রাজনীতি
বিদেশ থেকে আসা ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদেশ থেকে আসা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সরাসরি এখতিয়ার মন্ত্রণালয়ের নেই।
তিনি বলেন, তথ্য অধিদপ্তরের অধীনে একটি ফ্যাক্ট চেকিং কমিটি রয়েছে, যা দেশের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে গুজব ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা প্রতিরোধে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সরকারি দলের সংসদ সদস্য চয়ন ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ভেতর থেকে দেশের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড বা অপপ্রচার চালানো হলে বিদ্যমান আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
আরাফাত বলেন, ‘বিদেশে অবস্থান করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্যের প্রচারণা চালানো ঠেকানোর ব্যবস্থা এখনও গড়ে ওঠেনি। তবে সরকার এ ব্যাপারে খুবই সতর্ক। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অপপ্রচার প্রতিরোধ করা সম্ভব তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে। প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে শিগগিরই অপপ্রচার বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ভুল তথ্য ও গুজবে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বই খুব উদ্বিগ্ন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সভায় ভুল তথ্য ও ভুল তথ্যকে ভবিষ্যতের এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুকন্যা আছেন বলেই দেশে সমৃদ্ধি ঘটছে: আরাফাত
প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'গত ১৫ বছর ধরে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। এ বিষয়ে আমরা সবাই জানি। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর এ বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলেছি। দেশকে মিথ্যাচার ও গুজবমুক্ত করতে পারলে দেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির কোনো স্থান হবে না। কারণ মিথ্যা ও গুজবের ওপর ভিত্তি করেই এসব অপশক্তি তাদের জায়গা করে নিয়েছে।’
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে মত প্রকাশের স্বাধীনতা জরুরি। একই সঙ্গে গুজব প্রতিহত করা এবং ভুল তথ্য বন্ধ করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
আরাফাত আরও বলেন, ‘আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। এজন্য আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র ও আইসিটি বিভাগের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা ইতোমধ্যে কিছু উদ্যোগ নিয়েছি।’
আরও পড়ুন: টিআইবির গবেষণা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পড়ে না: আরাফাত
বাজারের কোনো এনার্জি ড্রিংকে মাদকদ্রব্যের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি: শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বৃহস্পতিবার সংসদে বলেছেন, টাইগার, স্পিড ও গুরুর মতো যেসব কোমল পানীয় বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো কার্বোনেটেড পানীয় হিসেবে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) থেকে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাইসেন্স নিয়েছে।
তিনি আরও জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর পানীয় পণ্যের নমুনায় (স্পিড, রয়্যাল টাইগার, ব্ল্যাক হর্স, বুলডোজার, পাওয়ার, গুরু, গিয়ার, স্ট্রং ও রেড বুল) কোনো ধরনের মাদকদ্রব্যের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর (ভোলা-৩) প্রশ্নের উত্তরে এসব তথ্য জানান শিল্পমন্ত্রী।
প্রশ্নে সংসদ সদস্য বলেন, এনার্জি ড্রিংকগুলো এনার্জির নামে মানবদেহে ভয়াবহ রোগ প্রবেশ করাচ্ছে এবং অনেক ব্র্যান্ডের এনার্জি ড্রিংকে মাদকদ্রব্যও রয়েছে। ২৭টি এনার্জি ড্রিংক বিএসটিআইয়ের জাল লাইসেন্স ব্যবহার করে পণ্য বিক্রি করছে। এনার্জি ড্রিংকে যৌন উদ্দীপক উপাদান মেশানো হচ্ছে। কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য এনার্জি ড্রিংকগুলো কোমল পানীয়তে পরিণত হয়েছে। এসব অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে বিএসটিআই এসবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে কি না জানতে চান তিনি।
আরও পড়ুন: অবৈধ মাদক প্রতিরোধে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা করছে সরকার
উত্তরে শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার এ পর্যন্ত ২৭৩টি পণ্য বিএসটিআইয়ের আওতায় নিয়ে এসেছে। দেশে এনার্জি ড্রিংকসকে বাধ্যতামূলক পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। তবে, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত টাইগার, স্পিড, গুরু ও অন্যান্য পানীয়, যা দেশে বাজারজাত করা হচ্ছে, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কার্বনেটেড পানীয় হিসেবে বিএসটিআই লাইসেন্স সংগ্রহ করেছে।
গত এক বছরে ২৩৭টি পানীয়ের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের মান অনুযায়ী সবগুলো নমুনা উত্তীর্ণ হয়েছিল বলে জানান নুরুল মজিদ।
তবে তিনি আরও বলেন, পানীয়র সঙ্গে মাদকদ্রব্য মিশ্রণ এবং এনার্জি ড্রিংকসের নামে বাজারজাতকরণের বিরুদ্ধে নজরদারি অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সিলেটে বিএসটিআইয়ের অভিযানে ৩ লাখ টাকা জরিমানা
সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায়: বিএনপি
মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি ও মর্টার শেলের আঘাতে মানুষ নিহত ও আহত হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি মিয়ানমারের ছোড়া মর্টার শেলে এক বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুর জন্য সরকারকে দায়ী করেন।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কোনো নারী-পুরুষ নিরাপদ নয়। মর্টার শেলের আঘাতে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। দেশ ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সার্বভৌমত্ব আরও শক্তিশালী করতে আমরা প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা ও কার্যক্রম দেখতে চাই।’
অন্য দেশের ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে কেন বাংলাদেশি নারীর মৃত্যু হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি বলেন, 'এই ঘটনার উপযুক্ত জবাব কোথায়? জনসমর্থন না থাকায় বর্তমান সরকার একটি দুর্বল শাসন ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে। ফলে লিখিত প্রতিবাদও করতে পারছে না।’
আরও পড়ুন: ধর্ষকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান গয়েশ্বরের
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে কিছুই করতে পারছে না। ‘তারা তাদের (বিদেশি) প্রভুদের ভয় পায়, কিন্তু তারা দেশের জনগণকে সন্ত্রস্ত করার জন্য বন্দুক ব্যবহার করে।’
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তার সশস্ত্র বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র লড়াই, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির কারণে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সীমান্তে সংঘাতের আশঙ্কায় বুধবার দুপুর পর্যন্ত মিয়ানমারের তিন শতাধিক সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে, সোমবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপায়তলী গ্রামের একটি বাড়িতে মিয়ানমারের দিক থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: সীমান্ত উত্তেজনায় ক্রসফায়ারের মুখে বাংলাদেশ: বিএনপি
রিজভী বলেন, বাংলাদেশের চারপাশের সীমান্ত এলাকায় রক্ত ঝরায় বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও ভূমি এখন অরক্ষিত। তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশ থেকে দলে দলে মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার নীরব। এমনকি বিএসএফের গুলিতে বিজিবির এক সদস্য নিহত হলেও সরকার প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংযম ও শান্তি বজায় রাখার আহ্বান এখন দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। ‘ফলে আমাদের সীমান্তরক্ষীরা প্রতিদিন পিছু হটছে, যা বাংলাদেশের মানুষকে বিপদে ফেলছে।’
রিজভী দাবি করেন, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা ছিল সুরক্ষিত, দেশের মানুষ নিরাপদে ছিল।
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে প্রহসনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতা দখল করেছে। যা দেশের ৯৫ শতাংশ জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, 'কেবল ডামি সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও তার দোসররা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলেছেন। কিন্তু এটা ছিল শতাব্দীর সবচেয়ে জঘন্যতম উপহাস।’
আরও পড়ুন: বিকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় হাসপাতাল যাবেন খালেদা জিয়া
বিকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় হাসপাতাল যাবেন খালেদা জিয়া
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) বিকাল ৪টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন।’
তিনি বলেন, হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কিছু প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি, সিসিইউতে স্থানান্তর
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় শারীরিক নানা জটিলতায় চিকিৎসা শেষে ১১ জানুয়ারি এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন তিনি।
এরপর থেকে তিনি তার গুলশানের বাসায় এভারকেয়ার হাসপাতালে আগে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত বছরের ৯ আগস্ট হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন।
আরও পড়ুন: আবারও সিসিইউতে খালেদা জিয়া
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার আবেদন নাকচ আইন মন্ত্রণালয়ের
সীমান্ত উত্তেজনায় ক্রসফায়ারের মুখে বাংলাদেশ: বিএনপি
মিয়ানমার ও ভারত সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিক হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ এখন ক্রসফায়ারের মুখে।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।
দলটির স্থায়ী কমিটি বলেছে, আওয়ামী লীগ ভারত, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন নিয়ে এসব দেশকে বিভিন্ন 'অবৈধ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক' সুবিধা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে আছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন, একদিকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে শুরু করে ভারতের সীমান্তে আমাদের বিজিবি সদস্য ও লোকজন গুলিবিদ্ধ হচ্ছে, অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া ও মর্টার শেলের আঘাতে দুজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। রাখাইন রাজ্য থেকে সেনারা পালিয়ে এসে (আমাদের দেশে) আশ্রয় নিচ্ছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ এখন ক্রসফায়ারের মুখে।
বাংলাদেশ সীমান্তে বিরাজমান উত্তেজনার পেছনের কারণ কী হতে যাচ্ছে এবং কী হতে যাচ্ছে তা ভেবে দেখার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
নানা ব্যর্থতা ও সমস্যা থেকে বাংলাদেশের মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে কি না, সে প্রশ্নও তোলেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, 'যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের গোপন সম্পর্ক আছে কি না... সরকার এর আগেও জনগণকে বিভ্রান্ত করতে একের পর এক ইস্যু তৈরি করেছে।’
মিয়ানমার সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে সরকার প্রয়োজনীয় ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: জনগণের কাছে তওবা করে বিএনপিকে রাজনীতিতে আসার আহ্বান নানকের
বিএনপি বলেছে, মিয়ানমারের মতো দেশ কখনো বাংলাদেশে গুলি চালানোর সাহস পায়নি। এখন কেন তারা এটা করার সাহস পাচ্ছেন? এই বিষয়টি আপনাদের সকলকে ভাবতে হবে... কোথায় যাচ্ছে আমাদের দেশ?
তিনি সীমান্ত সমস্যার বিষয়ে সরকারকে যথাযথ উদ্যোগ নিতে বাধ্য করতে জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের নাগরিকরা এখন যেভাবে চারদিক থেকে আক্রান্ত হচ্ছেন, তা থেকে রক্ষা করতে হবে।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তার সশস্ত্র বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র লড়াই, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সীমান্তে সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দুপুর পর্যন্ত মিয়ানমারের অন্তত ৩২৭ জন সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে, সোমবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপৈতলী গ্রামের রান্নাঘরে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে গয়েশ্বর দাবি করেন, বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ‘ফ্যাসিবাদী সরকার নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ভারত, চীন ও রাশিয়াকে অবৈধ অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক সুবিধা দিয়ে তাদের সমর্থন নিয়েছে।’
তিনি বলেন, তাদের দল দেশবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে। তিনি বলেন, ‘আমরা চলমান আন্দোলনে আছি। আন্দোলনের গতি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দিকে রূপ নেয়।’
বিএনপি নেতা বলেন, বিরোধী দলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জনগণ নির্বাচন ও এর ফলাফল প্রত্যাখ্যান করায় ৬২টি রাজনৈতিক দলের ৭ জানুয়ারি 'একতরফা' নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত সঠিক ও যৌক্তিক ছিল।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষ ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছে। ‘জনগণের এই স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন বিএনপির রাজনীতির সফলতা ও বিজয়ের বহিঃপ্রকাশ।’
গয়েশ্বর দাবি করেন, ৭ জানুয়ারির 'প্রহসনমূলক' নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ‘বরং অবৈধ, অনৈতিকতা ও অসাংবিধানিকভাবে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের নামে জাতির সঙ্গে চরম প্রতারণা করা হয়েছে। ২০২৪ সালে ডামি প্রার্থী, ডামি পার্টি, ডামি ভোটার এবং ডামি পর্যবেক্ষকদের নিয়ে একটি ডামি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
বিএনপির মতো পৃথিবীতে এমন কোনো রাজনৈতিক দল আছে কি না, যেখানে ৫০ লাখের বেশি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা দেওয়া হয়েছে। সেই প্রশ্নও তোলেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও তার অনুগত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমাদের ২ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে এবং প্রায় ৭০০ নিরীহ মানুষকে গুম করেছে। গয়েশ্বর প্রশ্ন তুলে বলেন, আসন ভাগাভাগির নির্বাচনের আগে ফ্যাসিস্ট সরকার কেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৫ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করল?
কারাগারে তাদের দলের ১১ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির ৫০ লাখ নেতা-কর্মী তাদের জীবনে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তারা পুলিশ ও বিচার বিভাগের অবিচার ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের আকাশছোঁয়া মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির জন্য সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।
গয়েশ্বর আরও বলেন, 'দেশের ১৮ কোটি মানুষ রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ শেখ হাসিনার দুঃশাসন থেকে মুক্তি চায়। জনগণও আশা করে, বিএনপির আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনবিরোধী ও ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে বিএনপির নেতৃত্বে রাজপথে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অচিরেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছে সীমান্ত : বিএনপি
নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত: প্রধানমন্ত্রী
নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা ১ হাজার ৯৬৭টি মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে। এসব মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন ১ হাজার ২৪১ জন।
বুধবার(৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে মাদারীপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত এবং ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত তথাকথিত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চান শাজাহান খান।
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের তথাকথিত গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের হাতে মোট ১৮৮ জন নিহত ও ৪ হাজার ৯৭৩ জন আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, 'এসব নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ৮ হাজার ১০৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৯৬৭টি মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে এবং ১ হাজার ২৪১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়ের করা মামলাগুলোর বিষয়ে তদন্ত চলছে।
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ও তার দোসররা নির্বাচন প্রতিহতের নামে অযৌক্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে অগ্নিসন্ত্রাস, নিরীহ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করার মতো অগ্নিসন্ত্রাসের ঘৃণ্য খেলায় লিপ্ত হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর-৪ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিহত করার নামে অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল ও অবরোধের নামে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তারা ট্রেনে অগ্নিসংযোগ ও নিরীহ মানুষকে হত্যা, রেললাইন উপড়ে ও লাইনের ফিসপ্লেট খুলে ফেলে, প্রধান বিচারপতির বাসভবন, রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভবন ও যানবাহন ভাঙচুর করে জনগণের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের চিঠি
তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে সহিংস কার্যক্রমের মাধ্যমে সারাদেশে ছয় শতাধিক যানবাহন ভাঙচুর করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮৪টি যাত্রীবাহী বাস, ৪৮টি ট্রাক, ২৮টি কাভার্ডভ্যান, ৩টি সিএনজি, ৪টি প্রাইভেটকার, ১১টি পিকআপ, ৫টি ট্রেন, ১৫টি মোটরসাইকেল, ৩টি লেগুনা, ১টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস, ১টি অটোরিকশা, ১টি উচ্চ বিদ্যালয়, ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪টি বাড়ি, ১টি বৌদ্ধ মন্দির ও ১টি নৌকাসহ ৩২৮টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, চালক, হেলপার, পুলিশ, বিজিবি, শ্রমিক, মুক্তিযোদ্ধাসহ অনেকে অবরোধ ও হরতালে নিহত, আহত বা পঙ্গু হয়েছেন।
এসব ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ট্রেনে নাশকতায় নিহত হয়েছেন ৯ জন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত ও শাস্তি দিতে দেশে দক্ষ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার ব্যবস্থা এবং আইন রয়েছে। বিদ্যমান আইনে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নিয়মিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রোহিঙ্গা প্রবেশের ক্ষেত্রে উদারতার সুযোগ নেই: ওবায়দুল কাদের
মিয়ানমারের চলমান সংঘাতে বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা প্রবেশের উদারতা দেখানোর সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে আমাদের যেন কোনো শঙ্কা বা উদ্বেগের কারণ না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছি। বিশেষ করে চীন ও ভারতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বনানীর সেতু ভবনে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভোটাররা বিএনপিকে বর্জন করেছে: ওবায়দুল কাদের
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডাকা হয়েছে। তারা বলেছেন, সংঘাতে যারা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে তাদের ফেরত নেবেন তারা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তবে এখন আর নতুন করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করতে দেবো না। এর আগে উদারতা দেখিয়ে সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়েছিল। এখন সেই উদারতা দেখানোর সুযোগ নেই। তারা আমাদের জন্য একটা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সাহায্য অনেক কমে গেছে। এ বোঝা আমরা আর কতদিন সইবো?
বিএনপি নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে কাদের বলেন, আন্দোলনে ব্যর্থ ও নির্বাচনে না আসায় বিএনপি এখন চরম হতাশ। সেই হতাশা কাটাতে দলটির নেতারা এখন সরকার বিরোধীতার নামে বিরোধীতাই তারা করবে। এটা তারা সিদ্ধান্ত নিয়েই করেছে। সরকারের ইতিবাচক হলেও নেতিবাচক কিছু বলতে হয়, সেরকম উক্তি করছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির কালো পতাকা মিছিল অবৈধ: ওবায়দুল কাদের
এর আগে সেতুভবনে প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে বুধবার সকালে রাজধানীর বনানীতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। পাঁচ বছর মেয়াদী এ প্রকল্প ২০২৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে ব্যক্তিগত ক্ষোভের কথা জানান।
তিনি বলেন, প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট নন। সড়ক দুর্ঘটনা এবং ক্ষয়ক্ষতি কমানো যাচ্ছে না।
সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পকে অগ্রাধিকার প্রকল্প উল্লেখ করে এখন থেকে নিজেই তত্ত্বাবধান ও মনিটরিং করবেন বলে জানান তিনি।
প্রকল্পের দুর্নীতি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ দুর্নীতি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে অস্বস্তিতে নেই আ.লীগ: ওবায়দুল কাদের
ধর্ষকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান গয়েশ্বরের
ধর্ষক ও নারী নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সর্বস্তরের জনগণকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, 'এটার (জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক নারীকে ধর্ষণ) বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদে আমরা উৎসাহিত হয়েছি। একজন নারীর প্রতি এ ধরনের সহিংসতা মানে আমি বলি, বাংলাদেশ ধর্ষিত.. তাই আর প্রতিবাদ নয়, সময় এসেছে প্রতিরোধ গড়ে তোলার।’
গত শনিবার(৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক নারীকে ছাত্রাবাসে আটকে ছাত্রলীগ কর্মীদের ধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশ ও দেশের মানুষ আর নিরাপদ থাকবে না।
জাবি ক্যাম্পাসে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে বিএনপিপন্থী প্লাটফর্ম নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম।
আরও পড়ুন: জাবিতে ধর্ষণ: ছাত্রলীগ নেতাসহ ৪ জন রিমান্ডে
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, নারী নির্যাতনকারী ও ধর্ষকদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা এখন জরুরি।
নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং দেশকে দুঃশাসনের হাত থেকে রক্ষা করতে শিক্ষার্থী ও যুবকদের জেগে ওঠার ও রাস্তায় নেমে আসারও আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, বর্তমান অবৈধ সরকারের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হত্যা, গুম, নির্যাতন, ধর্ষণ, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া এবং অর্থনীতি ধ্বংস করা।
আরও পড়ুন: জাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাসহ ৪ জন আটক
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত না করা পর্যন্ত ধর্ষণ, নিপীড়ন, হত্যা ও গুম থেকে জাতিকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন,‘এই সরকারের পতন নিশ্চিত করতে হবে। আমি আশা করি, আমাদের দলের শীর্ষ নেতারা শিগগিরই বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার পুনরুদ্ধারের কর্মসূচি দেবেন।’
আরও পড়ুন: সরকারের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছে সীমান্ত : বিএনপি
সরকারের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছে সীমান্ত : বিএনপি
মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে বর্তমান 'অজনপ্রিয় সরকারের' নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণে বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
সোমবার অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দেওয়া এক বিবৃতিতে এই অভিযোগ করে দলটি।
বিবৃতিতে দলটি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, দেশের সীমান্ত যে কোনও সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, কারণ মিয়ানমারের শত শত নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তার সশস্ত্র বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই, সংঘর্ষ ও গোলাগুলি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
দলটি বলেছে, মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর চলমান যুদ্ধে ব্যবহৃত গুলি, মর্টার শেল এবং বিস্ফোরিত রকেট লঞ্চার শেল প্রতিদিন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ছে। এতে মানুষের ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতিসহ প্রাণহানি এবং আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে।
এতে আরও বলা হয়, স্থানীয় লোকজন জীবনের নিরাপত্তার জন্য সীমান্ত এলাকা ছাড়ছেন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুলগুলো।
সোমবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপৈতলী গ্রামের রান্নাঘরে মিয়ানমারের দিক থেকে মর্টারের গোলা এসে পড়লে এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা পুরুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএনপি।
আরও পড়ুন: সরকারের নতজানু নীতির কারণে সীমান্ত অরক্ষিত: বিএনপি
প্রচণ্ড লড়াইয়ের মধ্যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) শতাধিক সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ‘মিয়ানমারের শত শত নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় সীমান্তে ভিড় করছে- যা যে কোনও মুহুর্তে সীমান্তকে নিয়ন্ত্রণহীন করে তুলতে পারে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, অনির্বাচিত আওয়ামী ডামি সরকারের ফাঁকা বুলি-বক্তব্য এবং বাংলাদেশের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে দ্রুত কার্যকর রাজনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবিলা না করে ধৈর্য ধারণ ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বানকে নতজানু পররাষ্ট্র নীতির বহিঃপ্রকাশ আখ্যা দিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। জনসমর্থনহীন সরকার আমাদের সীমান্তের নিরাপত্তা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে বলেও দাবি দলটির।’
দলটি বলেছে, আওয়ামী লীগ সরকার অনির্বাচিত ও মূল্যহীন হওয়ায় সীমান্তে বিদ্যমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাহস নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
এতে আরও বলা হয়, ‘যখন আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অন্য দেশের দ্বারা হুমকির সম্মুখীন হয়, আমাদের স্বাধীনতা বিপন্ন হয়, সেসময়ও শেখ হাসিনার ডামি সরকার কিছুই করতে পারে না। কারণ তারা বন্দুকের নলের মুখে মানুষকে জিম্মি করে অন্যের আধিপত্য মেনে নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: আ. লীগ সরকারের পতন ঘটাতে মানুষ আবারও রাস্তায় নামবে: মান্না
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক সিদ্ধান্ত ও ক্ষমতালিপ্সা ও অবিবেচক সিন্ধান্তের কারণে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা দীর্ঘদিন বাংলাদেশের ভূখণ্ডে অবস্থান করে নতুন মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে।
এতে বলা হয়, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার বছরের পর বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে কূটনৈতিক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে। এই মেরুদণ্ডহীন সরকারের আজ্ঞাবহ নীতির কারণে জাতীয় সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে এবং জননিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। আওয়ামী ডামি সরকার দেশে বিরোধী দলকে দমন করতেই সক্ষম।
দলটি বলেছে, 'ভীতসন্ত্রস্ত' সরকার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে দেশের মানুষ নিহত হওয়ার সময়ও সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছে। বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) দায়িত্ব কি শুধু বাংলাদেশিদের লাশ গ্রহণ করা?
আওয়ামী লীগ সরকারের 'নিষ্ক্রিয়' ভূমিকার কারণে সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সহিংস লড়াইয়ের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষের হতাহত এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে বাইডেনের চিঠি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র: বিএনপি
প্রধানমন্ত্রীকে বাইডেনের চিঠি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র: বিএনপি
বিএনপি বলেছে, দুই দেশের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখলেও ৭ জানুয়ারির ‘ডামি’ নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা তার আগের অবস্থান থেকে সরে আসেনি।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘এক রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্য রাষ্ট্রের সম্পর্ক থাকতে পারে। কিন্তু ৭ জানুয়ারির অবৈধ ও ডামি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে তারা বলেননি।’
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারই ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট তৈরি করেছে: বিএনপি নেতা ফারুক
শেখ হাসিনাকে লেখা মার্কিন প্রেসিডেন্টের চিঠি সম্পর্কে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমেরিকাও এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের সম্পর্কের আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর জনগণ ও গণতান্ত্রিক বিশ্বের সরকারগুলো গণতন্ত্রের প্রশ্নে আদর্শিক অঙ্গীকার থেকে সরে আসেনি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের একতরফা নির্বাচন, সহিংসতা এবং ৭ জানুয়ারি কীভাবে জনগণ প্রতারিত হয়েছে সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোও তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেনি।
রিজভী বলেন, কিছুদিন আগেও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে মতামত দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ সব সময় এই নির্বাচনের বিরোধিতা করে আসছে। পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশ্বের জন্য গণতন্ত্র একটি আদর্শ। এ প্রশ্নে তারা কোনো আপস করেনি।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন অর্থনৈতিক উন্নয়ন, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে চিঠিটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে পাঠানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা জো বাইডেনের চিঠিকে বাংলাদেশ স্বাগত জানিয়েছে এবং তিনি মনে করেন, এই চিঠির মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে দুই দেশের সম্পর্কে কোনো অস্বস্তি নেই।
আরও পড়ুন: সরকারের নতজানু নীতির কারণে সীমান্ত অরক্ষিত: বিএনপি
প্রধানমন্ত্রীকে বাইডেনের চিঠি: ‘এখন বিএনপি কী বলবে?’ প্রশ্ন কাদেরের