বিজ্ঞান-ও-প্রযুক্তি
টানা দ্বিতীয়বার দেশসেরা বৈজ্ঞানিক জার্নালের স্বীকৃতি পেল জাভার
টানা দ্বিতীয়বারের মতো দেশসেরা বৈজ্ঞানিক জার্নাল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে জার্নাল অব অ্যাডভান্সড ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল রিসার্চ (জাভার)। ওয়েব অব সায়েন্সের বিচারে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর ও স্কোপাস-এর ক্ষেত্রে একমাত্র বাংলাদেশী কিউ২ (Q2) জার্নাল হওয়ায় শীর্ষে স্থান পেয়েছে জার্নালটি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) জাভারের প্রধান সম্পাদক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এইচ এম নাজমুল হুসাইন নাজির ইউএনবিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
জাভারের সম্পাদকীয় বোর্ডে বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ভারত, মালয়েশিয়া, মিসর, জর্ডান ও নাইজেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের গবেষকরা রয়েছেন।
অধ্যাপক নাজমুল বলেন, জার্নালটির সম্পাদনায় লেখক ও রিভিউয়ার পরস্পরের পরিচয় গোপন রাখা হয় বা ডাবল-ব্লাইন্ড পিয়ার রিভিউ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়, যা একটি আন্তর্জাতিক মানের জার্নালের জন্য আবশ্যক।
তিনি জানান, জাভার বর্তমানে স্কোপাস, ওয়েব অব সায়েন্স (ইএসসিআই), পাবমেড সেন্ট্রাল, ডিওএজে, আগরিস, ক্যাবিআই ও বাংলা জেএওএল-এ সূচিকৃত। ২০২৪ সালের সূচক অনুযায়ী, স্কোপাস সাইটস্কোর- ২.৭, এসজেআর (এসসিআইইমাগো জার্নাল র্যাঙ্ক)- ০.৩৯৮, এইচ-ইনডেক্স- ২৪। এসব সূচক আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে জাভারের অবস্থানকে অত্যন্ত সম্মানজনক করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: বাকৃবির গবেষণায় মানুষের অন্ত্রে ক্ষতিকর পরজীবী শনাক্ত
জাভারের যাত্রা শুরু সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের মার্চে যাত্রা শুরু করে জাভার। বাকৃবির কয়েকজন শিক্ষক-গবেষকের নেতৃত্বে এবং নেটওয়ার্ক ফর দ্য ভেটেরিনারিয়ানস অব বাংলাদেশের (বিডিভেটনেট) উদ্যোগে প্রকাশিত হয় এর প্রথম সংখ্যা। শুরু থেকেই প্রতি বছর চারটি সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে, যাতে গড়ে ১২০-১৩০টি গবেষণাপত্র স্থান পায়।
একটি বৈজ্ঞানিক জার্নালের মান, গ্রহণযোগ্যতা ও বৈশ্বিক প্রভাব পরিমাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হলো ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর। জাভারের ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর সম্পর্কে এই অধ্যাপক বলেন, জাভারের বর্তমান ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর ১.৫, যা ২০২৩ ও ২০২৪ উভয় বছরেই বজায় ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৩০০টির বেশি বৈজ্ঞানিক জার্নাল থাকলেও মাত্র ৬টি ওয়েব অব সায়েন্সে তালিকাভুক্ত। এর মধ্যে জাভারের ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর সর্বোচ্চ।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বৈজ্ঞানিক ডেটাবেস স্কোপাসে জাভারের অবস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, স্কোপাস, এলসেভিয়ার-এর তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের মাত্র ১৩টি জার্নাল স্কোপাসে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে জাভার একমাত্র কিউ২ (কোয়ারটাইল ২) র্যাংক অর্জন করেছে এবং টানা দ্বিতীয় বছর সেই অবস্থান ধরে রেখেছে। এ ছাড়া স্কোপাস ভেটেরিনারি (সাধারণ) ক্যাটাগরিতে বিশ্বব্যাপী ২০০টি জার্নালের মধ্যে জাভারের অবস্থান ৫৮তম।
ড. নাজমুল বলেন, ‘বিজ্ঞান একক প্রচেষ্টায় বিকশিত হয় না। এতে প্রয়োজন সম্মিলিত চিন্তা, মানসম্পন্ন রিভিউ, নৈতিক গবেষণা এবং সমাজের প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিকতা। সে কারণেই আমরা বলি, উন্নত বিজ্ঞানের জন্য চলুন একসঙ্গে কাজ করি।’
জাভারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা জাভারকে আরও শক্তিশালী আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে উন্নীত করতে চাই। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য এসসিআই/এসসিআইই ইনডেক্সিং এবং বৈশ্বিক গবেষকদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করা।’
‘এই স্বীকৃতি শুধু আমাদের নয়, পুরো বাংলাদেশের গবেষণা অঙ্গনের গর্ব। দেশীয় জার্নাল থেকে গবেষণার যাত্রা শুরু করে আমরা আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছাতে পারি—এটা তারই প্রমাণ।’
আরও পড়ুন: গবাদিপশুর ম্যাসটাইটিস ভ্যাক্সিন আবিষ্কার করলেন বাকৃবির অধ্যাপক
জাভারের এই অর্জন শুধু একটি জার্নালের সাফল্য নয় বরং এটি বাংলাদেশের বৈজ্ঞানিক গবেষণার সক্ষমতা, স্বপ্ন ও ভবিষ্যতের পথচলার দিকনির্দেশনা। এটি তরুণ গবেষকদের জন্য এক অনুপ্রেরণা, যারা নিজেদের গবেষণা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে চায়।
এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের বৈজ্ঞানিক প্রকাশনার অগ্রযাত্রা আরও বেগবান হবে, এবং বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ নির্মাণে জাভার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক নাজমুল হুসাইন নাজির।
১৬৫ দিন আগে
অনলাইন: ১৬০০ কোটি ব্যবহারকারীর লগইন তথ্য ফাঁস
অনলাইনে এক হাজার ৬০০ কোটি ব্যবহারকারীর লগইন তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে জানিয়েছে সাইবারনিউজ নামের একটি গবেষণা সংস্থা।
সেগুলো বিভিন্ন ডেটাসেটে একত্রিত হয়েছে। এতে সাইবার অপরাধীরা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহৃত অ্যাকাউন্টে সহজেই প্রবেশ করতে পারছে।
চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সাইবারনিউজ জানায়, গবেষকরা ৩০টি আলাদা ডেটাসেট শনাক্ত করেছেন, যাতে মোট এক হাজার ৬০০ কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য ফাঁস হওয়া তথ্য রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গুগল, ফেসবুক, অ্যাপলসহ জনপ্রিয় অনেক প্ল্যাটফর্মের পাসওয়ার্ড।
এক হাজার ৬০০ কোটি ব্যবহারকারী সংখ্যাটি পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ। ফলে ধরে নেওয়া হচ্ছে যে, ব্যবহারকারীদের কয়েকটি অ্যাকাউন্টের তথ্য একাধিকবার ফাঁস হয়েছে।
সাইবারনিউজ বলছে, ‘এতে অনেক ডুপ্লিকেট ডেটা রয়েছে এবং তাই আসলে কতজন মানুষের তথ্য ফাঁস হয়েছে; তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়।’
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—এই ফাঁস কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উপর হওয়া সাইবার আক্রমণের ফল নয়; বরং অনেক সময় ধরে বিভিন্ন জায়গা থেকে চুরি করা তথ্য একসাথে করে কিছু সময়ের জন্য অনলাইনে প্রকাশ করা হয়। তখনই সেগুলো খুঁজে পান সাইবারনিউজের গবেষকরা।
আরও পড়ুন: মাথা-ঘাড়ের ক্যানসারে দ্বিগুণ কার্যকরী ওষুধ আবিষ্কার
সন্দেহের তীর ইনফোস্টিলার ম্যালওয়ারের দিকে
এই ধরনের ফাঁসের পেছনে সবচেয়ে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে গবেষকরা ‘ইনফোস্টিলার’ নামক ম্যালওয়্যারকে দায়ী করেছেন। এটি এমন এক ধরনের ক্ষতিকর সফটওয়্যার, যা ব্যবহারকারীর ডিভাইসে ঢুকে সংবেদনশীল তথ্য চুরি করে।
তবে এই ফাঁস হওয়া তথ্য কারা ব্যবহার করছে বা কোথায় ব্যবহার হচ্ছে তা এখনো জানা যায়নি।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান বিশ্বে সাইবার হামলা ক্রমেই বাড়ার কারণে ‘সাইবার হাইজিন’ বা সাইবার নিরাপত্তা চর্চা বজায় রাখাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন।
করণীয় কী?
তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে আশঙ্কা থাকলে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে— পাসওয়ার্ড পরিবর্তন ও একই পাসওয়ার্ড বিভিন্ন সাইটে ব্যবহার না করা; পাসওয়ার্ড ম্যানেজার বা পাসকি ব্যবহার করা, যাতে নিরাপদভাবে পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করা যায়; দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা (টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন) চালু করা। এটি মোবাইলফোন, ইমেইল বা ইউএসবি-কী এর মাধ্যমে আরও একটি নিরাপত্তার স্তর যোগ করে।
১৭৭ দিন আগে
বিভিন্ন উৎসবে ড্রোন শোয়ের জনপ্রিয়তা বাড়ছে যে কারণে
২০২৪ সালের নববর্ষের রাতে নিউইয়র্কে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন আন্ডারউড দম্পতি। তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার শেষে ছিল একটি চমক। এক-দেড় শ ড্রোন রাতের আকাশে উড়িয়ে বিভিন্ন রঙের আলোকচ্ছটায় বর-কনের ছবি ফুটে ওঠে।
মিস্টার আন্ডারউড বেসবলের ভক্ত হওয়ায় ড্রোন দিয়ে একজন বেসবল খেলোয়াড়ের বল মারার দৃশ্যও চিত্রণ করা হয়। তাছাড়া, একটি হীরার আংটি একটি আঙুলে পরানো হচ্ছে, এমন দৃশ্যও দেখানো হয় ড্রোনে।
বিবিসিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজেদের বিয়ের রাতের ড্রোন প্রদর্শনীর দৃশ্য এভাবে বর্ণনা করছিলেন আন্ডারউড-পত্নী।
তবে এরকম প্রদর্শনী এখন আর নতুন নয়। বিয়েসহ বিভিন্ন উৎসবে হরহামেশাই দেখা যায় ড্রোনের কীর্তি।
প্রযুক্তির উন্নতির ধারায় সবশেষ সংযোজনগুলোর মধ্যে অন্যতম এই ড্রোন প্রদর্শনী। একসময় যা ছিল বিরল, এখন তা জন্মদিন, বিয়ে থেকে শুরু করে বড় বড় ক্রীড়া অনুষ্ঠানে পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। এমনকি কিছু থিম পার্কে নিয়মিতভাবে প্রতিদিন ড্রোন প্রদর্শনী হয়।
ইউরোপ-আমেরিকা জয় করে ভারতীয় উপমহাদেশেও তা ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই তো সেদিন, পয়লা বৈশাখের সন্ধ্যায় ঢাকাতেও দেখা মিলল অভিনব এক ড্রোন প্রদর্শনীর। সেদিন জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার আকাশে জুলাই অভ্যুত্থানের থিমে ফুটিয়ে তোলা হয় নানা দৃশ্য। সেই সঙ্গে ছিল আরও কত কী!
আরও পড়ুন: মাথা-ঘাড়ের ক্যানসারে দ্বিগুণ কার্যকরী ওষুধ আবিষ্কার
২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যের গ্লাস্টনবারি মিউজিক ফেস্টিভ্যালে প্রথম ড্রোন প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গত অক্টোবরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ড্রোন প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় চীনে। এতে অংশ নেয় মোট ১০ হাজার ২০০টি ড্রোন, যা আগের মাসেই গড়া একটি রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিল।
‘দ্য ড্রোন গার্ল’ নামে পরিচিত ড্রোন পাইলট ও সাংবাদিক স্যালি ফ্রেঞ্চ বলেন, ‘ড্রোন প্রদর্শনী অসাধারণ শিল্পকর্ম। বর্তমানে বেসবল খেলা, করপোরেট সম্মেলন এমনকি সমুদ্রবন্দরে নতুন ক্রুজ লঞ্চ উদ্বোধনের মতো অনুষ্ঠানেও ড্রোন প্রদর্শনী হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে এটি আরও উন্নত হয়ে উঠেছে।’
তিনি বলেন, ‘কিছু প্রদর্শনীতে হাজার হাজার ড্রোন থাকে যা দিয়ে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে চিত্র বা অ্যানিমেশন তৈরি করা সম্ভব। আমি একবার একটি স্টার ওয়ার্স থিমের ড্রোন শো দেখেছিলাম, যেখানে পুরো একটি যুদ্ধ দেখানো হয়েছিল।’
স্যালির মতে, ড্রোন প্রদর্শনীর ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হতে পারে খরচ। যুক্তরাজ্যে প্রতিটি ড্রোনের জন্য প্রায় ৩০০ ডলার (প্রায় ২২০ পাউন্ড), বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩৬ হাজার টাকার বেশি খরচ হয় বলে জানান তিনি।
লাটভিয়াভিত্তিক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান এসপিএইচ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ৫০০টি ড্রোনের একটি প্রদর্শনীর খরচ দাঁড়ায় ১ লাখ ৫০ হাজার ডলারের বেশি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় দুই কোটি টাকা।
১৮৮ দিন আগে
মাথা-ঘাড়ের ক্যানসারে দ্বিগুণ কার্যকরী ওষুধ আবিষ্কার
মাথা ও ঘাড়ের ক্যানসারের বর্তমান চিকিৎসা পদ্ধতির দ্বিগুণ কার্যকরী ওষুধ আবিষ্কারের দাবি করেছেন একদল গবেষক।
সম্প্রতি আমেরিকান সোসাইটি অব ক্লিনিক্যাল অনকোলজির বার্ষিক সম্মেলনে এই সংক্রান্ত গবেষণাটি উপস্থাপন করা হয়। এই আবিষ্কারকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে দুই দশকের সবচেয়ে যুগান্তকারী সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।
নতুন আবিষ্কৃত ইমিউনোথেরাপি ওষুধ পেমব্রোলিজুম্যাব শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে তোলে। এটি রোগীর দেহের একটি নির্দিষ্ট প্রোটিনকে লক্ষ্য বানিয়ে কাজ করে, যা ক্যানসার কোষ ধ্বংসে সহায়তা করে।
একটি পরীক্ষামূলক গবেষণায় (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) দেখা গেছে, নতুন আবিষ্কৃত ওষুধটি কিছু রোগীর ক্ষেত্রে ৫ বছর পর্যন্ত ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। অথচ, প্রচলিত চিকিৎসার সঙ্গে দেওয়া হলে সেটি ৩০ মাস পর্যন্ত কার্যকর ছিল।
এই পরীক্ষায় ২৪টি দেশের ১৯২টি এলাকা থেকে ৭০০ জন রোগী অংশগ্রহণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন বিভাগের গবেষকদল এই গবেষণা পরিচালনা করেন।
এতে সহ-গবেষক ও অনকোলজির অধ্যাপক ড. ডগলাস অ্যাডকিনস বলেন, ‘এই প্রথম এ রকম কোনো ওষুধে এমন প্রভাব দেখা গেছে। এটি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও চমকপ্রদ সাফল্য।
ক্যানসার বা ক্যানসারজনিত রোগের গবেষণা, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা ও প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করেন চিকিৎসাবিজ্ঞানের অনকোলজি শাখা। এই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের অনকোলজিস্ট বলা হয়।বিশ্বব্যাপী গবেষকরা এরমধ্যেই ওষুধটি মাথা ও ঘাড়ের ক্যানসারের আধুনিক প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার শুরু করেছেন।
প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ এই ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হন। ৭১৪ জন রোগীর ওপর চালানো এই ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় ৩৬৩ জনকে পেমব্রোলিজুম্যাব দেওয়ার পরে প্রচলিত চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বাকি ৩৫১ জনকে শুধু প্রচলিত চিকিৎসা— টিউমার অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের পর রেডিওথেরাপি, মাঝে মাঝে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। মাথা ও ঘাড়ের ক্যানসারের প্রচলিত চিকিৎসা গত ২০ বছরে বদলায়নি। এসব রোগীর অধিকাংশ পাঁচ বছরও বাঁচেন না।
এই ইমিউনোথেরাপি বিশেষ করে পিডি-এল১ নামের ইমিউন মার্কারের (মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী জৈবিক উপাদান বা প্রোটিন) উচ্চমাত্রায় থাকলে বেশি ভালো কাজ করেছে। তবে সব ধরনের গলা ও মুখের ক্যানসার আক্রান্তদের ক্ষেত্রেই এটি রোগের সম্পূর্ণ নিরাময় বা ক্যানসার কোষ ছড়ানো বন্ধ করেছে।
লন্ডনের ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চের বায়োলজিকাল ক্যানসার থেরাপির অধ্যাপক কেভিন হ্যারিংটন যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেন। এই পরীক্ষায় অর্থায়ন করেছে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এমএসডি।
তিনি বলেন, ‘এই ইমিউনোথেরাপি যেসব রোগীর ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে বা ফিরে এসেছে, তাদের জন্য দারুণ কার্যকর। তবে এবারই প্রথমবারের মতো নতুন রোগীদের ক্ষেত্রে কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে।’
‘ক্যানসার কোষ ছড়ানো শুরু হলে এর চিকিৎসা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। তবে, ইমিউনোথেরাপি ক্যানসার কোষ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়। এই গবেষণায় এটি প্রমাণিত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে— পেমব্রোলিজুম্যাব রোগীদের প্রচলিত চিকিৎসার তুলনায় অনেক বেশি সময় রোগমুক্ত অবস্থায় রাখে। যাদের শরীরে ইমিউন মার্কার বেশি, সেসব রোগীর ওপর এটি সবচেয়ে ভালো কাজ। তবে আশার কথা হলো, ইমিউন মার্কারের মাত্রা যা-ই হোক না কেন, এই ওষুধটি মাথা ও গলার ক্যানসারে আক্রান্ত সব রোগীর ক্ষেত্রেই চিকিৎসার ফলাফল উন্নত করেছে।’
ডার্বিশায়ারের ৪৫ বছর বয়সী লরা মার্সটন ২০১৯ সালে স্টেজ-৪ জিভের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে এই পরীক্ষায় অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘ছয় বছর পর, আমি এখনো বেঁচে আছি! এটি ভাবতেই অবাক লাগছে। এই চিকিৎসা আমাকে জীবন ফিরিয়ে দিয়েছে।’
ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চ-এর প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক ক্রিস্টিয়ান হেলিন বলেন, ‘ইমিউনোথেরাপি বারবার নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। যেসব রোগী এই চিকিৎসা পেয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে গড় রোগমুক্ত থাকার সময় দ্বিগুণ হয়েছে। এমনকি অনেকের ক্যানসার আর ফেরেনি। এটি খুবই যুগান্তকারী।’
১৯৭ দিন আগে
স্টারলিংকের ইন্টারনেট নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন
দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক। শুরুতে স্টারলিংক দুটি প্যাকেজ দিয়ে শুরু করছে—স্টারলিংক রেসিডেন্স ও রেসিডেন্স লাইট। মাসিক খরচ একটিতে ৬ হাজার টাকা, অপরটিতে চার হাজার ২০০ টাকা। সেট-আপ যন্ত্রপাতির জন্য এককালীন খরচ হবে ৪৭ হাজার টাকা।
তবে বাংলাদেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা দিতে স্টারলিংকের যাত্রা শুরু হওয়াতে এ সম্পর্কে জনমনে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এ সম্পর্কিত নানা জিজ্ঞাসা ও তার জবাব দিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। নিচে প্রশ্ন ও জবাবগুলো তুলে ধরা হলো।
* স্টারলিংকের কী ডেটা লিমিট রয়েছে?
স্টারলিংকের কোনো ডেটা লিমিট নেই বলে নিশ্চিত করা হয়েছে বিবৃতিতে।
* স্টারলিংক সত্যিকার অর্থে সরকার কাদের জন্য করেছে? এর সেবাগ্রহীতা কারা?
প্রেস উইংয়ের পাঠানো তথ্যমতে, দেশের প্রত্যন্ত ও দূরবর্তী অঞ্চল— যেমন পার্বত্য অঞ্চল, হাওরাঞ্চল কিংবা বনাঞ্চলের মতো জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে স্টারলিংক ব্যবহার করা হবে। সারা দেশের যেকোনো স্থান থেকেই এই সেবা ব্যবহার করা যাবে।
আরও পড়ুন: স্টারলিংক কী? কীভাবে কাজ করে ইলন মাস্কের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এখনো ফাইবার পৌঁছায়নি। সেসব জায়গায় মাইক্রোওয়েভের মাধ্যমে সেবাদান করা হয়, যেটির সক্ষমতা কম। এ সমস্যা সমাধানে স্টারলিংকের একটা সেট-আপ বক্স কিনে গ্রামের মানুষও লো লেটেন্সি এবং উচ্চ গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
এতে সংসদ ভবনে কিংবা উপদেষ্টার বাসভবন বা তার অফিসে যেই স্পিডে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয, ঠিক একই স্পিডে ওইসব অঞ্চলেও ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
* স্টারলিংক কি উদ্যোক্তা বান্ধব? উদ্যোক্তারা ইন্টারনেট সেবা প্রদানে কীভাবে স্টারলিংক ব্যবহার করতে পারবেন?
সরকারের ভাষ্যে, স্টারলিংক উদ্যোক্তা বান্ধব হবে। এটির দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় একজন না পারলে কয়েকজন মিলে একটি সেট-আপ বক্স কিনে একসঙ্গে কয়েকজন ব্যবহার করতে পারবে। এটির ওয়াইফাই রেঞ্জ আনুমানিক, আনুমানিক ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মিটার। এই জোনের মধ্যে যেসব উদ্যোক্তা থাকবেন তারা সবাই মিলে তহবিল গঠন করে ৪৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি সেট-আপবক্স কিনে উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
এ নিয়ে আইনে কোন প্রতিবন্ধকতা তৈরী করা হয়নি বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ছাড়া, শহরের বাসভবনে ওয়াইফাই শেয়ারিং করেও ইন্টারন্টে ব্যবহার সম্ভব হবে। স্টারলিংকে যেহেতু বিল্টইন রাউটার আছে, তাই রাউটার থেকে রাউটারে আইএসপি সেটাপেও ব্যবহার সম্ভব।
পাশাপাশি মাইক্রোক্রেডিট অথোরিটি (এমআর) কিংবা ফাইন্যান্সিয়াল অর্গানাইজেশন কিংবা ব্যাংক থেকে সেট-আপ বক্স কেনার জন্য উদ্যোক্তাদের অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা করারও আশ্বাস দিয়েছে সরকার।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নাগরিক সেবার যারা উদ্যোক্তা হবেন, তাদের জন্য সহজে স্টারলিংক নেওয়ার জন্য ফাইন্যান্সিয়াল প্যাকেজ তৈরিরও পরিকল্পনা করছে সরকার।
তাছাড়া, স্টারলিংকের মূল্য কিছুটা বেশি বলে স্বীকার করে সরকার জানিয়েছে, দাম বেশি থাকার কারণে এটি শেয়ার করে ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ রাখা হয়নি।
এটি ব্যবহার করে ব্যবসা মডেল তৈরির পাশাপাশি কেউ যদি এই স্টারলিংক ব্যবহার করে তা ইন্টারনেট নিয়ে (মোবিলিটি এবং রোমিং সুবিধা ছাড়া) সেটাকে ফিড করে যদি ইন্টারনেট ব্যবহার করে সেক্ষেত্রেও কোনো বাধা নেই।
এ ছাড়াও ড. ইউনূসের ফোন লেডি ধারণার কথা উল্লেখ করে জানানো হয়, যেকোনো ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান (এমএফআই) বা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) বা অন্য কোম্পানিগুলো বা ফাইন্যান্সিয়াল অর্গানাইজেশনগুলো চাইলে ওয়াইফাই লেডি হিসেবে নতুন একটি উদ্যোক্তার ধারা সৃষ্টি করতে পারে। তারা চাইলে শুধুমাত্র গ্রামীণ মহিলাদেরকে একটা বিশেষ ঋণ দিতে পারে যার মাধ্যমে তারা স্টারলিংক নিয়ে ইন্টারনেট সেবা বিক্রয় করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভবন ছাড়াও ইনফরমাল কো-ওয়েবিং বিজনেসের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারবেন।
* স্টারলিংকের মাধ্যমে জাতীয় সার্বভৌমত্ব বিঘ্নিত হবে কী?
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, স্টারলিংকের একটি লোকাল গেটওয়ে থাকবে। এর কমার্শিয়াল টেস্ট রান ও গ্রাউন্ড টেস্ট চলমান। এসব কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য স্টারলিংক কোম্পানিকে ৯০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে, ইতোমধ্যে ১০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। ৯০ দিনের সময়সীমা পার হলেই তাদের লোকাল গেইটওয়ে বাধ্যতামূলক হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি ডিভাইসের ক্ষেত্রে রেট, ভ্যাট, ট্যাক্স থাকায় এনওসি (বিভাগীয় অনাপত্তি সনদ) নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: স্টারলিংক বাংলাদেশের ডিজিটাল জগতে বিপ্লব আনবে: প্রধান উপদেষ্টা
* চলমান চীন-মার্কিন বাণিজ্য দ্বন্দ্বের মধ্যে স্টারলিংকের ব্যবহারে অনুমতি প্রদানে কোনো প্রভাব পড়বে কী ?
চলমান পরিস্থিতিতে এই প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের ভাষ্যে, বাংলাদেশ যোগাযোগ প্রযুক্তির বিচারে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায়।
বাংলাদেশে ৪জি বা ৫জি টেকনলোজিতে সর্বাধুনিক নেটওয়ার্ক ও ব্যাকবোন স্থাপনে চীনা প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া বিটিসিএল, টেলিটক সংস্থার অধীন চীনা অর্থায়নে ও প্রকৌশলীদের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে।
চীন কিংবা মার্কিন ব্যবসায়ীরা স্বাধীনভাবে যেন বাংলাদেশে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে উন্মুক্তভাবে ব্যবসা করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে চায় সরকার। সব দেশকেই একইরকম সুবিধা দিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ।
* আবাসিক গ্রাহকদের জন্য স্টারলিংক এর দাম কী সহনীয়?
একটি ভবনের কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাটের সদস্যরা মিলিতভাবে এই সেবাটি কিনে থাকে তাহলে উদ্যোক্তা ও ভোক্তাদের জন্য বিষয়টি সহজ হবে। এতে এককালীন দামটা বেশি হলেও বা সেট-আপব্যয়টা বেশি হলেও সবার মধ্যে সরবরাহ হয়ে যাওয়ার পর আর খরচ বেশি মনে হবেনা বলে মনে করে সরকার।
* রিজিওনাল প্রাইস বিবেচনায় স্টারলিংকের ব্যয় কী বাংলাদেশে বেশি?
রিজিওনাল প্রাইস বিশ্লেষন করে বাংলাদেশে স্টারলিংকের দাম সবচেয়ে কম বলে জানিয়েছে সরকার। এমনকি শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, থাইল্যান্ডের চেয়েও কম এই দাম।
* সরকারি কোম্পানির স্বার্থ কিভাবে রাখা হচ্ছে?
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দুই ভাবে সরকারি কোম্পানির স্বার্থ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। প্রথমত, সাবমেরিন কেবল কোম্পানির মাধ্যমে এবং দ্বিতীয়ত স্যাটেলাইট কোম্পানির মাধ্যমে।
২০৯ দিন আগে
দেশে স্টারলিংকের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু
স্টারলিংক আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে। মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এমন তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফাইজ় তাইয়েব আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘সোমবার (১৯ মে) বিকালে তারা ফোন কলে আমাকে বিষয়টা জানিয়েছেন এবং আজ সকালে তাদের এক্স হ্যান্ডেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।’
‘শুরুতে স্টারলিংক দুটি প্যাকেজ দিয়ে শুরু করছে- স্টার্লিংক রেসিডেন্স এবং রেসিডেন্স লাইট। মাসিক খরচ একটিতে ৬০০০ টাকা, অপরটিতে ৪২০০। সেটাপ যন্ত্রপাতির জন্য ৪৭ হাজার টাকা এককালীন খরচ হবে,’ যোগ করেন তিনি।
ফাইজ় তাইয়েব আহমেদ বলেন, এখানে কোন স্পীড ও ডাটা লিমিট নেই। ব্যক্তি ৩০০ এম্বিপিএস পর্যন্ত গতির আনলিমিটেড ডেটা ব্যবহার করতে পারবেন। বাংলাদেশের গ্রাহকরা আজ থেকেই অর্ডার করতে পারবেন। এর মাধ্যমে ৯০ দিনের মধ্যে যাত্রা শুরুতে স্যারের প্রত্যাশাটি বাস্তবায়িত হলো।’
আরও পড়ুন: স্টারলিংকের লাইসেন্সে বিটিআরসির সবুজসংকেত, মন্ত্রণালয়ে চিঠি
তিনি বলেন, ‘খরুচে হলেও এর মাধ্যমে প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য উচ্চমান এবং উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা প্রাপ্তির টেকসই বিকল্প তৈরি হয়েছে।’
‘পাশাপাশি, যেসব এলাকায় এখনো ফাইবার কিংবা দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা পৌঁছেনি, সেখানে কোম্পানিগুলো ব্যবসা সম্প্রসারণ এর সুযোগ পাবেন, এনজিও ফ্রিল্যান্সার এবং উদ্যোক্তারা বছরব্যাপী নিরবিচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেটের নিশ্চয়তা পাবেন,’ বলেন প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী।
২১০ দিন আগে
আপনার চাকরি খেয়ে ফেলবে এআই: ফাইভারপ্রধানের হুঁশিয়ারি
চাকরির বাজারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ক্রমাগত পরিবর্তনশীল প্রভাব নিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলি বহুজাতিক অনলাইন মার্কেটপ্লেস ফাইভারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিকা কাউফম্যান। এআইনির্ভর ভবিষ্যতে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে দক্ষতা ও খাপ খাইয়ে নেওয়ার সক্ষমতা বাড়াতে জোর দেন তিনি।
ফাইভারের একটি অভ্যন্তরীণ মেমোর বিস্তারিত বিবরণে তিনি এমন হুঁশিয়ারি দেন। পরবর্তীতে সেটি সামাজিকমাধ্যমেও শেয়ার দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এমন খবর দিয়েছে।
যেভাবে দ্রুতগতিতে প্রযুক্তির বিকাশ ঘটছে, তাতে অনলাইন প্ল্যাটফর্মনির্ভর বাজারসহ শিল্পকারখানা নতুন করে ঢেলে সাজানোর সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। সেই দিকে আভাস দিয়ে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলায় উপযুক্ত করে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে ফ্রিল্যান্সার্স ও কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মিকা কাউফম্যান বলেন, ‘কঠিন সত্য হলো—আপনার কর্মসংস্থান দখল করতে আসছে এআই, আমার চাকরিটাও তারা নিয়ে নেবে। এটা আপনাদের জেগে ওঠার ডাক। তাতে হোক না আপনি প্রোগ্রামার, ডিজাইনার, পণ্য ব্যবস্থাপক, ডেটা বিজ্ঞানী, আইনজীবী, বিক্রেতা কিংবা কোনো ব্যবসায়ী। আপনাদের কর্মসংস্থান কেড়ে নিতে ধেয়ে আসছে এআই।’
“একসময় যেসব কাজকে সহজ বলে বিবেচনা করা হতো, এখন আর সেগুলোর অস্তিত্ব নেই। আবার যে কাজগুলো কঠিন বলে বিবেচনা করা হতো, সেগুলো সহজ হয়ে গেছে। আর যে কাজগুলো অসম্ভব বলে মনো হতো, সেটা এখন নতুন ‘কঠিন কাজ’।”
তিনি বলেন, ‘আপনি যা করছেন, সেখানে যদি একেবারে ব্যতিক্রমী মেধাবী না হন, কয়েক মাসের ব্যবধানে আপনাদের কর্মসংস্থান পরিবর্তনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে,’ বলেন ফাইভারের এই প্রধান নির্বাহী।
আরো পড়ুন: ইসরাইলকে এআই সরবরাহের প্রতিবাদ: মাইক্রোসফটের ২ প্রকৌশলী বরখাস্ত
সর্বশেষ এআই উদ্ভাবন নিয়ে আরও লেখাপড়া ও দক্ষতা অর্জনে কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মিকা কাউফম্যান বলেন, ‘এআই প্রোগ্রাম লার্জ ল্যাংগুয়েজ মডেলসের (এলএলএমএস) ওপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে।’
যারা এটার কদর বুঝবেন না, অর্থাৎ দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন না, তাদের ক্যারিয়ার ঝুঁকিতে পড়বে বলেও হুশিয়ার করেন ফাইভার প্রধান নির্বাহী। কাজেই কর্মীদের আরও দক্ষতা ও দ্রুততার সাথে কাজ করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সার্চ জায়ান্ট গুগল ‘সেকেলে’ হয়ে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন মিকা কাউফম্যান।
২২৩ দিন আগে
স্টারলিংকের লাইসেন্সে বিটিআরসির সবুজসংকেত, মন্ত্রণালয়ে চিঠি
বাংলাদেশে স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা দিতে স্টারলিংকের লাইসেন্সের জন্য সবুজসংকেত দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে। টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী, কাউকে লাইসেন্স দেওয়ার আগে বিটিআরসিকে মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি নিতে হবে।
গত ৭ এপ্রিল স্টারলিংক ‘বাংলাদেশে নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটরদের জন্য নির্দেশিকা’ অনুযায়ী নিয়ন্ত্রক কাঠামোর অধীনে বাংলাদেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহের জন্য বিটিআরসির কাছে আবেদন করা হয়েছে।
পরে ২৫ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ৯০ দিনের মধ্যে দেশে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবার বাণিজ্যিক উদ্বোধন করা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
কর্মকর্তারা জানান, বিদেশি স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে ব্যবহার করে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে স্টারলিংকের পরিষেবা চালানো হয়েছে।
তবে, বাণিজ্যিকভাবে স্টারলিংকের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কোম্পানিটিকে নন-জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট অরবিট (এনজিএসও) নীতি মেনে চলতে হবে। এই নীতিমালায় স্থানীয় ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে বা আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) ব্যবহার করতে হয়।
ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হলো স্টারলিংক। কোম্পানিটি বাংলাদেশে পরিষেবা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য লাইসেন্স পেতে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছে।
স্টারলিংক ইন্টারনেট পরিষেবা বাংলাদেশে চালু করার লক্ষ্য হলো বারবার ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়াকে রোধ করা।
আরও পড়ুন: স্টারলিংক বাংলাদেশের ডিজিটাল জগতে বিপ্লব আনবে: প্রধান উপদেষ্টা
দেশে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করার জন্য বাজারে স্টারলিংকের প্রবেশকে বড় অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও উদ্যোক্তাদের জন্য এটি উপকারী হবে।
বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো এরইমধ্যে স্টারলিংকের গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনে সহযোগিতা করছে, যা স্যাটেলাইট সংযোগকে একীভূত করতে সহজতর করবে।
বিশ্বব্যাপী, ইলন মাস্কের স্পেসএক্স পরিচালিত স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট জগতে একটি বড় নাম, যা দিন দিন আরও বেশি সম্প্রসারিত হচ্ছে।
অ্যামাজনের প্রজেক্ট কুইপার, ওয়ানওয়েব এবং টেলিস্যাটের মতো কোম্পানিগুলোও লো-আর্থ-অরবিট স্যাটেলাইটগুলোর কনস্টেলেশন স্থাপন করছে, যা বিশেষত দূর্গম এবং অল্প সেবা প্রাপ্ত এলাকাগুলোতে উচ্চ-গতির ব্রডব্যান্ড সেবা দেবে।
স্টারলিংক বর্তমানে ৬ হাজারের বেশি স্যাটেলাইট চালাচ্ছে এবং বিশ্বজুড়ে তিন মিলিয়নের বেশি ব্যবহারকারীকে সেবা দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি এমন এলাকায় বড় পরিবর্তন আনতে পারে, যেখানে সাধারণ ফাইবার-অপটিক বা মোবাইল ব্রডব্যান্ড সেবা পাওয়া যায় না বা কাজ করে না।
আরও পড়ুন: স্টারলিংক কী? কীভাবে কাজ করে ইলন মাস্কের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা
২৩১ দিন আগে
দেশে ৩ স্তরে কমছে ইন্টারনেটের দাম
দেশে তিন স্তরে নতুন করে কমছে ইন্টারনেটের দাম। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) ও ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) পর্যায়ে ১০ শতাংশ এবং ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ দাম কমাবে ফাইবার অ্যাট হোম। পাশাপাশি মোবাইল সেবাদাতা ৩টি বেসরকারি কোম্পানিকেও ইন্টারনেটের দাম কমানোর আহ্বান জানিয়েছে সরকার।সোমবার (২১ এপ্রিল) সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে ফাইবার অ্যাট হোম ম্যানেজমেন্টের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফাইজ় তাইয়েব আহমেদ।
মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানোর পদক্ষেপে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিও সামান্য কিছুটা কমে আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ১০ শতাংশ দাম কমছে ইন্টারনেটের
ইতোমধ্যে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) লাইসেন্স প্রাপ্ত কোম্পানিগুলোর অ্যাসোসিয়েশন থেকে পাঁচ এমবির পরিবর্তে ৫০০ টাকায় ১০ এমবি ইন্টারনেট প্রদানের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তাইয়েব আহমেদ।
তিনি বলেন, এর আগে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি সকল আইআইজি এবং আইএসপি গ্রাহকদের জন্য ১০ শতাংশ, এবং পাইকারি গ্রাহকদের জন্য অতিরিক্ত ১০ শতাংশ সহ মোট ২০ শতাংশ দাম কমিয়েছে।
এ নিয়ে তিন থেকে চারটি স্তরে ইন্টারনেটের মূল্য কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, এখন শুধু মোবাইল সেবাদাতা ৩টি বেসরকারি কোম্পানির দাম কমানো বাকি। তাছাড়া মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ইতোমধ্যে ডিডব্লিউডিএম সুবিধা ও ডার্ক ফাইবার সুবিধা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
এ কারণে বেসরকারি মোবাইল কোম্পানিগুলোর ইন্টারনেটের দাম না কমানোর কোন ধরনের যৌক্তিক কারণ কিংবা অজুহাত অবশিষ্ট থাকে না বলে মত দেন তিনি। তাইয়েব আহমেদ বলেন, ‘সরকার মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলোকে (এমএনও) পলিসি সাপোর্ট দিয়েছে এবং সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় স্তর গুলোতে ওপাইকারি পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম কমিয়েছে। এখন তাদের জাতীয় উদ্যোগে শরিক হবার পালা।’
তাছাড়া মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানোর পদক্ষেপে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিও সামান্য কিছুটা কমে আসবে বলেও মত দেন তিনি।
আরও পড়ুন: স্টারলিংক কী? কীভাবে কাজ করে ইলন মাস্কের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা
তিনি বলেন, সরকার আশা করে অতি দ্রুতই তিনটি বেসরকারি মোবাইল কোম্পানি অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে মোবাইল ইন্টারনেটের মূল্য পতনের ঘোষণা দিবে।
২৩৯ দিন আগে
বাদী পক্ষে লড়তে আদালতে এআই-উকিল!
আদালতে উপস্থিত হয়ে বিচারকরা এক ব্যক্তির আপিলের শুনানি শুরু করলেন। বাদী পক্ষের উকিল হাজির হলেন ভিডিওতে। কিন্তু মজার বিষয় হলো, এই উকিলের কোনো পেশাগত ডিগ্রি নেই। এর চেয়েও আশ্চর্যের বিষয় হলো বাস্তবেই তার কোনো অস্তিত্ব নেই, তিনি কোনো মানুষই নয়!
তিনি মূলত কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সহায়তায় তৈরি করা এক এভাটার (কোনো মানুষের প্রতিকৃতি)।
এমনই চমকপ্রদ একটি ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে। স্থানীয় সময় গেল ২৬ মার্চ জেরোমি ডিওয়াল্ড নামে এক ব্যক্তির চাকরি সংক্রান্ত একটি আপিল শুনানিকালে এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি।
নিজের পক্ষে কোনো উকিল না থাকায় তিনি এআইয়ের সহায়তায় একটি এভাটার বানিয়ে তাকেই আদালতের সামনে উপস্থাপন করেছেন। তবে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তার চালাকি ধরে ফেলেন বিচারকরা।
আপিলের শুনানির সময় নিজের পক্ষে কথা বলার জন্য একটি ভিডিও উপস্থাপন করার অনুমতি চেয়েছিলেন ডিওয়াল্ড। শুনানির দিন বিচারক স্যালি মানজানেট ডানিয়েল বলেন, ‘আপিলকারী তার বক্তব্য উপস্থাপনের একটি ভিডিও দিয়েছেন, ভিডিও এখন চালু করা হবে।’
আরও পড়ুন: ডিপসিক: এআইয়ের দুনিয়ায় চ্যাটজিপিটি ও জেমিনির লড়াকু প্রতিপক্ষ
ভিডিওটি চালু হলে স্ক্রিনে (পর্দায়) বেশ গোছালো ও পরিপাটি পোশাক পরিহিত এক সুদর্শন যুবককে দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘আদালতের সদয় বিবেচনার জন্য জানাচ্ছি, আমি বিচারকদের সামনে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বাদীর পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরতে উপস্থিত হয়েছি।’
সঙ্গেই সঙ্গেই তাকে থামিয়ে দিয়ে বিচারক জানতে চান, ‘এই ব্যক্তি মামলার কোনো আইনজীবী কিনা? বাদী ডিওয়াল্ড জানান, ‘ভিডিওর ব্যক্তি আসলে মানুষ নন, এআইয়ের সহায়তায় একে তিনি তৈরি করেছেন আাদলতে তার পক্ষে কথা বলার জন্য।’
এ কথা শুনে রেগে আগুন হয়ে বিচারক বললেন, ‘আমি প্রতারিত হতে পছন্দ করি না।’ ডিওয়াল্ডকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি যখন আবেদন করেছেন, এই বিষয়ে তখনই আদালতকে অবগত করা প্রয়োজন ছিল।’
এরপরে বিচারকদের কাছে ক্ষমা চান মামলার বাদী ডিওয়াল্ড। তিনি জানান, ‘কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে তিনি এই কাজ করেননি। তার আইনি বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য কোনো আইনজীবী পাননি। এ কারণে তার আইনি বক্তব্য তুলে ধরতে এই এভাটার বানিয়েছেন তিনি।’
ডিওয়াল্ড সাধারণত কথা বলার সময় তোতলান, তার উচ্চারণে অস্পষ্টতা রয়েছে। তিনি আশা করেছিলেন এ ধরনের কোনো সীমাবদ্ধতা ছাড়াই আদালতে কথা বলতে পারবে ওই এভাটার। তবে তার আশার গুড়ে বালি পড়তে লেগেছে মাত্র কয়েক সেকেন্ড। বিচারক ধরে ফেলেন ভিডিওর ব্যক্তি আসল নন।
বার্তা সংস্থা এসোসিয়েট প্রেসের (এপি) এক খবরে বলা হয়েছে, সান ফ্রান্সিসকোর এক টেক কোম্পানি থেকে একটি এআই টুল কিনে ওই এভাটার তৈরি করেছিলেন ডিওয়াল্ড। তিনি তার চেহারার অনুরূপ করেই ওই এভাটার বানাতে চেয়েছিলেন। তবে শুনানির আগে তা সম্ভব হয়নি।
যেহেতু তিনি কোনো উকিল পাননি, তাই তার নিজেকেই এই বক্তব্য উপস্থাপন করতে হত। এ কারণেই ঠিকঠাকভাবে কথা বলার জন্য তিনি এআইয়ের দিয়ে ওই ভিডিও তৈরি করে আদালতে পাঠান। তবে যে উদ্দেশ্যে তিনি এই কাজ করেছিলেন সেক্ষেত্রে সফল তো হননি, বরং আদালতে রীতিমতো বিচারকের ঝাড়ি খেয়েছেন ওই ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: ওপেনএআই কিনতে প্রায় ১০ হাজার কোটি ডলার প্রস্তাব মাস্কের
তবে বিচারিক কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে কিন্তু প্রথম নয়, খোদ আইনজীবীরাই এর ব্যবহার করে সমস্যায় পড়েছেন।
এর আগে ২০২৩ সালের জুনে একটি মামলায় এআইয়ের ব্যবহার করে ৫ হাজার ডলার জরিমানা গুনতে হয়েছিল নিউ ইয়র্কের দুই আইনজীবীকে। তারা এআইয়েরর সহায়তা নিয়ে কয়েকটি মামলার উদ্ধৃতি ব্যবহার করেছিলেন, তবে বাস্তবে ওই ধরনের কোনো মামলার অস্তিত্বই ছিল না।
জরিমানা দেওয়া ওই দুই আইনজীবী জানান, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা যে কৃত্তিম মামলার বিবরণ তৈরি করবে এটি তারা বুঝতেই পারেননি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেনও একই ধরনের সমস্যায় পড়েছিলেন। ভুল মামলার তথ্য দিয়েছিল এআই।
তবে ডিওয়াল্ড ভুলে এই এভাটার ব্যবহার করলেও অ্যারিজনার সুপ্রিমকোর্ট কিন্তু বিভিন্ন আদালতের বিধিনিষেধগুলো সাধারণ জনগণকে জানানোর জন্য অনেকটা একই রকম এভাটার ব্যবহার করে থাকে। কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা যে কতদ্রুত এগিয়ে চলছে তারই জ্বলন্ত প্রমাণ এসব ঘটনা।
ডিওয়াল্ডের মামলাটি এখনও চলমান রয়েছে।
২৫২ দিন আগে