রাজনীতি
অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘গুপ্ত রাজনীতি’ সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে: তারেক রহমান
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের কিছু সহযোগীর কর্মকাণ্ড দেশের অনেক মানুষের অধিকার ও সুযোগ ক্ষুণ্ন করছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সতর্ক করেছেন যে, দেশ অস্থিতিশীল হলে অতীতে পরাজিত ও পলাতক ফ্যাসিবাদী শক্তির পুনরায় উত্থানের পথ সুগম হতে পারে।
শনিবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলন ২০২৫’-এ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্যজোট এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে একটি জনগণের ভোটের মাধ্যমে তাদের প্রতি দায়বদ্ধ, জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান কর্তব্য। অবশ্যই কারো দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ফ্যাসিবাদের রোষানল থেকে বাঁচতে ফ্যাসিবাদবিরোধীদের কেউ কেউ ‘গুপ্ত কৌশল’ অবলম্বন করেছিল। একইভাবে পতিত–পরাজিত ফ্যাসিবাদী অপশক্তিও বর্তমানে ‘গুপ্ত কৌশল’ অবলম্বন করে দেশের গণতন্ত্রে উত্তোরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করে কিনা, সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথের আন্দোলনের সঙ্গী কারও কারও ভূমিকা দেশে ‘আপনার, আমার, আমাদের’ বহু মানুষের অধিকার ও সুযোগকে বিনষ্ট করার হয়ত একটি পরিস্থিতি তৈরি করছে।
তিনি আরও বলেন, গুপ্ত বাহিনীর সেই অপকৌশল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অন্যতম প্রধান কৌশল হচ্ছে, একটি ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় ও বহাল রাখা। সেজন্য বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকার এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গীদের সহযোগিতা ও সমঝোতার দৃষ্টিভঙ্গি সমুন্নত রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি বরাবরই ‘একটি শান্তিকামী, সহনশীল, গণমুখী’ রাজনৈতিক দল বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ভিন্ন দল, ভিন্ন মতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা, এটি বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ। দেশের জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করার স্বার্থেই বিএনপির রাজনীতি বলেও দাবি করেন তিনি।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ, জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠাই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান কর্তব্য। অবশ্যই কারো দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয় এবং এই কারণেই বিএনপি এ সরকারের প্রতি কোনো রকম চাপ প্রয়োগ করার পরিবর্তে বরং ভিন্নমতের জায়গাগুলোতে নোট অব ডিসেন্ট, এটাকে বিএনপি ডিসেন্ট ওয়ে বলে মনে করে।
নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করলে স্বল্প আয়ের মানুষদের সহায়তার জন্য ৫০ লাখ ‘ফ্যামিলি কার্ড’ বিতরণ এবং তরুণদের জন্য চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করা হবে বলে ঘোষণা করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘তরুণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভাষাশিক্ষা দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করে দেশে এবং বিদেশে কাজের ব্যবস্থার পরিকল্পনা আমরা এর মধ্যে হাতে নিয়েছি।’
ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের স্বনির্ভর করে তুলতে ‘ফার্মার্স কার্ড’ দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
বাংলাদেশে ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্যের বন্ধনই আমাদের রাষ্ট্র এবং সমাজের সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সৌন্দর্য।’ এই বৈচিত্র্যময় সমাজে ঐক্যসূত্র বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকারের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসাবে এই বাংলাদেশে আপনার যতটুকু অধিকার, আমারও ঠিক ততটুকুই অধিকার। কারও বেশি, কারও কম, তা নয়।’ এ সময় তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক সোমনাথ সেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবিগুলো বিএনপি নেতাদের মাধ্যমে তারেক রহমানের কাছে তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ, মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের সদস্যসচিব কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, হিন্দু ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার প্রমুখ।
৩৭ দিন আগে
সংবিধানে গণভোট নেই: আমীর খসরু
বর্তমান সংবিধানে গণভোটের কোনো বিধান নেই উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, কথায় কথায় রাস্তায় নামার প্রবণতা থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে বিরত থাকতে হবে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ‘জনতার ইশতেহার’ শীর্ষক এক ডায়লগে তিনি এ কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধানের আলোকে গঠিত হয়েছে এবং তারা এই সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছেন। এই সংবিধানে গণভোটের কোনো ধারা নেই। ভবিষ্যতে সংসদের মাধ্যমে তা সংযোজনের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘কথায় কথায় আপনি দাবি নিয়ে রাস্তায় যাবেন, সেটা হবে না। আপনাদের দাবি নিয়ে মাঠে যাবেন, এর বিপরীতে যদি দেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক দল কর্মসূচি দেয় তাহলে সংঘর্ষ বাঁধবে না?’
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কেমন জানি একটা স্বৈরাচারী মনোভাব চলে আসছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কনসেনসাসের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের ৩১ দফার অনেক বিষয় এখনো ঐক্যমতের মধ্যে আসেনি, কিন্তু তাই বলে কি আমি রাস্তায় নামবো? আমি জনগণের কাছে যাব।’
‘ঐক্যমতের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই—এটাই বাস্তবতা। অধ্যায়টি আপাতত বন্ধ। নিজের চিন্তাভাবনা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আপনি ক্ষমতায় এলে তারপর পরিবর্তনের উদ্যোগ নিন।’
চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক এক হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে এই রাজনীতিক বলেন, ‘ঘটনাটি একটি দলের ছাত্র সংগঠনের সাবেক নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফল। তবে যারা নির্বাচন পেছাতে চায়, তারাই এ ঘটনার পেছনে আছে কি না, তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ রয়েছে।’
অর্থনৈতিক বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপির সময়ে কখনো শেয়ারবাজারে ধস নামেনি, অর্থনীতি ছিল শক্তিশালী। আমরা প্রাইভেট সেক্টরকে অগ্রাধিকার দিতাম, এবং ভবিষ্যতেও তা করব। আমরা এমন ব্যবস্থা করব যাতে জনগণ ঘরে বসেই লাইসেন্স পেতে পারে। যত বেশি জনগণকে ক্ষমতায়ন করা যাবে, তত বেশি দেশের উন্নয়ন হবে। দলের ক্ষমতায়ন নয়, জনগণের ক্ষমতায়নই আসল লক্ষ্য।’
তিনি আরও বলেন করেন, ‘প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা আমরা দেশের প্রত্যেক নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেব। এটি হবে জনগণের অধিকার, দয়ার দান নয়।’
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ প্রমুখ।
৩৭ দিন আগে
আবারও গণতন্ত্র ধ্বংসের চক্রান্ত হচ্ছে: মির্জা ফখরুল
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রকে আবারও ধ্বংস করার চক্রান্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর আজকে বাংলাদেশে বিভিন্ন রকমভাবে একটা প্রচেষ্টা চলছে, একটা চক্রান্ত চলছে গণতন্ত্রকে আবারও ধ্বংস করার জন্যে।
‘এই মুহূর্তে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে আমাদেরকে সেই পথেই যেতে হবে, যে পথে সত্যিকার অর্থে আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব, একটা সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারব, জনগণের ভোটের অধিকারকে নিশ্চিত করতে পারব, বিচারের অধকারকে নিশ্চিত করতে পারব, সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, বিএনপি এগিয়ে যাবে। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।’
৭ নভেম্বরের পটভূমি তুলে ধরে এই রাজনীতিক বলেন, ‘১৯৭৫ সালের এই দিনে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সৈনিক এবং দেশপ্রেমিক মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে আধিপত্যবাদের চক্রান্তকে বানচাল করে দেয় এবং এই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং মহানায়ক রাষ্ট্রনায়ক স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমকে গৃহবন্দিদশা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসে তাকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। এটা ছিল বাংলাদেশের অগ্রগতির একটা টার্নিং পয়েন্ট।’
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও এবং মুক্তবাজার অর্থনীতি চালুর মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক রূপান্তরের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদসহ মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মহানগর বিএনপি, মুক্তিযোদ্ধা দল, মহিলা দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ড্যাব, এ্যাব, ছাত্রদল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা আলাদা আলাদাভাবে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
৩৮ দিন আগে
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ভোটে ধর্মের ব্যবহার না করাসহ ৭ দাবি হিন্দু মহাজোটের
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ, নির্বিঘ্ন ভোটের পরিশে ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে ‘বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট’।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করে এসব দাবি তুলে ধরেন মহাজোটের নেতারা।
সিইসি এসব দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়েছেন বলে বৈঠকের পরে বলেছেন হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব ও মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে।
নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবের সঙ্গে কমিশন একমত হয়েছেন, জানিয়েছেন আগে থেকে এ নিয়ে কাজ করছেন। সিইসি সৌহার্দ্য পরিবেশে আলোচনা করে গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন-শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। আপনার সবাই ভোটকেন্দ্রে যাবেন, আমরাও কথা দিয়েছি নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে চাই।
‘ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার পর এসে দেখলাম বাসাবাড়ি, মঠ মন্দির ভাঙচুর হয়েছে—এ ধরনের পরিবেশে পরিস্থিতি যেন না হয় সে বিষয়ে সিইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।’
পলাশ কান্তি দে বলেন, ‘সিইসি নিশ্চয়তা দিয়েছেন এবার কেউ আপনাদের অত্যাচার করতে পারবে না। আমরা শক্তভাবে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
বৈঠকে নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তানিশ্চিতে ৭টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
নিজেদের উদ্বেগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভয়ের জায়গাটা অমূলক নয়। দুইটা সময় আমরা খুব উদ্বিগ্ন অবস্থায় থাকি; দুর্গা পূজা আর নির্বাচন। নির্বাচন কখনও হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য সুখকর ছিল না। স্থানীয় সরকার ও সংসদের প্রতিটি নির্বাচনের আগে-পরে, প্রত্যেকটা সরকারের সময় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত হানা নিয়মিত ব্যাপার হয়েছে। কমিশন বলেছে, অপরাধীরা এবার পার পাবে না।’
নির্বাচন কমিশন এবার কঠোরভাবে অপরাধীদের দমনের আশ্বাস দিয়েছেন তুলে ধরে মহাজোটের মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবের সাথে ইসির ভাবনার পুরোপুরি মিলে গেছে বলা হয়েছে। সিইসি আশ্বস্ত করেছেন, এ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং নিরাপত্তা নিয়ে বাসায় ফিরবেন।
‘এর ব্যত্যয় ঘটলে শক্তভাবে ব্যবস্থা নেবে ইসি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটারদের ভয় ভীতি প্রদর্শন ও স্থাপনায় আঘাত হানলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শক্ত ভাবে ব্যবস্থা নেবে।’
প্রত্যেকটা সময় কিছু হলে হিন্দুরা সব সময় ‘বলির পাঠা’ হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাত দফা দাবি হলো– ভোটের ১০ দিন আগে ও ১০ দিন পর পর্যন্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাসাবাড়ি, মঠ-মন্দিরের নিরাপত্তা জোরদার; ভোটে সেনা মোতায়েন; সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রচার ও সমাবেশ না করা; ভোটে ধর্মের ব্যবহার না করা; হামলা হলে সেই আসনের ভোট স্থগিত ও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া; সংখ্যালঘু ও নারী ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল করা এবং ভোটকেন্দ্রে যাওয়া ও আসার নির্বিঘ্ন ব্যবস্থা করা।
৩৯ দিন আগে
‘আমজনতার দল’ নিবন্ধনে তারেকের অনশনে বিএনপির সংহতি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) পক্ষ থেকে অনশনরত তারেক রহমানের প্রতি পূর্ণ সংহতি জ্ঞাপন করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তারেক রহমান যে রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, সেই রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন অবশ্যই তার প্রাপ্য।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সামনে অনশনরত তারেক রহমানের প্রতি সংহতি জানাতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘তারেকের রাজনৈতিক দল “আমজনতার দল”, তাদের নিবন্ধনের জন্য কমিশনে ইতোমধ্যে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনটা গ্রাহ্য করা হয়নি। আমি দেখেছি, আরও গুরুত্বহীন কিছু সংগঠন আমার কাছে মনে হয়েছে, তারাও নিবন্ধিত হয়েছে। কিন্তু তারেকেরটা দেওয়া হলো না কেন—আমি এটা বুঝতে পারলাম না। তারেক এই দেশের স্বার্থে কথা বলেছে। আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কথা বলেছে।’
তিনি বলেন, ‘সে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে এবং তার বৈধতার জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে। সে কোনো গোপন রাজনৈতিক দল করতে চায়নি। সে আইনসম্মত রাজনৈতিক দল করতে চেয়েছে। যদি তার উদ্দেশ্য খারাপ থাকতো তাহলে গোপন রাজনৈতিক দল করে রাষ্ট্রবিরোধী অনেক কার্যকলাপ করতো। কিন্তু রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপতো করেইনি বরং রাষ্ট্রের স্বার্থে দেশের স্বার্থে স্বাধীনতার স্বার্থে গণতন্ত্রের স্বার্থে সে কথা বলেছে। কিন্তু তার নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না...তাহলে আপনারা (ইসি) কাদের নিবন্ধন… আমি জানি না।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘কাউকে আমি ছোট করতে চাই না। কিন্তু তার যে চিন্তা এবং রাজনৈতিক যে সংগ্রাম এবং কর্মসূচি সেই অনুযায়ী সে রাজনৈতিক দল গঠন করেছে। সেই দলের নিবন্ধন অবশ্যই তার প্রাপ্য। ন্যায়সঙ্গত কারণে যে অনশন করছে... তার ৫০ ঘণ্টার অনশন, এই অনশন কর্মসূচির প্রতি আমি বিএনপির পক্ষ থেকে পূর্ণ সংহতি জ্ঞাপন করছি।’
২০১৮ সালে নুরুল হক নূর নেতৃত্বাধীন কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিতে তারেকের উত্থান ঘটে। পরে তিনি নূর গণঅধিকার পরিষদে যোগ দেন। দলটি ভেঙে দুই ভাগ হলে তারেক যান ড. রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বাধীন অংশে।
পরবর্তীতে দুই অংশ আবারও একীভূত হয়, তবে সেই সময় তারেক নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।
এদিকে, গত ৪ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কবাসী) ও ডেসটিনির রফিকুল আমীনের আম জনগণ পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। অধিকতর তদন্তে বাদ পড়ে ১১টি দল। এরপর থেকেই ইসির ভবনের সামনে অনশন করছেন তারেক।
নিবন্ধন না দেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বলছে, ইসির শর্ত অনুযায়ী দু’টি জেলা ও ৬৭টি উপজেলায় কার্যক্রম ও সক্রিয়তা না পাওয়ায় আমজনতা দলকে নিবন্ধন দেওয়া যায়নি। তবে সব জায়গার কার্যক্রম সক্রিয় আছে জানিয়ে তারেক অভিযোগ করেছেন, ইসির তদন্ত কর্মকর্তারা সঠিক প্রতিবেদন দেননি।
সংস্থাটির নির্বাচন সহায়তা শাখার উপসচিব মো. রফিকুল ইসলাম এই কারণ উল্লেখ করে এরই মধ্যে দলটির সভাপতি কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামানকে চিঠি দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০ এপ্রিল আম জনতার দল আবেদন করলে দলের ব্যাংক হিসাব, তহবিলের উৎস, ৩৩ শতাংশ নারী অংশগ্রহণসহ প্রভৃতি তথ্য না থাকায় ১৫ জুলাই ঘাটতি পূরণের জন্য বলা হয়। দলটি সে অনুযায়ী সাড়া দেয়। তদন্তের পর অধিকতর যাচাই হয়। সে সময় নিবন্ধনের শর্ত মোতাবেক ২২টি জেলার মধ্যে দুটি জেলা কার্যালয় এবং ১০০টি উপজেলা কার্যালয়ের মধ্যে ৬৭টি কার্যালয় ও ২০০ ভোটার সমর্থক পাওয়া যায়নি।
এই অবস্থায় ‘রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা, ২০০৮’-এর বিধি ৭-এর উপবিধি (৬) অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন আম জনতার দল (এজেডি) নামীয় দলের আবেদন নামঞ্জুরপূর্বক নিষ্পত্তি করেছে।
৩৯ দিন আগে
গণভোটসহ ৫ দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে জামায়াতসহ ৮ দলের স্মারকলিপি
পাঁচ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ ৮টি রাজনৈতিক দল।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে একটি প্রতিনিধি দল এই স্মারকলিপি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যায়। এর আগে গণমাধ্যমকে ওই দাবিগুলোর বিষয়ে জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: জুলাই সনদ বাস্তবানের আদেশ জারি এবং ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের তারিখ ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে।
এ ছাড়া, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, বিগত সরকারের সব নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিও রয়েছে।
আট দলের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে দলগুলো আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে এসে সমবেত হয়।
পরে পাঁচ দফা দাবিতে স্মারকলিপিদিতে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পল্টন থেকে মিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে পদযাত্রা শুরু করে জামায়াতসহ আটটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
এরপর সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি পল্টন থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে মৎস ভবন এলাকায় এলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাতে বাধা দেয়।
এরপর ৮ দলের ৯ জন নেতা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে যান।
গণভোটসহ ৫ দাবিতে যমুনা অভিমুখে জামায়াতসহ ৮ দল
তারা হলেন: জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল বারী মাসউদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক মূসা, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম।
স্মারকলিপি দেওয়ার পর গণমাধ্যমে কথা বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
পরওয়ার বলেন, ১১ই নভেম্বর ঢাকায় সমাবেশ করবে জামায়াতসহ আটটি রাজনৈতিক দল। তার আগেই সরকারকে দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান পরওয়ার।
নির্বাচনে কোনো জোট গঠন করবে না জামায়াত: শফিকুর রহমান
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ১১ই নভেম্বরের আগে দাবি না মানলে ওই দিন ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে বলে সরকারকে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে জুলাই সনদের প্রতি এই গণআকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন। তা না হলে ১১ তারিখে রাজধানী ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে।’
এর আগে, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ মিছিলের আগে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, সোজা আঙুলে যদি ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করব।’
তিনি বলেন, সরকার ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছে। ফেব্রুয়ারি কাছাকাছি চলে এসেছে, কিন্তু গণভোটের তারিখ ঘোষণা হচ্ছে না। নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেও গণভোট করতে আইনি বাধা নেই। এ বিষয়ে সময়ক্ষেপণ অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলবে।
৩৯ দিন আগে
গণভোটসহ ৫ দাবিতে যমুনা অভিমুখে জামায়াতসহ ৮ দল
জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারিসহ পাঁচ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি ইসলামি দল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে পদযাত্রা নিয়ে যমুনা অভিমুখে অগ্রসর হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড় থেকে এ পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রায় দলগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ সবস্তরের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। এ সময় পল্টন এলাকায় অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
দলগুলোর পাঁচ দফা দাবি হলো—জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম–নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
ইসলামি আটটি দলের মধ্যে রয়েছে—জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
৩৯ দিন আগে
চট্টগ্রামে গণসংযোগ চলাকালে বিএনপির প্রার্থী গুলিবিদ্ধ, নিহত ১
চট্টগ্রামে বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হয়েছেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ ২ জন। এ ছাড়া সরোয়ার বাবলা নামের এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর বায়োজিদ থানার পূর্ব বায়েজিদের হামজারবাগ (চালিতাতী) এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে সন্ত্রাসীরা।
গুলিবিদ্ধ এরশাদ উল্লাহ চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী) আসনের জন্য তাকে মনোনীত করেছে বিএনপি।
আহত অপর ব্যক্তি নাম শান্ত। তিনি যুবদল নেতা বলে জানা গেছে। ঘটনার পর তাদের নগরীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি বলছে, নিহত সরোয়ার তাদের দলের কেউ নন। জনসংযোগে শত শত লোক অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ একজন হতে পারেন তিনি।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তার প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী সরোয়ার হোসেনকে গুলি করা হয়েছে।
বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান বলেন, কে বা কারা হামলা চালিয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। গোলাগুলির ঘটনায় সেখানে ভয় ও উত্তেজনা ছড়ায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
৪০ দিন আগে
শেখ হাসিনা ঢাকার বড় কসাই, তার কর্মকাণ্ড নজরদারিতে রেখেছে সরকার: প্রেস সচিব
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কোথাও ঝটিকা মিছিল বা সভা-সমাবেশ করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে বলে সতর্ক করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রেস সচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনা ঢাকার কসাই; আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ। যারা ঝটিকা মিছিল বা সভা-সমাবেশ করতে চাইবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে। যারা মিছিল করবেন বা মিটিং করবেন, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল সদস্যকে সে নির্দেশনাই দেওয়া হয়েছে।’
ভারত থেকে হাসিনার দেওয়া বক্তব্য এবং আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বরের ‘ঢাকা অবরোধ’ কর্মসূচি সম্পর্কে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘শেখ হাসিনা পাশের দেশে বসে কী করছেন, তা পর্যবেক্ষণ করছে সরকার। শত শত মানুষকে হত্যা করায় শেখ হাসিনাকে “বুচার অব বেঙ্গল” বলে অভিহিত করা হয়েছে। নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ—আইসিটিসহ সব জায়গায় নিষিদ্ধ। হাসিনার উসকানিতে যারা মিছিল-মিটিংয়ের মতো কার্যক্রমে অংশ নেবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’
প্রেস সেক্রেটারি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাসিনাকে নানা বিষয়ে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে, এমনকি তিনি জুলাই বিদ্রোহে যোগ দেওয়া মানুষদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের কথাও উল্লেখ করেন প্রেস সচিব।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আগামী ১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনা ও তার দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করবে।
এ বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, রায়টি (হাসিনার বিরুদ্ধে) ঘোষিত হোক। তারপর আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়টি ভারতের সঙ্গে উত্থাপন করবে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি দাবি করেন, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে হাসিনার অপরাধের সুস্পষ্ট নথি রয়েছে এবং সাংবাদিকদের তা পড়ার অনুরোধ জানান।
গত ৬ অক্টোবর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশরি বলেন, এটি একটি ‘বিচারিক আইনি প্রক্রিয়া’ এবং এ বিষয়ে দুই দেশের সরকারের মধ্যে ‘আলোচনা ও পরামর্শ’ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করছি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে আমরা আগ্রহী।’
এ বিষয়ে এর বেশি কিছু বলা এই মুহূর্তে ‘সংগত নয়’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এক সাংবাদিক জানতে চান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও জাতিসংঘের উদ্দেশে বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করে যে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে, সরকার এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে।
জবাবে প্রেস সেক্রেটারি আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে আপনি ইউএনডিপিকে প্রশ্ন করবেন। আপনি ইউএনডিপিকে জিজ্ঞেস করবেন।’
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, সিনিয়র সহকারী প্রেস সেক্রেটারি ফয়েজ আহম্মদ এবং সহকারী প্রেস সেক্রেটারি সুচিস্মিতা তিথি উপস্থিত ছিলেন।
৪০ দিন আগে
এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে এনসিপি: নাহিদ ইসলাম
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এককভাবে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এছাড়া, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া যেসব আসন থেকে লড়বেন, সেখানে এনসিপি কোনো প্রার্থী নাও দিতে পারে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (৫ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে মৃত্যুবরণকারী শহীদ গাজী সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব কথা বলেন তিনি।
৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্য উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা খুব স্পষ্টভাবেই এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে আমাদের সংস্কার ও জুলাই সনদের দাবির সঙ্গে কোনো দল সংহতি প্রকাশ করলে জোটের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। ১৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তিনটি আসন থেকে লড়বেন। এসব আসনে এনসিপি কোনো প্রার্থী নাও দিতে পারে। বিএনপির চেয়ারপারসনসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের সম্মানে আমরা প্রার্থী নাও দিতে পারি।”
এর আগে, মঙ্গলবার এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিপক্ষে এনসিপি কোনো প্রার্থী দেবে না।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা এবার বাংলাদেশের নির্বাচনের সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে চাই। আমরা দেখি, যাদের টাকা আছে, যারা এলাকার গডফাদারগিরি করেন, তারাই নির্বাচন করেন।”
তিনি আরও বলেন, “একজন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে এলাকার শিক্ষক রয়েছেন, ইমাম রয়েছেন, গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে—তাদের আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে দেখতে চাই।”
এ সময় শাপলা কলির বিজয়ের জন্য তিনি জনসাধারণের সহযোগিতা কামনা করেন।
৪০ দিন আগে