জীবনধারা
কবি নজরুলের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী বুধবার
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী বুধবার উদযাপন করা হবে।
রাজনৈতিক ও সামাজিক ন্যায় বিচারের জন্য সংগ্রাম করে বিদ্রোহী কবির খেতাব পাওয়া কাজী নজরুল ১৮৯৯ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
নজরুল তার জ্বালাময়ী কবিতার মাধ্যমে মানুষকে ঔপনিবেশিক শাসনের অন্যায় ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করবে।
দিবসটি উপলক্ষে নজরুল ইন্সটিটিউট ও শিল্পকলা একাডেমি ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
দিবসটি উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।
আরও পড়ুন: ডিআরইউ’র ‘কবি কাজী নজরুল ইসলাম লাইব্রেরি’ উদ্বোধন
নজরুল ইনস্টিটিউটের তথ্য মতে, কাজী নজরুল বাকশক্তি হারানোর আগে ২১ বছরের কর্মজীবনে দুই হাজার ৬০০টি গান, ৬০০টি কবিতা, তিনটি উপন্যাস ও ৪৩টি প্রবন্ধ লেখেন।
পিতার মৃত্যুর পর পরিবারকে সহযোগিতা করতে কাজী নজরুল তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে চাকরি নেন এবং মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবেও কাজ করেন। ৯ বছর বয়সে চুরুলিয়াভিত্তিক একটি পেশাদার ‘লেটো’ দলে যোগ দেয়ার জন্য তাকে স্কুল ছেড়ে দিতে হয়েছিল।
দলের কাজ করার সময় তিনি বাংলা ও সংস্কৃত সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত হন। এক বছর পরে তিনি স্কুলে ফিরে আসেন এবং মাথারুন ইংলিশ স্কুলে ভর্তি হন। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে আবারও ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া ছেড়ে দেন।
কিছুদিন পর পুলিশ কর্মকর্তা কাজী রফিজুল্লাহ তাকে ময়মনসিংহের ত্রিশালে তার বাড়িতে নিয়ে যান এবং দরিরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করেন।
১৯১৭ সালে সৈনিক হিসাবে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন কাজী নজরুল। এর কয়েক বছরের মধ্যে তিনি সাহিত্যিক জীবন শুরু করেন। ১৯২১ সালে তাঁর কবিতা ‘বিদ্রোহী’ প্রকাশিত হয়। এক বছর পরে তিনি ‘ধূমকেতু’ নামে একটি পাক্ষিক পত্রিকা শুরু করেন।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণের কারণে তিনি বেশ কয়েকবার ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের হাতে কারাবন্দি হন। কারাগারে থাকাকালীন কাজী নজরুল ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’ রচনা করেন এবং তার সৃষ্টি পরবর্তীতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে উৎসাহিত করে।
তিনি ছোটগল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ লিখেছেন। তবে তাঁর গান ও কবিতা সবচেয়ে প্রশংসিত সাহিত্য সৃষ্টি। তিনি বাংলা গজল সুরকে জনপ্রিয় করেছিলেন এবং লেখায় আরবি ও ফারসি শব্দের উদার ব্যবহারের জন্য বিখ্যাত তিনি।
কাজী নজরুল ‘নজরুল গীতি’ নামে সংগীতে একটি নতুন ধারা তৈরি করেছেন। এটি চার হাজার গানের সংকলন যা তিনি লেখেন এবং সঙ্গীত তৈরি করেন।
আরও পড়ুন: শতকণ্ঠে কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা
১৯৪২ সালে কাজী নজরুল দুরারোগ্য ব্যাধির কারণে তার কণ্ঠস্বর ও স্মৃতিশক্তি হারাতে শুরু করেন। পরে ভিয়েনার একটি মেডিকেল টিম তার অসুস্থতাকে পিকস ডিজিজ হিসেবে চিহ্নিত করে।
তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে কবির পরিবার বাংলাদেশে ভ্রমণ করেন এবং ১৯৭২ সালে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বিশিষ্ট অবদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ১৯৭৪ সালে সম্মানসূচক পোস্ট-ডক্টরাল ডিগ্রি প্রদান করে। তিনি ১৯৭৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
৭৭ বছর বয়সে বাংলা ১৩৮৩ সালের ১২ ভাদ্র (১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট) ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কবি। তাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে দাফন করা হয়।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবির বর্ণাঢ্য জীবন এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তাঁর অবদান তুলে ধরে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
‘মাত্রাতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের ফলে ৪৫ শতাংশ গ্যাস্ট্রিক আলসার হয়’
মাত্রাতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের ফলে ৪৫ শতাংশ গ্যাস্ট্রিক আলসার হয় বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, প্রোটন-পাম্প ইনহিবিটর (পিপিআই) বা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ মাত্রাতিরিক্ত খাবার ফলে ৪৫ শতাংশ গ্যাস্ট্রিক আলসার হয়। এর ফলে মাইক্রো নিউক্রিয়েন্ট যে গুলো লস হচ্ছে, যার ফলে দেহের ফ্রাকচার হয়। এমনকি এই পিপিআই ব্যবহারের ফলে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, বিটামিন -১২ ও আয়রন ডিফিসিয়েন্সি হচ্ছে।
রবিবার সকাল সাড়ে ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লকের মিলনায়তনে ‘ওভারইউজ অব পিপিআই: এ রিভিউ অব এমার্জিং কনসার্ন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তাই বলে এসব রোগের ভয়ে হঠাৎ করে পিপিআই বন্ধ করা যাবে না। পিপিআই ক্রমে দুই সপ্তাহ, এক সপ্তাহ করে কমিয়ে দিতে হয়ে। দিনে একটি, দুদিন পরে আরেকটি করে ওষুধ দেয়া যেতে পারে। আমরা যদি ডিসিপ্লিনড ভাবে চলাফেরা করি তাতেও অ্যাসিডিটি হবে না। অ্যাসিডিটি না হলে ওষুধ খাওয়া লাগবে না। ওষুধ খাওয়া হলে আরেকটি রোগ তৈরী করা। একটি রোগের জন্য ওষুধ খেলে আরেকটি রোগের সৃষ্টি হতে পারে। কারণ প্রোটন-পাম্প ইনহিবিটর হচ্ছে এমন ধরনের ওষুধ যার প্রধান কাজ হলো পাকস্থলীর প্যারাইটাল কোষ থেকে এসিড নিঃসরণ কমানো।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, আমরা দেখছি বাংলাদেশের মানুষ পণ্যের মত রাস্তাঘাটে ওষুধও কিনে থাকে। অনেকে আবার ফার্মাসিতে গিয়ে দামী ওষুধ কিনে থাকেন। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের ফলে আমরা যে অবস্থায় রয়েছি, তাতে দেশে ২০৫০ সালের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক এর অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে করোনা ভাইরাসের চেয়ে বেশি লোক মারা যাবে। আমাদের অনেকে যখন-তখন স্টোরয়েড কিনে খাই, এগুলো খেয়ে মোটাতাজা হই; কিন্তু এর ভবিষ্যৎ খুব খারাপ।
এসময় বিএসএমএমইউ উপাচার্য করোনাভাইরাসের প্রকোপের সময়ের মত এখনও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি মাংকিপক্স নিয়ে সকলকে সতর্ক থাকতেও বলেন।
আরও পড়ুন: ‘মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্লান্টের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাজীবুল আলম বলেন, গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের বড় অংশ বিক্রি হচ্ছে ব্যবস্থাপনাপত্র ছাড়া। রোগীর একটু পাতলা পায়খানা, মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথাসহ নানা জটিলতা দেখা দিলে ফার্মেসির দোকানীরা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিচ্ছেন। এই ক্ষেত্রেই একটু পানি পান করালে বা হালকা কিছু ওষুধ ব্যবহার করলে এই সমস্যা সমাধান করা যেত। দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবস্থাপনাপত্র ও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের কারণে শরীরে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিচ্ছে। গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের কারণে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার ও স্মৃতিভ্রম মতো ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম কমে আসতে পারে।
তিনি বলেন, রোগীর প্রয়োজন পড়লে অবশ্যই এ ধরনের ওষুধ ব্যবস্থাপনা লিখতে হবে কিন্তু অপ্রয়োজনীয় অতিমাত্রায় এর ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। যত্রতত্র এবং অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ব্যবহার কমাতে নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান এই বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রি বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইউএস ও ইউকে যখন ইচ্ছা তখন ওষুধ বিক্রি এবং কেনা সম্ভব না। বছরে তিনবার গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ কিনতে পারবেন। এর বেশি কিনতে পারবেন না আপনি। কারণে ওখানে সবকিছুর রেকর্ড থাকে, আর এর বিল পে করে কোন বেসরকারি বীমা প্রতিষ্ঠান। যদি আমাদের দেশে স্বাস্থ্যবীমা থাকতো, তবে ওষুধ বিক্রি ও কেনা এবং তদারকি করা সম্ভব হতো; তাহলে এই অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রি ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্যাস্ট্রোএন্টারলোজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. রাজিবুল আলম, ফার্মাকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শরবিন্দু কান্তি সিনহা।
নিউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ সবুজের সঞ্চালনায় প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ- উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররাফ হোসেন, উপ উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
আরও পড়ুন: ইউনাইটেড হাসপাতালে বিশ্ব কিডনি দিবস পালিত
কান পেতে রই: দেশের প্রথম মানসিক সহায়তা হেলপলাইন
রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতা
রাতের হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর মত পুরনো ভীতিকর পরিস্থিতিগুলো প্রতিনিয়ত দুঃসংবাদের পাল্লাকে ভারী করছে। রাতের অন্ধকারে নির্জন হাইওয়েতে গাড়ি ডাকাতির ঘটনাগুলো নতুন নয়। নানা ভনিতায় গাড়ি থামিয়ে আরোহীদের সর্বস্ব কেড়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। এমনকি কোন কোনো ক্ষেত্রে দীর্ঘ দূরত্বের এই যাত্রাগুলো ক্রমশ এগিয়ে যায় প্রাণহানীর দিকে। অভিজ্ঞ ও দক্ষ গাড়ি চালকেরাও এই নির্মম শিকার থেকে রেহাই পান না। তাই যে কোন দূরত্ব অতিক্রমের ক্ষেত্রে সন্ধ্যার পর অথবা গভীর রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় সতর্কতার বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করা আবশ্যক। এ অবস্থায় করণীয়সমূহ নিয়েই আজকের এই সতর্কতামুলক ফিচার।
রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় করণীয়সমূহ
গাড়ি চালানোর সময় বিভ্রান্ত না হওয়া
আলোর স্বল্পতার কারণে রাতে গাড়ি চালানোর সময় বিভ্রান্ত হয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক। এগুলো থেকে যতটুকু সম্ভব নিজেকে দূরে রাখা উচিত। তবে কিছু ঐচ্ছিক বিষয় আছে, যেগুলো একজন চালক হরহামেশাই করে থাকেন। যেমন- গাড়ি চালানোর সময় ফোনে কথা বলা, ম্যাসেজ পাঠানো, রেডিও চ্যানেল ঘুরানো, এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও ব্যবহার করতে দেখা যায়। দীর্ঘ দূরত্বে ভ্রমণের সময় গাড়ি দ্রুত গতিতে থাকার সময় ফেসবুকে ছবি পোস্ট, চ্যাট করা রীতিমত ভীতিজনক। এই অবস্থায় অকস্মাৎ ঘটে যেতে পারে ডাকাতিগুলো। ইতোমধ্যে অসাবধান থাকা গাড়ি চালকের তখন সম্বিত ফিরে পাওয়া নিয়েই বিপত্তিতে পড়তে হয়।
আরও পড়ুন: গরমকালে কম খরচে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন?
বর্তমানে সামনের রাস্তা থেকে চোখ ফিরিয়ে অনেককেই গুগল ম্যাপ চালাতে দেখা যায়। এখানে ছোট্ট একটা গুরুত্ব নিয়ে ভাবতে গিয়ে ঝুঁকিতে পড়ে যায় পুরো জীবনটাই। কারণ গাড়ি চালানোর সময় চোখ সব সময় সামনের রাস্তার দিকে নিবদ্ধ রাখা জরুরি। এসময় এমনকি কোন কিছু খাওয়া বা পান করাও উচিত নয়।
হাইওয়েতে গাড়ি ডাকাতির জন্য গাড়ির দিকে কোন কিছু ছুঁড়ে মেরে গাড়ি থামানোর পায়তাড়া করা হয়ে থাকে। তাই উইন্ডশিল্ডে কিছু পড়লেই রেইন ওয়াইপার চালিয়ে দেয়া যাবে না। এমনকি গ্লাস ভেঙে দিলেও না দাড়িয়ে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়তে হবে।
দীর্ঘ দূরত্বের জন্য গাড়িতে যথেষ্ট জ্বালানি রাখা
অনেক সময় ধরে গাড়ি চালানোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি থাকা আবশ্যক। হাইওয়েতে নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর গ্যাস স্টেশন থাকলেও বেশী পরিমাণে গ্যাস ও তেলে পরিপূর্ণ করে গাড়ি নিয়ে রওনা হওয়া উচিত। অর্থাৎ ভ্রমণের পূর্বে গাড়িতে বসে স্টার্ট দেয়ার আগে জ্বালানির পরিমাণটা ভালো করে চেক করে নিতে হবে। তাছাড়া অনেক দূরের পথে অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক কিছুই ঘটতে পারে। তাই গাড়ির জ্বালানির মাত্রা এক তৃতীয়াংশের নীচে চলে যাওয়া মাত্রই গ্যাস স্টেশনের খোঁজ করা উচিত।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
গাড়ি চালানোর সময় সব দরজা-জানালা লক রাখা
এই কাজটি গাড়ির বাইরে থেকে আগত আক্রমণ থেকে প্রাথমিকভাবে রক্ষা করতে পারে। আকস্মিকতা কাটিয়ে কিছু সময় চিন্তা-ভাবনার জন্যও যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে দরজা-জানালা সব লক করা থাকলে। কিন্তু তা না হলে প্রথমেই আত্মরক্ষার সকল পন্থার অবসান ঘটবে। অবশ্য যে কোন সশস্ত্র আক্রমণে আত্মসমর্পণই শ্রেয়।
কোন রকম তর্ক, মারামারি ছাড়াই দাবি করা মূল্যবান জিনিসপত্র দেয়া হলে গুরুতর আহত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। দুর্বৃত্তরা গাড়িতে ঢুকতে না পারলে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের নির্দেশিত পথে গাড়ি চালাতে বাধ্য করতে পারবে না। পাশাপাশি দ্রুত পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ারও সুযোগ থাকে। অতঃপর জনবহুল জায়গায় এসে স্থানীয়দের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে পুলিশকে ফোন করা যেতে পারে।
মূল্যবান জিনিসপত্র দৃষ্টির বাইরে রাখা
দীর্ঘ ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রায়ই গাড়িতে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিস বহন করা হয়ে থাকে। টাকা, ডেবিট অথবা ক্রেডিট কার্ড, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ইত্যাদি জিনিসপত্র চোখের আড়ালে রাখা উচিত। বিশেষ করে ড্রাইভিং ও প্যাসেঞ্জার সিট এবং গাড়ির ড্যাশবোর্ড এড়িয়ে চলা দরকার। এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যাবার সময় রওনা হওয়ার মুহুর্তেই মূল্যবান জিনিসগুলোর একটা ব্যবস্থা করে নেয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে অর্থ খরচের জন্য যতটা সম্ভব ডিজিটাল মাধ্যমগুলো ব্যবহারের চেষ্টা করতে হবে।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে হজের জন্য নিবন্ধন করবেন যেভাবে
অন্যকে সাহায্যের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা
গভীর রাতে ভ্রমণের সময় রাস্তার এক পাশে কোন গাড়ি পার্ক করা বা কাউকে হাত ইশারায় সাহায্য প্রার্থনা করতে দেখা যেতে পারে। এই ঘটনাগুলো যে কাউকে গাড়ি থামাতে বাধ্য করবে। তাছাড়া এমতাবস্থায় সে যদি সত্যিই বিপদে পড়ে থাকে তাহলে তাকে সাহায্য করা কর্তব্য। কিন্তু এই ভনিতায় অনেকে গাড়ি ডাকাতিও করে থাকে। শুধু তাই নয়; ব্যাপারটি সাহায্যপ্রার্থী ও গাড়ি চালক দুজনের ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে।
অসহায় হয়ে লিফ্ট চাওয়া কোন ব্যক্তির জন্য সাহায্যার্থে এগিয়ে আসা কোন গাড়ি যেমন বিপজ্জনক, ঠিক তেমনি একজন গাড়ি চালকের জন্যও সেই লিফ্ট চাওয়া ব্যক্তিটি বিপদের কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। এই বিষয়ে কেউই নিশ্চয়তা দিতে পারেন না। এক্ষেত্রে যদি সাহায্য করতে হয় তবে গাড়ি না থামিয়ে জনবহুল জায়গায় গিয়ে স্থানীয়দের ব্যাপারটি জানানো যেতে পারে। তাছাড়া পুলিশেও কল করে সাহায্যের জন্য আবেদন করা যেতে পারে। রাস্তার মাঝে কাউকে অদ্ভূত ভঙ্গিমায় শুয়ে থাকতে দেখলেও মারা গেছে ভেবে তার পাশে গাড়ি না থামানোই উত্তম।
আরও পড়ুন: ঢাকার কাছেই প্রকৃতির মাঝে ক্যাম্পিং সাইট
ঝুঁকিপূর্ণ স্থান সম্পর্কে আগে থেকেই সতর্ক থাকা
তেল বা গ্যাস নেবার সময় একটু ভীড় থাকা স্টেশনগুলো নির্বাচন করতে হবে। দেরি হলেও যতটা সম্ভব একাকী এবং বিচ্ছিন্ন পথগুলো এড়িয়ে যাওয়া উচিত। অনেক সময় কম সময়ে ভ্রমণের জন্য অনেকে বিকল্প শর্টকাট পথ বাছাই করেন। এই ধরনের পথ ডাকাতরাও টার্গেট করে তাদের স্বার্থসিদ্ধি করার জন্য।
কারণ এই পথগুলোতে মানুষের আনাগোনা অপেক্ষাকৃত কম থাকে। এই পথগুলো বাছাই করা মানেই নিজেকে ভয়াবহ বিপদের মুখে ঠেলে দেয়া, কেননা এখানে চিৎকার করলেও আশেপাশে অনেক দূর পর্যন্ত সাহায্যের জন্য কাউকে পাওয়া যাবে না। সবচেয়ে নিরাপদ হলো দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালনার ক্ষেত্রে সঙ্গে কাউকে নিয়ে নেয়া। একসাথে গ্রুপে ভ্রমণ করলে বিপদের আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটি কাটানোর জন্য ঢাকার কাছাকাছি সেরা কয়েকটি রিসোর্ট
অপেক্ষাকৃত বেশি আলোকিত স্থানে থাকা
হাইওয়েতে যানজট ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের যানবাহনগুলোকে অনেকটা এক লাইনে থেকে চলতে দেখা যায়। এ সময় পেছনের গাড়ির হেডলাইটের আলো সামনের গাড়ির ওপর পড়ে। বড় বাস-ট্রাক হলে এই আলোর পরিমাণটা আরো বেড়ে যায়। এভাবে অন্যান্য গাড়ির ভীড়ের মধ্যে চলমান থেকে গাড়ি চালানো যেতে পারে।
এছাড়া দু’পাশ দিয়ে সারিবদ্ধ ল্যাম্প পোস্টগুলোও বেশ আলো দেয়। কিন্তু সব জায়গায় এই সুবিধা পাওয়া যায় না। আর স্বাভাবিক ভাবেই অনেক ল্যাম্প পোস্ট নষ্ট হয়ে আলো ছাড়াই দাড়িয়ে থাকে। তাই গাড়ির ভেতর তীক্ষ্ণ আলোর টর্চ লাইট রাখা যেতে পারে। রাতের হাইওয়েতে গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে রাখা ভালো। কিন্তু অনেক সময় ধরে জ্বলে থাকার কারণে হেডলাইট নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তখন যে কোন সম্ভাব্য আক্রমণের ক্ষেত্রে সেই টর্চ লাইট জ্বালিয়ে আশেপাশের গাড়ি বা মানুষদের সংকেত দেয়া যাবে।
আরও পড়ুন: হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান ও খরচ
ভীড়ের মাঝে থাকা
কয়েকটি গাড়ির সঙ্গে এক লাইনে থাকলে আলোর পাশাপাশি সঙ্গও পাওয়া যাবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই গাড়ির হাইওয়ে গতি ঠিক রাখতে হবে। গতি কম রাখলে অসাবধানতাবশত পেছনের গাড়িটি ধাক্কা মেরে দিতে পারে। আবার খুব বেশি গতি সামনের গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগিয়ে দিতে পারে। হঠাৎ
যদি মনে হয় কোন বাইক বা গাড়ি অনুসরণ করছে, তখন তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে। প্রয়োজনে একটি বড় হোটেল বা জনবহুল গ্যাস স্টেশনে আশ্রয় নেয়া যেতে পারে।
গাড়িতে হুইসেল রাখা
দীর্ঘ ভ্রমণে মাঝ রাস্তায় গাড়ির হর্ন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তখন দূরের বা আশেপাশের মানুষ ও গাড়িগুলোকে সংকেত দেয়ার জন্য এই হুইসেল কাজে লাগানো যাবে।
আরও পড়ুন: কলকাতা ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার উপায় ও খরচ
গাড়িতে অ্যারোসল বা ইন্সেক্ট কিলার রাখা
আক্রমণকারিকে শারীরিক ভাবে ক্ষতি করার জন্য কাছাকাছি আসার পথে যতগুলো বাধা তৈরি করা যায় ততই ভালো। এর জন্য গাড়ির দরজা-জানালা লক রাখা, গাড়িতে টর্চ লাইট ও হুইসেল রাখার পাশাপাশি ছোট অ্যারোসল কিংবা ইন্সেক্ট কিলার রাখা যেতে পারে। সব বাধাগুলো উতড়ে একদম কাছে চলে এলে আক্রমণকারির চোখে স্প্রে করে দেয়া যেতে পারে। চরম মুহুর্তে এগুলোই বড় হাতিয়ার হয়ে দাড়াতে পারে। তাছাড়া এতে বেশ কিছুটা সময়ও পাওয়া যাবে, যে সময়ে আশেপাশের সাহায্যকারিরা ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির কাছে দ্রুত এগিয়ে আসতে পারবে।
পরিশিষ্ট
রাতে হাইওয়েতে গাড়ির চালানোর ক্ষেত্রে সাবধানতার অর্থ হলো যে কোন পরিস্থিতির জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখা। দুর্ঘটনার আকস্মিকতায় অনেকেরই সম্বিত ফিরে পেতে বা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়। এই সাবধানতাগুলো যাত্রা পথে শরীর ও মন দুটোকে সদা সতর্ক থাকার দিকে ধাবিত করবে। সব ধরনের সতর্কতা নেয়ার পরেও অনর্থ ঘটার আশঙ্কা থেকেই যায়। আর খুব অভিজ্ঞ লোকরাও এই আশঙ্কার বাইরে নন। এক্ষেত্রে সব রকম প্রস্তুতির নেয়ার পাশাপাশি মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করা উচিত। আশা করা যায়, কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিত সৃষ্টি হওয়া ছাড়াই দীর্ঘ যাত্রা শুভ হবে।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের পূর্ব প্রস্তুতি এবং দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু সতর্কতা
বাংলাদেশের বাহারি আম এবং তাদের উৎপাদনকারী অঞ্চল
জাতীয় ফল না হলেও জনপ্রিয়তার দিক থেকে বাংলাদেশের বাহারি আমগুলো অনন্য। গ্রীষ্মকালীন এই বৈচিত্র্যপূর্ণ ফলগুলো শরীরের শক্তির যোগান দিয়ে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পুষ্টিগুণের পাশাপাশি পেটপূর্তিরও সহায়ক এই সুমিষ্ট ও রসাল ফলটি। মৌসুমী ফল হিসেবে গরমের দাবদাহে বিভিন্ন জাতের আমগুলো যেন শান্তির পরশ নিয়ে আসে। সারা বিশ্বে সর্বাধিক পছন্দনীয় ফলের মধ্যে সবার উপরে থাকায় আমকে ফলের রাজা বলা হয়। দক্ষিণ এশিয়ার জলবায়ু আমের ফলনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হওয়ায় বাংলাদেশের ফল বলতে সবার আগে আমের কথাই উঠে আসে। আজকের ফিচারটি বাংলাদেশে উৎপাদিত কয়েকটি সেরা জাতের আম নিয়ে।
বাংলাদেশের ১০টি জনপ্রিয় আমের জাত
ফজলি
উত্তরবঙ্গ মানেই ফজলি আমের স্বর্গ। সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে ফজলি চাষের জন্য রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সুখ্যাতি আছে সারা দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে। ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে একবার মালদহের কালেক্টর মি. র্যাভেন যাত্রা পথে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য এক গ্রাম্য বাড়িতে আশ্রয় নেন। সে বাড়ির আঙিনায় ছিলো মস্ত এক আমগাছ। সেখানকার গৃহকর্ত্রী ফজলু বিবি তাকে আম খেতে দেন। এই আম খেয়ে মজা পেয়ে র্যাভেন সাহেব ইংরেজিতে তার কাছে ফলটির নাম জানতে চান। কিন্তু মহিলা তার কথার কিছুই বুঝতে না পেরে নিজের নাম বলে দেন। কালেক্টর সাহেবও মনে করে নেন যে ফলটির নাম ফজলি। আর সেই থেকেই আমের নাম রটে যায় ফজলি।
পড়ুন: বাম্পার ফলনের আশা সোনারগাঁও লিচু চাষিদের
ফজলি আম বেশ লম্বা ও ঈষৎ চ্যাপ্টা হওয়ায় আঁটিও একই গড়নের হয়। গড়ে এর ওজন ৬৫৪.৪ গ্রাম হয়ে থাকে। আম পাকলে এর পাতলা খোসা হলুদাভ বর্ণ ধারণ করে। শাঁসও একই রঙের তবে আঁশবিহীন। ৫ থেকে ৭ই জুলাই থেকে ১৫ আগষ্ট পর্যন্ত ফজলি আম পাকার সময়।
ল্যাংড়া
আঠারো শতকে ভারতের বিহার রাজ্যের দ্বারভাঙায় এক খোড়া ফকিরের মাধ্যমে শুরু হয় এই আমের চাষ। কিন্তু ফকিরের নামটা আমের সাথে না জুড়লেও, তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতাটি এখনো মিশে আছে এই আমের সাথে। ল্যাংড়া আমের আরেক নাম বারানসী। আম পরিপক্ক হওয়ার সাথে সাথে খানিকটা হলদে বর্ণ ধারণ করে।
পাঁকা ল্যাংড়া আম পাওয়ার সময় জুলাই মাস। ছোট ছোট টুকরো করে খাওয়ার ক্ষেত্রে এই আমের কোন জুড়ি নেই। উত্তরবঙ্গের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর ও নওগা ছাড়াও সাতক্ষীরাতেও ল্যাংড়া ভালো জাতের ল্যাংড়া আম পাওয়া যায়।
পড়ুন: গোল্ডেন মিল্কের জাদুকরি উপকারিতা
ক্ষীরশাপাতি বা হিমসাগর
রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সাতক্ষীরার আমগুলোর মধ্যে এই বিশ্ব জোড়া প্রসিদ্ধ আমটি মিষ্টি স্বাদ ও সুগন্ধ যুক্ত। হিমসাগর আমের বহুল জনপ্রিয়তার কারণে একে বলা হয় আমের রাজা। আমের ভিতরে অংশ আঁশ বিহীন এবং হলুদ ও কমলা বর্ণের। ওজনের দিক থেকে ২৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫০ গ্রাম হয়ে থাকে। আমটির জনপ্রিয়তার পেছনে মুল কারণ হলো এর প্রায় ৭৭ শতাংশই আম আর বাকি মাত্র ২৩ ভাগ আঁটি। সারা জুন মাস ধরেই গাছে পাঁকা হিমসাগরের মেলা বসে।
গোপালভোগ
গোপালভোগ বা আসবি নামের এই আমটির ফলন হয় মে মাসের শেষের দিকে। শুরুতে আমের মুকুলে ভরে উঠে, আর বৃষ্টির মধ্যে পরিপক্কতা পেতে শুরু করে। প্রথমে যখন কাঁচা থাকে তখন সবুজ এবং পাকা হয়ে গেলে হলুদ লালচে হয়ে আসে। দেশের প্রায় সব জেলাতে পাওয়া গেলেও গোপালভোগ খুব স্বল্প সময়ের জন্য বাজারে আসে। গোলাকার এই আমের ওজন সর্বনিম্ন ২০০ থেকে প্রায় ৫০০ গ্রামের হয়। মোটা খোসা পাতলা আঁটির এই আমটির স্বাদ ও গন্ধ বেশ মিষ্টি।
পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
আম্রপালি
এটি মূলত দুটি ধরনের আম- দশেরী ও নিলমের একটি হাইব্রিড নাবি জাতের আম। অর্থাৎ আমের মৌসুমের শেষব্দি পর্যন্ত এটি পাওয়া যায়। ১৯৭১ সালে ভারতীয় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ড. পিযুষ কান্তি মজুমদার পরীক্ষাগারে তৈরি করেন আম্রপালি। আম্রপালির পরিপক্কতার সময়কাল ২৮ জুন থেকে ২৫ জুলাই। বান্দরবানের আম্রপালিগুলো দেশের অন্যান্য জায়গার আম্রপালি অপেক্ষা কমপক্ষে ১৫ দিন পূর্বে পরিপক্ব হয়। ছোট গড়নের একই গাছে প্রতিবছর ফলন হয় কমলা-লাল রঙের আম্রপালির।
লক্ষণভোগ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রসিদ্ধ এই আমটির আরেক নাম লখনা। লখনার বিশেষত্ব হলো গোপালভোগ বা ল্যাংড়া আমের মত এর মিষ্টতা তেমন বেশি না। তাই ডায়াবেটিকস রোগীরা এই আমটির স্বাদ আস্বাদন করতে পারেন। এই জন্য লক্ষণভোগ ডায়াবেটিক্স আমও নামের বেশ পরিচিত।
পড়ুন: আগাম আম পেড়ে বিপাকে সাতক্ষীরার চাষিরা
১৫০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের লক্ষণভোগের পরিপক্কতার সময় ১৫ জুন থেকে ১৫ জুলাই। কাঁচা লখনা আম হালকা সবুজ থাকে। অন্যদিকে পেঁকে গেলে টকটকে হলুদ রঙের হয়ে যায়।
হাড়িভাঙ্গা
বিশ্ববিখ্যাত এ হাড়িভাঙ্গা আমের উৎপত্তি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়ন থেকে। নফল উদ্দিন পাইকার ছিলেন একজন বৃক্ষবিলাসী মানুষ। তিনি তার মালদিয়া আমগাছের নিচে মাটির হাঁড়ির ফিল্টার বানিয়ে পানি দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। একদিন রাতে হঠাৎ এই ফিল্টারটি ভেঙে যায়। কে বা কারা করেছে, তার কোন হদিস মেলেনি।
গাছটির সুস্বাদু আমগুলো বিক্রির সময় বাজারে লোকেরা প্রায়ই আমগুলোর ব্যাপারে জানতে চাইতো। নফল উদ্দিন ঠিক এইভাবেই বলতেন যে, যে গাছের নিচের হাড়ি ভেঙেছে, এগুলো সেই গাছের আম। এই কথা লোকমুখে ছড়াতে ছড়াতে মালদিয়া আমের নাম হয়ে যায় হাড়িভাঙ্গা। এই আমের গাছ লম্বায় বাড়ার চেয়ে পাশে বেশি বিস্তৃত হয়। তাই ঝড়েও গাছটি উপড়ে পড়েনা, আর আমও কম ঝরে। জুনের ২০ তারিখের পর থেকে গাছে পাকা হাড়িভাঙ্গা দেখা যেতে শুরু করে।
পড়ুন: জেনে নিন ডালিমের খোসার গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার
আশ্বিনা
সব থেকে নাবি আম আশ্বিনার পরিপক্কতার সময় ২০ জুলাই থেকে শুরু আর শেষ হয় ১৫ সেপ্টেম্বর-এ। কালচে ও সবুজ রঙের আমটির নিচের দিক সূঁচালো। মাঝারি মোটা খোসার ভেতরে হলুদাভ শাঁস থাকে।
মুকুল আসার পর বর্ষাকাল জুড়ে প্রায় ৫ থেকে ৬ মাস লেগে যায় আম পাকতে। ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রামের এই আম তুলনামূলকভাবে কম মিষ্টি, আর কাঁচা অবস্থায় তো বেজায় টক!
সারা দেশ জুড়েই এই আমের চল থাকলেও সব থেকে বেশী আশ্বিনার ফলন হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
পড়ুন: তরমুজের বাম্পার ফলন হলেও খুলনার চাষিরা হতাশ
মোহনভোগ
এটিও নাবি জাতের আম আর জুন মাসের শেষের দিকে ফলটি পোক্ত হতে শুরু করে। মোহনভোগের আসল সময় জুলাইয়ের প্রথম এবং আগষ্টের মাঝামঝি।
৩০০ থেকে ৫৫০ গ্রাম ওজনের আমটির ত্বক মসৃণ ও হালকা সবুজ রঙের, যা পাকলে হলুদ হয়ে যায়। পুরু খোসার ভেতর হলুদাভ শাঁস। হিমসাগর থেকেও আকারে বড় এই আমটি অতিরিক্ত পাকলে খোসার বিভিন্ন অংশে হালকা পচন ধরে। মাঝারি গড়নের গাছে প্রতি বছরই মিষ্টি মোহনভোগ ধরে। অন্যান্য উন্নত জাতের আমগুলোর মধ্যে বৃহত্তর রাজশাহী জুড়ে নিজের একটি স্বতন্ত্র অবস্থান করে নিয়েছে মোহনভোগ আম।
রাণী পছন্দ
আগাম বা আশু জাতের ছোট ও গোলাকার রাণী পছন্দ পাকলে মিষ্টি হলুদ রঙ ধারন করে। পাতলা, মসৃণ ও রসাল খোসার আমটিতে কোন আঁশ নেই; শাস কমলাভ। ফলে আমটি কেটে খাবারও উপায় নেই। মে মাসের একদম শেষের দিকে শুরু হয় আম পাকা। গাছ থেকে ছেড়ার ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যে আমে পাক ধরে যায়। জুন মাসের শেষ নাগাদ বাজারে পাওয়া যায় রাণী পছন্দ।
পড়ুন: গরমকালে কম খরচে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন?
গড়ে ১৬৫ গ্রাম ওজনের এই আম প্রতি বছরই বেশ ভালো ফলে। ১ থেকে ১৫ জুনের মধ্যে একেকটি গাছ ভরে যায় পাকা রাণী পছন্দে। চাপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাতে এর যথেষ্ট চাষ হলেও সবার থেকে এগিয়ে আছে রাজশাহী জেলা।
শেষাংশ
বাংলাদেশে উৎপাদিত এই জনপ্রিয় আমের জাতগুলো আমকে দেশের প্রতীকে পরিণত করেছে। এ দেশের মাটি আম ফলনের অনুকূলে থাকায় কৃষি ক্ষেত্রে আম যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এছাড়াও কাঁচা ও পাঁকা; দুই ধরনের আম দিয়েই তৈরি করা যায় নানা ধরনের মুখরোচক খাবার। সেই খাবারের ভিন্নতা এখনো আমের বিচিত্র জাতকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি। কোন কোন বছর নতুন জাতের আমগুলো ফলচাষিদের স্বপ্ন পূরনের হাতিয়ার হয়ে দাড়ায়। সর্বসাকুল্যে, এই অসামান্য রপ্তানি পণ্যটি কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের স্বচ্ছলতার নির্ধারক।
পড়ুন: ওজন কমাতে ১০ কার্যকরী পানীয়
পল্লি কবির লেবাস দেয়ায় আক্ষেপ ছিল জসীম উদ্দীনের: প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা
প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, পল্লি কবির লেবাস দেয়ায় আক্ষেপ ছিল জসীমউদ্দীনের।
তিনি বলেন, কবি জসীম উদ্দীন ছিলেন সমকালীন এক আধুনিক কবি। তার সময়কালে বাংলার সাধারণ মানুষের জীবন থেকে চিন্তা ভাবনা রসবোধ নিয়ে তার রচনা সমৃদ্ধ করেছেন ঠিক রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল ইসলামের মতই একটি স্বকীয় পথ তৈরি করে গেছেন। কিন্তু তাকে সাধারণভাবে উপস্থাপন করা হয়, ‘পল্লি কবি’র লেবাস জড়িয়ে দেয়া হয়। এজন্য কবির মনে আক্ষেপ ছিল। তিনি সমকালীন মানুষের ধ্যান ধারণা বিশ্বাস মূল্যবোধ, রসবোধ নিয়ে রচনা করেছে তিনি ছিলেন আধুনিক লেখক ও কবি।
রবিবার বিকালে শহরের অম্বিকাপুরে পল্লী কবির বাড়ির পাশে কুমার নদের তীরে ১৫ দিনব্যাপী ‘জসীম পল্লী মেলা’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে পল্লীকবির ১১৯তম জন্মবার্ষিকী পালন
তৌফিক ই ইলাহী বলেন, তার রচনা আমাদের অতি মূল্যবান ঐহিত্য। তিনি এই ফরিদপুরের সন্তান একজন বড় কবি হওয়ায় তার সঙ্গে আমার একটা আত্মার সম্পর্ক আছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কবির অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। বঙ্গবন্ধু তাকে ‘বড় ভাই’ হিসেবে সম্বোধন করতেন। এ জেলার মানুষ ভাগ্যবান তার মতো একজন কবি পেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহিত্যের একজন সমজদার এবং বাংলা বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। তিনি কবি জসীম উদ্দীন স্মৃতি সংগ্রহশালা করেছেন, আর আপনারা নিজ উদ্যোগে জসীম মেলা করছেন। একজন্য আমি কৃতজ্ঞ।
প্রকাশ হলো আসিফ আকবরের জীবনীগ্রন্থ
প্রকাশ হলো কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের জীবনী গ্রন্থ। ‘আকবর ফিফটি নট আউট’-শিরোনামে বইটি লিখেছেন সোহেল অটল। শনিবার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এক প্রকাশনা উৎসবের মাধ্যমে বইয়ের মোড়ক উন্মচন করা হয়।সেখানে আসিফ আকবর ও লেখক সোহেল অটল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গীতিকবি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী, কণ্ঠশিল্পী ফাহমিদা নবী, গীতিকবি গোলাম মোর্শেদ, ক্রিকেট কোচ এমদাদুল হক এমদু, ক্রিকেটার জাভেদ ওমর বেলিম গুল্লু, প্রকাশক নাজমুল হুদা রতন, আসিফ আকবরের বড় ভাই আনিস আকবর, কণ্ঠশিল্পী রবি চৌধুরী, আতিক বাবু, সোহেল মেহেদীসহ সঙ্গীত ও সাহিত্যাঙ্গনের অনেকেই।সূচনা বক্তব্যে শহীদ মাহমুদ জঙ্গী বলেন, ‘জীবনীগ্রন্থ লেখা কঠিন কাজ। কারণ, জীবনীগ্রন্থে সত্যি কথা বলতে হয়। সে সত্যি কখনো কখনো অন্যের কিংবা নিজের বিরুদ্ধেও চলে যায়। সত্য গ্রহণের জন্য মানসিক প্রস্তুতিও থাকতে হয়।’
আরও পড়ুন: আসিফের বিরুদ্ধে মামলা হাইকোর্টে স্থগিতলেখক সোহেল অটল বলেন, ‘আকবর ফিফটি নট আউট’ লিখতে গিয়ে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। অবশেষে বইটি প্রকাশ পেল। বইতে অনেক ঘটনা ও তথ্য অনেকের বিরুদ্ধে চলে যেতে পারে। আশা করব, সত্যকে সহজভাবে গ্রহণ করার মতো সাবালকত্বের প্রমাণ রাখবেন সংশ্লিষ্টরা।’আসিফ আকবর বলেন, ‘সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পাইনি কখনো। আমি জানতাম জীবনীগ্রন্থ প্রকাশ হলে অনেক কঠিন সত্য প্রকাশ করতে হবে। সেসব সত্য কখনো কখনো আমার নিজের বিরুদ্ধেও চলে যাবে। তবুও আমি চেয়েছি আমার জীবনের, ক্যারিয়ারের সত্য কথাগুলোই প্রকাশ পাক।’‘আকবর ফিফটি নট আউট‘ বইটি প্রকাশ করেছে সাহস পাবলিকেশন্স। চব্বিশ ফর্মার বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মোস্তাফিজ কারিগর। অনুষ্ঠানে প্রকাশক নাজমুল হুদা রতন জানান, রকমারিসহ সব অনলাইন প্লাটফর্মেই বইটি পাওয়া যাবে। এ ছাড়া বইটির ইংরেজি সংস্করণ শিগগিরই প্রকাশ হবে।
আরও পড়ুন: আইসিটি আইনে মামলায় কণ্ঠশিল্পী আসিফের বিচার শুরু
আসিফের ‘গহীনের গান’ ১৩ হলে
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান সব সময় মানবতার জয়গান গেয়েছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান সব সময় মানবতার জয়গান গেয়েছেন। তিনি ছিলেন একটি ইন্সটিটিউশন এবং বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গলই তাঁর চিন্তার খোরাক ছিল।
শনিবার (১৪ মে) বিকালে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে চন্দ্রাবতী প্রকাশনী আয়োজিত অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের স্মরণসভা ও আলোকচিত্র গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এ কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আমাদের সংস্কৃতিকে সমুন্নত রাখতে কাজ করেছেন এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে তিনি পরিপূর্ণভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের প্রয়াণ আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি বেঁচে থাকলে আমরা তাঁর কাছে মানবকল্যাণের আরও অনেক কিছু আমরা শিখতে পারতাম।
পড়ুন: অধ্যাপক আনিসুজ্জামান: একজন আদর্শবান মানুষের বিদায়
গরমকালে কম খরচে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন?
ষড় ঋতুর পরিক্রমায় গরমকাল কোন কোন ক্ষেত্রে ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত হয়ে দাঁড়ায়। সেখানে দেশের ভেতরেই এমন কিছু মনোমুগ্ধকর জায়গা আছে, যেখানে গরমকালে স্বল্প খরচে ভ্রমণ করা যায়। ভ্রমণের ষোলকলা পূর্ণ করতে রোদ-বৃষ্টির এই সময়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই নির্বাচন করতে হবে সেই জায়গাগুলোকে। যে কোন দর্শনীয় স্থানের ক্ষেত্রেই সেখানকার বৈশিষ্ট্যের সাথে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হয় তা হচ্ছে আবহাওয়া। নির্দিষ্ট কিছু সময়ে জায়গাগুলো নিজস্ব বিশেষত্ব নিয়ে চোখ জুড়ানো নিসর্গ রূপ ধারণ করে। তাই চলমান উষ্ণতায় চলুন খুঁজে নেয়া যাক বাংলাদেশের দারুণ কিছু ঘোরার জায়গা।
গরমকালে কম খরচে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের ১০টি দর্শনীয় স্থান
সিলেটের পাংথুমাই
সমগ্র বাংলাদেশের গ্রামগুলোর সৌন্দর্য্যের মধ্যে যদি তুলনা করা হয় তাহলে সবার উপরে থাকবে সিলেটের পাংথুমাই। জাফলং ইউনিয়নের সীমানায় গ্রামটি গাছের সবুজ, মেঘের ধূসর এবং জলপ্রপাতের চঞ্চলতার মেলবন্ধনে যেন এক অপরূপ নিসর্গ। খুব জোরে বাতাস বয়ে গেলে অপার্থিব গোঙানি গ্রামের শেষে গুহার উপস্থিতির জানান দিয়ে যায়।
কম খরচে ভ্রমণের জন্য ঢাকা থেকে সিলেটগামী ট্রেনের ৩২০ টাকার শোভর চেয়ার বুকিং করা যেতে পারে। অতঃপর সিলেট শহর থেকে মাইক্রোবাস রিজার্ভ নিয়ে ২,৫০০ থেকে ৩,০০০ টাকার মধ্যে পৌছা যাবে পাংথুমাইয়ে। গোয়াইনঘাটের সালুটিকর অথবা জৈন্তাপুরের সারিঘাট উভয় পথেই একই দূরত্ব ও সময়ে খরচ হবে।
পড়ুন: হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান ও খরচ
ভোলার মনপুরা
শহরের কোলাহল ও দাবদাহ থেকে এক নিমিষেই মুক্তি দিতে পারে মনপুরা। ভোলা জেলার নদী ও সাগরের মিলনস্থলে এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা। এখানকার পিন-পিতম নিরবতায় এক সূর্যাস্ত অথবা তারা ভরা রাতের সামীয়ানা এক জীবন্ত রূপকথার আমেজ দেবে।
এ দ্বীপে যেতে হলে ঢাকার সদরঘাট থেকে যে কোন দিন বিকেল ৫ টায় উঠে পড়তে হবে হাতিয়ার লঞ্চে। সূর্যোদয়ের পর ঠিক সাড়ে ৭ টায় মনপুরা দ্বীপে নামিয়ে দেবে। লঞ্চ ডেকের ভাড়া জনপ্রতি ৩৫০ টাকা। ফিরতি লঞ্চ ধরতে হলে ঠিক দুপুর ২টায় অপেক্ষা করতে হবে মনপুরার রামনেওয়াজ লঞ্চঘাটে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল
একটি কুঁড়ি দুটি পাতার দেশে মন ভুলানো রুপের আধার শ্রীমঙ্গল। পাতা আর কুঁড়ির এই দেশ পাহাড় আর চা বাগানে ঘেরা আর সব সময়ই ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক আদর্শ স্থান। ৪০টি চা বাগানের এই উপজেলা কিছু হাইল-হাওর ছাড়া পুরোটাই চা বাগানে দখলে। মাইলের পর মাইল চা বাগান ছাড়াও এর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আছে নির্মাই শিববাড়ী ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান।
পড়ুন: কলকাতা ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার উপায় ও খরচ
ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলগামী ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া পড়বে ৩২০ টাকা।
সিলেটের জাফলং
খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে পিয়াইন নদী ঘেরা জাফলং যেন প্রকৃতির এক স্বপ্নীল খেয়াল। আনমনে কোন শিল্পী যেন তার নিপুণ হাতে এঁকে দিয়েছেন পাহাড়ের খাঁজে খাসিয়া পল্লী, পানির নিচের পাথর, আর পানের বরজ। কাছেই সংগ্রামপুঞ্জির রাস্তা ধরে এগোলে দেখা মিলবে দেশের প্রথম সমতল চা বাগান।
ট্রেনে চড়ে ঢাকা থেকে সিলেট নামার পর শিবগঞ্জ থেকে ৮০ টাকায় জাফলঙের বাস পাওয়া যাবে। শুধু জাফলং দেখার জন্য ভ্রমণসঙ্গী কম হোক বা বেশি হোক; এই ট্রেন ও বাসের যাতায়াত মাধ্যমটিই সাশ্রয় হবে।
পড়ুন: সিঙ্গাপুর ভ্রমণ: সাগরের উপকন্ঠে অভিজাত উদ্যাননগরী
নেত্রকোণার বিরিশিরি
চীনামাটির পাহাড় ঘেরা অপরুপ নীল হ্রদ দেখতে হলে যেতে হবে দুর্গাপুরের এই ঐতিহ্যবাহী গ্রামটিতে। হ্রদের নীল পানির ধারা শুরু হয়েছে সমেশ্বরী নদী থেকে। আশেপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আছে রানীখং গির্জা, কমলা রানীর দীঘি, পাহাড়ী কালচারাল একাডেমী, হাজংদের কিছু স্মৃতিস্তম্ভ এবং সেন্ট যোসেফের গির্জা।
ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায় পাওয়া যাবে সুখনগরীর বাস। সুখনগরীতে নেমে উঠে পড়তে হয় নদী পারাপারের নৌকায়। তারপর আবার বাসে ২০ টাকা ভাড়ায় দুর্গাপুর।
সিলেটের ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারীর আশ্রয়স্থল এই জায়গাটির অবস্থান ধলাই নদের উৎসমুখে। সাদা পাথর ছাড়াও এখানে দেখা যাবে রোপওয়ে, উৎমাছড়া, ও তুরুংছড়া।
পড়ুন: ঢাকার কাছেই প্রকৃতির মাঝে ক্যাম্পিং সাইট
ঢাকার কমলাপুর থেকে ট্রেনে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে নেমে সেখান থেকে সিএনজি নিয়ে চলে যেতে হবে আম্বরখানা মজুমদার পয়েন্টে। সিএনজি ভাড়া নিতে পারে প্রায় ৫০ টাকা। সেখান থেকে বিআরটিসি দোতলা বাস ৬০ টাকা ভাড়ায় সরাসরি ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর ট্রলার ঘাটে নামিয়ে দেয়। ঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় সাদাপাথর জিরো পয়েন্টে যেতে খরচ নিবে মাথাপিছু ১০০ টাকা। জিরো পয়েন্টে পর্যটকদের গোসল করা ও কাপড় বদলানোর জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে।
নারায়নগঞ্জের পানাম নগর
ঢাকার কাছেই এই ঐতিহাসিক জায়গাটি ঢাকার ভ্রমণপিপাসুদের কাছে সেরা দর্শনীয় স্থান। ৪০০ বছরের পুরনো টাকশাল বাড়ি ও নীলকুঠি দেখার সময় মনে হবে সময়টা ঘুরে অতীতে চলে গেছে। এছাড়াও আছে লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর, গোয়ালদি মসজিদ, পান্থশালা, খাজাঞ্চিখানা, চিত্রশালা, দরবার কক্ষ, ও গুপ্ত পথ।
ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে উঠে নারায়নগঞ্জের পথে নেমে যেতে হবে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা। ভাড়া পড়তে পারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। সেখান থেকে অটোতে ২০ থেকে ৪০ টাকায় পৌছে যাওয়া যাবে পানাম নগরীতে। অতঃপর ১৫ টাকা প্রবেশ মূল্য দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে হবে। জাদুঘরের টিকেটের মূল্য জনপ্রতি ৩০ টাকা। পানাম নগরে ঘুরতে যাবার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, বুধ ও বৃহস্পতিবার জাদুঘরের বন্ধের দিন।
পড়ুন: নেপাল ভ্রমণ: শত বছরের তীর্থস্থান ঘুরতে হিমালয়ের দেশে
কুমিল্লার ময়নামতি
লালমাই পাহাড়, শালবন বিহার, বৌদ্ধ মন্দির, ময়নামতি জাদুঘর একসাথে ঘোরা যাবে কুমিল্লা কোটবাড়ির ময়নামতি গেলে। কুমিল্লার খাদি কাপড় ও রসমালাইয়ের সুখ্যাতি দেশের বাইরেও ছড়িয়ে আছে।
এক দিনে ঝটিকা সফরের জন্য ঢাকা থেকে সকাল সাতটার মধ্যেই রওনা দিতে হবে। কমলাপুর, যাত্রাবাড়ি ও সায়েদাবাদ থেকে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়ায় পাওয়া যাবে কুমিল্লার বাস। ক্যান্টনমেন্ট অথবা কোটবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে নেমে ২০ টাকা সিএনজি ভাড়ায় পৌছা যাবে শালবন।
শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর সরকারি ছুটির দিন ও রবিবার বন্ধ থাকে, আর সোমবারে বন্ধ থাকে অর্ধ দিবস।
পড়ুন: সীতাকুণ্ড ডে ট্যুর: একদিনে ঘুরে আসুন চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মহামায়া লেক
কুমিল্লার আসল মাতৃভান্ডার থেকে রসমালাই খেতে কুমিল্লা বিশ্বরোড থেকে প্রথমে ২০ টাকা অটো ভাড়ায় যেতে হবে কান্দিরপাড়। তারপর সেখান থেকে রিকশায় মনোহরপুর।
বগুড়ার মহাস্থানগড়
প্রায় ৪ হাজার বছরের এই পুরনো স্থাপনাটি অবস্থান বগুড়ার শিবগঞ্জে। এখানে ঘুরতে যেয়ে চোখে পড়বে বৈরাগীর ভিটা, কালীদহ সাগর, খোদারাপাথার ভিটা, ইস্কান্দারের ধাপ, খুল্লানার ধাপ, মাহী সওয়ার মাজার শরীফ, জগির ভবন, ভীমের জঙ্গল, রোজাকপুর, মহাস্থানগড় জাদুঘর, অররা, জিউৎকুন্ড কুপ, তোতারাম পণ্ডিতের ধাপ, গোবিন্দ ভিটা, তেঘর, ও মাথুরা। শীলাদেবীর ঘাট, বেহুলার বাসর ঘর অথবা লক্ষিন্দরের মেধ, মানকালির দ্বীপ, পরশুরামের প্রাসাদ দেখার সময় মনে হবে প্রাচীন চরিত্রগুলো যেন আবার জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
রাত পৌনে দশটা এবং সোয়া এগারটায় ট্রেনে ৩৯৫ টাকায় চলে যাওয়া যেতে পারে এই প্রাচীন নগরীতে। বগুড়ায় নেমে সিএনজি, টেম্পো বা রিকশা করে যাওয়া যাবে মহাস্থানগড়। এখানে মনে রাখতে হবে শুক্রবার ও রবিবার মহাস্থানগড় বন্ধ থাকে।
পড়ুন: বগালেক, দার্জিলিং পাড়া হয়ে কেওক্রাডং মানেই হারিয়ে যাওয়া রূপকথার রাজ্যে
রাঙামাটির কাপ্তাই লেক
আয়তনে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ এই কৃত্রিম হ্রদ যেন স্বর্গের প্রতিচ্ছবি। এখানে কোন রকম ক্লান্তি ছাড়াই উপভোগ করা যাবে পাহাড়, ঝর্ণা ও অথৈ জলের সাথে সবুজের পরিণয়। দল বেঁধে নৌ বিহারের সময় জলযানটিকে মনে হবে আকাশ ও হ্রদের মাঝে তুচ্ছ এক প্রাণ। এছাড়া আছে রাঙ্গামাটির প্রতীক ঝুলন্ত ব্রিজ, আর শুভলং ঝর্ণা।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে ট্রেনের শোভন চেয়ারে খরচ পড়বে ৩৪৫ টাকা। অতঃপর চট্টগ্রামের বদ্দারহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে উঠে পড়তে হবে কাপ্তাইগামী বাসে। এখানে জনপ্রতি ভাড়া নিবে ৮০ থেকে ১২০ টাকা।
শেষাংশ
এই দর্শনীয় স্থানগুলো গরমকালে কম খরচে ভ্রমণের স্বাদ পরিপূর্ণ ভাবে পূরণ করতে পারে। এগুলোর প্রতিটি নিজস্ব আলাদা সৌন্দর্য নিয়ে উষ্ণ আবহাওয়ায় আবির্ভূত হয় পর্যটকদের সামনে। এই সৌন্দর্য্যের স্বাদ অন্য সময় গেলে মন ভরে আস্বাদন না করেই ফিরে আসতে হতে পারে। আর ভ্রমণকে নির্ঝঞ্ঝাট করতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা সহ পূর্ব পরিকল্পনা গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। গরমের জন্য উপযুক্ত পরিধেয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য দরকারি সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখতে হবে। এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে কোন ঝামেলা পোহানো ছাড়াই সারা বছরই ভ্রমণ করা যাবে।
পড়ুন: বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
নিউইয়র্কে ‘মুজিব আমার পিতা’র ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক দেশের প্রথম অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘মুজিব আমার পিতা’দেশের গণ্ডি পেরিয়ে নিউইয়র্কে প্রদর্শিত হয়েছে।
রবিবার নিউইয়র্কের কুইন্সের বোম্বে থিয়েটার হলে এই চলচ্চিত্রের ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও বিশেষ অতিথি হিসেবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসবে দুই দিনব্যাপী বিশেষ প্রদর্শনী
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর ওপর আরেকটি চলচ্চিত্র তৈরি করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের ওপর একটি গেম তৈরি করছি। ফলে গেমিং এবং অ্যানিমেশন মার্কেটে বাংলাদেশের যে স্বক্ষমতা সেটাও তুলে ধরা সম্ভব হচ্ছে।
আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে নির্মিত এই অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন সোহেল মোহাম্মদ রানা। অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে যে নিউইয়র্কের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে সিনেমাটি প্রদর্শিত হবে।
নিউইয়র্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের পরিচালনায় ‘মুজিব আমার পিতা’ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য মো. নুরুল আমিন, অপরাজিতা হক, নাহিদ ইজাহার খান, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা, হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসব
দেশ ও বিদেশের নতুন প্রজন্মের শিশু ও কিশোরসহ সকলের কাছে বঙ্গবন্ধুর জীবনের গল্প পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে আইসিটি বিভাগ এনিমেশন মুভিটি তৈরি করে।
চলচ্চিত্রটিতে দেখানো হয়েছে টুঙ্গিপাড়ার প্রতিবাদী এক কিশোর একদিনে হয়ে উঠলেন দেশের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক, স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা, ইতিহাসের মহানায়ক। চলচ্চিত্রটিতে মহাসংগ্রামের পথ ধরে এগিয়ে যাওয়ার একটি পর্যায়; ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পর্যন্ত তুলে ধরা হয়েছে।
খুলনায় ৩ দিনব্যাপী রবীন্দ্রমেলা শুরু
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে খুলনার ফুলতলায় তিন দিনব্যাপী রবীন্দ্রমেলা শুরু হয়েছে।
রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে মেলার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।
জেলা প্রশাসন খুলনার উদ্যোগে মেলার উদ্বোধনী দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথের কাছে পূর্ব বাংলার মানুষ ছিল অভিজ্ঞতার জায়গা: সেলিনা
খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদারের সভাপতিত্বে আলোচনায় বক্তব্য দেন, নেত্রকোনা শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রফিকউল্লাহ খান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অসীম কুমার দে, সাবেক ডিআইজি অলিউর রহমান ও ফুলতলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন, ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মো. আবুল বাশার, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মৃণাল হাজরা ও ফুলতলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
পরে স্থানীয় শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।
এর আগে রবিবাবর সকালে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার পিতৃপুরুষের ভিটা রূপসা উপজেলার পিঠাভোগ গ্রামে তিনদিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেন।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অসীম কুমার দে, খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার, খুলনা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পুলক কুমার মন্ডল উপস্থিত ছিলেন।