রাজনীতি
নির্বাচনের আগে গণভোটের সুযোগ এখন আর নেই: ফখরুল
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করার ‘কোনো সুযোগ নেই’ মন্তব্য করে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে বরং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করতে সব রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জেএসডির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে তারা প্রতারণা করেছে। আমরা যে বিশ্বাসযোগ্যতা আশা করেছিলাম, তারা তা রাখেনি। তাই বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের দায় অন্তর্বর্তী সরকারের।’
তিনি বলেন, ‘আমি খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমরা নির্বাচন করব, নির্বাচন করতে চাই। আমরা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যে ঘোষণা দিয়েছেন সেই ঘোষণার সঙ্গে একমত হয়ে আমরা নির্বাচন চাই।’
‘সেই নির্বাচনকে আজকে বানচাল করার জন্য, সেই নির্বাচনকে বিলম্বিত করবার জন্য একটা মহল উঠে পড়ে লেগেছে। বিভিন্নভাবে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, গণভোট নির্বাচনের আগে করার কোনো সুযোগ এখন আর নাই। নির্বাচনের দিনই গণভোট হবে সে কথা আমরা পরিষ্কার করে বলেছি।’
জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে এক দিনে গণভোট আয়োজনের বিষয়টি স্পষ্ট করে তিনি বলেন, সেখানে দুটি কারণে ভোট হবে, একটি গণভোটের জন্য, আরেকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য। ‘সুতরাং এই বিষয়ে কোনো দ্বিমত কারো থাকবে বলে আমি অন্তত মনে করি না।’
গণভোটের দাবিতে আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আন্দোলন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যারা এ নিয়ে রাস্তায় নেমে গোলমাল করছেন, তাদের অনুরোধ করবো, জনগণকে আর বিভ্রান্ত করবেন না। এক সময় আপনারা পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন। আজ জনগণ যে নির্বাচন চায়, তার বিরোধিতা করবেন না। এই দেশের মানুষ দেশ বিক্রির রাজনীতিকে ক্ষমা করে না।’
ফখরুলের অভিযোগ, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারই দেশে চলমান রাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছে।
তার ভাষায়, ‘আপনারা (অন্তর্বর্তী সরকার) যে কমিশন তৈরি করেছেন, সেই কমিশন ঐকমত্যের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। সংস্কার ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা অনেক ক্ষেত্রে একমত হয়েছিলাম। কয়েকটি বিষয়ে মতভেদ থাকায় আমরা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেই। অর্থাৎ আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও মূল বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, এটাই নিয়ম।’
‘যখন আমরা নির্বাচনে যাব, তখন ম্যানিফেস্টোতে এই বিষয়গুলো থাকবে। জনগণ যদি আমাদের ভোট দেয়, তাহলে আমরা সেসব বিষয় সামনে আনব, পার্লামেন্টে পাস করে দেশের পরিবর্তন ঘটাবো। আর যদি ভোট না দেয়, তাহলে সেটি বাদ পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘যেদিন ঐকমত্যের নথি জমা দেওয়া হলো, (১৭ অক্টোবর) সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল। তার আগে আবার সবকিছু এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। আমরা ঠিকঠাক করে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়ে বৃষ্টির মধ্যে ছাতা ধরে সেখানে সই করলাম। কিন্তু যখন প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেটা উপস্থাপন করা হলো, তখন দেখা গেল অনেক পার্থক্য। বিশেষ করে আমরা যে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলাম, সেগুলো উল্লেখ করা হয়নি।’
‘কিন্তু সেই আস্থা, বিশ্বাসের সঙ্গে তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে, যেটা আমরা তাদের কাছ থেকে আশা করিনি।’
বিএনপিকে সংস্কারের বিপক্ষের দল হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বিএনপির জন্ম হয়েছে সংস্কারের মধ্যে দিয়ে। ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একদলীয় শাসনব্যবস্থার পরিবর্তে বহুদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, জনগণের মৌলিক অধিকার পুনর্প্রতিষ্ঠা করেন এবং সব বন্ধ পত্রিকা ও প্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু করেন।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ আবারও রাষ্ট্রপতি শাসন থেকে সংসদীয় শাসনে ফিরে আসে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হয়, যার অধীনে চারটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ‘তাই যারা বলে বিএনপি সংস্কারের বিরোধী, তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করছে।
ফখরুল বলেন, বিএনপি সবসময় সংস্কারের পক্ষে— এর প্রমাণ দলটির ‘ভিশন ২০৩০’ ও ৩১ দফা সংস্কার এজেন্ডায় রয়েছে। ‘আমরা সংস্কারে বিশ্বাস করি, সংস্কারের জন্য কাজ করি, এবং তা বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রমাণ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠন করতে চাই। যাদের সঙ্গে আমরা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে লড়েছি, একসঙ্গে কাজ করেছি, তাদের নিয়েই আমরা জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই। এ ক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য খুবই স্পষ্ট– আসুন, সবাই মিলে নির্বাচনের সুযোগকে কাজে লাগাই। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে জনগণের পার্লামেন্ট, জনগণের সরকার গঠন করি।’
৪৫ দিন আগে
‘শাপলা কলি’ নয়, প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ই চায় এনসিপি
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতীকের তালিকায় ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। ধারণা করা হচ্ছে, এটিই হতে যাচ্ছে দলটির প্রতীক। তবে এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ইসির এ সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে ‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং জাতীয় নির্বাচন কোন পথে’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ বিষয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী।
নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, “নির্বাচন কমিশন নতুন গেজেটে আমাদেরকে ‘শাপলা কলি’ প্রতীক দিয়েছে। কমিশন এটি কিসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করেছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তবে ‘শাপলা’ প্রশ্নে আমরা আপসহীন।”
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সমনে রেখে এনসিপিসহ দুটি দলকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে এনসিপিকে তফসিলে থাকা ৫০টি প্রতীকের মধ্যে থেকে মার্কা বেছে নিতে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় ইসি।
৪৬ দিন আগে
ইসির প্রতীক তালিকায় যুক্ত হলো ‘শাপলার কলি’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ‘শাপলার কলি’ প্রতীকটি অন্তর্ভুক্ত করে ১১৯টি নির্বাচনী প্রতীকের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়। এতে সই করেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
সংশোধিত সূচি অনুযায়ী, নতুন করে ২০টি প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে এবং পুরোনো ১৬টি প্রতীক বাদ দেওয়া হয়েছে।
নতুন যুক্ত হওয়া প্রতীকগুলো হলো— উট, চিরুনি, মশাল, টেবিল ল্যাম্প, ট্রাক্টর, ড্রেসিং টেবিল, তালা, দোতলা বাস, পাগড়ি, কলের পানি, পালকি, ফলের ঝুড়ি, বেবি ট্যাক্সি, বৈদ্যুতিক বাল্ব, মোটরসাইকেল, সিঁড়ি, সূর্যমুখী ফুল, রেলইঞ্জিন ও হ্যান্ডশেক।
অন্যদিকে, বাদ দেওয়া প্রতীকগুলো হলো— কলা, খাট, উটপাখি, চার্জার লাইট, টিফিন ক্যারিয়ার, ঢোল, তরমুজ, ফ্রিজ, বাঁশি, বেঞ্চ, বেগুন, বেলুন, লাউ, শঙ্খ, স্যুটকেস ও ফুলের টব।
এর আগে ইসি ১১৫টি প্রতীকের একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল, যেখানে ‘শাপলার কলি’ অন্তর্ভুক্ত ছিল না। অথচ দলটি নিবন্ধনের আবেদন করার পর থেকেই ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দের জন্য বারবার দাবি জানিয়ে আসছিল।
৪৬ দিন আগে
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ একপেশে, জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সুপারিশ একপেশে এবং তা জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য তারা গণভোটে সম্মতি দিয়েছিলেন। তবে ঐকমত্য কমিশন যেখানে মতপার্থক্য বা ভিন্নমত ছিল তা উপেক্ষা করেছে এবং এমন কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে যা দীর্ঘ আলোচনায় কখনোই আলোচনা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব ও সুপারিশ একপেশে এবং জবরদস্তিমূলকভাবে জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এটাই প্রতীয়মান হয় যে দীর্ঘ প্রায় এক বছরব্যাপী সংস্কার কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলসমূহের দীর্ঘ ধারাবাহিক আলোচনা ছিল অর্থহীন, অর্থ ও সময়ের অপচয়, প্রহসনমূলক এবং জাতির সাথে প্রতারণা।’
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অযৌক্তিক, অবিবেচনাপ্রসূত বলেও সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব।
সীমিত সময়, বিপুল ব্যয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ব্যাপক সম্পৃক্ততার কথা বিবেচনা করে গণভোট ও নির্বাচন একই দিনে আয়োজন করাই অধিকতর যৌক্তিক হবে বলেও মত দেন বিএনপি মহাসচিব।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে এর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'জুলাই সনদ নিয়ে আপত্তি থাকলেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কোনো শঙ্কা নেই। আমরা আশা করি আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় অনেক ছাড় দিলেও দেশের স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে দায়বদ্ধ বিএনপি। জাতিকে বিভক্ত করার যেকোনো পদক্ষেপ অনৈক্য সৃষ্টি করবে এবং জাতীয় জীবনে অকল্যাণ ডেকে আনবে। আমরা চাই ঐক্য, প্রতারণা নয়।
সংস্কার বিএনপির অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক এজেন্ডা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি সংস্কার কমিশন ও ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে বহু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে। আমরা সবসময়ই সংস্কারের পক্ষে। শহীদ জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা, খালেদা জিয়ার ভিশন–২০৩০ এবং তারেক রহমানের ৩১ দফা—সবই প্রমাণ করে বিএনপি গণতান্ত্রিক সংস্কারে আন্তরিক।
৪৬ দিন আগে
নভেম্বরেই গণভোটের দাবিতে ইসিতে জামায়াতসহ ৮ দলের স্মারকলিপি
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও নভেম্বরে গণভোট আয়োজনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিসসহ ৮টি রাজনৈতিক দল।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে নির্বাচন ভবনের সামনে ও মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে মার্কেটসংলগ্ন সড়কের পাশে মঞ্চ করে সমাবেশ শেষে তারা ইসিতে স্মারকলিপি দেয়।
সমাবেশে নেতারা বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে সাংবিধানিক আদেশ জারি করে নভেম্বরে গণভোট করতে হবে। সংসদ নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে। তা না হলে বিগত ইসির পরিণতি ভোগ করতে হবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ৫ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছে।
এ সময় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম, মোবারক হোসেন, রেজাউল করিম, নাজিম উদ্দিন মোল্লাসহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘নভেম্বরের মধ্যে গণভোট আয়োজন করতে হবে। আমরা আট দল মিলে ইসির কাছে স্মারকলিপি দেব।’
একই দিনে গণভোট ও সংসদ নির্বাচনের বিএনপির দাবির কঠোর সমালোচনা করেন জামায়াত নেতারা।
নির্বাচন ভবনের সামনে ইসলামী আন্দোলনের নেতারা বলেন, সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট করতে হবে।
৫ দফা দাবি
• জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে গণভোট আয়োজন করা;
• আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু করা;
• অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা;
• ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা;
• ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
৪৬ দিন আগে
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচন হওয়ার সুযোগ নেই: নাহিদ
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচন হওয়ার কোনো সুযোগই নেই মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং গণহত্যার বিচারের রোডম্যাপ দিয়ে তারপরে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।’
তিনি বলেছেন, ‘দেশের স্থিতিশীলতার জন্য দ্রুত নির্বাচন চাই। তবে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজ শেষ করতে হবে।’
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুর পর্যটন মোটেলে বিভাগের আট জেলা ও মহানগরের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে পদপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘দেশে নানামুখী সংকট তৈরি হয়েছে। পতিত স্বৈরাচার শক্তি ষড়যন্ত্র করছে। নানামুখী সংকটের জন্য আমাদের জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। আমাদের দলগুলোর মধ্যে যে সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধান করে এক জায়গায় থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি মনে করে এককভাবে সব নেতৃত্ব দেবে, সরকার গঠন করে ফেলবে, এটি আসলে সম্ভব হবে না। দেশে সবগুলো পক্ষের মধ্যে ন্যূনতম ঐক্য না থাকলে এককভাবে সরকার গঠন ও সংসদ টিকিয়ে রাখা কারো পক্ষে সম্ভব হবে না। জনগণের ন্যূনতম আকাঙ্ক্ষা, সংস্কার, বিচারের দাবিকে উপেক্ষা করে নির্বাচনের দিকে যাওয়া হলে সেটি টেকসই হবে না।’
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘টেকসই স্থিতিশীল পরিবর্তনের জন্য ন্যূনতম সংস্কার, অল্পকিছু জায়গায় সংবিধান সংস্কার করে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই। সেই জায়গায় বাধা এলে, কিংবা সরকারের পক্ষ থেকে গড়িমসি করা হলে, সরকার ও বাধাদানকারীকে জনগণের মুখোমুখি হতে হবে।’
জোটের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘পুরোনো দলগুলোর প্রতি জনগণের অনীহা রয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট গ্রুপ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে। গত ১৬ বছর অনেকে জনগণের পক্ষে সঠিকভাবে দাঁড়াতে পারেনি। বিভিন্ন দলের অতীত কলঙ্ক রয়েছে। বিএনপির শাসনামল নিয়ে দুর্নীতির অনেক সমালোচনা রয়েছে। ৫ আগস্টের পরও তাদের দল নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। জামায়াতের ঐতিহাসিকভাবে দায়ভার রয়েছে, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়েও তারা সমালোচিত। তাই কোনো ধরনের জোটে গেলে অবশ্যই ভাবতে হবে। জোটের বিষয়ে নীতিগত জায়গা থেকে যারা জুলাই সনদ, বিচার, সংস্কারের প্রশ্নে আমাদের কাছাকাছি ভূমিকায় রয়েছে, তাদের বিষয়ে চিন্তা করব।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে এক দফার ঘোষক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের দুটি প্রস্তাবনা দেওয়ার দরকার ছিল না। দ্বিতীয় প্রস্তাব একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রথম প্রস্তাবে আমরা সমর্থন দিচ্ছি কিছুটা সংশোধন সাপেক্ষে। আমাদের দাবি ছিল, জুলাই সনদের আদেশ প্রকাশ করা ও আদেশটিকে জারি করবে—এ বিষয়টি পরিষ্কার করা। সুপারিশে বলা হয়েছে, আদেশ জারি করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ ছাড়া গণভোটের কথা বলেছি। এটির মাধ্যমে পরবর্তী সংসদের হাতে সেই ক্ষমতা থাকবে, যারা সংস্কার সংবিধান ২০২৬ তৈরি করবে।’
ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে বিএনপি বড় সংস্কারের বিপক্ষে ছিল। স্বাভাবিকভাবে গোটা সংস্কার প্রক্রিয়া তারা চায় কিনা সেটি নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে বিএনপি ভেটো দিয়েছে। তবে অন্য দলগুলো একমত হওয়ায় জনগণের চাপের কারণে তারা সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে।’
এ সময় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি ও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানান নাহিদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. আতিক মুজাহিদ, জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল্লাহ গালিব, মহানগর সমন্বয়কারী সাদিয়া ফারজানা দিনা প্রমুখ।
৪৭ দিন আগে
ঐকমত্য কমিশন ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দিয়েছে, এটা প্রতারণা: মির্জা ফখরুল
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সুপারিশে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বাদ দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অবিলম্বে ওই সুপারিশ সংশোধনেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে 'বিচার-সংস্কার-নির্বাচন, অন্তর্বর্তী আমলে বাংলাদেশ' শীর্ষক এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘গতকাল জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত সুপারিশ দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। অবাক বিস্ময়ে দেখলাম, বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট লিপিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি ছিল সনদে, তা বাদ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এগুলো দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।’
মির্জা ফখরুলের ভাষ্য, ‘আমরা মনে করি, সমস্ত সংকটগুলোর মূলে হচ্ছে একটা সত্যিকার গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের পার্লামেন্ট তৈরি হবে, সেই পার্লামেন্টেই সমস্ত সমস্যাগুলো সংবিধানের মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব হবে এবং সেভাবেই দেশ চলবে ।’
প্রধান উপদেষ্টাকে তিনি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, সত্যিকার অর্থে যেটুকু সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার সম্পন্ন করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিন। জনগণ সেই নির্বাচনের ফল মেনে নেবে। কিন্তু যদি সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হয়, তার দায়ভার প্রধান উপদেষ্টাকেই বহন করতে হবে।
এ সময় সরকার দ্রুত কমিশনের সুপারিশ সংশোধন করবে এবং সব পক্ষের সহমত অনুযায়ী বিভিন্ন সমস্যার উপর পার্থক্য যথাযথভাবে রেকর্ড করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে জনগণের সংসদ তৈরি হলে যে সংস্কার প্রস্তাব করা হয়েছে, তা সেখানে বাস্তবায়ন হবে।
বিএনপি সংস্কার চায় না—এমন প্রচারণাকে মিথ্যা আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির জন্মই হয়েছে সংস্কারের মধ্যদিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের পর একদলীয় শাসনের পরিবর্তন ঘটিয়ে ৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল বিএনপি। অথচ কনসাসলি একটা প্রপাগান্ডা চালানো হয়েছে যে বিএনপি সংস্কারবিরোধী—এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
৪৭ দিন আগে
জোটবদ্ধ নির্বাচনে প্রতীক নিয়ে আগের বিধান বহাল চায় বিএনপি
রাজনৈতিক দলগুলোর জোটবদ্ধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতীক ব্যবহার নিয়ে নির্বাচন-সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও’র আগের বিধান বহাল চায় বিএনপি।
আরপিও অধ্যাদেশের সংশোধনীর বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের কাছে চিঠি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
উপদেষ্টার কাছে চিঠি পৌঁছে দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন-সংক্রান্ত যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও আছে, কয়েকদিন আগে এর ২০ ধারাতে একটি সংশোধনী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন হয়েছে বলে আমরা জেনেছি। সেটা হচ্ছে, কোনো রাজনৈতিক দল যদি জোটভুক্ত হয়ে অন্যান্য দলের সঙ্গে নির্বাচন করে, সেক্ষেত্রে সেই নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল তার নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে বাধ্য হবে।’
‘আগে নিয়ম ছিল— যারা জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করবে, তারা হয় নিজেদের প্রতীক বা জোটের অন্য প্রতীকে নির্বাচন করতে পারত। সেই আইনটার খসড়া যখন আমরা দেখেছি, নির্বাচন কমিশনও আমাদের পাঠিয়েছিল যে এ বিষয়ে মতামত আছে কিনা। এখানে অনেকগুলো সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি সংশোধনীর সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করেছি। যেমন: না ভোট, প্রার্থীদের জামানত বৃদ্ধি, নির্বাচনে যদি কোনো অনিয়ম হয়, সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার বৃদ্ধি, ইচ্ছা করলে যেকোনো নির্বাচন তারা বাতিল করতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘আরও বেশ কয়েকটি বিধান সেখানে যুক্ত ছিল। আমরা সবগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করেছি। শুধু এই বিধানটির সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করিনি। যখন আইনটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়, তখনও অনানুষ্ঠানিকভাবে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আমি আলোচনা করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন, এটি সরকারের নজরে আনবেন।’
‘বিষয়টি আলোচনা করে যাতে একটা বিহিত হয়, সেটা বিবেচনা করবেন বা সরকার বিবেচনা করতে পারে। এ বিষয়ে তিনি আমাকে মোটামুটি আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু যখন অধ্যাদেশটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাস হলো তখন দেখলাম বিষয়টি বিবেচিত হয়নি।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘তারপরে এ বিষয়ে তার (আইন উপদেষ্টা) সঙ্গে আবার কথা বলেছি। এ বিষয়ে আমাদের যে উদ্বেগ, আগে যে বিষয়টি ছিল, সেটি যাতে বহাল থাকে সে জন্য আমরা আবেদন করেছি। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে কাগজটি তাকে দিয়েছি। কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশনকেও একই চিঠি দিয়েছি।’
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি, বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে এই বিধানটি আগের মতো বহাল থাকবে। কারণ, আমরা মনে করি অনেক দলের আকার ছোট হলেও সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নেতৃত্ব আছেন। তারা নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে আসতে পারলে জাতীয় সংসদ সমৃদ্ধ হবে। বহু দলের, বহু আদর্শের, বহুমতের প্রতিনিধিত্ব থাকলে জাতীয় সংসদটা সমৃদ্ধ হয়, সমগ্র জাতির পক্ষে কথা বলা যায়, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তারা ভূমিকা রাখতে পারবেন।’
‘আমরা মনে করি, যেসব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করতে চায়, তারা হয় নিজেদের প্রতীকে কিংবা জোটবদ্ধ অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করার যে স্বাধীনতার আগে যে বিধান ছিল, সেটা বহাল রাখা হোক।’
আইন উপদেষ্টা কী বলেছেন— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন, প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তারপরে কী করা যায়, সেটা বিবেচনা করে দেখবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি নির্বাচন-সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করতে চাই। কারণ তারা এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনেও বিষয়টি আলোচিত হয়নি। এ বিষয়ে কোনো ঐকমত্যও প্রতিষ্ঠা হয়নি। এ বিষয়ে হঠাৎ করে নির্বাচন সংস্কার কমিশন একটি বিষয় আরোপ করবে, সেটা সঠিক হয়নি।’
৪৮ দিন আগে
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের সুযোগ নেই: খসরু
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের সুপারিশকে প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে হবে, এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন বা আগে জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট আয়োজনের সুপারিশ করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘এটার (আগে গণভোট) সঙ্গে বিএনপি একমত নয়। আমরা পরিষ্কারভাবে এটা বলে দিয়েছি। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে পুরো আলোচনায় বিএনপির অবস্থান ছিল যে গণভোট আর নির্বাচন একই দিনে হবে, দুইটা আলাদা ব্যালটের মাধ্যমে। এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।’
‘নতুন করে এই বিষয়কে সামনে আনার কোনো সুযোগ নাই। সেটা যেই বলুক, যারাই প্রতিবেদন দিক, সেটা তাদের সমস্যা। এটা বিএনপির সমস্যা না। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। এই বিষয়ে (আগে গণভোট) বিএনপি ঐকমত্য পোষণ করে না, সেহেতু সেদিকে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নাই।’
আমীর খসরু বলেন, ‘এই ব্যাপারে আর আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনের দিন দুইটা ব্যালটের মাধ্যমে গণভোট ও নির্বাচন হবে… এটাই বিএনপির অবস্থান। এই অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি, আগামী দিনেরও এর পরিবর্তন হবে না।’
ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের প্রসঙ্গে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘কারা কী সুপারিশ করেছে, জানি না। যারা সুপারিশ করেছে তারা নির্বাচন করবে না, ভোট করবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো। সুপারিশ অনেকে অনেক কিছু করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা বিষয় বুঝতে হবে, প্রত্যেক জিনিস ঐকমত্যে সমাধান হতে হবে। ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে কে কী বলছে, কে কী সুপারিশ করছে—এটা তাদের ব্যাপার। ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার কোনো সুযোগ নাই।’
৪৮ দিন আগে
কমিটমেন্টের ভিত্তিতে জোটবদ্ধ হতে পারে এনসিপি: সারজিস
কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হবে কিনা, সে বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি জানিয়ে দলটির উত্তর অঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, দেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগ ও ভারতের আধিপত্যবাদ-বিরোধী অবস্থানে যারা সুদৃঢ় থাকবে, তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে পারে এনসিপি।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান। শহরের সিটি ড্রিম হোটেল মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। তার আগে বিকেল ৫টার দিকে এনসিপির জেলা কমিটির নেতাদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন সারজিস আলম।
সারজিস আলম বলেন, ‘এনসিপি এখনও পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি, কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হবে কিনা। তবে যদি হয়, তাহলে এই কমিটমেন্টের ভিত্তিতে হবে— যারা আগামীর বাংলাদেশে জুলাই সনদের প্রত্যেকটি সংস্কার বাস্তবায়নে কাজ করবে; যারা আগামীর বাংলাদেশে বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করবে; যারা শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের জন্য কাজ করবে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের স্বার্থে আওয়ামী লীগ এবং ভারতের আধিপত্যবাদ-বিরোধী যাদের অবস্থান, ওই অবস্থানে যারা সুদৃঢ় থাকবে তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতেও পারে এনসিপি।’
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দেখছেন কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সক্রিয়তা বজায় রেখে নিরপেক্ষ থাকবে— এইটুকু যদি তারা প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে এনসিপির কোনো সমস্যা নেই।’
৪৯ দিন আগে