অন্যান্য
বাসা-বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধে করণীয়
মানুষের মৌলিক অধিকারের একটি হলো বাসস্থান। বাসা-বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ অত্যন্ত জরুরি। মূলত একটি বাড়ি কেবল একটি অবকাঠামোই নয়, বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জীবনের নিরাপত্তা। তাই এই পরম আশ্রয় যখন হুমকির মুখে পড়ে, তখন তা জীবনের অস্তিত্বের জন্যই ক্ষতিকর। বিশেষ করে, ডাকাতির মতো অপরাধগুলোর ক্ষেত্রে সম্পদের ক্ষতি থেকে শুরু করে প্রাণনাশেরও আশঙ্কা থাকে। তাই, এর জন্য প্রয়োজন অগ্রিম সতর্কতা। এই নিবন্ধে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে, যা বাড়ির মালিকদের পাশাপাশি ভাড়াটিয়াদের জন্যও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। চলুন, কৌশলগুলোর ব্যাপারে বিশদ জেনে নেওয়া যাক।
বাসা-বাড়িতে ডাকাতি এড়াতে ১১টি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা
বাসস্থানে চুরি বা ডাকাতির আশংকা কমাতে বাড়ির সদস্যদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সচেতনতার পাশাপাশি কিছু নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা বাসায় ডাকাতের আক্রমণের সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে।
আগন্তুকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া
বাসা-বাড়ির দরজায় করাঘাত বা কলিং বেলের আওয়াজ শুনে তৎক্ষণাৎ সদর দরজা না খুলে দরজার পীপ হোল দিয়ে আগন্তুককে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অপরিচিত কেউ দরজার ওপাশে থাকলে পরিচয় ও আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করে নিতে হবে। সন্দেহ জনক এক বা একাধিক ব্যক্তি যদি বাসায় ঢোকার চেষ্টা করে তৎক্ষণাৎ নিরাপত্তা রক্ষী বা প্রতিবেশীদের সাহায্য নিতে হবে। প্রয়োজনে নিকটস্থ থানা বা আর্মি ক্যাম্পে ফোন দিতে হবে।
আরো পড়ুন: মোবাইল ফোন বিস্ফোরণ: কারণ ও বাঁচার উপায়
সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন
সাম্প্রতিক দশকগুলোতে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের জন্য বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত প্রযুক্তির মধ্যে একটি হলো ক্লোজড-সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা। মূল প্রবেশদ্বার ও গ্যারেজে ক্রমাগত নজরদারির জন্য এই ক্যামেরাগুলো স্থাপন করা যেতে পারে। অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে ভিডিও ফুটেজ রেকর্ড হয়ে থাকে, ফলে দুষ্কৃতিকারীরা এই ব্যবস্থা যুক্ত স্থাপনাগুলো থেকে দূরে থাকে।
আধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোতে হাই-ডেফিনিশন ভিডিও রেকর্ডিং, নাইট ভিশন ও স্মার্টফোনের মাধ্যমে পরিচালনা করার সুবিধা থাকে। এর ফলে, এগুলোর মাধ্যমে রাতের অন্ধকারে তাৎক্ষণিকভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত বা সন্দেহভাজন আনাগোনা তদারক করা সম্ভব হয়। এমনকি, বাড়িতে না থাকলেও দূরবর্তী স্থান থেকে এই নজরদারি অব্যাহত রাখা যায়।
মোশন সেন্সর লাইট এবং সাইরেন অ্যালার্ম স্থাপন
ঘরবাড়ির আঙিনায় এমন কিছু স্থান থাকে যেগুলো পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও তুলনামূলকভাবে অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। মোশন সেন্সর লাইট লাগানোর ক্ষেত্রে এই স্থানগুলোতে অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে। এই উন্নত প্রযুক্তি যেকোনো নড়াচড়া শনাক্ত করে এবং নির্দিষ্ট স্থানটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলোকিত হয়ে ওঠে। এটি মূলত চোর বা গুপ্ত হামলাকারীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকর।
আরো পড়ুন: নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মোবাইল অ্যাপ
এটির সঙ্গে যখন সাইরেন অ্যালার্ম যুক্ত করা হয়, তখন দুটো মিলিয়ে একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি হয়। একসঙ্গে কয়েক জোড়া কদমের অনুপ্রবেশ বা দরজায় কষাঘাতের জন্য প্রধান ফটক বা দরজা এই ডিভাইস সংযুক্ত করার উপযুক্ত স্থান হতে পারে। এতে করে অ্যালার্মের শব্দে শুধু বাড়ির ভেতরে থাকা লোকেরাই নয়; আশেপাশের প্রতিবেশীরাও সজাগ হয়ে যাবে। ফলে সংকটাপন্ন পরিবারকে বাঁচাতে তারাও এগিয়ে আসতে পারবে অথবা পুলিশকে জানাতে পারবে।
রাতে ঘুমানোর আগে সব দরজা-জানালা বন্ধ করা
বাড়ির প্রধান প্রবেশদ্বার এবং জানালাগুলো যদি অসাবধানে খোলা রাখা হয়, তবে বাড়িতে প্রবেশের জন্য প্রাথমিক প্রতিবন্ধকতাই থাকে না। চুরি বা ডাকাতি সাধারণত রাতের অন্ধকারে ঘটে এবং এই ধরনের ভুলের কারণে তখন চরম মূল্য দিতে হয়। অনেকেই বাতাস চলাচলের জন্য রাতভর জানালা খোলা রেখেই ঘুমিয়ে পড়েন। এটি বিশেষ করে বিল্ডিংয়ের নিচের ২-৩ তলার বাসাগুলোর জন্য ক্ষতিকর।
অনেক বাসায় বারান্দা বা জানালায় টেকসই গ্রিল থাকে না। তাই, অন্তত প্রধান ফটকে উচ্চমানের ডেডবোল্ট লক অথবা কমপক্ষে দুটি স্তরের তালা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা উচিত। এছাড়া, প্রতিদিন ঘুমানোর আগে প্রত্যেকটি লক ভালোভাবে চেক করে নেওয়া একটি ভালো অভ্যাস।
আরো পড়ুন: স্মার্টফোনে ভূমিকম্প সতর্কতা চালু করবেন যেভাবে
প্রতিটি ব্লক বা মহল্লায় টহলরক্ষীসহ গেট নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ
জানমালের নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয় আমলে নিয়ে শুধু রাতের জন্যই নয়, ২৪ ঘন্টার জন্য অতন্দ্র প্রহরার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি বিল্ডিংয়ে তো থাকবেই, সেই সঙ্গে ব্লক বা মহল্লার প্রধান গেটেও নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ দিতে হবে। টহলের সময় গেটগুলোতে যেন শূন্যস্থান সৃষ্টি না হয় সেজন্য রক্ষীর সংখ্যা বাড়াতে হবে।
এর মধ্য দিয়ে এলাকায় প্রবেশাধিকার নিরীক্ষণের একটি ব্যবস্থা তৈরি হবে। সাধারণত কেবল ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সেই এই ব্যবস্থা বেশি চোখে পড়ে। কিন্তু নির্জন রাস্তার বাড়িগুলোর ক্ষেত্রেও গার্ড মোতায়েনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
নিকটস্থ থানা ও আর্মি ক্যাম্পের যোগাযোগ নম্বর সংগ্রহে রাখা
পরিস্থিতি একদম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো নিরাপত্তা বাহিনীর যোগাযোগের তথ্যগুলো সংগ্রহে রাখা। এতে দুর্ঘটনা সৃষ্টির আভাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফোন কলের মাধ্যমে তাদের জানানো যায়। নিরাপত্তা হটলাইনের পাশাপাশি নিকটস্থ থানা এবং আর্মি ক্যাম্পের মোবাইল নম্বরও সঙ্গে রাখা আবশ্যক।
খুব বেশি বিপজ্জনক অবস্থার ক্ষেত্রে প্রতিবেশীদেরও এগিয়ে আসা উচিত। এক্ষেত্রে তারা কাউকে বিপদগ্রস্ত দেখার সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে নিরাপত্তা বাহিনীর সাহায্য চাইতে পারে।
আরো পড়ুন:
অ্যাপার্টমেন্টে নতুন আগত ভাড়াটিয়াদের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া
শুধু অ্যাপার্টমেন্টের মালিক বা বাড়িওয়ালাদের জন্যই নয়, নতুন আসা ভাড়াটিয়াদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া পুরাতন ভাড়াটিয়াদেরও দায়িত্ব। কোনো ফ্ল্যাটে নতুন কাউকে সাবলেট দেওয়া হচ্ছে কি না এবং নবাগতদের পেশা নিয়ে সুক্ষ্মভাবে যাচাই করা উচিত।
বাড়ির মালিকরা নতুন ভাড়া নেওয়াদের নিকট থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পেশাগত পরিচয়পত্রাদি অবশ্যই সংগ্রহ করবেন। অপরদিকে, অন্যান্য ফ্ল্যাটবাসীরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের পাশের ফ্ল্যাটের ব্যাপারে খোঁজ রাখবেন। এভাবে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত গোটা ভবনেই একটি স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখা যাবে।
বাড়ির আঙিনা অন্ধকারাচ্ছন্ন না রাখা
দুষ্কৃতিকারীদের ডাকাতি করার ক্ষেত্রে অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং জংলা, ঝোপ-ঝাড়ে আবৃত বাসাগুলো সবচেয়ে বেশি সহায়ক হয়। দুই বাড়ির মাঝের সংকীর্ণ স্থান এবং বাড়ির পেছন ভাগে এমন কিছু অল্প জায়গা থাকে যেগুলোতে দিনের বেলায়ও আলো-আঁধারীর অবস্থা বিরাজ করে। যেসব বাড়িতে বাগান রয়েছে, সেখানে বাগানের সঠিক পরিচর্যা করা না হলে গাছপালা অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে। ফলে মধ্য দুপুরেও বাগান ও বাড়ির আঙিনায় সূর্যালোক পৌঁছাতে পারে না। তাই নিয়মিতভাবে ঝোপ, গাছ ও ঘাস ছাঁটাই করা জরুরি।
আরো পড়ুন: হ্যাকিং প্রতিরোধ: অনলাইন কেনাকাটায় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সাবধানতা
অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গাগুলোতে অতিরিক্ত লাইট বা মোশন সেন্সর লাইট দেওয়া যায়। দীর্ঘ দিন ধরে বাড়ির কাছাকাছি কোনো ল্যাম্প পোস্টের লাইট অকেজো হয়ে গেলে দ্রুত তা বদলে দিতে হবে।
বাড়ির সীমানা ঘিরে দুর্ভেদ্য কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন
অনুপ্রবেশে প্রাথমিকভাবে যতটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যায় ততই ভালো। বেশ পুরোনো উপায় হলেও বাড়ির সীমানা জুড়ে কাটাতারের বেড়া স্থাপন বাড়ির সার্বিক নিরাপত্তায় অতিরিক্ত স্তর যোগ করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগুলোতেও এসেছে যথেষ্ট পরিবর্তন। তাই বেড়া নির্বাচনে সূক্ষ্ম স্পাইক বা কোণযুক্ত ধারের মতো বৈশিষ্ট্যগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে তা যেন মানসম্পন্ন এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়।
প্রতিবেশীরা সঙ্ঘবদ্ধভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ
যেকোনো প্রতিরোধে সম্মিলিত থাকার কোনো বিকল্প নেই। একের বিপদে অপরজন এগিয়ে আসার মতো তাৎক্ষণিক উদ্যোগ আর কিছুই হতে পারে না। পাশাপাশি দুইটি বাড়ির মালিক বা ভাড়াটিয়া তাদের নিজ নিজ বাড়ির আশেপাশে সন্দেহজনক আনাগোনার দিকে খেয়াল রাখা মানে পরস্পরের দিকেই খেয়াল রাখা। নবাগত ভাড়াটিয়ার ব্যাপারে পরস্পরকে শেয়ার করা হলে পরবর্তী অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যায় একে অপরের বিপদে এগিয়ে যেতে পারে।
এভাবে আগে থেকেই অস্বাভাবিক কার্যকলাপগুলো নিজেদের মধ্যে শেয়ারের মাধ্যমে সতর্ক থাকা যায়। তাছাড়া ভয়াবহ সংকটপ্রবণ মূহুর্তগুলোতে কেবল পুলিশের ওপর নির্ভর না করে নিজেরাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রহরার ব্যবস্থা করা যায়।
আরো পড়ুন: দামি ফ্ল্যাগশিপ ফোন কেনার সুবিধা-অসুবিধা
দীর্ঘ ছুটি কাটানো নিয়ে বাড়ির বাইরে কথা না বলা
বাড়ির বাইরে প্রতিবেশী বা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আড্ডায় অনেকেই নিজের আসন্ন দীর্ঘ ভ্রমণের কথা বলে ফেলেন। এতে করে তিনি যে একটা উল্লেখযোগ্য সময় যাবত বাড়িতে অনুপস্থিত থাকবেন তা বৃহৎ পরিসরে জানাজানি হয়ে যেতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডাকাত বা তাদের সহযোগীরা এলাকার ভেতরেই থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে পরিকল্পনা সাজানো হয় নির্দিষ্ট কোনো বাড়িতে ডাকাতির জন্য। এ সময় তারা সাধারণ মানুষের বেফাঁস কথাগুলোর সুযোগ নেয়।
তাই দীর্ঘ ভ্রমণ বা ৬-৭ ঘণ্টার জন্য বাসায় একজনকে রেখে যাওয়ার বিষয়গুলো গোপন রাখা অপরিহার্য। মহল্লার কোনো খাবার হোটেল, টঙের দোকান, পার্ক বা গোলির মোড়ে আড্ডায় এই বিষয়গুলো কোনোভাবেই প্রকাশ করা ঠিক নয়।
পরিশিষ্ট
বাসা-বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধের এই উপায়গুলো আবাসিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার নামান্তর। এর জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে সংঘবদ্ধ ভূমিকার সমন্বয় ঘটানো জরুরি। এ ক্ষেত্রে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং মোশন-সেন্সর লাইট ও অ্যালার্ম স্থাপনের সুদূরপ্রসারি তাৎপর্য রয়েছে। রাতে দরজা-জানালা বন্ধ রাখা, সীমানায় কাটাতারের বেড়া স্থাপন, মহল্লায় প্রহরা বাড়ানো এবং প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য সংগ্রহে রাখা সাধারণ সতর্কতা। তবে নতুন ভাড়াটিয়াদের যাচাই করা, দীর্ঘ ভ্রমণের ব্যাপারে ঘরের বাইরে আলাপ না করা, এবং প্রতিবেশীরা সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া সক্রিয়তার পরিচয় দেয়।
সর্বসাকূল্যে, প্রত্যেকটি কৌশলকে একীভূত করার মাধ্যমে বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটিয়া উভয় শ্রেণি সমানভাবে উপকৃত হতে পারবেন।
আরো পড়ুন: আইফোন চুরি প্রতিরোধে অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
১ মাস আগে
বন্যার সময় বিদ্যুৎ ও গ্যাসজনিত দুর্ঘটনা থেকে সাবধান থাকতে করণীয়
বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে বিপদের মাত্রাকে আরও ভয়াবহ রূপ দিতে পারে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগস্থলগুলো। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে স্বাভাবিকভাবেই এসব বিষয় দৃষ্টির বাইরে থেকে যায়। আর এই অসতর্কতাই বুমেরাং হয়ে পড়ে ধ্বংযজ্ঞের সময়ে। উপরন্তু, পানি বিদ্যুৎ পরিবহনের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হওয়ায় বন্যার সময়ে রীতিমতো মৃত্যুদূতে পরিণত হয় বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো। সেইসঙ্গে আশঙ্কা তৈরি হয় গ্যাসের লাইনগুলো ভেঙে যাওয়ার। নিদেনপক্ষে অল্প চিড় ধরলেও এই লোহার পাইপগুলো থেকে ঘটতে পারে ভয়ানক বিস্ফোরণ। এমন বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে হলে যথা সম্ভব তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। চলুন, বন্যার সময় বিদ্যুৎ ও গ্যাস-সংক্রান্ত দুর্ঘটনা এড়াতে কার্যকর পদক্ষেপগুলো জেনে নেওয়া যাক।
বন্যার সময় গ্যাস ও বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়াতে করণীয়
.
অবিলম্বে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা
বন্যা দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব গ্যাস ও বিদ্যুতের প্রধান সংযোগগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত। বিদ্যুতের ক্যাবল বা তার পানির সংস্পর্শে এসে শর্ট সার্কিট হতে পারে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত বন্যায় পানির চাপে গ্যাস পাইপ ভেঙে গ্যাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমতাবস্থায় শুধু একটি স্পার্ক-ই যথেষ্ট ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য। এই বিপদ থেকে বাঁচতে অবিলম্বে সব গ্যাস ভাল্ব ও পাওয়ার সুইচ বন্ধ করে দিতে হবে।
যারা এই সুইচ বা ভাল্বের সঙ্গে অপরিচিত তাদের জন্য উৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে এসব উৎস থেকে অতি দ্রুত নিরাপদ দূরত্বে সরে পড়া। এ সময় সঙ্গে কোনো বিদ্যুৎ বা তাপ পরিবাহী কোনো বস্তু রাখা যাবে না। সম্ভব হলে সহায়তার জন্য পেশাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই যেসব খাবার সংরক্ষণ করা জরুরি
বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ বা উত্তপ্ত বস্তু থেকে দূরে থাকা
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরে অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ এবং উত্তপ্ত বস্তুর সান্নিধ্য এড়িয়ে চলতে হবে। পাওয়া অফ করার পরেও অনেক বৈদ্যুতিক যন্ত্রের মধ্যে কিছু চার্জ জমা থাকে। সাধারণ অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ না হলেও পানির সংস্পর্শে সেগুলো হুমকির কারণ হতে পারে।
তাছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন অবস্থায় অধিকাংশ যন্ত্রাংশেরই উত্তাপ কমে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগে। এই সময়েও ঘটতে পারে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। তাই সর্বাত্মকভাবে এসব সরঞ্জাম থেকে যত দূরে যাওয়া যায় ততই ভালো।
উচ্চ স্থলভাগে অবস্থান নেওয়া
কোমর থেকে গলা পর্যন্ত জলাবদ্ধ এলাকাগুলোতে উঁচু শুকনো জায়গা খুঁজে পাওয়া প্রায় দুঃসাধ্য। এরপরেও নিমজ্জিত বা ভাসমান না থেকে অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থলভাগ খোঁজার চেষ্টা চালানো উচিত। কেননা স্থির পানি যত জায়গা জুড়ে বিস্তৃত থাকে বিদ্যুতের সংস্পর্শে তার পুরোটাই বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত জলাবদ্ধ জায়গায় পানির নিচে কোথায় কোনো বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত বস্তু আছে কি না তা বোঝা মুশকিল।
আরও পড়ুন: বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার উপায়
এছাড়াও একটু উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিলে বানের পানিতে ভেসে যাওয়া অথবা পানির নিচে ধারালো বা শক্ত কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা থেকে বাঁচা যায়। তাই পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটময় হওয়ার পরেও মনকে যথা সম্ভব শান্ত রেখে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নিজের আশেপাশটা ভালোভাবে খেয়াল করতে হবে।
গ্যাস লিক খুঁজে বের করে দ্রুত মেরামত করা
বন্যার সময় তীব্র বেগে প্রবহমান পানির চাপে কিংবা ভারী কোনো জড় বস্তু ভেসে এসে গ্যাস পাইপগুলোতে লেগে চিড় ধরাতে পারে। প্রচণ্ড প্রতিকূল অবস্থায় পুরো পাইপ ভেঙে বা উপড়েও যেতে পারে। এমতাবস্থায় চিড়যুক্ত পাইপগুলো খুঁজে বের করার জন্য ন্যূনতম সুযোগ পাওয়া গেলেও তার সদ্ব্যবহার করা উচিত।
অতঃপর খুঁজে পাওয়ার পর ত্রুটিপূর্ণ পাইপগুলো অবিলম্বে মেরামতের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে সাহায্য নিতে হবে পেশাদারদের। কেননা এর উপর নির্ভর করছে আশেপাশের অনেকগুলো মানুষের জীবন। উন্মুক্ত গ্যাসে সৃষ্ট বিস্ফোরণ ছড়িয়ে যেতে পারে বিশাল জায়গা জুড়ে।
আরো পড়ুন: বন্যাদুর্গতদের সহযোগিতা করার উপায়
ব্যাটারি-চালিত টর্চলাইট ব্যবহার করা
বন্যাকালে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের নিচে দিনের আলো পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে। ফলে রাতের মতো দিনেও পথ চলতে প্রয়োজন হয় কৃত্রিম আলোর। এই প্রয়োজন পূরণে মোমবাতি বা হারিকেন ব্যবহার করা যাবে না। কারণ অজানা কোনো জায়গায় গ্যাস লিকের ফলে মারাত্মক ঝুঁকির তৈরি হতে পারে। এখানে উৎকৃষ্ট বিকল্প হচ্ছে ব্যাটারি-চালিত টর্চ বা ফ্ল্যাশলাইট, যেগুলোতে আগুন বা চল বিদ্যুৎ সংযোগ কোনোটারই দরকার হয় না।
পরিশিষ্ট
তাৎক্ষণিকভাবে এসব সতর্কতামূলক পদক্ষেপ বন্যার সময় বিদ্যুৎ বা গ্যাস-সংক্রান্ত দুর্ঘটনা এড়াতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগগুলো বন্ধ করা গেলে শর্ট সার্কিট ও গ্যাস লিকের ব্যাপারে আশঙ্কামুক্ত থাকা যায়। বৈদ্যুতিক উপাদান থেকে দূরে থাকা এবং প্লাবিত অবস্থা থেকে যথেষ্ট উঁচু স্থলভাগে অবস্থান নিয়েও ঝুঁকির মাত্রা কমানো যায়। গ্যাস লিকগুলো সম্ভব হলে শিগগিরই খুঁজে বের করে বন্ধ করা উচিত। অন্যথায়, এমন স্থান থেকে দূরে থাকা এবং আকস্মিক বিস্ফোরণ এড়াতে মোমবাতির পরিবর্তে ব্যাটারি-চালিত ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করতে হবে।
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
৩ মাস আগে
প্রসঙ্গ জেনারেশন জেড: কারা এই জেন জি প্রজন্ম, কী তাদের বৈশিষ্ট্য
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃতি ও সভ্যতা বিকাশের মঞ্চে যুগপৎভাবে বদলেছে মানুষের জীবনধারণ ও দৃষ্টিভঙ্গি। পুরোনো জায়গায় নতুনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রগতিশীলতার প্রাণ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ঐতিহ্যের ভিত্তি প্রস্তরে। সময়ের এই ধারাকে অব্যাহত রাখার তেমনি এক নিদর্শন জেনারেশন জেড। এই শব্দ যুগল যুগের চাহিদার সঙ্গে সমসাময়িক জীবনধারার সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে মানব সভ্যতার এক বিশাল শ্রেণীকে। চলুন, বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে জেন জি নামের এই প্রজন্ম নিয়ে চিত্তাকর্ষক কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
জেনারেশন জেড কী
১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে এবং ২০১০ এর দশকের প্রথম দিকে জন্মগ্রহণকারীদের বলা হয় জেনারেশন জেড বা সংক্ষেপে জেন জি। আরও সুস্পষ্ট করে বলতে গেলে ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত যারা জন্মগ্রহণ করেছন তারা এই প্রজন্মের অন্তর্ভুক্ত। ২০২৪ সালের হিসেবে সবচেয়ে বড় জেড সদস্যের বয়স ২৭, আর সর্বকনিষ্ঠজনের বয়স ১২ বছর।
এদের পূর্ববর্তী প্রজন্মের ক্যাটাগরি জেনারেশন ওয়াই, যাদেরকে বলা হয় মিলেনিয়াল্স। এদের জন্ম ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে।
প্রজন্ম জেডের আরও একটি নাম হচ্ছে জুমার্স। যার মধ্যে লুকিয়ে আছে জেডের পূর্বসূরীদের নাম। এখানে ‘জেড’ অক্ষরের সঙ্গে মূলত ‘বুমার্স’ শব্দের সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে। বুমার্স হলো বেবি বুমার্সের সংক্ষিপ্ত রূপ, যে প্রজন্মের আগমন ঘটে ১৯৪৬ থেকে ১৯৬৪ সালে। এদের পরে আসে জেনারেশন এক্স। সেই অর্থে বুমারদের বলা যেতে পারে জেন জি’দের প্রপিতামহ। জেন জি-এর উত্তরসূরিরা জেনারেশন আলফা নামে অভিহিত, যাদের জন্মকাল ২০১০ থেকে ২০২৪।
জেড প্রজন্মের অন্যান্য নামের মধ্যে রয়েছে আই বা ইন্টারনেট জেনারেশন, হোমল্যান্ড জেনারেশন, নেট জেন, ডিজিটাল নেটিভস বা নিও-ডিজিটাল নেটিভস, প্লুরালিস্ট জেনারেশন, এবং সেন্টিনিয়াল্স।
ইন্টারনেট এবং পোর্টেবল ডিজিটাল প্রযুক্তির মধ্যে বেড়ে ওঠার কারণে প্রযুক্তিগতভাবে অক্ষর-জ্ঞান না থাকলেও এরা ডিজিটাল নাগরিক হিসেবে অভিহিত হয়। পূর্ববর্তী প্রজন্মের চিন্তা-চেতনা যেখানে নিবদ্ধ ছিল বইয়ের মাঝে, সেখানে এই প্রজন্মের প্রত্যেকেই ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের প্রতি আসক্ত।
আরো পড়ুন: কলকাতায় কেনাকাটার জনপ্রিয় স্থান
প্রজন্ম জেড-এর চমৎকার কিছু বিষয়
সোশ্যাল মিডিয়ার প্রথম প্রজন্ম
১৯৯৭ সালে চালু হয় প্রথম সোশ্যাল মিডিয়া সাইট সিক্স ডিগ্রি। যেখানে ব্যক্তিগত প্রোফাইল তৈরিসহ ছবি আপলোড, শেয়ার এবং বন্ধুত্ব করা যেত। এরই বর্তমান রূপ এখনকার এক্স (যা আগে টুইটার নামে পরিচিত ছিল) এবং ইন্সটাগ্রাম।
এ প্রজন্ম স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের যুগ থেকে ফেসবুক ও ইউটিউবের যুগের রূপান্তরটা দেখেছে। সাক্ষী হয়েছে কাগুজে পত্রিকার উপর নির্ভরতা এবং ধারাবাহিকের নতুন পর্বের জন্য পুরো সপ্তাহ ধরে অপেক্ষার অবসানের। স্ন্যাপ চ্যাট এবং টিকটকের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর মতো দ্রুত, আকর্ষণীয় এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ কন্টেন্ট স্বাদ দিচ্ছে তাৎক্ষণিক ইচ্ছে পূরণের। এই মনোভাব পরিচালিত করছে মনোযোগের দ্রুত পরিবর্তনের দিকে। এতে করে দ্রুতগতির জীবনধারায় পাল্টে যাচ্ছে বিনোদন, সামাজিকীকরণ, এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম।
বিশেষত প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডগুলোর পাশাপাশি নতুন কোম্পানিগুলোও গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য অগ্রসর হচ্ছে তাদের মনস্তাত্ত্বিক নিরীক্ষণে। যোগাযোগ, লেনদেন ও প্রতিক্রিয়া জানানোর কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় অপরিহার্য পুঁজিতে পরিণত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। মানুষের আচরণগত পরিবর্তনের সূত্রে সৃষ্ট এই বিপণন ব্যবস্থা পাল্টা অবদান রাখছে সেই আচরণকে বজায় রাখতে।
আরো পড়ুন: সার্কেডিয়ান রিদম বা দেহ ঘড়ি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতা
শিশু, তরুণ ও বৃদ্ধ নির্বিশেষে জেন জি’র প্রত্যেকে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে ভীষণ সচেতন। উদ্বেগজনিত ব্যাধি, বিষন্নতা, বাইপোলার ডিসঅর্ডারের মতো সমস্যাগুলো নিয়ে এতটা খোলামেলা আলোচনায় আগে কখনও দেখা যায়নি। নিদেনপক্ষে পূর্ববর্তী প্রজন্মগুলোতে এসব ব্যাপারে একরকম হীনমন্যতা ও ভয় কাজ করত। এখানে অনেকাংশে ভূমিকা পালন করেছে সামাজিক মাধ্যম এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো। এগুলো নিয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ এবং তারকাদের উন্মুক্ত কথপোকথোন মানসিক সমস্যা নিয়ে আলোচনাকে স্বাভাবিক করে তুলেছে।
বিষয়টি শুধু আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। জেন জি সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়াতে অভ্যস্ত। এর ধারাবাহিকতায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বাস্থ্যগত সংস্থানগুলো, অভিজ্ঞ পরামর্শকেন্দ্র, এবং মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উদযাপন তারই দৃষ্টান্ত। এ ছাড়াও কর্মক্ষেত্রে কাজের সময়সীমা এবং পরিমাণ নির্ধারণের ব্যাপারেও আলাদাভাবে গুরুত্ব পায় কর্মচারীর মানসিক অবস্থা। এই সার্বিক ব্যবস্থার আঙ্গিকে পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও সমস্যাগুলো জনসমক্ষে উঠে আসে ইতিবাচকভাবে। একই সঙ্গে উত্তরণের জন্য থাকে মানসিক সমর্থন এবং ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুস্থতা নিশ্চিতকরণের প্রচেষ্টা।
আর্থিক বিষয়গুলোর প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ
যুগ যুগ ধরে বাজারগুলোতে অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি, এবং প্রাকৃতিক সম্পদে ঘাটতির মতো নিয়ন্ত্রণহীনতা সাক্ষী হয়েছে জেন জি। এমনি অনিশ্চয়তার ভেতর দিয়ে তারা সংগ্রাম করতে দেখেছে মিলেনিয়াল বাবা-মাদের। আর্থিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে বাস্তববাদীতা মূলত এরই ফলাফল। শুধুমাত্র ব্যয়ের চেয়ে সঞ্চয়কে অগ্রাধিকার দেওয়াই নয়, অর্থের সময় মানকে তারা ভীষণভাবে আমলে নেয়। তাছাড়া ২১ শতকের শুরু থেকে মুদ্রাস্ফীতি হারের উত্থান-পতন সতর্ক করে তুলেছে তাদেরকে। এগুলোর বিধ্বংসী প্রভাব তারা দেখেছে ছাত্র ঋণ, বাড়ি ভাড়া, এবং নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যে। তাই তারা সবকিছুর ওপরে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জকে অগ্রাধিকার দেয়। তাছাড়া এদের মধ্যে আশাবাদী জনগোষ্ঠীরা জীবনের কৃতিত্ব হিসেবে আর্থিক স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দেয়।
প্রতিনিয়ত বিকশিত প্রযুক্তির কারণে তারা অ্যাপ ও সফ্টওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের ব্যয়, বাজেট কার্যকরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারে। অর্থের সময় মূল্যকে টেক্কা দিতে অল্প বয়স থেকেই দেখা যায় বিনিয়োগের প্রবণতা। সবচেয়ে যুগান্তকারী বিষয় হচ্ছে, পূর্ববর্তী প্রজন্ম যেখানে ঋণের প্রতি দুর্বলতা ছিল, সেখানে জুমাররা ঋণের সুবিধাকে সর্বদা পাশ কাটাতে পছন্দ করেন। এই আর্থিক বিচক্ষণতা এমনকি তাদের ছোট ছোট ব্যয়ের ক্ষেত্রেও পরিলক্ষিত হয়।
আরো পড়ুন: ঢাকার জনপ্রিয় ১০টি বুক ও স্টাডি ক্যাফে: বইপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য
ইন্টারনেট জুড়ে সামাজিক মাধ্যম ও রিভিউ সাইটগুলো যে কোনো কেনাকাটার আগেই পণ্যগুলো নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে গবেষণার প্রয়াস যোগায়। এই প্রয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি এবং চাকরি খোঁজা পর্যন্ত বিস্তৃত। তারা মূলত আর্থিক স্বচ্ছলতাকে কেন্দ্র করে একটি সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যকে সামনে রেখে তাদের আগ্রহকে পরিচালিত করে। ফলে বাস্তববাদী শিক্ষা, অনলাইন সম্পদের ব্যবহার, বিনিয়োগ এবং উদ্যোক্তা সম্পর্কে জানার জন্য তারা ভিড় জমায় প্রাসঙ্গিক প্ল্যাটফর্মগুলোতে।
৪ মাস আগে
আম্বানিপুত্রের বিয়ের চূড়ান্ত আয়োজন: অভিন্ন ঐতিহ্যে দেশি-বিদেশি তারকা ও বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিরা
ভারতীয় ঐতিহ্যের সব রঙ, দেশ-বিদেশের জনপ্রিয় তারকা আর বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব। অনন্ত আম্বানি ও রাধিকা মার্চেন্টের রাজকীয় বিয়ের চূড়ান্ত আয়োজনে এগুলোর সবই থাকা চাই। শত হলেও এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানির কনিষ্ঠ পুত্রের বিয়ে বলে কথা। বর ও কনের চার হাত এক করার লক্ষ্যে গত ৩ জুলাই থেকে যেন তারই মহড়া চলছে। উৎসবের মধ্যমণি অনন্ত-রাধিকা হলেও এখানে এমন সব তারকা ও ব্যক্তিদের একত্রিত করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র আম্বানিদের পক্ষেই করা সম্ভব। চলুন, সেই পরিচিত মুখগুলোর পাশাপাশি চোখ ধাঁধানো এই আয়োজনের বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
৫ মাস আগে
পশু কুরবানির পর ঘর ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখবেন যেভাবে
পবিত্র ঈদুল আজহায় বিপুলসংখ্যক পশু কুরবানি হয় দেশজুড়ে। স্বভাবতই এখানে গুরুত্ববহ হয়ে ওঠে কুরবানি-পরবর্তী শহর পরিষ্কারের বিষয়টি। পশু জবাইয়ের পর সঠিকভাবে তার বর্জ্য নিষ্কাশন না হওয়ার দরুণ শহরবাসীকেই পোহাতে হয় হাজারও ভোগান্তি। বিগত বছরগুলোতে মশাবাহিত রোগের উপদ্রব বাড়াতে পরিবেশজনিত এই জটিলতা আশঙ্কাজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া ধর্মীয় দিক থেকেও পরিবেশ আবর্জনামুক্ত রাখা প্রত্যেক কুরবানি পালনকারীর ঈমানি দায়িত্ব। তাই চলুন, পশু কুরবানির পর বাসা ও তার চারপাশ বর্জ্যমুক্ত রাখার কয়েকটি উপায় জেনে নেওয়া যাক।
ঈদুল আজহায় পশু কুরবানির পর বর্জ্য অপসারণের ১০টি উপায়
একটি উপযুক্ত স্থান নির্বাচন
শহর বা গ্রাম নির্বিশেষে একটি নির্দিষ্ট এলাকার লোকজন আলাদাভাবে কুরবানি না দিয়ে কয়েকজন একসঙ্গে হয়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে কুরবানি করা উত্তম। মূলত বসতবাড়ি থেকে যথাসম্ভব দূরে এমন একটি স্থান নির্বাচন করা উচিৎ, যেখান থেকে সহজেই পশুর বর্জ্য নিষ্কাশন করা যায়। এতে করে সিটি করপোরেশন কর্মীরা দ্রুত সময়ে বর্জ্য অপসারণের কাজ করতে পারবে।
এ সময় খেয়াল রাখা উচিৎ, স্থানটি যেন চলাচলের রাস্তার উপরে না হয়। সাধারণত খোলামেলা পরিবেশে পশুর জীবাণু বেশি ছড়াতে পারে না।
যারা সবার সঙ্গে একত্রিত হয়ে নির্দিষ্ট স্থানটিতে কুরবানি দিতে পারছেন না, তারা তাদের পশুর বর্জ্যগুলো নিজ দায়িত্বে কাছাকাছি ডাস্টবিনে ফেলে আসবেন।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহায় ডিপ ফ্রিজ খুঁজছেন? যেসব বিষয় জানা প্রয়োজন
পশুর রক্ত পরিষ্কার
পশু জবাইয়ের পর প্রথম কাজ হচ্ছে পশুর রক্ত সরিয়ে ফেলা। এর জন্য রক্ত সম্পূর্ণ ঝরে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অতঃপর পর্যাপ্ত পানি দিয়ে রক্ত ধুয়ে ফেলতে হবে। রক্ত অপসারণের জন্য কাছাকাছি কোনো ড্রেন ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন রক্তের সঙ্গে কোনো কঠিন বর্জ্য ড্রেনের মুখ বন্ধ করে না দেয়। তরল রক্ত দ্রুত সরিয়ে ফেলার পর রক্তের দাগ ও দুর্গন্ধ দূর করার জন্য জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে।
বর্জ্য খোলা স্থানে না রাখা
পশুর রক্তসহ অন্যান্য কঠিন ও তরল বর্জ্য উন্মুক্ত স্থানে রাখা ঠিক নয়। কেননা এতে রক্ত আর নাড়ি-ভুঁড়ি বাতাসের সংস্পর্শে এসে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দুর্গন্ধ ছড়ায়। এগুলো গর্ত করে ভেতরে রেখে মাটিচাপা দিতে হবে, অথবা সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে রেখে আসতে হবে। গাড়ি আসার আগ পর্যন্ত কোনো পলিব্যাগে ভরে কাছাকাছি কোনো ডাস্টবিনে যেয়ে ফেলে আসা যেতে পারে।
গর্ত করা
পশুর দেহের উচ্ছিষ্ট ও বর্জ্য নিষ্কাশনের উত্তম পন্থা হলো মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলা। অন্যথায় যেখানে-সেখানে ফেলে রাখলে তাতে পচন ধরে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াবে। এই পরিবেশ দূষণ পরবর্তীতে নানান রোগের কারণ হতে পারে। তাই কুরবানির আগেই নিকটবর্তী কোনো মাঠ বা পরিত্যক্ত জায়গায় ৩ থেকে ৪ ফুট গর্ত তৈরি করে রাখা উচিৎ।
জবাই পর্ব শেষে পশুর শরীরের যাবতীয় উচ্ছিষ্ট এক করে সেই গর্তে ফেলে তার ওপর ব্লিচিং পাউডার, চুন, বা ফাম-৩০ নামক জীবাণুনাশক ছড়াতে হবে। সবশেষে খড়কুটা ও কাঁটা জাতীয় কিছু ডালপালা দিয়ে আবৃত করে শক্ত করে মাটিচাপা দিতে হবে। এটি এক দিক থেকে বর্জ্য অপসারণের জন্য কার্যকর, অন্যদিকে জৈব সার হিসেবে শস্যক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য উপযোগী। মাটিচাপার দেয়ার পর তার ওপর কিছু মোটা তুষ ছিটিয়ে দিলে পরে কুকুর বা বিড়াল মাটি গর্ত করে ময়লা তুলতে পারবে না।
আরও পড়ুন: ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
৬ মাস আগে
বর্ষাকালে জামা-কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে ভাব ও দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
বর্ষাকাল মানেই গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহ থেকে স্বস্তি। দিনভর রোদের প্রখর তাপ থেকে মুক্তি দিয়ে মুষলধারে বৃষ্টি সারা শরীর জুড়ে প্রশান্তির পরশ বুলায়। কিন্তু নিত্যদিনের স্বাস্থ্যকর পোশাক-পরিচ্ছদের প্রসঙ্গ যখন আসে, তখন এই ভেজা আবহাওয়াটাই হয়ে ওঠে বিড়ম্বনার কারণ। ভালো করে ধুয়ে শুকানোর পরেও নতুন জামা-কাপড়ে লেগে থাকা অপ্রীতিকর গন্ধ এ সময়ের স্বাভাবিক বিষয়। দুর্গন্ধের পাশাপাশি কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে ভাব রীতিমতো বিরক্তির উদ্রেক করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে চলুন, বৃষ্টির মৌসুমে জামা-কাপড়ের দুর্গন্ধের কারণ এবং তা দূর করার ঘরোয়া উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
বর্ষাকালে কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে ভাব ও দুর্গন্ধের কারণ
বাতাসে আর্দ্রতার আধিক্য
বৃষ্টির দিনগুলোতে বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যায়। এই উচ্চ আর্দ্রতা বাষ্পীভবন প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। ফলশ্রুতিতে জামা-কাপড় পরিপূর্ণভাবে শুকাতে অনেক সময় লেগে যায়। বৃষ্টির কারণে চারপাশের স্যাঁতসেঁতে অবস্থার প্রভাব পড়ে কাপড়ের উপর। এমনকি এই আর্দ্রতা ড্রয়ারে রাখা কাপড়গুলোকেও স্যাঁতসেঁতে করে তোলে।
কাপড়ের মধ্যে বিশেষ করে তুলা এবং উলের মতো প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি পোশাকগুলো বাতাস থেকে আর্দ্রতা শোষণ করে। ফলে প্রথম দিকে সাময়িক শুষ্কতা থাকলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই কাপড়গুলোতে স্যাঁতসেঁতে ভাব চলে আসে।
আরও পড়ুন: মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
কাপড় শুকানোর পর্যাপ্ত পরিবেশের অভাব
সূর্যের তাপ ও অতিবেগুনী রশ্মি উভয়ই বাষ্পীভবন এবং ব্যাকটেরিয়া হত্যা করতে সহায়তা করে। তাই কাপড় সঠিকভাবে শুকানোর ক্ষেত্রে সূর্যালোকের ভূমিকা সর্বাধিক। কিন্তু বর্ষাকালে অধিকাংশ সময় মেঘলা অবস্থা থাকার কারণে সরাসরি সূর্যালোক পাওয়া সম্ভব হয় না। এর ফলে কাপড়ে পরিপুর্ণ শুষ্কতা আসতেও অনেক সময় লাগে।
বর্ষাকালে বৃষ্টির কারণে অনেক সময় বারান্দাতেও কাপড় মেলে দেওয়ার উপায় থাকে না। এ অবস্থায় কাপড় শুকানোর একমাত্র অবলম্বন ভেতরের ঘরগুলো। ঘরের অভ্যন্তরীণ পরিবেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বায়ুচলাচলের অভাব থাকে। তাছাড়া দিনভর বৃষ্টি ঘরগুলোকে আগে থেকেই স্যাঁতসেঁতে করে রাখে, যে পরিবেশ কাপড় শুকানোর জন্য একদমি অনুকূল নয়।
জীবাণুর বংশবিস্তার ও সংক্রমণ
দীর্ঘ সময় ধরে স্তূপ করে বা দড়িতে মেলে রাখা কাপড় ব্যাকটেরিয়ার বংশবিস্তারের জন্য আদর্শ জায়গা। এই অণুজীবগুলো আর্দ্র অবস্থায় দ্রুত বংশবিস্তার এবং সংক্রমণ ঘটাতে পারে। এর ফলে শুধু খারাপ গন্ধই নয়; নানা ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও সৃষ্টি হয়। সম্পূর্ণভাবে শুকানোর আগেই যারা কাপড় পড়ে নেন তাদের এই ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
আরও পড়ুন: ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
বর্ষাকালে বৃষ্টি ও তার পরের কিছু সময় বাদে অন্যান্য সময়গুলোতে গরম থাকে। এর সঙ্গে উচ্চ আর্দ্রতা সম্পন্ন বাতাস যুক্ত হয়ে সৃষ্টি করে ঘামের। আর ঘর্মাক্ত শরীরে যেখানে শুকনো কাপড়ই বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করে, সেখানে হাল্কা ভেজা পরিধেয়গুলো রীতিমতো অসহনীয় করে তোলে।
তাছাড়া এই ঘাম কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে অবস্থা বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে ব্যাকটেরিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের দূষকের জন্য অনুকূল পরিবেশের সৃষ্টি করে।
ঘরোয়া উপায়ে বর্ষাকালে কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে ভাব ও দুর্গন্ধ দূর করার পদ্ধতি
ধোয়ার জন্য কাপড় স্তূপ করে না রাখা
অনেকেই তাদের দৈনন্দিন কাপড়গুলোকে ধোয়ার জন্য সব একসঙ্গে করে একটি লন্ড্রি ব্যাগে বা ঝুড়িতে ভেতরে ফেলে রাখেন। বদ্ধ জায়গায় এভাবে কাপড় ফেলে রাখলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুর্গন্ধ আরও প্রকোট আকার ধারণ করে। বর্ষার মৌসুমে এই কাপড়গুলো ধুয়ে ফেলার পরেও দুর্গন্ধ দূর হয় না।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত দাবদাহে যেভাবে ঘরের ছাদ ঠান্ডা রাখবেন
মূলত জামা-কাপড়ের সঙ্গে লেগে থাকা ঘামসহ অন্যান্য শারীরিক তরল পদার্থ প্রতিটি পোশাকেই দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। অতঃপর যত বেশি পোশাক একসঙ্গে এক জায়গায় জমা করা হয়, সব পোশাকের গন্ধ মিলে দুর্গন্ধ আরও খারাপ হতে থাকে।
তাই জামা-কাপড়গুলোকে পরস্পরের মাঝে অল্প জায়গা রেখে দড়িতে ঝুলিয়ে রাখা উচিৎ। এমনকি কাপড়গুলো যদি কয়েক দিন পরে ধোয়ার জন্য রাখা হয়, তাহলেও সেগুলোকে আলাদা ভাবে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এতে করে কাপড়ের ভেতরে ও বাইরে উভয় অংশে কিছুটা বাতাস পায়, যা সেগুলোকে খারাপ গন্ধ থেকে দূরে রাখে।
নিয়মিত কাপড় ধোয়া
বৃষ্টির কারণে কাপড় শুকানোর পর্যাপ্ত উপায় না থাকার কারণে অনেকেই কাপড় ধোয়ার জন্য রোদ ওঠার অপেক্ষা করেন। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে দিনের পর দিন রোদ্রের দেখা না পাওয়াটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। তাই পরিধেয় পোশাক পরিষ্কারের ক্ষেত্রে এই দীর্ঘ বিরতিটা একদমি উচিৎ নয়। বরং স্যাঁতসেঁতে অবস্থায় দীর্ঘ দিন পরে থাকার চেয়ে পরিষ্কার অবস্থায় হাল্কা ভেজা থাকা ভালো। একইভাবে ধুয়ে মেলে রাখার পর হাল্কা ভেজা কাপড়ের গন্ধের তুলনায় স্তূপ করে রাখা নোংরা কাপড়ের গন্ধ অনেক খারাপ।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত গরমে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য রক্ষার উপায়
আর একই কাপড় দুই বা ততোধিক দিন পড়ে থাকার তো কোনও প্রশ্নই নেই। প্রতিদিন নিয়মিত পরিধেয়গুলো ধুয়ে ফেলা বৃষ্টির মৌসুমে অপ্রীতিকর গন্ধ অপসারণে অনেকটা সহায়ক হয়।
ভিনেগার, বেকিং সোডা বা লেবুর রস ব্যবহার করা
প্রতিদিন কাপড় ধোয়ার মাধ্যমে সতেজ গন্ধ দেওয়ার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ওয়াশিং পাউডার যথেষ্ট নাও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ডিটারজেন্টের সঙ্গে পানিতে কিছুটা ভিনেগার বা বেকিং সোডা মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এটি খারাপ গন্ধকে দূর করে কাপড়ের সুগন্ধ নিশ্চিত করতে পারে।
বেকিং সোডায় কাপড় ভিজিয়ে রাখলে তা ডিওডোরাইজার বা দুর্গন্ধনাশকের কাজ করে। জামা-কাপড় থেকে দুর্গন্ধ দূর করার পাশাপাশি এটি কাপড়কে নমনীয় করতে সাহায্য করে। এর জন্য ধোয়া সময় প্রায় আধ কাপ বেকিং সোডাই যথেষ্ট।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি
আর ভিনেগার ডিটারজেন্টে থাকা দস্তার লবণ পৃথক করে কাপড়ের লেগে থাকা ময়লা দূর করে। ভিনেগারের ব্যাকটেরিয়া-বিরোধী বৈশিষ্ট্যও রয়েছে।
ভিনেগার এবং বেকিং সোডা উভয়ই কাপড়ে তাদের নিজস্ব কোনও গন্ধ ছড়ায় না। ফলে কাপড় গন্ধহীন, পরিষ্কার এবং রীতিমতো তাজা হয়ে ওঠে।
হাতের কাছে কোনো কিছু না থাকলে নিদেনপক্ষে লেবুর রস দিয়েও কাপড়ের স্যাঁতসেঁতে গন্ধ দূর করা যায়। এর জন্য জামা-কাপড় ভিজিয়ে রাখা পানিতে অল্প পরিমাণে লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: বর্ষায় পোকামাকড়ের উপদ্রব থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন
ঘরের ভেতরে কাপড় শুকানোর সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা
সূর্যের প্রাকৃতিক অতিবেগুনী রশ্মি কাপড়ের অপ্রীতিকর গন্ধ থেকে মুক্তির জন্য সবথেকে উৎকৃষ্ট উপায়। বর্ষাকালের যে দিনগুলোতে রোদের দেখা মিলবে সে সময় বারান্দা, ছাদ বা উঠোনই কাপড় মেলে দেওয়ার উপযুক্ত স্থান। কিন্তু অন্যান্য দিনগুলোতে কাপড়গুলোর সর্বোচ্চ শুষ্কতা নিশ্চিতকরণে ঘরের ভেতরে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
কেননা ঘরের বাইরে ভেজা কাপড়গুলো উচ্চ আর্দ্রতার বাতাসের সর্বাধিক সংস্পর্শ পাবে। সেদিক থেকে ঘরের ভেতরটা সেই ক্ষতিকর আর্দ্রতা থেকে অনেকটাই মুক্ত থাকে। তাই জামা-কাপড় জানালার ধারে উপরে বা ফ্যানের কাছাকাছি কোথাও ঝুলিয়ে রাখা যেতে পারে।
এর জন্য অনেকেই ঘরের ভেতরে দড়ি টাঙিয়ে কাপড়গুলো চলন্ত ফ্যানের নিচে ঝুলিয়ে রাখেন। এটি বেশ ভালো একটি উপায়। তবে এ ক্ষেত্রে যে ঘরটিতে বেশ ভালো বায়ু চলাচল রয়েছে, সে ঘরকে দড়ি টাঙানোর জন্য বেছে নেওয়া উচিৎ। এতে করে কাপড় শুকানোর প্রক্রিয়া অপেক্ষাকৃত দ্রুত হতে পারে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু প্রতিরোধ: বাড়িকে মশামুক্ত রাখার প্রাকৃতিক উপায়
শুকনো কাপড়ের জন্য শুকনো জায়গা নিশ্চিত করা
ওয়ারড্রোব বা ড্রেসারে দীর্ঘদিন বাদে পরিধানের জন্য নির্ধারিত পোশাকগুলো সুন্দরভাবে ভাঁজ করে রাখা হয়। কিন্তু দৈনন্দিন পরিধানের কাপড়গুলো সাধারণত বাইরে হ্যাঙ্গার বা আলনাতেই থাকে। এগুলো খুব দ্রুত আর্দ্রতাপূর্ণ বাতাসের সান্নিধ্যে আসে। এ ক্ষেত্রে কাপড়গুলো একটার ওপর আরেকটা না রেখে আলাদাভাবে দুয়েক ভাঁজ দিয়ে পরিপাটি করে রাখা উচিৎ। সম্ভব হলে প্রতিদিনের কাপড়গুলোর জন্যও আলাদা ওয়ারড্রোব রাখার চেষ্টা করা উচিৎ।
তাছাড়া অত্যধিক আর্দ্র আবহাওয়ার দিনগুলোতে ওয়ারড্রোবই আর্দ্রতা থেকে নিরাপদ থাকে না। এ অবস্থায় আর্দ্রতা শোষণ করার জন্য ড্রেসারে সিলিকন পাউচ, চক বা বেকিং সোডাসহ একটি ছোট কাপ রাখা যায়। এগুলো ডিহিউমিডিফায়ার বা আর্দ্রতা শোষক হিসেবে কাপড় থেকে দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করবে।
পরিশিষ্ট
বর্ষাকালে জামা-কাপড়ের দুর্গন্ধের মুল কারণ হলো বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকা। এর ভিত্তিতেই পরবর্তীতে স্যাঁতসেঁতে অবস্থা; অতঃপর জীবাণুর বংশবিস্তারের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় দুর্গন্ধ। এই আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে চলতে হলে কাপড় শুকনো রাখার কোনও বিকল্প নেই। দুর্গন্ধ দূরীকরণে ভিনেগার, বেকিং সোডা এবং লেবুর রস উপযুক্ত উপকরণ।
এরপরেও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের স্বার্থে ধোয়ার আগে বা পরে কখনই কাপড় অবিন্যস্তভাবে স্তূপ করে রাখা যাবে না। প্রতিদিন কাপড় পরিষ্কার এবং তা সঠিকভাবে শুকানোর এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণের মাধ্যমে বৃষ্টির দিনগুলোতে জামা-কাপড়ের দুর্গন্ধজনিত বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি মিলবে।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
৬ মাস আগে
ফ্রিজের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
নিত্যদিনের খাবার সংরক্ষণে একটি অপরিহার্য বৈদ্যুতিক যন্ত্র ফ্রিজ। বিশেষ করে ব্যস্ত মানুষদের জন্য প্রতিদিনের খাবার কেনা বা রান্না করার সেরা বিকল্প এই গৃহস্থালি পণ্য। কিন্তু সঠিক যত্নের অভাবে দুর্গন্ধের ফলে এই উপকারি বস্তুটিই উল্টো বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাড়ায়। পরবর্তীতে খাবার ভালো রাখতে অসুবিধার পাশাপাশি ঘরের ভেতর সৃষ্টি হয় নোংরা পরিবেশের। চলুন, ফ্রিজের দুর্গন্ধের কারণ এবং তা দূর করার ঘরোয়া উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
যে কারণে ফ্রিজে দুর্গন্ধ হয়
প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সময় ধরে খাবার রাখা
দীর্ঘ দিন ধরে খাবার সতেজ রাখার জন্যই ফ্রিজ। কিন্তু এরপরেও প্রতিটি খাবারের এই সতেজতার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ বা নষ্ট এই খাবারগুলোর পঁচনের ফলে সৃষ্ট দুর্গন্ধ দীর্ঘস্থায়ী হয়। আর এ ব্যাপারে উদাসীনতার কারণে ফ্রিজের ভেতরের পরিবেশ অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে।
ডিপ ট্রে বা প্যানে জমে থাকা পানি
ফ্রিজ ডিফ্রস্ট বা বরফ গলে যাওয়ার পর পানি জমা হয় ডিপ প্যানে। দীর্ঘ সময় এই জমে থাকা পানির পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। সময়মত পানির অপসারণ করা না হলে প্যানের এই অংশে ক্ষতিকারক দূষিত পদার্থ জমে বাজে গন্ধ সৃষ্টি করে।
আরও পড়ুন: ঘরে রান্নার কাজে নিরাপদে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের উপায়
ফ্রিজের ভেতরটা নোংরা রাখা
খাবার রাখার সময় ফ্রিজের ভেতরে খাবারের কোনো অংশ ছিটকে পড়ছে কি না তা অনেকেই খেয়াল করেন না। উচ্ছিষ্ট অংশগুলো এভাবেই রেখে দিলে দিন শেষে ফ্রিজের ভেতরের অবস্থা একদম নোংরা হয়ে যায়। সেই সঙ্গে বিভিন্ন খাবারের গন্ধ মিলে এ সময় উটকো গন্ধ ছড়ায়।
মেয়াদ উত্তীর্ণ ফিল্টার
পানির ফিল্টার ফ্রিজের একটি গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম, যা ফ্রিজের আভ্যন্তরীণ নানাবিধ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকে। মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও এই ফিল্টার পরিবর্তন না করা হলে এতে বিভিন্ন ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং রাসায়নিককে বস্তু জন্মায়। এর মধ্যে যে কোনো সময় ফিল্টার অকেজো হয়ে গেলে তা থেকে বাজে গন্ধ বের হয়।
এছাড়াও আশেপাশের বিভিন্ন সরঞ্জামের সঙ্গে যুক্ত থাকায় দীর্ঘমেয়াদে ফিল্টারে জন্মানো সেই দূষকগুলো খাবার পানীয় এবং বরফের সঙ্গেও মিশে যায়। এভাবে ফিল্টারের কারণে সম্পূর্ণ ফ্রিজটি ত্রুটিপূর্ণ এবং অস্বাস্থ্যকর হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত দাবদাহে যেভাবে ঘরের ছাদ ঠান্ডা রাখবেন
খাবারের পাত্রে উপযুক্ত ঢাকনা ব্যবহার না করা
ফ্রিজে খাবার রাখার সময় পাত্রে ঢাকনা দিয়ে রাখাটা সংরক্ষণের উপযুক্ত উপায়। কিন্তু ঢাকনাটি সঠিক ভাবে খাবারকে ঢেকে রাখছে কিনা তা অনেকেরই নজর এড়িয়ে যায়। এক্ষেত্রে অল্প একটু অনাবৃত থাকলেও সংশ্লিষ্ট খাবারের গন্ধটি সমগ্র ফ্রিজে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে পেঁয়াজ, রসুন বা পনিরের মত অবিরাম গন্ধ ছড়ানো খাবারগুলো এ অবস্থায় দুর্গন্ধের কারণ হতে পারে।
ফ্রিজের দরজা খোলা রাখা
জানা থাকা সত্ত্বেও যে ভুলটি ফ্রিজ ব্যবহারকারীরা সবচেয়ে বেশি করে থাকেন, তা হচ্ছে ফ্রিজের দরজা পুরোপুরি বন্ধ করতে ভুলে যাওয়া। ফ্রিজের দরজা অল্প খোলা থাকলেও স্বভাবতই খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে অনেক ক্ষেত্রে মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও অনেক খাদ্যসামগ্রীতে ধীরে ধীরে জীবাণু জমতে শুরু করে। এই ধারাবাহিকতায় শুরু হয় বাজে গন্ধ ছড়ানো।
৬ মাস আগে
ঘরে রান্নার কাজে নিরাপদে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের উপায়
নানা ধরনের দুর্ঘটনার পরেও এলপিজি (লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) সিলিন্ডারগুলোই বর্তমানে গ্যাস যোগানের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। সঠিক ব্যবহারের অভাবে জীবনের জন্য এই প্রয়োজনীয় বস্তুটিই ভয়াবহ মৃত্যুর কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে। ফলশ্রুতিতে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার মানেই যেন ঘরের ভেতর বিপজ্জনক বিস্ফোরক নিয়ে দিন যাপন। কিন্তু কিছু নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই বাধ্য-বাধকতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব হতে পারে। চলুন, দুর্ঘটনা এড়িয়ে বাড়িতে এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহারের নিরাপত্তা মূলক কিছু পদক্ষেপ জেনে নেওয়া যাক।
বাড়িতে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে ১০টি প্রয়োজনীয় সতর্কতা
.
অনুমোদিত বিক্রেতা
এলপিজি সিলিন্ডারের সুষ্ঠ ব্যবহারের প্রথম শর্ত হচ্ছে সেটি কেনার জন্য সঠিক বিক্রেতাকে বাছাই করা। কেননা শত যত্ন করলেও ত্রুটিপূর্ণ পণ্যে ভালো সেবা পাওয়া যায় না। সেই সঙ্গে অনেক হয়রানিরও শিকার হতে হয়, যা চূড়ান্ত অবস্থায় বিপদের কারণও হতে পারে।
তাই সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে জাতীয়ভাবে স্বীকৃত একটি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করা। তারপর তাদের সূত্র ধরে খুঁজে বের করতে হবে যে, নির্দিষ্ট এলাকায় তাদের অনুমোদিত বিক্রেতা আছে কি না। এ ক্ষেত্রে তাদের বিক্রয় পরবর্তী সেবা এবং গ্যাস রিফিল সেবা সম্পর্কে ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। একজন অনুমোদিত বিক্রেতা বিক্রির পাশাপাশি দক্ষ কর্মীর মাধ্যমে সিলিন্ডার স্থাপন এবং রক্ষণাবেক্ষণের সেবা দিয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
উপরোক্ত নিরীক্ষণ সফলভাবে সম্পন্নের পর সিলিন্ডার কেনার মুহূর্তে প্রধান দুটি বিষয় দেখে নিতে হবে।
- সিলিন্ডারে সেই প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের সিল রয়েছে কি না
- সিলিন্ডারটির সেফটি ক্যাপ সুরক্ষিত ভাবে লাগানো রয়েছে কি না
মেয়াদ থাকা গ্যাস সিলিন্ডার
একজন অনুমোদিত সিলিন্ডার সরবরাহকারী কখনোই মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি করবেন না। এরপরেও কেনার সময় ক্রেতাকে এই বিষয়টি খুব গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখতে হবে। কেননা এর উপর নির্ভর করছে এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহারকারির নিরাপত্তা।
গ্যাস সিলিন্ডার সাধারণত ন্যূনতম প্রতি ১০ বছরে প্রতিস্থাপন বা পুনরায় পরীক্ষা করা উচিৎ। অন্যান্য তথ্যের সঙ্গে মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখটি সিলিন্ডারের বডিতেই লিপিবদ্ধ থাকে। প্রস্তুতের তারিখ থেকে ১০ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলে সিলিন্ডারের গুণগত মান হারাতে থাকে। ফলে সেটি পুনরায় গ্যাস রিফিলের জন্য উপযুক্ত থাকে না।
আরও পড়ুন: বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স যেভাবে করবেন
সিলিন্ডারকে সর্বদা উপরের দিকে মুখ করে রাখা
স্পষ্ট করে ভিন্ন কোনো নির্দেশনা না থাকলে এলপিজি সিলিন্ডার উপরের দিকে মুখ করে সোজা অবস্থায় রাখা উচিৎ। উল্টো করে কিংবা যে কোনো একদিকে কাত করে রাখা যাবে না। মোট কথা এমনভাবে রাখতে হবে যেন সেটি স্থিরভাবে এক জায়গায় থাকতে পারে। এ সময় আশেপাশের কোনো কিছুর সঙ্গে সিলিন্ডারের যেন কোনো ধাক্কা না লাগে। খালি বা গ্যাস ভরা সিলিন্ডার, উভয় ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য। এ অবস্থায় রাখলে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস লিক করে আগুন লাগার ঝুঁকি থাকে না।
সিলিন্ডার স্থাপনের জায়গায় সঠিক বাতাস চলাচল
বদ্ধ জায়গায় জমা হওয়া এলপিজি ধোঁয়া বিপদের লক্ষণ। তাই সিলিন্ডারের সুরক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হচ্ছে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল। এর জন্য সিলিন্ডারটি রাখার জন্য যতটা সম্ভব উন্মুক্ত পরিবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। বাড়ির যে জায়গাটি বেশি খোলামেলা সেখানে মাটির উপর সমতোলে রাখা যেতে পারে। তবে সরাসরি সূর্যালোক পড়ে এমন জায়গা থেকে দূরে রাখাই ভালো।
এতে করে বিপজ্জনক বিস্ফোরণের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসে। আর কোনো কারণে বিস্ফোরণ হলেও তা থেকে ক্ষতি অনেকটা কম হয়।
আরও পড়ুন: কাঁসা, পিতল ও তামার তৈজসপত্র ব্যবহার কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত, বিজ্ঞান কী বলে?
সিলিন্ডার স্থাপনের জায়গাটির সুরক্ষা
জঞ্জালপূর্ণ, আবদ্ধ এবং স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় সিলিন্ডার রাখা ঠিক নয়। বরং যেখানে বিশৃঙ্খলা কম এমন খোলামেলা, বিচ্ছিন্ন এবং পরিষ্কার শুষ্ক জায়গা নির্বাচন করা জরুরি। চুলার খুব কাছাকাছি তো রাখা যাই না, বরং লম্বা পাইপের সাহায্যে চুলা থেকে অন্তত ৩ ফুট দূরত্বে সিলিন্ডারটিকে স্থাপন করতে হয়। যত বেশি দূরে রাখা যায় ততই নিরাপদ।
তবে খেয়াল রাখতে হবে- সিলিন্ডার যেন অবশ্যই শক্তভাবে মাটির উপর স্থাপিত থাকে। দুর্ঘটনাজনিত কোনো আঘাতে তা যেন কাঁত হয়ে বা সম্পূর্ণ পড়ে না যায়। বিশেষ করে ভূমিকম্প প্রবণ এলাকার জন্য এই মজবুত স্থাপনাটি সবচেয়ে বেশি দরকারি। অতর্কিতে রেগুলেটরে টিপ পড়ে যাওয়া বা কাঁত হয়ে পড়ে যাওয়া রোধ করতে টেকসই সিলিন্ডার স্ট্যান্ড বা শক্ত খাঁচা ব্যবহার করা যেতে পারে।
কোনো ধরনের দাহ্য বস্তু সিলিন্ডারের সংস্পর্শে না আনা
কাগজ, অ্যারোসল, পেট্রোল, পর্দা এবং রান্নার তেলের মতো দাহ্য বস্তু সর্বদা এলপিজি সিলিন্ডার থেকে দূরে রাখা উচিৎ। ছোট্ট আগুনের সূত্রপাত ঘটাতে পারে এমন সবকিছুই বর্জনীয়; এমনকি ধূমপানের জন্য ম্যাচের কাঠি বা দেয়াশলাইও।
এছাড়া উচ্চ ভোল্টেজের ইলেক্ট্রনিক ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি সিলিন্ডারের আশেপাশে রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
রান্নার সময় করণীয়
রান্না শুরু করার আধ ঘণ্টা আগে থেকেই রান্নাঘরের দরজা-জানালা খুলে দিতে হবে। এতে করে তাজা বাতাস চলাচল করতে পারবে। রান্নাঘর যথেষ্ট প্রশস্ত না হলে সিলিন্ডার রান্নাঘরে রাখা উচিৎ নয়। অবশ্য বর্তমানে ঢাকা শহরের প্রায় প্রতিটি রান্নাঘর অত্যন্ত ছোট। নানা ধরনের তৈজসপত্রে ঠাসা ছোট জায়গাটি কোনো ভাবেই গ্যাসের সিলিন্ডারের মতো বিপজ্জনক বস্তুর জন্য উপযুক্ত থাকে না।
রান্না শেষে চুলার চাবি বন্ধ করতে কোনো মতেই ভুলে যাওয়া চলবে না।
নিয়মিত পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণ
এলপিজি সিলিন্ডারের সংযোগগুলো ক্ষয়ক্ষতি ও লিক জনিত যে কোনো লক্ষণের জন্য আগে থেকেই পরীক্ষা করে নেওয়া উচিৎ। আর একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে পরিদর্শন এই পরীক্ষার কাজে সহায়ক হবে।
আরও পড়ুন: সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
এর বাইরেও অনেক সময় কোনো ফাটল চোখে পড়তে পারে বা গ্যাস লিকের মতো আশঙ্কাজনক কোনো শব্দ কানে আসতে পারে। এ সময় অবিলম্বে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে সিলিন্ডার সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা আবশ্যক।
এছাড়া শুধু সিলিন্ডারই নয়, এর সঙ্গে ব্যবহৃত বিভিন্ন খুটিনাটি পার্টসগুলোর প্রতিও সজাগ দৃষ্টি রাখা আবশ্যক। এগুলোর মধ্যে আছে সিলিন্ডার রেগুলেটর, সংযোগ পাইপ, ভাল্ভ ক্যাপসহ নানাবিধ ছোট ছোট যন্ত্রাংশ। এগুলোতে ত্রুটি থাকা সামগ্রিক ভাবে পুরো সিলিন্ডারের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে ফলপ্রসূ উপায় হচ্ছে সেই অনুমোদিত ও স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান বাছাই করা। এই পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণে তারা দক্ষ কর্মী দিয়ে সার্বিক নিরাপত্তায় সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
আরও পড়ুন: ব্লু জোন রহস্য: রোগহীন দীর্ঘজীবী সম্প্রদায়ের খোঁজে
সিলিন্ডার পরিবর্তনের সময় চুলা বন্ধ রাখা
গ্যাস শেষ হয়ে গেলে রিফিল করার সময় ডিস্ট্রিবিউটরের কর্মীরাই এই সাবধানতাটি অবলম্বন করবেন। এছাড়া ব্যবহারকারিদেরকেও তারা এ সময় চুলা বন্ধ রাখার কথা বলেন।
এছাড়া গ্যাস শেষ হয়ে গেলে চুলাতে এমনিতেই গ্যাসের কোনো শব্দ থাকে না। এরপরেও চুলা বন্ধ রাখাটাই উত্তম। সিলিন্ডার রিফিল হয়ে যাওয়ার পর যখন গ্যাস অপারেটর যাচাইয়ের জন্য চুলা জ্বালাতে বলবেন একমাত্র তখনি চুলা জ্বালানো যেতে পারে।
ঘরে গ্যাসের গন্ধ পেলে সঙ্গে সঙ্গে সিলিন্ডার সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠানকে জানানো
দীর্ঘ ভ্রমণে যাওয়ার কারণে বাড়ি অনেক দিন বদ্ধ অবস্থায় থাকতে পারে। এ সময় বাইরে থেকে ঘরে প্রবেশের পর সবার আগে দরজা জানালা খুলে দিতে হবে। ঘরের ভেতরে গ্যাসের কোনো গন্ধ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটরকে জানাতে হবে। গ্যাস টেকনিশিয়ান আসার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ম্যাচের কাঠি জ্বালানো, ইলেকট্রিক সুইচ অন করা, কিংবা সিলিন্ডারের রেগুলেটরে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: কেক ও বিস্কুট খাওয়ার ক্ষতিকর দিক: বিকল্প কিছু স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার
শেষাংশ
গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে এই সাবধানতাগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত বিস্ফোরণ থেকে বাড়িকে সুরক্ষিত রাখার উপযুক্ত উপায়। মূলত কোত্থেকে বা কাদের কাছ থেকে কেনা হচ্ছে সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হলে নিরাপত্তা নিশ্চিতের অর্ধেক কাজই হয়ে যায়। কেননা অনুমোদিত ও স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান সর্বাঙ্গীন ভাবে তাদের পণ্যের মান নিশ্চিতকরণের দিকে খেয়ালা রাখে। ফলে সিলিন্ডারের মেয়াদ, গ্যাস লিক, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, এবং গ্যাস রিফিল নিয়ে দুশ্চিন্তার অবকাশ থাকে না।
এর বাইরে ক্রেতাকে নিশ্চিত করতে হবে সিলিন্ডার স্থাপনের স্থানে বাতাস চলাচলের পরিবেশ এবং তার আশেপাশে দাহ্য বস্তু না রাখার বিষয়টি। সর্বপরি, এলপিজি (লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) সিলিন্ডার জনিত যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য চুলার কাজ ছাড়াও প্রতিনিয়ত গ্যাস লিকের ব্যাপারে সতর্ক থাকা আবশ্যক।
আরও পড়ুন: ধানমন্ডিতে বুফে খেতে যেসব রেস্তোরাঁয় যেতে পারেন
৮ মাস আগে
স্বল্প বাজেটে ভ্যালেন্টাইন’স ডে উপহার: অনুপম নিবেদনে প্রিয়জনের মুগ্ধতা
ভালো লাগার বিমূর্ত অভিজ্ঞতাগুলোর আকর্ষণ গুরুতর আর্থিক সংকটেও যেন উপেক্ষিত হওয়ার নয়। বিশেষ করে প্রিয়জনের হাসিমুখের কাছে আর সবকিছু যেন গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে!
নিয়ত জীবিকার পেছনে ছুটতে গিয়ে হতাশাগ্রস্ত মনে প্রায় ভর করে বিতৃষ্ণা। সেখানে একটু ভিন্নভাবে কাটানো দিনগুলো শুধু প্রিয় কতক স্মৃতির জন্ম দেয় না। বরং বারবার মনে করিয়ে দেয় জীবনের প্রতিটি দিন কতটা মূল্যবান। এর মধ্যে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে কাটানো আগামী দিনগুলো কতটা ভালবাসাপূর্ণ হতে পারে তার একটা ছোট্ট মহড়ার নাম ভ্যালেন্টাইন’স ডে।
বস্তুগত দিক থেকে উপহারটি ছোট-বড় যেমনি হোক না কেন, তার পেছনে সময় ও শ্রম দেওয়ার স্বতঃস্ফূর্ততা গড়ে দেয় সম্পর্কের মাপকাঠি। সেই সূত্রে চলুন, সাধ্যের মধ্যেই কিছু ভ্যালেন্টাইন’স ডে উপহার দেখে নেওয়া যাক।
প্রিয়জনের জন্য কম খরচে ১০টি ভ্যালেন্টাইন’স ডে উপহার
ঘর সাজানোর গাছ
শুধু শোভা বাড়াতেই নয়, একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্যও অনেকে ঘর সবুজায়নের ব্যবস্থা করেন। অনেকেই তাদের কাজের টেবিল ও তার আশেপাশে জানালাকে সাজিয়ে তুলতে পছন্দ করেন ছোট ছোট গাছের টব দিয়ে। বিশেষ করে ঘৃতকুমারি বা অ্যালোভেরা, স্নেক পাম, মাদার্স-ইন-লস টাঙ, রাবার গাছের মতো ইন্ডোর প্ল্যান্টগুলো মানসিক স্বাস্থ্যকেও উন্নত করে। শুধু চারার দিক থেকে এগুলোর দাম খুব বেশি নয়। মূল্যের তারতাম্যটা মূলত বিভিন্ন ধরনের টবের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। সেগুলোর মধ্যে বেশ সাশ্রয়ী হয় প্লাস্টিকের টবগুলো। গাছপ্রেমীদের জন্য অনায়াসেই এটি একটি সেরা উপহার।
আরও পড়ুন: বিয়ের শাড়ি, লেহেঙ্গা ঢাকার যেখানে পাবেন: বধূ সাজের সেরা গন্তব্য
চকলেট বা ক্যান্ডি
বিশেষ দিনগুলো উদযাপনের ক্ষেত্রে অনেক আগে থেকেই প্রিয় খাবারের প্রতিনিধিত্ব করে আসছে চকলেট। বিধায় বাজারগুলোতেও নানা উৎসবে বিভিন্ন রঙের আকর্ষণীয় মোড়কে পরিবেশন করা হয় চকলেট ও ক্যান্ডিকে। মোড়ক বা চকলেট বক্স নির্বাচন করা যায় প্রিয়জনের প্রিয় রঙের ভিত্তিতে।
১০ মাস আগে
শিশুদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে দূরে রাখতে করণীয়
১১ হাজার ভোল্টের ট্রান্সমিশন কেবলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাত থেকে কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ৭ বছর বয়সী এক শিশুর। ঘটনাটি কুমিল্লার সংরাইশ নামক একটি এলাকার; ঘটেছে বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি)। শিশুটি বর্তমানে চিকিৎসাধীন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
শুধু প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোই নয়; দেশের আধুনিক শহরগুলোও মুক্ত নয় এমন নির্মম দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে। বিশেষ করে আবাসিক এলাকাগুলো যেখানে উচ্চ ভোল্টের বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ দ্বারা পরিবেষ্টিত, সেখানে শিশুর খেলার জায়গাটি নিমেষেই পরিণত হতে পারে মরণফাঁদে। এমনকি ঘরের ভেতরটাও এই ঝুঁকির বাইরে নয়। তাই শিশুর নিরাপদ বিচরণক্ষেত্র নিশ্চিত করতে অনতিবিলম্বে প্রয়োজন জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের।
এই পরিপ্রেক্ষিতে চলুন দেখে নিই, ঘরের ভেতরে ও বাইরে উভয় ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে শিশুর জীবন বাঁচাতে কি কি উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে।
বৈদ্যুতিক শক থেকে শিশুদের রক্ষা করার উপায়
ঘরের ভেতরে প্রয়োজনীয় সাবধানতা
দেয়ালের বৈদ্যুতিক সকেটগুলো আবৃত রাখা
ঘরের দেয়ালের নিচের দিকে প্রায় সময় দেখা যায় বিদ্যুৎ সংযোগের উৎসগুলো অনাবৃত থাকে। এছাড়া ব্যবহার শেষে প্লাগ খুলে ফেলার পর সেগুলো অনাবৃত অবস্থাতেই রেখে দেওয়া হয়। এগুলো বাচ্চাদের হাতের নাগালেই থাকে। খেলার ছলে এগুলোর ছোট গর্তগুলোতে বাচ্চাদের হাত চলে যেতে পারে। এমন অনর্থ থেকে বাঁচতে বৈদ্যুতিক আউটলেট কভার বা সেফটি প্লাগের আবির্ভাব।
আরও পড়ুন: শহরে রান্নার জন্য গ্যাসের চুলার সেরা কয়েকটি বিকল্প
প্লাগগুলো মূলত টু পিং ও থ্রি পিং সকেটের জন্য সামঞ্জস্য করে তৈরি করা হয়। আর কভারের ক্ষেত্রে বর্তমানের অত্যাধুনিক স্লাইডিং আবরণীগুলো ব্যবহার শেষে কোনো অ্যাডাপ্টারের প্লাগ খুলে ফেলার সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সকেটটিকে ঢেকে ফেলে। এতে করে বিদ্যুৎ সংযোগের গর্তগুলো আবৃত হয়ে যায় এবং তাতে বাচ্চাদের হাত পড়লেও কোনো বিপদের আশঙ্কা থাকে না।
বিদ্যুতের কেবলগুলো গুছিয়ে রাখা
শুধু নিরাপত্তার জন্য নয়, ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে কেবল অর্গানাইজার। এলোমেলো করে ছড়ানো-ছিটানো কেবল বা তারগুলোতে বাচ্চাদের ছোট ছোট হাত-পা জড়িয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে চঞ্চল শিশুরা ছুটে বেড়াতে যেয়ে এগুলোতে পা জড়িয়ে পড়ে যেয়ে আঘাত পেতে পারে। আর কোনো একটিতে ছোট্ট কোনো চিড় বা লিকেজ থাকলে তা মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তাই নিদেনপক্ষে দড়ি বা ফিতে দিয়ে কেবল বা তারগুলোকে বেধে পরিপাটি করে রাখা উচিৎ।
তাছাড়া এখন অধিকাংশ ইলেকট্রনিক পণ্যের সঙ্গে এগুলোর কেবল গুছিয়ে রাখার জন্য ছোট ছোট প্লাস্টিকের তার সরবরাহ করা হয়। এগুলোর যথাযথ সদ্ব্যবহার করে তার বা কেবলগুলো আড়াল করে রাখা উচিৎ। কর্ড সংগঠক ব্যবহার করে বা অতিরিক্ত কর্ডের দৈর্ঘ্য বেঁধে দড়িগুলোকে সংগঠিত এবং নাগালের বাইরে রাখুন। এটি দড়িতে ছিটকে যাওয়ার বা টানার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: নিপাহ ভাইরাস সতর্কতা: কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার ঝুঁকি
ওভারলোড না করা
একটি আউটলেটে একাধিক ডিভাইস ব্যবহারের উপায় থাকলেও তার সুবিধা নেওয়া উচিৎ নয়। বিশেষ করে উচ্চ পাওয়ার রেটিংয়ের বৈদ্যুতিক আসবাব একটি আউটলেটে একটির বেশি ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে আউটলেটগুলো অতিরিক্ত গরম হয়ে সকেটের পেছনে তার বা আসবাবের কেবল পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া শর্ট সার্কিট হলে একসঙ্গে একাধিক যন্ত্র নষ্ট হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।
বিদ্যুতের প্রতিটি সংযোগের ত্রুটিহীনতা নিশ্চিত করা
ঘরের প্রতিটি বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ঠিক মতো কাজ করছে কি না তা রুটিন মাফিক যাচাই করা হলে সময় মতো ত্রুটিগুলো চোখে পড়বে। এতে করে যন্ত্রপাতিগুলো রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় থাকবে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত হবে প্রত্যেকটির নিরবচ্ছিন্ন ব্যবহার। আর ঘরের ভেতরে শিশুর খেলার জায়গাটিও হবে ঝুঁকি মুক্ত।
বৈদ্যুতিক যন্ত্রাদিকে কোনোভাবেই পানির সংস্পর্শে না আনা
রান্নাঘর ও টয়লেটের বৈদ্যুতিক আউটলেটগুলোকে কোনোভাবেই ভেজা রাখা যাবে না। প্রয়োজনে নিয়মিত শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে রাখতে হবে। দিনের অধিকাংশ সময়ই এই স্থানগুলোতে পানির কাজ থাকে। ফলে যে কোনো ভুলে মেঝেতে পানি পড়ে তা গড়িয়ে চলে আসতে পারে ডাইনিং বা অন্যান্য ঘরগুলোতে। পরিণতিতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে শিশুর খেলে বেড়ানোর জায়গাটি।
ফ্রিজ বা ওভেনের মতো উচ্চ ভোল্টেজের যন্ত্রপাতির পেছনের স্থান কোনোভাবেই যেন পানির সান্নিধ্যে না আসে। এগুলোর কেবলে হঠাৎ পানি লেগে গেলে দ্রুত পাওয়ার অফ করে শুকনো কাপড় দিয়ে তা মুছে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: তীব্র শীতে পোষা প্রাণীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয়
১০ মাস আগে