রাজনীতি
স্বায়ত্তশাসন নয়, বাংলাদেশ ব্যাংককে স্বাধীনতা দিতে হবে: খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আর্থিক খাতে সংস্কার করা ও শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংককে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। শুধু স্বায়ত্তশাসন যথেষ্ট নয়, পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। এ ছাড়া বিনিয়োগ বাড়াতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সংস্কার করা হবে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে ইকোনমিক রিফর্ম সামিট-২০২৫-এ অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিলুপ্ত করা হবে। এই বিভাগ তৈরি করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে। এর উদ্দেশ্য ছিল এমডি নিয়োগ ও পর্ষদে পছন্দের লোক বসিয়ে লুটপাট করা। বিএনপি আগের বার ক্ষমতায় এসে এটি তুলে দিয়েছিল, কিন্তু শেখ হাসিনা এটি আবার ফিরিয়ে এনেছিলেন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আবার এটি বিলুপ্ত করবে।’
তিনি বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে দুই ভাগ করা হয়েছে। এতে কোনো কাজ হবে না। কারণ, এক ভাগ থাকতেও আমলারা পরিচালনা করতেন, দুই ভাগ হওয়ার পরও আমলারা পরিচালনা করছেন। ফলে এনবিআর ভাগ হওয়ার পরও কোনো বাড়তি সুফল পাওয়া যাবে না।
কারণ হিসেবে এই রাজনীতিক বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে দুই ভাগ করা হয়েছে। এতে কোনো কাজ হবে না। কারণ, এক ভাগ থাকতেও আমলারা পরিচালনা করতেন, দুই ভাগ হওয়ার পরও আমলারা পরিচালনা করছেন। ফলে এনবিআর ভাগ হওয়ার পরও কোনো বাড়তি সুফল পাওয়া যাবে না।
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের পথে প্রধান বাধা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা— এমন মন্তব্য করে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করার কিছু নেই। যদি তাদের দায়িত্ব কমিয়ে দেওয়া যায়, যদি কাজ বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই তারা নিয়ন্ত্রিত হবে। আমরা বেসরকারি খাতকে শক্তিশালী করতে চাই। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এ কাজটি করবে। এজন্য বেসরকারি খাতকে প্রস্তুত হতে হবে।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা দেশের অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. এম তামিম বলেন, দেশে তীব্র জ্বালানি সংকট চলছে। গত ১৫ বছরে স্থানীয় জ্বালানি উৎসে কোনো বিনিয়োগ হয়নি। বরং প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ব্যয় করা হয়েছে, যেখানে দুর্নীতির সুযোগ সবচেয়ে বেশি ছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, বিদায়ী সরকারের প্রবৃদ্ধি মডেল দারিদ্র্য ও বেকারত্ব বাড়িয়েছে। তথাকথিত ‘অর্থনৈতিক অলৌকিকতা’র আড়ালে থাকা বাস্তব সংকট এখন প্রকাশ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি বাড়ায় সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে এবং আরও অনেক পরিবার দারিদ্র্যের মধ্যে ঠেলে পড়ছে।
তিতুমীর সতর্ক করে বলেন, আরও ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যেতে পারে; ১৫ লাখ তরুণ বেকার, এবং প্রতি তিনজন বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকের একজনের কোনো চাকরি নেই।
তিনি মন্তব্য করেন, বাংলাদেশ এখন এক ‘ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে’ দাঁড়িয়ে আছে, যা সত্যিকারের অগ্রগতির জন্য নতুন অর্থনৈতিক মডেল দাবি করছে।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাবে পিছিয়ে আছে। দেশে জাতীয় বিনিয়োগনীতি নেই। ফলে বিদেশি ও স্থানীয় বিনিয়োগের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য ও পরিকল্পনা নেই। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে একটি পদ্ধতিগত বিনিয়োগ উন্নয়ন কৌশল থাকা উচিত—জাতীয় বাণিজ্য, রপ্তানি ও আমদানি নীতির সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে এটি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য মনজুর হোসেন, জামায়াতে ইসলামীর যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র নকিবুর রহমান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ, হিসাববিদ স্নেহাশীষ বড়ুয়া, কাউন্টারপার্টের নির্বাহী সম্পাদক জ্যোতি রহমান, চালডালের সিইও ওয়াসিম আলিম প্রমুখ।
৪৯ দিন আগে
ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোকে নিয়ে জোট করবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বৃহৎ জোট গঠন করতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য জানান, যুগপৎ আন্দোলনে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বৃহৎ জোটের কথা ভাবছে দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশের প্রার্থীদের সঙ্গে দলের হাইকমান্ডের বৈঠক হচ্ছে। দল ও নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার বার্তা দিতেই হাইকমান্ডের এই বৈঠক করছে বিএনপি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ আসনে একাধিক প্রার্থী আগ্রহী হওয়ায় প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার যোগ্য প্রার্থীদের সঙ্গে আলাপ করা হচ্ছে।
সালাহউদ্দিন বলেন, “আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলীয় বিবেচনা নয়, বরং যোগ্য ও জনবান্ধব প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য অটুট রাখতে চায় বিএনপি। আর ঐক্য বজায় রাখতে কেউ যেন বিভেদের পথে না যায় সেই বার্তাও দিতে চায় দলটি।
এ সময় আগামীর বাংলাদেশ তারুণ্যনির্ভর হবে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, তরুণ-যুবকদের রাজনৈতিক ভাবনাকে ধারণ করে সামনের দিনে জাতি বিনির্মাণে কর্মসূচি প্রণয়ন করবে বিএনপি।
বিএনপির এই নেতা আশা প্রকাশ করে বলেন, এ দেশ একটি তারুণ্যনির্ভর দেশ হবে। যুবকদের কর্মসংস্থাননির্ভর বাংলাদেশ হবে। যুবকদের চিন্তা-চেতনা, মেধা ও প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে। এ স্বপ্ন জুলাই অভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদরা দেখেছিলেন। সুতরাং তরুণ-যুবকদেরকে, তাদের রাজনৈতিক ভাবনা ও চিন্তা-চেতনা আত্মস্থ করেই এ জাতি এগিয়ে যাবে।
৪৯ দিন আগে
জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ৩০ অক্টোবর শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইসির বৈঠক
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে আগামী বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের ৩১ বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রোববার (২৬ অক্টোবর) ইসির জারি করা চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় ও প্রাক-প্রস্তুতিমূলক সভা আগামী বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে সভায় অন্য কমিশনাররাও উপস্থিত থাকবেন।
সভায় অংশগ্রহণের জন্য সরকারের ৩১ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব; স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, নৌপরিবহন, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবরা; এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবরা।
এ ছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিবকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত থাকবেন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দফতর ও সংস্থার প্রধানরা—বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, ডাক অধিদপ্তর ও চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক; বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান; স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এবং কারা মহাপরিদর্শক।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে তার প্রতিনিধি হিসেবে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর নির্বাহী পরিচালক বা উপযুক্ত কর্মকর্তাকে বৈঠকে পাঠাতে বলা হয়েছে।
এর আগে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ২০ অক্টোবর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে ইসি।
ধারাবাহিক এই সংলাপের শুরু হয় গেল সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে। ২৮ সেপ্টেম্বর নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপের পর ওই দিনই শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা করে কমিশন। এরপর ৬ অক্টোবর বিভিন্ন গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে দুটি পৃথক বৈঠক করে ইসি।
নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গেও বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের।
৫০ দিন আগে
‘হাতি’ প্রতীকে নিবন্ধন পেল বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি
আদালতের নির্দেশে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেয়েছে বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি)। দলটির নির্বাচনী প্রতীক নির্ধারণ করা হয়েছে ‘হাতি’।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) দলটির চেয়ারম্যান কে এম আবু হানিফ হৃদয়ের হাতে নিবন্ধন সনদ তুলে দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন ১১১২২/২০১৮ এর সূত্রে গত ২৩ জুলাই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর বিধান অনুযায়ী, প্রধান কার্যালয়: ৮৮/১ শহিদ ফারুক রোড (৩য় তলা), দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪ এ অবস্থিত বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি)-কে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইসি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করেছে। দলের জন্য হাতি প্রতীক সংরক্ষণ করা হয়েছে। দলটির নিবন্ধন নম্বর ৫৭।
নিবন্ধন পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় আবু হানিফ হৃদয় বলেন, ‘গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে, আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি।’
এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টি হাইকোর্টের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন থেকে ‘আনারস’ প্রতীক নিয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পায়।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু হয়। এখন পর্যন্ত ৫৭টি দল নিবন্ধন পেয়েছে, তবে এর মধ্যে পাঁচটি—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবোধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)—বিভিন্ন কারণে ও আদালতের রায়ে নিবন্ধন হারায়। অবশ্য সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে জামায়াতে ইসলামী পুনরায় নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে।
এদিকে, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ২২টি দলের সরেজমিন তদন্ত শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
৫০ দিন আগে
ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ সোমবার: ইসি সচিব
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা সোমবার (২৭ অক্টোবর) প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমনওয়েলথের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
ইসির ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, গত ২০ অক্টোবরের মধ্যে ভোটকেন্দ্রের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করার কথা ছিল। ছয় দিন পেরোলেও কেন তা প্রকাশ করা হয়নি জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। কিছু সংশোধনের প্রস্তাব এসেছিল সেটাও করা হয়েছে। কাল (সোমবার) সকালে ব্রিফ করে দেব।’
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন কবে শেষ হবে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘দল নিবন্ধনের বিষয়ে অগ্রগতি নিয়ে মাঠ পর্যায় থেকে কিছু বাড়তি তথ্য আসেছে। এটা পর্যালোচনা চলছে। এ সপ্তাহের ভেতরে করে দেব। কারণ, আমাদেরও একটা দায় আছে। আমাদের দিক থেকে তাগিদ আছে।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সরাসরি কোনো জবাব দেননি ইসি সচিব। তিনি বলেন, ‘প্রতীকের বিষয়টি আমরা পরে জানাব।’
ইসি ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী অগ্রগতি কতদূর জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সবকিছু ১০০ শতাংশ করা সম্ভব নয়। পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে কিছু জায়গায় অ্যাডজাস্টমেন্ট (সমন্বয়), কিছু বিষয় আগেই কমপ্লিট (সম্পন্ন) করেছি, কিছু বিষয়ে অপেক্ষা করতে হয়েছে এবং কিছু কিছু বিষয়ে আরেকটু হয়তো অপেক্ষা করতে হবে।’
‘সবকিছুই নিক্তিতে মেপে সময় অনুযায়ী, দিনক্ষণ-তারিখ অনুযায়ী করা সম্ভব নয়। এই অ্যাডজাস্টমেন্ট আমাদের রাখতে হবে। এখন পর্যন্ত আতঙ্কিত হওয়ার বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার মতো কোনো কারণ বা পরিস্থিতি আমার মনে হয় না হয়েছে।’
শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাতে নির্বাচন কমিশন প্রাঙ্গণে নির্বাচন ভবনের দক্ষিণ পাশে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ইসি মামলা করবে কিনা জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, ‘পুলিশ অভিযুক্তকে আটক করেছে। এটা বাইরে ফেটেছে। ইসিকে যদি মামলা করতে হয়, করব।’
কমনওয়েলথের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির ইলেকটোরাল সাপোর্ট সেকশনের (ইএসএস) প্রধান লিনফোর্ড অ্যান্ড্রুজ। তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন ও চার নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠক প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, ‘তারা নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। এ ছাড়া প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন, প্রযুক্তির অপব্যবহার, নির্বাচনকালীন সময়ে নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে লিনফোর্ড অ্যান্ড্রুজ জানান, কমনওয়েলথ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রথা অনুযায়ী মহাসচিবের পক্ষ থেকে প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন মিশন পাঠানো হয়েছে। তারা বেশ কয়েকটি উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছেন। প্রধান উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে কমনওয়েলথ পর্যবেক্ষক মিশনের উপস্থিতির বিষয়ে সব অংশীজনের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন আছে কি না তা নিশ্চিত করা। তারা বর্তমান পরিবেশ এবং নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি মূল্যায়ন করতেও এসেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় বলি, কমনওয়েলথের সব সদস্য রাষ্ট্রে গণতন্ত্র একটি চলমান যাত্রা। নির্বাচনের পরেও কমনওয়েলথ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অংশীদারত্ব বজায় রেখে আগামী সপ্তাহ ও মাসগুলোতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে।’
৫০ দিন আগে
ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ দেবে বিএনপি: তারেক রহমান
বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দল ক্ষমতায় আসলে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও দক্ষ, নৈতিক মানবসম্পদ গড়ে তুলতে শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হবে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশন আয়োজিত মেধা বৃত্তি পরীক্ষা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, “আমাদের পরিকল্পনা আছে, যেমনটা আগেও ছিল। বেগম খালেদা জিয়ার শাসনকালে শিক্ষাখাত জাতীয় বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেত। ইনশাআল্লাহ, বিএনপি আবার দেশের দায়িত্ব পেলে শিক্ষাখাতেই সর্বাধিক বরাদ্দ নিশ্চিত করবে।”
তিনি জানান, বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের পাশাপাশি জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো সংস্কার করবে, যাতে শিক্ষার্থীরা আরামদায়ক পরিবেশে পড়াশোনা করতে পারে।
“আমরা শিক্ষকদেরও যথাযথ সামাজিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিতে চাই, যাতে তারা অন্য কোনো পেশার চিন্তা না করে পুরো মনোযোগ শিক্ষাদানে দিতে পারেন,” বলেন তারেক।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষা জাতির উন্নতির ভিত্তি, তাই বিএনপি পরবর্তী সরকার গঠন করলে প্রাথমিক শিক্ষা ও নৈতিক শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেবে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের শুধু অক্ষরজ্ঞান দিলেই হবে না, তাদের সামাজিক মূল্যবোধ, সৎ-অসৎ পার্থক্য ও নৈতিক ভিত্তি শৈশব থেকেই গড়ে তুলতে হবে।
দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রাথমিক শিক্ষায় মূল্যবোধ অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানিয়ে তারেক বলেন, দুর্নীতি মোকাবিলার প্রকৃত সমাধান শিক্ষা। শিশুরা যদি ছোটবেলা থেকেই বুঝতে শেখে যে দুর্নীতি একটি অশুভ কাজ, তবে তারা বড় হয়ে সমাজে এ অনিষ্টের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ই হচ্ছে সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষা প্রদানের সর্বোত্তম স্থান। শিশুদের শেখাতে হবে কীভাবে বয়োজ্যেষ্ঠদের সম্মান করতে হয়, পরিবেশ রক্ষা করতে হয়, নিয়মিত পড়াশোনা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে হয়।
তারেক বলেন, আজকের মেধাবী শিশুরাই আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জীবনে সাফল্যের কোনো শর্টকাট নেই, তাই সময় নষ্ট না করে শিক্ষায় মনোযোগ দিতে হবে।
তিনি আরও জানান, বিএনপি মেধাবী শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করে তাদের প্রতিভা বিকাশে পরিকল্পনা নিয়েছে।
নেলসন ম্যান্ডেলার উদ্ধৃতি দিয়ে তারেক বলেন, শিক্ষাই হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র, যা দিয়ে পৃথিবীকে পরিবর্তন করা যায়।
তিনি বলেন, প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে মর্যাদার সঙ্গে টিকে থাকতে হলে ব্যবহারিক ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় দক্ষ হতে হবে। বিএনপি আধুনিক জ্ঞান, বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষা ব্যবস্থা আধুনিকায়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
তারেক জানান, বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার পরিকল্পনায় নিরাপদ রাষ্ট্র, সুরক্ষিত ক্যাম্পাস ও সময়োপযোগী জাতীয় পাঠ্যক্রম প্রণয়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
লন্ডন থেকে দেশে ফিরে তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে মুখোমুখি বসে বাংলাদেশের পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
৫১ দিন আগে
পলাতকদের নির্বাচনের পথ বন্ধ, ফিরছে ‘না ভোট’
বিভিন্ন মামলায় পলাতক ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না এবং একক প্রার্থী থাকলে ‘না ভোট’ দেওয়ার সুযোগ রাখার প্রস্তাবসহ গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধনী ২০২৫-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রস্তাবিত সংশোধনীতে আদালত ঘোষিত পলাতক আসামিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে, প্রার্থীদের জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, নির্বাচনে অনিয়ম ধরা পড়লে, অর্থাৎ কয়েকটি কেন্দ্রে অনিয়ম শনাক্ত হলেও পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞা সম্প্রসারিত করে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে তারা পুলিশের মতোই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারে।
বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারসম্পর্কিত যেসব বিধান ছিল, সেগুলো বিলুপ্ত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে সংজ্ঞা, সেখানে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন মামলায় পলাতক ব্যক্তিরা নির্বাচন করতে পারবেন না, এটিও যুক্ত করা হয়েছে।
পলাতক আসামি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ‘পলাতক হচ্ছে, আদালত যখন পলাতক ঘোষণা করে। যেদিন আদালত আপনাকে আসতে বলছে, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে, আসছেন না। আদালত পলাতক ঘোষণা করে। বিচার চলাকালীন সময়ে পলাতক হয়।’
প্রার্থীদের হলফনামায় এফিডেভিটের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি আয়ের উৎসের বিবরণ দেওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন, প্রার্থীদের দেশি-বিদেশি আয়ের উৎস, সম্পত্তি, বিবরণ নির্বাচন কমিশনে দিতে হবে। এটা আমরা ওয়েবসাইটে পাবলিক করে দেব, এতে সবাই জানবে কার কী সম্পত্তি।
জোটভুক্ত হলেও প্রার্থীকে নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে সংশোধিত আরপিওতে। ভোটের সময় অনেকে জোটভুক্ত হলে জনপ্রিয় বা বড় দলের প্রতীকে ভোট করা যেত। এখন আর সে সুযোগ থাকছে না।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনী জোট হলে, জোটের অংশ হলেও দলের প্রতীকে ভোট করতে হবে। যাতে ভোটাররা ক্লিয়ার আইডিয়া (পরিষ্কার ধারণা) পায়— উনি কোন দলের।’
এবার ভোটে প্রার্থীদের জামানত বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা এবং একক প্রার্থীর আসনে ‘না’ ভোটের বিধান করা হয়েছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।
২০১৪ সালের প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, “‘না ভোট’-এর বিধান যুক্ত করা হয়েছে। একজন প্রার্থী থাকলে সেখানে ‘না ভোট’ হবে। ২০১৪ সালের ভুয়া সাজানো নির্বাচন যেন না হয়, সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
ভোট গণনার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি থাকার বিধানটিও যুক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন। একইভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রিসাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসারসহ নির্বাচনী কাজে সম্পৃক্তদের জন্য পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
এর আগে, আসন্ন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আরপিও সংশোধনীর খসড়াটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সরকার খসড়ায় অনুমোদন দেওয়ার ফলে এখন অধ্যাদেশ আকারে আইনটি জারি করবেন রাষ্ট্রপতি।
প্রস্তাবিত আরপিওর ১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর কোনো আসনে যদি একক প্রার্থী থাকেন, তাহলে সেই প্রার্থী ও ‘না ভোট’-এর মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
যদি ‘না ভোট’-এর সংখ্যা প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে ওই আসনে নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে পরবর্তী নির্বাচনে আর ‘না ভোট’ থাকবে না। কিন্তু, আবারও একক প্রার্থী থাকলে, তখন তাকেই নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে।
প্রস্তাবিত আইনের ২৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে, বা ব্যালট বাক্স অবৈধভাবে সরিয়ে নেওয়া, ধ্বংস, হারানো বা এমনভাবে বিকৃত করা হয় যে ফলাফল নির্ধারণ সম্ভব নয়— সে সব ক্ষেত্রে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করতে পারবেন।
বর্তমান আরপিও অনুযায়ী, প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা না নিয়ে ভোট বন্ধ করতে পারতেন না।
২০২৩ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আরপিও সংশোধনের মাধ্যমে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ওই ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছিল।
৫৩ দিন আগে
সাংবিধানিক আদেশ জারি করার এখতিয়ার সরকারের নাই: সালাহউদ্দিন
জুলাই জাতীয় সনদকে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে সংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার দেওয়ার ব্যাপারে জামায়াতে ইসলামীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, রাষ্ট্র আবেগের ওপর চলে না।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ইউট্যাব আয়োজিত '২৪ জুলাই গণ-অভ্যুত্থান : তারুণ্যের ভাবনায় শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক এক আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যদিও কেউ বলছে যে, জুলাই গণঅভ্যত্থানের জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী এখন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা সেই আইনটা, আদেশটা জারি করতে পারেন। সেটা বৈপ্লবিক কথা, ইমোশনাল কথা, রাষ্ট্র কোনো ইমোশনের ওপরে চলে না। রাষ্ট্র আইনকানুন, বিধিবিধান, নিয়মকানুনের মধ্য দিয়ে চলে।’
গত ১৭ আগস্ট জুলাই সনদ সই হলেও কীভাবে তা বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়ে এখনও সুপারিশ দেয়নি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বুধবার এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করেছে কমিশন। বৃহস্পতিবার আবার তাদের পরাশর্ম নেবে কমিশন, তার আগে কমিশন সদস্যরা নিজেরা বৈঠক করবেন।
সুপারিশের প্রাথমিক খসড়ার খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে— জুলাই সনদ বাস্তাবায়নে একটি আদেশ জারি করা হবে। সনদের অধীনে গণভোট নিয়ে একটি অধ্যাদেশ করা হবে।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন বলেন, “আমি কালকে বলতে শুনলাম যে, এটা ‘এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল অর্ডার’ করে জাতীয় সনদ জারি করতে পারে এবং সেটা প্রধান উপদেষ্টাকে বলা হচ্ছে যে, প্রধান উপদেষ্টা এটা জারি করতে পারেন।”
তবে প্রধান উপদেষ্টার ‘আইন জারির কোনো অধিকার বাংলাদেশের সংবিধানে নেই’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘অযৌক্তিকভাবে কেউ যদি বলে যে, এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল অর্ডার করে এই সনদকে জারি করতে হবে।...প্রধান উপদেষ্টা তো সরকারপ্রধান। সরকারপ্রধানের আইন জারি করার কোনো রাইট আমাদের কনস্টিটিউশনে নেই।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যার জারি করার কথা, তিনি জারি করলেন না, যথাযথ কর্তৃপক্ষ জারি করল না, সেই বিতর্ক যাতে ভবিষ্যতে না ওঠে, সে জন্য আমরা যেন পলিটিক্যাল ইমোশন থেকে সরে আসি। এ আহ্বান আমি সব পক্ষকে জানাব।’
তিনি বলেন, গতকাল একটি রাজনৈতিক দল বলেছে, জনমতের চাপে অবশেষে বিএনপি জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাবে একমত হয়েছে। অথচ জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব বিএনপির ছিল।
জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে ১৭ অক্টোবর। তবে ওই অনুষ্ঠানে যায়নি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
তিনি আরও বলেন, ‘দুটি রাজনৈতিক দল ছাড়া বাকি সবাই এ (গণভোট) প্রস্তাবে একমত হয়। আমি দুটি রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ করছি না। তবে দুটি দলের একটি জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে গিয়েছে। অপর একটি রাজনৈতিক দল এখন জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ খুঁজছে। তাদের কিছু দাবিদাওয়া আছে। সে বিষয়ে আলাপ–আলোচনা এখন যে পর্যায়ে হচ্ছে, আমি আশা করি, হয়তো তাদের দাবিদাওয়ার বিষয়ে একটা যৌক্তিক সমাধানও আসবে।’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি দরকার হলো আমাদের মানসিক সংস্কার। আমরা ঐকমত্য কমিশনে আইনি সংস্কার, সাংবিধানিক সংস্কার নিয়ে কথা বলছি। যত সংস্কারই আমরা করি না কেন, জাতীয় ভিত্তিতে যদি আমাদের মানিসক সংস্কার না হয়, সেই আইনি ভিত্তিকে আমরা বাস্তবে রূপ দিতে পারব না। এটা মোদ্দাকথা।’
৫৩ দিন আগে
তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে নির্দলীয়, অপকর্মে জড়িত কর্মকর্তাদের প্রশাসনে রাখা যাবে না: রিজভী
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মূল ধারণাই হলো নির্দলীয়তা উল্লেখ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তাই প্রশাসনে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তি বা উপদেষ্টা থাকতে পারে না।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গত ১৫ বছরে নানা ধরনের অপকর্মে যারা জড়িত এবং যারা ফ্যাসিস্টদের রক্ষা করতে গিয়ে বেআইনি কাজ করেছেন, তাদের প্রশাসনে রেখে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। অনেকে প্রকাশ্যেই সহযোগিতা করেছিলেন। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপ নেবে, তখন তা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ হওয়া উচিত; তাহলে বিগত ১৬ বছর যারা ভোটে বিশ্বাস হারিয়েছেন, তাদের মধ্যে আস্থা ফিরবে।
এক সাংবাদিকের প্রশ্নে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দুটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘এসব বিষয় আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। যারা অপরাধী তাদের বিচার হওয়া উচিত, তবে কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ যেন না থাকে। আদালতের কাছে প্রমাণিত হলে তাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে—আইনের চোখে সবাই সমান।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই সনদ বা জুলাই মাসে গৃহীত জাতীয় অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দাবি এখন সর্বজনীন। দেশে চরম দলীয়করণের ফলে প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাই বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়ে গেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করতেন ক্ষমতা চিরস্থায়ী, কিন্তু ৫ আগস্টের পর বাস্তবতা বদলেছে, যদিও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়।’
পরিবেশ রক্ষায় বিএনপির উদ্যোগের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন— বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ২৫ কোটি বৃক্ষরোপণ করা হবে। দেশের পরিবেশ ও জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষায় আমরা কাজ করব।’
৫৪ দিন আগে
ভোটের সময় ৮ দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আট দিনব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। তবে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যাচাই-বাছাইয়ের পর সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসে ইসি। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির চার কমিশনার, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন। বৈঠক শেষে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এসব কথা বলেন।
আখতার আহমেদ বলেন, ‘মূলত পাঁচ দিনের ডেপ্লয়মেন্ট প্রোগ্রাম করা হয়। সেখানে একটা প্রস্তাব এসেছে, এটা যেন আট দিন করা হয়। নির্বাচনের আগে তিন দিন নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচন পরবর্তীকালে চার দিন। আমাদের ইনিশিয়াল প্রোগ্রামিং ছিল পাঁচ দিন। এখন প্রস্তাবনাটা আসছে, এটা আমরা পরীক্ষা করে দেখব।’
তিনি বলেন, ‘আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ সদস্য মাঠে থাকবে। প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। আনসার-ভিডিপি থেকে আসবেন প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ সদস্য।’
এ ছাড়াও নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য মাঠে কাজ করবে। তবে আরপিও সংশোধনের পর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত হবে বলে জানান তিনি।
ইসি সচিব বলেন, আইজিপি মহোদয় জানিয়েছেন যে, দেড় লাখ পুলিশ এই ইলেকশনে কাজ করবেন এবং সবচেয়ে বড় বাহিনীটা আসবে আনসার ভিডিপি থেকে। হোম সেক্রেটারি বলেছেন—বডি ওর্ন ক্যামেরা, ড্রোনের ব্যবস্থা থাকবে। কাজেই ভিজিলেন্সটা অনেক বেশিই হবে।’
সেনাবাহিনী ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারে থাকবে, নাকি তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে থাকবে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই ব্যাপারে আরপিওটা সংশোধন হয়ে আসুক। দুটো মতামতই আছে, কিন্তু তাদের কন্টিনিউয়েশনের পক্ষেই আলোচনা হচ্ছে। ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার যেটা আছে...তার সঙ্গে আরপিও’র সাংঘর্ষিক যেন না হয়, সে জিনিসটা আমরা লক্ষ্য করব।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে, বৈঠকে কোনো শঙ্কার কথা আসেনি।
‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরা কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি। নিরাপত্তা পরিকল্পনার অনেক কিছু নির্বাচনে বাজেটের উপর নির্ভর করবে। বাজেট বরাদ্দের বিষয়টি পরে সিদ্ধান্ত হবে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে বৈঠকে অংশ নেন— স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান, সেনাবাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি লেফট্যানেন্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম, নৌ-বাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী, বিমান বাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি এয়ার ভাইস মার্শাল রুশাদ দিন আসাদ, পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, এনএসআই মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবু মোহাম্মদ সরোয়ার ফরিদ, ডিজিএফআই মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার ভিডিপি অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, কোস্টগার্ড মহাপরিচালক রিয়াল অ্যাডমিরাল মো. জিয়াউল হক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল কাইয়ুম মোল্লা, র্যাব হেডকোয়ার্টার মহাপরিচালক এ কে এম শহীদুর রহমান, এসবি’র অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (প্রশাসন ও অর্থ) জি এম আজিজুর রহমান, সিআইডি অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. ছিবগাত উল্ল্যাহ।
৫৬ দিন আগে