বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘রাজনৈতিক সংকট সমাধান হওয়ার আগেই আকস্মিকভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা একতরফা নির্বাচন আয়োজনের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত।’
শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, দেশে লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে। তফসিল ঘোষণার পরেও তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে।
রিজভী দাবি করেন, গত চার দিনে সারাদেশে বিএনপি প্রায় ২ হাজার ৩০০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তাদের দলের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছেন। কয়েক লাখ নেতাকর্মী ‘মিথ্যা’ মামলায় আদালতে হাজিরা দেয়া নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন।
‘সব বিরোধীদলের দাবি ছিল, নির্বাচনের জন্য সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ এবং সবার জন্য লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার পরে যেন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। কমিশনের কাছে নির্বাচন আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত সময়ও রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর অনুরোধে নির্বাচন পিছিয়ে দিলে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটত না’, বলেন বিএনপি নেতা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে টেলিভিশন ভাষণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৩ ডিসেম্বর ভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৯ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের শেষ তারিখ ২২ নভেম্বর। প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা যাবে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত।
রিজভী বলেন, সরকার সবসময় সংবিধানের বাইরে না যাওয়ার কথা বলে, কিন্তু তারা নিজেরাই বারবার সংবিধান লঙ্ঘন করে। যদিও চার টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, এখনও কোনো গেজেট বিজ্ঞপ্তি নেই এবং মন্ত্রীরা স্বাভাবিকভাবেই তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।
‘সংবিধান অনুসারে যদি কোনো ব্যক্তি কোনো সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন, যেমন- মন্ত্রিসভার সদস্য, তারা যদি রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেয় তবে তা অবিলম্বে কার্যকর হয়’, যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, চাকরিজীবীদের পদত্যাগের মতো মন্ত্রীদের পদত্যাগ গ্রহণ না করার কোনো সুযোগ নেই।
রিজভী বলেন, সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক আওয়ামী লীগের কয়েকজন মন্ত্রী ও সাংসদ দণ্ডিত হলেও তারা এখনও তাদের পদে বহাল রয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে কারাগারে নেয়া হয়। এমনকি তার সুচিকিৎসার অধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, নানা ইস্যুতে খালেদা জিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তাকে চিকিৎসা না দিয়ে জোরপূর্বক কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
খালেদা জিয়ার যথাযথ চিকিৎসা এবং তাকে অবিলম্বে কারাগার থেকে মুক্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান রিজভী।