রাজনীতি
এত আত্মবিশ্বাসী যে সরকারি দল হবেন, নির্বাচনে আসেন না কেন: জামায়াতকে সালাহউদ্দিন
জামায়াতে ইসলামী যদি সরকারি দল হওয়ার বিষয়ে এতটা আত্মবিশ্বাসী হয়, তাহলে নানা টাল-বাহানায় নির্বাচন কেন বাধাগ্রস্ত করছে— দলটির নেতাদের উদ্দেশ্যে এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অপর্ণ আলোক সংঘের আয়োজনে ‘তারুণ্যের রাষ্ট্রচিন্তার তৃতীয় সংলাপ-মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জামায়াত এখন জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছে, অথচ একই সময়ে তারা এমন এক দলের সঙ্গে রাস্তায় আন্দোলন করছে, যে দল ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনার অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল।
তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কালকে কয়েকটা সমাবেশ হয়েছে সারাদেশে, বিভিন্ন বিভাগ পর্যায়ে। পত্রিকায় আজ হেডলাইন দেখলাম, কোথাও বলছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করবে, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে।’
জামায়াত নেতাদের উদ্দেশে বিএনপি নেতা বলেন, ‘ভাইসাব আপনারা কি নির্ধারণ করে দিয়েছেন, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে নাকি জনগণ তাদের বিরোধী দল করবে? ‘আপনারা যখন এত বেশি আত্মবিশ্বাসী যে, সরকারি দল হবেন, তাহলে নির্বাচনে আসেন না কেন? আজকে এই বাহানা, কালকে ওই বাহানা, পরশু আরেক বাহানা দিয়ে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছেন কেন? উদ্দেশ্য কী, সেটা তো আমরা জানি।’
আরও পড়ুন: বিএনপিকে তরুণদের আস্থা পুনর্গঠন করতে হবে: তারেক রহমান
তিনি জামায়াতের কাছে প্রশ্ন তোলেন, ‘কাদেরকে নিয়ে আপনারা আন্দোলন করছেন এখন যুগপৎ সঙ্গী হিসেবে, সেটা জনগণ দেখছে। তাদের মধ্যে একটি দল আছে, আমি নাম নিলে তো আবার অসুবিধা।’
দলটির নাম নিলেও ২০২৪ সালে ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে তারা অংশ নিয়েছিল বলে উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি আরও বলেন, ‘তারা যদি যুগপৎ এর সঙ্গী হলে নিষ্পাপ হয়, তাহলে বাকি ২৮ টা দল যারা ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গী হয়েছিল তারা কি মহাপাপী?
এই নীতি সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তা ছাড়া শুধু ২০২৪ সালের নির্বাচন অংশ না নিলেও আগের সব নির্বাচনে ‘হাত পাখা’ আওয়ামী লীগের সঙ্গী ছিল বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
তবে মতপার্থক্য থাকলেও আলোচনার টেবিলেই নিষ্পত্তি চান বলে জানিয়েছেন এই বিএনপি নেতা। ইসলামী আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মতপার্থক্য গণতন্ত্রের অংশ এবং যেকোনো দল তাদের দাবি আদায়ের জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে রাস্তায় নামতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলছিলাম, যে বিষয়গুলো এখনো আলোচনার টেবিলে নিষ্পত্তি হওয়ার অপেক্ষায়, সেজন্য অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করার জন্য কি আপনারা রাস্তায় গেলেন? সেই চাপকে আবার বাতাস শূন্য করার জন্য আমাদেরকেও তো যেতে হবে হবে রাস্তায়।’
তিনি বলেন, আমরা কি সেটা চাই? আমরা চাই আলোচনার টেবিলেই এসব বিষয় সমাধান হোক।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে চর্চার মাধ্যমে এটিকে শক্তিশালী করতে হবে।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন: ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাবে বিএনপি
তিনি বলেন, জাতীয় ইস্যুতে, দেশের স্বার্থে ইস্যুতে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্রের ইস্যুতে, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো। কিন্তু গণতান্ত্রিক চর্চায় আমাদের মধ্যে বিতর্ক হবে, মতভিন্নতা হবে, বহুমত পোষণ করব কিন্তু সেটার নিষ্পত্তি হবে আলোচনার টেবিলে।
পিআর পদ্ধতির নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পিআর যদি চাইতেই হয় সেটা তো ডিসাইড (নির্ধারণ) করবে জনগণ। আমরা কে কয়টা রাস্তায় মিছিল করলাম, বিভাগীয় পর্যায়ে কে কয়টা সভা করলাম, হাজার দুই-তিনেক লোক নিয়ে মিছিল করলাম তাতে কি পিআর প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল?’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আপনারা নির্বাচনী ইশতেহারে আপনাদের দাবিগুলো উল্লেখ করে নির্বাচনে আসুন। জনগণ যদি আপনাদের পক্ষে রায় দেয়, ইশতেহারের পক্ষে রায় দেয়, আপনারা সেটা বাস্তবায়ন করবেন। এটিই তো গণতান্ত্রিক রীতি।’
৮৬ দিন আগে
বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন জরুরি, ফলাফলও সবার মেনে নেওয়া উচিত: মৌনির সাতৌরি
বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে অনুষ্ঠিত হতে হবে এবং এর ফলাফল সবাইকে সম্মান করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান মৌনির সাতৌরি।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলাদেশ সফর শেষ করার আগে ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
সাতৌরি বলেন, ‘অবশ্যই আগামী ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে হতে হবে এবং নির্বাচনের ফলাফলের প্রতি সবার শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত। বাংলাদেশে নির্বাচনের পর স্থিতিশীলতার জন্য এই শর্ত অপরিহার্য।’
‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য নির্বাচন কেবল একটি ধাপ মাত্র। সব রাজনৈতিক অংশীদাররা যেন ঐকমত্য তৈরি হওয়া সংস্কারগুলোকে সমর্থন করে। সেইসঙ্গে সেগুলোর কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন ইসাবেল উইসেলার-লিমা (ইপিপি, লুক্সেমবার্গ), আরকাদিউস মুলারচিক (ইসিআর, পোল্যান্ড), উরমাস পায়েত (রিনিউ ইউরোপ, এস্তোনিয়া) এবং ক্যাটারিনা ভিয়েরা (গ্রিনস/ইএফএ, নেদারল্যান্ডস)।
৮৭ দিন আগে
আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক মতবিরোধে সমাধানে আশাবাদী প্রেস সচিব
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান আলোচনা শান্তিপূর্ণ ও সামগ্রিক সমাধান এনে দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ কয়েক দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামী ও অন্যান্য দলের বিক্ষোভ কর্মসূচি-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে প্রেস সচিব ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
ব্রিফিংয়ের সময় উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ এবং জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদও উপস্থিত ছিলেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা আশাবাদী যে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার মাধ্যমেই সবকিছুর সমাধান হবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম জানান, চলতি বছর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেবেন। তিনি স্পষ্ট করেন, এই সফর বাংলাদেশের নির্বাচন কেন্দ্রিক কোনো মধ্যস্থতা বা আলোচনার জন্য নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে।
তিনি আারও বলেন, ‘তারা সরকারের অংশীদার হিসেবে এ ধরনের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে অংশ নিচ্ছেন।’
ইতোমধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়িয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর ফলে গত ১২ ফেব্রুয়ারি গঠিত কমিশনটি এখন ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সাত সদস্যের এ কমিশনের দায়িত্ব হলো সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ পর্যালোচনা ও গ্রহণ করা। এর অংশ হিসেবে তারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে তারা।
৮৮ দিন আগে
বিএনপিকে তরুণদের আস্থা পুনর্গঠন করতে হবে: তারেক রহমান
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের বিশেষত তরুণ প্রজন্মের আস্থা পুনর্গঠন করতে হবে। এটি দলটির একটি বড় দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব বলেন।
তারেক রহমান লিখেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের অন্যতম দায়িত্ব হলো দেশের প্রতিটি ভোটারের আস্থা নিশ্চিত করা।
পোস্টে তিনি আরও বলেন, আজকের ও আগামী দিনের তরুণ প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি ছুটে যাচ্ছে তৃণমূল থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি শ্রেণি ও পেশার মানুষের কাছে; গ্রাম থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক কাঠামোকে আরও মজবুত করছে। এই সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করতে চাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা।
আরও পড়ুন: এলডিসি উত্তরণে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান তারেক রহমানের
বিএনপি নেতা জানান, নানা অভিযোগে এখন পর্যন্ত দলের সাত হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও অসদাচরণের মতো অভিযোগে বহিষ্কারসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বহুমুখী অপপ্রচারের মাঝেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না, তবে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে এগুলো ছিল অপরিহার্য। শৃঙ্খলা কোনো দুর্বলতা নয়, বরং সেটিই আমাদের শক্তি। নিজেদের সদস্যদের দায়বদ্ধ করার মাধ্যমেই আবারও প্রমাণ হলো যে, বিএনপি সততার ব্যাপারে আন্তরিক, এবং আমরা ক্ষমতাসীনদের কাছে যেসব মানদণ্ড দাবি করি, নিজেদেরও ঠিক সেই একই মানদণ্ডে দাঁড় করাই।
তারেক রহমান বলেন, এইভাবেই আমরা জনগণের আস্থা পুনর্গঠন করতে চাই — বিশেষত তরুণদের, যারা রাজনীতিকে কেবলমাত্র ক্ষমতার খেলা হিসেবে দেখতে চায় না; বরং দেখতে চায় সবার অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা একটি মহৎ ক্ষেত্র হিসেবে।
বিএনপি সবসময় যুগের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের আধুনিক করেছে এবং জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ ও যোগাযোগকেই অগ্রাধিকার দিয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
বিএনপি নেতা আরও জানান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, তরুণদের কর্মসংস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডিজিটাল উদ্ভাবনের প্রতিশ্রুতিসহ ৩১ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে তাদের নীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে।
তার ভাষ্যে, নারীর অংশগ্রহণ, তরুণ নেতৃত্ব ও পেশাজীবীদের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি গড়ে তুলতে বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে দেশ এগিয়ে যায় এবং রাজনীতি মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকে। বিএনপিকে তারা এমন একটি দল হিসেবে পরিচিত করতে চান—যা সেবা, ন্যায়বিচার ও দক্ষতার প্রতীক হবে; বিভাজন কিংবা সুবিধাভোগের প্রতীক নয়।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বানচালের ‘অশুভ শক্তি’র চেষ্টার বিষয়ে সতর্ক করলেন তারেক
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো আলাদা, তাই আমাদের পদক্ষেপগুলোকেও হতে হবে নতুনভাবে চিন্তা-নির্ভর। তবে আমরা ইতিহাসকে অস্বীকার করি না; বরং তার ভিত্তিতেই এগিয়ে যেতে চাই।
তারেক রহমান স্মরণ করিয়ে দেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে জনগণকে আশার আলো দেখিয়েছিলেন; জনগণের ক্ষমতায়নকে রাজনীতির কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। আর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আপোষহীনভাবে গণতন্ত্র ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই করে গিয়েছেন। আজ আমরা তাদের সেই আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখেই এগিয়ে চলেছি নতুন যুগে; যেখানে সততা, তরুণ নেতৃত্ব ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা হবে রাষ্ট্রগঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।
তিনি বলেন, আমরা জানি, তরুণরা চায় বাস্তব সুযোগ, তারা ফাঁকা বুলি চায় না। জনগণ চায় স্থিতিশীলতা, তারা বিশৃঙ্খলা চায় না। আর বিশ্ব চায়, বাংলাদেশ হোক একটি বিশ্বাসযোগ্য ও সম্মানিত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এই প্রত্যাশাগুলো পূরণে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তারেক রহমান নেতাকর্মীদের প্রতি ঐক্যবদ্ধ, শৃঙ্খলাবদ্ধ ও জনগণের সেবায় নিবেদিত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি যেমন আপনাদের প্রত্যেকের ওপর আস্থা রাখি, আপনারাও তেমনি আমার ওপর আস্থা রাখুন। তাহলেই গণতন্ত্রের পথ হবে আরও উজ্জ্বল। আমরা একসঙ্গে প্রমাণ করবো যে, বাংলাদেশে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা, স্থিতিশীল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এবং গণআকাঙ্খিত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব, ইনশাআল্লাহ।
৮৮ দিন আগে
জাতীয় নির্বাচন: ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাবে বিএনপি
আগামী ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ধরে সরাসরি জনসংযোগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে দলটি ব্যাপকভাবে ভোটারদের আস্থা পুনঃস্থাপন, প্রতিপক্ষের প্রচারণা মোকাবিলা ও নির্বাচনী মাঠে শক্তিশালী উপস্থিতি নিশ্চিতের প্রচেষ্টায় ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাবে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈঠকে অংশ নেওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, “আমাদের ‘ডোর টু ডোর’ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে নারী ও যুবসমাজকে সক্রিয় করা এবং গত কয়েক বছরে দলের কিছু নেতার কর্মকাণ্ডের কারণে ক্ষয়প্রাপ্ত আস্থা পুনঃস্থাপন করা।”
এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সমর্থকদের নির্বাচনমুখী করার জন্য বিএনপি ১৫০টিরও বেশি আসনে প্রার্থীদের সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের পরিচয় করানোর পরিকল্পনা করেছে বলে জানান তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সম্প্রতি দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ—ডাকসু, জাকসু নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের ভরাডুবি এবং ইসলামি দলগুলোর সাম্প্রতিক কর্মসূচির কারণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দলের নীতিনির্ধারকদের দেশব্যাপী সরাসরি গণসংযোগ ও প্রচারণা জোরদার করতে উদ্বুদ্ধ করেছে।’
তার মতে, ‘বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব নিজেদের কিছু ভুল বুঝতে পেরেছে, বিশেষ করে ডাকসু নির্বাচনের পর। আমাদের প্রচারণার উদ্দেশ্য হলো সেই ত্রুটিগুলো জনগণের কাছে স্বীকার করে আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।’
‘ফলে নির্বাচনী প্রচারণার মাধ্যমে দলের নেতা-কর্মীরা জনগণকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন যে সরকারি ক্ষমতা না থাকলেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে নিজেদের গুরুত্ব ও সততা প্রমাণ করেছে বিএনপি।’
‘ডোর টু ডোর’ কর্মসূচির মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ, ভারত ও অন্যান্য সংবেদনশীল ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান নিয়ে ছড়ানো নেতিবাচক প্রচারণা মোকাবিলা করা হবে বলে জানান তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বলেন, বৈঠকে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দলগুলোর ঘোষিত কর্মসূচিও পর্যালোচনা করা হয়েছে। এগুলোকে রাজনৈতিক দরকষাকষির অংশ হিসেবে দেখছি। তবে এর বাইরে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাব।
এলডিসি উত্তরণে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান তারেক রহমানের
ওই বিএনপি নেতা বলেন, ‘প্রচারণায় শুধু পুরুষ নেতা-কর্মীরাই নন, নারী নেতা-কর্মীরাও সরাসরি অংশ নেবে। আমরা মানুষকে বোঝাব, কেন নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি।’
দলটির স্থায়ী কমিটির ওই সদস্য জানিয়েছেন, বিএনপি অর্ধেকের বেশি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে যাচ্ছে, যাতে প্রতিটি আসনে একজন প্রার্থী নিশ্চিত থাকে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যেই স্থানীয়ভাবে প্রচারণা শুরু করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিং এড়িয়ে দলীয় শৃঙ্খলার মধ্যে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী সাম্প্রতিক সময়ে জুলাই সনদ ও পিআর পদ্ধাতির নির্বাচনের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তবে বিএনপি মুখোমুখি রাজনীতি এড়িয়ে জনসংযোগে মনোযোগ দিচ্ছে। দল জনগণের কাছে তাদের অবস্থান ও নির্বাচনের ভিশন ব্যাখ্যা করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাবে।’
জনগণের মধ্যে বিএনপিকে নিয়ে ভুল ধারণা দূর করতে এবং কেন কিছু সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা ব্যাখ্যা করতে এই কর্মসূচি সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনও বলেছেন, ‘আমরা জনগণের কাছে গিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাব। আমাদের লক্ষ্য জনগণের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থান শেয়ার করা, সরাসরি অন্য দলের কর্মসূচি মোকাবিলা করা নয়।’
তবে এই প্রচারণা কখন শুরু হবে তা রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মোশাররফ হোসেন বলেন, জামায়াত ও অন্যান্য দল তাদের দাবিসহ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সে বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো সরকারের দায়িত্ব। কোনো দল যেকোনো কিছুর দাবি করতে পারে, সে বিষয়ে সরকারকেই প্রতিক্রিয়া দিতে হবে।
নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ দূর করতে সরকারের প্রতি বিএনপি নেতার আহ্বান
তিনি আরও বলেন, ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না। ইতিহাসে দেখা গেছে, ছাত্রনেতারা ক্যাম্পাসে সফল হলেও সংসদ নির্বাচনে তার প্রভাব দেখা যায়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল জনগণের কাছে যাবে বা রাজপথে আন্দোলন করবে, এটি তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমরা কোনো দলকে শত্রু মনে করি না। নির্বাচনকালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে, তবে আমরা সব দলকে রাজনৈতিক বন্ধু ও সঙ্গী মনে করি। জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে রাজনীতি করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, জামায়াত ও কিছু ইসলামি দল তাদের দাবিসহ রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি তাদের বার্তা, বক্তব্য ও মতামত জনগণের কাছে পৌঁছে দেবে, এবং জনগণ তা বিচার করবে।এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘জনসংযোগের বিভিন্ন মাধ্যম, যেমন: মিছিল, র্যালি, জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে কর্মসূচি সফল করা হবে। বিএনপির অবস্থান কী, জনগণের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং জনসমর্থন অর্জন করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
৯০ দিন আগে
এলডিসি উত্তরণে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান তারেক রহমানের
বাংলাদেশের ২০২৬ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণকে মাইলফলক আখ্যা দিলেও এর সঙ্গে আসা ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, ‘উত্তরণ কেবল একটি মাইলফলক নয়, বরং এটি এমন ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে যা আমাদের সততার সঙ্গে স্বীকার করতে হবে। এগুলো সরাসরি আমাদের অর্থনীতি ও জনগণকে প্রভাবিত করবে।’
পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়া অগ্রসর না হলে দেশের অর্থনীতি ও জনগণ সরাসরি চাপের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি কয়েকটি সম্ভাব্য সমস্যা উল্লেখ করেছেন।
তার মতে, বাণিজ্য সুবিধা হারালে পোশাক খাতের রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমে যাবে। একই সঙ্গে স্বল্পসুদে ঋণ ও সাহায্যের প্রবাহ কমে যাবে, যা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ঋণের চাপে থাকা অর্থনীতিকে আরও সংকটে ফেলতে পারে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিশেষ সুবিধা, যেমন ভর্তুকি বা ওষুধের পেটেন্ট সংক্রান্ত ছাড় আর থাকবে না। এতে প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বাড়তে পারে এবং প্রতিযোগিতামূলক ক্ষয় হলে একটি ক্ষেত্রের ওপর রপ্তানি নির্ভরতা আমাদের দুর্বল করে তুলতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কিছু প্রস্তাব করেছেন তারেক রহমান।
সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, পোশাকের বাইরে আমাদের রপ্তানিভিত্তিকে আইসিটি, ওষুধ ও অন্যান্য মূল্য সংযোজন শিল্পে বৈচিত্র্য আনতে হবে, ঋণের ফাঁদ এড়াতে উন্নত আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালী করতে হবে, বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক থাকার জন্য উৎপাদনশীলতা, বাণিজ্য সরবরাহ এবং আধুনিক অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, রূপান্তরকে সমর্থন করার জন্য বাণিজ্য সুবিধা এবং সবুজ অর্থায়নের ক্ষেত্রে বিদেশি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের শ্রমিক, কৃষক ও তরুণদের ঝুঁকির মুখে ফেলে রাখা যাবে না। এলডিসি থেকে উত্তরণের সুফল ভোগ করতে হলে নাগরিকদের জন্য বাস্তব অগ্রগতি ও সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।’
৯০ দিন আগে
শেখ হাসিনার গলায় গামছা দিয়ে টেনে আনা হবে: শামসুজ্জামান দুদু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, দেশের টাকা লুটপাট করে, মানুষ হত্যা করে ভারতে পালিয়ে থাকা যাবে না। পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনার গলায় গামছা দিয়ে টেনে আনা হবে, বিচার করা হবে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠে জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান দুদু বলেন, ‘শেখ পরিবার ব্রান্ডেড খুনি, ব্রান্ডেড লুটেরা, ব্রান্ডেড চোর। তার দল আওয়ামী লীগ। শেখ মুজিব খুনি ও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টিকারী।’
তিনি বলেন, ‘এত টাকা লুট করে, গণহত্যা করে কোথায় পালাবেন মা (শেখ হাসিনা) আপনাকে গলায় গামছা দিয়ে টেনে আনা হবে।’
পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ দূর করতে সরকারের প্রতি বিএনপি নেতার আহ্বান নির্বাচন নিয়ে দুদু বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কেউ কেউ খোঁচাখোঁচি করছে। পিআর ফি-আর কী যেন বলছে। কারণ নির্বাচন দিলেই তো বিএনপির জয়। প্রধানমন্ত্রী হবেন তারেক রহমান।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন আগামী নির্বাচন সহজ হবে না। ষড়যন্ত্র চলছে। তাই তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিএনপি হবে আগামী দিনের চালক এবং আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী হবেন তারেক রহমান।
৯৮ দিন আগে
নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ দূর করতে সরকারের প্রতি বিএনপি নেতার আহ্বান
আসন্ন ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে চলমান অনিশ্চয়তা ও সংশয় দূর করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিকশিত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, নির্বাচন হবে কি হবে না, কারা এমন সন্দেহ তৈরি করছে? সরকার চুপ করে বসে আছে কেন? চারপাশে তাকান, মন্ত্রণালয়গুলোতে কারা বসে আছে তা কি জানেন না? কারা মিছিল করছে, কারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে, তা কি দেখতে পাচ্ছেন না? আপনাদের জানা উচিত।
সাবেক বিরোধী দলের চিফ হুইপ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ আবু সায়েদ, মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ, ওয়াসিম আকরামের মতো অনেকের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে এই সরকারের প্রধান হয়েছেন।
ফারুক বলেন, এখনো জাতীয় নির্বাচন হবে কি না তা নিয়ে ভীতি ও সংশয় রয়ে গেছে। এই সংশয় দূর করা সরকারের দায়িত্ব। কলকাতা থেকে শুরু করে প্রশাসনের ভেতরে কিছু গোপন এজেন্ট বসে আছে যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।
তিনি অবিলম্বে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ ও গোপন এজেন্টদের তালিকা প্রকাশ করে, তাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এটা হলে জনগণের সন্দেহ আর থাকবে না।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ভারতের মদদে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক অর্জনকে খাটো করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। এই আন্দোলন বিএনপি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পূর্ণ সমর্থনে সফল হয়েছিল বলেও যোগ করেন তিনি।জামায়াতকে ইঙ্গিত করে ফারুক বলেন, কিছু দল রাজনৈতিক ভণ্ডামিতে লিপ্ত। নির্বাচনের বিরোধিতা করলেও তারা আবার মসজিদে গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে।
তিনি মোহাম্মদপুরের একটি ঘটনার উদাহরণ দেন, যেখানে এক মসজিদের ইমাম দাবি করেন তিনি একটি সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করছেন, তবে অভিযোগ ছিল তার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর যোগসূত্র রয়েছে।
পড়ুন: দুর্গাপূজায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে চালু হচ্ছে অ্যাপ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
এ সময় উপস্থিত এক তরুণ ইমামের অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, মসজিদে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। আর একইসঙ্গে নির্বাচন নিয়ে ভীতি ছড়ানোও গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের দ্বিচারিতা বন্ধ হওয়া উচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ফারুক সব শিক্ষার্থীদের আগামীকাল (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠেয় ভোটে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘দমন-নিপীড়নের মধ্যেও ছাত্রদল টিকে আছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ আঁকড়ে ধরে। জিয়াউর রহমানের আদর্শ, খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্ব আর তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায় ছাত্রদল আগামীকালের কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি।’
ফারুক শিক্ষার্থীদের জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাস রেখে ছাত্রদল প্যানেলকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি ডাকসু নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
অতীতের কথা স্মরণ করে ফারুক বলেন, অতীতে আন্দোলন- সংগ্রামের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রনেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানিসহ সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে আহত অবস্থায় দেখতে হয়েছে।তিনি বলেন, ‘হৃদয়ে সাহস নিয়ে আগামীকাল (মঙ্গলবার) জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শে, খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্বে এবং তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায় কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব স্তরের শিক্ষার্থীদের জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাস রেখে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্যানেলকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে বিএনপি নেতা সরকারের প্রতি ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানেরও আহ্বান জানান।
৯৮ দিন আগে
জামায়াত আমিরের সঙ্গে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর বসুন্ধরায় জামায়াত আমিরের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয় বলে দলটির এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এসময় হুমা খানের সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধির মানবাধিকার বিষয়ক জুনিয়র উপদেষ্টা ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরাম খান।
সাক্ষাতের শুরুতেই হুমা খান জামায়াত আমিরের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন ও তার পূর্ণাঙ্গ সুস্থতা কামনা করেন। পরবর্তীতে আন্তরিক পরিবেশে উভয়পক্ষ পারস্পরিক মতবিনিময় করেন।
চলতি বছরের ২৯ জুলাই রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার আয়োজিত ‘জুলাই স্মরণ সভায়’ জামায়াত আমিরের দেওয়া বক্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মিস হুমা খান।
পড়ুন: জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ইইউ রাষ্ট্রদূত মিলার
আলোচনায় তারা বাংলাদেশে বিদ্যমান মানবাধিকার পরিস্থিতি, গুম-খুনের বিচারসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে খোলামেলা মতবিনিময় করেন। হুমা খান জামায়াতের প্রস্তাবিত সংস্কার কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে জামায়াত আমির তাকে বিস্তারিত অবহিত করেন।
উল্লেখ্য, এসময় ডা. শফিকুর রহমান জাতিসংঘ প্রতিনিধিদলকে নিজের দলের উদ্যোগে ‘জুলাই শহীদদের’ স্মরণে প্রকাশিত ইংরেজি সংস্করণের ১২ খণ্ডের বই উপহার দেন।
দলটির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের এবং ব্যারিস্টার মীর আহমাদ বিন কাসেম আরমান প্রমুখ।
৯৮ দিন আগে
পৃথিবীর কোনো শক্তি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না: সরকার
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং পৃথিবীর কোনো শক্তি এই নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৈঠকে ১০ জন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন— স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান,পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। এ ছাড়া বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে) খোদা বকশ চৌধুরী, পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব শফিকুল আলম আরও বলেন, গত কিছু দিনে কিছু ঘটনা ঘটেছে, সেটির আলোকেই এই বৈঠক। যেসব ঘটনা ঘটছে, স্থানীয় প্রশাসন যেন এ ধরনের ঘটনা আরও শক্তভাবে মোকাবিলা করে, সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জুলাইকে সামনে রেখে যে রাজনৈতিক ঐক্য হয়েছিল, সেটাকে ধরে রাখার বিষয়েও জোর দেওয়া হয় বৈঠকে। নির্বাচন সামনে রেখে যাতে কোনো নিরাপত্তাজনিত ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক করা হয়। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আরও নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়।
পড়ুন: শিগগিরই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: সালাহউদ্দিন
প্রেস সচিব বলেন, ‘যে ঘটনাগুলো ঘটছে তা বা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হতে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের ন্যূনতম ছাড় দেওয়া হবে না। সরকার মনে করে দেশের স্বার্থে জনগণসহ সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যবদ্ধ থাকা অপরিহার্য।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেছেন যে আসন্ন দুর্গাপূজায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে নানা রকম ষড়যন্ত্রমূলক প্রচেষ্টা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘গত বছরের দুর্গাপূজা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ভালো অভিজ্ঞতা ছিল। তাই এবছরও সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে আগেভাগেই সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
প্রেস সচিব জানান, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘ডাকসু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়, সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করতে হবে।
প্রেস সচিব বলেন, পতিত ও পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি যখন দেখছে দেশ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং জুলাইয়ের হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িতদের বিচার যত দ্রুততর হচ্ছে, তত তারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এটি কেবল আইনশৃঙ্খলার সমস্যা নয়, এটি জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যু। তারা দেশের সার্বিক শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করার জন্য সকল শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।
৯৯ দিন আগে