জীবনধারা
নারীদের জন্য মার্শাল আর্ট: ঢাকার কোথায় শিখবেন কুংফু, জুডো, বা কারাতে
আত্মরক্ষার সক্ষমতা শারীরিক সুরক্ষার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাস ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই সমসাময়িক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের জন্য আত্মরক্ষার কৌশল শেখা অপরিহার্য। এই প্রশিক্ষণ তাদেরকে প্রতিদিন পথেঘাটে চলতে ফিরতে নিরপত্তার ক্ষেত্র তৈরি করবে। ঢাকা শহরের বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে কুংফু, জুডো বা কারাতের মতো মার্শাল আর্ট শেখানো হয়। তন্মধ্যে নারীদের জন্য সুব্যবস্থা থাকা ট্রেনিং স্কুলগুলোর ব্যাপারে চলুন, বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
নারীদের মার্শাল আর্ট ও আত্মরক্ষার কৌশল শেখার জন্য ঢাকার ১০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
.
কেও ফাইট স্টুডিও (KO Fight Studio)
বিশ্ব কারাতে সংস্থা শিনকিওকুশিঙ্কাই-এর বাংলাদেশ শাখা পরিচালিত হয় কেও (পূর্ণরূপ কারাতে অর্গানাইজেশন) ফাইট স্টুডিও নামে। এখানে জাপানের কিয়োকুশিন কারাতে স্টাইল শেখানো হয়। প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক এবং প্রধান প্রশিক্ষক শিহান আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ হোসাইন একজন ৪র্থ ড্যান (৪র্থ ডিগ্রির ব্ল্যাক বেল্টধারী)।
KO Fight Studio-এর কারিকুলামে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে মাস্টার স্ট্রাইকিং, এস্কেপ ও ডি-এস্কেলেশন দক্ষতা। এগুলোর প্রত্যেকটি বাস্তব জীবনের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কার্যকরভাবে আত্মরক্ষার জন্য সহায়ক।
প্রশিক্ষণের সময়কাল ন্যূনতম ৮ সপ্তাহ, যেখানে প্রতিটি ২ ঘণ্টা করে মোট ১৬টি ক্লাস নেওয়া হয়। ভর্তি ফি ২ হাজার টাকা এবং মাসিক ফি ৪ হাজার টাকা।
ঠিকানা: লেভেল- ৪, ভবন নং- ১৯-২০, রোড- ১১৩/এ, গুলশান (শাহাবুদ্দিন মেডিকেলের পাশে)
যোগাযোগের লিঙ্ক: https://www.facebook.com/KOFSDhaka/
আরো পড়ুন: রাতে বাসে বা গণপরিবহনে নিরাপদে ভ্রমণে কিছু সতর্কতা
চাইনিজ কুংফু ও উশু স্কুল (Chinese Kung Fu and Wushu School)
এই স্কুলের ট্রেনিং-এর মূল উপজীব্য হলো চীনের ঐতিহ্যবাহী উশু এবং কুংফু। স্টাইল দুটির আধুনিক রূপান্তরিত সংস্করণ যেমন সানশু, তাউলু, ও উইং চুন-এর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির পথ চলা শুরু হয় সিফু আব্দুল্লাহ আল মনসুরের হাত ধরে। তিনি মার্শাল আর্টের বিভিন্ন শাখায় পারদর্শী এবং এখানকার প্রধান প্রশিক্ষক।
Chinese Kung Fu and Wushu School-এ স্ট্রাইকিং, গ্র্যাপলিং, অস্ত্রশস্ত্র, এবং হাইব্রিড/মিক্সড মার্শাল আর্টস-এর ওপর তালিম দেওয়া হয়। স্ট্রাইকিং প্রশিক্ষণে রয়েছে বক্সিং, কারাতে, মুয়ে থাই, কেনপোসহ বিভিন্ন যুদ্ধশৈলী। গ্র্যাপলিং শাখায় আছে জুডো, আইকিডো, সুমো, ও রেসলিং-এর মতো কৌশল। তদুপরি, এখানকার প্রশিক্ষণার্থীরা কেন্ডো, ফেন্সিং, ইয়াইডো-সহ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণও পেয়ে থাকেন।
প্রতিষ্ঠানটি শুধু শারীরিক শক্তি নয়, মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা, মনঃসংযোগ বৃদ্ধি ও শৃঙ্খলাবোধ গড়ে তোলার ওপরেও জোর দেয়।
বিশেষ সুবিধা হিসেবে রয়েছে অনলাইন কুংফু লাইভ ক্লাসের ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।
প্রধান শাখাঃ ভবন-৫৮, রোড-৫, ব্লক-এফ, আফতাবনগর, বাড্ডা। এছাড়াও ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, বসুন্ধরা ও উত্তরা’তেও এর শাখা আছে।
ফেসবুক পেজ: https://www.facebook.com/wushubd
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধে করণীয়
সোবহান কারাতে অ্যাকাডেমি (Sobhan Karate Academy)
এই অ্যাকাডেমিতে ৫ থেকে ৬৫ বছর পর্যন্ত সব বয়সের বয়সী প্রশিক্ষণার্থী রয়েছে। এমনকি এদের মধ্যে ৮০ শতাংশেরও বেশি হচ্ছে নারী।
সোবহান কারাতে অ্যাকাডেমি’র প্রশিক্ষণের কেন্দ্রে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় কারাতে স্টাইল শোতোকান। স্টুডেন্ট ও পেশাদার উভয়ের জন্য ভর্তি ফি ৫ হাজার টাকা। মাসিক ফি স্টুডেন্টদের জন্য ৩ হাজার টাকা, আর পেশাদারদের জন্য ৪ হাজার টাকা।
Sobhan Karate Academy-এর ৯ মাসব্যাপি বিশেষ আত্মরক্ষার কোর্স রয়েছে। এর জন্য ভর্তি ফিসহ পুরো খরচ ৪০ হাজার টাকা। এখানে প্রথম মাসে স্টুডেন্টদেরকে ১০ হাজার টাকা এবং পেশাদারদেরকে ১১ হাজার টাকা প্রদান করতে হয়।
ঠিকানা: রাশিয়ান কালচারাল সেন্টার, হাউজ নং- ৫১০, রোড ৭, ধানমন্ডি
ওয়েবসাইট লিঙ্কঃ https://www.sobhankarateacademy.com/
আরো পড়ুন: ঘরে রান্নার কাজে নিরাপদে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের উপায়
মার্শাল আর্ট বিডি (Martial Art BD)
আন্তর্জাতিক সনদপ্রাপ্ত ও দক্ষ বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এই প্রতিষ্ঠান। টিমের প্রধান ৪র্থ ড্যান সেন্সি নাজমুন সাহাদাৎ। তিনি জাতীয় কারাতে বিচারক ও রেফারি এবং বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক।
Martial Art BD-তে সাধারণ মার্শাল আর্টসহ বডি বিল্ডিংও শেখানো হয়। এর ফলে প্রশিক্ষণার্থীরা মল্যযুদ্ধের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে নিজেদের স্বাস্থ্যকে সমুন্নত রাখার কৌশলও রপ্ত করতে পারে।
কোর্সের শিডিউল ও ফি সংক্রান্ত বিস্তারিত আপডেট জানা যাবে তাদের ওয়েবসাইটে।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://martialartbd.com/
ঠিকানা: ১৫/জি জিগাতলা, ধানমন্ডি,(সুন্দরবন কুরিয়ার বিল্ডিং)। এছাড়াও লালমাটিয়া ও শনির আখড়াতেও তাদের শাখা রয়েছে।
আরো পড়ুন: শিশুদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে দূরে রাখতে করণীয়
হোর্ড এমএমএ এ্যান্ড মার্শাল আর্ট্স অ্যাকাডেমি (HORDE MMA & Martial Arts Academy)
৪র্থ ড্যান মার্শাল আর্টিস্ট সেন্সি কিম ইয়ানেজ প্রতিষ্ঠা করেন হোর্ড এমএমএ (পূর্ণরূপ মিক্স্ড মার্শাল আর্ট) এ্যান্ড মার্শাল আর্ট অ্যাকাডেমি। বাংলাদেশে এর শাখা রয়েছে ঢাকার উত্তরা ও বনানীতে।
প্রতিষ্ঠানটির বিশেষত্ব হলো কারাতে ও কিকবক্সিং-এর যুগান্তকারী সমন্বয়। প্রতিপক্ষকে কাবু করার বিশ্বখ্যাত গ্রাউন্ড ফাইটিং কৌশল নো-জি সাবমিশন গ্র্যাপলিং এখানে শেখানো হয়।
HORDE MMA & Martial Arts Academy’র ক্লাস সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে। কোর্স ফি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে তাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করতে হবে।
লিঙ্ক: https://www.facebook.com/HordeMMA/
প্রধান শাখার ঠিকানা: বাড়ি-৩৪, সোনারগঞ্জ জনপথ, সেক্টর-১১, উত্তরা, (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে)
আরো পড়ুন: বিশ্বের শীর্ষ ১০ পুলিশ কুকুরের প্রজাতি
মার্শাল আর্ট্স স্টার্স অ্যাকাডেমি (Martial Arts Stars Academy)
জুডো ও কারাতে কেন্দ্রিক এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৯২ সাল। এর কারিকুলামে আরও অতিরিক্ত সংযোজন হিসেবে রয়েছে জু-জিৎসু এবং প্রতিরক্ষামূলক নানা অস্ত্রের ব্যবহার।
Martial Arts Stars Academy-এর প্রধান কোচ শমসের আলম একজন জাতীয় রেফারি। বাংলাদেশ জুডো ও কারাতে উভয় ফেডারেশনের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে।
সাধারণত দুটি ব্যাচে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে- একটি শুরু হয় সকাল ৬টা থেকে, আরেকটি বিকেল সাড়ে ৪ টা থেকে।
ঠিকানা: বাড়ি-১৩ রোড-১৪ ব্লক-ডি সেকশন-৬ মিরপুর। অনুশীলনের স্থান: শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়াম, মিরপুর
কোর্স ফি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যের জন্য রয়েছে তাদের ফেসবুক পেজ।
পেজের লিঙ্ক: https://www.facebook.com/p/Martial-Arts-Stars-Academy-100062993752856/
আরো পড়ুন: নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মোবাইল অ্যাপ
জ্যাকি মার্শাল আর্ট অ্যাকাডেমি (Jacky Martial Art Academy)
১৯৯০ সালে গঠিত হওয়া পুরনো এই অ্যাকাডেমিটির প্রতিষ্ঠাতা কামাল উদ্দিন জ্যাকি। কোরিয়ায় স্বর্ণপদক জয়ী এবং জাপানে কারাতের উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জ্যাকি ৭ম ড্যানের একজন মার্শাল আর্টিস্ট। Jacky Martial Art Academy-এর প্রধান প্রশিক্ষক তিনি নিজে।
এখানে দীর্ঘ দুই বছরব্যাপি ব্ল্যাক বেল্ট কোর্স করানো হয়। এই কোর্সে রয়েছে কারাতে, কুংফু, জুডো, তাইকোয়ান্দো, চেইন স্টিক এবং লং স্টিক। কোর্স ফি প্রতি মাসে এক হাজার টাকা।
শুক্রবার ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মেয়েদের জন্য আলাদা ব্যাচ রয়েছে।
ঠিকানা: চন্দন কোঠা সেন্টার, শহীদ ফারুক সড়ক, নবী নগর, পশ্চিম যাত্রাবাড়ী, ঢাকা
যোগাযোগের লিঙ্ক: https://www.facebook.com/JackyMartialArtAkademy
আরও পড়ুন: ঢাকার বাসরুট খুঁজে পেতে দরকারি কিছু মোবাইল অ্যাপ
বাংলাদেশ ওয়াদোকাই কারাতে দো (Bangladesh Wadokai Karate Do)
দেশের স্বনামধন্য কারাতে স্কুল বাংলাদেশ ওয়াদোকাই কারাতে দো প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৯ সালে। প্রতিষ্ঠাতা সেন্সি আব্দুল শুক্কুর আলী সিকদার নিজে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেন।
গুলিস্তানে ১টি এবং রামপুরা ও বনশ্রী জুড়ে বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে Bangladesh Wadokai Karate Do-এর। গুলিস্তানের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে প্রশিক্ষণ চলে সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত। বনশ্রী-রামপুরার শাখাগুলোতে ক্লাস হয় সাধারণত বিকেল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত। ভর্তি ও কোর্স ফিসহ কারিকুলাম সংক্রান্ত বিশদ তথ্যের জন্য সরাসরি তাদের ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
ফেসবুক লিঙ্ক: https://www.facebook.com/bangladeshwadokaikaratedo
সশরীরে যোগাযোগের ঠিকানা: ৩৭৭/১, ইস্ট রামপুরা, ডি.আই.টি রোড, রামপুরা।
আরো পড়ুন: মোবাইল ফোন হ্যাকিং প্রতিরোধে করণীয়
রয়েল তায়কোয়ান্দো ডোজ্যাং বাংলাদেশ (Royal Taekwondo Dojang Bangladesh)
বিশ্ব জুড়ে ব্যাপক ভাবে সমাদৃত কোরিয়ান সেল্ফ-ডিফেন্স স্টাইল চাংমু কোয়ান তায়কোয়ান্দো। সারা পৃথিবী ব্যাপি ছড়িয়ে রয়েছে এর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ। তারই বাংলাদেশ প্রতিনিধি হচ্ছে Royal Taekwondo Dojang Bangladesh।
এখানে সপ্তাহের পাঁচ দিন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলে। শুক্র ও শনিবার ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ক্লাস হয়। যারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রশিক্ষণ পেতে চান, তাদের জন্য এটি একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। ভর্তি ও কোর্স সংক্রান্ত যে কোনও তথ্যের জন্য তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করা যাবে।
পেজ লিঙ্ক: https://www.facebook.com/royaltkdbangladesh
ঠিকানা: হাউজ নং- ৭৭/বি, ৭এ ধানমন্ডি।
আরো পড়ুন: পবিত্র রমজান মাসে প্রয়োজনীয় ১০টি মোবাইল অ্যাপস
শোতোকান কারাতে বাংলাদেশ (Shotokan Karate Bangladesh)
আত্মরক্ষার বিশ্ব বিখ্যাত স্টাইলগুলোর মধ্যে জাপানের শোতোকান অন্যতম। বাংলাদেশের কারাতে ক্লাবগুলোতেও রয়েছে এর ব্যাপক চর্চা। জাতীয় কারাতে ফেডারেশন কর্তৃক অনুমোদিত তেমনি একটি প্রতিষ্ঠান এই Shotokan Karate Bangladesh।
এখানে শুক্র, শনি এবং সোম- এই তিন দিন অনুষ্ঠিত হয় প্রশিক্ষণ ক্লাস। সকালের ব্যাচ সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত, আর বিকেলের ব্যাচ বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। প্রশিক্ষণে যুক্ত হতে প্রয়োজনীয় খরচসহ যাবতীয় তথ্যাবলি পাওয়া যাবে তাদের ফেসবুক পেজে।
লিঙ্ক: https://www.facebook.com/shotokankaratebangladesh
ঠিকানা: ৮/সি, পশ্চিম চৌধুরী পাড়া, ঢাকা।
আরো পড়ুন:
শেষাংশ
নারীদের আত্মরক্ষার কৌশল শেখার জন্য ঢাকাস্থ এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো তাদের নিজস্ব স্টাইল অনুসরণ করে।
তন্মধ্যে কেও ফাইট স্টুডিও, সোবহান কারাতে অ্যাকাডেমি, বাংলাদেশ ওয়াদোকাই কারাতে দো ও শোতোকান কারাতে বাংলাদেশ কারাতের প্রতি গুরুত্বারোপ করে। চাইনিজ কুংফু ও উশু স্কুল তাদের ঐতিহ্যবাহী উশু এবং রয়েল তায়কোয়ান্দো ডোজ্যাং বাংলাদেশ স্বতন্ত্র তায়কোয়ান্দোর জন্য সুপরিচিত। কারাতের সাথে কিকবক্সিং-এর সমন্বয় ঘটিয়েছে হোর্ড এমএমএ এ্যান্ড মার্শাল আর্ট্স অ্যাকাডেমি। আর মার্শাল আর্টস স্টার্স অ্যাকাডেমিতে রয়েছে জুডো-কারাতের সংমিশ্রণ। তবে সবগুলোরই পরিমিত সন্নিবেশ মিলবে জ্যাকি মার্শাল আর্ট অ্যাকাডেমি’তে। অপরদিকে মার্শাল আর্ট বিডি’তে রয়েছে আত্মরক্ষার কৌশল রপ্ত করার পাশাপশি বডি বিল্ডিং-এর সুযোগ।
উপরন্তু, এই সবগুলো প্রশিক্ষণই দেহের পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার বিকাশেও সহায়ক।
আরো পড়ুন: রেস্তোরাঁ-শপিং মলে প্রবেশের আগে যে বিষয়গুলোতে সাবধান থাকা জরুরি
২৭৪ দিন আগে
পরিবহন পরিষেবায় অনলাইন টিকেট বুকিং ২০২৫: ঘরে বসে বাস, ট্রেন, ও বিমানের টিকেট কাটার উপায়
প্রযুক্তিগত উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে অনলাইন টিকেটিং ব্যবস্থা। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিবহনে সিট বুকিং-এর জন্য এখন আর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার বিড়ম্বনা নেই। স্থল, রেল কিংবা আকাশপথ যে কোনও ভাবে যাতায়াতের জন্য কাঙ্ক্ষিত টিকেটটি ঘরে বসেই কিনে নেওয়া যাচ্ছে। চলুন, বাস, ট্রেন, ও প্লেনের টিকেট ক্রয়ের জন্য সেরা ১০টি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যাপারে বিশদ জেনে নেওয়া যাক।
বাস, ট্রেন, ও প্লেনের সিট বুকিং-এর জন্য শীর্ষ ১০টি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
.
বাংলাদেশ রেলওয়ে ই-টিকেটিং সার্ভিস (Bangladesh Railway)
২০১২ সালের ২৯ মে সরকারি ভাবে চালু হয় অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার ব্যবস্থা। তারপর থেকে বিগত এক যুগে অনেকটা পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের ডিজিটাল টিকেট পদ্ধতি।
তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সর্বোচ্চ ১০ দিন আগে থেকে ট্রেনে সিট বুকিং দেওয়া যায়। এর জন্য প্রথমেই প্রয়োজন হয় সাইটটিতে নিবন্ধন করা। এই পর্যায়ে জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নাম্বার দিতে হয়। এরপরের কাজ স্টেশন, ভ্রমণের তারিখ, ট্রেনের শ্রেণী নির্বাচন। এখানে বিদ্যমান সিটের ভিত্তিতে প্রদর্শিত সিটের তালিকা থেকে এক বা একাধিক সিট বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকে।
সবশেষে পেমেন্টের পদ্ধতিতে রয়েছে ক্রেডিট/ডেবিট বা বিকাশের মতো জনপ্রিয় মোবাইল পেমেন্ট গেটওয়েগুলো। পেমেন্ট শেষে প্রাপ্ত ই-টিকিটের প্রিন্ট নিয়ে রেল স্টেশনে পৌঁছতে হয়।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: eticket.railway.gov.bd
Bangladesh Railway–এর নিজস্ব অ্যাপ ‘রেল সেবা’ রয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ও আইফোন উভয় প্ল্যাটফর্মের জন্য।আইফোন অ্যাপ: https://apps.apple.com/us/app/rail-sheba/id6499584782
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.shohoz.dtrainpwa
আরো পড়ুন: ২০২৫ সালে ভিসা ছাড়াই যেসব দেশে যেতে পারবেন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স (Biman Bangladesh Airlines)
রাষ্ট্রায়ত্ব এই এয়ারলাইন্সটিতে অনলাইন সিট বুকিং-এর সুবিধা যুক্ত হয় ২০১০ সালে। তাদের ওয়েবসাইট-এ যেয়ে ঘরে বসেই সম্পন্ন করা যায় টিকেট অর্ডার ও প্রাপ্তির কাজ। এখানে গন্তব্য, তারিখ, শ্রেণী নির্বাচন ও ইমেইল আইডি ও মোবাইল নাম্বারসহ যাত্রীর বিস্তারিত তথ্য প্রদান করতে হয়।
তারপর ডিজিটাল ব্যাংকিং বা মোবাইল পেমেন্ট সিস্টেম-এর মধ্যে যে কোনওটির মাধ্যমে পরিশোধ করা যায় টিকেটের মূল্য। অবশেষে ই-টিকিট প্রদান করা হয় যাত্রীদের ইমেলে।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://www.biman-airlines.com/
অ্যান্ড্রয়েড এবং অ্যাপেল দুই ব্যবহারকারীদের জন্য Biman Bangladesh Airlines-এর রয়েছে বিমান অ্যাপ।
অ্যান্ড্রয়েড প্লে-স্টোর লিঙ্ক:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.BimanAirlines.Biman&hl=en&gl=US
অ্যাপেল অ্যাপ-স্টোর লিঙ্ক: https://apps.apple.com/us/app/biman/id6444130555
আরো পড়ুন: অনলাইন ঈদ শপিং ২০২৫: ঘরে বসে কেনাকাটার জন্য তৈরি পোশাকের শীর্ষ ১০ ব্র্যান্ড
সহজ (Shohoz)
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিবহন মাধ্যমগুলোর ই-টিকেট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এক নির্ভরযোগ্য নাম সহজ। ট্রেনের টিকেটগুলো বিআরআইটিএস (বাংলাদেশ রেলওয়ে ইন্টিগ্রেটেড টিকেটিং সিস্টেম)-এর সাথে যৌথভাবে ইস্যূ করে এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত সহজ বাস, ট্রেন, লঞ্চ, প্লেন সব পরিবহনকে একটি একক মঞ্চের আওতায় নিয়ে এসেছে। তাদের ওয়েবসাইটে প্রতিটি পরিবহন মাধ্যমের জন্য আলাদা ভাবে রওনা হওয়ার স্থান, গন্তব্য, ও যাত্রার তারিখ দেওয়ার পদ্ধতি রয়েছে। এর জন্য অবশ্যই একটি সার্বক্ষণিক ব্যবহৃত ইমেইল ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার সরবরাহ করা জরুরি।
মোবাইল কিংবা ব্যাঙ্ক কার্ড-এর মাধ্যমে অর্থপ্রদানের পর টিকেটের সফ্ট কপির লিঙ্ক পাওয়া যাবে ইমেল বা এসএমএসের মাধ্যমে।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://www.shohoz.com/
এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা যাবে স্মার্টফোন থেকেও।
গুগল প্লে-স্টোর লিঙ্ক: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.shohoz.rides
আইফোন অ্যাপ-স্টোর লিঙ্ক: https://apps.apple.com/us/app/shohoz-app/id1354321445?ls=1
আরো পড়ুন: পবিত্র রমজান ২০২৫-এ ইফতারের জন্য ঢাকার সেরা ১০টি রেস্টুরেন্ট
গোজায়ান (GoZayaan)
বাংলাদেশের অগ্রগামী ওটিএ’র (অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি)-এর মধ্যে গোজায়ান অন্যতম। দেশের ভেতরের ও বাইরের এয়ার ফ্লাইট কেন্দ্রিক টিকেটিং প্ল্যাটফর্মটির পথ চলা শুরু হয় ২০১৭ সাল থেকে। ই-টিকেটের পাশাপাশি GoZayaan হোটেল, ট্যুর, এবং ভিসা সংক্রান্ত সুবিধাও প্রদান করে থাকে।
এখান থেকে টিকেট অর্ডার করতে হলে প্রথমে অ্যাকাউন্ট
খুলে নিতে হবে। এর অধীনে টিকেট প্রাপ্তি সহ ফ্লাইটের যাবতীয় আপডেট পাওয়া যাবে। ওয়েবসাইটে ফ্লাইট সার্চের পাশাপাশি একাধিক ফ্লাইটের মধ্যে তুলনা করারও ফিচার রয়েছে।
ব্যাঙ্কিং ও মোবাইল পেমেন্ট সিস্টেমগুলোর মধ্যে প্রায় সবগুলোই থাকায় সব শ্রেণীর গ্রাহকরাই অকপটেই ব্যবহার করতে পারেন।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://gozayaan.com/
এছাড়া আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড উভয় স্মার্টফোন গ্রাহকদের জন্য তাদের নিজস্ব অ্যাপও রয়েছে।
আইওএস অ্যাপ লিঙ্ক: https://apps.apple.com/us/app/gozayaan/id1635126688
অ্যান্ডয়েড অ্যাপ লিঙ্ক: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.gozayaan.app&hl=en
আরো পড়ুন: খেজুরের রকমফের: জেনে নিন ১০ প্রকার খেজুরের পুষ্টি, স্বাস্থ্যগুণ ও দাম
শেয়ার ট্রিপ (ShareTrip)
ট্রাভেল বুকিং বিডি নামের ছোট্ট ফেসবুক পেজটির উদ্দেশ্য ছিলো প্লেনের টিকেট বিক্রি করা। ২০১৩ সালের এই উদ্যোগের অঙ্কুরে পরের বছর জন্ম নেয় শেয়ার ট্রিপ। এটিই দেশে প্রথমবারের মতো একযোগে ন্যাশনাল ও ইন্টার্ন্যাশনাল দুই ফ্লাইটের জন্য অনলাইন টিকেটিং পদ্ধতি চালু করে।
ShareTrip-এর ওয়েবসাইটের পাশাপাশি অ্যান্ড্রয়েড ও আইফোন অ্যাপ রয়েছে। এমনকি সব প্ল্যাটফর্মই ফ্লাইটগুলোর রিয়েল-টাইম মূল্য তালিকা প্রদর্শন করে। সাধারণ কর্মদিবস, সপ্তাহান্ত, ও ছুটি বিশেষে অর্থ পরিশোধের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে গ্রাহক ইমেইলের মাধ্যমে ই-টিকিট পেয়ে যান।
বুকিং-এর জন্য অবশ্যই অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। আর এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরবর্তীতে ফ্লাইট বাতিল বা তারিখ পরিবর্তন সংক্রান্ত আবেদনগুলো রাখা যায়।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://sharetrip.net/
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ: https://play.google.com/store/apps/details?id=net.sharetrip&hl=en
আইওএস অ্যাপ: https://apps.apple.com/us/app/sharetrip-flight-shop-voucher/id1469335892
আরো পড়ুন: রাতে বাসে বা গণপরিবহনে নিরাপদে ভ্রমণে কিছু সতর্কতা
ফ্লাইট এক্সপার্ট (Flight Expert)
মক্কা গ্রুপ অব কোম্পানি-এর এই ট্রাভেল এজেন্সি ২০১৭ সালের ১ মার্চ নিয়ে আসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিকেটিং পদ্ধতি। অবশ্য এই প্রযুক্তিকে ঘিরে পূর্ণাঙ্গ একটি ওয়েবসাইটের আত্মপ্রকাশ ঘটে ২০২২-এর ৯ জুলাই। বর্তমানে দেশের প্রথম সারির ফ্লাইট বুকিং সাইটগুলোর মধ্যে Flight Expert অন্যতম।
অন্যান্য এজেন্সিগুলোর থেকে যে বিষয়টি প্রতিষ্ঠানটিকে এগিয়ে রেখেছে তা হচ্ছে ‘বুক ন্যাউ (পে লেটার)’ ফিচার। এই প্রক্রিয়ায় অর্ডার নিয়ে কোনও পেমেন্ট ছাড়াই যাত্রীর জন্য টিকেট বুক করে রাখা হয়। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে গ্রাহক টিকেটের অর্থ পরিশোধ করেন। সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রাহককে পেমেন্টের রিমাইন্ডার দেওয়া হয়।
সফল ভাবে অর্থ প্রদানপূর্বক এয়ারলাইন্সের ইস্যূকৃত টিকেটের পিডিএফ ফাইল চলে যায় গ্রাহকের ইমেইল ঠিকানায়।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://flightexpert.com/
ওয়েবসাইট মোবাইল-বান্ধব হওয়া সত্ত্বেও এদের রয়েছে স্বতন্ত্র আইফোন ও অ্যান্ড্রয়েড।
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.flightexpert.b2c&hl=en
আইফোন অ্যাপ: https://apps.apple.com/ag/app/flight-expert/id6457255223
আরো পড়ুন: মরণঘাতী ড্রাগ ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ থেকে বাঁচতে করণীয়
বিডিটিকেটস (bdtickets)
ঘরে বসে বাসের টিকেট সংগ্রহের জন্য রবি আজিয়াটার এই টিকেটিং পোর্টালটি ব্যাপকভাবে সমাদৃত। ২০১৫ সালে আত্মপ্রকাশের পর থেকে এরা প্রধানত দেশের আন্তঃনগর বাসগুলো নিয়ে কাজ করে আসছে। বর্তমানে bdtickets প্লেন বা লঞ্চের টিকেটও সরবরাহ করে তবে তার জন্য ১৬৪৬০ নাম্বারে ফোন দিতে হবে।
অন্যান্য টিকেটিং সাইটগুলোর মতো এদেরও রয়েছে নিবন্ধন, টিকেট অর্ডার, এবং পেমেন্ট সিস্টেম। তাদের মোবাইল অ্যাপ একটি; বিডিটিকেটস, যার অ্যান্ড্রয়েড এবং অ্যাপেল দুই সংস্করণই আছে।
যাত্রার সময় পরিবর্তন বা বাতিলের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পাদন করা যায় যাত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://bdtickets.com/
স্মার্টফোন থেকে এই কার্য সম্পাদনের জন্য পৃথক অ্যাপও রয়েছে।
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.bluetech.bdtickets.launcher&hl=en
আইওএস অ্যাপ: https://apps.apple.com/us/app/bdtickets/id1552613900
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধে করণীয়
বাইটিকেটস (Buy Tickets)
২০১৮-এর ১৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বিমান টিকেটিং কার্যক্রম শুরু করে বাইটিকেট্স। ট্রাভেল এজেন্সি এয়ারস্প্যান লিমিটেড-এর এই উদ্যোগ বর্তমানে দেশের পর্যটন সেক্টরের এক স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। বাস, লঞ্চ, বিমানের টিকেট বিক্রির পাশাপাশি এদের হলিডে ট্যুর প্যাকেজ ও হোটেল সেবাও রয়েছে।
উপরোক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো Buy Ticketsও গ্রাহকদের জন্য সহজ ইন্টারফেসে টিকেট কেনার সুযোগ দেয়। দেশের সমসাময়িক ওটিএগুলোর মতো এটিও এসএমএস বা ইমেলের মাধ্যমে গ্রাহককে ই-টিকেট সরবরাহ করে।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://buytickets.com.bd/
স্মার্টফোন ব্যবহারকারিদের জন্য এই পরিষেবাটি শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মে সমর্থিত।
অ্যান্ড্রয়েড স্টোর লিঙ্ক: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.buytickets.bd&hl=en
আরো পড়ুন: কক্সবাজার ইনানী সমুদ্রসৈকত ভ্রমণ: ঘুরে আসুন প্রবাল পাথুরে সৈকতে
যাত্রী (Jatri)
২০১৯-এ আত্মপ্রকাশ করা এই সাইটটির বিশেষত্ব হলো বাস ট্র্যাকিং-এর সুবিধা। এর মাধ্যমে সম্ভাব্য যাত্রীরা বাসের বর্তমান অবস্থান দেখে তার স্ট্যান্ডে পৌঁছার সময়টি যাচাই করতে পারেন।
যাত্রীর নিজস্ব ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপ উভয় মাধ্যমেই এই ফিচারটি রয়েছে। সাইটে নিবন্ধনের পর নির্ধারিত অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে যাতায়াতের যাবতীয় তথ্য পাওয়া যায়। এই তথ্য পছন্দের বাসটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।
মূল্য পরিশোধের জন্য Jatri-এর রয়েছে বিশেষ ডিমানি যাত্রী কার্ড। এর সাথে ডিজিটাল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ভিসা বা মাস্টার কার্ড যুক্ত করার সুবিধা আছে। ফলে যাত্রীরা তাৎক্ষণিক ভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে যাতায়াতের ভাড়া দিতে পারে।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://www.jatri.co/
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.jatri.jatriuser&hl=en&gl=
আরো পড়ুন: রমজানে রোজা রাখার প্রস্তুতি: দেহ ও মনকে সুস্থ রাখতে করণীয়
পরিবহন.কম (paribahan.com)
এই সাইটটিতে দেশের বর্তমান অধিকাংশ পরিবহন পরিষেবার এপিআই (অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টার্ফেস) সংযুক্তি রয়েছে। তাই প্রতিষ্ঠানটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবে বিস্তৃত পরিসরে টিকেটিং সেবা প্রদান করতে পারে।
paribahan.com-এর আওতাভূক্ত পরিবহনগুলো হলো বাস, লঞ্চ এবং বিমান। এগুলোর যে কোনওটির টিকেট কেনার সময় যাত্রীরা নিজের পছন্দ মতো পরিবহন কোম্পানি বাছাই করতে পারেন। একই সঙ্গে দেশের প্রায় সবগুলো অনলাইন পেমেন্ট ব্যবস্থার সুবিধা রেখেছে ওয়েবসাইটটি।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://paribahan.com/
তবে অসুবিধার জায়গা হচ্ছে পরিবহন.কম-এর কোনও মোবাইল অ্যাপ নেই।
শেষাংশ
অনলাইনে বাস, ট্রেন, ও বিমানের টিকেট ক্রয়ের এই ১০টি প্রতিষ্ঠান জনসাধারণের যাতায়াত ব্যবস্থার মানোন্নয়ন করেছে। সরকারি দিক থেকে এই বৃহৎ ভূমিকায় অবদান রাখছে বাংলাদেশ রেলওয়ে ই-টিকেটিং সার্ভিস। দেশ-বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে টিকেটিং ব্যবস্থাকে উন্নত করেছে বিমান বাংলাদেশ, শেয়ার ট্রিপ, গোজায়ান, এবং ফ্লাইট এক্সপার্ট। এগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে যাত্রীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে সহজ, বিডিটিকেট্স, ও বাইটিকেট্স। পিছিয়ে নেই শুধুমাত্র দেশের আভ্যন্তরীণ পরিবহনগুলোতে সীমাবদ্ধ থাকা যাত্রী এবং পরিবহন। সর্বপরি, এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন কাগুজে টিকেট ব্যবস্থার উৎকৃষ্ট বিকল্প, যা নাগরিক জীবনকে ধাবিত করছে উন্নত জীবন ধারণের দিকে।
আরো পড়ুন: পবিত্র ওমরাতে যাওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি ও কিছু সাবধানতা
২৭৯ দিন আগে
চট্টগ্রামে ‘হবেকি’ গ্রাফিতি, গাধার পিঠের ‘ভাবুক’ নিয়ে কৌতূহল
২০২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর রাজনৈতিক অভ্যুত্থানের মধ্যে প্রতিরোধ ও সামাজিক ভাবনার মাধ্যম হিসেবে নিজের গুরুত্ব ফিরে পেয়েছে গ্রাফিতি। এরইমধ্যে চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকায় একটি নতুন গ্রাফিতি শিল্পকর্ম—যা বিখ্যাত ফরাসি ভাস্কর আগুস্ত রোঁদ্যার ‘দ্য থিঙ্কারের’ বা ভাবুকের প্রতিরূপ—নতুন করে কৌতূহল জাগিয়ে তুলেছে। বিখ্যাত এই ভাস্কর্য জ্ঞান বা দর্শনের রূপক হিসেবে পরিচিত বিশ্বজুড়ে। একই সঙ্গে বুদ্ধিজীবীদেরও প্রতীক দেখা হয় এটিকে।
মজার বিষয় হল, গাধার পিঠে গালে হাত দিয়ে বসে আছেন ভাবুক। ছবির পেছনে রোমান হরফে ‘হবেকি’ (HOBEKI?) লেখা। যা ২০১৭ সালে ঢাকায় সাড়া জাগানো ‘সুবোধ’ গ্রাফিতির কথাই মনে করিয়ে দেয়।
একটু নিবিড় দৃষ্টিতে চোখ রাখলে চট্টগ্রামের সিআরবি রোডের শিরীষতলায় অবস্থিত একটি পরিত্যক্ত ভবন কাঠামোর ২০ ফুট প্রস্থ এবং ১২ ফুট উঁচু চুনকাম করা দেয়ালে আঁকা এই শিল্পকর্মটি সরাসরি রোঁদ্যার বিখ্যাত ভাস্কর্য, দ্য থিঙ্কারকে মনে করিয়ে দেয়।। যা গভীর চিন্তাভাবনার সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত প্রতীক। তবে, গাধার ওপর স্থাপনাটি একটি ব্যঙ্গাত্মক রহস্য যোগ করে কৌতূহলী দর্শক এবং পর্যবেক্ষকদের এটিকে বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা হিসাবে ব্যাখ্যা করতে উৎসাহিত করে।
এই রহস্যময়তা আরও গভীর করে ‘হবেকি’ লোগো। যা ২০১৭ সালে ঢাকার দেয়ালে আবির্ভূত রহস্যময় সুবোধ গ্রাফিতির প্রতিফলন এটি। সুবোধ সিরিজটি একটি সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ হয়ে সবার মনের গভীরে ছড়িয়ে পড়েছিল। এতে লেখা ছিল, ‘ সুবোধ তুই পালিয়ে যা, সময় তোর পক্ষে না’; ‘সুবোধ তুই পালিয়ে যা তোর ভাগ্যে কিছু নেই’; যা এর সূক্ষ্ম রাজনৈতিক অন্তর্নিহিততার কারণে অনেকের কাছে গভীরভাবে অনুরণিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: মরণঘাতী ড্রাগ ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ থেকে বাঁচতে করণীয়
এখন, ‘হোবেকি?’ (হোবেকি?) শিরোনামযুক্ত গ্রাফিতিটি চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হচ্ছে। এই চিন্তা-উদ্দীপক কাজের পিছনে একই বেনামি শিল্পী বা গোষ্ঠীর হাত আছে কিনা তা নিয়ে জল্পনা চলছে। গ্রাফিতি শিল্পীদের রীতি অনুযায়ী এ শিল্পকর্মের স্রষ্টা নিজের নাম গোপন রেখেছেন।
স্থানীয় শিল্পী, সামাজিক ভাষ্যকার এবং শিল্পপ্রেমীরা বিশ্বাস করেন যে নতুন গ্রাফিতিটি বর্তমান সমাজে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকার সমালোচনা হিসেবে কাজ করে। যদিও ‘দ্য থিঙ্কার’ দার্শনিক গভীরতা এবং প্রজ্ঞার প্রতীক, এটিকে একটি গাধার ওপর স্থাপন করার মাধ্যমে—যা প্রায়শই একগুঁয়েমি এবং বুদ্ধিমত্তার ঘাটতির সাথে যুক্ত—মনে হচ্ছে যে বুদ্ধিজীবীরা, তাদের অন্তর্দৃষ্টি থাকা সত্ত্বেও শক্তিহীন বা বিপথগামী হতে পারে, তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরের শক্তির ওপর তারা নির্ভর করে।
২৮০ দিন আগে
অনলাইন ঈদ শপিং ২০২৫: ঘরে বসে কেনাকাটার জন্য তৈরি পোশাকের শীর্ষ ১০ ব্র্যান্ড
প্রযুক্তির উৎকর্ষে ঈদের কেনাকাটার জন্য প্রত্যেকে এখন অনলাইনমুখী হচ্ছেন। পরিবারের ছোট থেকে বড় প্রতিটি সদস্যের জন্য পছন্দনীয় ড্রেসটি ঘরে বসেই দেখা যাচ্ছে। কেননা কয়েক দশক ধরে প্রসিদ্ধ তৈরি পোশাকের ব্র্যান্ডগুলো এখন আর কেবল শো-রুমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ডিজিটাল বিপণনের যুগে প্রত্যেকটিরই রয়েছে নিজস্ব অনলাইন স্টোর। চলুন দেখে নেওয়া যাক- ঈদকে সামনে রেখে দেশের শীর্ষস্থানীয় রেডিমেড গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানগুলো কেমন প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ঈদের অনলাইন কেনাকাটায় তৈরি পোশাকের ১০টি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড
.
আড়ং (Aarong)
১৯৭৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় আড়ং-এর পথ চলা। দেশীয় বেসরকারি সংগঠন ব্র্যাকের এই সামাজিক উদ্যোগটি বর্তমানে একটি স্বনামধন্য পোশাক ব্র্যান্ড।
আসছে ঈদে পুরনো ঐতিহ্য বহাল রেখে আবারও দেশীয় সিল্কে সাজতে যাচ্ছে Aarong। হ্যান্ড এম্ব্রয়ডারির বিশেষত্বে কারুকাজের প্রতিটি পরতে মিলবে উৎসবের আমেজ। তারই স্পষ্ট ছাপ রয়েছে পুরো ওয়েবসাইট জুড়ে।
আরো পড়ুন: পবিত্র রমজান ২০২৫-এ ইফতারের জন্য ঢাকার সেরা ১০টি রেস্টুরেন্ট
নতুন আয়োজনে মেয়েদের ক্যাটাগরিতে শোভা পাচ্ছে বর্ণীল সালোয়ার কামিজ। পুরুষদের সেকশনে রয়েছে পাঞ্জাবি ও কোটি। বাচ্চাদের পোশাকেও এম্ব্রয়ডারি, ও সিল্ক প্রিন্টের সরব উপস্থিতি।
পৃথক মেনুতে নজর কাঁড়ছে সাব-ব্র্যান্ড তাগা Taaga ও তাগা ম্যান (Taaga Man)-এর কালেকশন। প্রতিটি পণ্যের জন্য প্রদর্শিত হয় আলাদা ওয়েব পেজ। প্রতি পেজেই সংশ্লিষ্ট পণ্যের বিবরণী থেকে তার মাপ জেনে নেওয়া যায়। অতঃপর সব ঠিকঠাক হলে ঘরে থেকেই সেরে ফেলা যায় অর্ডারের কাজ।
আড়ং-এর সেবা ছড়িয়ে আছে ঢাকার সর্বত্রে। উত্তরা, গুলশান, মগবাজার, ধানমন্ডি, বনানী, মিরপুর, ওয়ারি’তে রয়েছে প্রশস্ত শো-রুম।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://www.aarong.com
আরো পড়ুন: খেজুরের রকমফের: জেনে নিন ১০ প্রকার খেজুরের পুষ্টি, স্বাস্থ্যগুণ ও দাম
ইয়োলো (Yellow)
বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকানাধীন এই পোশাক ব্র্যান্ডটির আত্মপ্রকাশ ঘটে ২০০৪ সালে। দীর্ঘ এক দশকের অভিজ্ঞতা নিয়ে অফলাইনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি অনলাইনেও সমান জনপ্রিয়।
ওয়েবসাইটের সাবলীল ইন্টারফেসে প্রথমেই রয়েছে বসন্ত ও গ্রীষ্মের সমন্বয়ে ঈদ কালেকশন মেনু। তারপরেই পাওয়া যাবে নতুন সংযোজিত পণ্যসমূহ। অতঃপর একে একে পুরুষ, নারী, ও বাচ্চাদের ড্রেসের জন্য পৃথক ট্যাব। প্রত্যেকটি সেকশন আলাদা ওয়েব পেজে নিয়ে যেখানে ক্যাটাগরির ভিত্তিতে ড্রেস বাছাই করা যায়।
যথারীতি সর্বত্রে Yellow-এর ফরমাল ও ক্যাজুয়াল সমন্বয়ের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। ছোট থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের পুরুষদের জন্য সাজানো আছে স্টাইলিশ পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট ও জিন্স দিয়ে। অপরদিকে নারীদের জন্য সালোয়ার কামিজ, টপ্স ও বটম, কুর্তি, এমনকি শাড়িও আছে।
ঢাকাসহ সারা দেশব্যাপি ছড়িয়ে রয়েছে ইয়োলোর ডেলিভারি সেবা। ঢাকার মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অবস্থিতি হলো বসুন্ধরা সিটি, বনানী, গুলশান, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, উত্তরা, বেইলি রোড, ওয়ারী ও মগবাজারে।
স্টোর লিঙ্ক: https://www.yellowclothing.net
আরো পড়ুন: রাতে বাসে বা গণপরিবহনে নিরাপদে ভ্রমণে কিছু সতর্কতা
এক্সট্যাসি (Ecstasy)
১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকেই তরুণদের মধ্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত একটি ব্র্যান্ড এক্সট্যাসি। এর অনলাইন স্টোরে প্রবেশের পরপরই স্বাগত জানায় তানজিম স্কোয়াড। Ecstasy-এর অধীনে পুরুষদের হাল ফ্যাশনের সাব-ব্র্যান্ড এই ‘তানজিম’ (Tanjim)। একই ভাবে নারীদের জন্য রয়েছে ‘জারজাইন’ (Zarzain)।
দুটো ক্যাটাগরির ওয়েব পেজগুলোতেই রয়েছে রকমারি পোশাকগুলোকে দামসহ এক নজরে দেখার সুবিধা। তানজিমে চোখে পড়ে পিন্স্ট্রিপড শার্ট, স্কোয়াড টি-শার্ট, এবং ঈদের পাঞ্জাবি। অন্যদিকে, জারজাইনে কাফতান, শ্রাগ, ও টপ্স-এর প্রাধান্য বেশি।
রাজধানীতে এক্সট্যাসির মূল আউটলেটগুলো হলো যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি, গুলশান এভিনিউ, ধানমন্ডি, উত্তরা ও ওয়ারি।
ওয়েব লিঙ্ক: https://ecstasybd.com/
আরো পড়ুন: মরণঘাতী ড্রাগ ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ থেকে বাঁচতে করণীয়
সেইলার (Sailor)
এপিলিয়ন গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে সেইলারের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৮ সালে। বর্তমান সময়ে পোশাক-কেন্দ্রিক ই-কর্মাস সাইটগুলোতে দারুণ একটি সংযোজন এর ডিজিটাল স্টোরটি।
ট্রেন্ডি ও আরামদায়ক পোশাকগুলো এখানে নিজেদের পছন্দ মতো বেঁছে নিতে পারেন ক্রেতারা। স্পষ্ট ক্যাটাগরি বিভাজন থাকায় পুরুষ, নারী ও শিশুদের পোশাক সহজেই খুঁজে বের করা যায়। ছবি, পণ্যের বিবরণ ও ফিল্টারিং সুবিধা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।
পুরুষদের সেকশনে ঈদের জন্য রয়েছে ফিউশন পাঞ্জাবি, যা ঐতিহ্য ও আধুনিক স্টাইলের অনন্য মিশ্রণ। পরিবারের ছোট সদস্যদের জন্যও রাখা হয়েছে আরামপ্রদ এই পরিধেয়টি। নারীদের ক্যাটাগরিতে নজর কাঁড়ছে কুর্তি ও নিটেড টপ-বটম সেট।
Sailor সারা দেশ জুড়ে ড্রেস ডেলিভারি করে থাকে। ঢাকার মধ্যে এর প্রধান শাখাগুলো রয়েছে ওয়ারি, উত্তরা, ধানমন্ডি, আদাবর, মিরপুর, এবং খিলগাঁও-এ।
ই-স্টোর লিঙ্ক: https://www.sailor.clothing
আরো পড়ুন: পবিত্র ওমরাতে যাওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি ও কিছু সাবধানতা
লা রিভ (Le Reve)
রিভ টেক্স লিমিটেডের লা রিভ ব্র্যান্ডের গোড়াপত্তন হয় ২০০৯ সালে। বর্তমানে এটি দেশীয় ফ্যাশনে নিজস্ব স্বকীয়তা ও মানের জন্য সুপরিচিত। সমগ্র ঢাকা জুড়ে Le Reve-এর সরব উপস্থিতি বিদ্যমান। তন্মধ্যে বেইলি রোড, বনশ্রী, বাসাবো, ধানমন্ডি, ওয়ারী, মিরপুর, বসুন্ধরা, মোহাম্মদপুর ও গুলশানের স্টোরগুলো প্রায় ক্রেতাদের সমাগম থাকে।
অফলাইনের মতো এর অনলাইন প্ল্যাটফর্মটিও বেশ ইন্টারঅ্যাক্টিভ। বিভিন্ন বয়সের জন্য নির্ধারিত এদের সেরা ড্রেসগুলো সৃজনশীল শিরোনামে প্রদর্শিত হয়েছে হোমপেজ জুড়ে। ফলে প্রাসঙ্গিক মেনু বা ট্যাবগুলোতে অনায়াসেই চলে যাওয়া যায় কাঙ্ক্ষিত ড্রেসটির খোঁজে।
নারীদের সালোয়ার কামিজ এবং পুরুষদের পাঞ্জাবির সমন্বয়ে সুবিন্যস্ত ঈদ কালেকশনে প্রমাণ মিলছে লা রিভের স্বকীয়তার। রেস্পন্সিভ ডিজাইনের ওয়েবসাইট হওয়ায় যে কোনও ডিভাইস থেকেই তা খুটিয়ে দেখে নিতে পারছেন ক্রেতারা।
ই-স্টোর লিঙ্ক: https://www.lerevecraze.com/
আরো পড়ুন: পুরুষদের ফরমাল পোশাক ও স্যুট বানানোর জনপ্রিয় কিছু দেশি ব্র্যান্ড
কে ক্র্যাফ্ট (Kay Kraft)
ঐতিহ্য ও আধুনিক ফ্যাশনের সমন্বয়ে নান্দনিক বুনন শৈলীর এক অনন্য নাম কে ক্র্যাফ্ট। ১৯৯৩ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি ব্র্যান্ড হয়ে উঠতে খুব বেশি সময় নেয়নি। বর্তমানে ঢাকার ব্যস্ততম কেনাকাটার জায়গা মানেই Kay Kraft। এদের আউটলেট রয়েছে বেইলি রোড, বনশ্রী, বাসাবো, মিরপুর, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, শাহবাগ, ওয়ারী, বসুন্ধরা, ও গুলশান-এ।
ব্র্যান্ডটির বিশেষত্ব হচ্ছে চক্ষু শীতল রঙের আভরণে অভিজাত ডিজাইন। এর সুবিন্যস্ত চিহ্ন ছড়িয়ে আছে ডিজিটাল শো-রুমের প্রদর্শনীতেও। পুরুষদের ড্রেসে কাট নির্ভর এক রঙা ফিটেড মাপ আর নারীদের ক্ষেত্রে রেট্রো, ফিউশন, ও লং প্যাটার্নের প্রাধান্য। একই বৈশিষ্ট্যের দেখা বাচ্চাদের পোশাকেও।
প্রতিটি ড্রেসের বিশদ পর্যালোচনার জন্য পুরো ওয়েব পেজ জুড়ে রয়েছে ধরণ, রঙ, ও পরিমাপসহ বিভিন্ন মাপকাঠি। সহজ ইন্টারফেস শপিং কার্ট থেকে চেকআউট পর্যন্ত ক্রেতাদের সাবলীল বিচরণ অব্যাহত রাখে।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://www.kaykraft.com/
আরো পড়ুন: গহনায় ব্যবহৃত মূল্যবান কিছু রত্নপাথর
রঙ বাংলাদেশ (Rang Bangladesh)
১৯৯৪ সালে খুব ছোট্ট পরিসরে শুরু হওয়া রঙ এখন ‘বিশ্ব রঙ’ এবং ‘রঙ বাংলাদেশ’-এর মতো জনপ্রিয় দুটি ব্র্যান্ডের কর্ণধার। রাজধানী জুড়ে Rang Bangladesh-এর বর্ণীল অবস্থিতি আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে।
প্রতি ঈদের মতো এবারেও প্রতিষ্ঠানটির নতুন সংগ্রহশালার মূল উপজীব্য দেশীয় রঙ ও আবহ। তারই উন্মুক্ত প্রতিফলন সমগ্র হোমপেজ জুড়ে।
শিশু থেকে বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সকলের জন্য বিশদ তথ্যে ভরপুর প্রতিটি ড্রেসের প্রদর্শনী। লিনেন, ভিসকস, জ্যাকার্ড কটন, বারফি, ও জর্জেট প্রতিটি ধরণ চোখের সামনে ভেসে উঠছে ভিন্ন রঙ ও পরিমাপ নিয়ে।
নিয়মিত বিপণীতে মুখর বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত স্কয়ার, টোকিও স্কয়ার এবং ওয়ারি; প্রতিটিতেই রয়েছে রঙ বাংলাদেশের শো-রুম।
অনলাইন স্টোর: https://rang-bd.com/
আরো পড়ুন: হাই হিল কিভাবে পুরুষের পা থেকে নারীর পায়ে এলো?
অঞ্জন্স (Anjan’s)
দেশের ফ্যাশন হাউজের অন্যতম অগ্রপথিক অঞ্জন্স-এর প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৯৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। প্রতি উপলক্ষে তাদের নতুন কালেকশনে থাকে সমসাময়িক ঋতুর আবহ।
এবারের ঈদেও তার ব্যতিক্রম ঘটছে না। চৈত্রের মধ্য দিয়ে বসন্তের পরিসমাপ্তি অতঃপর গ্রীষ্মের আগমন। ঋতুর এই পালাবদলের প্রতিমূর্তি যেন Anjan’s-এর ঈদ কালেকশন-২০২৫ ওয়েব পেজটি।
পরিধেয়ের সৌষ্ঠবে হাল্কা আরামপ্রদ ভাব রাখা হলেও মোটেই কারপণ্য করা হয়নি শৈলীর সৃজনশীলতায়। প্রদর্শনীতে দেওয়া পটভূমির সাথে মানানসই ছবিগুলো অকপটেই ঘোষণা করে যে ঠিক কোন পরিবেশে ক্রেতাকে কেমন দেখাবে।
ফিল্টারিং ও সার্চিং-এর সহজ ইন্টারফেসের সাথে এরা আরও যুক্ত করেছে একাধিক পণ্যের মধ্যে তুলনা করার ফিচার। তাই শপিং কার্ট থেকে চেকআউটের সময় সিদ্ধাহীনতার কোনও অবকাশ নেই।
ঢাকায় অঞ্জন্স-এর শাখা আছে উত্তরা, বেইলি রোড, মালিবাগ, বনানী, মিরপুর, ধানমন্ডি, এবং ওয়ারিতে।
ডিজিটাল স্টোর লিঙ্ক: https://www.anjans.com/
আরো পড়ুন: জেনে নিন কোন লিপস্টিক আপনাকে সবচেয়ে বেশি মানাবে
টুয়েল্ভ ক্লদিং (Twelve Clothing)
টিম গ্রুপের দ্বাদশ উদ্যোগ হিসেবে ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর চালু হয় টুয়েল্ভ ক্লদিং। সাম্প্রতিক সময়ে দ্রুত সময়ে নির্ভরতা অর্জন করা ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে Twelve Clothing একটি।
এর ড্রেসগুলোর আসল বিশেষত্ব লুকিয়ে থাকে এর তৈরি প্রক্রিয়ায়। এম্ব্রয়ডারি, স্ক্রিনপ্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট, ও কারচুপির অনবদ্য পরিস্ফুটন ঘটে প্রতি পোশাকে। যার প্রমাণ পাওয়া যাবে নির্দিষ্ট পোশাকের ওয়েব পেজে প্রবেশ করলে।
সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে সাইটের এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ফিচার। এর মাধ্যমে যে কোনও পোশাকের পেজে ঢুকে নিজের ছবি আপলোড করে ভার্চুয়াল ট্রায়াল দেওয়া যাবে।
এছাড়াও রয়েছে কাঙ্ক্ষিত ড্রেসটির তুলনামূলক যাচাইয়ের সুবিধা।
রাজধানী কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানটির শাখাগুলো হলো- বেইলি রোড, বনশ্রী, খিলগাঁও, মিরপুর, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, ওয়ারি, উত্তরা, এলিফ্যান্ট রোড, বসুন্ধরা, এবং গুলশান।
ওয়েবসাইট লিঙ্ক: https://twelvebd.com/
আরো পড়ুন: নতুন পোশাক কেনার আসক্তি কমানোর উপায়
দেশাল (Deshal)
দেশীয় ঘরানা ও পদ্ধতির পোশাকশিল্পীদের একটি নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে একত্রিত করা। এমনই সুদূরপ্রসারি ভিশন নিয়ে ২০০৫ সালে শুরু হয় দেশাল-এর কার্যক্রম। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির পরিব্যাপ্তি ঢাকার প্রতিটি ব্যস্ত এলাকায় লক্ষণীয়। এর মধ্যের রয়েছে বনানী, উত্তরা, বসুন্ধরা সিটি, ধানমন্ডি, শাহবাগ, বেইলি রোড, মোহাম্মদপুর, ও মিরপুর।
তৈরি পোশাক শিল্পের প্রথম সারির ই-কমার্স সাইটগুলোর মধ্যে Deshal একটি। দেশীয় সংস্কৃতির উদাত্ত বহিঃপ্রকাশের ছাপ মেলে সাইটের হোমপেজ থেকেই। অতঃপর প্রধান মেনুগুলোর মধ্যে শিশু, নারী, পুরুষ ক্যাটাগরির প্রত্যেকটিতে একই সংস্কৃতির পরিচয়।
এবার আলাদা করে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে ঈদ ২০২৫ ট্যাবটি। ক্রয়ের জন্য যাবতীয় তথ্যের পাশাপাশি প্রাঞ্জল বাংলা শিরোনাম বিকশিত করছে পোশাকের মানকে।
অর্ডার থেকে চেকআউট অব্দি নেই ঘন ঘন পেজ পরিবর্তনের বিড়ম্বনা। তাই সাবলীলতার দিক দিয়ে অন্যান্য সাইটগুলোর তুলনায় এখানকার অনলাইন শপিংটা একটু এগিয়ে।
সাইট লিঙ্ক: https://www.deshal.net/
আরো পড়ুন: নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
পরিশিষ্ট
তৈরি পোশাকের এই ১০টি স্বনামধন্য ব্র্যান্ডের অনলাইন স্টোরগুলো ক্রেতাদের কেনাকাটায় যুগান্তকারি প্রভাব ফেলছে। দীর্ঘ দিনের নির্ভরতার দৌলতে প্রিয় ব্যান্ডের ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারছেন প্রত্যেকে।
স্বতন্ত্র শৈলীর গুনমুগ্ধরা পুরনো ‘আড়ং’ ও ‘কে-ক্র্যাফ্ট’ তে দেখছেনই। সেই সাথে চোষে বেড়াচ্ছেন নতুন ‘রঙ বাংলাদেশ’ এবং ‘অঞ্জন্স’-এর স্টোরগুলোও। ডিজিটাল স্ক্রিনিং-এর যথাযোগ্য সদ্ব্যবহার করে নিজেদের বিশেষত্বগুলো মেলে ধরছে ‘এক্স্ট্যাসি’, ‘সেইলার’, ও ‘টুয়েল্ভ ক্লদিং’। পিছিয়ে নেই হাল ফ্যাশনের ‘ইয়োলো’, ‘লা রিভ’, এবং ‘দেশাল’ও।
সর্বপরি, এই অনলাইন ঈদ শপিং সামগ্রিকভাবে নতুন মাত্রা যোগ করছে ক্রেতাদের নিত্য-নৈমিত্তিক জীবনধারণে।
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
২৮২ দিন আগে
পবিত্র রমজান ২০২৫-এ ইফতারের জন্য ঢাকার সেরা ১০টি রেস্টুরেন্ট
রমজান মাসে ইফতার শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, এটি মুসলমানদের খাদ্য সংস্কৃতিরও এক বিরাট অংশ। তারই এক অভাবনীয় বৈচিত্র্য দেখা যায় ঢাকার রেস্টুরেন্টগুলোতে। প্রতিবারই এই পবিত্র মাসকে কেন্দ্র করে নানা ধরণের ইফতার প্ল্যাটারের আয়োজন করা হয়। এখানে ঐতিহ্যবাহী খাবারের সাথে থাকে আধুনিক খাবারের অপূর্ব সংমিশ্রণ। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের তেমনি কয়েকটি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টকে নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের নিবন্ধ। চলুন, ইফতার করার জন্য ঢাকার ১০টি সেরা রেস্টুরেন্টের ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ঘরের বাইরে ইফতারের জন্য ঢাকার জনপ্রিয় ১০টি রেস্টুরেন্ট
.
মুম্বাই এক্সপ্রেস (Mumbai Express)
উত্তরার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মুম্বাই এক্সপ্রেস ইফতার আয়োজনের এক অভিজাত গন্তব্য। রমজানে এখানকার পরিপূর্ণ মেনুতে মেলে স্বাদ ও ঐতিহ্যের মিশ্রণ।
এ বছর Mumbai Express-এর পরিবেশনায় রয়েছে তিনটি প্ল্যাটার। নান ইফতার নামক প্ল্যাটারে পাওয়া যাবে ৯টি আইটেম, যার মূল্য শুরু ৬৫০ টাকা থেকে। ৮টি বাহারি পদের বিরিয়ানি ইফতারের দামও একই। ন্যূনতম ৭৫০ টাকা থেকে শুরু হওয়া শাহী ইফতার-এ রয়েছে ৯টি পদ।
এর বাইরে মেনুর মূল আকর্ষণে আছে ৫৫০ টাকার মাটন হালিম। মিষ্টান্নর মধ্যে নজর কাড়ছে উপাদেয় স্বাদের রেশমি জিলাপি যার দাম পড়বে ২৮০ টাকা। আর একটু মোটা বোম্বে জিলাপির দাম ২০০ টাকা।
ঠিকানা: হাউস-১৬/এ, রোড-৪, সেক্টর-৪, উত্তরা।
বাহারি সেট মেনু:
https://www.facebook.com/mumbaiexpressbd/posts/pfbid02TWmF1s9Wk58LoHHzSQQKZ7nWYA9gm1hPkikjDpMi78XoPWJMUeWq2KzHRDz1Hiwyl
আরো পড়ুন: খেজুরের রকমফের: জেনে নিন ১০ প্রকার খেজুরের পুষ্টি, স্বাস্থ্যগুণ ও দাম
যাত্রা বিরতি (Jatra Biroti)
বনানীর এই রেস্তোরাঁটি তাদের ইফতার প্ল্যাটারগুলোতে রেখেছে স্বাস্থ্যকর ও বৈচিত্র্যময়তার ছাপ। Jatra Biroti-এর খাবারগুলোর বিশেষ দিক হচ্ছে নিরামিষের প্রাধান্য।
এবারের রমজানে এখানে বাছাইয়ের জন্য থাকছে ৬টি প্ল্যাটার, যেগুলোর প্রত্যেকটির দাম ৪২০ টাকা। প্রতিটির সাধারণ খাবার হলো খেঁজুর, পিয়াজু, বেগুনী, ছোলা ভুনা, পালং শাক ভাজা, খেঁজুরের গুড়ের বিশেষ টক দই এবং খেঁজুর ও লেবুর শরবত।
লেটকা খিচুড়ি প্ল্যাটারে রয়েছে সব্জি ও ভাজা বেগুনের সংযোজন। চিড়ার পোলাও প্ল্যাটারে মশলাদার চাল ও মাশরুম কারি পাওয়া যায়। সবজি বিরিয়ানিতে সুগন্ধি সবজি বিরিয়ানি ও নারকেলের দুধে রান্না করা তরকারির স্বাদ।
নতুনের মধ্যে পরখ করা যেতে পারে মাশরুম র্যাপ প্ল্যাটার, যেখানে মশলাদার মাশরুম হালিম পরিবেশন করা হয়। ডাল-রুটি প্ল্যাটারের আইটেম হচ্ছে বাদামী গমের রুটি, ঘন মসুর ডাল ও মটরশুটির তরকারি। সর্বশেষ দই-চিড়া প্ল্যাটারে আছে লুচি ভাজা, আলুর দম এবং খেঁজুরের গুড়ে মিশ্রিত দই-চিড়া।
ঠিকানা: বাড়ি ৬৩, রোড ১৭/এ, ব্লক-ই, বনানী।
একত্রে ৬টি প্ল্যাটার:
https://www.facebook.com/jatrabirotiworld/posts/pfbid023qtBn8NgD18Qe7Q11Q8pgXPc9uJyUzmLXioKDjMJXqtu67Eb4sUUyagqJ1VK3ahDl
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
হাব রুফটপ (The Hub Rooftop)
ছাদের মুক্ত পরিবেশে সাশ্রয়ী মূল্যে ইফতারের জন্য দারুণ একটি স্থান মিরপুরের হাব রুফটপ। বন্ধু কিংবা পরিবার নিয়ে আড্ডার পাশাপাশি প্রধানত দুটি প্ল্যাটারকে ঘিরে অতিথিদের সমাগম হচ্ছে। প্রায় কাছাকাছি আইটেম বিশিষ্ট দুটো প্ল্যাটারেরই দাম ৪৫০ টাকা।
ইফতার প্ল্যাটার-১-এ আছে শর্মা, ফ্রাইড রাইস, চিকেন মাঞ্চুরিয়ান, ফ্রাইড চিকেন, স্প্রিং রোল, ফিশ টোস্ট (২টি), আঙ্গুর, খেজুর, পানি এবং ট্যাং জুস। ইফতার প্ল্যাটার-২তে সবই একই, কেবল ফ্রাইড রাইসের বদলে চাওমিন দেওয়া হয়।
কিছুটা সংকীর্ণ জায়গায় হওয়ায় The Hub Rooftop ছোট গ্রুপের জন্য উপযুক্ত। ছুটির দিনগুলোতে আগে থেকে কল করে বুকিং দিয়ে যাওয়াটা উত্তম।
ঠিকানা: ২৯, চিড়িয়াখানা রোড, ১\জি, মিরপুর-১ (ইয়োলো/আগোরা সুপারশপের বিপরীতে)।
https://www.facebook.com/thehubrooftop/posts/pfbid0s8FzrYRVvwHB1vsAwt3WhhtDtur5TpQA3n72NT3DjyQdEA4u6TFjV9jc5VpREDjWl
আরো পড়ুন: স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য যেসব খাবার উপকারী
গ্রাইন্ড হাউস মিউজিক ক্যাফে (GRIND HOUSE Music Cafe)
মনোরম ইন্টেরিয়র ও সুবিস্তৃত পরিসরে পারিবারিক ও কর্পোরেট অনুষ্ঠানের জন্য সেরা জায়গা গ্রাইন্ড হাউস। রমজান উপলক্ষে খিলগাঁওয়ের এই ক্যাফেটি পাঁচটি ভিন্ন প্ল্যাটার রেখেছে। তন্মধ্যে প্ল্যাটার-১, ২, ও ৩ একজনের জন্য আর ৪ ও ৫ দুইজনের জন্য।
প্ল্যাটার-১ (৫০০ টাকা) সাজানো হয়েছে ফল, স্প্রিং রোল, আলু ওয়েজ, ফ্রাইড রাইস, বারবিকিউ চিকেন স্টেক, সবজি, ও শরবত দিয়ে। প্ল্যাটার-২ (৫২০ টাকা)-তে একই আইটেম, তবে বারবিকিউ চিকেন স্টেকের বদলে দেয়া হয়েছে চিকেন চিলি পেঁয়াজ। আর সাথে অতিরিক্ত সযোজন হয়েছে ছোট ছোট করে কাটা গরুর মাংস। প্ল্যাটার-৩ (৪৫০ টাকা) প্ল্যাটার-২-এর মতই, শুধু চিকেন চিলি পেঁয়াজ ও কাটা গরুর মাংসের পরিবর্তে থাই ফ্রাইড চিকেন ও রেড চিকেন কারি দেয়া হয়েছে।
প্ল্যাটার-৪ (৯৯৯ টাকা) সমসাময়িক ইফতার আইটেম থেকে একদমি ভিন্ন। এতে আছে GRIND HOUSE Music Cafe-এর নিজস্ব গ্রাইন্ড পাস্তা এবং ১০ ইঞ্চি মেক্সিকান পিৎজা। প্ল্যাটার-৫ (৯৯৯ টাকা)-এ আছে নান রুটি (মাখন-রসুন মিশ্রিত), দুটি চিকেন তান্দুরি, দুটি রেশমি কাবাব, এবং দুটি হরিয়ালি কাবাব। সাথে ফলসহ ডাল তরকারি, ও শরবত।
ঠিকানা: ৩৬৮/বি নাজমা টাওয়ার, মিনিসো বিল্ডিং (লেভেল-৮), খিলগাঁও (তালতলা সুপার মার্কেটের কাছে)।
একসাথে সবগুলো প্ল্যাটার:
https://www.facebook.com/grindhousebd/posts/pfbid0YMSBjBMZvdMXoaYB4Vr1Py9ZJboAcwg7nxdenA4MtoeiWn9Q2AydCwcwHBaEXGq4l
আরো পড়ুন: নিরাপদে স্ট্রিট ফুড খাওয়ার ১০টি উপায়
রোডসাইড কিচেন (Roadside Kitchen)
সাশ্রয়ী খরচে ইফতার করার আরও একটি জায়গা বসুন্ধরার রোডসাইড কিচেন। তাদের ৪৫০ টাকার প্ল্যাটারটি একজনের জন্য নির্ধারিত হলেও তাতে অনায়াসেই দুজনের ইফতার হয়ে যায়। কেননা এতে আছে আচারের রাইস, ফ্রাইড চিকেন; সাথে ডিম, কোল্স্ল, চিলি চিকেন, চিকেন মাঞ্চুরিয়ান এবং দুটি গ্রিল চিকেন।
ইফতার পাশাপাশি সেহরির সময়েও সমান উদ্দীপনায় মুখর হয়ে থাকে Roadside Kitchen।
ঠিকানা: আর/এ, ক-৯/এ, ১ম তলা, বসুন্ধরা।
প্ল্যাটারের বিস্তারিত:
https://www.facebook.com/reel/611653048349338/
আরো পড়ুন: ওমেগা-৩ ডিম কি আসলেই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি?
বাঙালিয়ানা ভোজ
ইফতার ও সেহরিতে ওয়ারীর বাঙালিয়ানা ভোজ মানেই দেশীয় ঐতিহ্যের বর্ণিল আয়োজন। এখানে আদ্যোপান্ত দেশীয় খাবারের সম্ভারে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন সেট মেনু। মাত্র ১৫০ টাকার প্যাকেজে পাওয়া যাবে চিকেন ও ডিমের কম্বো, এবং ২৫০ টাকায় বিফ ও ডিম। হাঁসের মাংস ও ডিমের সেট মেনুর দাম ২৯৯ টাকা।
যারা ভর্তা উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য রয়েছে ১৬৯ টাকায় ভাত, ডাল ও ১১ পদের ভর্তা।
রেস্তোরাঁটির বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে দুটি ভ্যারিয়েন্টের গ্র্যান্ড খিচুড়ি প্ল্যাটার। একটি বিফ কালাভুনা দিয়ে, আরেকটি চিকেন ঝাল ফ্রাই দিয়ে।
এছাড়াও আলাদা ভাবে অর্ডার করা যাবে গরম খুদের পোলাও, বেগুন ভাজা, কষা মাংস, বাসমতী চালের ভাত ও বুটের ডাল মাটন।
ঠিকানা: গ্রাউন্ড ফ্লোর, ফরচুন গার্ডেন, ৮ নং র্যাংকিং স্ট্রিট, ওয়ারী।
ওয়ারীসহ বাঙালিয়ানা ভোজ-এর মোট ৬টি শাখা রয়েছে- মিরপুর, বসুন্ধরা, মোহাম্মদপুর, পান্থপথ ও নারায়ণগঞ্জ।
বিশদ তথ্যের জন্য:
https://www.facebook.com/BangalianaBhoj
আরো পড়ুন: তীব্র গরমে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে উপকারী শাকসবজি
২৮৪ দিন আগে
খেজুরের রকমফের: জেনে নিন ১০ প্রকার খেজুরের পুষ্টি, স্বাস্থ্যগুণ ও দাম
পবিত্র রমজান মাস আসার সঙ্গে সঙ্গে যে ফলটির চাহিদা সর্বাধিক বৃদ্ধি পায় তা হলো খেজুর। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানদের মতো বাংলাদেশিদের কাছেও এটি ইফতার শুরুর একটি ঐতিহ্যবাহী উপায়। জাতভেদে প্রতিটিরই রয়েছে অনন্য স্বাদ। এছাড়া অধিকাংশ খেজুরেরই রং, পুষ্টি ও স্বাস্থ্যগুণ প্রায় কাছাকাছি। রোজা ছাড়া প্রতিদিনের জলখাবার বা ভারী খাবারের সঙ্গেও খেজুর দারুণ একটি সংযোজন। এই ফলটি নিয়েই আজকে স্বাস্থ্য বিচিত্রা। চলুন, দেশের বাজারে চলমান বিশ্ব নন্দিত ১০টি খেজুরের জাত, উৎস, পুষ্টি, স্বাস্থ্যগুণ ও বাজার দর সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক।
বর্তমান বাজারের জনপ্রিয় ১০টি খেজুর
.
আজওয়া
মাঝারি ডিম্বাকৃতি কুঁচকুঁচে কালো বর্ণের আজওয়া খেজুর উৎপন্ন হয় সৌদি আরবের মদিনায়। সম্পূর্ণ চর্বিহীন এই ফল প্রাকৃতিক চিনির শর্করা উপাদানসহ প্রোটিনে ভরপুর। এতে আরও আছে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও পটাসিয়াম। খনিজ পুষ্টিগুলো হাড়ের গঠনকে মজবুত করে। পেশীর ফাংশন ও হৃদযন্ত্রে সামগ্রিক সুস্থতার বিকাশ ঘটায়। আর ফাইবার হজমশক্তি ত্বরান্বিত করে পরিপাকতন্ত্র স্বাভাবিক রাখে।
আরও পড়ুন: বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদন বাকৃবি গবেষকের
মানের ভিত্তিতে খুচরা কাঁচা বাজারে আজওয়ার দাম কেজি প্রতি ৬৪০-৮০০ টাকা। কোনো কোনো বাজারে এগুলো ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা বিক্রি হয়।
মেডজুল
বৃহদাকৃতি ও সুমিষ্ট স্বাদের জন্য বিশ্বব্যাপি স্বীকৃত মেডজুল। এই খেজুর উৎপন্ন হয় মরক্কোর তাফিলাল্ত অঞ্চলে। এগুলো ফিনিক্স ড্যাক্টাইলিফেরা প্রজাতির উদ্ভিদ থেকে চাষ করা হয়। বর্তমানে এগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইস্রায়েল ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়।
শরীরের পর্যাপ্ত ক্যালরির জন্য মাত্র দুটি মেডজুলই যথেষ্ট। এর কার্বহাইড্রেটের বিশাল অংশ হচ্ছে অর্গানিক শর্করা, যা দেহে প্রয়োজনীয় শক্তির ধারক ও বাহক হিসেবে কাজ করে। মেডজুলে বিদ্যমান পুষ্টিকর ফাইবার ও প্রোটিন হজমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। এতে আরও আছে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ও আয়রনের মতো খনিজ পদার্থ।
এই উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সম্পন্ন উপাদানগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ফাইবার সামগ্রী রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে ও ওজন ঠিক রাখার ক্ষেত্রে উপযোগী ভূমিকা পালন করে। আকার ও বাজারের পৌঁছানোর পূর্বে প্রক্রিয়াকরণের উপর ভিত্তি করে এই খেজুরের দামে যথেষ্ট তারতম্য হয়। এই পরিধি নিম্নে ৯২০-৯৬০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০০০- ১৮০০ টাকা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: খেজুর আমদানিতে আগাম কর প্রত্যাহার
মারিয়াম
প্রাথমিকভাবে ইরানে চাষকৃত এই খেজুর মাঝারি থেকে বড় আকারের হয়ে থাকে। ফিনিক্স ড্যাক্টাইলিফেরা প্রজাতি ভুক্ত গাছ থেকে উৎপন্ন এই খেজুর মুখে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গলে যায়। প্রাকৃতিক শর্করার আধার এই ফল মানবদেহে শক্তি যোগানের একটি মূল্যবান উৎস।
পুষ্টি উপাদান হিসেবে হজম-সহায়ক ফাইবারের উপস্থিতি হজমে সহায়তা করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ অংশ নেয়। পাশাপাশি বিদ্যমান পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের মতো খনিজ উপাদানগুলো রক্তনালীগুলোকে শিথিল রাখে ও হাড়কে শক্তিশালী করে। বিভিন্ন স্থানীয় বাজারভেদে বর্তমানে মারিয়াম খেজুরের দাম ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে।
খুরমা খেজুর
দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি খুরমা খেজুরের উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোর মধ্যে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ারও ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। বাংলাদেশে খেজুরের এই জাতকে সাধারণত শুকনো খেজুর বলা হয়। বাজারজাত করার পূর্বে কড়া রোদে শুকানো হয় বিধায় এগুলো খাওয়ার জন্য উপযোগী গঠন ও মিষ্টি স্বাদ পায়।
শুকনো খেজুর কার্বোহাইড্রেট ও প্রাকৃতিক ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা দেহে শক্তি যোগায় ও হজম এবং অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজের উপস্থিতি থাকায় এগুলো হৃদরোগ, পেশীর নড়াচড়া ও রক্তে অক্সিজেন পরিবহনে অবদান রাখে। এ ছাড়াও এতে রয়েছে পরিশোধিত চিনি সমৃদ্ধ জৈব শর্করা, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের অধিকারি। সুতরাং নিত্য আহারে এই ফল রাখা মানে শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মুক্তি পাওয়া। দেশের নানা স্থানের কাঁচা বাজারগুলোতে এগুলোর দাম প্রতি কেজিতে ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা। তবে প্রিমিয়াম জাতের মূল্য ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকাও ছাড়িয়ে যায়।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় রস সংগ্রহে খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত গাছিরা
সুক্কারি
ক্যারামেল ও মধুর মিশ্রণযুক্ত স্বাদ ও সোনালী বর্ণযুক্ত সৌদি আরবের সুক্কারি সারা বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয়। অধিকাংশ নরম খেজুরগুলোর মতো এটিও মুখে দিতেই ব্যতিক্রমি স্বাদে পুরো মুখ ভরে যায়। পুষ্টিগত দিক থেকে সুক্কারি দ্রুত শক্তিবর্ধক অর্গানিক শর্করায় ভরপুর। এতে থাকা ফাইবারগুলো পরিপাক সচল রেখে হজমের সুস্বাস্থ্যে অবদান রাখে।
খনিজ উপাদানগুলোর মধ্যে পটাসিয়ামের আধিক্য বেশি, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতার বিকাশ ঘটায়। এগুলোর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরকে প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। মান ও জাতের ভিন্নতার উপর নির্ভর করে সুক্কারির প্রতি কেজির দাম ২৫০ থেকে ৬৩০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।
মাবরুম
সৌদি আরবে চাষকৃত মাবরুম খেজুর বেশ লম্বাকৃতি ও লালচে-বাদামী রঙের হয়। এর আবরণটি বেশ দৃঢ় হয় ও অন্যান্য খেজুর থেকে এর মিষ্টতা কিছুটা কম। চিনি কম থাকলে মাবরুম হজম-সহায়ক ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা পরিপাকতন্ত্রের যাবতীয় সমস্যা নিরসণে অংশ নেয়।
ফলটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি ৬ ও আয়রন সরবরাহ করে থাকে। পুষ্টি উপাদানগুলোর পরিমিত সমন্বয় হৃদরোগ, রক্ত, পেশী ও মস্তিষ্ক-জনিত স্বাস্থ্যঝুঁকিগুলো দূর করে। প্রতি কেজি ৪০০-৪৫০ টাকা। তবে সৌদিতে বাছাইকৃতগুলোর মূল্য ১২০০ টাকা পর্যন্ত রাখা হয়।
আরও পড়ুন: খেজুরের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
কালমি
সৌদি আরবের মদিনায় উৎপন্ন হওয়া এই খেজুরের আরেক নাম সাফাভি। আকারে মাঝারি থেকে লম্বা, রঙ কালো। বাহ্যিক আবরণ হাল্কা আর্দ্র ও নরম। এটি দ্রুত শক্তিবর্ধকের জন্য অপরিশোধিত শর্করা ও স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের বিকাশে উপযোগী ফাইবারের যোগান দেয়।
খনিজ পদার্থের এই ভান্ডারে রয়েছে পটাসিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়ামের পরিমিত সমন্বয়। এগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, হৃদপিণ্ডের সুস্বাস্থ্য, পেশীর সচলতা, স্নায়ুর কার্যকারিতা ও হিমোগ্লোবিনের সঞ্চালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কালমির বর্তমান বাজারের দর কেজি প্রতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে।
আম্বার
ফিনিক্স ড্যাক্টাইলিফেরা গাছ ও মদিনায় উৎপন্ন খেজুরের এই জাতকে ‘আনবারা’ নামেও ডাকা হয়। মোটা খেজুরগুলোর গঠন একটু ব্যতিক্রম আকৃতির ও রঙে গাঢ় বাদামীর সঙ্গে থাকে কালচে আভার মিশ্রণ। আম্বারের প্রধান পুষ্টিগুনগুলোর মধ্যে রয়েছে— অপরিশধিত শর্করা ও ফাইবার, আয়রন, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম।
তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আম্বার খেজুর রাখা মানে হজম, রক্তচাপ, পেশী ও হাড়ের সমুন্নত কার্যকারিতা বজায় রাখা। স্থানীয় বাজারে প্রাপ্যতা ও চাহিদার উপর ভিত্তি করে এগুলোর প্রতি কেজির মূল্য ৭০০-১৬০০ টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করে।
আরও পড়ুন: নিপাহ ভাইরাস সতর্কতা: কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার ঝুঁকি
জাহেদী
হালকা সোনালী-বাদামী রঙের ও ডিম্বাকৃতির মাঝারি আকারের এই খেজুরের উৎপত্তিস্থল ইরাক। বাইরের বাদামের গন্ধ বিশিষ্ট আবরণটি আধা-শুষ্ক ও দৃঢ় এবং স্বাদ হাল্কা মিষ্টি।
জাহেদী খেজুর শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় হজমকারী ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, শর্করা, পটাসিয়াম ও সোডিয়াম সরবরাহ করে। এতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি৬, আয়রন, ফ্ল্যাভোনয়েড ও অ্যামিনো অ্যাসিড। এগুলো সক্রিয়ভাবে পরিপাক ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্ত প্রবাহে অক্সিজেন পরিবহন বাড়ায়। বাজার প্রতি কেজির মূল্য ন্যূনতম ২২০-২৫০ টাকা।
দাব্বাস
একদম ছোট থেকে মাঝারি গড়নের গাঢ় বাদামী রঙের দাব্বাস খেজুর চাষের প্রধান অঞ্চল সংযুক্ত আরব আমিরাত। প্রায় সব ধরণের খেজুরের মতো এটিও সংগৃহীত হয় ফিনিক্স ড্যাক্টাইলিফেরা উদ্ভিদ থেকে।
এই ফলে আছে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম ও সেলেনিয়াম। পুষ্টি উপাদানগুলো সামগ্রিক ভাবে হজম, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ও রক্তে অক্সিজেন পরিবহনে কার্যকরি অবদান রাখে। এই খেজুরের অ্যান্টি-ডিহাইড্রেশন, সোডিয়াম ও পটাসিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখার বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। এগুলোর মূল্য সাধারণত প্রতি কেজিতে কমপক্ষে ৪০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা।
আরও পড়ুন: গ্রামে নগরায়নের ছোঁয়া, খুলনায় মিলছে না খেজুরের রস
শেষাংশ
বিশ্বের নানা অঞ্চল থেকে উৎসরিত অনন্য স্বাদের এই ১০ রকম খেজুর রমজানে রোজাদারদের স্বাস্থ্যের সামগ্রিক উন্নতিতে অবদান রাখে। তন্মধ্যে কালো বর্ণের আজওয়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। আকারে বড় ও সুমিষ্ট খেজুর হিসেবে স্বীকৃত মেডজুল ও আম্বার, অন্যদিকে নমনীয়তার দিক থেকে মারিয়াম খেজুর প্রসিদ্ধ।
দাব্বাসের ভেতরটাও একই রকম কোমল। দক্ষিণ এশিয়ার প্রসিদ্ধ খাবার খুরমা খেজুর, আর সুক্কারির জনপ্রিয়তা তার ক্যারামেল-সদৃশ স্বাদের জন্য। দীর্ঘক্ষণ মুখে রেখে সুঘ্রাণ সৃষ্টির জন্য মাবরুম বেশ উপযোগী। জাহেদীতে রয়েছে হালকা বাদামের স্বাদ, আর অন্যান্য খেজুরের তুলনায় অত্যধিক খনিজ উপদান মিলবে কালমি বা সাফাভিতে। সব মিলিয়ে রোজাকালীন আহার থেকে দীর্ঘ বিরতিতে এই খেজুরগুলো হতে পারে দেহের শক্তি সঞ্চয়ের উৎকৃষ্ট মাধ্যম।
আরও পড়ুন: বাসা-বাড়ির রান্নায় সিলিন্ডার গ্যাসের খরচ কমাবেন যেভাবে
২৮৭ দিন আগে
ঠান্ডা না গরম পানি পান করবেন?
পানি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পানি পান করার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তবে পানির তাপমাত্রা আপনার শরীরকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এটি নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন যে গরম বা ঠান্ডা পানি কোনটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য পান করা বেশি উপকারী। এটি আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ, পরিস্থিতি এবং স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে।
গরম পানি পান করার উপকারিতা
ওয়ার্ল্ড জার্নাল অব ফার্মাসিউটিক্যাল রিসার্চ অনুযায়ী, ২০২০ সালের একটি গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে গরম পানি কাশি (৭১ শতাংশ), শ্বাসকষ্ট (৭১ শতাংশ) এবং স্থূলতা (৫৭ শতাংশ) কমাতে সহায়ক। উষ্ণ পানি পানের কয়েকটি মূল উপকারিতা নিম্নরূপ:
হজমে সহায়তা করে
গরম পানি খাবার ভেঙে হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করতে পারে। এটি হজম এনজাইমগুলোকে সক্রিয় করে, যার ফলে খাবার ভালোভাবে পরিপাক হয়। খাবারের আগে গরম পানি পান করা হজমে সহায়ক হতে পারে।
তবে খুব বেশি গরম পানি পান করা উচিত নয়, কারণ এটি জিহ্বা, তালু এবং খাদ্যনালীর ক্ষতি করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে অতিরিক্ত গরম পানীয় গ্রহণ খাদ্যনালীর ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
আরো পড়ুন: ভিমরুলের কামড় কতটা ভয়ংকর? সাবধানতা ও করণীয়
নাক ও বুকে জমে থাকা কফ দূর করে
যদি নাক বা বুকে কফ জমে থাকে—তাহলে গরম পানি তা শিথিল করতে সহায়তা করতে পারে। এটি গলা ব্যথা উপশম করতে পারে এবং শ্বাসনালী পরিষ্কার করতে সহায়ক।
রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে
গরম পানি রক্তনালী প্রসারিত করে, যা অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায় এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। এটি হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও সহায়ক।
২৯১ দিন আগে
রাতে বাসে বা গণপরিবহনে নিরাপদে ভ্রমণে কিছু সতর্কতা
সন্ধ্যার পর নিকটস্থ বা দূরপাল্লার গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য আপনি বাস বা গণপরিবহন ব্যবহার করেন? রাতে বাস বা গণপরিবহনে ভ্রমণের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
সান্ধ্য বা নৈশ ভ্রমণে যানবাহনে করণীয়-বর্জনীয়
.
পরিকল্পিতভাবে ভ্রমণ করুন
পরিকল্পিতভাবে ভ্রমণ করলে যাত্রা আরামদায়ক ও নিরাপদ হয়। যদি বাস বা ট্রেনের টিকিট বুকিং করার সুযোগ থাকে, তাহলে মাঝামাঝি আসন নিন। রাতের বেলায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে জানালার পাশে বা বাসের খুব পেছনের আসন এড়িয়ে চলাই ভালো।
যদি সম্ভব হয়, পরিচিত কাউকে আপনার যাত্রার তথ্য (গন্তব্য, সম্ভাব্য পৌঁছানোর সময়) জানিয়ে রাখুন।
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধে করণীয়
নির্ভরযোগ্য যানবাহন ব্যবহার করুন
নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য নির্ভরযোগ্য বাস বা যানবাহন বেছে নিন। সরকারি বা স্বীকৃত পরিবহন সংস্থার যানবাহন ব্যবহার করুন। বাস বা গাড়ির রুট ও সময়সূচি সম্পর্কে আগেই জেনে নিন।
অ্যাপ-ভিত্তিক রাইড শেয়ারিং পরিষেবা (যেমন Uber, Pathao) ব্যবহার করলে গাড়ির তথ্য যাচাই করুন।
নিজের অবস্থান গোপন রাখুন
বর্তমান যুগে অনেকেই নিজের দৈনন্দিন কার্যকলাপ এবং ব্যক্তিগত তথ্য সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করে থাকেন। যারা সন্ধ্যার পর বা রাতে ভ্রমণ করেন তাদের জন্য এটি ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। অপরিচিতদের সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না। যদি সম্ভব হয়, যাত্রাপথের লাইভ লোকেশন পরিবার বা বন্ধুকে শেয়ার করুন।
আরো পড়ুন: রমজানে রোজা রাখার প্রস্তুতি: দেহ ও মনকে সুস্থ রাখতে করণীয়
সতর্ক থাকুন ও চারপাশ পর্যবেক্ষণ করুন
অপরিচিত বা সন্দেহজনক ব্যক্তির সঙ্গে অতিরিক্ত কথা বলা বা ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা এড়িয়ে চলুন। ব্যস্ত থাকলেও মোবাইলে পুরোপুরি মনোযোগ দেবেন না, চারপাশের পরিস্থিতি লক্ষ্য রাখুন। সন্দেহজনক কিছু দেখলে বা অনুভব করলে বাসচালক বা সহযাত্রীদের জানান।
ভিড় এড়িয়ে চলুন
খুব বেশি ভিড় থাকলে বা সন্দেহজনক পরিস্থিতি দেখলে সেই যানবাহনে না ওঠাই ভালো। গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র যেমন মানিব্যাগ, ফোন বা ব্যাগ নিজের কাছেই রাখুন।
আত্মরক্ষায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে রাখুন
প্রয়োজনে আত্মরক্ষার জন্য ছোটখাটো সরঞ্জাম (যেমন: পেপার স্প্রে, হুইসল, ফোল্ডিং মেটাল সেফটি রড, ইত্যাদি ) সঙ্গে রাখতে পারেন। ফোনের ব্যাটারি ও মোবাইল ডাটা চালু রাখুন, যাতে প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে পারেন।
আরো পড়ুন: পবিত্র ওমরাতে যাওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি ও কিছু সাবধানতা
জরুরি নম্বর সংরক্ষণ করুন
স্থানীয় পুলিশ, বাস সার্ভিস হেল্পলাইন ও পরিচিতজনের নম্বর সহজেই পাওয়া যায় এমন জায়গায় রাখুন। বিপদের সময় ৯৯৯ (বাংলাদেশের জরুরি সেবা) তে কল করুন।
যাত্রা পথে অপরিচিত ব্যক্তির দেয়া কিছু খাবেন না
যাত্রাকালে অনেক যাত্রী পার্শ্ববর্তী যাত্রীকে ভদ্রতার খাতিরে বা বন্ধুসুলভভাবে খাদ্য-পানীয় গ্রহণে অনুরোধ করেন। যাত্রীর ছদ্মবেশে অনেক সময় মলম পার্টির লোকেরা খাবারে বিষাক্ত কেমিকাল মিশিয়ে দেয়। এই খাবার গ্রহণের পর যাত্রীরা অচেতন হয়ে পড়লে তারা সর্বস্ব লুটে নেয়। এধরণের পরিস্থিতিতে ঝুঁকি এড়াতে অপরিচিত ব্যক্তির দেয়া কিছু না খাওয়া নিরাপদ।
ভ্রমণের সময় ভারসাম্য বজায় রাখুন
যদি বাস বা যানবাহন চলন্ত অবস্থায় থাকে, তবে হঠাৎ উঠে দাঁড়ানো বা নড়াচড়া করা এড়িয়ে চলুন। হাতল বা সাপোর্ট ধরে রাখুন যাতে হঠাৎ ব্রেক করলে পড়ে না যান। সম্ভব হলে হেলপারকে আপনার গন্তব্যস্থল আগেই জানিয়ে রাখুন, যাতে গাড়ি উক্তস্থানে পৌঁছালে আপনাকে ডেকে নিতে পারে।
আরো পড়ুন: তরুণদের মধ্যে স্ট্রোকের প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে: জানুন কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
মোবাইল ফোন নিরাপদে রাখুন
অনেকেই বাসে বা গণপরিবহনে যাত্রাকালে মোবাইল ফোন বের করে সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং করেন। এ ধরনের অভ্যাস ছিনতাইয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে জানালার পাশে বসলে খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ফোন বের না করে নিরাপদ। সম্ভব হলে, যাত্রা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফোন বের না করে, নিরাপদে পকেটে বা ব্যাগে রাখুন।
উপসংহার
ব্যক্তিগত বা জরুরি প্রয়োজনে কিংবা পেশাগত কারণে অনেকেই সন্ধ্যার পরে বা রাতের দিকে গণ পরিবহনে যাতায়াত করেন । উপরোল্লিখিত বিষয়গুলোতে সতর্কতা অবলম্বন করলেই রাতের ভ্রমণকে আরও নিরাপদ করা সম্ভব।
আরো পড়ুন: মরণঘাতী ড্রাগ ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ থেকে বাঁচতে করণীয়
২৯৪ দিন আগে
মরণঘাতী ড্রাগ ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ থেকে বাঁচতে করণীয়
রাস্তাঘাটে সংঘটিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের গুরুতর দিক হচ্ছে রাসায়নিক বস্তুর অপব্যবহার। সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে মারাত্মক ড্রাগ হলো ডেভিলস ব্রেথ বা শয়তানের নিঃশ্বাস। এর ভয়াবহ প্রভাবে ভুক্তভোগীরা কোনো রকম প্রতিরোধ ছাড়াই দুর্বৃত্তদের সহজ শিকারে পরিণত হয়। বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান এই বিপদ থেকে দূরে থাকার জন্য প্রয়োজন সর্বস্তরে জনসচেতনতা। চলুন, ডেভিলস ব্রেথ বা শয়তানের নিঃশ্বাস আসলে কি ধরনের ড্রাগ ও কিভাবে এর থেকে নিরাপদ থাকা যায়- তা বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ডেভিলস ব্রেথ বা শয়তানের নিঃশ্বাস কী
নাইটশেড গোত্রভুক্ত উদ্ভিদ (যেমন রাজঘণ্টা, ধুতুরা)-এর পাতা থেকে ট্রোপেন অ্যালকালয়েড নামক এক ধরনের শক্তিশালী জৈব যৌগ পাওয়া যায়। কথিত আছে প্রাকৃতিকভাবে উৎসরিত এই নির্যাসটি মানুষকে জোম্বি বা জিন্দালাশে পরিণত করে। আর তাই উদ্ভিদবিজ্ঞানে স্কোপোলামিন নামে অভিহিত এই রাসায়নিক বস্তুটি বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে শয়তানের নিঃশ্বাস বা ডেভিলস ব্রেথ নামে।
তবে এমন অদ্ভূত নামের জন্য দায়ী এর অ্যান্টিকোলিনার্জিক বৈশিষ্ট্য। এর ফলে মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর পারস্পরিক বার্তা আদান-প্রদানের মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। তাই এটি অতি অল্প মাত্রায় মোশন সিকনেস এবং অত্যধিক বমির চিকিৎসায় ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে পরিমিত মাত্রায় আরোগ্য দানকারী এই ঔষধই অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায় বিষ হয়ে ওঠে। এর নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যে রয়েছে মস্তিষ্ক বিভ্রম, হ্যালুসিনেশন এবং ঝাপসা দৃষ্টি। এমনকি এর মাত্রাতিরিক্ত সেবনে চরম পর্যায়ে শ্বাসকষ্ট, হার্ট-অ্যাটাক ও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
আরো পড়ুন: অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়
স্কোপোলামিনের ব্যাপক অসদ্ব্যবহার দেখা যায় নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। খাবার, পানীয় বা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে এটি শরীরে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তির হ্যালুসিনেশন শুরু হয়। এ সময় মস্তিষ্ক বিভ্রমের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে ভুক্তভোগীর স্বাধীন ইচ্ছা শক্তির বিলুপ্তি ঘটে। যখন বিভ্রান্তি কেটে যায় তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যক্তি কিছুই মনে করতে পারেন না। গন্ধ ও স্বাদ কোনোটাই না থাকায় এই রাসায়নিক পদার্থটি তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করারও উপায় থাকে না।
আর এই সামগ্রিক কারণে চোর ও ছিনতাইকারীদের ভয়ানক অস্ত্রে পরিণত হয়েছে স্কোপোলামিন। দুষ্কৃতিকারী খাবারে মিশিয়ে অথবা মুখের উপর এর গুঁড়ো ফুঁ দিয়ে জনসাধারণকে আক্রান্ত করে। এছাড়া অনেকে অপরিচিতদের সাহায্য আবেদনে তাদের বাড়িয়ে ধরা কাগজ চোখের কাছে নিয়ে পড়তে যেয়েও ধরাশায়ী হন। এরপর তাকে যা করতে বলা হয় সে কোনো ধরনের দ্বিধা না করে তা অনুসরণ করে। ফলশ্রুতিতে ঘটনাটি আশেপাশের লোকেদের মনেও কোনো সন্দেহের উদ্রেক করে না। এভাবে কোনোরকম বল প্রয়োগ ছাড়াই অসহায় ব্যক্তিটির সর্বস্ব লুটে নেওয়া হয়।
ডেভিলস ব্রেথ বা শয়তানের নিঃশ্বাস থেকে বাঁচার ১০টি উপায়
.
অপরিচিতদের দেওয়া খাবার বা পানীয় গ্রহণ না করা
বিভিন্ন গণপরিবহন, যাত্রী ছাউনী, পার্ক, রেস্তোরা ও আবাসিক হোটেল এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। এগুলোতে পরিবেশিত কোনো একটি খাবারে মেশানো থাকতে পারে ভয়াবহ স্কোপোলামিন। এসব জায়গা বাদেও যেকোনো অযাচিত খাবারের সুযোগ ভদ্রতার সঙ্গে ফিরিয়ে দেওয়া শ্রেয়। এমনকি অস্বাস্থ্যকর ফেরীওয়ালাদের খাবারও এড়িয়ে চলা উচিত। কেননা সেই বিক্রেতা যেকোনো দুষ্কৃতি চক্রের অন্তর্ভুক্ত নয়, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
আরো পড়ুন: এসির বাতাসে শিশুকে নিরাপদ রাখবেন যেভাবে
খাবার বা পানীয় উন্মুক্ত না রাখা
কোথাও খেতে বসে মাঝে কিছুক্ষণের জন্য কোথাও যাওয়ার সময় খাবার উন্মুক্ত অবস্থায় রাখা উচিত নয়। আশেপাশেই কোথাও ঘাপটি মেরে থাকা কোনো দুর্বৃত্তের জন্য এটি হতে পারে সুবর্ণ সুযোগ। ফিরে এসে হয়ত খাবার সেই আগের স্থানেই পাওয়া যাবে, কিন্তু তা আগের মতো বিশুদ্ধ নাও থাকতে পারে। তাই একা হলে নিজের কেনা বা সঙ্গে করে বহন করা খাবারটি সর্বদা সঙ্গেই রাখতে হবে। সঙ্গী থাকলে তখন কোথাও যেতে হলে খাবার তার দায়িত্বে রেখে যাওয়া যেতে পারে। অবশ্য পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে ভাবলেও তা ঢেকে রেখে যাওয়াটাই উত্তম।
অপরিচিতদের বাড়িয়ে ধরা কাগজ গ্রহণের ব্যাপারে সাবধান
অনেক প্রতারক চক্র আইডি কার্ড, প্রেসক্রিপশন, এমনকি সাদা কাগজে লেখা ঠিকানা জানতে চেয়ে সাহায্য প্রার্থনা করে। তখন সাহায্য করতে উদ্যত হওয়া ব্যক্তিটি কাগজটি চোখের কাছাকাছি নিতেই ঘটে বিপত্তি। নিঃশ্বাসের সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রে পৌঁছে যায় বিপজ্জনক মাত্রার ডেভিলস ব্রেথ। তাই নিজের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এ ধরনের অনুরোধগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। নতুনবা একবার এই বিষক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে আশপাশ থেকেও কোনো সাহায্য প্রাপ্তির অবকাশ থাকবে না।
ফুল বিক্রেতাদের ফুলের সুবাস নেওয়া থেকে বিরত থাকা
নিজস্ব কোনো গন্ধ না থাকায় ডেভিলস ব্রেথ অন্যান্য ফুলের সঙ্গে মিশিয়েও শিকারের উপর প্রয়োগ করা যায়। যানজট অথবা পার্কের মতো জায়গাগুলোতে প্রায়ই ফুল বিক্রেতাদের আনাগোণা দেখা যায়। এদের থেকে ফুল কেনার সঙ্গে সঙ্গে তার সুবাস নেওয়া ঠিক নয়। বরং এ ধরনের স্থানগুলোতে এদের এড়িয়ে চলাই উত্তম। বিষয়টি ফুটপাত বা ভ্রাম্যমাণ আতর বা পারফিউম বিক্রেতাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আরো পড়ুন: ভিমরুলের কামড় কতটা ভয়ংকর? সাবধানতা ও করণীয়
পথে-ঘাটে চলতে ফিরতে সর্বদা মাস্ক পরিধান করা
করোনা মহামারির সময়ের মতো সার্বক্ষণিক মাস্ক পড়ে চলা কার্যকরী একটি সুরক্ষা পদ্ধতি। পোর্টেবল এয়ার পিউরিফায়ার মাস্ক বায়ুবাহিত যেকোনো টক্সিনের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে। এই মাস্কগুলোতে থাকা ফিল্টার বাতাসকে পরিশোধিত করে সুস্থ শ্বাস-প্রশ্বাসে সহায়তা করে।
সবসময় সঙ্গে পকেট স্যানিটাইজার রাখা
একই সঙ্গে একটি পকেট স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখাটাও অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত বিপত্তির মোকাবেলা করতে পারে। কোভিড-১৯ চলাকালীন সবার মধ্যেই ঘন ঘন হাত স্যানিটাইজের অভ্যাসটি চালু হয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে স্কোপোলামিন সংক্রান্ত দুর্ঘটনা প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও এই অভ্যাসটির পুনরাবৃত্তি প্রয়োজন।
কোনো কিছু স্পর্শ করার পর হাত স্যানিটাইজ না করে অন্যান্য কাজ করা যাবে না। যাদের মধ্যে ঘন ঘন নাকে-মুখে হাত দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে তাদের জন্য এই সতর্কতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি অতি গরমের সময় অতিরিক্ত ঘাম মুছার জন্যও মুখমন্ডলে স্পর্শ করার দরকার পড়ে। এ পরিস্থিতিতে একটি পকেট স্যানিটাইজার হতে পারে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কবজ।
আরো পড়ুন: বাইপোলার ডিসঅর্ডার: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার
টাকা লেনদেনের পর হাত স্যানিটাইজ করা
দৈনন্দিন কাজে ঘন ঘন হাত বদল হওয়ার জন্য টাকা-পয়সা হতে পারে স্কোপোলামিন পরিবহনের সহজ মাধ্যম। তাই লেনদেনের পর সর্বদা হাত ভালভাবে স্যানিটাইজ করে নিতে হবে। বিশেষত জনাকীর্ণ এলাকায় এই সচেতনতা অবলম্বন জরুরি। যাদের মধ্যে জিহ্বে আঙ্গুল দিয়ে টাকা গোণা বা বইয়ের পাতা উল্টানোর প্রবণতা রয়েছে তাদের ডেভিলস ব্রেথে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সর্বাধিক। তাই যেকোনো মূল্যে ঘন ঘন মুখমন্ডল স্পর্শ করার অভ্যাস পরিত্যাগ করা অত্যাবশ্যক।
ব্যক্তিগত জিনিসপত্র অপরিচিতদের নাগালের বাইরে রাখা
কেবল অপরিচিতদের দেওয়া জিনিস গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকলেই হবে না। সেই সাথে খেয়াল রাখতে হবে নিজের জিনিসপত্রও যেন তাদের নাগালের বাইরে থাকে। নিজের কেনা খাবারের সাথে সাথে ব্যাগ, মানিব্যাগ, ও মোবাইল ফোনসহ প্রতিটি জিনিস সযত্নে রাখতে হবে। কোনোভাবেই নিজের নাগালের বাইরে রাখা যাবে না। অন্যথায় এ জাতীয় ছোট ছোট জিনিসপত্রে ক্ষতিকর পদার্থ মেশানোর জন্য কয়েক সেকেন্ডই যথেষ্ট।
বিভিন্ন জায়গা সরবরাহকৃত স্প্রে জাতীয় পণ্য ব্যবহারে সাবধানতা
বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রের আবাসিক হোটেলগুলোতে মশা নিরোধক বা এয়ার ফ্রেশনারে সরবরাহ করা হয়। বিশেষ করে মানহীন হোটেলগুলোতে থাকার ক্ষেত্রে এ জাতীয় স্প্রেগুলো ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। ট্যাক্সিতে ওঠার পর গাড়ির দুর্গন্ধ দূর করার জন্য ড্রাইভার এয়ার ফ্রেশনার বের করতে পারে। এর বদলে গাড়ির জানালা খুলে বাতাস চলাচলের পথ তৈরি করে দিতে হবে। এই অতিরিক্ত সাবধানতা ক্ষতিকর বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমাতে পারে।
আরো পড়ুন: রমজানে রোজা রাখার প্রস্তুতি: দেহ ও মনকে সুস্থ রাখতে করণীয়
অ্যাপ-ভিত্তিক পরিবহন সেবাতে অগ্রাধিকার দেওয়া
যাতায়াতে অ্যাপভিত্তিক রাইডগুলোতে আগে থেকেই ড্রাইভারের নাম, ছবি এবং গাড়ির বিশদ বৃত্তান্ত দেখে নেওয়া যায়। পরবর্তীতে সঠিক গাড়িটি যাচাইয়ের জন্য প্লেট নাম্বার মিলিয়ে নেওয়ারও সুযোগ থাকে। এছাড়া অত্যধিক গণপরিবহনের অত্যধিক ভিড়ে ক্ষতিকর স্পর্শের সম্ভাবনা এখানে নেই।
তবে অ্যাপে ড্রাইভার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য ইতিবাচক হওয়ার পরও দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। সেজন্য সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। এ জন্য গাড়িতে ওঠার আগেই পরিচিতিদের সাথে রিয়েল-টাইম লোকেশন শেয়ার করে রাখতে হবে। একা হলে ড্রাইভারের পাশের সিটে না বসে পেছনের সিটে বসতে হবে।
পরিশিষ্ট
ডেভিলস ব্রেথ বা শয়তানের নিঃশ্বাস মূলত স্কোপোলামাইন নামক একটি রাসায়নিক বস্তু। এটি প্রয়োগের মাধ্যমে মস্তিষ্ক বিভ্রম ঘটিয়ে ভুক্তভোগীর সর্বস্ব লুটে নেয় দুর্বৃত্তরা। এ ধরণের অপরাধমূলক ঘটনা থেকে নিরাপদ থাকার জন্য নিজের চারপাশের প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এর জন্য রাস্তাঘাটে চলাচলে অপরিচিতদের দেওয়া খাদ্য, পানীয়, কাগজ গ্রহণ না করা এবং ব্যক্তিগত জিনিসপত্র সযত্নে নিজ দায়িত্বে রাখা অপরিহার্য। যাতায়াতের পুরোটা সময় মাস্ক পরিধান, সঙ্গে পকেট স্যানিটাইজার রাখা জরুরি। উপরন্তু, রাইড-শেয়ার অ্যাপ ব্যবহার ও আবাসিক হোটেলে স্প্রে ব্যবহার এড়িয়ে চলা এই সমস্যা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
আরো পড়ুন: তরুণদের মধ্যে স্ট্রোকের প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে: জানুন কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
২৯৫ দিন আগে
তরুণদের মধ্যে স্ট্রোকের প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে: জানুন কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
স্ট্রোক এমন এক ভয়াবহ স্বাস্থ্য জটিলতা যেখানে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। কেবল বার্ধক্য পীড়িতদের মধ্যেই নয়, তরুণদের মধ্যেও রয়েছে স্ট্রোকের ঝুঁকি। আর এই প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান এই স্বাস্থ্য সংকট নিয়েই আজকের স্বাস্থ্য-বিষয়ক নিবন্ধ। কোন কোন বিষয়গুলো এর জন্য দায়ী, কিভাবে তা শনাক্ত করবেন, এ থেকে বাঁচার উপায়ই বা কি- চলুন তা বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
তরুণদের মাঝে স্ট্রোকের প্রবণতা বৃদ্ধির কারণ
তৈলাক্ত বা ভাজা খাবারের প্রতি আসক্তি
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহুগুণে বেড়েছে ভাজা-পোড়া খাবারের বিচিত্রতা। ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত রেস্তোরাঁ পর্যন্ত সর্বত্র রীতিমত উৎসবমুখর আয়োজনে চলে নিত্য-নতুন পরিবেশনা। আর সেগুলোতেই হামলে পড়েন তরুণরা। এদের মধ্যে যাদের একটু বেশি ভোজনপ্রীতি রয়েছে, তারা কোনোরকম বাছ-বিচারের তোয়াক্কা করেন না। ফলে দেখা দিচ্ছে স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরল- যার প্রতিটিই স্ট্রোকের ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
এই মুখরোচক খাবারগুলোতে থাকে ট্রান্স ফ্যাট, পরিশোধিত শর্করা এবং অত্যধিক সোডিয়াম। এই উপাদানগুলো ধমনীতে প্লাক তৈরি করে রক্তের প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটায়। কোনো নিয়ন্ত্রণ ব্যতীত এই ভোজ অভ্যাসে পরিণত হলে তা প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণ হয়। এর ফলে রক্তনালীগুলো সঙ্কুচিত হয় ও চরম পর্যায়ে পুরো নালীই ক্ষতিগ্রস্ত হয়; পরিণতিতে স্ট্রোক হয়।
আরো পড়ুন: রমজানে রোজা রাখার প্রস্তুতি: দেহ ও মনকে সুস্থ রাখতে করণীয়
শরীরের দীর্ঘস্থায়ী অচলাবস্থা
প্রযুক্তির ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে কমে গেছে কায়িক শ্রমের কাজ। এর বদলে জায়গা করে নিয়েছে মানসিক শ্রমযুক্ত কাজ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অতিবাহিত হচ্ছে কম্পিউটারের সামনে বসে। এখানে দীর্ঘ সময় যাবত শরীরের পেশীগুলোর ন্যূনতম নড়াচড়া হয় না।
একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়া কেন্দ্রিক জীবনব্যবস্থা বিশাল তরুণ সমাজকে ঠেলে দিয়েছে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের দিকে। ফলে সবচেয়ে কর্মক্ষম শ্রেণিটির দিনের একটা বড় সময় কেটে যাচ্ছে বসে বা শুয়ে থাকা।
এই অচলাবস্থা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যকে দুর্বল করে তোলে। শারীরিক ক্রিয়াকলাপের অভাব রক্ত সঞ্চালনের দক্ষতা হ্রাস করে, যার ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ হয় না। আর এরই কারণে শরীরের ওজন বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগের উপক্রম হয়। এগুলো সবই স্ট্রোকের দিকে পরিচালিত করে। নিষ্ক্রিয় পেশীগুলো রক্তে শর্করা এবং কোলেস্টেরলকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে রক্তের ধমনীতে ক্লট তৈরি হয়ে স্ট্রোকের ঘটনা ঘটে।
আরো পড়ুন: বাইপোলার ডিসঅর্ডার: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার
ধূমপান এবং উদ্দীপক পানীয় গ্রহণ
তামাক ব্যবহারে ধমনীকে শক্ত করে দেয়, যার ফলে বাড়ে রক্তের চাপ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয় রক্তনালী। নিকোটিন এবং কার্বন মনোক্সাইড মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমায়, যা ক্লট গঠনের অন্যতম প্রধান কারণ। উপরন্তু, উচ্চ ক্যাফেইন বা উদ্দীপক পানীয় হৃৎপিণ্ডের নিয়মিত ছন্দে ব্যাঘাত ঘটায় এবং রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। এই পদার্থগুলোর অত্যধিক সেবন স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে। এতে দীর্ঘমেয়াদে রক্তনালী ধ্বংস হয়, যা স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ।
দুশ্চিন্তা ও মানসিক অসুস্থতা
বিগত দশকে শারীরিক সমস্যাগুলোর পাশাপাশি অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে মানসিক জটিলতাগুলো। অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, হতাশা ও নিরাশার নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হওয়া জনগোষ্ঠির একটা বিশাল অংশ তরুণ সম্প্রদায়।
দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ কর্টিসলের মাত্রা বাড়িয়ে রক্তচাপ ও প্রদাহ বৃদ্ধিতে অংশ নেয়, যেগুলো স্ট্রোকের দিকে নিয়ে যায়। উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং ক্ষতিকারক পদার্থ সেবনের সঙ্গে জড়িত। উপরন্তু, রক্ত সঞ্চালনে চাপের তারতম্য ক্ষণস্থায়ী স্ট্রোকের সূত্রপাত ঘটায় যেটি ইস্কেমিক অ্যাটাক নামে পরিচিত। এর আরেক নাম মিনি-স্ট্রোক, যা সাধারণত বড় কোনও স্ট্রোকের আগে হয়ে থাকে।
আরো পড়ুন: অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়
স্ট্রোকের যে লক্ষণগুলো তরুণদের মধ্যে দেখা যায়
আকস্মিক দুর্বলতা
স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় লক্ষণগুলোর একটি হচ্ছে হঠাৎ দুর্বলতা বা অসাড়তা। এটি সাধারণত শরীরের যে কোনও একপাশ অসাড় হওয়া থেকে শুরু হয়। শরীরের আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপের নেপথ্যে থাকে মূলত মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল। সেখানে রক্ত প্রবাহ না গেলেই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় পর্যুদস্ত ব্যক্তিরা তাদের এক হাত বা পা তুলতে বেশ ভারী অনুভব করে। কারও ক্ষেত্রে তাদের মুখের একপাশ ঝুলে যায়। কোনও ক্ষেত্রে এই দুর্বলতা কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে, আবার কারও ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী হয়।
কথা বলার সময় শব্দ উচ্চারণে প্রতিবন্ধকতা
মস্তিষ্কের একটি অংশ রয়েছে যেটি কথা বলার সময় মুখের স্বাভাবিক পেশী সঞ্চালন অব্যাহত রাখতে সাহায্য করে। স্ট্রোকের ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের এই অঞ্চলটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে কথা বলার সময় সুসংগত বাক্য গঠনে অসুবিধা হয়। কিছু ব্যক্তি অ্যাফেসিয়া অনুভব করতে পারে। এটি এমন এক অবস্থা যেখানে সঠিক শব্দটি স্মরণে আসে না বা কথাগুলো অসংলগ্ন হয়। কেউ কেউ ডিসার্থ্রিয়ায় ভুগেন। এর ফলে মুখ এবং জিহ্বার পেশী দুর্বল হয়ে যায় বিধায় উচ্চারণ সমস্যা দেখা দেয় এবং শব্দগুলো অস্পষ্ট শোনায়। এই উপসর্গগুলো হঠাৎ ঘটতে পারে এবং পরবর্তীতে এর তীব্রতা ওঠানামা করতে পারে।
আরো পড়ুন: রক্তের গ্রুপ: কে কাকে রক্ত দিতে পারবে?
দৃষ্টিশক্তির ব্যাঘাত
মস্তিষ্কের ভিজ্যুয়াল প্রসেসিং এলাকাটি মানুষের দৃষ্টিশক্তি নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে রক্ত প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ফলে দৃষ্টিশক্তিতে অসঙ্গতি দেখা দেয়। আক্রান্ত ব্যক্তিরা এক বা উভয় চোখে অস্পষ্ট দেখে, কেউ কেউ সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে। সাধারণ লক্ষণের মধ্যে আরও রয়েছে ডিপ্লোপিয়া বা ডাবল ভিশন, যার ফলে ব্যক্তি যে কোনও জিনিস দুটো দেখতে পায়। এক চোখে অস্থায়ী অন্ধত্ব অ্যামাউরোসিস ফুগাক্স নামে পরিচিত। এটি আসন্ন স্ট্রোকের জন্য একটি সতর্ক সংকেত।
গুরুতর মাথাব্যথা
তীব্র মাথাব্যথা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের পূর্বাভাস হতে পারে যার কারণে হেমোরেজিক স্ট্রোকের উপক্রম হয়ে থাকে। সাধারণ মাথাব্যথার সঙ্গে এর পার্থক্য হলো এটি আকস্মিকভাবে বাড়তে থাকে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় বমি বমি ভাব, বমি; এমনকি ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। ব্যক্তি শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবেন না। কোনো কিছু না ধরে হাঁটা বা দাড়িয়ে থাকা তার জন্য বেশ কঠিন হয়ে উঠবে।
সাধারণ বোধের অবনতি এবং স্মৃতিভ্রম
মূল সমস্যাটা যখন মস্তিষ্ক কেন্দ্রিক, তখন বোধগম্যতা ও স্মৃতিশক্তির বিলোপ ঘটাটা স্বাভাবিক। এর শুরুটা হয় আকস্মিকভাবে কোনো কিছু ভুলে যাওয়া থেকে। ব্যক্তি সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কিছুর প্রতি মনোযোগ দিতে পারেন না। কি কি বিষয়ে কথা বলা হচ্ছে তার মধ্যে সামঞ্জস্যতা বিধান করা এদের জন্য কঠিন হয়ে ওঠে। কেউ কেউ পরিচিত লোকেদের পরিপূর্ণভাবে চেনার জন্য বেশ সময় নিয়ে ফেলেন। এদের অনেকেই পারিপার্শ্বিক অবস্থা বুঝে প্রাসঙ্গিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে ব্যর্থ হন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এরা হতবাক বা নির্লিপ্ত হয়ে যান।
আরো পড়ুন: মুখের দুর্গন্ধ দূর করার ঘরোয়া উপায়
কারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন
তরুণদের মধ্যে যারা নিয়মিত ধূমপান ও উদ্দীপক পানীয় গ্রহণ করেন এবং দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপে রয়েছেন তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি সর্বাধিক। এছাড়াও অতিরিক্ত স্থূলতা, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস এবং দীর্ঘ সময় বসে থাকা সামগ্রিকভাবে স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ায়।
উপরন্তু, পরিবারে পূর্বে কারও উচ্চ রক্তচাপ বা রক্ত জমাট বাঁধার ব্যাধি থাকলে তারাও এই ঝুঁকির আওতায় পড়েন।
তরুণদের স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়
সুষম খাদ্যাভ্যাস গঠন
নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে একটি পুষ্টিকর খাদ্য তালিকা তৈরি করা উচিত। বিভিন্ন ধরনের বীজ জাতীয় খাবার, ফলমূল, শাকসবজি এবং চর্বিহীন প্রোটিন কোলেস্টেরল গঠন প্রতিরোধ করে ধমনী সুদৃঢ় রাখতে সাহায্য করে। মাছ এবং বাদামে পাওয়া ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদযন্ত্রে ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে। অপরদিকে, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। সম্মিলিতভাবে এই খাবারগুলো স্ট্রোকের বিরুদ্ধে শরীরকে রীতিমত দূর্গ বানিয়ে তুলতে পারে।
আরো পড়ুন: থ্যালাসেমিয়া রোগের কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
নিয়মিত শরীর চর্চা
সুষম খাবার গ্রহণ এবং উপযুক্ত শরীর চর্চা উভয়েরই যুগপৎভাবে চলতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে রক্তচাপ হ্রাস করে এবং স্থূলতা প্রতিরোধ করে। দ্রুত হাঁটা, জগিং এবং সাইকেল চালানোর মতো অ্যারোবিক ব্যায়াম হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। একই সঙ্গে ধমনীর স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি পায়, যা ধমনীকে শক্ত হয়ে যাওয়া থেকে দূরে রাখে। শরীর চর্চা বিপাকীয় স্বাস্থ্যকে সমুন্নত রেখে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও শারীরিক অনুশীলন প্রদাহ কমায়, যা রক্তে ক্লট তৈরির প্রধান প্রভাবক।
ক্ষতিকর অভ্যাস এড়িয়ে চলা
স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্য তামাক, অ্যালকোহল ও অন্যান্য মাদক থেকে দূরে থাকা অত্যাবশ্যক। এমনকি সাধারণ ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত সেবনও রক্তনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
দীর্ঘদিনের অভ্যাস বদলানোর জন্য বিশেষজ্ঞ পরামর্শদাতার সরণাপন্ন হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবার ও আশেপাশে থাকা আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি ব্যক্তিরও পরম সদিচ্ছা ও প্রচেষ্টা থাকা জরুরি। তাৎক্ষণিক ভাবে পরিত্যাগের সুযোগ না থাকলেও প্রতিদিন একটু একটু করে চেষ্টা করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। অন্যান্য ইতিবাচক কায়িক শ্রমযুক্ত কাজের মধ্য দিয়ে মনকে সার্বক্ষণিক ব্যতিব্যস্ত করে রাখতে হবে। একই সঙ্গে অবসরগুলো প্রিয় জনদের আন্তরিক আড্ডায় ভরিয়ে তুলতে হবে।
আরো পড়ুন: সার্কেডিয়ান রিদম বা দেহ ঘড়ি নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
স্বাস্থ্যকর ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলা
স্ট্রোকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার জন্য স্বাস্থ্যকর ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। রাত জেগে কাজ করে দিনে ঘুমানো মোটেই উৎপাদনশীলতার সহায়ক নয়। বরং তা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য বিনষ্টের পটভূমি তৈরি করে। রাতে ঘুমানোর ক্ষেত্রেও দেরি করা অনুচিত। কারণ এর ধারাবাহিকতায় এক সময় পুরো রাত অনিদ্রায় কেটে যায়। এর জন্য বিশেষ করে ডিজিটাল ডিভাইসগুলোতে স্ক্রিন টাইম কমিয়ে আনা আবশ্যক। কেননা স্মার্টফোনে অতিবাহিত সময়ের বিস্তৃতি গভীর রাত ছাড়িয়ে যায়। এই কারণে স্মার্টফোন ব্যবহারকারিদের সিংহভাগ তরুণ সমাজকে প্রায় অনিদ্রায় ভুগতে দেখা যায়।
এই সমস্যার নিরসণকল্পে যত দ্রুত সম্ভব ঘুমিয়ে পড়ে ভোরে সূর্যের আলো ফোটার আগেই উঠে যাওয়া উত্তম। এটি মুক্ত বাতাসে শারীরিক অনুশীলনের জন্য শ্রেষ্ঠ সময়। ঘুমাতে যাওয়া এবং জেগে ওঠার সময়টিও প্রতিটি একই ভাবে অনুসরণ করতে হবে। ঘুমের ভিন্ন রুটিন মন-মেজাজের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা পরিণতিতে স্বাস্থ্যহানির অবতারণা ঘটায়।
ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটানো
হৃদযন্ত্রের স্বাভাবিক ফাংশনের জন্য খাওয়া, ঘুম, ও ব্যায়ামের পাশাপাশি মানসিক চাপমুক্তিও দরকারি। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ও বদমেজাজ সম্পন্ন ব্যক্তিদের রক্তচাপ বৃদ্ধির আশঙ্কা বেশি থাকে। এর বিপরীতে ধ্যান, গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম এবং নিয়মিত শরীর চর্চা মানসিক ভারসাম্যের ক্ষেত্র তৈরি করে।
আরো পড়ুন: অটিজম কী? অটিজম সচেতনতা ও সহমর্মিতা কেন জরুরি?
এর সঙ্গে মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে যুক্ত হতে পারে যে কোনও কাজ-কর্মে ইতিবাচকতা এবং স্বল্পতুষ্টি। এই দৃষ্টিভঙ্গি উদ্বেগ, বিষণ্নতা বা মানসিক আঘাতকে লাঘব করার শক্তি দেয়। নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনাগুলোর প্রতিক্রিয়া কিভাবে করা হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে পরিচালিত হয় একজন ব্যক্তির জীবন-ব্যবস্থা। ভালো-মন্দ নির্বিশেষে প্রতিটি ঘটনায় ইতিবাচক ও গঠনমূলক সাড়া প্রদানের মাধ্যমে সুস্থ মনের বিকাশ ঘটানো সম্ভব।
শেষাংশ
তরুণদের মধ্যে স্ট্রোকের ক্রমবর্ধমান ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন এবং মানসিক অসুস্থতা। কায়িক শ্রম না করা ও ক্ষতিকর খাদ্যাভ্যাস এই প্রবণতাকে ত্বরান্বিত করে। এর ফলে আকস্মিক দূর্বলতা, উচ্চারণগত অস্বাভাবিকতা, দৃষ্টি, বোধ ও স্মৃতি শক্তির অবনতির মতো উপসর্গ দেখা দেয়। রুটিন মাফিক সুষম আহার, ঘুম ও শরীর চর্চার মাধ্যমে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারণ পদ্ধতি বাঁচাতে পারে এই মরণঘাতী স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে। পাশাপাশি মনের সুস্থতার লক্ষ্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটানোও জরুরি। এই পদক্ষেপগুলোর দৌলতে দীর্ঘমেয়াদে স্ট্রোকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব।
আরো পড়ুন: মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
২৯৯ দিন আগে