বিশ্ব
সৌদি আরবে ৬ জুন ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে
সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল আজহা ৬ জুন উদযাপিত হবে। মঙ্গলবার (২৭ মে) রাতে সৌদি আরবে যিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখা গেছে।
গালফ নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশটিতে অর্ধচন্দ্র দেখা যাওয়ায় সৌদি আরব ঘোষণা করেছে, যে ২৮ মে বুধবার যিলহজ্জ মাসের প্রথম দিন হবে।
সেই অনুসারে ২০২৫ সালের ঈদুল আজহা সৌদিতে ৬ জুন (শুক্রবার) উদযাপিত হবে।
যিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা উদযাপন করা হয়।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহার তারিখ নিয়ে যা জানা গেল
২০২ দিন আগে
স্ত্রীর ‘চড় থাপ্পড়’ খেলেন, না মজা করলেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ!
বিদেশের মাটিতে ফরাসি ফার্স্ট লেডি ব্রিজিটের আক্রমণের শিকার হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এমন একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরে সোমবার অবশ্য ঘটনাটির ব্যাখ্যা দিয়েছেন ম্যাক্রোঁ। বলেছেন, তারা মজা করছিলেন।
চলতি সপ্তাহে তারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সফর শুরু করে ভিয়েতনামে বিমান থেকে নামার সময় ঘটনাটি ঘটে। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্ত্রী ব্রিজিট দুই হাত দিয়ে ম্যাক্রোঁর মুখ ধরে ধাক্কা দিচ্ছেন, ম্যাক্রোঁ মুখ সরিয়ে নিচ্ছেন। আর মুহূর্তেই ফ্রান্সের খবরের শিরোনাম হয়ে যায় এটি। বিমানের খোলা দরজায় ধারণা করা ওই ভিডিওতে গণমাধ্যম প্রযু্ক্তি ব্যবহার করে বোঝার চেষ্টা করছিল যে, তারা আসলে কথোপকথন করছিলেন।
ঘটনাটি নিয়ে দৈনিক লে প্যারিসিয়েন সংবাদপত্রের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি খবরের শিরোনাম ছিল ‘থাপ্পড় না ঝগড়া’? ভিয়েতনামে ম্যাক্রোঁ ও তার স্ত্রী ব্রিজিটের বিমান থেকে নামার ওই ঘটনার ছবিটি ব্যাপক মন্তব্য কুড়ায়।
ম্যাক্রোঁ পরে সাংবাদিকদের বলেন, তারা ২০০৭ সালে বিয়ে করেছেন। যে স্কুলে তারা পরিচিত হয়েছিলেন তারা সেখানে শিক্ষিকা ও ছাত্র ছিলেন। তারা কেবল মজার ছলে ঠাট্টা-মশকরা করছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঝগড়া করিনি, মজা করেছি।’ ঘটনাটিকে এক ধরনের অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় মেয়াদে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ম্যাক্রোঁ
২০৩ দিন আগে
পুতিন ‘পুরোপুরি পাগল’ হয়ে গেছে: ডোনাল্ড ট্রাম্প
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ অন্যান্য শহরগুলোতে টানা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর চটেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি পুতিন ‘পুরোপুরি পাগল’ হয়ে গেছেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
রবিবার(২৫ মে) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আমার বরাবর ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তার কিছু একটা হয়েছে, সে পুরোপুরি পাগল হয়ে গেছে!’ট্রাম্প বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই ইউক্রেনের শহরগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করা হচ্ছে। যা অপ্রয়োজনীয়ভাবে অনেক মানুষ হত্যা করছে।’
মস্কোর এই হামলার কারণে তিনি পুতিনের ওপর থেকে ধৈর্য হারাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেছেন।
এর আগে, রবিবার রাতে ইউক্রেনের শহরগুলো টানা তৃতীয় রাতের মতো হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই দিনটি কিয়েভের মানুষের কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ ২৫ মে দিনটি হলো কিয়েভ শহরের প্রতিষ্ঠাবাষির্কী। এ দিনেই ভয়াবহ হামলার শিকার হয়েছে শহরটি।
আরও পড়ুন: হার্ভাডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত
রবিবারের হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত এবং ডজনখানেক মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা।
দেশটির সরকারি তথ্যমতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণাঙ্গ আক্রমণ শুরুর পর থেকে এটিই ছিল আকাশপথে সবচেয়ে বড় হামলা।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো জানিয়েছেন, রাজধানীতে শত্রুপক্ষের ড্রোনের বিরুদ্ধে আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী কাজ করছে।
খারকিভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান ওলেহ সিনিয়েহুবভ জানিয়েছেন, খারকিভ শহর ও আশপাশের এলাকাগুলোতেও ড্রোনের হামলা হয়েছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইহনাতের ভাষ্যে, এই আক্রমণের মাত্রা ছিল বিস্ময়কর। ৩৬৭টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই হামলাকে যুদ্ধ শুরুর পরর থেকে সবচেয়ে বড় একক আকাশ হামলা বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে ইউরি জানান,হামলায় মোট ৬৯ ধরনের বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র ও ২৯৮টি ড্রোন ব্যবহার করেছে মস্কো, যার মধ্যে ইরানের ডিজাইন করা শাহেদ ড্রোনও রয়েছে।
তবে এই হামলা নিয়ে মস্কোর তরফ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর: আলোচনায় কূটনীতি, উপেক্ষিত মানবাধিকার
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, ৩০টির বেশি শহর ও গ্রামকে আঘাত করেছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন।
এ হামলার পর রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জোরদার করতে পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানান।
একদিকে হামলা, অন্যদিকে বন্দি বিনিময়
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা চালানোর পরপরই রবিবার দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময়ও করা হয়েছে। এ নিয়ে তৃতীয় দফায় বড় পরিসরে বন্দি বিনিময় করল মস্কো-কিয়েভ।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তথ্যমতে, উভয় পক্ষ ৩০৩ জন সৈন্য বিনিময় করেছে। এর আগে, শনিবার (২৪ মে) ৩০৭ জন করে সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিকের বিনিময় এবং শুক্রবার (২৩ মে) ৩৯০ জনের বিনিময় হয়।
জেলেনস্কিও রবিবারের বন্দি বিনিময়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটারে) দেওয়া এক পোস্টে বলেন, ‘৩০৩ জন ইউক্রেনীয় যোদ্ধা ঘরে ফিরেছেন।’তারা ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী, ন্যাশনাল গার্ড, সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও স্টেট স্পেশাল ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের সদস্য বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
২০৩ দিন আগে
হার্ভাডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে আদালত এই স্থগিতাদেশ দেন।
সম্প্রতি বোস্টনের ফেডারেল আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মার্কিন বিচারক অ্যালিসন ব্যুরোজ রায়ে মামলার শুনানি মুলতবি রেখে হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাটি স্থগিত করেছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তটি প্রতিশোধমূলক। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী লঙ্ঘন করে।নিষেধাজ্ঞার ফলে হার্ভার্ড ও এতে অধ্যয়নরত সাত হাজারেরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর শিক্ষা, গবেষণা ও বসবাস অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়।
মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেন, হার্ভার্ডের মোট শিক্ষার্থীর এক-চতুর্থাংশই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর লক্ষ্য অর্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন। অথচ সরকার কলমের খোঁচায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও তাদের অবদানগুলো মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে। অথচ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ছাড়া, হার্ভার্ড আর হার্ভার্ড থাকে না।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে বেআইনি হিসেবে অভিহিত করে হাভার্ড কর্তৃপক্ষ। তারা প্রশাসনের সিদ্ধান্তটিকে পক্ষপাতদুষ্ট ও অস্পষ্ট বলে দাবি করেন।
আরও পড়ুন: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ বাতিল
চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যায়ের বিরোধ শুরু হয়। গত বসন্তে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরেুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য চান দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়কমন্ত্রী ক্রিস্টি নোম।
তিনি শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত তথ্য দেয়ে হার্ভার্ডকে চিঠি দেন। কিন্তু তার অনুরোধ রাখতে ব্যর্থ হয় বিশ্বের অন্যতম সেরা এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এখান থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে হার্ভার্ডের দ্বন্দ্বের শুরু হয়।
২০৪ দিন আগে
গাজায় চিকিৎসক দম্পতির ১০ সন্তানের ৯ জনই নিহত
ফিলিস্তিনের গাজার খান ইউনিস শহরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এক চিকিৎসক দম্পতির ১০ সন্তানের মধ্যে ৯ জন নিহত হয়েছেন।
মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর বলছে, ইসরায়েলি হামলায় বাড়িতে আগুন লেগে যাওয়ার খবরে দৌড়ে বাড়িতে যান আলা নাজ্জার। গিয়ে দেখেন তার পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। এ চিকিৎসকের স্বামী হামদি আল-নাজ্জার ও ১১ বছর বয়সী একমাত্র জীবিত সন্তান গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহত ৯টি শিশুর বয়স ৭ মাস থেকে ১২ বছরের মধ্যে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খালিল আল-দোকরান জানান, ‘ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা দুটি শিশুর মরদেহ উদ্ধারে তৎপরতা চলছে।’
আরও পড়ুন: দক্ষিণ সুদানে এশীয় অভিবাসীদের নির্বাসন-চেষ্টার অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে
তবে গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘৯টি শহীদ শিশুর মরদেহ তারা উদ্ধার করেছেন। তাদের কারও কারও শরীর পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে।’
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বাউরস বলেন, ‘হামদি আল-নাজ্জার তার স্ত্রীকে কর্মস্থলে পৌঁছে দিয়ে বাড়িতে ফেরার কয়েক মিনিট পরেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রয়েছেন।’
ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, ‘এই দম্পতির এগারো বছর বয়সী একটি ছেলেই কেবল জীবিত আছে। তার অবস্থাও গুরুতর।’
এদিকে সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড করছেন এমন ব্যক্তিদের হামলা করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে দাবি করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এতে খান ইউনিস এলাকাকে ‘বিপজ্জনক যুদ্ধক্ষেত্র’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে আইডিএফ বলছে, ‘ওই এলাকা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং নিরপেক্ষ বেসামরিক ব্যক্তিদের ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
শনিবার আরেক বিবৃতিতে একদিনেই শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: টানা তিনমাস পর গাজায় প্রবেশ করল মানবিক সহায়তা
এদিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে আরও ৭৯ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর থেকে ১৯ মাসে ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এছাড়া চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে হামলা চালাচ্ছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৪৭ জন গাজাবাসী নিহত হয়েছেন।
২০৪ দিন আগে
দক্ষিণ সুদানে এশীয় অভিবাসীদের নির্বাসন-চেষ্টার অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে
দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই আফ্রিকার দেশ দক্ষিণ সুদানে দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীদের নির্বাসনের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। এই ধরনের বিতর্কিত প্রচেষ্টা দক্ষিণ সুদানের রাজনৈতিক সংকট আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
গত ২১ মে যুক্তরাষ্ট্রের এক ফেডারেল বিচারক জানান, দক্ষিণ সুদানে অভিবাসী পাঠানো আদালতের পূর্ববর্তী আদেশ লঙ্ঘন করেছে। ওই আদেশে বলা হয়েছিল, কোনো ব্যক্তিকে তৃতীয় দেশে নির্বাসন দেওয়ার আগে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবর, মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি আটজন অভিবাসীকে দক্ষিণ সুদানে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। তাদের মধ্যে দক্ষিণ সুদান ছাড়াও কিউবা, লাওস, মেক্সিকো, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামের নাগরিক ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হত্যাকাণ্ড, ডাকাতি ও অন্যান্য গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত।
তবে দক্ষিণ সুদানের পুলিশ মুখপাত্র মেজর জেনারেল জেমস এনোকা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কোনো অভিবাসী দেশটিতে পৌঁছায়নি। তিনি বলেন, ‘যদি কেউ এসে থাকে, তাহলে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে। তারা দক্ষিণ সুদানের নাগরিক না হলে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন: মার্কিন বিমান হামলায় ইয়েমেনে কারাগারে ৬৮ অভিবাসী নিহত
২০১১ সালে স্বাধীনতা অর্জনকারী বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ দেশ দক্ষিণ সুদান। স্বাধীনতার পর থেকেই দেশটি রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক দুর্নীতি ও দারিদ্র্যের কবলে পড়ে। প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই চরম দারিদ্র্যসীমার মধ্যে বসবাস করে।
দরিদ্র হলেও দক্ষিণ সুদানে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ (তেল) রয়েছে। দেশটির অর্থনীতি তেল রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল হলেও অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে এই খাত থেকে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি অর্জিত হয়নি। বিদ্যুৎ, পাকা রাস্তা ও অন্যান্য অবকাঠামোর অভাব এখনো দেশের বেশিরভাগ এলাকায় প্রকট।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের দিক থেকেও দক্ষিণ সুদান অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ। গত বছর দেশটিতে ভয়াবহ বন্যায় ৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।
এমন এক প্রেক্ষাপটে চলতি বছরের মার্চে দেশটির সরকার বিরোধীদলীয় নেতা ও প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট রিয়েক মাশারকে গৃহবন্দী করে। তার বিরুদ্ধে সমর্থকদের উসকানি দিয়ে বিদ্রোহের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ আনা হয়।
মার্চের শুরুর দিকে মাশার-সমর্থিত ‘হোয়াইট আর্মি’ কমিউনিটি মিলিশিয়া নাসির কাউন্টিতে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে একটি ঘাঁটি দখল করে নেয়। মিলিশিয়ার দাবি, এটি ছিল আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ। তবে পাল্টা অভিযানে সরকার বোমা হামলা চালায় ও বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: শতাধিক অবৈধ অভিবাসীকে ভারতে পৌঁছে দিল মার্কিন উড়োজাহাজ
রিয়েক মাশারের দল এসপিএলএম-আইও দাবি করেছে, মাশারকে গৃহবন্দি করার মধ্য দিয়ে ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সংঘটিত গৃহযুদ্ধ অবসানে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তি কার্যত ভেঙে গেছে। ওই গৃহযুদ্ধে মাশার-সমর্থিত নুয়্যার যোদ্ধা ও প্রেসিডেন্ট সালভা কিরের ডিনকা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ৪ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়।
চলতি বছর নতুন করে তৈরি হওয়া উত্তেজনায় শান্তিচুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘ ইতোমধ্যে দক্ষিণ সুদানে সহিংসতা বাড়ার আশঙ্কায় সতর্কতা দিয়েছে।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট কির গত মঙ্গলবার (২০ মে) তার দ্বিতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন বোল মেলকে এসপিএলএমের উপ-সভাপতি পদে উন্নীত করেন। তাকে কিরের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছে। কির পদত্যাগ করলে তিনি অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারেন।
এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীদের, এমনকি কঙ্গোর এক নাগরিককে দক্ষিণ সুদানের নাগরিক বলে দেশটিতে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাগুলো নিয়ে দক্ষিণ সুদান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনার চলছে।
আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞার মুখে অভিবাসীবাহী মার্কিন ফ্লাইট অবতরণে অনুমতি দিল কলোম্বিয়া
২০৫ দিন আগে
ক্ষুধার রাজ্যে পরিণত হয়েছে গাজা, উপচে পড়ছে হাসপাতাল
দুই বছর বয়সী মেয়ার, হাসপাতালে একটি বেডে শুয়ে আছে। তার পাঁজরের হাড় বেরিয়ে এসেছে, পেট ফোলা। মেয়ের দুর্বল হাত ধরে শার্ট পরিয়ে দিচ্ছিলেন মা আসমা আল-আর্জা। বেডে শুয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে হঠাৎ চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে।
এই প্রথম নয়, আগেও অপুষ্টির কারণে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে গাজা উপত্যকার এই নিষ্পাপ শিশুটিকে। তবে এবারই টানা ১৭ দিন ধরে বাচ্চাটি হাসপাতালে রয়েছে বলে জানান তার মা।
মেয়ারের সিলিয়াক ডিজিজ নামের একটি বিশেষ রোগ রয়েছে। এ কারণে গ্লুটেনজাত খাবার খেতে পারে না সে, তার জন্য বিশেষ খাবারের দরকার হয়। কিন্তু ১৯ মাসের যুদ্ধ আর ইসরায়েলের কঠোর অবরোধের কারণে গাজায় এই খাবার এখন আর নেই। সাধারণ খাবারও সে হজম করতে পারে না।
মেয়ারের মা বলেন, ‘ডায়াপারের পাশাপাশি ওর সয়ামিল্ক আর বিশেষ খাবারের দরকার। কিন্তু সীমান্ত বন্ধ থাকায় এগুলো পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া গেলেও অনেক দাম, আমি কিনতে পারি না।’
জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর গাজায় ৯ হাজারের বেশি শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। আগামী বছর এই সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইসরায়েল যদি সামরিক অভিযান বন্ধ না করে এবং গাজায় ত্রাণ প্রবেশের ওপর আরোপিত অবরোধ পুরোপুরি না তুলে নেয়, তাহলে গাজায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক বারবার করছেন বিশেষজ্ঞরা। এরই মধ্যে গাজায় অনেক মানুষ খাবার পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের ফিলিস্তিনি অঞ্চলের প্রতিনিধি নেস্টর ওয়োমুহাঙ্গি বলেন, ‘গাজার যেদিকে তাকাবেন, ক্ষুধার্ত মানুষ চোখে পড়বে। সবাই ইশারায় দেখান যে তারা খেতে চান। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় এখন সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি চলছে।’
টানা অবরোধে টান পড়েছে ত্রাণে
সবশেষ গত ২ মার্চ গাজায় সব ধরনের খাদ্য, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় ইসরায়েল। প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনির বসবাস এই অঞ্চলে। একের পর এক বিমান হামলা ও স্থল অভিযানের সঙ্গে চলছে এই অবরোধ।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে গাজার মানুষ বাইরের সহায়তার ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। কারণ ইসরায়েলের হামলায় স্থানীয়ভাবে খাবার উৎপাদনের প্রায় সব ব্যবস্থাই ধ্বংস হয়ে গেছে।
অবরোধের পর গাজার খাদ্যসংকট নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে প্রথমদিকে ইসরায়েল দাবি করেছিল, গাজায় পর্যাপ্ত খাবার আছে। তবে শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এরপর চলতি সপ্তাহে গাজায় সীমিত পরিসরে শিশুখাদ্যসহ মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেয় ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: টানা তিনমাস পর গাজায় প্রবেশ করল মানবিক সহায়তা
জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েল যেটুকু সহায়তা প্রবেশ করতে দিয়েছে তা একেবারেই অপ্রতুল। অবরোধের আগে প্রতিদিন প্রায় ৬০০টি ত্রাণের ট্রাক গাজায় প্রবেশ করত। বর্তমানে যা প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে, তা আগের সংখ্যার ধারেকাছেও নয়।
২০৬ দিন আগে
স্কুলবাসে বোমা হামলায় নিহত বেড়ে ৮, ভারতকে দায়ী করল ইসলামাবাদ
পাকিস্তানে একটি স্কুলবাসে বোমা হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে আটজনে দাঁড়িয়েছে। হামলায় গুরুতর তিন শিশু আজ শুক্রবার মারা যাওয়ার পর হতাহতের এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে। গত বুধবার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেলুচিস্তান প্রদেশের খুজদার শহরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, এই হামলায় বিদ্রোহীদের মদদ দিয়েছে ভারত।
নিহতদের মধ্যে দুই সেনাও রয়েছেন। সেনাসদস্যরা হামলার সময় বাসে ছিলেন। পাকিস্তানের এই প্রদেশটিতে কয়েক দশক ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদীর বিদ্রোহ করে আসছে।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, হামলায় ৩৯ শিশুসহ মোট ৫৩ জন আহত হয়েছেন। শিশুরা তাদের আর্মি পাবলিক স্কুলে যাওয়ার সময় বোমা হামলার শিকার হন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে হামলায় শতাধিক ‘সন্ত্রাসবাদী’ নিহতের দাবি ভারতের
পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ বলেছেন, আহত শিশুদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে ভারতের নির্দেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত বালুচ লিবারেশন আর্মির বিদ্রোহীরা বোমা হামলা চালিয়েছে। ভারতের পরামর্শে সংগঠনটিকে ২০১৯ সালে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র।
শরিফ বলেন, পাকিস্তানের কাছে প্রমাণ আছে যে, ‘পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী হামলা’ পরিচালনা করছে ভারত। এসব বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর দেওয়া উচিত বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে ভারত এই অভিযোগের কোনো জবাব দেয়নি এবং পাকিস্তানও নিজের দাবির সমর্থনে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।
কোনো গোষ্ঠী এখন পর্যন্ত ওই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
চলতি মাসের শুরুতে দুই পক্ষের মধ্যে চার দিনের সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা এখনও চরমে। এমনকি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার আগেও উভয় পক্ষই সীমান্তে গুলি চালিয়েছে।
২০৬ দিন আগে
বানরেরাও অপহরণ করে! বিজ্ঞানীদের অদ্ভুত আবিষ্কার
উত্তর আমেরিকার দেশ পানামার ছোট্ট একটি দ্বীপে প্রাণীজগতের অদ্ভূত এক আচরণের সন্ধান পেয়েছেন একদল গবেষক। সেখানে ক্যাপুচিন প্রজাতির বানররা হাওলার প্রজাতির বানরের বাচ্চা অপহরণ করছে। দ্বীপটিতে এমন ঘটনা অহরহ ঘটতে দেখা গেছে।
স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এমন আচরণে হতবাক হয়ে গবেষক দলটি এ নিয়ে খতিয়ে দেখতে শুরু করেন। সোমবার (১৯ মে) কারেন্ট বায়োলজি নামের এক সাময়িকীতে এ-সংক্রান্ত গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দ্বীপের বিভিন্ন অংশে ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। সেসব ক্যামেরায় অন্তত ১১টি হাওলার বানরের বাচ্চা ক্যাপুচিন বানরদের হাতে অপহৃত হওয়ার ঘটনা ধরা পড়েছে।
জার্মানির দ্য ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউট অব অ্যানিমেল বিহেভিয়ারের গবেষক জো গোল্ডসবরো বলেছেন, ‘এটি খুবই চমকপ্রদ আবিষ্কার। প্রাণীজগতে আমরা এ রকম কিছু আগে দেখিনি।’
ক্যাপুচিন প্রজাতির বানরের আকার পোষা বিড়ালের মতো, এরা দীর্ঘজীবী ও চালাক। এ প্রজাতির বানরেরা একে অপরের কাছ থেকে নতুন নতুন আচরণ শেখে। এমনকি, পানামায় ক্যাপুচিন বানরদের একটি দল শক্ত আবরণযুক্ত খাবার, যেমন: বাদাম ও সামুদ্রিক খাবার ভাঙার জন্য পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করতে শিখে গেছে বলে জানান গবেষকরা।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কাজুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, বানরকে দায়ী করলেন মন্ত্রী
ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউট ও স্মিথসোনিয়ান ট্রপিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকরা ক্যাপুচিন বানরের হাতিয়ার ব্যবহার প্রত্যক্ষ করতে ৮০টিরও বেশি ক্যামেরা স্থাপন করেছিলেন। তবে, ২০২২ সালের প্রথম দিকে প্রথমবারের মতো ক্যাপুচিন বানরের সঙ্গে হাউলার বানরের বাচ্চাকে দেখে তারা অবাক হয়ে যান।
ভিডিও ফুটেজে গবেষকরা দেখেছেন, ক্যাপুচিন বানরেরা তাদের পিঠে বাচ্চা ও হাতে পাথরের হাতিয়ার নিয়ে হাঁটছে। এ সময় তারা চেঁচামেচি ও একটু পরপরই হাতে থাকা পাথরে আঘাত করে শব্দ করছিল। তবে সেসব ফুটেজে অপহরণের মুহূর্তগুলো ধারণ করা সম্ভব হয়নি।
হাওলার বানরেরা দিনের বেশিরভাগ সময়ই গাছে কাটায়। সেখানেই অপহরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। ম্যাক্স প্ল্যাংক ও স্মিথসোনিয়ানের সহ-লেখক মার্গারেট ক্রোফুট বলেছেন, ‘এই বিষয়ে আমাদের ধারণা খুবই সীমিত।’
গবেষকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাচ্চা হাওলার বানরগুলো মারা গেছে। সাধারণত, হাওলার বানরশিশুরা তাদের মায়েদের দুধ খায়। ভিডিওতে আসা সব বাচ্চা কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস বয়সী। দুধ ছাড়ানোর মতো বয়স এগুলোর হয়নি। সম্ভবত মায়ের দুধ না পাওয়ার কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গবেষক ক্রোফুট বলেন, ‘আমার আশাবাদী মন বলছে, কিছু বাচ্চা পালিয়ে তাদের মায়ের কাছে গেছে, যদিও এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
কেন ক্যাপুচিন বানরেরা এমন আচরণ করছে— এ প্রশ্নের জবাব খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন গবেষকরা। গবেষক দলটি প্রাথমিকভাবে ধারণা করেন, ক্যাপুচিন বানররা হয়তো শিকার করা কিংবা সহিংসতার প্রবণতা থেকে এমন আচরণ করছে।
তবে গবেষণায় দেখা গেছে, অপহরণের পর ক্যাপুচিন বানরের বাচ্চাগুলোর প্রতি কোনো ধরনের আক্রমণাত্মক আচরণে করেনি, উল্টো বাচ্চাগুলোকে আদর-যত্ন করছিল।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি একধরনের আচরণগত বিভ্রান্তি হতে পারে। এটির সূত্রপাত হয়তো কোনো এক ক্যাপুচিনের মাতৃত্বের ভুল প্রবৃত্তি কারণে। পরে এটি অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: কৃষকের ভাগ্য বদলে দিল বিএডিসির সেচ প্রকল্প
এটিকে বন্যপ্রাণীর বিরল সামাজিক ও আচরণগত ঘটনা বলে আখ্যায়িত করেছেন ফ্রান্সের সিএনআরএস ইনস্টিটিউট ফর কগনিটিভ সায়েন্সেসের গবেষক ক্যাথেরিন ক্রকফোর্ড।
ক্যাথেরিন একজন প্রাইমাটোলোজিস্ট। সাধারণত, যারা বানর ও মানুষসহ বুদ্ধিমান স্তন্যপায়ী প্রাণী বিশেষজ্ঞ তাদের প্রাইমাটোলোজিস্ট বলা হয়। তবে তিনি এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। ক্যাথেরিন বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা একই প্রজাতির মধ্যে ব্যাপক বৈচিত্র্যের ইঙ্গিত দেয়।’
২০৬ দিন আগে
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ বাতিল
তহবিল কাটছাঁটের পর এবার বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার সুযোগও হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২২ মে) দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ক্রিস্টি নোম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে আর বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করতে পারবে না দেশটির সবচেয়ে পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী এই বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি বর্তমানে যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি রয়েছেন, তাদের অবশ্যই স্থানান্তর করতে হবে, না হলে তারা দেশটিতে অবস্থানের আইনগত বৈধতা হারাবেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ ও ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও তীব্র হলো।
ক্রিস্টি নোম বলেন, “হাভার্ড এমন একটি ‘অসমর্থনযোগ্য ও সন্ত্রাসবাদী’ পরিবেশ তৈরি করেছে, যেখানে ইহুদি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হচ্ছে।”
এ ছাড়া, চীনের সমাজতান্ত্রিক দলের সঙ্গেও বিশ্ববিদ্যালয়টির যোগসূত্র রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। নোমের দাবি, ২০২৪ সাল পর্যন্ত চীনের আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও আতিথেয়তা দিয়েছে হাভার্ড।
আরও পড়ুন: জামিনে মুক্তি পেলেন টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী
এ বিষয়ে তিনি গত বছর ট্রাম্প-সমর্থিত ফক্স নিউজের একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে দাবি করা হয়, ২০২৪ সাল পর্যন্ত চীনের শিনজিয়াং প্রোডাকশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন করপোরেশনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে হাভার্ড। মার্কিন রিপাবলিকান দলের কংগ্রেস সদস্যরা একটি চিঠিতে এ বিষয়টির উল্লেখ করেছেন।
ক্রিস্টি বলেন, ‘আইন মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাই তারা আর বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না এবং বর্তমানে থাকা শিক্ষার্থীদের অন্যত্র স্থানান্তর হতে হবে। নইলে তাদের আইনগত বৈধতা হারাবে।’
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রায় ৭ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিলেন, যা ওই সময় ভর্তি হওয়া মোট শিক্ষার্থীর ২৭ দশমিক ২ শতাংশ।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে বেআইনি হিসেবে অভিহিত করেছে হাভার্ড কর্তৃপক্ষ। সরকারি এই সিদ্ধান্তের পর তারা শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দেওয়ারও চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাহমুদ খলিলকে বের করে দেওয়া যেতে পারে: বিচারক
এ বিষয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, সরকারের এই প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ হার্ভার্ডের সদস্য ও দেশের জন্য গুরুতর ক্ষতির হুমকি তৈরি করেছে। একই সঙ্গে হার্ভার্ডের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমেরও ক্ষতি করছে।
এর আগে, হাভার্ডসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘ইহুদি-বিদ্বেষের আখড়া’ বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তবে এ দাবিকে অস্বীকার করে হাভার্ড কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া গত বসন্তে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য না দিতে প্রকাশ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধিতা করায় দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়।
এর জেরেই জানুয়ারি মাসে হাভার্ডের ২৬৫ কোটি ডলারের তহবিল কমিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়টির করমুক্ত সুবিধাও বাতিল করার কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
এদিকে ক্রিস্টি নোম বলেন, ‘গত বসন্তে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সব শিক্ষার্থীদের ভিডিও বা অডিও রেকর্ডসহ সব ধরনের তথ্য যদি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে দেওয়া হয়, তাহলে তারা আবার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি নিতে পারবে।’
এ বিষয়ে হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার বলেন, ‘ইহুদি-বিদ্বেষ মোকাবিলায় গত দেড় বছরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং একটি বিস্তৃত কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে।’ তবে আইনসম্মত ও মৌলিক নীতিমালার প্রশ্নে তারা এক চুলও নড়বে না বলে সতর্ক করে দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসনের অভিযোগ, বিদেশি শিক্ষার্থীরা অন্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেশি সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা বা অনিয়মে জড়িত। কিন্তু এই অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারেননি।’
অন্যদিকে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে যোগসূত্র সম্পর্কে হার্ভার্ডের একজন মুখপাত্র জানান, এ বিষয়ে তারা কংগ্রেসের রিপাবলিকানদের ওই চিঠির জবাব দেবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে যখন ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ চলেছে, সে সময় ইহুদি শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও সহিংসতা থেকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে হাভার্ড কর্তৃপক্ষ। এর জেরেই বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে বেশিরভাগ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে নিজেদের ধারণার কথা জানিয়েছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আমেরিকান শিক্ষা কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট টেড মিশেল। দেশটির প্রশাসনের এ ধরনের পদক্ষেপকে ‘অবৈধ ও সংকীর্ণ মানসিকতা’ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের পদক্ষেপ বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করবে এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে আসার আগ্রহ হারাবেন।’
আরও পড়ুন: আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল
বিশেষজ্ঞদের দাবি, বিদেশি শিক্ষার্থীদের আইনি অবস্থান নিয়ে তাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থাকে একটি নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ বিষয়টি আগে কেবল প্রশাসনিক ডেটাবেস হিসেবেই ছিল। এখন তা হয়ে উঠেছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার অংশ। অভিবাসন কর্মকর্তারা এই ব্যবস্থার মাধ্যমে সরাসরি শিক্ষার্থীদের বৈধতা বাতিল করেছে।
পরবর্তীতে এই প্রচেষ্টা আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে এবং এতে অনেক শিক্ষার্থীর বৈধতা পুনর্স্থাপিত হয়েছে। এ ছাড়া প্রশাসন যেন আর এভাবে বৈধতা বাতিল করতে না পারে সেজন্য সারা দেশের জন্য একটি নিষেধাজ্ঞাও জারি করে আদালত।
২০৬ দিন আগে