বিশ্ব
বন্যার কারণে ২ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে রাশিয়া
রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যের প্রাইমোরি অঞ্চলের বন্যাকবলিত এলাকা থেকে ২ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে রাশিয়া। স্থানীয় সময় রবিবার (১৪ আগস্ট) দেশেটির জরুরি কর্মকর্তারা একথা জানিয়েছেন।
তারা বলেছেন, ক্রান্তীয় ঝড় খানুন এর প্রভাবে এ অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের পর এই লোকদের সরিয়ে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: চীনে ভয়াবহ বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, এই অঞ্চলে সপ্তাহজুড়ে হওয়া ভারী বৃষ্টিপাতে গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে।
রাশিয়ার জরুরি পরিস্থিতি মন্ত্রণালয় টেলিগ্রামে জানিয়েছে, ৪ হাজার ৩০০ টিরও বেশি বাড়ি ও ২৮টি জনবসতি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া এ অঞ্চলের ১৬টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উদ্ধারকারীরা এই অঞ্চলে ১৩টি অস্থায়ী আবাসন কেন্দ্র স্থাপন করেছেন।
স্থানীয় কর্মকর্তারা শুক্রবার জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে সাতটি জেলায় বন্যা হয়েছে এবং কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন নারী এবং ১০ ও ১২ বছরের ২টি শিশু।
এর আগে টাইফুন খানুন কোরীয় উপদ্বীপ ও জাপানে আঘাত হানে।
আরও পড়ুন: তাপ, দাবানল ও বন্যা গ্রীষ্মকে ‘তীব্র গরম’ করে তুলেছে
বন্যাকবলিত এলাকায় অতিরিক্ত ১০০ মিলিয়ন ইউয়ান বরাদ্দ দিল চীন
মাউই দাবানল: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৯
ঐতিহাসিক মাউই শহর বিধ্বংসী দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৮৯ জনে পৌঁছেছে। তবে নিহতদের লাশ অনুসন্ধান এবং শনাক্ত করার প্রচেষ্টা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি সবচেয়ে মারাত্মক দাবানল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
মাউই পুলিশ প্রধান জন পেলেটিয়ার বলেছেন, কুকুরের অনুসন্ধানী দল ওই অঞ্চলের মাত্র তিন শতাংশ এলাকায় অনুসন্ধান করতে পেরেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ৫ বর্গমাইল এলাকায় অনুসন্ধান চালাতে হবে, যেখানে আমাদের প্রিয়জনের কেউ থাকতে পারে। ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তবে আমাদের কেউই এটির সত্যিকার আকার বা পরিধি জানি না।’
আরও পড়ুন: দ. কোরিয়ার সমুদ্রতীরবর্তী শহরে দাবানল, পালিয়েছে শত শত মানুষ
তিনি বলেন, ফেডারেল জরুরি সেবা কর্মীদের তোলা ছবিতে লাহাইনার ধ্বংসস্তুপের দৃশ্যে ধরা পড়ে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দলগুলো উজ্জ্বল কমলা ক্রস চিহ্ন দিয়ে বাড়ির ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করেছে । যখন তারা মানুষের দেহাবশেষ খুঁজে পেয়েছে তখন ‘এইচআর’ চিহ্ন দিয়েছেন।
পেলেটিয়ার বলেন, মৃতদের শনাক্ত করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং কারণ যখন কোনো দেহাবশেষ খুঁজে তাদের তুলে নিই, তখন সেগুলোর শরীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অধিকাংশ দেহাবশেষ গলিত ধাতুর মতো অবস্থায় পাওয়া যাচ্চে। এখন পর্যন্ত দুইজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কুকুরগুলো ধ্বংসস্তূপে কাজ করেছিল এবং তারা মাঝে মাঝে একটি সম্ভাব্য মৃতদেহ সম্পর্কে তাদের হ্যান্ডলারদের সতর্ক করছিল।
শনিবার গভর্নমেন্ট জশ গ্রিন ঐতিহাসিক ফ্রন্ট স্ট্রিটের বিধ্বংসী এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বলেন , ‘এটি অবশ্যই সবচেয়ে খারাপ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এর আগে হাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়নি। আমরা কেবল অপেক্ষা করতে পারি এবং যারা বেঁচে আছে তাদের সমর্থন করতে পারি। আমারা এখন উদ্ধার করা লোকদের তাদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে এবং তাদের আবাসন ও স্বাস্থ্যসেবার দিকে গুরুত্ব দেব।’
গ্রিন বলেন, পশ্চিম মাউইতে কমপক্ষে ২ হাজার ২০০টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। যার মধ্যে ৮৬ শতাংশই আবাসিক।
তিনি আরও বলেন, দ্বীপটিতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬ বিলিয়ন। এটি পুনরুদ্ধার করতে ‘অবিশ্বাস্য পরিমাণে সময়’ লাগবে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এর আগেও মাউই কমপক্ষে দুবার আগুনে পুড়েছে। তবে সেগুলোতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সন্ধ্যায় চতুর্থটি লাহাইনার উত্তরে একটি উপকূলীয় সম্প্রদায় কানাপালিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, তবে ক্রুরা এটি নিভিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল।
আরও পড়ুন: হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে দাবানলে ৫৩ জনের মৃত্যু: গভর্নর
গ্রিন বলেন, আপকান্ট্রিতে অগ্নিকাণ্ডে ৫৪৪টি কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৯৬ শতাংশই আবাসিক।
মাউইতে জরুরি ব্যবস্থাপকরা তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত লোকদের থাকার জায়গাগুলো সন্ধান করছিলেন। ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি এবং প্যাসিফিক ডিজাস্টার সেন্টারের পরিসংখ্যানকে উদ্ধৃত করে কাউন্টি কর্মকর্তারা শনিবারের প্রথম দিকে ফেসবুকে বলেছেন, প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষের আশ্রয়ের প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের পরিবার সহায়তা কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করেন।
পেলেটিয়ার বলেছেন, ‘আপনাদের স্বজনদের শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।’
অবসরপ্রাপ্ত দমকল কর্মী ক্যাপ্টেন জিওফ বোগার এবং তার ৩৫ বছরের বন্ধু ফ্র্যাঙ্কলিন ট্রেজোস লাহাইনায় অন্যদের সাহায্য করতে এবং বোগারের বাড়ি বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার বিকালের দিকে আগুনের শিখা যতই কাছে চলে আসরে তারা বুঝতে পারেন, তাদের বের হতে হবে। এজন্য প্রত্যেকে নিজ নিজ গাড়িতে পালিয়ে যান। কিন্তু বোগারের গাড়ি চালু হচ্ছিল না। তখন তিনি একটি জানালা ভেঙে বেরিয়ে পড়েন। তারপর মাটিতে হামাগুড়ি বেরোনোর চেষ্টা করছিলেন। এ সময় পুলিশ টহল তাকে খুঁজে পায় এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
ট্রেজোস ভাগ্যবান ছিল না। পরের দিন যখন বগার ফিরে আসেন, তখন তিনি তার গাড়ির পেছনের সিটে তার ৬৮ বছর বয়সী বন্ধুর হাড় দেখতে পান। উদ্ধারকারীরা দেখতে পায় বোগারের প্রিয় ৩ বছর বয়সী কুকুর স্যামের দেহাবশেষের উপরে পড়ে আছেন তিনি। তিনি রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন।
সদ্য প্রকাশিত মৃতের সংখ্যা উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় ২০১৮ সালের ক্যাম্প ফায়ারের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। এবারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৫ জনে এবং ধ্বংস করেছে প্যারাডাইস শহরকে। এক শতাব্দী আগে ১৯১৮ সালের ক্লোকেট অগ্নিকাণ্ডে উত্তর মিনেসোটাতে ছড়িয়ে পড়ে এবং বেশ কয়েকটি গ্রামীণ সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস করে এবং শত শত মানুষ নিহত হয়।
দাবানলগুলো কয়েক দশকের মধ্যে রাজ্যের সবচেয়ে মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যা ১৯৬০ সালের সুনামিতে ৬১ জনের মৃত্যুকেও ছাড়িয়ে গেছে। ১৯৪৬ সালে আরও একটি মারাত্মক সুনামিতে বিগ আইল্যান্ডে ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল। একটি অঞ্চল জুড়ে মাসব্যাপী সাইরেন বাজানোসহ জরুরি সতর্কতা ব্যবস্থা জারি করা হয়েছিল।
হাওয়াই ফায়ারফাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ববি লি বলেন, ৬৫টি কাউন্টির ফায়ারফাইটার কাজ করছে, যারা মাউই, মোলোকাই ও লানাই দ্বীপে কর্মরত।
গ্রিন বলেন, কর্মকর্তারা নিরাপত্তা উন্নত করতে নীতি ও পদ্ধতি পর্যালোচনা করবেন।
তিনি বলেন, ‘জনগণ জিজ্ঞাসা করেছে কেন এমন হলো, কী ঘটছে তা পর্যালোচনা করছি। এর কারণ হলো বিশ্ব পরিবর্তিত হয়েছে। একটি ঝড় এখন হারিকেন-আগুন বা অগ্নি-হারিকেন হতে পারে।’ ‘এটিই আমরা অনুভব করেছি, তাই আমরা কীভাবে আমাদের জনগণকে সর্বোত্তমভাবে রক্ষা করতে পারি তা খুঁজে বের করার জন্য আমরা এই নীতিগুলো অনুসন্ধান করছি।’
আরও পড়ুন: তাপ, দাবানল ও বন্যা গ্রীষ্মকে ‘তীব্র গরম’ করে তুলেছে
কঙ্গোতে ভূমি অধিকার ও কর নিয়ে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত ১০
ভূমি অধিকার ও কর নিয়ে আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বন্দুকধারী ও অস্ত্র সজ্জিত একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠী কমপক্ষে ১০ জনকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
সহিংসতার ঘটনাটি একটি গভীরতর সঙ্কটের সর্বশেষ চিত্র। যা বিরাট মধ্য আফ্রিকান দেশটির অপর প্রান্তে সংঘাতে ছেয়ে গেছে।
প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র অ্যাডেলার্ড এনকিসির জানিয়েছে, শুক্রবার রাজধানী কিনশাসা থেকে ২৩০ মাইল (৩৭০ কিলোমিটার) দক্ষিণে ইপঙ্গি গ্রামে মোবন্ডো নামে পরিচিত একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠী বেসামরিক লোকদের উপর হামলা করে এবং বেশ কয়েকটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়।
এনকিসি বলেন, মিলিশিয়া সদস্যরা বেশ কিছু লোককে বেঁধে অপহরণ করেছিল, বিশেষ করে যারা ঝোপের মধ্যে পালিয়েছিল। প্রাদেশিক সরকার ওই এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনী পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: শান্তিতে নোবেল: ইরাকের নাদিয়া মুরাদ ও কঙ্গোর ডেনিস মুকওয়েজ
২০২২ সালের জুন মাসে কঙ্গোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জমির অধিকার এবং প্রথাগত ট্যাক্স নিয়ে এই অঞ্চলের প্রাচীনতম বাসিন্দা টেক এবং এবং সম্প্রতি কঙ্গো নদীর কাছে বসতি স্থাপনকারী ইয়াকা সহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর কৃষকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
মুখপাত্র এনকিসি জানায়, ইয়াকা-সংখ্যাগরিষ্ঠ মোবন্ডো মিলিশিয়ার একজন নেতাকে কাছের একটি শহরে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নেওয়ার পরে শুক্রবারের এই সহিংসতা শুরু হয়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, টেকে এবং ইয়াকা সম্প্রদায়ের মধ্যে ট্যাক্স বৃদ্ধি এবং চাষের জমিতে অধিকার নিয়ে মতবিরোধের মধ্যে ২০২২ সালের জুন থেকে ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে সহিংসতার একটি চক্রের মধ্যে সর্বশেষ ঘটনা এটি। এই সহিংসতা গুলোতে কমপক্ষে ৩০০ জন নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: কঙ্গোয় জাতিসংঘের ২ বিশেষজ্ঞ হত্যা মামলায় ৫১ জনের মৃত্যুদণ্ড
একটি আঞ্চলিক নাগরিক সমাজ সংস্থার ভাইস-প্রেসিডেন্ট সিম্ফোরিয়েন কোয়েঙ্গো, দক্ষিণ-পশ্চিম কঙ্গোতে মারাত্মক উত্তেজনা কমানোর জন্য মোবন্ডো মিলিশিয়া ও সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মতে, সারা দেশে একটি পুরনো বৃহত্তর পরিসরের সংঘাতে ২০২২ সালেই কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। কঙ্গোর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রদেশগুলোতে (রুয়ান্ডা এবং উগান্ডার সীমান্তের কাছাকাছি ) ১২০টিরও বেশি সশস্ত্র গোষ্ঠী মূল্যবান খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এবং তাদের কিছু সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর ঘন ঘন গণহত্যার কারণে বেসামরিক লোকজন দেশত্যাগ শুরু করে। যার ফলে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, যৌন সহিংসতা এবং রোগের বিস্তার ঘটে।
আরও পড়ুন: কঙ্গোতে জাতিসংঘবিরোধী বিক্ষোভে নিহত ১৫, আহত ৫০
আনোয়ার-উল-হক কাকার পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
পাকিস্তানের আগামী নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন আনোয়ার-উল-হক কাকার। শনিবার (১২ আগস্ট) দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
এর মধ্যদিয়ে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের কোনো সিনেটর জাতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্ব দেবেন।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং বিরোধী দলীয় নেতা রাজা রিয়াজের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বৈঠকের পর কাকারকে নির্বাচন করা হয়।
রিয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, তিনিই কাকারের নাম প্রস্তাব করেছিলেন।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি সই করার পর কাকারের মনোনয়ন কার্যকর হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের ইমরান খানের বিরুদ্ধে যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া মানার আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত সপ্তাহে সংসদ ভেঙে দেন।
সাধারণত, সংসদ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যেই দেশের সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করতে হয়।
কাকার পাকিস্তানের রাজনীতিতে তুলনামূলকভাবে নতুন মুখ। তিনি ২০১৮ সাল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিনেটে বেলুচিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং বর্তমানে বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির সদস্য।
বেলুচিস্তান পাকিস্তানের চারটির মধ্যে সর্বনিম্ন জনবহুল ও স্বল্পোন্নত প্রদেশ। কিন্তু আয়তনের দিক থেকে এটি দেশটির বৃহত্তম প্রদেশ।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেপ্তার
পাকিস্তানে সমাবেশে বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহত, আহত প্রায় ২০০
ভারতের উত্তরাখণ্ডে ভূমিধসে ৫ তীর্থযাত্রী নিহত
ভারতের উত্তরাখণ্ডে ভূমিধসের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে পাঁচ তীর্থযাত্রী নিহত হয়েছেন। শনিবার (১২ আগস্ট) পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দেরাদুন থেকে প্রায় ২৩০ কিলোমিটার পূর্বে রুদ্রপ্রয়াগ জেলায় ভূমিধসের ধ্বংসস্তূপে নিহতদের বহনকারী গাড়িটি চাপা পড়ে।
তারা আরও জানায়, হতাহতরা কেদারনাথ মন্দিরে যাচ্ছিলেন। নিহতদের মধ্যে তিনজন ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের বাসিন্দা এবং বাকি দুজন হরিদ্বারের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে দাবানলে ৫৩ জনের মৃত্যু: গভর্নর
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে গাড়িটি ভূমিধসের কবলে পড়ে থাকতে পারে বলে তাদের ধারণা।
খবরে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এসডিআরএফ) উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। তবে প্রবল বর্ষণে ওই এলাকায় উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।
চলতি মাসের গোড়ার দিকে গৌরীকুণ্ডে ব্যাপক ভূমিধস হয়।
কর্মকর্তাদের মতে, ওই ভূমিধসে এখনো ১৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
আরও পড়ুন: চলতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাবদাহে ১৪৭ জনের মৃত্যু
পাকিস্তানে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নিহত ৩০, আহত ৬০
ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে ব্রিকস সম্মেলন-২০২৩: মডার্ন ডিপ্লোমেসি
মডার্ন ডিপ্লোমেসি শুক্রবার(১১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে বলেছে, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো প্রধান উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর গ্রুপ ব্রিকসের আসন্ন শীর্ষ সম্মেলন বিশ্ব ভূ-রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীর্ষ সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয় হলো- সদস্য দেশগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন মুদ্রা চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মার্কিন ডলারের আধিপত্য হ্রাস করার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপের ফলে ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সংস্কারের সম্ভাবনা রয়েছে এবং এই পদক্ষেপ আমেরিকান আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করবে।
এতে বলা হয়েছে, ‘দশকের পর দশক ধরে মার্কিন ডলার বিশ্ব বাণিজ্য ও লেনদেনে সর্বোচ্চ রাজত্ব করেছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অতুলনীয় অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক সুবিধা প্রদান করেছে। প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে এবং বল প্রয়োগ করতে যুক্তরাষ্ট্র তার ডলার ও অর্থনীতিকে ব্যবহার করছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হাতিয়ার হিসেবেও ডলারকে ব্যবহার করছে।’
আরও পড়ুন: দ. আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ
এতে আরও বলা হয়, মার্কিন আধিপত্য, শ্রেষ্ঠত্ব ও জবরদস্তির বিরুদ্ধে একত্রিত হতে তাদের মধ্যে যে প্রবণতা দেখা দিয়েছে তা ক্রমাগত বাড়ছে। ‘ব্রিকসের একটি একক মুদ্রার প্রস্তাবিত প্রবর্তন বা ডি-ডলারাইজেশনের লক্ষ্য এই স্থিতাবস্থাকে পরিবর্তন করা। এর মাধ্যমে সম্ভাব্যভাবে মার্কিন প্রভাব ও ক্ষমতা হ্রাস করবে। যা ডলারের আধিপত্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।’
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ব্রিকস একটি শক্তিশালী জোট এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে একটি বিশাল ভূমিকা পালন করে। সর্বোপরি এটি আমেরিকান প্রভাবের ঊর্ধ্বে।’ ‘ব্রিকস বিশ্ব অর্থনীতিকে সামগ্রিকভাবে রূপান্তরিত করার অবস্থানে রয়েছে। এই পদক্ষেপ মার্কিন ডলারের বৈশ্বিক আধিপত্যের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ এবং পূর্বাঞ্চলে টেক্কা দিতে অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস সম্মেলন ২০২৩: নতুন সদস্য হচ্ছে কোন কোন দেশ সেদিকেই সবার নজর
সিরিয়ায় সৈন্যদের বহনকারী বাসে বন্দুকধারীদের অতর্কিত হামলা, নিহত ২০
সিরিয়ায় সৈন্যদের বহনকারী একটি বাসে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ২০ জনকে হত্যা করেছে বন্দুকধারীরা। এতে আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় এই হামলা চালানো হয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির বিদ্রোহীরা।
বৃহস্পতিবার রাতের হামলাটি ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী (আইএস) সদস্যরা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গোষ্ঠীটি সিরিয়ায় ২০১৯ সালে পরাজিত হওয়ার পর থেকে দেশটির কিছু কিছু অংশে তাদের গুপ্তঘাতক দলগুলোর সাহায্যে মারাত্মক হামলা চালিয়ে আসছে।
ব্রিটেন-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ইরাকের সীমান্তবর্তী দেইর এল-জোর প্রদেশের মায়াদিনের পূর্বাঞ্চলীয় শহরের কাছে একটি মরুভূমির রাস্তায় হামলায় ২৩ সিরীয় সেনা নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় আইএসের ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে ৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত
পূর্ব সিরিয়ার সংবাদ পরিবেশনকারী আরেকটি অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ বলেছে, ২০ জন সেনা নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সামরিক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, বৃহস্পতিবার রাতে এই হামলায় ‘অনেক সেনা নিহত ও আহত হয়েছে।’ তবে এটি বিস্তারিত বিবরণ দেয়নি, বা হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কেও কিছু জানায়নি।
আইএস সিরিয়া এবং ইরাকের বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২০১৪ সালের জুন মাসে খেলাফত ঘোষণা করেছিল। মাত্র তিন বছরের মধ্যে তাদের দখল করা অঞ্চলগুলো হারাতে থাকে এবং ২০১৭ সালে ইরাকে এবং এর দুই বছর পরে সিরিয়ায় পরাজিত হয় গোষ্ঠীটি।
এর আগে এক বছরের মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে আইএস’র গুপ্তঘাতক দল দেশটির কেন্দ্রীয় শহর সুখনার কাছে ছত্রাক সংগ্রহকারীদের ওপর ভয়াবহ হামলা চালিয়ে ৫৩ জনকে হত্যা করেছিল। যাদের বেশির ভাগই শ্রমিক ছিল। এছাড়া হামলায় নিহতদের মধ্যে সিরিয়া সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েজন সদস্যও ছিল।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় বিমান হামলায় ২৯ তুর্কি সেনা নিহত
জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর ওপর গবেষণাকারী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চরমপন্থীদের হামলার নতুন ধারাটি সিরিয়া ও ইরাকের লাখ লাখ মানুষকে সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে শাসনকারীদের একটি নতুন পুনরুত্থানের চিহ্নিত করে কিনা তা খুব দ্রুতই ঠিক করতে হবে।
গত সপ্তাহে, আইএস সিরিয়ায় তার স্বল্প পরিচিত নেতা আবু আল-হুসেইন আল-হুসেইনি আল-কুরায়শির মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে। এই নেতা গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে চরমপন্থী সংগঠনটির প্রধান ছিলেন। মৃত্যুর আগে তার উত্তরাধিকারীর নামও ঘোষণা করেছেন তিনি। ২০১৯ সালে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় মার্কিন সেনাদের হাতে এর প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর আল-বাগদাদি নিহত হওয়ার পর চতুর্থ শীর্ষ নেতা হিসেবে তিনি নিহত হন।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানে নিহত ১৩
লোকসভায় মোদি সরকারের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় লোকসভায় খারিজ হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, লোকসভায় এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব কণ্ঠভোটে বাতিল হয়েছে।
বিরোধীরা গত ২৬ জুলাই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল এবং লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা সেটি গ্রহণ করেছিলেন।
প্রস্তাবের তিন দিন মণিপুর সহিংসতা এবং অন্যান্য উত্তেজনাপূর্ণ ইস্যুতে সরকার ও বিরোধী জোটের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ চলে।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অন্ধ্রপ্রদেশকে একটি বিশেষ বিভাগের মর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে ২০১৮ সালে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম এই প্রস্তাব আনা হয়েছিল। তবে সেটি খারিজ হয়ে যায়।
৩৩১ জন সংসদ সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে এনডিএ সরকারের। এর মধ্যে বিজেপির ৩০৩ জন সংসদ সদস্যে রয়েছে। এছাড়া বিরোধী জোট ইন্ডিয়া’র ১৪৪ জন সংসদ সদস্য এবং নিম্নকক্ষে এই দুই জোটের বাইরের দলগুলোর সংসদ সদস্য সংখ্যা ৭০ জন।
আরও পড়ুন: ভারতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের আইনপ্রণেতাদের বিক্ষোভ মিছিল
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের বিতর্কের জবাব দেওয়ার সময় কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করেছেন।
এসময় কংগ্রেসের প্রতি দেশের জনগণের আস্থা নেই বলেও তিনি বিদ্রুপ করেন।
মোদি বলেন, “কংগ্রেসের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা নেই। অহংকারের কারণে তারা বাস্তবতা দেখতে পাচ্ছে না। তামিলনাড়ুতে তারা ১৯৬২ সালে জিতেছিল এবং ১৯৬২ সাল থেকে তামিলনাড়ুর মানুষ বলছে ‘নো কংগ্রেস’। পশ্চিমবঙ্গে তারা ১৯৭২ সালে জিতেছিল, পশ্চিমবঙ্গের মানুষও বলছে ‘নো কংগ্রেস’। ইউপি, বিহার ও গুজরাটে তারা ১৯৮৫ সালে জিতেছিল এবং এই রাজ্যগুলোর মানুষও বলছে ‘নো কংগ্রেস’।’’
বিরোধীদের অনাস্থা সবসময়ই এনডিএ সরকারের জন্য সৌভাগ্যজনক বলেও মন্তব্য করেন মোদি।
তিনি আরও বলেন, ‘একঅর্থে বিরোধীদের অনাস্থা সবসময়ই আমাদের জন্য সৌভাগ্যজনক। আজ, আমি দেখতে পাচ্ছি, আপনারা (বিরোধীরা) ভাবছেন, আগের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ২০২৪ সালের নির্বাচনে এনডিএ ও বিজেপি দুর্দান্ত জয় নিয়ে ফিরে আসবে।’
তিনি বলেন, আমাদের সরকারের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা বহুবার পরীক্ষিত।
আরও পড়ুন: জি২০ অর্থমন্ত্রীদের 'সবচেয়ে নাজুক মানুষদের' দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান মোদির
মোদির তথ্যচিত্র প্রকাশের পর বিবিসির দিল্লি অফিসে তল্লাশি
হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপে দাবানলে ৫৩ জনের মৃত্যু: গভর্নর
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মাউই শহরে দাবানলে পুড়ে কমপক্ষে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) এ তথ্য নিশ্চিত করে হাওয়াইয়ের গভর্নর জোশ গ্রিন বলেন, ‘কয়েকটি জায়গা ছাড়া পুরো লাহাইনা পুড়ে গেছে।’
তিনি বলেন, আগুনে এক হাজারেরও বেশি স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে, সেগুলো এখনও জ্বলছে।
গ্রিন আরও বলেন, আমরা মর্মাহত। ১৯৬০ সালের সুনামিতে বিগ আইল্যান্ডে ৬১ জন নিহত হওয়ার পর এটিই দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সরকারি হিসাবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫৩। তবে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
গত মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) উত্তপ্ত গ্রীষ্মকাল এবং একটি ক্ষণস্থায়ী হারিকেনের প্রবল বাতাস থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। মাউইবাসীকে অবাক করে দিয়ে মুহূর্তে দ্বীপের বাড়িঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ২০১৮ সালের ক্যাম্প ফায়ারের পর থেকে এটি দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল। ২০১৮ সালে কমপক্ষে ৮৫ জন নিহত হয় এবং প্যারাডাইস শহর ধ্বংস হয়ে যায়।
হাওয়াই ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির মুখপাত্র অ্যাডাম ওয়েইনট্রাব বলেছেন, ‘আমরা এখনও জীবন বাঁচানোর চেষ্টায় আছি। অনুসন্ধান ও উদ্ধার আমাদের অগ্রাধিকার।’
আরও পড়ুন: চলতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাবদাহে ১৪৭ জনের মৃত্যু
ওয়েইনট্রাব আরও বলেন, ফায়ার লাইনগুলো নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত উদ্ধারকারী দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ভেতরে ঢুকতে পারবে না।
বস্কো বে নামে লাহাইনার এক বাসিন্দা মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, রাস্তার প্রায় প্রতিটি ভবনে আগুন জ্বলছে, বাতাসের মধ্যে স্ফুলিঙ্গ ছুটে আসছে।
বে বলেন, তিনি দ্বীপের বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে একজন। তিনি দ্বীপের প্রধান বিমানবন্দরে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন তিনি বাড়ি ফেরার অনুমতির অপেক্ষায় আছেন।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসা গুয়াতেমালার ৩১ বছর বয়সী বাবুর্চি মার্লন ভাসকেজ জানান, তিনি যখন ফায়ার অ্যালার্ম শুনতে পান, তখন আর গাড়ি নিয়ে পালানোর সুযোগ ছিল না।
তিনি বলেন, ‘আমি দরজা খুলে দেখি আগুন প্রায় আমার উপরে ছিল।’
বর্তমানে তিনি একটি জিমনেসিয়ামের পরিত্যক্ত একটি ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দৌড়ে পালিয়েছিলাম। প্রায় সারারাত এবং পরের দিন পর্যন্ত আমরা দৌড়েছি। কারণ আগুন তখনও থামেনি।’
লাহাইনার বাসিন্দা কামুয়েলা কাওয়াকোয়া ও আইউলিয়া ইয়াসো দম্পতি ধোঁয়ার মধ্যে দিয়ে তাদের পালানোর ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।
তারা জানান, তাদের ৬ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে তারা সুপারমার্কেটে গিয়েছিলেন। সেখানে আগুন দেখে দ্রুত তাদের অ্যাপার্টমেন্টে ফেরেন তারা। এসময় তাদের চারপাশের ঝোপগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, তারা দ্রুত পোশাক পরিবর্তন করে দৌড়ানো শুরু করেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নিহত ৩০, আহত ৬০
বৃহস্পতিবার চেলসি ভিয়েরার নামক এক বাসিন্দা জানান, সে ও তার দাদি লুইস আবিহাই হেল মাওলুতে বাস করতেন। সে আগুন থেকে পালাতে পারলেও তার দাদির কী হয়েছে তা তিনি জানেন না। দাদির বয়স ৯৭ বছর।
তিনি বলেন, মানুষ ওই দ্বীপে বসবাসরত স্বজনদের খুঁজছে এবং হাসপাতালে ফোন করছেন। আমার কাছে ফোন নেই, তাই পরিবারকেও জানাতে পারছি যে আমি নিরাপদে আছি।
তিনি বলেন, ‘তিনি (দাদি) কোথায় গেছেন, কোথায় খোঁজ করব বা কাকে জিজ্ঞাসা করব আমি জানি না।’
৯১১, ল্যান্ডলাইন ও সেলুলার পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ায় দ্বীপে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। মাউয়ের কিছু অংশেও বিদ্যুৎ চলে গেছে।
রাজ্য পরিবহন পরিচালক অ্যাড স্নিফেন জানান, দ্বীপে পর্যটক প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বুধবার মাউইয়ের প্রায় ১১ হাজার অধিবাসীকে এবং বৃহস্পতিবার কমপক্ষে ১৫০০ জনকে নিরাপদে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তারা রাজধানী হনলুলুর হাওয়াই কনভেনশন সেন্টারে কয়েক হাজার মানুষের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তূত করেছে।
লাহাইনার দক্ষিণ-পূর্বের কিহেইতে বুধবার রাতেও গাছ ও বাড়িতে আগুন জ্বলতে থাকায় দ্বীপটির মাটি পর্যন্ত পুড়ে লাল হয়ে গেছে।
এই গ্রীষ্মে বিশ্বজুড়ে চরম আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট বিপর্যয়ের মধ্যে এটি সর্বশেষতম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের ঘটনার সম্ভাবনা বাড়ছে।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের এনভা্য়রনমেন্টাল জিওগ্রাফি’র একজন সহযোগী অধ্যাপক টমাস স্মিথ বলেছেন, হাওয়াইতে দাবানল অস্বাভাবিক নয়। গত কয়েক সপ্তাহের আবহাওয়া একটি বিধ্বংসী দাবানলের জ্বালানি তৈরি করেছিল এবং হারিকেন ডোরা’র ফলে সৃষ্ট প্রবল বাতাস মিলে এই বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।
মেয়র মিচ রথ বলেছেন, হাওয়াইয়ের বিগ আইল্যান্ডও বর্তমানে দাবানলের কবলে পড়ছে। যদিও সেখানে কোনো আহত বা ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
হাওয়াইয়ের রাজ্য প্রতিরক্ষা বিভাগের মেজর জেনারেল কেনেথ হারা বুধবার রাতে বলেছেন, তিনি কর্মকর্তাদের যোগাযোগ পুনরুদ্ধার ও খাবার পানি সরবরাহ করার কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক পুনরুদ্ধারের গতি বাড়িয়েছে বেইজিং
তিনি বলেন, ন্যাশনাল গার্ড হেলিকপ্টার আগুনের উপর ১ লাখ ৫০ হাজার গ্যালন (৫ লাখ ৬৮ হাজার লিটার) পানি দিয়েছে।
কোস্টগার্ড জানিয়েছে, তারা ১৪ জনকে উদ্ধার করেছে যারা আগুনের শিখা ও ধোঁয়া থেকে বাঁচতে পানিতে ঝাঁপ দিয়েছিল।
মাউই কাউন্টির মেয়র রিচার্ড বিসেন জুনিয়র বুধবার বলেছেন, কর্মকর্তারা এখনও আগুনের কারণ অনুসন্ধান শুরু করেননি।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার উটাহ ভ্রমণ করে মাউই’র ঘটনাকে দেশের জন্য বড় বিপর্যয় বলে ঘোষণা করেছেন।
তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ‘যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছে, যাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ধ্বংস হয়েছে; অবিলম্বে তাদের সাহায্য পৌঁছানোর বিষয়টি ফেডারেল সরকার নিশ্চিত করবে।
ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের হামলায় ৬ তুর্কি সেনা নিহত : আঙ্কারা
উত্তর ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের বুধবার রাতের হামলায় অন্তত ছয় তুর্কি সেনা নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই হতাহতের কথা জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের শেয়ার করা একটি সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে জানায়, পরে প্রতিশোধমূলক বিমান হামলায় বৃহস্পতিবার নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে-র চার সদস্যও মারা গেছেন।
একদিকে তুরস্ক এবং তুর্কি সমর্থিত গোষ্ঠী এবং অন্যদিকে ইরাক ও সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের মধ্যে মাসব্যাপী উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে সর্বশেষ সহিংসতা এটি।
তুরস্কের মধ্যে এক দশক ধরে বিদ্রোহ চালিয়েছে যাওয়া পিকেকে এবং সিরিয়া ও ইরাকের মিত্র কুর্দি গোষ্ঠীগুলিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে বিবেচনা করে আঙ্কারা। তুরস্ক দাবি করে যে পিকেকে সদস্যরা নিয়মিতভাবে উত্তর ইরাকের আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি অঞ্চলে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায়।
বাগদাদে ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে, উত্তর ইরাকের কুর্দি অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে বুধবার ইরাকের সুলায়মানিয়াহ প্রদেশে পিকেকের গাড়ি লক্ষ্য করে পৃথক দুটি তুর্কি ড্রোন হামলায় দুই বিদ্রোহী নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।
তুরস্ক ইরাকের একটি সীমান্ত অঞ্চলে সৈন্য মোতায়েন করে এবং সেখানে পিকেকে অবস্থানগুলোকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে। গত বছর এটি উত্তর ইরাকে পিকেকে-এর বিরুদ্ধে ‘ক্ল-লক’ নামে একটি স্থল ও বিমান অভিযান শুরু করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইরাকি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেছেন, বৃহস্পতিবারের বিমান হামলা দুহোক শহরের উত্তরে অবস্থানে আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় মার্কিন-সমর্থিত কুর্দি যোদ্ধাদের ওপর আইএসের হামলা
তুর্কি কর্নেল জেকি আকতুর্ক নিহত সেনাদের প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের সৈন্যরা শহীদদের রক্ত মাটিতে ছাড়বে না।একজন সন্ত্রাসী অবশিষ্ট না থাকা পর্যন্ত একই দৃঢ়তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তুর্কি বাহিনী তাদের লড়াই চালিয়ে যাবে।’
১৯৮৪ সাল থেকে তুরস্কে পিকেকে-এর বিদ্রোহীরা কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় হামলায় নিহত ১০, কুর্দি বাহিনীর হাতে ৫২ জঙ্গি গ্রেপ্তার