জীবনধারা
পবিত্র শবে কদরের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও করণীয়
পবিত্র রমজান মাসের সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ সময়টি হচ্ছে শবে কদর। ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই মহিমান্বিত রাতটির ব্যাপক প্রভাব রয়েছে ইসলামী জীবন ব্যবস্থায়। প্রতি বছর এই সময়টিতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগীতে নিজেদেরকে নিয়োজিত করেন। রমজানের ঠিক কততম দিনে এই রাতের আগমন ঘটে সে ব্যাপারে কোনও সুনির্দিষ্ট করা তারিখ নেই। তবে হাদীস অনুসারে মাসের একটি নির্দিষ্ট পরিসরের রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর অন্বেষণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। চলুন, তাৎপর্যপূর্ণ এই সৌভাগ্যের রাতের বিশেষত্ব বিশ্লেষণের পাশাপাশি জেনে নিই- কীভাবে এর সর্বোত্তম সদ্ব্যবহার করা যায়।
শবে কদর কী
আরবী ভাষায় ‘কদর’ বলতে ভাগ্যের পরিমাপ বা পরিধি বোঝানো হয়। আর শব শব্দটি ফার্সি ভাষার, যার অর্থ রাত। এছাড়া এই রাতের অন্যান্য নামগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘লাইলাতুল কদর’ (সৌভাগ্যের রাত), ‘লাইলাতুল আযমা’ (মহত্বের রাত) এবং ‘লাইলাত আল-শরাফ’ (সম্মানের রাত)।
শবে কদরের সময়টি বিস্তৃত সূর্যাস্ত বা মাগরিবের ওয়াক্ত থেকে ফজরের আজানের আগ পর্যন্ত। তবে রাতটি আসলে ঠিক কোন তারিখের তা সুনির্দিষ্ট নয়। তবে বুখারি ও মুসলিম সহ বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থ অনুযায়ী এটি রমজানের শেষ দশ দিনের বিজোড় রাতগুলোর যে কোনও একটি। অর্থাৎ সুস্পষ্টভাবে রমজানের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তম রাতগুলোর প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের দশটি প্রাচীন মসজিদ: দেশের ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন
শবে কদরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
৬১০ হিজরী সনের এই রাতে নাজিল হয়েছিল পবিত্র কুরআন শরীফের প্রথম ৫ আয়াত। মক্কার জাবালে নূর পর্বতের হেরা গুহায় ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.) মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে এসেছিলেন আল্লাহর বাণী নিয়ে। এটি ছিল আল কুরআনের ৯৬-তম সূরা আল আলাকের প্রথম ৫টি আয়াত। এরপর থেকে টানা ২৩ বছরে পুরো কুরআন নাজিল সম্পন্ন হয়।
এই মূল্যবান রাতটিকে উদ্দেশ্য করে কুরআন মাজিদের সম্পূর্ণ একটি সূরাই রয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, কদরের রাত্রি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ সময় সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে ফেরেশতারা পৃথিবীর আকাশে নেমে আসেন এবং ভোর না হওয়া পর্যন্ত শান্তি বর্ষণ করতে থাকেন।
অর্থাৎ এই এক রাতের একটি মাত্র নেক আমল হাজার মাসের বরকত নিয়ে আসে। সারা জীবন ইবাদত করেও এ রাতের ইবাদতের মাধ্যমে যে বরকত পাওয়া যায় তার সমান হবে না। একই সঙ্গে এটি আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা পাওয়ার রাত। এই সময়ের প্রতিটি মুহূর্ত মুসলমানদের জন্য আল্লাহর নৈকট্য এবং আশীর্বাদ লাভের পরম সুযোগ। যারা এই সময় ঈমানের সঙ্গে নামাজ পড়বে, তাদের পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য, শিক্ষা ও করণীয়
মুহাম্মদ (সা.) এই সম্মানের রাতটির জন্য অপেক্ষা করতেন। রমজানের শেষ দশ দিন শুরু হতেই তিনি ইতিকাফে বসে যেতেন এবং সারা রাত ধরে নামায পড়তেন। নিজের অনুসারীদেরকেও তিনি এভাবে সৌভাগ্যের রাতকে সম্মানিত করতে অনুপ্রাণিত করতেন।
শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায়, জনপ্রিয় স্থান ও খরচ
ভারত মহাসাগরের বুকে এক ফোটা অশ্রুবিন্দু কিংবা নাশপাতি বা আমের আকৃতির এক খণ্ড দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা। ভারতীয় উপমহাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে দেশটিকে বিচ্ছিন্ন করেছে মান্নার উপসাগর ও পল্ক প্রণালী। শ্রীলঙ্কার উত্তর-পূর্বে বঙ্গোপসাগর, উত্তর-পশ্চিমে ভারতের সামুদ্রিক সীমান্ত, এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে মালদ্বীপ। প্রাকৃতিক নৈসর্গ, ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থান এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ এই এশিয়ার দেশটিকে নিয়েই আজকের ভ্রমণ কড়চা। চলুন, শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় কয়েকটি পর্যটন এলাকা ও সেখানে ভ্রমণ সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বাংলাদেশ থেকে শ্রীলঙ্কা যাওয়ার উপায়
বাংলাদেশিদের জন্য শ্রীলঙ্কার পর্যটন ভিসা
শ্রীলঙ্কায় ঘুরতে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশিদের ইটিএ (ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন) ভিসা নিতে হবে। এই ডিজিটাল ছাড়পত্রের জন্য ঘরে বসেই অনলাইনে আবেদন করা যায়। এর জন্য শ্রীলঙ্কার অভিবাসনের ইটিএ সিস্টেম (https://eta.gov.lk/etaslvisa/etaNavServ?payType=1)-এ যেয়ে আবেদন সম্পন্ন করে সাবমিট করতে হয়। এই সিস্টেমেরই চেক স্ট্যাটাস (https://eta.gov.lk/etaslvisa/pages/checkStatus.jsp) থেকে জমাকৃত আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা যাচাই করা যায়।
সফলভাবে জমাকৃত আবেদন নিরীক্ষণের পর আবেদনকারীকে অনলাইনেই একটি স্বীকৃতি পত্র দেওয়া হয়। এটি ইটিএ ভিসার একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি, যেটি প্রিন্ট করে শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের পূর্বে অভিবাসন কর্মকর্তাকে দেখাতে হয়। এ সময় শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের চূড়ান্ত অনুমতি প্রদানের পূর্বে যাত্রীর আরও কিছু বিষয় যাচাই করা হয়। সেগুলো হলো:
- যাত্রীর পাসপোর্টের মেয়াদ সেই দিন তথা শ্রীলঙ্কায় আগমনের তারিখ থেকে আরও ৬ মাস আছে কি না
- ফিরতি টিকিট কাটা আছে কি না
- শ্রীলঙ্কায় যতদিন থাকা হবে তার জন্য যাত্রীর কাছে পর্যাপ্ত তহবিল আছে কি না
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ ১০ দর্শনীয় স্থান: শীতের ছুটিতে সাধ্যের মধ্যে ভ্রমণ
প্রাথমিকভাবে ইটিএ ভিসা ৩০ দিনের জন্য ইস্যু করা হয়। এই ভিসার ফি ২০ মার্কিন ডলার বা ২ হাজার ১৯২ দশমিক ১০ টাকা (১ মার্কিন ডলার = ১০৯ দশমিক ৬১ বাংলাদেশি টাকা)। এই ফি’টা মূলত বাংলাদেশে অবস্থান করে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের সময় বিমানবন্দর থেকেও তাৎক্ষণিকভাবে আবেদন করে ভিসা পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে ফি ২৫ মার্কিন ডলার বা ২ হাজার ৭৪০ দশমিক ১৩ টাকা। অনূর্ধ্ব ১২ বছরের শিশুদের জন্য কোনও ফি রাখা হয় না।
শ্রীলঙ্কার বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন ডলারের সমমূল্যের শ্রীলঙ্কান রুপিতে ভিসা ফি জমা দেওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা
বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য শ্রীলঙ্কা যাওয়ার উপায়
তুলনামূলকভাবে কম খরচে শ্রীলঙ্কা গমনের জন্য ভারত হয়ে যাওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্য প্রয়োজন হবে ভারতের ডাবল এন্ট্রি ভিসা। এই ভিসা ঢাকার শ্রীলঙ্কান দূতাবাস থেকে সংগ্রহ করতে হয়।
অন্যদিকে ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় যেতে না চাইলে সর্বোত্তম পথ ইটিএ ভিসা। এতে বেশি খরচ হলেও সরাসরি শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর প্লেন ধরা যায়, যেখানে সময় অনেক কম লাগে।
ভিসা শর্তানুযায়ী আগে থেকেই যাওয়া-আসার টিকিটে খরচ পড়বে ৬৬৯ মার্কিন ডলার (প্রায় ৭৩ হাজার ৩২৬ টাকা)। এই বিরতিহীন যাত্রায় সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
কলম্বো থেকে শ্রীলঙ্কার আভ্যন্তরীণ প্লেন ছাড়াও বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার জন্য রেলপথের ব্যবস্থা আছে।
আরও পড়ুন: ১০ হাজার টাকা বাজেটে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
শ্রীলঙ্কার জনপ্রিয় পর্যটন স্থানসমূহ
নুওয়ারা এলিয়া
মধ্য শ্রীলঙ্কার এই শহরটি ‘চায়ের দেশ’ এবং একই সঙ্গে ‘মিনি ইংল্যান্ড’ নামেও পরিচিত। কেননা এখানে আছে ভিক্টোরিয়া পার্ক, লেক গ্রেগরি, হরতন প্লেইন্স ন্যাশনাল পার্ক, পেড্রো টি ফ্যাক্টরি, হাকগালা বোটানিক্যাল গার্ডেন, সীথা আম্মান মন্দির। চোখ ধাঁধানো দৃশ্যের অবতারণা করে লাভারস লিপ ফল্স এবং রাম্বদা ফল্স।
এখানেই শেষ নয়; হাইকিংয়ের সময় আরও দেখা যায় আবেরদিন ঝর্ণা এবং সেন্ট ক্লেইয়ারস ঝর্ণা।
অটিজম কী? অটিজম সচেতনতা ও সহমর্মিতা কেন জরুরি?
বিশ্বজুড়ে অটিজম নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিকল্পে জাতিসংঘে প্রস্তাব গৃহীত হয় ২০০৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর। এ সময় ২ এপ্রিল তারিখকে অটিজমের জন্য একটি স্বতন্ত্র দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। অতঃপর ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছর এই দিনে আন্তর্জাতিকভাবে শুরু হয় বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উদযাপন।
এই সচেতনতার রূপরেখায় রয়েছে প্রতিটি অটিস্টিক মানুষের সামাজিক অধিকারের নিশ্চয়তা। এর মাঝে প্রত্যক্ত ও পরোক্ষভাবে নিহিত থাকে তাদের মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা। এই সার্বিক সুস্থতার বিকাশে অটিজম সচেতনতা ও সহমর্মিতা কেন জরুরি চলুন, তা জেনে নেওয়া যাক।
অটিজম কী
বিস্তৃত পরিসরে পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ, অস্পষ্ট উচ্চারণ, মৌখিক ও আচরণগত যোগাযোগের সমস্যাকে সামষ্টিকভাবে অটিজম বলা হয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে এই অবস্থার নাম অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার বা এএসডি। অটিজম বা আত্মসংবৃতি অথবা আত্মলীনতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের অটিস্টিক বা আত্মসংবৃত কিংবা আত্মলীন বলা হয়ে থাকে।
এই বিকাশগত মানসিক অবস্থা মস্তিষ্ক জনিত বিচ্যুতি বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে জেনেটিক কারণে ঘটে থাকে। আপাতদৃষ্টে এএসডি আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণ সামাজিক যোগাযোগে অদক্ষ বটে। কিন্তু তাদের শেখার, মনের ভাব আদান-প্রদান, এবং কোনো কিছু বোঝানোর ক্ষেত্রে ভিন্ন উপায় থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
অটিজম সচেতনতা কেন জরুরি
অটিজম সম্পর্কে সঠিক ধারণা
আত্মসংবৃত ব্যক্তিদের নিয়ে সমাজে নানা ধরনের ভুল ধারণা প্রচলিত, যেগুলোর মূলত কোনো ভিত্তি নেই। এএসডির ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান বিতরণ সম্ভব হলে এমন তথাকথিত ধারণাগুলোর অবসান ঘটবে। এই চিরাচরিত অনুমান কিংবা মন্তব্যগুলো কোনো কিছুর ব্যাপারে ভালোভাবে না জেনে তার বিচার করার শামিল। অজ্ঞতা থেকে উদ্ভূত এই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি আত্মলীন ব্যক্তি ও তার পরিবারের জন্য অসম্মানজনক।
বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে মা-বাবাদের প্রায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। তাই বৃহত্তর পরিসরে সচেতনতা সৃষ্টি হলে সবাই এ ব্যাপারে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে। কেননা সম্যক ধারণা থাকা যে কোনো ব্যক্তি জানবেন যে, এটি কোনো দুর্বল নিয়মানুবর্তিতা বা শিক্ষাদানের পরিণতি নয়। অর্থাৎ এই অবস্থার জন্য সেই শিশুটি বা তার মা-বাবা কেউই দায়ী নন।
আশু শনাক্তকরণ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ
এএসডি সম্পর্কে যত বেশি জানা যাবে, তত দ্রুতই এর উপসর্গগুলো শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এই প্রাথমিক শনাক্তকরণ অটিস্টিক শিশুদের পূর্ণ বিকাশের সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য অপরিহার্য। বৃহৎ পরিসরে অটিজমের উপসর্গগুলোর ব্যাপারে জানানো হলে বাবা-মা এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলগণ এ ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নিতে পারবেন।
এখানে শিশু ও মা-বাবার মধ্যকার পারস্পরিক বুঝের বিষয় আছে। সন্তানের কোন আচরণ কী অর্থ বোঝাচ্ছে, মা-বাবার কোনো আচরণটি সন্তান কিভাবে গ্রহণ করছে- এ বিষয়গুলোতে নিশ্চিত হওয়া অতীব জরুরি। এর উপর ভিত্তি করে তাদের পরবর্তী সামাজিক এবং যোগাযোগ দক্ষতাগুলো নির্ধারিত হয়।
আরও পড়ুন: জিমে অনুশীলনের সময় সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানোর উপায়
এছাড়া গুরুতর স্বাস্থ্যজনিত অবস্থাগুলোতে দ্রুত শনাক্তকরণের কোনো বিকল্প নেই। যেমন অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার বা গ্লোবাল ডেভেলপমেন্টাল ডেলের মতো মানসিক সমস্যার ক্ষেত্রে থেরাপি দরকার হয়।
সামগ্রিকভাবে নির্ভরযোগ্য তথ্যের যোগান থাকলে তা অনুসরণ করে অদূর ভবিষ্যতে বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। নিদেনপক্ষে যত তাড়াতাড়ি আত্মলীন শিশুরা সহায়তা পায়, প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠার আগে তাদের সুষ্ঠু বিকাশের সম্ভাবনাটাও ততটাই বাড়ে।
সামাজিক প্রতিবন্ধকতা নির্মূল
অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিরা শিক্ষা, কর্মসংস্থানসহ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। সমাজের সর্বত্র এটি রীতিমতো একটি অক্ষমতা হয়ে দাড়িয়েছে, যার জন্য তারা সামাজিক অন্তর্ভুক্তিও হারায়। বৃহত্তর সচেতনতা ও বোঝাপড়া বৃদ্ধি এই ধ্বংসাত্মক ব্যুহ ভাঙতে মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে।
অন্যান্যদের প্রতি তাদের ভিন্ন প্রতিক্রিয়া ও অভিব্যক্তি কখনই সমাজে তাদের কার্যকর অবদান রাখতে বড় বাধা নয়। বরং পর্যাপ্ত পরিবেশ ও সুযোগ পেলে তারাও মূল্যবান হয়ে উঠতে পারে। এমনকি অনেক আগে থেকেই এই বিষয়টি প্রমাণিত। অনেক আত্মসংবৃত ব্যক্তি সাধারণ কর্মকর্তাদের থেকেও বেশি উৎপাদনশীল কাজ করেছে।
আরও পড়ুন: সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
তাই নিছক কুসংস্কারে প্রভাবিত না হয়ে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ক্লাব এবং অফিস সবখানে তাদের অবাধে বিচরণ নিশ্চিত করা উচিৎ। আর এ জন্যে প্রয়োজন জনসমাগম জায়গাগুলোতে অটিজম নিয়ে সৃজনশীল আলোচনা। সবার থেকে আলাদা হওয়া মানেই সক্ষমতা থেকে পিছিয়ে যাওয়া নয়। বরং বৈচিত্র্যপূর্ণ সৃজনশীল মানসিকতা উন্নত কর্মযজ্ঞ গড়ে তুলতে পারে।
এরকম বিশ্লেষণী আলোচনার বদৌলতে যে কোনো মঞ্চে আত্মলীন ব্যক্তিদের সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ সম্ভব হতে পারে। সেই সঙ্গে সুযোগ তৈরি হবে তাদের প্রতিভা প্রমাণের।
ঈদে ঘরে ফিরতে অনলাইনে প্লেন, বাস ও ট্রেনের টিকেট কাটার উপায়
প্রসঙ্গ যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের, তখন প্রথমেই আসে জনসাধারণের সুযোগ-সুবিধাগুলোর কার্যকারিতার কথা। এখানে হাজারও প্রতিবন্ধকতার মাঝে উন্নয়নের মুখ দেখতে শুরু করেছে দেশের পরিবহন ব্যবস্থা। দীর্ঘ লাইনে না দাঁড়িয়ে ঘরে বসেই টিকেট কাটতে অভ্যস্ত হতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। এর ফলে কিছুটা হলেও মুক্তি মিলছে ঈদের সময়ের চরম দুর্ভোগ থেকে। তাছাড়া দেশের পর্যটন ও পরিবহন খাতে তথ্য-প্রযুক্তির যে সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে, এটি তারও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। চলুন, প্লেন, বাস, ও ট্রেনের ই-টিকেট করার ১০টি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
প্লেন, বাস, ও ট্রেনের টিকেট কাটার কয়েকটি অনলাইন পরিষেবা
বাংলাদেশ রেলওয়ে ই-টিকেটিং সার্ভিস ২০১২ সালের ২৯ মে চালু হয় ঘরে বসে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার ব্যবস্থা। বিভিন্ন ব্যাংক বা এমএফএস (মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস)-এর বদৌলতে দিন দিন আরও নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠছে এই সরকারি পরিষেবা।
eticket.railway.gov.bd ওয়েব ঠিকানায় যেয়ে সর্বোচ্চ ১০ দিন আগে থেকে টিকিট কাটা যায়। এখানে প্রয়োজন হয় জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মোবাইল নাম্বার। বাংলাদেশ রেলওয়ের নিজস্ব অ্যাপ ‘রেল সেবা’ আরও এক ধাপ উন্নত করেছে বিআরআইটিএস (বাংলাদেশ রেলওয়ে ইন্টিগ্রেটেড টিকেটিং সিস্টেম) ব্যবস্থাকে।
যারা ট্রেনে যেতে চান, তারা এক লেনদেনে সর্বোচ্চ মোট ৪টি টিকিট কিনতে পারেন। প্রতিদিন লেনদেন করা যায় সর্বোচ্চ ২টি; অর্থাৎ একজন যাত্রী এক দিনে সর্বোচ্চ ৮টি টিকিট কাটতে পারেন।
আরও পড়ুন: ঈদ অবকাশ: ভিসা-মুক্ত এশিয়ায় সেরা ভ্রমণ গন্তব্য
তবে এই ঈদে ৩ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত শুধুমাত্র ১টি লেনদেন করা যাবে। ফলে সর্বোচ্চ ৪টি সিট পাওয়ার উপায় থাকছে। এই নিয়ম ফেরার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য যা নির্ধারিত থাকবে ১৩ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স
২০১০ সালে অনলাইন বিমান টিকেট বুকিং সুবিধা যুক্ত হয় বিমান বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য। ২০১৯-এ অ্যান্ড্রয়েড এবং অ্যাপেল দুই ব্যবহারকারীদের জন্যই তৈরি হয় বিমান অ্যাপ। আসন্ন ঈদে biman-airlines.com ও বিমান অ্যাপ থেকে টিকেট ক্রয়কারীদের জন্য নতুন সুযোগ রয়েছে। টিকেট ক্রয়ের সময় BGDEAL24 প্রোমোকোড ব্যবহার করে যাত্রীরা নির্ধারিত ভাড়া থেকে ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন।
বিমান বাংলাদেশ অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সি থেকে টিকেট ক্রয়ের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া রয়েছে বিমান স্মার্ট কল সেন্টার নাম্বার ১৩৬৩৬। এটি প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গ্রাহকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।
আরও পড়ুন: সেকেন্ডহ্যান্ড মোটরসাইকেল কেনার আগে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি
সহজ
মূলত বাসের টিকেটের জন্য জনপ্রিয়তা পেলেও সহজ বাংলাদেশ রেলওয়ের সবচেয়ে বেশি টিকেট বিক্রয়ের রেকর্ড রয়েছে। ট্রেনের টিকিটগুলো বিআরআইটিএস ইস্যু করলেও সামগ্রিক কারিগরি বিষয়গুলো দেখাশোনা করে সহজ-সাইনেসিস-ভিন্সেন জেভি সিস্টেম।
মালিহা এম কাদির ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন সহজ। shohoz.com ওয়েবসাইটটি দেশের প্রায় সব পরিবহন প্রতিষ্ঠান, তাদের স্ব স্ব যাত্রাপথ, ও ভাড়া সংক্রান্ত তথ্যের এক বিশাল সংগ্রহশালা। বাস-ট্রেনের পাশাপাশি এখানে লঞ্চ এবং দেশের অভ্যন্তরীণ প্লেনের টিকেটও পাওয়া যায়।
যে কোনও পরিবহনে যাত্রা পরিবর্তন বা বাতিলকরণে তাদের গ্রাহক সেবা নাম্বার ১৬৩৭৪ সার্বক্ষণিক উন্মুক্ত।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটি কাটানোর জন্য ঢাকার কাছাকাছি সেরা কয়েকটি রিসোর্ট
বাসবিডি এবং বিডিটিকেটস
রবি আজিয়াটার টিকেটিং পোর্টাল বাসবিডি ও বিডিটিকেটস বাসের টিকেট সংগ্রহের জন্য আরও দুটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে বাসবিডির সাইট busbd.com.bd ২০১৩ সালে এবং বিডিটিকেটসের সাইট bdtickets.com ২০১৫ সালে চালু হয়। বর্তমানে অবশ্য বাসবিডি new.busbd.com.bd ওয়েব ঠিকানার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। তবে তাদের মোবাইল অ্যাপ একটি; বিডিটিকেটস, যার অ্যান্ড্রয়েড এবং অ্যাপেল দুই সংস্করণই আছে।
ওয়েবসাইটে যাত্রীর নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থেকে অথবা অ্যাপ থেকে যাত্রা সময় পরিবর্তন বা বাতিল সবই করা যায়। এ ক্ষেত্রে সরাসরি যোগাযোগের জন্য রয়েছে হটলাইন নাম্বার ১৬৪৬০। বাসের টিকেটগুলো অনলাইনে বুকিং দেওয়া গেলেও প্লেন বা লঞ্চের টিকেটের জন্য এই নাম্বারে ফোন দিয়ে বুকিং দিতে হয়।
অবশ্য ঈদের সময়টা একদম ভিন্ন। এ সময় কোনও টিকিট বাতিল বা যাত্রার সময় পরিবর্তনের উপায় নেই। আগামী ১ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত এই নিয়ম বহাল থাকবে।
আরও পড়ুন: রয়্যাল এনফিল্ড-৩৫০: বাংলাদেশের প্রথম ৩৫০ সিসি মোটরবাইক
যাত্রী
বাস ট্র্যাকিং-এর অনন্য সুবিধা যাত্রী নামক এই টিকিটিং প্ল্যাটফর্মকে আলাদা করেছে অন্যান্য পরিবহন পরিষেবাগুলো থেকে। বাসের বর্তমান অবস্থান দেখে কখন সেটি স্ট্যান্ডে পৌঁছাবে তার একটা ধারণা লাভ করতে পারেন যাত্রীরা।
২০১৯ সাল থেকে চালু হওয়া infojatri.co ওয়েবসাইটটি এভাবেই সেবা দিয়ে যাচ্ছে যাত্রীদের।
টিকিট বাতিল বা যাত্রার সময় পরিবর্তনের জন্য যোগাযোগের নাম্বার ০৯৬৪২০৮০৮০৮। সঙ্গত কারণে ফেরতযোগ্য অর্থ যাত্রীকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ফেরত দিয়ে থাকে। অবশ্য ঈদের সময়ের ক্ষেত্রে রিফান্ড তখনই করা হয়, যখন স্বয়ং পরিবহন প্রতিষ্ঠান ট্রিপ বাতিল করে এবং বিকল্প কোনও ট্রিপের ব্যবস্থা করে দিতে না পারে।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের পূর্ব প্রস্তুতি এবং দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু সতর্কতা
পরিবহন
দেশের অন্যান্য পরিবহন সেবার সঙ্গে এপিআই (অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টার্ফেস) ইন্টিগ্রেশনের মাধ্যমে paribahan.com ওয়েবসাইটটি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সেবা প্রদান করতে পারে। ফলে শুধু বাসেরই নয়, লঞ্চ ও প্লেনের টিকেটেরও ব্যবস্থা করতে পারে পরিবহন। এছাড়া টিকেট নিশ্চিতকরণে সার্বক্ষণিক সচল থাকে হটলাইন নাম্বার ০৯৬১৩৫৫৫০০০। সেই সঙ্গে রয়েছে দেশের প্রায় সবগুলো পেমেন্ট সিস্টেমের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সুবিধা।
অন্যান্য ডিজিটাল পরিষেবার ন্যায় পরিবহনেও ১ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত টিকেটের কোনও পরিবর্তন বা বাতিল গ্রহণযোগ্য নয়।
চক্রযান
মোহাম্মদ আল-আমিন হোসেন ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন চক্রযান। Chokrojan.com ওয়েবসাইটে রয়েছে ব্যবহারকারীদের জন্য স্বতন্ত্র অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনার সুযোগ। ফলে নিজ প্রোফাইল থেকেই যাত্রীরা টিকেটের পরিবর্তন সম্পর্কে আবেদন রাখতে পারেন। চক্রযানের শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ আছে। এই অ্যাপ আর হটলাইন নাম্বার ০১৭৯৯০০৫৭৪৭-এ যোগাযোগের মাধ্যমেও টিকেটে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের আবেদন রাখা যায়। তবে এই সুযোগটি ঈদের মৌসুমে থাকে না।
আরও পড়ুন: রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতা
শেয়ার ট্রিপ
২০১৩ সালে ট্রাভেল বুকিং বিডি নামক ফেসবুক পেজের মাধ্যমে প্লেনের টিকেট ব্যবসায়ে অসামান্য সাড়া পান কাশেফ রহমান। এই ট্রাভেল বুকিং বিডি পরবর্তীতে ফুলে ফেপে ২০১৪ সালে শেয়ার ট্রিপ-এর জন্ম দেয়। এটিই বাংলাদেশের প্রথম অনলাইন বিমান টিকেটিং সিস্টেম, যেটি শুরু থেকে ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল দুই ফ্লাইট-ই পরিচালনা করে আসছে।
শেয়ার ট্রিপের অ্যান্ড্রয়েড ও অ্যাপেল দুই প্ল্যাটফর্মের জন্যই মোবাইল অ্যাপ রয়েছে। এমনকি sharetrip.net ওয়েবসাইট ও অ্যাপ দুটোই ফ্লাইটগুলোর বর্তমান সময় ও মূল্য তালিকা প্রদর্শন করে। অর্থ পরিশোধের পর কর্মদিবসে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইস্যুকৃত ই-টিকিট ইমেইলের মাধ্যমে যাত্রীকে পাঠানো হয়। তবে ছুটি ও সপ্তাহাহের শেষ দিনগুলোতে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
ফ্লাইট বাতিল বা তারিখ পরিবর্তনের জন্য অ্যাপ বা ওয়েব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আবেদন রাখা যেতে পারে। এছাড়া সরাসরি কল করা যেতে পারে গ্রাহক সেবা নাম্বার ০৯৬১৭৬১৭৬১৭ বা হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার ০১৯৫৮৩৯১১৬৪-এ।
আরও পড়ুন: আপনি কি মার্কিন ডলার না কিনে বিদেশে ভ্রমণ করতে পারবেন?
গোজায়ান
২০১৭ সাল থেকে শুরু হওয়া রিদওয়ান হাফিজের গোজায়ান বাংলাদেশের পথিকৃৎ ওটিএ’র (অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি) মধ্যে অন্যতম। আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক প্লেন ভ্রমণের পাশাপাশি এটি পর্যটন শিল্পেও ইতোমধ্যে একটি পরিচিত নাম হয়ে উঠেছে। অ্যাপল ও অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ সঙ্গে নিয়ে gozayaan.com সাইটটি বিমান ভ্রমণে উৎসুক শ্রেণীর এক বিরাট অংশের চাহিদা পূরণ করছে।
টিকেট ও ট্রিপ সংক্রান্ত যে কোনও প্রয়োজনে সব সময় তাদের মেসেঞ্জার গ্রাহকদের সেবায় নিয়োজিত আছে। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চালু রয়েছে হটলাইন নাম্বার ০৯৬৭৮৩৩২২১১।
ফ্লাইট এক্সপার্ট
স্বনামধন্য গ্রুপ অব কোম্পানি ‘মক্কা গ্রুপ’-এর একটি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় মোটামুটি পূর্ণাঙ্গ অবস্থাতেই ছিল তাদের ট্রাভেল এজেন্সিটি। কিন্তু ২০১৭ সালের ১ মার্চ সালমান বিন রশিদ শাহ সাঈম পুরোদস্তুর কার্যকর এক টিকেটিং সিস্টেমে রূপ দেন। অতঃপর ২০২২-এর ৯ জুলাই flightexpert.com ওয়েব ঠিকানায় আত্মপ্রকাশ করে ফ্লাইট এক্সপার্ট। ওয়েবসাইটটি মোবাইল-বান্ধব হলেও এর রয়েছে স্বতন্ত্র অ্যান্ড্রয়েড ও অ্যাপল অ্যাপ।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
ওয়বসাইটের ‘বুক ন্যাউ (পে লেটার)’ ফিচারটি ফ্লাইট এক্সপার্টকে অনেকটা এগিয়ে রেখেছে সমসাময়িক এজেন্সিগুলোর থেকে। এর মাধ্যমে বুকিং আবেদন গ্রহণ করে কোনও পেমেন্ট ছাড়াই যাত্রীর জন্য সীটটি বুক করে রাখা হয়। এভাবে বুকিং করা টিকেটের অর্থ পরিশোধের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা রাখা হয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাত্রীর কাছে এলার্ট চলে যায় টিকেটটি কেনার জন্য।
অর্থ পরিশোধের পর এয়ারলাইন্স থেকে টিকেট ইস্যু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিকেটের পিডিএফ ফাইল যাত্রীকে ইমেইল করা হয়।
শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিনগুলোতে কল সেন্টার নাম্বার ০৯৬১৭১১১৮৮৮ চালু থাকে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। আর বাকি দিনগুলোতে এই নাম্বারে যোগাযোগ করা যায় সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা।
আরও পড়ুন: ১০ হাজার টাকা বাজেটে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
বাইটিকেটস
ট্রাভেল এজেন্সি এয়ারস্প্যান লিমিটেড-এর একটি সহযোগী উদ্যোগ হিসেবে ২০১৮-এর ১৯ আগস্ট শুরু হয় বাইটিকেটসের কার্যক্রম। সেই থেকে buytickets.com.bd সাইটটি আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় সব রকম বিমান টিকেটিং পরিষেবা দিয়ে আসছে। অন্যান্য ওটিএগুলোর মত এটিও ইমেল বা এসএমএসের মাধ্যমে যাত্রীদের ই-টিকেট সরবরাহ করে থাকে।
যাত্রা ও টিকেট মূল্য সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যের জন্য সরাসরি তাদের হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার ০১৭৩০০২৪৪৮৭-এ যোগাযোগ করা যেতে পারে।
শেষাংশ
অনলাইনে প্লেন, বাস, ও ট্রেনের টিকেট কাটার এই ১০টি মাধ্যম সার্বিক দিক থেকে ঈদে রাজধানীমুখী মানুষের জন্য উপযুক্ত উপায়। যেখানে ট্রেন ব্যবহারকারী বিশাল শ্রেণীর জন্য এককভাবে নিবেদিত রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে ই-টিকেটিং সার্ভিস। বাসযাত্রীদের চাহিদা মেটাতে রয়েছে সহজ, বাসবিডি, বিডিটিকেটস, যাত্রী, পরিবহন, এবং চক্রযান। আর যারা প্লেনে আসতে চান, বিমান বাংলাদেশ, শেয়ার ট্রিপ, গোজায়ান, ফ্লাইট এক্সপার্ট, এবং বাইটিকেটস তাদের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট হতে পারে। উপরন্তু, কাগুজে টিকেটের সুবিধাজনক বিকল্প হলেও ভ্রমণের পূর্বে ই-টিকেট প্রিন্ট করে নেওয়াটাই উত্তম।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশিরা
ঈদ অবকাশ: ভিসা-মুক্ত এশিয়ায় সেরা ভ্রমণ গন্তব্য
ঈদের ছুটি মানেই বিরামহীন কর্মব্যস্ততা থেকে বড় সময়ের জন্য অব্যাহতি। কর্মচাঞ্চল্যে আষ্টেপৃষ্ঠে বাধা ভ্রমণপিপাসু মানুষগুলো মুখিয়ে থাকে এই মৌসুমের জন্য। ছুটির পরিসরটা পর্যাপ্ত হওয়ায় অনেকেই চিন্তা করেন দেশের বাইরে ঘুরতে যাওয়ার। কিন্তু যখন ভিসা জটিলতার ব্যাপার আসে, তখনই ছুটিকে ঘিরে যাবতীয় পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়। তাছাড়া ট্যুর শেষ করে অফিস শুরুর আগেই তাড়া থাকে দেশে ফেরার। এই দুটো শর্ত পূরণেই অনেকটা সহায়ক ভূমিকা পালন করে এশিয়ার ভিসামুক্ত দেশগুলো। হেনলি পাসপোর্ট ইন্ডেক্স অনুসারে ২০২৪ সালে এশিয়ার ৪টি দেশের ভিসা নিয়মনীতি শিথিল রয়েছে বাংলাদেশিদের জন্য। চলুন, সেই দেশগুলোর দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
এই ঈদে ভিসা ছাড়াই ঘুরে আসতে পারেন এশিয়ার যে দেশগুলোতে
ভুটান
পূর্ব হিমালয়ে অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার স্থলবেষ্টিত এই দেশটির উত্তরে চীন এবং দক্ষিণে ভারত। একদিকে স্থাপত্যশিল্পের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ, অন্যদিকে রাফটিংয়ের জন্য এশিয়ার সেরা গন্তব্যগুলোর একটি এই ভুটান। দেশটির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ গাংখার পুয়েনসাম বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়া, যেটি এখন পর্যন্ত আরোহণ করা সম্ভব হয়নি। ভুটানের বিশেষত্বের মাঝে আরও রয়েছে এর বৈচিত্র্যপূর্ণ বন্যপ্রাণী, যার মধ্যে রয়েছে হিমালয় টাকিন এবং সোনালি ল্যাঙ্গুর।
ভুটানের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা
পারো
বিমান বন্দর থেকে নেমেই সোজা চলে যেতে হবে ভুটানের সর্বোচ্চ রাস্তা লা পাসে’তে। কেননা এখান থেকে দেখা মিলবে জলমহরি পর্বতের মোহনীয় দর্শন। অন্যান্য দর্শনীয় জায়গাগুলোর মধ্যে রয়েছে টাইগারস নেস্ট, কিচু মনস্ট্রি, পারো চু, রিনপুং জং, পারো মনস্ট্রি এবং তাং সাং।
আরও পড়ুন: ১০ হাজার টাকা বাজেটে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
থিম্পু
সমদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭ হাজার ৩৭৫ থেকে ৮ হাজার ৬৮৮ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত রাজধানী শহর থিম্পুর সর্পিলাকার রাস্তা উন্মাদকতা তৈরি করে পর্যটকদের মনে। রংবেরঙ্গের বাড়িগুলো যেন রঙের ফেরিওয়ালা।
শহরেই ঘোরার মাঝেই চোখে পড়ে মেমোরিয়াল চর্টেন, সিটি ভিউ পয়েন্ট, ক্লক টাওয়ার, থিম্পু জং, থিম্পু নদী, পার্লামেন্ট হাউস ও থিম্পু ডিজং।
পুনাখা
যাওয়াটা বেশ সময় সাপেক্ষ হলেও বিস্ময়কর সুন্দর দোচুলা পাস থেকে ফেরার পথে উন্মুক্ত হয়ে পড়ে পুনাখার অন্যান্য সৌন্দর্য্যগুলোও। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পুনাখা জং, ফোক হেরিটেজ মিউজিয়াম, আর্ট স্কুল ও ন্যাশনাল লাইব্রেরি। রাফটিংয়ের জন্য ভুটানের খ্যাতিটি মূলত এই পুনাখার কারণেই।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ ১০ দর্শনীয় স্থান: শীতের ছুটিতে সাধ্যের মধ্যে ভ্রমণ
ভুটানের ভিসামুক্ত ভ্রমণ রীতি
ভুটানে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের কোনো ভিসার প্রয়োজন হয় না। তবে তাদের পাসপোর্টের মেয়াদ বাংলাদেশ প্রস্থানের তারিখ থেকে অন্তত ৬ মাস বেশি থাকতে হয়। সেই সঙ্গে কমপক্ষে দুটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকা আবশ্যক। ভুটানে প্রবেশের আগ মুহূর্তে কাস্টমস কর্মকর্তা এগুলোর একটিতে ভিসা স্ট্যাম্প যুক্ত করে দেন।
এ সময় এসডিএফ (সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ফি) হিসেবে প্রতি দিনের জন্য ২০০ মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে হয়। বাংলাদেশি টাকায় এটি ২১ হাজার ৮৫২ টাকার (১ মার্কিন ডলার = ১০৯ দশমিক ২৬ বাংলাদেশি টাকা) সমান। ৪ দিনের এসডিএফ দিয়ে অতিরিক্ত আরও ৪ তথা মোট ৮ দিন থাকা যায়।
ভুটান ভ্রমণ খরচ
ভিসা ছাড়া ঢাকা থেকে ভুটান গমনের আকাশপথই একমাত্র উপায়। রাউন্ড ট্রিপের টিকিট কেটে রাখলে খরচ হবে ৬৭৩ থেকে ৮৪২ মার্কিন ডলার, যা ৭৩ হাজার ৫৩৫ থেকে ৯২ হাজার টাকার সমান। বিমানে মাত্র ১ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে ভুটানের পারোতে পৌঁছা যায়।
৫ দিনের ভ্রমণের জন্য এখানে খরচ হতে পারে জনপ্রতি কমপক্ষে ১৬ হাজার ৬৫০ থেকে থেকে ৩৭ হাজার ৮৮০ গুলট্রাম। বাংলাদেশি টাকায় যেটি ২১ হাজার ৮৫৪ থেকে ৪৯ হাজার ৭১৮ টাকার (১ ভুটানি গুলট্রাম = ১ দশমিক ৩২ টাকা) সমতূল্য। এর মধ্যেই থাকা-খাওয়াসহ অভ্যন্তরীণ যাতায়াত খরচ অন্তর্ভূক্ত।
আরও পড়ুন: সাধ্যের মধ্যে মালদ্বীপের বিকল্প হতে পারে এশিয়ার যেসব ট্যুরিস্ট স্পট
মালদ্বীপ
ভারত মহাসাগরে মাঝে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জের রাষ্ট্রটি এশিয়ার সবচেয়ে ছোট দেশ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর স্থলভাগের উচ্চতা ৪ ফুট ১১ ইঞ্চি এবং সর্বোচ্চ প্রাকৃতিক বিন্দু মাত্র ৭ ফুট ১০ ইঞ্চি। যে কারণে মালদ্বীপ বিশ্বের সর্বনিম্ন দেশ হিসেবে পরিচিত।
মালদ্বীপে কোথায় ঘুরবেন
মালে
মালদ্বীপের সবচেয়ে বড় এই শহরের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে দেশের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলোর সঙ্গে। এখানকার আকর্ষণ প্রবাল পাথরে বানানো হুকুরু মস্ক বা ওল্ড ফ্রাইডে, ভারুনুলা রালহুগান্ধু, মালে মাছ বাজার, সুনামি স্মৃতিস্তম্ভ, মালে জাতীয় জাদুঘর এবং মুলি আজ প্যালেস। স্নোর্কেলিং ও সার্ফিংয়ের স্বর্গরাজ্য এই মালে দ্বীপ।
হুলহুমালে দ্বীপ
মালদ্বীপের বৃহত্তম এই দ্বীপটি মূলত বাজেট হোটেল বা রেস্তোঁরার জন্য বিখ্যাত। রাজধানী মালে থেকে কাছাকাছি হওয়াতে নিমেষেই চলে আসা যায় হুলহুমলে সেন্ট্রাল পার্ক, হুলহুমলে বিচ, হুকুরু মিসকি এবং এইচডিসি বিল্ডিং দেখতে।
আরও পড়ুন: দিল্লি ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ভবিনফারু দ্বীপ
এখানে ভিড়ের প্রধান কারণ হলো সৈকতের বন্যান ট্রি ভবিনফারুর ঘরগুলো। ঘুরে দেখার সময় পর্যটকগণ জেট স্কিইং, প্যারাসেইলিং এবং স্নোর্কেলিং করতে কখনই ভোলেন না।
ঢাকার জনপ্রিয় ১০টি বুক ও স্টাডি ক্যাফে: বইপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য
বইয়ের সঙ্গে কফি বা অন্যান্য কোমল পানীয় পরিবেশন মূলত ইউরোপ-আমেরিকার ধারা। কিন্তু প্রিয় বই হাতে নিয়ে আয়েশ করে চা বা কফিতে চুমুক দেয়াটা যে কোনও ব্যস্ত-সমস্ত শহরবাসীরই কাম্য। কেননা শুধু জ্ঞানার্জনের জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরিতে নয়, এরকম স্থান যান্ত্রিক জীবনে বিস্তর প্রশান্তির জন্যও সহায়ক। স্বল্প পরিসরে হলেও এই ধরণের অভিজ্ঞতা বিগত কয়েক দশক ধরে পেয়ে আসছেন বাংলাদেশের বইপ্রেমীরা। চলুন, ঢাকা শহরে অবস্থিত ১০টি চমৎকার বুক ও স্টাডি ক্যাফের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
বইপোকাদের জন্য ঢাকার সেরা ১০টি বুক ও স্টাডি ক্যাফে
পাঠক সমাবেশ কেন্দ্র
দেশ ও বিদেশের বৈচিত্র্যপূর্ণ বইয়ের ভান্ডার হিসেবে দেশের সবচেয়ে পুরনো সংগঠন পাঠক সমাবেশ কেন্দ্র। এর প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৮৭ সালের ১২ জুলাই। ১৯৯৯ সালে পাঠক সমাবেশ রিডার্স ক্লাব কর্মসূচির ফলে সংগঠনটির সঙ্গে পাঠকদের সখ্যতা আরও বেড়ে যায়। বর্তমানে আরও যোগ হয়েছে শিশু কর্নার। বসে বই পড়ার জায়গা কম থাকলেও এর দেশি-বিদেশি অরিজিনাল প্রিন্টের সংগ্রহ কাছে টানে বইপ্রেমীদের।
শাহবাগ মোড়ের জাতীয় জাদুঘর থেকে কাঁটাবনের দিকে কিছুটা এগুলেই আজিজ সুপার মার্কেটের বিপরীত পার্শ্বে এর অবস্থান। এছাড়া কাঁটাবনের এলিফেন্ট রোডের ২৭৮/৩ ঠিকানায়ও একটি শাখা রয়েছে পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রের। প্রায় ৬ হাজার বর্গ ফুটের এই জায়গায় লাইব্রেরি ছাড়াও ঠায় পেয়েছে সাইলেন্ট রিডিং রুম এবং ক্যাফে। প্রতিদিন এর কার্যক্রম সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টায় শেষ হয়।
আরও পড়ুন: কীভাবে এল বাংলা ক্যালেন্ডার: দিনলিপি গণনার ইতিবৃত্ত
দ্যা রিডিং ক্যাফে
২০১৪ সাল থেকে চালু হওয়া দ্যা রিডিং ক্যাফের প্রতিষ্ঠাতা আতিকুর রহমান। রাজধানী জুড়ে ক্যাফেটির মোট ৪টি শাখা; গুলশান, বনানী, উত্তরা, এবং সায়েন্স ল্যাবরেটরি। সবগুলোতেই প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ১২০ জন অতিথির জন্য আয়োজন চলে।
বিদেশী ফিকশনধর্মী বইগুলোর আধিক্য থাকায় তরুণদের আনাগোণাটাই বেশি হয় এখানে। তবে সেই সাথে বাচ্চাদের বইও রয়েছে। এমনকি শিশুদের খেলা করার জন্য আলাদা একটি জোনও রয়েছে।
পছন্দের বইটি পড়ার পাশাপাশি ব্যবস্থা রয়েছে চা-কফি খাওয়ার।
দ্যা রিডিং ক্যাফে পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত হয় সকাল ১০টায়, আর বন্ধ হয়ে যায় রাত ৯টার দিকে।
আরও পড়ুন: কালের বিবর্তনে বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো বিলুপ্তির পথে
নার্ডি বিন কফি হাউজ
ফারিয়া মাহজাবিন এবং মাসরু হাসান কমল ২০১৭ সালের জুলাই মাসে শুরু করেন এই কফি শপটি।
গুটি কয়েক বইয়ের তাকগুলোকে ইউরোপীয় কায়দায় সামঞ্জস্য করা হয়েছে পুরো শপের আভ্যন্তরীণ নকশার সঙ্গে।
আরামপ্রদ বসার জায়গাগুলোতে কফি আর বই নিয়ে নিমেষেই একটি অলস বিকেল কাটিয়ে দেয়া যায়। এখানকার বইয়ের বিভাগটি ইংরেজি সাহিত্য পড়ুয়াদের জন্য উৎকৃষ্ট। তবে সেগুলো শুধু এই ক্যাফেতে পড়ার জন্য, কেনার উপায় নেই।
কফি হাউজটির অবস্থান ধানমন্ডির ২ নম্বর রোডের আহমেদ কাজী টাওয়ার নামের ৩৫ নম্বর বাড়িটির আন্ডারগ্রাউন্ডে। এখানে আগত টিনেজ ও তরুণ-তরুণীদের মূল আকর্ষণ থাকে বাহারি পদের কফি এবং স্ন্যাক্স। প্রতি চুমুকের স্বাদ বাড়িয়ে দেয় আড্ডা, আর মাঝে মাঝে লাইভ মিউজিক। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে নার্ডি বিন কফি হাউজ।
আরও পড়ুন: একুশে বইমেলার শিকড়ের সন্ধান
বেঙ্গল বই
বইয়ের মাঝে ডুব; এই স্লোগান নিয়ে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বেঙ্গল বইয়ের যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর। দেশ-বিদেশের বইয়ের পাশাপাশি এখানে রয়েছে পুরনো মূল্যবান বই ও ম্যাগাজিন। নিরিবিলিতে বসে বই পড়ার আধুনিক ক্যাফেতে রয়েছে চা-কফি ও ফ্রেশ জুস খাওয়ার ব্যবস্থা। আছে আকাশ কুসুম নামের শিশু কর্ণার, যেখানে শিশুরা আঁকাআঁকি, পড়াশোনা ও খেলাধুলা করতে পারে।
বিভিন্ন সময়ে এর আয়োজনগুলোর মধ্যে থাকে কবিতা পাঠের আসর, পাঠচক্র, প্রকাশনা উৎসব, নতুন লেখক ও তাদের লেখা নিয়ে সভা, চিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।
বেঙ্গল বইয়ের বর্তমান অবস্থান ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর রোডের ৪২ নম্বর বাসা। শুক্র ও শনিবার যাবতীয় কর্মকাণ্ড শুরু হয় সকাল ৯টায়, আর শেষ হয় রাত ৯টায়। সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে কাজ চলে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: টাকা কীভাবে এলো? মানব সভ্যতায় টাকার ইতিহাস
বাতিঘর
২০০৫-এর ১৭ জুন চট্টগ্রামের চেরাগি মোড়ে ১০০ বর্গফুটের ছোট্ট দোকান থেকে বাতিঘরের পথচলা। প্রতিষ্ঠাতা দীপঙ্কর দাশ। এখন চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেট মিলিয়ে বাতিঘরের মোট শাখা ৬টি। বাতিঘরের সংগ্রহে রয়েছে আড়াই হাজার প্রকাশনা সংস্থার প্রায় লক্ষাধিক বই।
দ্বিতীয় শাখা হিসেবে ঢাকার বাংলা মোটরের আউটলেটটি চালু হয়েছিল অনেক পরে; ২০১৭ সালে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনের সাত তলায় এই বইঘরটি বানানো হয়েছে লালবাগ কেল্লার আদলে। বাংলা- ইংরেজি দুই ভাষার বইগুলো পাঠকরা ভেতরে বসেই পড়তে পারেন। ছেলে-বুড়ো সবার রুচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই সমৃদ্ধ করা হয়েছে বইয়ের সংগ্রহ। এমনকি প্রত্যেকটি শাখাতেই রয়েছে আলাদা শিশু-কিশোর কর্নার। সরকারি ছুটির দিনসহ প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে বাতিঘর।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
মানবদেহের স্নায়ুতন্ত্রের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে মস্তিষ্ক। শারীর-বৃত্তীয়ভাবে শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলোর উপর আধিপত্য থাকে এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের। পেশী কার্যকলাপের ধারা বজায় রাখা এবং হরমোন নিঃসরণের মতো কার্যকলাপ নির্ভর করে এর সক্রিয়তার উপর। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এর কার্যকারিতার অসামঞ্জস্যতা বিরূপ প্রভাব ফেলে সারা শরীরের ওপর। এমনি একটি স্বাস্থ্য জটিলতা মস্তিষ্কে রক্তপাত, যা চূড়ান্ত পর্যায়ে মৃত্যু ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। এই রোগের নিরসণকল্পেই আজকের স্বাস্থ্য বিষয়ক নিবন্ধ। চলুন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণ ও লক্ষণসহ এর প্রতিরোধের উপায়গুলো জেনে নেই।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ কী
ট্রমা বা বাহ্যিক ভয়াবহ কোন আঘাতের কারণে রক্ত প্যারেনকাইমা বা মস্তিষ্কের টিস্যুগুলোকে উদ্দীপিত করে। এতে করে টিস্যুগুলো ফুলে যায়। এই অবস্থার নাম সেরিব্রাল এডিমা। এ সময় রক্ত জমাট বেধে হেমাটোমার সৃষ্টি করে। ফলে কাছাকাছি অন্যান্য টিস্যুতে চাপ ছড়িয়ে পড়ে মস্তিষ্কে প্রয়োজনীয় রক্ত প্রবাহ হ্রাস করে। এতে করে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের কোষগুলোকে নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
মাথার খুলির মধ্যে সংঘটিত এই ঘটনাকে সামগ্রিক ভাবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বলা হয়ে থাকে। চিকিৎসা শাস্ত্রে এটি ইন্ট্রাসেরিব্রাল হেমোরেজ (আইসিএইচ), হেমোরেজিক স্ট্রোক বা ব্রেন হেমোরেজ নামে পরিচিত।
এই রক্তপাত মাথার খুলির ভেতরে বিভিন্ন স্থানে ঘটতে পারে। যেমন- মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে, মস্তিষ্ক ও একে ঘিরে আচ্ছাদিত ঝিল্লির মধ্যে অথবা ঝিল্লির স্তরগুলোর মধ্যে।
আরও পড়ুন: ব্লু জোন রহস্য: রোগহীন দীর্ঘজীবী সম্প্রদায়ের খোঁজে
মস্তিষ্কে রক্তপাত কাদের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ
সেরিব্রাল রক্তপাত বিশেষ করে পুরুষ এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি ঘটে। আক্রান্তদের প্রায় ৪৪ শতাংশই এক মাসের মধ্যে মারা যায়। ৮৫ বা তদূর্ধ্ব বয়স্কদের আইসিএইচ হওয়ার সম্ভাবনা মধ্যবয়স্কদের তুলনায় ৯ দশমিক ৬ গুণ বেশি। এছাড়া নিয়মিত ধূমপায়ীদেরও মস্তিষ্কেও এমন রক্তপাতের জন্য সহায়ক পরিবেশ বিরাজ করে।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণ
মাথায় ভয়াবহ আঘাত
৫০ বছরের কম বয়সীদের মস্তিষ্কে রক্তপাতের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল বাহ্যিক আঘাত। সাধারণত সড়ক দুর্ঘটনা, কোথাও পড়ে যাওয়া, খেলাধুলা সংক্রান্ত আঘাত, বা সহিংসতা বা হামলায় মাথায় গুরুতর আঘাতের সম্ভাবনা থাকে।
উচ্চ রক্তচাপ
সেরিব্রাল হেমোরেজের ক্ষেত্রে আরও একটি শ্রেণী অনেক ঝুঁকির মধ্যে থাকে। আর সেটি হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ সম্পন্ন ব্যক্তিদের শ্রেণী। অনেক সময় নিয়ে এই অবস্থার উদ্ভব হলেও এটি রক্তনালীর দেয়ালকে ভয়ঙ্কর ভাবে দুর্বল করে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
রক্ত জমাট বাধা
মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাধলে রক্তনালী ভেঙ্গে ভেতরটা রক্তে ভরে গিয়ে ধমনী ব্লক করে দেয়। ফলে রক্ত মস্তিষ্কের বাইরে বেরতে না পেরে রক্তের কোষগুলো ভেঙে মস্তিষ্কের টিস্যুতে ছড়িয়ে পরে। ফলে পর্যাপ্ত অস্কিজেন না পাওয়ায় মস্তিষ্কের টিস্যুগুলো ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
অ্যানিউরিজম
এটি মূলত রক্তনালীর প্রাচীরের একটি সমস্যা, যেটি হলে প্রাচীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলে যায়। এই ফোলা অংশ ফেটে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তপাত ঘটতে পারে, যেটি সরাসরি স্ট্রোকের দিকে নিয়ে যায়।
আর্টেরিওভেনাস ম্যালফর্মেশন্স
রক্তনালীর এই অবস্থাটি মূলত ধমনী এবং শিরাগুলোর মধ্যকার সংযোগস্থলগুলোতে চিড় ধরাকে বোঝায়। রক্তনালী যতই দুর্বল হতে থাকে মস্তিষ্কের মধ্যে ও তার চারপাশে ততই এই সমস্যাটি বাড়তে থাকে।
অ্যামাইলয়েড অ্যাঞ্জিওপ্যাথি
এটি মস্তিষ্কের রক্তনালীর দেওয়ালগুলোতে অ্যামাইলয়েড-বিটা প্রোটিন জমা হওয়াকে নির্দেশ করে। এই অস্বাভাবিকতা কখনও কখনও বার্ধক্য এবং উচ্চ রক্তচাপের ফলস্বরূপ ঘটে থাকে। এটি চূড়ান্ত অবস্থায় যাওয়ার আগে অনেক ছোট ছোট হেমোরেজের কারণ হতে পারে, যেগুলোর অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির অলক্ষ্যেই থেকে যায়।
আরও পড়ুন: জিমে অনুশীলনের সময় সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানোর উপায়
রক্ত-সংক্রান্ত ব্যাধি
হিমোফিলিয়া এবং সিকেল সেল অ্যানিমিয়া রোগের কারণে রক্তের প্লেটলেট এবং জমাট বাঁধার মাত্রা হ্রাস পায়। রক্ত পাতলা হয়ে যাওয়াটাও আইসিএইচ-এর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
যকৃতের রোগ
যখন যকৃত ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন বিষক্রিয়া রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে স্নায়ুতন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে। এই বিষগুলোতে থাকে অ্যামোনিয়া এবং ম্যাঙ্গানিজ, যেগুলো স্নায়ু কোষের ক্ষতি করতে পারে।
ব্রেন টিউমার
এটি একটি ক্যান্সার যা কতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে নির্দেশ করে। এগুলোর মধ্যে কিছু কিছু থাকে সুপ্ত, যেগুলোকে ম্যালিগন্যান্ট বলা হয়ে থাকে। টিউমার মস্তিষ্কে শুরু হতে পারে, আবার শরীরের অন্য কোথাও শুরু হয়ে মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আরও পড়ুন: নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি যে কারণে
ঈদের কেনাকাটায় জনপ্রিয় ১০টি বাংলাদেশি পোশাক ব্র্যান্ড
পোশাক বিপণনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় ঈদের মৌসুম। বিশেষ করে ঈদুল ফিতরকে উদ্দেশ্য করে রোজা শুরু হতে না হতেই সরব হতে শুরু করে পোশাকের বাজার। নতুন কাপড়ের উৎসবকে স্মরণীয় করে রাখতে নিজেদের প্রিয় ব্র্যান্ডের শরণাপন্ন হন ফ্যাশন সচেতন ক্রেতারা। এই শৌখিন শ্রেণিটিকে উদ্দেশ্য করে নিজেদের নতুন শৈলী নিয়ে হাজির হয় দেশ সেরা ব্র্যান্ডগুলো। এই উপলক্ষে চলুন, দেশের জনসমাদৃত ১০টি পোশাক ব্র্যান্ডের ঈদ সংগ্রহ দেখে নেওয়া যাক।
ঈদের বাজারে লোকপ্রিয় ১০টি বাংলাদেশি পোশাক ব্র্যান্ড
আড়ং
বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ বেসরকারি সংগঠন ব্র্যাকের সামাজিক উদ্যোগ হিসেবে আড়ংয়ের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর। প্রতিষ্ঠাতা আয়েশা আবেদ এবং আমেরিকান শিক্ষাবিদ ও সমাজকর্মী মার্থা চ্যান।
প্রতিবারের মতো এবারও দেশীয় সিল্ক ও মসলিনের মতো দামি ফেব্রিকের সংমিশ্রণ ঘটাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। স্বভাবতই এক্সক্লুসিভ কালেকশনের অন্যতম আকর্ষণ হ্যান্ড এম্ব্রয়ডারি। কাট, প্যাটার্ন ও নকশার সমন্বয়ে করা প্রতিটি পোশাকেই ফ্যাব্রিক নির্বাচনে গুরুত্ব পেয়েছে উৎসবমুখরতা ও স্বস্তি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পুরুষদের পোশাকের সেরা ব্র্যান্ডসমূহ
মেয়েদের সালোয়ার কামিজে প্রাধান্য পেয়েছে লেয়ারিং ডিজাইন। পরিচিত রঙের সঙ্গে রয়েছে সাগর নীল, ল্যাভেন্ডার, টিল, প্লাম, মিন্ট গ্রিন, আইভরি, ময়ুর নীল, ও প্যাস্টালের মতো ভিন্নধর্মী রঙের ব্যবহার।
পুরুষদের পাঞ্জাবিতে থাকছে বয়সভিত্তিক বিচিত্র ডিজাইন। গরমকে কেন্দ্র করে তরুণদের পাঞ্জাবিগুলো প্রায় সবই খুব হালকা নকশার।
কে-ক্র্যাফট
১৯৯৩ সালে দেশের ঐতিহ্যবাহী বস্ত্র ও শৈলীকে উপজীব্য করে খালিদ মাহমুদ খান এবং শাহনাজ খান প্রতিষ্ঠা করেন কে-ক্র্যাফট।
প্রতি উৎসবের মতো এবারও পুরুষদের জন্য নিজস্ব স্টাইলের রেগুলার ও ফিটেড পাঞ্জাবির সংগ্রহ রেখেছে কে-ক্র্যাফট। পাশাপাশি রয়েছে কাট নির্ভর একরঙা পাঞ্জাবিও।
আরও পড়ুন: এই গরমে ট্যানিং এড়াতে কিছু টিপস
নারীদের জন্য নির্ধারিত পোশাক সারিতে দেখা গেছে ঐতিহ্য, ক্ল্যাসিক, রেট্রো, ফিউশন, ও লং প্যাটার্ন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ডাবল লেয়ার্ড সালোয়ার কামিজ, ডাবল লেয়ার্ড কুর্তি, টিউনিক, কাফতান, এবং টপ্স-পালাজো সেট। এ ছাড়া শাড়ির ক্যাটাগরিকে সমৃদ্ধ করেছে কটন, মসলিন, সিল্ক, খাদি মসলিনের বৈচিত্র্যগুলো।
প্যাটার্ন, ফ্যাব্রিক এবং রঙের দিক দিয়ে বড়দের মতো বাচ্চাদের পোশাকেও মিলছে একই বৈশিষ্ট্যের দেখা।
রঙ বাংলাদেশ
বিপ্লব সাহা, সৌমিক দাস, মামুন আল কবির এবং জাকিরুল হায়দার। ১৯৯৪ সালে সদ্য স্নাতক পাশ করা এই চার বন্ধু মিলিত প্রচেষ্টায় জন্ম নেয় রঙ। কবির এবং হায়দার কয়েক বছরের মধ্যে তাদের অংশীদারিত্ব ছেড়ে দেন। কিন্তু বিপ্লব এবং সৌমিক টানা ২১ বছর ধরে চালিয়ে যান কাপড়ের ব্যবসা। অতঃপর ২০১৬ সালে, রঙ ‘বিশ্ব রঙ’ এবং ‘রঙ বাংলাদেশ’- এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়। এখানে ‘বিশ্ব রঙ’-এর কর্ণধার বিপ্লব সাহা, আর ‘রঙ বাংলাদেশ’-এর একমাত্র মালিক সৌমিক দাস। প্যারেন্ট কোম্পানি ‘রঙ’-এর দৌলতে বর্তমানে দুটোই বেশ স্বনামধন্য ব্র্যান্ড।
আরও পড়ুন: প্যারিস ফ্যাশন উইক: বেলা হাদিদের শরীরে জাদুকরী 'স্প্রে প্রিন্টেড' পোশাক
ঈদুল ফিতর ২০২৪ কে উপলক্ষ করে ‘রঙ বাংলাদেশ’ নিয়ে এসেছে ৪ উপাদান বিশিষ্ট ক্লাসিক্যাল থিম।
এগুলো হচ্ছে বাতাস, আগুন, পানি ও মাটি। এই থিমের সঙ্গে সব ধরনের পোশাকের নকশায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দেশীয় সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় আবহকে।
গ্রীষ্মের উষ্ণতার সঙ্গে মানিয়ে চলতে পোশাক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে বাতাস চলাচল করতে পারে এমন হালকা ওজনের ফেব্রিক। এগুলোর মধ্যে আছে স্লাব কটন, লিনেন, জ্যাকার্ড কটন, হাফসিল্ক, বারফি, জর্জেট ও ভিসকস। আর রঙের ভিত্তিতে প্রাধান্য পেয়েছে মেরুন, ফিরোজা, নীল, আকাশী, লাল, খয়েরি, হালকা কমলা, গাঢ় সবুজ ও কফি রঙগুলো।
অঞ্জন্স
১৯৯৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি শাহীন আহমেদের হাত ধরে শুরু হয় অঞ্জন্সের পথ চলা। এবারের ঈদে অঞ্জন্সের নকশা শৈলী, রঙ ও ফেব্রিকে থাকছে বসন্ত থেকে গ্রীষ্মে রূপান্তরের আবহ।
সালোয়ার কামিজ ও ওড়নার মুল উপাদান লিনেন, জ্যাকার্ড কটন, রেয়ন, ডুপিয়ান, ও হাল্কা সিল্ক।
আরও পড়ুন: হাই হিল কিভাবে পুরুষের পা থেকে নারীর পায়ে এলো?
শাড়ি বিভাগে ঠায় পেয়েছে মসলিন, রাজশাহী বলাকা সিল্ক, টাঙ্গাইল কটন, লিনেন কটন, ও ভয়েল কাপড়। কামিজের পাশাপাশি শাড়ির নকশারও বিশেষ বিষয় ব্লকপ্রিন্ট, এমব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট, কারচুপি ও ডিজিটাল প্রিন্ট।
কাপড় ও নকশার একই রকম হাল্কা কাজ দেখা যাচ্ছে পুরুষদের সেরা পোশাক পাঞ্জাবিতেও। স্লিম ফিট, কলিদার কাট, ও রেগুলার ফিট সব ধরনের আকারই মিলবে এবারের ঈদ আয়োজনে।
এক্স্ট্যাসি
১৯৯৭ সাল থেকে শুরু হওয়া দেশের স্বনামধন্য রেডিমেড পোশাক ব্র্যান্ড এক্স্ট্যাসির প্রতিষ্ঠাতা তানজিম আশরাফুল হক। এক্স্ট্যাসির অধীনে পুরুষদের জন্য স্বতন্ত্র ব্র্যান্ড ‘তানজিম’ এবং নারীদের জন্য ‘জারজাইন’। শুধুমাত্র তরুণদেরকে উদ্দেশ্য করে গড়ে ওঠা এই প্রতিষ্ঠানের সর্বাঙ্গীন মনোনিবেশ থাকে হাল ফ্যাশনের প্রতি।
সাধারণত পার্টি পরিধান, বোতাম-সমেত লম্বা হাতা, পিনস্ট্রিপ্ড শার্ট, ক্যাজুয়াল টি-শার্ট, ডেনিম জিন্স, এবং স্পোর্টস জ্যাকেট পুরুষদের মুল আকর্ষণ। এর সঙ্গে উৎসবগুলোতে যুক্ত হয় তানজিম স্কোয়াডের টি-শার্ট ও তানজিম পাঞ্জাবিগুলো। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে জারজাইনের কাফতান, শ্রাগ, টপস, শার্ট, এবং টপ-বটম সেট সর্বাধিক বিক্রয়ের তালিকায়। বিশেষ করে যারা এক রঙের পোশাক পরতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এই এক্স্ট্যাসি সেরা।
আরও পড়ুন: নতুন পোশাক কেনার আসক্তি কমানোর উপায়
সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক, চিকিৎসা শাস্ত্রে যেটি এসএমআই (সাইলেন্ট মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন) নামে পরিচিত। আশঙ্কাজনিত কোনো উপসর্গ না থাকায় এই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতাটি অগোচরেই থেকে যায়। হৃদরোগ জনিত এই সমস্যা আগে থেকে টের পাওয়ার কোনো উপায় বা মেডিকেল টেস্ট নেই।
কয়েক সপ্তাহ বা মাস পরে বারবার শ্বাসকষ্ট বা বুক জ্বালাপোড়ার কারণে ডাক্তারের সরণাপন্ন হলে পরীক্ষা-নিরিক্ষায় তখন ধরা পড়ে। এই স্বাস্থ্য সমস্যা বড় ধরনের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এমনকি হার্ট ফেইলিউরের মাধ্যমে মৃত্যুর কারণও হতে পারে।
তাই চলুন, পূর্ব সতর্কতার জন্য সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক সম্বন্ধে জরুরি বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
বিশ্বজুড়ে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু
প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ২ কোটি মানুষ নানা ধরনের হৃদরোগে মারা যায়। এগুলোর মধ্যে ৬০ শতাংশেরই মৃত্যুর কারণ হার্ট অ্যাটাক।
জেএএমএ (জার্নাল অফ অ্যামেরিকান মেডিকেল অসোসিয়েশন) কার্ডিওলজিতে ২০১৮ সালে নীরব হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি নিয়ে একটি সমীক্ষা প্রকাশিত হয়। সেখানে দেখা যায় যে, পূর্ব উপসর্গ দেখা দিয়ে যে হার্ট অ্যাটাকগুলো হয় তার ৫ বছরের মধ্যে মারা যাওয়া লোকের সংখ্যা ৮ শতাংশ। আর উপসর্গ বিহীন হার্ট অ্যাটাকের পর ৫ বছরের মধ্যে মারা যাওয়া লোকের সংখ্যা ১৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
কেবল নিউজ নেটওয়ার্কের একটি গবেষণায় দেখা যায়, আকস্মিক কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মারা যাওয়া লোকদের ৪২ দশমিক ৪ শতাংশেরই পূর্বে এসএমআইয়ের রেকর্ড আছে।
সাইলেন্ট ইস্কিমিয়া হিসেবে পরিচিত এই হার্ট অ্যাটাকের পরে বিভিন্ন হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ৩৪ শতাংশে বেড়ে যায়।
সিডিসি (সেন্টার্স ফর ডিজিস কন্ট্রোল এ্যান্ড প্রিভেন্শন) অনুসারে, প্রতি ৫ টিতে ১টি হার্ট অ্যাটাক সাইলেন্ট হয়ে থাকে, যেখানে ব্যক্তি বুঝতেই পারেন না যে তার হৃৎপিণ্ডটি নষ্ট হয়ে গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর নতুন হার্ট অ্যাটাক হওয়ার রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৫ হাজার এবং একাধিকবার হার্ট অ্যাটাক হওয়া রোগীর সংখ্যা ২ লাখ। এদের মধ্যে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজারই এই নিরব ঘাতকের শিকার।
আরও পড়ুন: জিমে অনুশীলনের সময় সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানোর উপায়
ভারতে সমস্ত হার্ট অ্যাটাকের প্রায় ৪৫ শতাংশ সাইলেন্ট ইস্কিমিয়া।
নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি যে কারণে
একটি সুস্থ জীবনের জন্য দৈহিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই যত্নশীল হওয়া জরুরি। নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও আশেপাশের মানুষদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা নারী ও পুরুষ দুজনের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই বিপজ্জনক। প্রচন্ড হতাশায় এমনকি আত্মহত্যা পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারে এই সমস্যা। ইতিহাস বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই পরিস্থিতির নিত্যতার পাল্লা পুরুষদের দিকেই বেশি ভারী। অর্থাৎ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার আধিক্য থাকলেও নারীদের চেয়ে পুরুষদের আত্মহত্যার হার বেশি। এই সমস্যার শিকড় কোথায়, চলুন, জেনে নেওয়া যাক।
বিশ্বজুড়ে নারী ও পুরুষের আত্মহত্যা
নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি থাকলেও, সেটি পুরুষদের ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত বেশি মৃত্যু পর্যন্ত গড়ায়। জেন্ডার প্যারাডক্স হিসেবে পরিচিত এই অসঙ্গতির জন্য বিশ্বজুড়ে আত্মহত্যার মাধ্যমে মারা যাওয়া পুরুষের সংখ্যা নারীদের তুলনায় বেশি।
২০০৮ সালে আত্মাহুতির মাধ্যমে মারা যাওয়া পুরুষের সংখ্যা ছিল নারীদের তুলনায় প্রায় ১ দশমিক ৮ গুণ বেশি। ৭ বছর পর ২০১৫ সালেও আনুপাতিক হারটা প্রায় অপরিবর্তিতই ছিল, যা ১ দশমিক ৭। পশ্চিমা দেশগুলোতে আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুতে নারীদের তুলনায় পুরুষদের সংখ্যা হরহামেশাই তিন থেকে চার গুণ বেশি থাকে। এই বৃহৎ পরিসরটি পরিলক্ষিত হয় ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে।
আরও পড়ুন: কান পেতে রই: দেশের প্রথম মানসিক সহায়তা হেলপলাইন
১৯৫০-এর দশক থেকে এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুরুষদের আত্মহত্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ২০১৯ সালে পুরুষদের মধ্যে আত্মহত্যায় মৃত্যুর হার নারীদের তুলনায় ৩ দশমিক ৫ গুণ বেশি ছিল। ২০২১ সালে এই আনুপাতিক হার বেড়ে ৩ দশমিক ৯০- এ দাঁড়িয়েছে। মার্কিন জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশই পুরুষ, আর এই হিসাবে আত্মহত্যা জনিত কারণে পুরুষের মৃত্যুর হার দাঁড়ায় প্রায় ৮০ শতাংশ।
কিশোর এবং তরুণদের আত্মাহুতির হার অন্যান্য বয়সের তুলনায় কম। তবে আত্মঘাতী বিষয়টি এখনও মার্কিন তরুণদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ।
অন্যদিকে, আত্মহত্যার প্রচেষ্টার ঘটনা ঘটে নারীদের মধ্যে বেশি, যা পুরুষদের তুলনায় দুই থেকে চার গুণ। পুরুষদের তুলনায় প্রায় ১ দশমিক ৩৩ গুণেরও বেশি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা। শিক্ষার্থীদের মাঝেও এমন প্রবণতা পুরুষ শিক্ষার্থীদের তুলনায় ১ দশমিক ৮৬ গুণ বেশি।
আরও পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
আশঙ্কাজনক আত্মহত্যার হারে পশ্চিম ইউরোপের একমাত্র দেশ হলো বেলজিয়াম। সেখানে প্রতি ১ লাখে আত্মহত্যা করে ১৮ দশমিক ৩ জন, যার মধ্যে প্রতি লাখে ২৪ দশমিক ৯ জন পুরুষ এবং ১১ দশমিক ৮ জন নারী।
২০১৯ সালে বিশ্বের সর্বোচ্চ আত্মহত্যার হার ছিল আফ্রিকার দেশ লেসোথোতে। সেখানে প্রতি লাখে আত্মাহুতির রেকর্ড ছিল ৭২ দশমিক ৪ জনের, যাদের মধ্যে প্রতি লাখে পুরুষ সংখ্যা ১১৬ জন এবং নারী ৩০ দশমিক ১ জন।
ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০০০ সালে বাংলাদেশে আত্মহত্যায় পুরুষের মৃত্যুর হার ছিল ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং নারী মৃত্যুহার ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। নারী-পুরুষ উভরে ক্ষেত্রে এই হার ২০১৩ সাল পর্যন্ত ক্রমাগত কমতে থাকে। অতঃপর ২০১৬ সাল পর্যন্ত কিছুটা ওঠা-নামার পর আবার বাড়তে শুরু করে। ২০১৯ সালে পুরুষ মৃত্যুহার ছিল ৫ দশমিক ৭ শতাংশ, যা নারীদের ক্ষেত্রে ছিল ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: অ্যান্টিবায়োটিক-এর অপপ্রয়োগ: কেন অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করছে না?