বিশ্ব
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার (২১ মে) সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসির ইহুদি জাদুঘরের (ক্যাপিটাল জুইশ মিউজিয়াম) কাছে এ ঘটনা ঘটে।
সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান ক্রিস্টি নোম। তিনি জানান, এ হামলার ঘটনা ঘটেছে ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) ওয়াশিংটন কার্যালয়ের একেবারে কাছাকাছি এলাকায়।
ঘটনার পর দেশটির মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধান পামেলা স্মিথ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নিহতদের মধ্যে একজন নারী ও অন্যজন পুরুষ। তারা ক্যাপিটাল জুইশ মিউজিয়ামে একটি অনুষ্ঠান শেষে বের হচ্ছিলেন। সে সময় হামলাকারী চারজনের একটি দলের দিকে গুলি চালান।
তিনি আরও জানান, হামলাকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম ইলিয়াস রদ্রিগেস (৩০), তিনি শিকাগোতে বসবাস করেন। হামলার আগে তাকে জাদুঘরের বাইরে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা যায়। গুলির করার পর হামলাকারী জাদুঘরের ভেতরে প্রবেশ করলে নিরাপত্তা বাহিনী তাকে আটক করে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
সে সময় রদ্রিগেস ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন বলেও জানান পামেলা। পাশাপাশি ওই স্থানে বর্তমানে আর কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বলেও স্থানীয়দের আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
এ হামলার দুই প্রত্যক্ষদর্শী ইয়োনি কালিন ও কেটি কালিশার জানান, যখন গুলির শব্দ হয়, তখন তারা জাদুঘরের ভেতরে ছিলেন। এ সময় চোখেমুখে আতঙ্ক মাখা এক ব্যক্তি জাদুঘরের ভেতরে ঢোকেন।
কালিন বলেন, ‘উপস্থিতদের কয়েকজন তাকে (ইলিয়াস) সাহায্য করতে এগিয়ে যান এবং পানি পান করতেও দেন। আমরা ভেবেছিলাম যে তিনিও বোধহয় আততায়ীর গুলিতে ভয় পেয়েছেন; বুঝতেই পারিনি যে তিনিই হামলাকারী।
তিনি বলেন, “পুলিশ ভেতরে আসলে ওই ব্যক্তি একটি লাল কেফিয়াহ (বিশেষ ধরনের স্কার্ফ) বের করে বারবার ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো’ বলে চিৎকার করতে থাকেন।”
তিনি আরও বলেন, ‘গাজা ও ইসরায়েলের মানুষের পাশে কীভাবে দাঁড়াতে পারি, কীভাবে মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা একসঙ্গে কাজ করে নির্দোষ মানুষদের সাহায্য করতে পারে, তা নিয়েই (জাদুঘরে) অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অথচ এই অনুষ্ঠানেই সে ঠাণ্ডা মাথায় দুজনকে হত্যা করল!’
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি বলেন, তিনি ওয়াশিংটনের বর্তমান অ্যাটর্নি ও সাবেক বিচারক জেনিন পিরোর সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। ওয়াশিংটন ডিসির অ্যাটর্নি অফিস এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করবে বলে জানান তিনি।
ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক এক্সে পোস্টে বলেন, ‘এই বর্বর হত্যাকাণ্ড বন্ধ হতে হবে, এখনই তা করতে হবে! ঘৃণা ও উগ্রবাদ যুক্তরাষ্ট্রে ঠাঁই পাবে না।’ এ সময় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানান তিনি।
এদিকে, এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন। এক্স পোস্টে এই ঘটনাকে তিনি ‘একটি বর্বর ও ইহুদি-বিদ্বেষমূলক সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আামদের বিশ্বাস, এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে। বিশ্বের যেখানেই হোক, ইসরায়েল তার নাগরিক ও কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের সুরক্ষায় দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে থাকবে।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত
এ বিষয়ে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জগ বলেন, ‘ওয়াশিংটনে যা ঘটেছে তাতে আমি ভীষণভাবে ব্যথিত। এটি ইহুদিদের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষের জঘন্য বহির্প্রকাশ, যা আমাদের দুই তরুণ কর্মীর প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।’ এক্স পোস্টে নিহতদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি।
২০৭ দিন আগে
ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত
গাজায় চলমান সহিংসতা বন্ধে অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনে ইসরায়েলি সেটেলারদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি ইসরায়েলের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্য। একই সঙ্গে এক দিনেরও কম সময়ের মধ্যে গাজায় চলমান ইসরায়েলের নতুন সামরিক অভিযান বন্ধ করা না হলে আরও ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
মঙ্গলবার (২০ মে) যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসে এই ঘোষণা দেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি।
তিনি বলেন, ‘গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েল যেসব কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, সেগুলো গুরুতর ও অগ্রহণযোগ্য। এ পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তি এগিয়ে নেওয়ার আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।’
এর আগে, গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে প্রায় তিন মাস ধরে চলা অবরোধের কারণে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা তৈরি হলে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাজ্য। সোমবার (১৯ মে) সীমিত পরিসরে শিশুখাদ্যসহ জরুরি পণ্য গাজায় প্রবেশ করতে দেয় ইসরায়েল। এক যৌথ বিবৃতিতে ওই সহায়তাকে ‘একদম অপ্রতুল’ বলে সমালোচনা করে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা।
সম্প্রতি জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো গাজায় দুর্ভিক্ষ ও মানবিক বিপর্যয়ের হুঁশিয়ারি দিলে মিত্রদেশগুলো থেকে ইসরায়েলের ওপর চাপ আসতে শুরু করে। এমনকি তাদের পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও গাজায় খাদ্যসংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: টানা তিনমাস পর গাজায় প্রবেশ করল মানবিক সহায়তা
ইসরায়েলের এ ধরনের কার্যকলাপের সমালোচনা করে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে ত্রাণ আটকে রাখা, যুদ্ধ ছড়িয়ে দেওয়া, বন্ধু ও অংশীদারদের উদ্বেগ অগ্রাহ্য করা অমার্জনীয়। এই ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ হতেই হবে।’ ইতিহাস ইসরায়েলের বিচার করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পাশাপাশি ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত সিপি হোতোভেলিকেও তলব করে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সে সময় গাজায় ১১ সপ্তাহ ধরে চলা ত্রাণ অবরোধকে ‘নিষ্ঠুর ও ক্ষমার অযোগ্য’ বলে নিন্দা জানান যুক্তরাজ্যের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মন্ত্রী হ্যামিশ ফ্যালকোনার।
অন্যদিকে, গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণকারী চুক্তি পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান কাইয়া কাল্লাস।
তিনি বলেন, ‘ইইউয়ের বেশিরভাগ দেশই গাজার জনগণের এই কষ্ট আর দেখতে চায় না।’ অবশ্য এ বিষয়টি নিয়ে সুস্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।
এদিকে, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যামি জানান, তিন ব্যক্তি, দুটি অবৈধ বসতি ও দুটি সহিংসতা-সমর্থনকারী সংগঠনের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে যুক্তরাজ্য। এ ছাড়া, এই অবৈধ বসতিগুলো ইসরায়েল সরকারের সরাসরি সমর্থনেই পশ্চিম তীরে ছড়িয়ে পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হতেই গাজা, ইয়েমেনে ইসরায়েলের হামলা জোরাদার
তবে এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘অযৌক্তিক ও দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরেন মারমোরস্টাইন। তার দাবি, ‘যুক্তরাজ্য এসব বাহানা দিচ্ছে, আসলে তারা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা এগিয়ে নিতে চাচ্ছিল না।’
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রতিক্রিয়া ও স্টারমারের অবস্থান
হাউস অব কমনসে ডেভিড ল্যামির বক্তব্যকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। পাশাপাশি ইসরায়েলের ওপর আরও কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে রয়েছে— ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবের মতো বিষয়।
তাছাড়া, ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কয়েকজন সদস্য। তবে ল্যামি একে ‘চরমপন্থা’ ও ‘দানবীয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
অবশ্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নেওয়া যুক্তরাজ্যের এই পদক্ষেপকে হামাসের প্রতি পক্ষপাত বলেও সমালোচনা করেছেন কয়েকজন সংসদ সদস্য। তার জবাবে ল্যামি বলেন, যারা যুদ্ধ হাজার হাজার শিশুকে হত্যা করেছে, তাদের বিরোধিতা করা মানে হামাসকে পুরস্কৃত করা নয়।’
এদিকে, গাজায় শিশুদের দুর্ভোগকে ‘সম্পূর্ণরূপে অসহনীয়’ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। পাশাপাশি যুদ্ধবিরতির আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
স্টারমার বলেন, ‘আমি প্রকাশ্যে বলতে চাই, আমরা ইসরায়েলের এই সহিংসতা বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত।’
সোমবার গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিচালনা ও পশ্চিম তীরের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ বিবৃতি দেন কিয়ার স্টারমার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপের জন্য নিষেধাজ্ঞার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় নির্মম হামলা বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: গাজায় রাতভর ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিকসহ নিহত ৮২
এ বিবৃতির নিন্দা জানিয়ে একে ‘৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর গণহত্যামূলক হামলার জন্য এক বিশাল পুরস্কার’ বলে তিরস্কার করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তবে স্টারমার বলেন, হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করার একমাত্র উপায় হলো যুদ্ধবিরতি।
তার ভাষ্যে, ‘গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবাহ বাড়াতে হবে, কারণ ইসরায়েল যে পরিমাণ ত্রাণ ঢুকতে দিচ্ছে তা একেবারেই অপর্যাপ্ত। এই যুদ্ধ অনেক বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। আমরা গাজার মানুষদের না খেয়ে মারা যেতে দিতে পারি না।’
ইসরায়েল যে সীমিত ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করতে দিয়েছে, তাকে ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত প্রায় ২০ লাখ গাজাবাসীর জন্য ‘জলাশয়ে একটি বিন্দুর মতো’ বলে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার।
ফ্রান্স-ইসরায়েল সম্পর্কের টানাপোড়েন
এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসনকে ঘিরে ফ্রান্স-ইসরায়েল সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। গত বছরের অক্টোবর মাসে এক রেডিও সাক্ষাৎকারে গাজায় ব্যবহারের জন্য অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জানান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। তাছাড়া, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা করে ফ্রান্স। এ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ আহ্বানের কড়া সমালোচনা করেন নেতানিয়াহু।
সম্প্রতি, গাজায় খাদ্যসংকটকে কেন্দ্র করে আবারও ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ফ্রান্স।
২০৮ দিন আগে
টানা তিনমাস পর গাজায় প্রবেশ করল মানবিক সহায়তা
টানা তিনমাসের অবরোধের পর অবশেষে গাজায় প্রবেশ করেছে মানবিক সহায়তা। স্থানীয় সময় সোমবার (২০ মে) কেরেম শালোম সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশ করে শিশুখাদ্যসহ জরুরি সাহায্য বহনকারী পাঁচটি ট্রাক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা সংস্থা কোগাট।
গাজায় খাদ্যসংকটের ফলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থেকে ইসরায়েলের মিত্র দেশগুলো ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছিল। বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা চাপের কথা স্বীকার করেছে ইহুদি এই দেশটি। একারণে অনেকটা বাধ্য হয়েই গাজা উপত্যকায় ত্রান পাঠাতে ইসরায়েল সম্মত দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে স্বাগতযোগ্য বলে অভিহিত করেছেন। তবে ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত প্রায় ২০ লাখ গাজাবাসীর জন্য এই সহায়তাকে তিনি ‘জলাশয়ে একটি বিন্দুর মতো’ বলে মন্তব্য করেছেন।
টম বলেন, গাজায় প্রচুর পরিমাণে সহায়তা প্রয়োজন। মার্চ মাসে ইসরায়েল যখন সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষ করেছিল, তখন প্রতিদিন প্রায় ৬০০ ট্রাক গাজায় প্রবেশ করত।
তিনি জানান, জাতিসংঘের আরও চারটি ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে। সেগুলো মঙ্গলবার প্রবেশ করতে পারে বলে জানিয়েছে কোগাট।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হতেই গাজা, ইয়েমেনে ইসরায়েলের হামলা জোরাদার
তিনি আরও বলেন, স্থল পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হওয়ায় এসব জরুরি সহায়তা সামগ্রী লুট বা চুরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ সম্পদ দিন দিন কমে আসছে।
গত ২ মার্চ সাময়িক যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করার অযুহাতে গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এরপর টানা তিনমাস ধরে চলে এই অবরোধ। একটু একটু করে ফুরিয়ে আসে গাজার খাবার,ঔষধসহ জরুরি সব জিনিস। বিশেষত ক্ষুধার জ্বালায় ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে বাসিন্দাদের প্রাণ। এমনকি ইসরায়েলের বোমা থেকে ক্ষুধাকে বেশি ভয় পেতে শুরু করেন গাজাবাসী।
বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ নিয়ে ইসরায়েলের ওপর চাপ আসতে শুরু করে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজায় সীমিত পরিসরে সহায়তা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গাজা থেকে অনাহারে ভোগা মানুষের চিত্র আসতে থাকলে মিত্র দেশগুলো ইসরায়েলের নতুন সামরিক অভিযানে সমর্থন দিতে পারবে না— এ কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।এদিকে ইসরায়েলের এই পাঁচ ট্রাক সহায়তাকে ‘একদম অপ্রতুল’ বলে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপের জন্য তারা নিষেধাজ্ঞার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় নির্মম হামলা বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এ বিবৃতির নিন্দা জানিয়ে একে ‘৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উপর গণহত্যামূলক হামলার জন্য এক বিশাল পুরস্কার’ বলে তিরস্কার করেছে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।
আরও পড়ুন: গাজায় রাতভর ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিকসহ নিহত ৮২
এদিকে, গত সপ্তাহের শেষ থেকে গাজাজুড়ে নতুন করে বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। উপত্যকাটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খান ইউনিস থেকে জনগণকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সেনারা। প্রায় ১৯ মাসব্যাপী যুদ্ধে ইতোমধ্যে শহরটির বড় অংশ ধ্বংস হয়ে আছে।
ইসরায়েলের দাবি জিম্মি মুক্ত করার লক্ষ্যে হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই এসব হামলা চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে হামাস বলছে, তারা কেবল স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের বিনিময়েই জিম্মিদের ছাড়বে।
তাছাড়া সোমবার গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনাও পুর্নব্যক্ত করেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ইসরায়েল এমন একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে যাতে গাজার অনেক বাসিন্দা অন্যান্য দেশে স্বেচ্ছায় অভিবাসবন করবেন। যদিও ফিলিস্তিনিরা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ইসরায়েলেও ওপর মিত্রদের চাপ
একটি ভিডিও বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘এই বিশ্বে আমাদের সবথেকে ঘনিষ্ঠ মিত্ররা জানিয়েছে, তারা এই অনাহারের চিত্র দেখতে পারবে না, এসব বন্ধ না হলে তারা আামদের সমর্থন দিতে পারবে না।’
গাজায় ইসরায়েলের এই বর্বর হামলাকে সমর্থন জানিয়ে আসা যুক্তরাষ্ট্র উপত্যকাটির খাদ্যসংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য সফরে এসে তিনি বিষয়টি এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে: ইসরায়েলি হামলায় ২২ শিশুসহ ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত
বিশ্লেষকদের দাবি, নিজের জোট সরকারের কট্টর ডানপন্থীদের ক্ষোভ কমাতে এই বিবৃতি দিয়েছে নেতানিয়াহু। কারণ তারা গাজায় সাহায্য প্রবেশ করতে দিতে রাজি ছিলেন না।
নেতানিয়াহু বলেন, গাজায় সহায়তা দেওয়া হবে সীমিত পরিসরে এবং এটি তত্ত্বাবধান করবে সেনাবাহিনী। হামাস যেন কোনোভাবে এই সহায়তা না পায় তা নিশ্চিত করা হবে।
তবে জাতিসংঘের সংস্থা ও ত্রান সংগঠনগুলো এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। এভাবে সাহায্য দিলে তা যথেষ্ট মানুষের কাছে পৌঁছাবে না। তাছাড়া এই গদক্ষেপে সাহায্যকে একটি কৌশলগত অস্ত্রে পরিণত করা হবে, যা মানবিক নীতিমালার পরিপন্থী। তারা এতে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞার হুমকি
ফ্রান্স, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের বিবৃতিকে গাজা যুদ্ধ ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড নিয়ে তাদের অন্যতম কঠোর সমালোচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করে বলে জানিয়েছে দেশগুলো। পাশাপাশি এই পরিকল্পনাকে অবৈধ বলে অভিহিত করেছে তারা।
তাদের ভাষ্যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার অধিকার হিসেবে ইসরায়েলকে তারা সবসময় সমর্থন করেছে, তবে গাজায় তারা যা করছে তা অতিরঞ্জিত।
এ ছাড়া, নতুন সাহায্য বিতরণ প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেছে একে মানবিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলেও মন্তব্য করেছে তারা।
গত দুই বছরে কানাডা ইতিমধ্যে পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারী সহিংসতা নিয়ে ইসরায়েলের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে ফ্রান্স এককভাবে কতটুকু পদক্ষেপ নিতে পারবে তা পরিষ্কার নয়, কারণ দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।
এদিকে, সোমবার পৃথক এক বিবৃতিতে জার্মানি, ইতালি, জাপানসহ ১৮ টি দেশ গাজায় পূর্ণ পরিসরে জাতিসংঘ ও অন্যান্য ত্রান সংগঠনগুলোর সহায়তায় গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে
২০৯ দিন আগে
তিন মাস পর গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে সম্মত নেতানিয়াহু
প্রায় তিনমাসের অবরোধ শেষে অবশেষে সীমিত পরিসরে মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল।
স্থানীয় সময় রবিবার (১৮ মে) এই ঘোষণা দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজার খাদ্যসংকট নতুন সামরিক অভিযানের জন্য হুমকি হওয়ার শঙ্কা থেকে নেতানিয়াহুর মন্ত্রিপরিষদ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি।
গত ২ মার্চ গাজা উপত্যকায় খাদ্যসহ সব ধরনের মানবিক সেবা প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটি দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। মানবিক সহায়তায় কাজ করা কর্মীরাও নিজেদের অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন।
এছাড়া বেশ কিছুদিন ধরেই বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা গাজায় দুর্ভিক্ষের সতর্কবার্তা দিয়ে আসছিলেন। এরপরই এই সিদ্ধান্ত নেয় ইসরায়েল।
তবে ঠিক কখন এবং কীভাবে গাজায় সহায়তা প্রবেশ করবে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট করেনি নেতানিয়াহু প্রশাসন। সহায়তা তত্ত্বাবধানে থাকা ইসরায়েলি সামরিক সংস্থাও এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হতেই গাজা, ইয়েমেনে ইসরায়েলের হামলা জোরাদার
এ ছাড়া, সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসরায়েল একটি নতুন ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। তারা নিশ্চিত করতে চায়, হামাস যোদ্ধাদের কাছে যেন সহায়তা না পৌঁছায়। যদিও সাহায্যকর্মীরা এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে।
এদিকে, গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে নতুন করে হামলা শুরু করার পর থেকে এলাকাটিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। রবিবারের ভোরের দিকে চালানো ওই বিমান হামলায় অন্তত ১০৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু।
এ সময় উত্তর গাজার প্রধান হাসপাতালটিতে সরাসরি হামলা চালানোর কারণে সেটি বন্ধ করে দিতে হয়েছে বলে জানিরয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
ইসরায়েলের দাবি, হামাস একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়ে তাদের কাছে জিম্মি থাকা সব বন্দিকে মুক্তি দিক। অন্যদিকে হামাস চাইছে গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার, তাদের দাবি স্থায়ী সমাধান।
দুই পক্ষের কেউই নিজের অবস্থান থেকে ছাড় দিতে রাজি নয়; এতে দুর্ভোগ বাড়ছে সাধারণ গাজাবাসীর।
জাবালিয়া এলাকার বাসিন্দা আবু মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, ‘যখন ইহুদিরা যুদ্ধবিরতি চায়, তখন হামাস তা প্রত্যাখ্যান করে, আর যখন হামাস যুদ্ধবিরতি চায়, তখন ইহুদিরা তা মানে না। তবে উভয় পক্ষই ফিলিস্তিনি জনগণকে নির্মূল করতে সম্মত।’
আরও পড়ুন: গাজায় রাতভর ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিকসহ নিহত ৮২
হতাশা ভরা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর দোহাই, আমাদের প্রতি দয়া করুন। বারবার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পালাতে পালাতে আমরা ক্লান্ত।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৫৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বাস্তুচ্যুত প্রায় ৯০ শতাংশ বাসিন্দা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগ নারী ও শিশু।
২১০ দিন আগে
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হতেই গাজা, ইয়েমেনে ইসরায়েলের হামলা জোরাদার
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হতেই স্বরূপে ফিরেছে ইসরায়েল। অবরুদ্ধ গাজা ও ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ফের জোরেশোরে সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনারা।
স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীদের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (১৬ মে) সারা রাত ধরে গাজা উপত্যকার দাইর আল-বালাহ ও খান ইউনিসে লাগাতার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই হামলায় অন্তত ১০৮ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
এই হামলার ব্যাপারে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামাসের হাতে থাকা ৫৮ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করতে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তি না দিলে আরও বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালানো হবে।
অন্যদিকে, ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত ২টি বন্দরেও বিমান হামলায় চালিয়েছে ইসরায়েল। এ ঘটনায় অন্তত একজন নিহত ও ৯ জন আহত হওয়ার খবর দিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হওয়ার পরপরই ইসরায়েল হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে গাজা ও ইয়েমেনের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্পের এ সফর শেষ হতেই ইসরায়েলি হামলায় যোদ্ধা ও বেসামরিক মিলিয়ে উপত্যকার ১৩০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
গাজায় দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে মানবিক সহায়তা বন্ধ রেখেছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্য সফরকাল ট্রাম্প গাজায় পুনরায় যুদ্ধবিরতি কিংবা অন্তত মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ফের চালু করার চেষ্টা করবেন বলে আশা করা হচ্ছিল। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ সফর করলেও এ বিষয়ে তাকে তেমন কিছু বলতে দেখা যায়নি।
অবশ্য গাজার মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। সফরের শেষ দিন আবুধাবিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, গাজাসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক সংকট তিনি সমাধানের চেষ্টা করছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টি গাজার দিকে। আমাদের এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে হবে। সেখানে ভয়াবহ অবস্থা চলছে। অসংখ্য মানুষ অনাহারে দিনাতিপাত করছে।’
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর: আলোচনায় কূটনীতি, উপেক্ষিত মানবাধিকার
একই সঙ্গে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনাও অব্যাহত রেখেছেন তিনি। ট্রাম্প প্রশাসন গাজায় হামাস এবং ইয়েমেনে হুথিসহ বেশ কয়েকটি ইসরায়েল-বিরোধী গোষ্ঠীকে সমর্থন দেওয়া দেশটির সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তির করার চেষ্টা করছেন।
২১১ দিন আগে
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর: আলোচনায় কূটনীতি, উপেক্ষিত মানবাধিকার
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর গতানুগতিক বিষয়টিই যেন কোথায় হারিয়ে গিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কখন কী বলবেন, কীভাবে বলবেন কিংবা তার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে—সেসব অনুমান করা অনেক বিশ্লেষকের কাছে রীতিমত ‘অসম্ভব’।
নিজের মধ্যপ্রাচ্য সফরেও তিনি এ ধারা বজায় রেখেছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এটিই তার সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রীয় সফর। নিজের স্বভাব অনুযায়ী এ সফরকালেও তিনি আলোচনার বিষয়ে ভিন্ন পথেই হেঁটেছেন।
এর আগে পশ্চিমা নেতাদের মধ্যপ্রাচ্য সফরে মানবাধিকারের মতো বিষয় গুরুত্ব পেলেও কূটনৈতিক ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানান বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন ট্রাম্প; আর মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতেও মানবাধিকারের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা এড়িয়ে গেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। সে সময় আরব উপসাগরীয় ধনী দেশগুলোতে অতীতে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের সমালোচনা করেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, ‘এখন আর সেই দিন নেই যে আমেরিকান কর্মকর্তারা মধ্যপ্রাচ্যে উড়ে এসে আপনাদের শেখাবে—কীভাবে জীবনযাপন করতে হবে, কীভাবে দেশ চালাতে হবে।’
অনেক বিশ্লেষকের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সবচেয়ে ভালো সময় পার করছে রিয়াদ।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে: ইসরায়েলি হামলায় ২২ শিশুসহ ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত
তবে সৌদির সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, ব্যবসায়ী, লেখকসহ দেশটি থেকে পালিয়ে যাওয়া আরও অনেকেই তার কথা শুনেছেন। তাদের মত অবশ্য ভিন্ন।
ট্রাম্পের এই ভূমিকাকে একপ্রকার অশনি সংকেত বলে মনে করছেন তারা। তাদের আশঙ্কা, ট্রাম্পের এই বক্তব্য মানবাধিকার রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের অনিয়মিত বা অসম্পূর্ণ হলেও শক্তিশালী ভূমিকা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত বহন করে।
এ বিষয়ে যুবরাজ সালমানের শাসনামলের প্রথম দিকে জেলে থাকা এক আলেমের ছেলে আবদুল্লাহ আলআউধ বলেন, ‘তার (ট্রাম্প) এই ভূমিকা দেখা সত্যি বেদনাদায়ক ছিল।’
বিশ্বের নানা দেশের সমালোচনা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একপ্রকার একঘরে হয়ে পড়ার পর দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নত করতে রাজপরিবারের শত শত সদস্য, নাগরিক সমাজের কর্মী, অধিকারকর্মীসহ অনেক বন্দিকে মুক্তি দেয় সৌদি প্রশাসন। তবে আবদুল্লাহর বাবা সালমান আলআউধ এখনও কারাবন্দি রয়েছেন।
হতাশ কণ্ঠে আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেই যুবরাজের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করেছেন, যিনি কিনা আমার বাবাকে নির্যাতন করেছেন, আমাদের পরিবারকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।’
আবদুল্লাহ যুক্তরাষ্ট্রে থেকে সৌদি আরবে আটক ও বন্দি ব্যক্তিদের জন্য কাজ করে থাকেন। এসব বিষয়ে সৌদি প্রশাসনের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলেও তারা সাড়া দেয়নি।
এদিকে, হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আনা কেলি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদির ক্রমবর্ধমান অংশীদারত্ব এবং মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির পথে অগ্রসর হওয়ার পদক্ষেপকে প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প।’ তবে মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের সঙ্গে মানবাধিকার বিষয়ে ট্রাম্প কোনো আলোচনা করেছেন কিনা, এ বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র টমি পিগট বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের নেতাদের সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনা ছিল ব্যক্তিগত।’
মানবাধিকার ইস্যুতে কম গুরুত্ব
বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সফরে মানবাধিকার বিষয়ে যতটা গুরত্বের সঙ্গে আলোচনা হওয়া উচিৎ, ট্রাম্পের সফরকালে বিষয়টি সেভাবে মনোযোগ পায়নি।
আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়, এসব দেশের পরিস্থিতি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গেলেও জোরালো কণ্ঠে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি।
এমনকি ট্রাম্পের এবারের বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত নির্বাসিত সৌদি নাগরিকদেরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগের মতো সরব হতে দেখা যায়নি। তাছাড়া ট্রাম্প সৌদিতে বন্দি মার্কিন নাগরিক বা অধিকারকর্মীদের মুক্তির প্রসঙ্গ তুলেছেন কিনা, এ নিয়েও তেমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়নি তার প্রশাসন।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ভাষ্যে, সাম্প্রতিক সময়ে সৌদিতে মানবাধিকার পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ার কারণে এমন নীরবতা দেখা যেতে পারে।
অনেকে আবার বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণেই মধ্যপ্রাচ্যের মানবাধিকারের বিষয়ে ট্রাম্পের এই নীরবতা।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ভারত-পাকিস্তান: ট্রাম্প
ইব্রাহিম আলমাদি নামে ফ্লোরিডার এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমার বাবা সৌদি সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনামূলক টুইটের জন্য কারাবন্দি হয়েছিলেন। তার দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাবাকে ফেরানোর জন্য রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা বা অন্য কোনো কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘ট্রাম্প আর যুবরাজ ভালোবাসার সম্পর্কে রয়েছেন। কেউ যদি একবার ট্রাম্পের কানে বাবার বিষয়টা দিতেন আর তিনি যুবরাজকে বলতেন, আমি নিশ্চিতভাবে বাবাকে ফিরে পেতাম।’
২১২ দিন আগে
যুক্তরাজ্যের সাবেক সামরিক ঘাঁটিতে আগুনে নিহত ৩
যুক্তরাজ্যের একটি সাবেক সামরিক ঘাঁটিতে আগুনে তিনজন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২ জন অগ্নিনির্বাপক কর্মী ও একজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) অক্সফোর্ডের কাছে বাইসেস্টারে প্রাক্তন রয়েল এয়ার ফোর্স ঘাঁটির একটি বড় গুদামে এই অগ্নিকাণ্ড হয় বলে জানিয়েছে দেশটির কর্মকর্তারা।
শুক্রবার (১৬ মে) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমান ও মোটর স্পোর্টসের ইতিহাস স্মরণে ব্যবহৃত একটি প্রাক্তন ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটিতে অগ্নিকাণ্ডে দুইজন দমকল কর্মী ও একজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে আগুনে শতাধিক দোকান ভস্মীভূত
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডে বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডলী কয়েক মাইল দূর থেকে দেখা গেছে। বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার এক্সে এক পোস্টে বলেন, ‘আমাদের অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের সাহসিকতা আশ্চর্যজনক। আশা করি যারা হাসপাতালে আছেন তারা সম্পূর্ণ ওদ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
অক্সফোর্ডশায়ার কাউন্টি কাউন্সিল জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডে গুরুতর আহত আরও দুইজন অগ্নিনির্বাপক কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অক্সফোর্ডশায়ার কাউন্টি কাউন্সিল জানিয়েছে, আরও দুইজন অগ্নিনির্বাপক কর্মী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
শুক্রবার সকালে কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
২১৩ দিন আগে
যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য তুরস্কে জেলেনস্কি, যাননি পুতিন
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের অবসানে কূটনৈতিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের সঙ্গে বৈঠক করতে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে গেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি শান্তি আলোচনা থেকে সরে যাওয়ার পর—তা পুনরায় শুরুর উদ্যোগের অংশ হিসেবে জেলেনস্কি এই সফর করছেন।
জেলেনস্কি বলেন, তিনি ইস্তাম্বুলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি শান্তি আলোচনায় যোগ দিতে প্রস্তুত।
বুধবার(১৪ মে) জেলেনস্কি বলেন, ‘শান্তি আলোচনার জন্য রাশিয়া থেকে কে আসবেন—তা দেখার জন্য আমি অপেক্ষা করছি। এরপর আমি সিদ্ধান্ত নেব—ইউক্রেনের কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ। এখন পর্যন্ত গণমাধ্যমের বরাতে তাদের কাছ থেকে পাওয়া ইঙ্গিতগুলো বিশ্বসযোগ্য নয়।’
তবে ক্রেমলিন ঘোষণা করেছে, বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলের শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যোগ দেবেন না। তবে, রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করবেন দেশটির প্রেসিডেন্টের সহকারী ভ্লাদিমির মেডিনস্কি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা রাশিয়ার
আনাতোলিয়ায় ন্যাটোর অনানুষ্ঠানিক একটি বৈঠকে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, ‘ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত আলোচনা আশা করি আমাদের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।’
এরআগে ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি আলোচনা হয়েছিল। ওই বৈঠকে উভয়পক্ষ যুদ্ধ বন্ধে একমত হতে পারেননি।
এবারের শান্তি আলোচনায় পুতিনের যোগ না দেওয়াতে পশ্চিমারা তার ব্যাপক সমালোচনা করছেন। ক্রেমলিন সত্যিই ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান প্রচেষ্টায় আগ্রহী নয় বলেও প্রশ্ন তুলছেন তারা।
২১৪ দিন আগে
ভারতে চীন-তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের এক্স অ্যাকাউন্ট ব্লক
পাকিস্তানের পক্ষে প্রচার চালানো ও অপতথ্য ছড়ানোর অভিযোগে চীনের একাধিক রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট ভারতে ব্লক করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ মে) চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সিনহুয়া ও দেশটির রাষ্ট্র সমর্থিত জাতীয়তাবাদী ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমসের এক্স অ্যাকাউন্ট নিজ দেশে ব্লক করে দেয় ভারতীয় প্রশাসন। একই সঙ্গে তুরস্কের টিআরটি ওয়ার্ল্ডও ভারতে ব্লক করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
তবে আইনি অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) গ্লোবাল টাইমসের অ্যাকাউন্ট ফের চালু হয়। উল্লেখ্য, খোদ চীনেই এক্স নিষিদ্ধ।
গত এক সপ্তাহে ভারত হাজার হাজার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্ট টার্গেট করেছে, যার মধ্যে বেশ কিছু স্বীকৃত গণমাধ্যম ও সাংবাদিকও রয়েছেন। এতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক সংগঠনগুলোর সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটি।
গত সপ্তাহে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষ হয়। এটি ছিল গত কয়েক দশকের মধ্যে প্রতিবেশী দেশদুটির মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ। এ ঘটনায় দুই দেশের পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায়। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে যাচাইহীন তথ্য ও অপপ্রচার ছড়ায়।
আরও পড়ুন: পাল্টা আঘাত না এলে বৈরিতা বাড়াতে চায় না ভারত-পাকিস্তান
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে গেলে উভয় পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিল চীন। পরে রবিবার (১১ মে) চীন সরকার উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশকে ‘জাংনান’ নামে অভিহিত করে নিজেদের ভূখণ্ড দাবি করে নতুন নামের তালিকা প্রকাশ করে। এই বিষয়ে ভারত তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় এবং ঘটনাটিকে ‘অপ্রয়োজনীয় ও হাস্যকর’ বলে আখ্যায়িত করে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালা বুধবার (১৪ মে) এ বিষয়ে বলেন, ‘নামের কৃত্রিম এই পরিবর্তন বাস্তবতা পাল্টাতে পারবে না। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে।’
এরপর গতকালই (বুধবার) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, অঞ্চলটি চীনের ছিল এবং এ বিষয়ে নামকরণ ‘চীনের সার্বভৌম অধিকারের মধ্যে’ পড়ে।
জনসংখ্যায় বিশ্বের শীর্ষ দুটি দেশ ভারত ও চীনের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনাপূর্ণ। হিমালয়ের পাদদেশে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চল নিয়ে মাঝেমধ্যেই দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষ হয়ে থাকে।
২১৪ দিন আগে
গাজায় রাতভর ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিকসহ নিহত ৮২
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৮২ জন নিহত হয়েছেন। বিট্রিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বৃহস্পতিবার (১৫ মে) লাইভ আপডেট প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদ প্রকাশ করা লন্ডনভিত্তিক গণমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অবরুদ্ধ উপত্যকাজুড়ে রাতভর বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন ৫৭ জন ফিলিস্তিনি। পরে বৃহস্পতিবার সকালে গাজার খান ইউনিস শহরে চালানো হামলায় আরও অনেক হতাহত হয়। সবমিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৮২ জনে দাঁড়ায় বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: ২৫ বছর পর সিরিয়ান নেতার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বৈঠক
নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা জানান, হতাহতদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপিরে এক ফটোগ্রাফার জানান, বুধবার দিবাগত রাত ও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত খান ইউনিস শহরে অন্তত ১০টি বিমান হামলা তিনি প্রত্যগণনা করেছেন। হামলায় নিহতদের লাশ শহরের নাসের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। নিহতদের অনেকের দেহ খন্ড বিখন্ড ছিল। যেগুলোকে একটি ব্যাগে ভরানো হয়েছিল। হাসপাতালটির মর্গ সূত্র ৫৪ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে: ইসরায়েলি হামলায় ২২ শিশুসহ ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে কাতারের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আল আরারি টিভির সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। টেলিভিশন নেটওয়ার্কটি তাদের সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছে, পরিবারের ১১ সদস্যসহ সাংবাদিক হাসান সামুর খান ইউনিসে বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। তবে ইসরায়েলি বাহিনী হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু জানায়নি।
বুধবার থেকে গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে রাতভর এটি দ্বিতীয় ভয়াবহ বিমান হামলা। যাতে অসংখ্য নারী ও শিশু হতাহত হয়েছে।
২১৪ দিন আগে