস্থার যে জঞ্জাল, সেটা পরিষ্কার করে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করবে। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সংসদ হবে। যারা জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে, এটা হচ্ছে মূল মেসেজ।
তিনি বলেন, আমরা কোনো ধরনের ফাঁদে পা দেব না। অনেকে চেষ্টা করবে এখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য। আমাদেরকে সেই দিকে টেনে নেয়ার জন্য। আমাদের শক্তি ক্ষয় করার জন্য। তারা অনেক কিছু বলবে অনেক অপপ্রচার শুনবেন। কিন্তু কিছুতেই কান দেবেন না। ধৈর্য ধরতে হবে, ধৈর্য ধরে আমাদের কাজ দিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। কে কোথায় উসকানি দিচ্ছে এগুলো নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবেন না। ওরা চাইছে আমাদের সেদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
বিএনপির অন্যান্য নেতারা বলেন, সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। যে কোনোমূল্যে সমাবেশ সফল করার ঘোষণা দিয়েছেন নেতারা। মহাসমাবেশে কমপক্ষে ১০ লাখ নেতাকর্মীর উপস্থিত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানান। আর এ সমাবেশের মাধ্যমে সরকারকে বড় ধরনের মেসেজ দিতে চান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমাবেশের সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুনর রশীদ, কেন্দ্রিয় নেতা বেলাল আহমেদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দীন, হুম্মাম কাদের চৌধুরী।
আরও পড়ুন: বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান হবে: ফখরুল
বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের নামে সরকারের ব্যাপক লুণ্ঠন প্রকাশ পেয়েছে: বিএনপি
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান হবে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বুধবার থেকে শুরু হতে যাওয়া বিভাগীয় শহরে তাদের দলের সমাবেশের মধ্য দিয়ে সারাদেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি সমাবেশের মাধ্যমে একটি গণঅভ্যুত্থান হবে। হাজার হাজার মানুষ এই সমাবেশে অংশ নেবে। আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে এই শাসনের পতন ঘটাব।’
মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের দুই অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ঐক্যজোট ও ডেমোক্রেটিক লীগের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
দলের পরিকল্পিত বিভাগীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামীকাল (বুধবার) চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি বন্দরনগরীর পলো গ্রাউন্ডে সমাবেশ করতে যাচ্ছে, যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন মির্জা ফখরুল।
চলমান বিদ্যুৎ সংকট, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং বিএনপির আন্দোলনের সময় ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের গুলিতে বিরোধী দলের পাঁচ নেতাকর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে এটিই হবে প্রথম বিভাগীয় সমাবেশ।
চলমান আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে জনসভা করার ঘোষণা দেয় বিএনপি।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের নামে সরকারের ব্যাপক লুণ্ঠন প্রকাশ পেয়েছে: বিএনপি
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে বিশাল জনসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে দলটি।
দুই পক্ষের সঙ্গে কথা হয়
দুই দলের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার হরণকারী বর্তমান অনির্বাচিত ও লুটেরা শাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ার লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন সেই দ্বিতীয় দফা আলোচনা করছি এবং আমরা যুগপৎ আন্দোলনের মূল দাবিগুলো নিয়ে কথা বলছি।’
ফখরুল বলেন, তারা ইতোমধ্যে ১১টি দলের সঙ্গে তাদের দ্বিতীয় ধাপের রাজনৈতিক সংলাপে বসেছেন। ‘বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্য আমরা যুগপৎ আন্দোলন শুরু করতে একমত হয়েছি।’
আলোচনায় নিজ নিজ দলের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব ও ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি।
দুই দলের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খানও উপস্থিত ছিলেন।
গত ২ অক্টোবর কল্যাণ পার্টির সঙ্গে প্রথম বৈঠকের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শুরু করে বিএনপি।
সরকারবিরোধী আন্দোলনের দাবি ও ইস্যু চূড়ান্ত করতে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) এবং অলি আহমেদের এলডিপি, কল্যাণ পার্টি, লেবার পার্টি, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এবং মুসলিম লীগের সঙ্গেও আলোচনায় বসে দলটি।
এর আগে, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার ‘পুনরুদ্ধার’ করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করার রূপরেখা তৈরি করতে ২৪ মে থেকে শুরু হওয়া সংলাপের প্রথম পর্বে ২৩টি দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে বিএনপি।
আরও পড়ুন: পুলিশ ‘অবৈধভাবে’ বিরোধীদের তথ্য সংগ্রহ করছে: মির্জা ফখরুল
আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘ভয়ংকর স্বৈরাচারী’ বলে অভিহিত করেছে বিএনপি