বাংলাদেশ
আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন চালু
দুই বছরেরও বেশি সময় বিলম্বের পর অবশেষে পদ্মা নদী পার হয়ে আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন চালু হলো।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) একটি ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে, ‘লাইনটি ১৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে গোপালগঞ্জ গ্রিড সাবস্টেশন থেকে ৪০০ কেভি ভোল্টেজসহ সফলভাবে চালু করা হয়।’
তবে পিজিসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া জানান, লাইনটি চালু হলেও এ লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ দেয়া হবে না।
তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা পরীক্ষামূলকভাবে আগামী শনিবার থেকে বিদ্যুৎ প্রবাহের পরিকল্পনা করেছি এবং তারপর ধাপে ধাপে এটি ধীরে ধীরে সমস্ত সিস্টেমের সঙ্গে সিঙ্ক্রোনাইজ করে সম্পূর্ণরূপে চালু করা হবে।’
পিজিসিবি কর্মকর্তারা বলেছেন যে নবনির্মিত লাইনটি সম্পূর্ণ চালু হওয়ার ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দু’টি বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র-১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা এবং ১৩২০ মেগাওয়াট রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ঢাকা শহরে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের সুবিধা হবে।
এর মধ্যে চীনের কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত পায়রা পাওয়ার প্ল্যান্টের ৬২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দু’টি ইউনিট ইতোমধ্যেই চালু করা হয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট (৬২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা) এছাড়াও একটি ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে এবং এটি আগামী বছরের মার্চ মাসে বাণিজ্যিকভাবে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘এই দুটি প্লান্ট থেকে বিদ্যুৎ রাজধানীতে আসতে পারলে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
সরকার ২০১৬ সালে আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ সঞ্চালন লাইন বাস্তবায়নের কাজ হাতে নেয়।
কিন্তু পদ্মা সেতু নির্মাণের কারণে সেতু নির্মাণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পদ্মা নদীতে টাওয়ার স্থাপনের কাজ স্থগিত রয়েছে। ফলস্বরূপ, প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হতে একটি বিশাল বিলম্বের সম্মুখীন হয়েছে।
পিজিসিবি ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছে যে নবনির্মিত আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সফলভাবে চার্জিং পাওয়ার সঙ্গে চালু করেছে পিজিসিবি।
গোপালগঞ্জ থেকে আমিনবাজার গ্রিড সাবস্টেশন পর্যন্ত লাইনের দৈর্ঘ্য ৮২ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার। যার মধ্যে পদ্মা নদীতে রয়েছে সাত দশমিক পাঁচ কিলোমিটার নদী পারাপার।
আরও পড়ুন: সৌদি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিপিডিবি’র ১০০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি
গোপালগঞ্জ থেকে আমিনবাজার লাইনে মোট ২২৬টি টাওয়ার রয়েছে। নদী পারাপারের
সুবিধার্থে পদ্মা নদীতে এবং উভয় পাশে মোট ১১টি উঁচু টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে।
যেহেতু লাইনটি ৪০০ কেভি ভোল্টেজে সফলভাবে চার্জ করা হয়েছে, শিগগিরই সমস্ত প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি এবং মূল্যায়নের পরে এই লাইনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন (লোড প্রবাহ) শুরু হবে।
নবনির্মিত লাইন চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পূর্বে নির্মিত পায়রা-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি লাইন এবং গোপালগঞ্জ-মোংলা ৪০০ কেভি লাইন ঢাকার উপকণ্ঠে আমিনবাজার গ্রিড সাবস্টেশনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
পিজিসিবি উল্লেখ করেছে, এটি বৃহত্তর খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের সঙ্গে জাতীয় গ্রিডের সংযোগকে আরও শক্তিশালী এবং নির্ভরযোগ্য করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগকে ৭ দিনের মধ্যে তথ্য দেয়ার নির্দেশ কমিশনের
পুরান ঢাকার জুতার গুদামের আগুন নিয়ন্ত্রণে
পুরান ঢাকার আলুবাজারের একটি জুতার গুদামে লাগা আগুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এর আগে এদিন বিকাল ৫টার দিকে পাঁচতলা ভবনটির চতুর্থ তলায় আগুনের সূত্রপাত হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের (গণমাধ্যম শাখা) গুদাম পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট বিকাল ৫টা ৩৫মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আগুনের সূত্রপাতের কারণ সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে ২ তেলবাহী ট্রাকের আগুন নিয়ন্ত্রণে
সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ফের আগুন
না’গঞ্জে দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ল বাস
দেশে ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৬৩
দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মোট ২৬৯ জন মারা গেছেন।
এসময় নতুন ১৬৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৯৫ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ৬৮ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু: একদিনে ৬ জনের প্রাণহানি, শনাক্ত ৭৩৪
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৮০৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে ৪৭৭ জন ঢাকার মধ্যে এবং ৩২৬ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৬১ হাজার ৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩৮ হাজার ৫২৬ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ২২ হাজার ৫৬৩ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ৬০ হাজার ১৭ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ৩৭ হাজার ৮৮৪ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি ২২ হাজার ১৩৩ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে একদিনে ৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৫৫
ডেঙ্গু: মৃত্যু মিছিলে আরও যুক্ত হলো ৩ জন
বাংলাদেশে গণমাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ে মুক্ত আলোচনার আয়োজন করে দৃক
বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের ওপর আলোকপাত করে বিশেষ আলোচনাসভার আয়োজন করে দৃক গ্যালারি।
বুধবার রাজধানীর পান্থপথে দৃক পিকচার লাইব্রেরিতে এটির আয়োজন করা হয়।
বিকাল সাড়ে ৫টায় দৃকপথ ভবনে বিশ্বখ্যাত ফটোসাংবাদিক ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলমের সঙ্গে এই কথোপকথনে যোগ দেন ইতিহাসবিদ, গবেষক এবং ইউএনবি ও ঢাকা কুরিয়ার-এর এডিটর-অ্যাট-লার্জ আফসান চৌধুরী।
কথোপকথনে দেশের দুইজন বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্বের বর্ণনার মাধ্যমে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রধান বাধাগুলোকে তুলে ধরেন।
শহিদুল বলেন, ‘বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতা নেই। আমরা যে মতাদর্শে স্বাধীন, তা এদেশে একটি মৌলিক ভুল ধারণা। আমরা যে পরিস্থিতিতে আছি তার ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই।’
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অন্তর্ভুক্ত বিধিতে আপত্তি জানিয়েছিলাম, কারণ এটি আইসিটি আইন ২০০৬-এর বিলুপ্ত বিধানের প্রতিস্থাপন ছিল। আইনমন্ত্রী যিনি এই আইন তৈরির তদারকি করেছিলেন তিনি দপ্তরের দায়িত্বে নেই।’
‘তৎকালীন আইনমন্ত্রী এই বিল সম্পর্কে বলেছিলেন যে এই আইনের অধীনে যদি কোনও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়, তবে তিনি নিজেই সাংবাদিককে রক্ষা করবেন। কেউ সেই ধারাটি আর স্মরণও করে না, কারণ তিনি আর মন্ত্রী নেই।’
আফসান বলেন, ‘মানুষ ভুলভাবে বিশ্বাস করে যে বাংলাদেশে মুক্ত গণমাধ্যম আছে, কিন্তু তা ভুল। বাংলাদেশের কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সীমিত করে।’
আরও পড়ুন: লেখক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আলী ইমাম আর নেই
‘সরকার আজকাল বেশিরভাগই ডিএসএ প্রয়োগ করে বিশ্বের বৃহত্তম সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকের কারণে। প্রশাসনের জন্য এই ধরনের একটি বিশাল সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’
‘ফেসবুক এখন গণমাধ্যম এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম যেখানে সবাই একজন সাংবাদিক। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মিডিয়া আউটলেট তাদের মালিকদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কারণ তাদের অর্থ উপার্জনের প্রয়োজন রয়েছে। স্বাধীনতা অর্জন এবং অনুশীলন করার জন্য এই দাবিটি বাদ দিতে হবে। মিডিয়া, কিন্তু কেউ সেই সুযোগ নিতে চায় না।’
আফসান বলেন, ‘সুতরাং সাংবাদিকরা যদি নিজেরাই সাংবাদিকতা চর্চা করতে চান, তবে তাদের একাই তা করতে হবে। কারণ সংস্থাগুলো তাদের সহায়তা করতে পারে না। আমাদের এখন বিবেচনা করতে হবে বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে একই সঙ্গে আমাদের মতামত সঠিকভাবে প্রকাশ করা যায়।
আরও পড়ুন: কিছু গণমাধ্যম বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বাংলাদেশ সম্পর্কে মন্তব্য করতে বাধ্য করে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তৃতীয় দফায় ফখরুল ও আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর
রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মামলায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের পক্ষে তৃতীয় দফায় করা জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এদিন জামিন আবেদনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করেন।
আরও পড়ুন: ফখরুল-আব্বাসকে আগেই ডিভিশন দেয়া উচিত ছিল: হাইকোর্ট
এর আগে বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালতে বিশেষ জামিন আবেদন করেন মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের আইনজীবী। আদালত বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন।
৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে আটক করে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে তাদের গ্রেপ্তার দেখায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
৯ ডিসেম্বর বিকালে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর ১২ ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসসহ ২২৪ জনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।
আরও পড়ুন: ফখরুল ও আব্বাসকে কারাগারে প্রথম শ্রেণীর বন্দীর মর্যাদা দেয়া হয়েছে: রাষ্ট্রপক্ষ
ফখরুল ও আব্বাসের কারাগারে ডিভিশন চেয়ে হাইকোর্টে রিট
জিয়ার আমলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের পরিবার বিচার নিশ্চিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের হস্তক্ষেপ চান
জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসনামলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বিচারের অপেক্ষায় আছেন। তারা অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসনামলে জোরপূর্বক গুমের শিকার পরিবারের সদস্যদের সংগঠন 'মায়ের কান্না' এর ব্যানারে সদস্যরা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে স্মারকলিপি দেন।
বুধবার সকালে ঢাকার শাহীনবাগে গুমের শিকার পরিবারের সদস্যদের সংগঠন 'মায়ের ডাক'-এর সমন্বয়ক সানজিদা ইসলামের বাসায় গেলে তারা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রতি এ আহ্বান জানান।
সানজিদা বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন, যিনি ২০১৩ সালে বলপূর্বক গুমের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
কামরুজ্জামান লেনিনের স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে 'মায়ের কান্না' সংগনের সংগঠকরা মার্কিন রাষ্ট্রদূতের হস্তক্ষেপ কামনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বুদ্ধিজীবী দিবসে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বিতর্কিত করা হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
কামরুজ্জামান লেনিনের বাবা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সার্জেন্ট সাইদুর রহমান, যিনি পরে বিমান বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন এবং জেনারেল জিয়ার শাসনামলে ‘অন্যায্যভাবে’ তাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে আবেদনে, ‘মায়ের কান্না’ আয়োজকরা লিখেছেন: ‘আমরা সুষ্ঠু বিচারের জন্য আপনার কাছে এসেছি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, খুনি জিয়ার এই অমানবিক কাজের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র শক্ত অবস্থান নেবে এবং বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যেতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।’
তারা আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি যে মার্কিন সরকার এই বিষয়গুলো অত্যন্ত মানবিকভাবে বিবেচনা করবে, একটি আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন গঠন করে এবং আইনের শাসন ও মানবাধিকার জোরদার করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।’
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বাধীন গবেষকদের মতে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া ক্ষমতা গ্রহণের পর তার আদেশে ১০০০ সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। যাদের মধ্যে অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
তারা জানান, জেনারেল জিয়ার শাসনামলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তাদের প্রিয়জনের দেহাবশেষ সম্পর্কে অনেকেই এখনও অবগত নন।
১৯৭৭ সালে ‘জাপানি রেড আর্মি কর্তৃক ঢাকায় একটি জাপানি বিমান ছিনতাই ও অবতরণ’- এর ঘটনার কথা উল্লেখ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে ন্যায়বিচারের জন্য চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘জেনারেল জিয়ার অনুগত বাহিনী’ ঢাকায় একটি অভ্যুত্থানের নামে সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর শত শত অফিসারকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, জিয়া অন্যায়ভাবে প্রায় এক হাজার ১৫৬ জন সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বা ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।
‘মায়ের কান্না’-এর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মার্কিন রাষ্ট্রদূত রাজধানীর শাহীনবাগ এলাকার একটি বাড়িতে গিয়েছিলেন এমন তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকায় বসবাসকারী ভুক্তভোগী পরিবারগুলো উপস্থিত হয়ে রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
আরও পড়ুন: মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মার্কিন রাষ্ট্রদূত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে স্মৃতিসৌধে যাননি, অন্য কোথাও গেছেন: কাদের
করোনা: শনাক্ত ১৫, মৃত্যু নেই
দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে কারও মৃত্যু হয়নি। এই সময়ে নতুন করে ১৫ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৩৭জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৬ হাজার ৮৮১ জনে পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৩৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় মৃত্যু ১, শনাক্ত ১৯
এ সময়ে শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৫ শতাংশ। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৫০ জন।
এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৬ জনে।
শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনা: দেশে শনাক্ত ২০, মৃত্যু নেই
নদী দখলকারীদের খসড়া তালিকা প্রস্তুত: নৌপরিবহনমন্ত্রী
সারাদেশে যারা স্থানীয়ভাবে নদ-নদী দখল করেছে সরকার তাদের তালিকা করেছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। দেশের গুরুত্বপূর্ণ নদ-নদীর নাব্যতা ও নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, সুপারিশ ও বাস্তবায়নে গঠিত টাস্কফোর্সের সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদ-নদী রক্ষায় আমরা মানুষকে সচেতন করতে পেরেছি, যা আমাদের একটি সফলতা। এক সময় একটা কথা ছিল, যা কিছু নষ্ট, সবকিছু পানিতে ফেলে দাও। কিন্তু এখন আর তা নেই। সবাই পানি পবিত্র রাখেন। এখন সবাই সচেতনভাবে পানির পবিত্রতা রক্ষা করছেন।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিশ্বাসীদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না: খালিদ মাহমুদ
নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, ঢাকার চারপাশের নদী রক্ষায় আমরা কাজ করছি। এখানে ওয়াকওয়ে থেকে শুরু করে ইকোপার্ক নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এর বাইরেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে প্রধান করে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকার চারপাশ ও কর্ণফুলী নদী রক্ষায় এই টাস্কফোর্স কাজ করবে। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে যারা নদী দখল করেছে, তাদের একটি খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। নদী রক্ষা কমিশনও এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছে। যেহেতু এটা দীর্ঘদিনের একটি বোঝা, কাজেই আমরা এর সমাধান করতে চাই। আমরা নাব্যতা বাড়াতে কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, নদীর নাব্যতা বাড়াতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাতটি ড্রেজার সংগ্রহ করে দিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত সাতটি ড্রেজার আটটিতে পৌঁছায়নি।
বর্তমান সরকার ৮০টি ড্রেজার সংগ্রহের চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরইমধ্যে ৫০টির মতো ড্রেজার আমাদের সংগ্রহে চলে এসেছে। কাজেই বোঝা যায়, নদীর গতিপথ বাড়াতে আমরা কতটা সচেষ্ট, তা এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায়। আমরা অনেকগুলো চ্যানেল উদ্ধার করছি, তাতে নৌচলাচল করছে। অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল নতুন এক উচ্চতায় চলে গেছে বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: অভ্যন্তরীণ নৌপথ ব্যবস্থাপনায় মার্কিন সহযোগিতাকে স্বাগত জানালেন খালিদ মাহমুদ
বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের ডাককে প্রত্যাখ্যান করেছে জনগণ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষ ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ‘ভোটারবিহীন নির্বাচনের’ সময় যেমনটা করেছিল ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকও সেভাবেই প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি ১০ ডিসেম্বরের জন্য (বিএনপির পক্ষ থেকে) বিশাল ঘোষণা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ অগ্নিসন্ত্রাসীদের প্রত্যাখ্যান করেছে, যারা (অতীতে) জাল ভোটার তালিকা তৈরি করেছে। দেশের মানুষ এখন তাদের শুধু প্রত্যাখ্যান করেনি, ১৯৯৬ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনেও প্রত্যাখ্যান করেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের তৃতীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে সন্ধ্যায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিল। অন্য কোনও রাজনৈতিক দল বা কোনও ভোটার ওই নির্বাচনে সাড়া দেয়নি।
তিনি বলেন, ভোট কারচুপির মাধ্যমে তারা জাতির পিতার খুনি রশিদ ও বজলুল হুদাকে সংসদ সদস্য বানিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ সেই নির্বাচনকে শুধু প্রত্যাখ্যানই করেনি, তারা আন্দোলনও শুরু করেছিল যা দেড় মাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ও জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে খেলা করা বিএনপির চরিত্র। তারা জনগণের দল নয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে না, ক্ষমতাই তাদের লুটপাটের হাতিয়ার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ তাদের জন্য স্বাধীনতা অর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, এর মানে যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে তখনই জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির অর্থই হলো- জুলুম-নির্যাতন, দুঃশাসন, লুটপাট, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও বাংলা ভাই।
আরও পড়ুন: সংসদীয় গণতন্ত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় জাপাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
বিদায়ী জাপানি রাষ্ট্রদূতের আশা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে: ডেপুটি প্রেস সচিব
বিএনপির সংসদ সদস্যদের শূন্য আসন: ১৮ নভেম্বর উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী ১৮ ডিসেম্বর বিএনপির সংসদ সদস্যদের শূন্য সংসদীয় আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের রবিবার একটি বৈঠক আছে। সেখানে শূন্য আসনের উপনির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হবে।’
বৈঠকের পর উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়া গণতান্ত্রিক চর্চা গড়ে উঠবে না: সিইসি
১১ ডিসেম্বর সংসদের সাতজন বিএনপি সদস্যের (এমপি) মধ্যে পাঁচজন সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে তাদের পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পদত্যাগকারী সংসদ সদস্যরা হলেন- ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের মো. জাহিদুর রহমান, বগুড়া-৪ আসনের মো. মোশারফ হোসেন, বগুড়া-৬ আসনের গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের মো. আমিনুল ইসলাম এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনের রুমিন ফারহানা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মো. হারুনুর রশিদ, যিনি এখন অস্ট্রেলিয়ায় আছেন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের অসুস্থ সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া স্পিকারের কাছে ব্যক্তিগতভাবে পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারেননি।
ওই দিনই সংসদ সদস্যরা ইমেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠান।
আরও পড়ুন: বিএনপির সংসদ সদস্যদের শূন্য আসন: ১৫ ডিসেম্বর উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে ইসি
গেজেট হলেই শূন্য আসনে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন: ইসি