চট্টগ্রামে বুধবার বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশ নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। মহাসমাবেশকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ চাঙ্গা ও উৎসাহ দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে মহাসমাবেশের সর্বশেষ প্রস্তুতি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
এর আগে বিএনপির এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংবাদ সম্মেলন করে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর নেতারা বলেছেন, ১২ অক্টোবর নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশের নামে কোনো নৈরাজ্য করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবশ্যই অ্যাকশনে যাবে। আর সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতানকর্মীরাও বসে থাকবে না।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, প্রতিপক্ষ হিসেবে পাল্টা কোনো বিকল্প কর্মসূচিও দিতে রাজি নয় আওয়ামী লীগ। তবে আন্দোলনের নামে বিএনপি কোন ধরনের নৈরাজ্য করলে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা জবাব দিতে প্রস্তুত আছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির শক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর বাংলাদেশের মানুষের শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া মানে বিএনপির শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া।
আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলনের পাল্টা জবাবে আমীর খসরু বলেন, মহাসমাবেশ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো আতঙ্ক নেই। যদি অন্য কারো মধ্যে আতঙ্ক থাকে তারা তা বলতে পারবে। যাদের মধ্যে আতঙ্ক আছে তারা চেষ্টা করবে এই সভাকে অন্যদিকে ডায়ভার্ট করার। যারা জনগণকে ভয় পায়, জনসমাবেশকে ভয় পায় তারা অনেক কিছু করবে। প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে সমাবেশে তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো রাখবে।
তিনি বলেন, বুধবার বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে সব বিভাগের জনগণের মধ্যে জাগরণ উঠেছে, আমাদের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। সবাই যার যার এলাকায় মাঠে আছেন। সবাই কার্যক্রম চালাচ্ছেন এই গণসমাবেশকে সফল করার জন্য। আমরা জনগণের বিশাল উদ্দীপনা আগ্রহ দেখে, চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় মাঠ রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে গণসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আরও পড়ুন: ২০০৭ সালের নির্বাচনের আগে ‘৩০০ দলীয় ক্যাডার’ নিয়োগ দিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত: জয়
সমাবেশে কোনো রূপরেখা থাকবে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার নির্বাচনী সব ব্যবস্থার যে জঞ্জাল, সেটা পরিষ্কার করে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করবে। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সংসদ হবে। যারা জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে, এটা হচ্ছে মূল মেসেজ।
তিনি বলেন, আমরা কোনো ধরনের ফাঁদে পা দেব না। অনেকে চেষ্টা করবে এখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য। আমাদেরকে সেই দিকে টেনে নেয়ার জন্য। আমাদের শক্তি ক্ষয় করার জন্য। তারা অনেক কিছু বলবে অনেক অপপ্রচার শুনবেন। কিন্তু কিছুতেই কান দেবেন না। ধৈর্য ধরতে হবে, ধৈর্য ধরে আমাদের কাজ দিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। কে কোথায় উসকানি দিচ্ছে এগুলো নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবেন না। ওরা চাইছে আমাদের সেদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
বিএনপির অন্যান্য নেতারা বলেন, সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। যে কোনোমূল্যে সমাবেশ সফল করার ঘোষণা দিয়েছেন নেতারা। মহাসমাবেশে কমপক্ষে ১০ লাখ নেতাকর্মীর উপস্থিত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানান। আর এ সমাবেশের মাধ্যমে সরকারকে বড় ধরনের মেসেজ দিতে চান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমাবেশের সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুনর রশীদ, কেন্দ্রিয় নেতা বেলাল আহমেদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দীন, হুম্মাম কাদের চৌধুরী।
আরও পড়ুন: বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান হবে: ফখরুল
বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের নামে সরকারের ব্যাপক লুণ্ঠন প্রকাশ পেয়েছে: বিএনপি