বাংলাদেশ
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশুটিকে সিএমএইচে স্থানান্তর
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশুটিকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়েছে। শনিবার (৮ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান এমন তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকাল ৫টায় তাকে সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে নয় বছরের শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
পরিবার জানিয়েছে, শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার সকালে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় শিশু ধর্ষণের অভিযোগে হিটু শেখ আটক
শনিবার এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৪) এর ক/৩০ ধারায় ধর্ষণ ও ধর্ষণের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনায় এরইমধ্যে গত দুদিনে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাগুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আয়ুব আলী।
আটক হওয়া আসামিরা হলেন, হিটু শেখ (৫৯), তার ছেলে সজিব শেখ (২০) ও আজিজ শেখ (২৫)। তাদের বাড়ি মাগুরা থানার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে।
২৮২ দিন আগে
দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও ৯
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (৭ মার্চ) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। এ সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৯ জন।
শনিবার (৮ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড মার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪ জন, আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ৫ জন রোগী।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও ৭
চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৭৬ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ এবং ২৩ দশমিক ১ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ হাজার ৫৯৮ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।
২৮২ দিন আগে
ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৭৮
এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে মোট ৫৯৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫৭৮ জন এবং কমপক্ষে ১ হাজার ৩২৭ জন আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ৭৩ জন ও শিশু ৮৭টি।
শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উপস্থাপন করেছে বেসরকারি সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে সংগঠনটি।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৪১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২২৭ জন যা মোট নিহতের ৩৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। ফেব্রুয়ারিতে মোট সড়ক দুর্ঘটনার মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪০ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
এছাড়া মাসজুড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৪ জন পথচারী নিহত হয়েছেন যা মোট নিহতের ১৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৮২ জন (১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ)। একই সময়ে দুটি নৌ দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত ও ২ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ১৪টি রেল দুর্ঘটনায় ১৩ প্রাণহানি ও ৬ জন আহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গণপরিবহনে শৃঙ্খলায় রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন: রোড সেফটি ফাউন্ডেশন
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেলের চালক ও আরোহী ২২৭ জন, বাসযাত্রী ৩৩ জন, ট্রাক-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ৫৬ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস আরোহী ২২ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ৯২ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-টমটম-এস্কেভেটর) ২০ জন ও বাইসাইকেল-রিকশার আরোহী নিহত হয়েছেন ১৪ জন।
দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২০৯টি জাতীয় মহাসড়কে, ২৬৮টি আঞ্চলিক সড়কে, ৭৩টি গ্রামীণ সড়কে, ৪৬টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। এ সময় দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ছিল মোট ৯৩৮টি।
২৮২ দিন আগে
হাজীদের হয়রানি দূর করে সেবার মান বাড়ানো হবে: হাব সভাপতি
হাজীদের হয়রানি দূর করতে ও সেবার মান বাড়াতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার।
শনিবার (৮ মার্চ) হাব কার্যালয়ে রিলিজিয়াস রিপোর্টার্স ফোরামের (আরআরএফ) নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
হাব সভাপতি বলেন, ‘এখন থেকে হাব কারও লেজুড়বৃত্তি করবে না। আমরা সরকারের সঙ্গে কাজ করব, কিন্তু সরকারের কোনো লেজুড়বৃত্তি করব না।’
হজযাত্রীদের স্বার্থই আগে দেখা হবে বলে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, ‘অতীতে যেসব অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে সেসব থেকে বেরিয়ে আসা হবে।’
আরও পড়ুন: ‘হজ ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’ চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
প্রয়োজনে নিজেই সৌদি যাবেন উল্লেখ করে গোলাম সরওয়ার বলেন, ‘হাজীদের সেবা দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করব। আশা করি, এ নিয়ে সম্মানিত হজযাত্রীদের জন্য আতঙ্কের কোনো কারণ নাই।’
তিনি জানান, ‘সৌদি থেকে প্রতিটি এজেন্সির জন্য ১ হাজার কোটা নির্ধারণ করে দেওয়ার কারণে ১ হাজার ৩০০ এজেন্সির মধ্যে মাত্র ৭০টি এজেন্সি কাজ করছে। আর বাকিরা কাজ করছে সাব-এজেন্সি হিসেবে।’
প্রতি বছরই হজে যাওয়ার সময় শেষ মুহূর্তে ও মক্কা-মদিনায় গিয়ে হজ যাত্রীদের বিভিন্ন হয়রানির শিকার হতে হয়—এমন প্রশ্নের জবাব গোলাম সরওয়ার বলেন, ‘দেশের ভেতরের হয়রানির জন্য মূলত কিছু মধ্যসত্ত্বভোগী দায়ী। এজেন্সিগুলো কিন্তু আসলে এসব কাজ করে না।’
এ সময় হাব মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদারসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও আরআরএফের সভাপতি ওবায়দুল্লাহ বাদল, সেক্রেটারি, কামরুজ্জামান বাবলু, সহসভাপতি মুহসিনুল কবির লেবু, মো. মিয়া হোসেন, অর্থসম্পাদক শাহ আলম নুর, সাবেক সভাপতি শামসুল ইসলাম ও ফয়েজ উল্লাহ ভুইয়া, সদস্য আহমেদ জামাল, ছলিমুল্লাহ মেজবা ও জাহাঙ্গীর আলম আনসারী উপস্থিত ছিলেন।
২৮২ দিন আগে
নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের ৩৬ সদস্য গ্রেপ্তার
সারা দেশে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের ৩৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৮ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ২০০৯ সালে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার অন্যতম সংগঠক সাইফুল ইসলামও রয়েছেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বায়তুল মোকাররমে হিযবুত তাহরীরের মিছিল, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল (শুক্রবার) ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদের বাইরে সমাবেশে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনটির সদস্যদের ধরতে পুলিশ দেশব্যাপী অভিযান শুরু করেছে। অভিযানে এ পর্যন্ত ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, ‘আমরা সমাবেশের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি। ইতোমধ্যে হিজবুত তাহরীরের অনেক সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
সংগঠনটির সদস্যদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বেশ কয়েকটি মামলাও করেছে পুলিশ।
২৮২ দিন আগে
আরেফিন সিদ্দিকের সার্বিক অবস্থা ‘খুবই ঝুঁকিপূর্ণ’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সার্বিক অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাকে এখন যেকোনো পরিবর্তনের জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। রবিবার (৮ মার্চ) ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের চিকিৎসকরা এমন তথ্য জানিয়েছেন।
তবে এয়ার এম্বুলেন্সে করে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতাল কিংবা মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেওয়া হতে পারে বলে তার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে। ওই সূত্র বলেছে, সিঙ্গাপুরে জেনারেল হাসপাতাল আর মাউন্ট এলিজাবেথে ডকুমেন্টস পাঠানো হয়েছে। ঢাকার ডাক্তাররা অনুমতি দিলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে তাকে নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধীনে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন ঢাবির সাবেক এই উপাচার্য। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, গেল বৃহস্পতিবার আনুমানিক দুপুর ৩টার পরে আরেফীন সিদ্দিকী ঢাকা ক্লাবে অবস্থানকালে হঠাৎ দাঁড়ানো অবস্থা থেকে পড়ে যান। এরপর তার জ্ঞানের মাত্রায় পরিবর্তন হওয়ায় এবং বমি হওয়ায় তাকে কাছের বারডেম জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এরপর ইমার্জেন্সি বিভাগ থেকে তাৎক্ষণিকবাবে তার মস্তিষ্কের পরীক্ষায় ‘রাইট সাইডেড অ্যাকিউট অন ক্রোনিক সাব ডিউরাল হেমাটোনা উইথ ফ্রন্টাল লব আইসিএইচ ও সিএএইচ দেখা দেওয়ায় দ্রুত তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে রেফার করা হয়।
তাকে সেদিন বিকাল ৪টা ২১ মিনিটে সরাসরি নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. নজরুল হোসেইনের অধীনে নিউরো আইসিউতে ভর্তি করা হয়। তখন তার জ্ঞানের মাত্রা ছিল ১৩/১৫। ভর্তির অল্প সময় পরেই হঠাৎ তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, চোখের মনি বড় হয়ে যায়, হার্টরেট কমতে থাকে এবং জ্ঞানের মাত্রা ৪/১৫ হয়ে যায়। দ্রুত তার স্বজনদের জানিয়ে তাকে তৎক্ষনাৎ লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আরেফিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি। এর প্রায় সাড়ে চার বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়।
আরও পড়ুন: লাইফ সাপোর্টে ঢাবির সাবেক ভিসি আরেফিন সিদ্দিক
নির্বাচনের পর ২০১৩ সালের ২৫ অগাস্ট প্যানেলে থাকা তিনজনের মধ্যে আরেফিন সিদ্দিককে বেছে নেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও আচার্য আবদুল হামিদ। ১৯৫৩ সালের ২৩ অক্টোবর ঢাকায় জন্ম নেওয়া আরেফিন সিদ্দিক ১৯৬৯ সালে এসএসসি এবং ১৯৭১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
১৯৭৩ সালে বিএ এবং ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে এমএ করেন তিনি। ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগ দেওয়ার আগে বুয়েটের পিআর ছিলেন আরেফিন সিদ্দিক।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের নীল দলের নেতা আরেফিন সিদ্দিক দুই মেয়াদে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চেয়ারম্যান ও প্রেস ইনস্টিটিউটের সদস্যও ছিলেন তিনি।
উপাচার্যের দায়িত্ব পাওয়ার আগে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।দুঃখপ্রকাশ: ‘চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হবে আরেফিন সিদ্দিককে’ বলে ভুলবশত খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে। মূল বিষয় হচ্ছে, তার চিকিৎসাসংক্রান্ত নথি সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতাল, মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল এবং ভারতের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসার জন্য তাকে এসব দেশে পাঠানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
২৮২ দিন আগে
জাতীয় প্রেস ক্লাবে সুলভ মূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু
রাজধানীসহ সারা দেশব্যাপী রমজানের শুরু থেকে সুলভ মূল্যে দুধ-ডিম-মাংস বিক্রি কার্যক্রম চালু করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এর ধারাবাহিকতায় এবার জাতীয় প্রেসক্লাবে শুরু হয়েছে এই পণ্য বিক্রির কার্যক্রম।
শনিবার (৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাব সদস্যদের জন্য এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নীলুফা আক্তার।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত সচিব নীলুফা আক্তার বলেন, ‘দেশের মানুষের মাঝে সুলভ মূল্যে প্রোটিন জাতীয় খাদ্যপণ্যের সরবরাহ বাড়াতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এসব পণ্য কিনতে সারা দেশের নারীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে বাজারে পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছে।’
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান বলেন, ‘সারা দেশেই এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রাজধানীতে প্রতিদিন ২৫টি স্পটে এই কার্যক্রম চলছে। এছাড়া ঢাকার বাইরে প্রায় হাজার খানেক স্পটে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: খুলনায় স্বল্পমূল্যে পণ্য বিক্রি করছেন শিক্ষার্থীরা
তিনি জানান, শুক্রবার পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট প্রায় ৬ কোটি টাকার ডিম, দুধ, ড্রেসড ব্রয়লার মাংস, গরুর মাংস ও খাসির মাংস বিক্রি হয়েছে। এ সময় রাজধানীর ৫২ হাজার ৪৫৩ জন ক্রেতা এসব পণ্য ক্রয় করেছেন। এর মধ্যে নারী ক্রেতা ছিলেন ২৭ হাজার ৩০৮ জন ও পুরুষ ক্রেতা ২৫ হাজার ১৪৫ জন।
ড. সুফিয়ান বলেন, রাজধানীতে পুরুষের চেয়ে নারী ক্রেতার সংখ্যাই বেশি দেখা গেছে। অন্যদিকে, ঢাকার বাইরে মোট ক্রেতার এক-তৃতীয়াংশ নারী। এতে বোঝা যায়, সরকারের এই উদ্যোগ নারীদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে।
সাংবাদিকদের জন্য এই কার্যক্রম শুরু করায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারকে ধন্যবাদ জানিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ বলেন, ‘এই ধরনের মানবিক কার্যক্রম যত সম্প্রসারিত করা যাবে, দেশের মানুষ ততই উপকৃত হবে। রমজান মাসে প্রোটিন জাতীয় পণ্যের যে ধরনের সংকট তৈরি হয়, তা এবার হয়নি। এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সুচিন্তিত পরিকল্পনারই অংশ।’
সুলভমূল্যে বিক্রয় কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রতি কেজি ড্রেসড ব্রয়লার মাংস ২৫০ টাকা, প্রতি লিটার পাস্তুরিত দুধ ৮০ টাকা, প্রতি ডজন ডিম ১১৪ টাকা ও প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
রমজান উপলক্ষে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি), বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), বাংলাদেশ ডেইরি অ্যান্ড ফ্যাটেনিং ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএফএ) এবং দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য অংশীজন ও প্রান্তিক খামারিগণ এই কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে।
২৮২ দিন আগে
পুঁজিবাজারে অস্থির সপ্তাহ: সূচকের পতন, কমিশনে বিশৃঙ্খলা
দেশের পুঁজিবাজারের জন্য গত সপ্তাহ মোটেও সুখকর ছিল না। একদিকে সূচকের পতন আর লেনদেন কমে যাওয়া, অন্যদিকে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থায় অভ্যন্তরীণ কোন্দল; সব মিলিয়ে অস্থিরতা কাটছে না পুঁজিবাজারে।
গেল পাঁচ কার্যদিবসে টানা তিনদিন পতনের পর শেষ দু-দিন সূচকের উত্থান হলেও সামগ্রিকভাবে সূচক ছিল কমতির দিকে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৩ পয়েন্ট।
২ মার্চ ৫ হাজার ২৪৭ পয়েন্ট দিয়ে শুরু হওয়া লেনদেন ৬ মার্চ শেষবেলায় গিয়ে ঠেকেছে ৫ হাজার ২০৩ পয়েন্টে। অন্যদিকে বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৫ পয়েন্ট।
একই অবস্থা শরীয়াভিত্তিক সূচকেও। পাঁচদিনে ডিএসইএসের সূচক কমেছে ৬ পয়েন্ট। বেহাল দশা ক্ষুদ্র এবং মধ্যম আকারের কোম্পানি নিয়ে গঠিত এসএমই সূচকে। এক সপ্তাহের লাগাতার পতনে এসএমই সূচক নেমে এসেছে ১ হাজার পয়েন্টের নিচে।
১ হাজার ১৭ পয়েন্ট থেকে ডিএমএমএএক্স ৪৭ পয়েন্ট কমে ৯৭০ পয়েন্টে নেমে এসেছে, যা এর আগের সপ্তাহের তুলনায় ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ কম।
পুরো সপ্তাহে লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই ছিল দরপতনের তালিকায়। ২৮৯ কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে দাম বেড়েছে মাত্র ৮৬ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ২০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ২৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ। ৫০০ কোটি টাকার ওপরে হওয়া গড় লেনদেনে পাঁচ কার্যদিবসে নেমে এসেছে ৩০০ কোটির ঘরে। লেনদেন কমার পাশাপাশি ঢাকার বাজারে মূলধন কমেছে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: টানা পতন কাটিয়ে পুঁজিবাজারে সূচকের সামান্য উত্থান
পুরো সপ্তাহেজুড়ে মাত্র তিন খাতে শেয়ারের দাম বেড়েছে। জ্বালানি, কাগজ এবং চামড়া খাত ছাড়া বড় বড় সবকটি খাতে হয়েছে বড় দরপতন। এরমধ্যে ব্যাংক খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ২৭ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং এ খাতে শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ কমেছে ৩১ দশমিক ৯১ শতাংশ। তালিকাভুক্ত ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে দাম কমেছে ২৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৯ ব্যাংকের শেয়ারের দাম। সাপ্তাহিক লেনদেনে শেষে মাত্র ৪ ব্যাংকের শেয়ারের দাম ছিল উর্ধ্বমুখী।
ব্যাংকের বাইরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারেও বেহাল দশা। গেল পাঁচ কার্যদিবসে এ খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ২৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং লেনদেন হওয়া শেয়ারের পরিমাণ কমেছে ৪০ দশমিক ৯৫ শতাংশ। তালিকাভুক্ত ২৩ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম কমেছে ১৯, বেড়েছে ৩ এবং অপরিবর্তিত আছে একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
রীতিমতো ধস নেমেছে সাধারণ বীমা এবং জীবন বীমা খাতের শেয়ারে। পাঁচ কার্যদিবসে সাধারণ বীমা খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ৪৩ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং জীবন বীমা খাতে এ দরপতনের পরিমাণ ৫৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।
ঢাকার পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে অরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেডের। প্রতিদিন গড়ে কোম্পানিটির ২১ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার ক্রইয়-বিক্রয় হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে প্রাইম ব্যাংক এবং শীর্ষ তৃতীয়তে আছে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
পাঁচ কার্যদিবসে ব্লক মার্কেটে ১১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে প্রাইম ব্যাংক সর্বোচ্চ ৪০ কোটি এবং বিচ হ্যাচারি ১৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
দরবৃদ্ধিতে ডিএসইতে শীর্ষে আছে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এক সপ্তাহে জেড ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির দাম বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। অন্যদিকে দরপতনে শীর্ষে উঠে এসেছে এস আলম কোল্ড রোলড স্টিলস লিমিটেডের নাম। পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির দাম কমেছে ১৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
করুণ দশা চট্টগ্রামেও
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও অব্যাহত ছিল পতনের ধারা। ১৪ হাজার ৬৩৩ সার্বিক সূচক নিয়ে শুরু হওয়া লেনদেন শেষ কার্যদিবসে এসে ঠেকেছে ১৪ হাজার ৫০২ পয়েন্টে।
লেনদেনে অংশ নেয়া ৩২৯ কোম্পানির মধ্যে পুরো সপ্তাহজুড়ে দাম কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৯ কোম্পানির। বিপরীতে দাম বেড়েছে মাত্র ৮৫ কোম্পানির শেয়ারের।
দরপতনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। বি ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটি পাঁচ কার্যদিবসে সাড়ে ১৭ শতাংশ দাম হারিয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামের বাজারে ভালো অবস্থানে থাকা এস আলম কোল্ড রোলড স্টিলস লিমিটেড গেল সপ্তাহে দর হারিয়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ।
চট্টগ্রামে সপ্তাহজুড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে আছে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড। বি ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অন্যদিকে জেড ক্যাটাগরির আরেক কোম্পানি ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেডের দাম বেড়েছে ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ। পুরো সপ্তাহে চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে টেলিকম কোম্পানি রবির শেয়ার।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজার: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকায় উত্থান, চট্টগ্রামে পতন
কমিশনে অস্থিরতা
পুঁজিবাজারে পতনের পাশাপাশি নজিরবিহীন অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে এ বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি)। ২০২৪ সালের আগস্টে কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ যোগদানের পর লাগাতার পতনে তোপের মুখে পড়েন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।
সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে ব্রোকারেজ হাউজের কর্তাব্যক্তিরা বিভিন্ন সময়ে সংবাদমাধ্যমে বলেন, কমিশন বাজারে স্নায়বিক চাপ উপেক্ষা করে একের পর এক যে-সব সংস্কার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাতে করে বাজার আরও খারাপের দিকে যাবে।
সে সময়ে বাজার ধসের কারণে রাশেদ মাকসুদকে দায়ী করে তার পদত্যাগের দাবি তোলেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তারা মতিঝিলে লাগাতার মিছিল এবং কমিশনের প্রধান ফটকে তালা পর্যন্ত ঝুলিয়েছিলেন।
বিনিয়োগকারীদের সামাল দিতে না দিতে চলতি বছর খোদ নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের তোপের মুখে পড়েছে রাশেদ মাকসুদ কমিশন। বুধবার (৫ মার্চ) কমিশন চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে চেয়ারম্যান এবং কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে রাখে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর সহায়তায় রাশেদ মাকসুদ এবং অন্যান্য কমিশনাররা বের হয়ে আসতে পারলেও পদত্যাগ করবে না বলে জানায় এ কমিশন চেয়ারম্যান।
এদিকে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, রাশেদ মাকসুদ পদত্যাগ না করলে লাগাতার কর্মবিরতিতে যাবেন তারা। সে হিসাবে রোববার (৯ মার্চ) থেকে বিএসইসিতে স্থবিরাবস্থা সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক পরিচালক বলেন, গত ১৫ বছর ধরে বিএসইসি এক ধরনের খামখেয়ালি করে আসছে। এতে করে কমিশনের এসব একরোখা আচরণ এবং সিদ্ধান্তে সবাই অতিষ্ঠ। বর্তমানে কমিশনের মধ্যেই সৃষ্টি হয়েছে অসন্তোষ, যা বাজারে মোটেই ভালো কোনো বার্তা দেয় না।
শিগগিরই কমিশনের এসব সমস্যা সমাধান না হলে এবং বাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্সের দেয়া সুপারিশ ধাপে ধাপে কার্যকর করে আগাতে না পারলে দেশের পুঁজিবাজার দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির মুখে পড়বে- এমনটাই আশঙ্কা বাজার বিশ্লেষকদের।
২৮২ দিন আগে
নারীদের ওপর সাম্প্রতিক হামলা উদ্বেগজনক: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সম্প্রতি নারীদের ওপর যে জঘন্য হামলার খবর আসছে—তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এটি ‘নতুন বাংলাদেশ’র যে স্বপ্ন আমরা দেখছি—তার সম্পূর্ণ বিপরীত।’
তিনি বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে’ নারী-পুরুষ সকলের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা আমাদের সকল শক্তি প্রয়োগ করব। ‘
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শনিবার (৮ মার্চ) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘অদম্য নারী পুরস্কার’ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা মিলে যে অসাধ্য সাধন করেছে তার সম্মুখসারির ভূমিকায় ছিল এ দেশের নারীরা। ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রাণঘাতি অস্ত্রের সামনে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়েছিল আমাদের মেয়েরা।
আরও পড়ুন: অগ্রগতির জন্য নারীর ক্ষমতায়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান তারেকের
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকারী ও অংশগ্রণকারী ও আহত নারীদের স্মরণ করে তাদের দ্রুত সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন কামনা করেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারীতে থাকলেও আমাদের সমাজে এখনো অনেকক্ষেত্রেই নারীরা পিছিয়ে আছে। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে সরকার সবসময় সচেষ্ট। এজন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ চলমান। দুঃস্থ মায়েদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি, কর্মজীবী নারীদের থাকার হোস্টেল, ডে কেয়ার সেন্টার সুবিধাসহ নানান ধরনের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার নিচ্ছে। এ সংক্রান্ত আরও উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা চলছে বলে জানন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। অনেক সময় নারীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তারা বুঝতে পারেন না কোথায় অভিযোগ জানাবেন। নারীরা যেন তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন সেজন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০২৫ প্রণয়নের কাজও আমরা হাতে নিয়েছি। আমরা একটি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন করেছি, তারাও তাদের সুপারিশগুলো দেবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের মেয়েরা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। শত বাধা পেরিয়ে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতিসহ সার্বিকভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখছে।
ড. ইউনূস বলেন, নারীবিরোধী যে শক্তি মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে, তাকে আমরা দেশের সকল মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অবশ্যই মোকাবিলা করব। তাছাড়া, আমাদের সমাজে এখনো এমন বহু মানুষ আছে—যারা নিপীড়িত নারীদের পাশে দাঁড়ানোর বদলে তাদের খাটো করে দেখে, অবজ্ঞার চোখে দেখে। অথচ নারীর প্রতি সহিংসতা, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করতে হলে, বৈষম্যহীন, সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে হলে নারীর পাশে দাঁড়ানোর, তাদেরকে সমর্থন জানানোর, কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, আমাদের সমাজে নারীকে খাটো করে দেখার এই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। তা না হলে আমরা জাতি হিসেবে এগোতে পারব না।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে নারীরা সম্মুখ সারিতে ছিল: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পতিত স্বৈরাচার দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে। আমাদেরকে এখন ততটাই সতর্ক থাকতে হবে যেমনটা আমরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ সজাগ থাকুন। নিপীড়নের বিরুদ্ধে সামাজিক ঐক্য গড়ে তুলুন। একে অন্যের পাশে দাঁড়ান। একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করুন।
তিনি আরও বলেন, আজকের বিশ্বে নারীরা যতটুকু অধিকার আর স্বাধীনতা চর্চা করতে পারছেন এর পুরোটাই তাদের আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়েছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের সূচনা হয়েছিল নারীদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। নিউইয়র্কের নারী শ্রমিকরা কর্মঘণ্টা কমানো, বেতন বৃদ্ধি ও ভোটের অধিকারের দাবিতে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছিল। অধিকার আদায়ের জন্য আহত ও নির্যাতিত হন।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশেও নারীরা নায্য অধিকারের জন্য যুগযুগ ধরে সংগ্রাম করে এসেছে। তেভাগা থেকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধে বাংলার নারীসমাজ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। ইতিহাসের অনেক বীর নারীদের আমরা ভুলে গেছি, তাদের অবদানের কথা জানি না। কিন্তু জুলাই কন্যাদের নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগের কথা আমরা কিছুতেই ভুলে যেতে দেবো না।
তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারীরা বিভিন্ন সময়ে আমাকে তাদের সংগ্রাম ও আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছে। আমরা যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি, নারীদের অংশগ্রহণ ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করা ছাড়া তা সম্ভব হবে না। এই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নারীদের সঙ্গে পুরুষদেরও সহযোদ্ধা হয়ে কাজ করতে হবে।
সমাজে নারীদের নায্য স্থান প্রতিষ্ঠার জন্য পুরুষদেরকে উৎসাহী সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে আমরা আমাদের প্রত্যাশী পরিবারকে নতুনভাবে গড়তে চাই। যেটা সব বাবা-মা’র, ভাই-বোনের নিশ্চিত ও স্বীকৃত অধিকারের পরিবার।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস আমাদের নতুন করে নারীদের সংগ্রামের ইতিহাস মনে করিয়ে দেয়, অনুপ্রেরণা আর সাহস যোগায়। সমাজে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় যারা কাজ করছেন তাদের প্রতি আহ্বান জানাই, যত বাধাই আসুক না কেন ইতিহাস আমাদের যে সুযোগ করে দিয়েছে। সে সুযোগ আমরা পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করবই। আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়বই। এই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’
এসময় মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের, বীরাঙ্গনাসহ একাত্তরে সংগ্রামী নারীদের,জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন ড. ইউনূস।
২৮২ দিন আগে
রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ নেতার গ্রেপ্তারকে ঘিরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ
রাজশাহী নগরীতে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করানোর চেষ্টাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ এবং সাংবাদিকের একটিসহ আরও দুইটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
শুক্রবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ রাত ১১টা পর্যন্ত চলে।
সংঘর্ষে পুলিশের নগর বিশেষ শাখার (সিটিএসবি) এক সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন—মহানগর মহিলা দলের ক্রীড়া সম্পাদক লাভলী খাতুন, তার আড়াই বছর বয়সী কন্যা লামিয়া, সিটিএসবি সদস্য তোফাজ্জল হোসেন ও রেলওয়ের কর্মচারী মো. রনি। আহতদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংঘর্ষের সময় তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যার মধ্যে একটি ছিল আজকের পত্রিকার সাংবাদিক জাহিদ হাসান সাব্বিরের। তিনি ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তার মোটরসাইকেল সড়কের পাশে রাখা অবস্থায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। তবে অপর দুইটি মোটরসাইকেলের মালিকের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে মহিলা দলের নেত্রী লাভলী ও তার অনুসারীরা কাদিরগঞ্জ এলাকার একটি বহুতল ভবন ঘেরাও করেন। ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে পরিবারসহ বসবাস করেন বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ বাবু।
এদিকে লাভলী দাবি করেন, তিনি মোস্তাক আহমেদকে ভবনে ঢুকতে দেখেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সিসিটিভি ফুটেজ ও নিরাপত্তা প্রহরীর খাতায় মোস্তাকের নাম থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযান শেষে তার ভাই সাব্বির বাবুকে গ্রেপ্তার করা হলেও মোস্তাক পলাতক রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোস্তাক আহমেদকে না পাওয়ায় মহিলা দল নেত্রী লাভলী মহানগর সাবেক যুবদল নেতা মারুফ হোসেন জীবনকে দায়ী করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মারুফের অনুসারীরা দড়িখড়বোনা এলাকায় লাভলীর বাড়িতে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে। এরপর প্রতিশোধ হিসেবে লাভলীর অনুসারীরা মারুফের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা করে ভাঙচুর চালায়।
সংঘর্ষটি দড়িখড়বোনা, উপশহর মোড়, রেলগেট, সপুরা ও শালবাগান এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র ও হাতবোমার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। তবে সংঘর্ষের দীর্ঘ সময় পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর উপস্থিতি দেখা যায়নি। তবে রাত ১১টার দিকে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে মোটরসাইকেলে দেওয়া আগুন নেভায়।
সংঘর্ষের পর রাতে সাড়ে ১১টার দিকে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করেন মহিলা দল নেত্রী লাভলী। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপিরই একটি গ্রুপ তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। লাভলী আরও দাবি করেন, আওয়ামী লীগ নেতার ভাই সাব্বিরকে তুলে দেওয়ার আগে তাকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, যা তিনি ফিরিয়ে দেন। এ কারণে তার বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
এ বিষয়ে মারুফ হোসেন জীবনের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে তার পক্ষ থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সংঘর্ষের কারণ আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক নন, বরং লাভলীর পরিবারের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানান, সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রাতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বাড়ানো হয় যৌথবাহিনীর টহল। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয়: তারেক রহমান
২৮২ দিন আগে