বিশ্ব
সৌদিকে ১০ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র দেওয়ার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র
সৌদি আরবকে ১০ হাজার কোটি ডলার বা তারও বেশি মূল্যের (১০০ বিলিয়ন ডলার) অস্ত্র সরবরাহের প্রস্তাব দেবে বলে প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি সফরকালে এ প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। সংশ্লিষ্ট অন্তত ছয়টি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বলে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে।
এর আগে, রিয়াদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত একটি চুক্তি সম্পাদনে ব্যর্থ হয় বাইডেন প্রশাসন। সেই চুক্তিটি বাস্তবায়নেই বিরাট অঙ্কের এই অস্ত্র সরবরাহের প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে সুদূরপ্রসারী এক সমঝোতার অংশ হিসেবে ওই চুক্তি সম্পাদনের চেষ্টা চালিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন। সে সময় চীন থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধ এবং সৌদিতে চীনা বিনিয়োগ সীমিত করার শর্তে রিয়াদকে আরও উন্নত মার্কিন অস্ত্র দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন। তবে নতুন করে ট্রাম্পের উত্থাপিত প্রস্তাবেও এই বিষয়গুলো অর্ন্তভুক্ত থাকবে কিনা, সূত্রগুলো তা নিশ্চিত করতে পারেনি।
তারা জানিয়েছে, এ বিষয়ে হোয়াইট হাউস ও সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌদি যুবরাজের বৈঠক
যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে সৌদির সঙ্গে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। এ সুসম্পর্ক টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি পারস্পরিক নিরাপত্তা সহায়তা নিশ্চিত করতে সৌদির প্রতিরক্ষা চাহিদা মেটাতে ওয়াশিংটন কাজ করে যাবে বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই রিয়াদকে অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে। প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর দেশটিকে আনুমানিক ১১ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র সরবরাহের প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে ২০১৮ সাল নাগাদ মাত্র ১ হাজার ৪২০ কোটি ডলারের অস্ত্র সরবরাহ প্রক্রিয়াধীন ছিল।
সে সময় সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর সৌদির সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে প্রশ্ন ওঠে। পরে ২০২১ সালে বাইডেনের আমলেই খাসোগি হত্যার প্রতিবাদ ও ইয়েমেনে যুদ্ধ বন্ধে সৌদিকে যেকোনো ধরনের অস্ত্র সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন কংগ্রেস।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, বড় ধরনের কোনো আন্তর্জাতিক অস্ত্র চু্ক্তি সম্পাদনে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হয়।
অনেক ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছে সৌদি আরব। ট্রাম্পের আসন্ন সৌদি সফরকালে এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছে অন্তত তিনটি সূত্র। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে সৌদি আরবের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে বলে ধারণা সূত্রগুলোর।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একমত ট্রাম্প-পুতিন, বসবেন সৌদিতে
২৩৩ দিন আগে
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সিআইএ কর্মকর্তার ছেলে নিহত
গাজাযুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন করায় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর জমা ক্ষোভ থেকে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) এক উপ-পরিচালকের ছেলে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে গত বছর প্রাণও হারিয়েছেন ওই যুবক। সম্প্রতি রাশিয়ান গণমাধ্যম আইস্টোরিসের অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, সিআইয়ের উপ-পরিচালক জুলিয়ান গ্যালানের ২১ বছর বয়সী ছেলে মাইকেল আলেকজান্ডার গ্লস। তিনি ২০২৪ সালের ৪ এপ্রিল পূর্ব-ইউক্রেনে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে প্রাণ হারান।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম থেকে কিয়েভের অন্যতম সহায়তাকারী দেশ ছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নানাভাবে ইউক্রেনকে সহায়তা করেছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে।
সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার বসবাসরত একজন মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তার সন্তান কীভাবে রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরলো এই কাহিনী অবাক করেছে অনেককেই।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন ট্রাম্প
রুশ সামাজিকমাধ্যম ‘ভিকেতে’ দেওয়া এক পোস্টে গ্লস নিজেকে বহুত্ববাদী বিশ্বের সমর্থক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ঘর ছেড়ে পালিয়েছি, বিশ্ব ঘুরেছি। আমি ফ্যাসীবাদকে ঘৃণা করি। আমি আমার জন্মভূমিকে ভালোবাসি।’ তিনি তার নিউজ ফিডে ফিলিস্তিনের পতাকাও শেয়ার করতেন।
আইস্টোরিসের প্রতিবেদনের তথ্যমতে, গ্লস ২০২২ সালে রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া এক হাজার ৫০০ বিদেশির মধ্যে একজন। তবে এ সম্পর্কিত নথি ফাঁস হলে জানা যায়, গ্লস ২০২৩ সালের সেপ্টেস্বরে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে একটি চুক্তিতে সই করেছিলেন।
এক সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যোগদানের তিনমাস পর ডিসেম্বরে তাকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সম্মুখসারিতে (অ্যাসল্ট ইউনিট) মোতায়ন করা হয়।
গ্লসের এক পরিচিত জানান, ইউক্রেনের কাছে শোলেদার নামক শহরে তাকে এয়ারবর্ন রেজিমেন্টে (যারা প্যারাস্যুট দিয়ে বিমান থেকে নেমে রণক্ষেত্রে লড়াই করেন) তাকে মোতায়ন করা হয়।
গ্লস নিহত হওয়ার পর এক শোকর্বাতায় তার পরিবার জানায়, ‘মহৎ হৃদয়ের অধিকারী গ্লস বীরের মতো লড়তে লড়তে পূর্ব ইউরোপে প্রাণ হারিয়েছেন।’ এই শোকবার্তায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কোনো উল্লেখ ছিল না।
গ্লসের অতীত সম্পর্কে খোঁজ নিলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে তিনি লিঙ্গ সমতা ও পরিবেশবাদী আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। তিনি বামপন্থি পরিবেশবাদী সংগঠন ‘রেইনবো ফ্যামিলি’-তে সংযুক্ত হয়েছিলেন। এমনকি ২০২৩ সালে তুরস্কের ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেলে তাদের সহায়তা করতে সেখানে ছুটে যান এই যুবক।
এ সময় গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা শুরু হলে এবং যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সমর্থন করলে তিনি নিজ দেশের ওপর বেশ রাগান্বিত হন।
আরও পড়ুন: 'অবিলম্বে' রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের
গ্লসের এক পরিচিত বলেন, ‘তুরস্কে থাকার সময় থেকেই রাশিয়ার যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন এই মানবদরদী যুবক। ফিলিস্তিনে মানুষগুলো মরতে দেখে যুক্তরাষ্টের ওপর ক্ষোভ বাড়তে থাকে তার। এক পর্যায়ে নিজ দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার চিন্তা করতে থাকেন গ্লস।’
বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক ভিডিও দেখে প্রভাবিত হয়েই গ্লস এমন চিন্তা করেছিলেন বলে মন্তব্য করেন ওই পরিচিত।
আইস্টোরির বিভিন্ন ভিডিও ও ছবিতে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর নেপালি চুক্তিভিত্তিক সৈন্যদের সঙ্গে গ্লসকে প্রশিক্ষণ নিতে দেখা দেখা গেছে। তবে গ্লসের এক পরিচিত জানান, যুদ্ধে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা তার ছিল না। গ্লস ভেবেছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দিলে গ্লস রাশিয়ায় থাকার সুযোগ পাবে।
রাশিয়ার ভিসা শেষ হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তেই গ্লস সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন বলেই তথ্য পাওয়া যায়।তবে গ্লসের মৃত্যু রহস্য এখনো সমাধান হয়নি। তার এক বন্ধু জানান, গ্লসের পরিবারকে তার মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করে মস্কো। তবে কিভাবে তিনি মারা গেলেন, তার বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। গ্লস ইউক্রেনের সীমানার মধ্যে মারা গিয়েছেন— কেবল এতটুকুই জানানো হয় পরিবারকে।
তাছাড়া গ্লসের পরিবার সম্পর্কে কিংবা তিনি যে যুক্তরাষ্ট্রের এক উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা কর্মকর্তার সন্তান; এই বিষয়টি ক্রেমলিন সরকার জানতো কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য সিআইয়ে যোগাযোগ করেছে দ্য গার্ডিয়ান, কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি।
২৩৩ দিন আগে
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: মধ্যস্থতায় এগিয়ে এলো সৌদি-ইরান
অধিকৃত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসনে দুই দেশকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে মিত্র দেশ সৌদি আরব ও ইরান। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দেশ দুটির মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছে তারা।
পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ভারতের ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন সৌদি ও ইরানের সমকক্ষ কর্মকর্তারা।গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন। এ ঘটনায় পাকিস্তান জড়িত বলে অভিযোগ করেছে চিরবৈরী ভারত। যদিও হামলার সঙ্গে কোনোরকম সংশ্লিষ্টতার দায় অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।
এতে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হয়।
আরও পড়ুন: ভারতের কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলা, নিহত ২৬
ভারতের দাবি, পাকিস্তানের সেনারা প্রথমে গুলি ছুড়েছে, তারাও পাল্টা জবাব দিয়েছে। তবে বেসামরিক জনগণের ওপর কোনো গোলাগুলি করা হয়নি বলে উভয় পক্ষ থেকেই নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর আগে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ফিরে ভিসা বাতিল করে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এতে ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকেরা নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে শুরু করেন।
এ পরিস্থিতিতে দেশদুটির মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসনে এগিয়ে এসেছে দুই দেশের মিত্র ইরান ও সৌদি। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান পাকিস্তানের তার সমকক্ষ ইসহাক দারের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন।
এ সময় আলাপে ভারতের অভিযোগগুলো প্রত্যাখান করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার বিষয়েও সতর্ক করেছেন তিনি।
পাশাপাশি ভারতের যেকোনো আগ্রাসনের কড়া জবাব দিতে পাকিস্তান দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলেও উল্লেখ করেন ইসহাক দার। তবে সৌদির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতেও সম্মত হয়েছেন তিনি।
এদিকে সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, তিনি পহেলগামে হামলার বিষয়ে প্রিন্স ফয়সালের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। এ সময়ে হামলার সঙ্গে সীমান্ত-যোগসূত্র (ক্রস-বর্ডার লিঙ্কেজ) নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ওয়াকফ আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ হবে না: মমতা
অন্যদিকে দিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা নিরসনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান।
এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশই ইরানের মিত্র। চলমান এই কঠিন পরিস্থিতিতে ইরান দেশদুটিতে তাদের সুপ্রতিষ্ঠিত প্রভাব কাজে লাগিয়ে সমঝোতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।’
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন পাকিস্তানের ইসহাক দার। শুক্রবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, ‘কোনো দেশ যদি ভারতের সঙ্গে তাদের মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেয়, তারা বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’
এদিকে দুই প্রতিবেশীর মধ্যকার এই উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনে তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
২৩৩ দিন আগে
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২১ ফিলিস্তিনি নিহত
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় শুক্রবার অন্তত ২১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে এই তথ্য জানিয়েছে।
সংস্থাটির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানিয়েছেন, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের দক্ষিণ-পূর্বে আল-ফাখারি শহরের পূর্ব এলাকার একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৯ জন নিহত হয়েছেন। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, গাজা শহর এবং খান ইউনিসের আশেপাশের অন্যান্য এলাকায় ব্যাপক বিমান হামলার খবর পাওয়া গেছে। যদিও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই হামলার ঘটনাগুলো সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি।
গাজা সিটিতে, শুজাইয়া এবং তুফাহ এলাকায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের সময় ইসরায়েলি বিমানের হামলাও তীব্র হয় ও কামানের বোমাবর্ষণ করা হয়। ফলে আশপাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছড়িয়ে পড়ে। ফিলিস্তিনি সূত্র জানায়, একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, এলাকা জুড়ে ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়ছে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা
শুক্রবার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আভিচায় আদরাই বলেছেন, ২৫২তম ডিভিশনের ৪০১তম ব্রিগেডের সৈন্যরা বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে এই এলাকায় ‘সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে’ লক্ষ্য করে অভিযান চালিয়ে আসছে।
তিনি উল্লেখ করেন, একটি ইসরায়েলি ড্রোন একটি ভবন থেকে ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের সঙ্গে জড়িত একটি ফিলিস্তিনি সেলের সদস্যদের হত্যা করেছে। ওই অভিযানের সময় কোনো ইসরায়েলি হতাহত হয়নি।
এদিকে, ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কান টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ গাজায় ৬ জন ইসরায়েলি সৈন্য আহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। তবে এই ঘটনাকে ‘নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঘটনা’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এই ঘটনার বিষয়ে আদরাই নিশ্চিত করেছেন যে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় সংঘর্ষের সময় ৫২৫০তম ব্যাটালিয়নের একজন রিজার্ভ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবাইদা পৃথক এক বিবৃতিতে বলেছেন, তাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্যবস্তু করে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলা, নিহত ২৬
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল তার তীব্র সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করেছে। এরপর থেকে কমপক্ষে ২ হাজার ৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন অন্তত ৫ হাজার ৩৭৫ জন ফিলিস্তিনি। যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা ৫১ হাজার ৪৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৪১৬ জনে।
২৩৪ দিন আগে
কেনিয়ায় পাচার থেকে রক্ষা পাচ্ছে না পিঁপড়াও, উদ্বিগ্ন পরিবেশবাদীরা
পৃথিবীজুড়ে অসাধু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীসহ বিভিন্ন অপরাধচক্র মানুষ থেকে শুরু করে নানা পণ্য ও প্রাণী পাচার করে থাকে। এসব দুষ্ট লোকের হাত থেকে শেষমেষ রক্ষা পায়নি পিঁপড়াও! ক্ষুদ্র এই জীবগুলোকেও টিউববন্দি করে অর্থ উপাজর্নের আশায় পাচার করা শুরু করেছে মানুষ। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা।
এই পিঁপড়া পাচারের ঘটনাটি ঘটেছে আফ্রিকান দেশ কেনিয়াতে। দেশটির বনাঞ্চলগুলো বিভিন্ন বণ্যপ্রাণীর পাচারের জন্য আগে থেকেই কুখ্যাত। চলতি মাসের শুরুর দিকে নিজেদের প্রতিদিনের দায়িত্ব পালন করছিলেন কেনিয়ার বণ্যপ্রাণী সেবার (কেডব্লিউএস) কর্মকর্তারা। এ সময়ে ৫ হাজার পিঁপড়া পাচার করার সময় দুই বেলজিয়ান তরুণকে আটক করেছেন তারা।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, এ অভিযানটি ছিল সবথেকে ছোট প্রাণীর পাচার রোধ করার সবথেকে বড় অভিযান। কারণ উদ্ধারকৃত প্রাণীগুলো ছিল ১৮ থেকে ২৫ মিলিমিটার দীর্ঘ পিঁপড়া।
এই পিঁপড়াগুলোকে এশিয়া ও ইউরোপের বাজারে পাচার করার জন্য ওই দুই তরুণ একটি কাভার্ড ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানান কেডব্লিউএসের কর্মকর্তারা। সিরিঞ্জ ও টিউবের মধ্যে তুলা ভরে তার মধ্যে পিঁপড়াগুলোকে রাখা হয়েছিল। এই পরিবেশে পিঁপড়া বেশ কয়েকদিন বেঁচে থাকতে বলে জানান কর্মকর্তারা।
পাচারকারী তরুণ লর্নি ডেভিড বলেন, ‘আমরা কোনো আইন ভাঙতে এ কাজ করিনি। দুর্ঘটনাবশত বোকামির কারণে এটি করে ফেলেছি।’
ডেভিড ও তার সহযোগী সেপে লোডেউইজিক্স দুজনেই ১৯ বছর বয়সী। পিঁপড়া পাচারের অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে। এর আগে একই অভিযোগে ৪০০ পিঁপড়াসহ আরও দুই ব্যক্তিতে আটক করেন কেনিয়ার বন কর্মকর্তারা। গত ২৩ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পর্যালোচনা করে আদালত তাদের হেফাজতে রাখারই নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কেমন হওয়া উচিত সকালের শুরুটা?
কেডব্লিউএসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পিঁপড়া পাচারের এই ঘটনাগুলো সাম্প্রতিক সময়ে প্রাণী পাচারের ক্ষেত্রে এক ধরনের পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করে। বড় স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে এখন কম দৃশ্যমান ছোট সাইজের প্রাণীর পাচার লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
২৩৫ দিন আগে
পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি বাদ দিতে হবে ইরানকে: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেকোনো চুক্তি করতে হলে কিংবা সামরিক হামলার ঝুঁকি এড়াতে ইরানকে সব ধরনের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি পুরোপুরি বাতিল করতে হবে জানিয়েছেন মার্কিন পররারষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৩ এপ্রিল) সাংবাদিক বারি ওয়েসিসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
রুবিও জানান, ইরান যদি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করে একটি চুক্তি করতে চায়, তাহলে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মতো পারমাণবিক কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে এতে সামরিক হামলার ঝুঁকিও এড়াতে সক্ষম হবে তেহরান।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইরান যদি শান্তিপূর্ণ পারমানবিক কর্মসূচি চায়, তারা সেটি করতেই পারে। তবে সেক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের মতো সমৃদ্ধ উপাদানগুলো (ইউরেনিয়াম) আমদানি করতে হবে।’
এদিকে, ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে তারা শান্তিপূর্ণভাবেই পারমাণবিক কর্মসূচি পরিচালনা করে। সক্ষমতা থাকলেও তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো চেষ্টা করেনি। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বাতিলের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে তেহরান।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করার লক্ষ্যে ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বের করে নিয়ে আসে। দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরেই ইরানকে চাপে ফেলতে আরও কঠিন শর্ত দিয়ে একটি চুক্তির সম্পাদনের উদ্যোগ নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তি কি তবে হতে চলেছে?
ট্রাম্প গত ৫ মার্চ ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে আলোচনায় আসার জন্য একটি চিঠি লেখেন। পরদিন টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এসে নিজেই বলেন, ‘আমি তাদের একটি চিঠি লিখেছি। চিঠিতে বলেছি, আপনারা আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসুন, নাহলে আমরা সামরিক হামলা চালাতে বাধ্য হব। সেটি কিন্তু খুব খারাপ হবে।’
প্রথমে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখান করলেও ইতোমধ্যে দুই দফা আলোচনা হয়েছে দেশ দুটির মধ্যে। চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ কৌশলগত আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়া কথা রয়েছে। নিজেদের অর্থনীতির উন্নতির লক্ষ্যে ইরান এমন একটি চুক্তি চায়, যেখানে দেশটির ওপর চলমান নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেন, ‘ইরানের সঙ্গে কোনো চুক্তি হওয়া থেকে এখনো অনেক দূরে রয়েছি আমরা। কোনো চুক্তি আদৌ হবে কিনা, তা-ও বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা চাই একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান।’
মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে জর্জরিত পরিস্থিতি উল্লেখ করে রুবিও বলেন, এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র বা অন্যকোনো শক্তি যদি ইরানের হামলা চালায়, তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চাইলেই হামলা চালাতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা না করে শান্তিপূর্ণ সমাধানকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।’
এর আগে, গত সপ্তাহে ইরানের সঙ্গে আলোচনা শেষে ইরান চাইলে সীমিত আকারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালু রাখতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিফ উইটকফ। তবে এতে আপত্তি জানায় অনেক রক্ষণশীল আমেরিকানসহ ইসরায়েল। পরে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, চুক্তি করতে হলে ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে।
২৩৫ দিন আগে
রং হারিয়ে ঝুঁকির মুখে বিশ্বের অধিকাংশ প্রবালপ্রাচীর
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে ব্লিচিং বা রং হারানোর কবলে পড়েছে বিশ্বের প্রায় ৮৪ শতাংশ প্রবালপ্রাচীর। এতে প্রবালগুলো মারা যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৩ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক প্রবাল প্রাচীর উদ্যোগ (আইসিআরআই) এ তথ্য জানিয়েছে। এটিকে পৃথিবীর ইতিহাসে সবথেকে বড় প্রবাল ব্লিচিংয়ের ঘটনা বলে অভিহিত করেছে সংস্থাটি।
২০২৩ সালের বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে কোরাল ব্লিচিং বা সামুদ্রিক শৈবালের রং হারানোর এই সংকট শুরু হয়, যা চলতি বছরে তীব্র আকার ধারণ করেছে। মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে এমন বলা হয়েছে।
আইসিআরআইয়ের তথ্যমতে, এ নিয়ে চতুর্থ বারের মতো প্রবাল ব্লিচিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। আশির দশক থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রবালপ্রাচীরের মধ্যে ঝুঁকির বিষয়টি লক্ষ করা যায়। নব্বইয়ের দশকের শেষ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রবালপ্রাচীরের ক্ষতির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হয়।
পর্যবেক্ষণের তথ্যাদি থেকে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে সারা বিশ্বের সব প্রবালপ্রাচীর ব্লিচের শিকার হয়। এরপর ২০১৪-১৭ সাল নাগাদ বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ প্রবালপ্রাচীর রং হারায়। ওই ঘটনার পর সাম্পতিক সময়ে ভয়াবহ আকারে আবার শুরু হয়েছে প্রবাল ব্লিচিং।
আরও পড়ুন: কার্বন বাণিজ্য কী? এটি কীভাবে কাজ করে?
আন্তর্জাতিক প্রবালপ্রাচীর সোসাইটির নির্বাহী সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সামুদ্রিক ও বায়ুমণ্ডলীয় প্রশাসনের প্রধান পর্যবেক্ষক মার্ক একিন বলেন, ‘তাপদাহের কারণে সামুদ্রিক প্রবালের রং হারানোর ঘটনায় বিশ্বব্যাপী এমন সংকট তৈরি হতে এর আগে কখনোই দেখা যায়নি।’
২৩৬ দিন আগে
ভারতের কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলা, নিহত ২৬
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এই কাশ্মীরের পহেলগামে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। খবর ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির।
এমন এক সময়ে ভারতে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে, যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাষ্ট্রীয় সফরে সৌদি আরব গেছেন। পাশাপাশি ভারত সফরে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।
হিমালয়ের কোলে অবস্থিত মনোরম শহর পেহেলগামকে ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। জনপ্রিয় এই পর্যটন নগরীর এই হামলা ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা। হামলার পর আহতদের উদ্ধারে সেখানে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে। কারণ, এই এলাকায় কেবল হেঁটে বা ঘোড়ায় চড়ে পৌঁছানো সম্ভব।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ায় সন্দেহভাজন রাখালদের হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭২
এনডিটিভি জানিয়েছে, পহেলগামের বৈসারণ উপত্যকার ওপরে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জঙ্গিরা জঙ্গল থেকে হঠাৎ বের হয়ে নির্বিচারে গুলি শুরু করে। নিহতদের মধ্যে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা ও এক গোয়েন্দা কর্মকর্তাও রয়েছেন।
এ ঘটনায় কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে যতগুলো হামলা হয়েছে, সেগুলোর তুলনায় এটা অনেক বড় হামলা।’
হামলার পর নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে মঙ্গলবার রাতেই দেশে ফিরেছেন বলে এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে।
হামলায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন মোদি। গতকাল (মঙ্গলবার) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আমাদের সংকল্প অটুট রয়েছে এবং এটা আরও শক্তিশালী হবে।’
হামলার পর কাশ্মীরে গেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কাশ্মীরের শ্রীনগরে গিয়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দিল্লিতে অমিত শাহর বাসভবনে জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধান তপন দেকা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব গোবিন্দ মোহন, সিআরপিএফ প্রধান জ্ঞানেন্দ্র প্রতাপ সিং, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের মহাপরিচালক নলিন প্রভাতসহ সেনাবাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তা। ওমর আবদুল্লাহ এবং কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।
হামলার পর ঘটনাস্থল পেহেলগাম এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের এক খবরে বলা হয়, এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা এই ঘোষণা দিয়েছে। তবে বিষয়টি যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠীই হামলায় দায় স্বীকার করেনি।
এই হামলার তীব্র নিন্দা ও ভারতের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ইউরোপীয় ইউনিয়েনের প্রধান উরসুলা ভন দার লিয়েনসহ অনেকে।
২৩৭ দিন আগে
দাসদের মাথার খুলির পাত্রে পানীয় খেতেন অক্সফোর্ডের শিক্ষকরা!
ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক ইতিহাসের এক অন্ধকার অধ্যায় হলো দাসপ্রথা। কালো চামড়ার লাখ লাখ মানুষকে আফ্রিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলগুলো থেকে জোরপূর্বক আমেরিকা ও ইউরোপে বিক্রি করা হতো। দাসপ্রথার ভয়াবহতা সম্পর্কে কমবেশি সব মানুষই কখনো না-কখনো শুনেছেন।
নানা অনুসন্ধান বা গবেষণায় দাসদের প্রতিনিয়তই অত্যাচার-নিপীড়নের নতুন কোনো তথ্য উঠে আসছে। এমনকি মারা যাওয়ার পর তাদের দেহাবশেষও মুক্তি পায়নি অত্যাচার থেকে। মাথার খুলি দিয়ে তৈরি হয়েছে পাত্র!
মানুষের মাথার খুলি দিয়ে বানানো সেই পাত্রে কয়েক দশক ধরে পানীয় খেতেন অক্সফোর্ডের ওরচেস্টার কলেজের শিক্ষকরা! শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঔপনিবেশিক যুগে লুট করা মানব দেহাবশেষ নিয়ে অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে এমন বলা হয়েছে।
মানুষের খুলিকে পলিশ করে, রূপা দিয়ে হাতল ও চারপাশে নকশা করে অত্যন্ত সুন্দর করে এই পাত্রটি তৈরি করা হয়েছিল। মাত্র দশ বছর আগেও প্রতিনিয়ত এই পাত্র থেকে ওয়াইন খেতেন; পরে ওয়াইন চুইয়ে পড়া শুরু করলে তাতে চকোলেট খেতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
সম্প্রতি ওরচেস্টার কলেজের পিট রিভারস জাদুঘরের প্রত্নতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড্যান হিকসের আসতে চলা নতুন বই ‘এভরি মনুমেন্ট উইল ফল’ বইয়ে এসব লজ্জাজনক তথ্য উঠে এসেছে।
হিকস জানান, কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও অতিথিদের মধ্যে মানুষের খুলি দিয়ে বানানো পাত্রে পানীয় খেতে অস্বস্তি বাড়ার কারণে ২০১৯ সালের দিকে এই পাত্রের ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় এই পাত্রটি কোথা থেকে আর কী করে কলেজের খাবারের টেবিলে জায়গা পেল; তা জানতে হিকসকে অনুসন্ধান করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: দাবানল কী ও কেন হয়? পৃথিবীর ইতিহাসে ভয়ানক কয়েকটি দাবানল
হিকস বলেন, ঔপনিবেশিক ইতিহাস নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। তবে সেসব বিতর্ক সাধারণত এই ঔপনিবেশিক শাসন থেকে যারা লাভবান হয়েছে তাদের কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। যেমন সিসলি রোডস কিংবা এডওয়ার্ড কলস্টন— যাদের নামে অনেক স্ট্যাচু কিংবা প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়েছে।
তবে হিকস চেয়েছিলেন এসব লাভবান নয় বরং ঔপনিবেশিক শাসনের যারা শিকার, যাদের নাম ইতিহাস থেকে মুছে গিয়েছে, তাদের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসতে। তিনি বলেন, ব্রিটিশ সংস্কৃতি ও শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ নিয়ে থাকা বর্ণবাদের কারণে এসব মানুষকে একদমই গুরুত্ব দেওয়া হতো না। এ ধরণের অমানবিকতা ও পরিচয় ধ্বংস করাও সহিংসতার অংশ বলে মনে করেন তিনি।
পাত্রটির খুলির মালিক কে, তার একদম সঠিক কোনো তথ্য পাননি হিকস। তবে কার্বন ডেটিংয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যমতে, খুলিটি আনুমানিক ২২৫ বছর আগের। খুলির আকার ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য-প্রমাণ পর্যালোচনা করে হিকস জেনেছেন, খুলিটি একজন দাস নারীর এবং তাকে ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল।
খুলিটি কার সেটির কোনো তথ্য লিপিবদ্ধ না থাকলেও খুলি দিয়ে তৈরি পাত্রটির মালিকের নাম কিন্তু রূপা দিয়ে খোদাই করা ছিল। ১৯৪৬ সালে কলেজে এই পাত্রটি উপহার দেন সাবেক শিক্ষার্থী জর্জ পিট রিভারস।
যিনি একজন ইউজেনিসিস্ট ছিলেন। একটি বিশেষ জাতিকে সন্তান উৎপাদনের অনুমতি দেওয়ার মাধ্যমে মানুষের উন্নতি করার ধারণাকে ইউজেনিকস বলা হয়। এই ধারণার সাথে বর্ণবাদ ও নাৎসি তত্ত্বের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। যে কারণে পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই এই নীতিকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছেন না। নাৎসি শাসক ওসওয়াল্ড মোসলিকে সমর্থন করার জন্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সরকার তাকে কারাবন্দিও করেছিল।
যাইহোক, খুলিটি জর্জ পিট পেয়েছিলেন তার দাদা হেনরি লেন ফক্স পিট রিভার্সের থেকে। তিনিই পিট রিভার্স মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি ১৮৮৪ সালে একটি নিলামে এই পাত্রটি কিনেছিলেন। সে সময় পাত্রটিতে একটি কাঠের হাতল ছিল। সেটির নিচে রানী ভিক্টোরিয়ার নাম খোদিত ছিল এবং তার অভিষেকের বছরেই অর্থাৎ ১৮৩৮ সালে তৈরি করা হয়েছিল পাত্রটি। নিলামে পাত্রটি বিক্রি করেছিরেন বার্নাড স্মিথ নামে এক ব্যক্তি। হিকসের ধারণা এটি তিনি তার বাবার থেকে উপহার পেয়েছিলেন। স্মিথের বাবা ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ভিক্টোরিয়ান যুগে রয়েল আর্মিতে কর্মরত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ব্রিটেনে গর্ভপাতের পর ‘শোক ছুটি’ পাবেন মা-বাবা
আফ্রিকান ক্ষতিপূরণ সম্পর্কিত ব্রিটেনের ‘অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের’ সদস্য ও লেবার পার্টির এমপি বেল রিবেরিও অ্যাডি বলেন, ‘ঔপনিবেশিক সহিংসতা ও শোষণের মাধ্যমে গড়া সমৃদ্ধ এই প্রাচীরে দাঁড়িয়ে অক্সফোর্ডের ডনরা মানুষের মাথার খুলি দিয়ে বানানো পাত্রে পানীয় খাচ্ছেন— দৃশ্যটি ভাবলেই কেমন যেন গা গুলিয়ে বমি আসে! হতে পারে খুলিটি একজন দাসের, যাকে এতটাই তুচ্ছ করা হয়েছে যে তার মাথার খুলিকে একটি পাত্রে তৈরি করা হয়েছে!’
এ বিষয়ে ওরচেস্টার কলেজের এক মুখপাত্র বলেন, বিংশ শতাব্দীর দিকে মাঝে মাঝে এই পাত্রটি প্রদর্শন করা হতো, আবার অনেক সময় ব্যবহারও করা হতো। তবে কতবার ব্যবহার করা হয়েছে তার কোনো সঠিক তথ্য নেই। তবে ২০১১ সাল থেকে এর ব্যবহার সীমিত করা হয়। আর ২০১৫ সালে পুরোপুরি ব্যবহার করা বন্ধ হয়ে যায়।
গবেষকদের ও আইনি পরামর্শ মেনে কলেজ কর্তৃপক্ষ পাত্রটিকে সম্মানের সঙ্গে সংগ্রহশালায় রাখার ও এর ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি।
এই খুলিটির বিষয় ছাড়াও ঔপনিবেশিক আমলে লুট হওয়া আরও কিছুর খুলির তথ্য হিকসের বইয়ে আছে। এরমধ্যে ফিল্ড মার্শাল লর্ড গ্রেনফিল্ডের একজন জুলু কমান্ডারের খুলি লুটের তথ্য আছে।
২৩৭ দিন আগে
নাইজেরিয়ায় সন্দেহভাজন রাখালদের হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭২
নাইজেরিয়ার মধ্যাঞ্চলের রাজ্য বেনুয়েতে সন্দেহভাজন সশস্ত্র রাখালদের সাম্প্রতিক হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭২ জনে দাঁড়িয়েছে।
সোমবার(২১ এপ্রিল) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে এই তথ্য জানিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার রাতের মধ্যে রাজ্যের উকুম এলাকার সম্প্রদায়গুলোতে এই ভয়াবহ হামলাগুলো চালানো হয়।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ শনিবার জানিয়েছে, ওই হামলায় অন্তত ৫৬ জন নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ৬ আইনজীবী কারাগারে, ডিম নিক্ষেপ
সরকারের মুখপাত্র আইজ্যাক উজান গণমাধ্যমকে জানান, স্থানীয় নিরাপত্তা সংস্থা এবং স্বেচ্ছাসেবকরা হামলার ঘটনার কাছাকাছি ঝোপঝাড়ে চিরুনি অভিযান চালানোর সময় সোমবার আরও হতাহতের খবর নিশ্চিত করেছে।
এর আগে রাজ্যের স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোকে অব্যাহত ভয়াবহ আক্রমণ বন্ধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বেনুয়ের গভর্নর হায়াসিন্থ আলিয়া।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ধারাবাহিক আক্রমণের সাক্ষী হয়েছে নাইজেরিয়া। এছাড়া দেশটিতে সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনাও বারবার ঘটেছে।
২৩৮ দিন আগে