জীবনধারা
কক্সবাজার ইনানী সমুদ্রসৈকত ভ্রমণ: ঘুরে আসুন প্রবাল পাথুরে সৈকতে
বিশ্ব পর্যটনের বিস্তৃত পরিমণ্ডলে এক টুকরো বাংলাদেশ কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন সমুদ্রসৈকত হিসেবে কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত বিশ্বজুড়ে পরিচিত। এটি শুধু বাংলাদেশ নয় বরং পৃথিবীর অসংখ্য সমুদ্র প্রেমীদের প্রিয় গন্তব্যস্থল। শুধু বঙ্গোপসাগরের প্যানোরামাকে চোখে ধারণ করেই কাটিয়ে দেওয়া যায় পুরো একটি বিকেল। এমন প্রশান্ত দৃশ্যকল্পের সবটুকুই দৃষ্টিগোচর হয় ইনানী সৈকতে। কক্সবাজারের দীর্ঘ সৈকতেরই এই অংশ দর্শনার্থীদের দেয় প্রকৃতির সঙ্গে একান্তে কিছু সময় কাটানোর অভাবনীয় সুযোগ। চলুন, বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান কক্সবাজার ইনানী বীচে ভ্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক।
ইনানী সমুদ্রসৈকতের অবস্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের জেলা কক্সবাজারের অন্তর্গত উখিয়া উপজেলায় অবস্থিত সৈকত ইনানী। কক্সবাজার সদর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দক্ষিণের এই প্রবাল সৈকতটিতে পৌঁছাতে হিমছড়ি ছাড়িয়ে আরও ১৫ কিলোমিটার যেতে হবে।
১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকতের আরও একটি নাম পাথুরে সৈকত। বিংশ শতকের একদম শেষ দিকে ধীরে ধীরে এটি পর্যটকদের নজরে আসতে শুরু করে।
আরো পড়ুন: কক্সবাজার থেকে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক ভ্রমণ গাইড
ঢাকা থেকে কক্সবাজার ইনানী সমুদ্রসৈকত যাওয়ার উপায়
বাসযাত্রার ক্ষেত্রে সরাসরি কক্সবাজারের বাস পাওয়া যাবে ঢাকার গাবতলী, কল্যাণপুর,যাত্রাবাড়ী,ফকিরাপুল অথবা কলাবাগান থেকে। বাস কোম্পানি এবং ধরণ (এসি/নন-এসি) ভেদে প্রতি জনের জন্য ভাড়া পড়তে পারে ৯০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। এভাবে কক্সবাজার যেতে সময় লাগতে পারে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা।
যারা ট্রেনে যেতে ইচ্ছুক তাদের বিমানবন্দর বা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে কক্সবাজারের ট্রেন ধরতে হবে। বিভিন্ন ধরনের সিটে যাত্রীপ্রতি ভাড়া পড়বে ন্যূনতম ৬৯৫ থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩৮০ টাকা। রেলপথে কক্সবাজার পর্যন্ত যেতে প্রায় ৯ ঘণ্টা সময় লাগবে।
এছাড়া কক্সবাজারের সরাসরি বিমানও রয়েছে, যেগুলো গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় নেয় মাত্র ১ ঘণ্টা।
কক্সবাজার থেকে ইনানী যেতে হয় মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে। এর জন্য চাঁদের গাড়ি, ছাদ খোলা জিপ, ট্যুরিস্ট জিপ ও মাইক্রোবাসের মতো বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় পরিবহন রয়েছে। এগুলো সবই সুগন্ধা পয়েন্টে ভিড় করে থাকে। ১০ থেকে ১২ জনের বড় গ্রুপ হলে ইনানী যাওয়ার জন্য পুরো একটি চান্দের গাড়ি রিজার্ভ নেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে খরচ হতে পারে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। একটানা ভ্রমণে ইনানী বিচ পর্যন্ত যেয়ে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে ঘুরে আসা সম্ভব।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের কোহ সামুই দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
এছাড়া রয়েছে অ্যাকোয়াহলিক ট্যুরিস্ট ক্যারাভান নামে ছাদ খোলা ডাবল ডেকার বাস। শুধু মেরিন ড্রাইভে যাতায়াতের উদ্দেশ্যে বানানো এই পরিবহনে করে বেশ আরামদায়কভাবে ইনানী পর্যন্ত যাওয়া যায়।
ইনানী সৈকতের প্রধান পর্যটন আকর্ষণ
৮০ কিলোমিটারের মেরিন ড্রাইভ সড়কে সর্বাধিক সুন্দর দর্শনীয় স্থান হচ্ছে ইনানী বিচ। এখানকার বিশেষত্ব হচ্ছে ভাটার সময় সৈকত জুড়ে প্রবাল পাথর এবং শান্ত সাগর। জোয়ারের সময় এই পাথরগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। পাথরগুলোর সর্বাঙ্গ জুড়ে থাকে ধারালো ঝিনুক আর শামুক।
এখানকার শান্ত পরিবেশে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের দৃশ্য দেখার অভিজ্ঞতা আর কোনো সৈকতে পাওয়া যায় না। এছাড়াও দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য এখানে নানান ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে।
আরো পড়ুন: বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণ: ঘুরে আসুন দ্বিতীয় সাজেক
সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে বালুকাময় তীর ধরে ঘোড়ায় চড়া সঙ্গে দক্ষ গাইড থাকায় নতুন বা অভিজ্ঞ যেকোনো রাইডারের জন্যই এই অভিজ্ঞতা বেশ উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
এর থেকে আনন্দটা আরও একধাপ বেড়ে যায় জেট স্কিইং-এর সময়। কেননা এখানে যুক্ত হয় বঙ্গোপসাগরে ছুটে বেড়ানোর দুঃসাহস আর রোমাঞ্চের উত্তেজনা। সাধারণত স্কিইং করার সময় জেটে রাইডারের সঙ্গে একজন দক্ষ প্রশিক্ষক থাকেন। তবে দর্শনার্থীদের যারা অভিজ্ঞ তারা একা একাও স্কিইং করতে পারেন।
ইনানী পর্যন্ত যাওয়ার সময়টাও বেশ চিত্তাকর্ষক। কেননা যাত্রাপথে একে একে পেরিয়ে যায় হিমছড়ি পাহাড়,পথের ধারে সাম্পান নৌকা আর নারিকেল বা ঝাউ গাছের ফাঁক দিয়ে দীর্ঘতম উপকূলরেখার দৃশ্য।
ইনানী সৈকত ভ্রমণের সেরা সময়
নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত আকাশ পরিষ্কার এবং রৌদ্রোজ্জ্বল থাকায় এই মৌসুম ইনানী ঘুরতে যাওয়ার জন্য উৎকৃষ্ট সময়। ভারি বৃষ্টিপাত বা ঝড়ের আশঙ্কা না থাকায় রৌদ্র ও সমুদ্রস্নান এবং জেট স্কিইংয়ের জন্য এই আবহাওয়াটি সবচেয়ে উপযুক্ত।
আরো পড়ুন: ভিয়েতনামের হা লং বে দ্বীপপুঞ্জ ভ্রমণ: ঘুরে আসুন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
এই অনুকূল আবহাওয়ার জন্য বিশেষত ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় থাকে। অবকাশ যাপনের বিভিন্ন সেবা বিশেষ করে হোটেল ভাড়া থাকে সবচেয়ে বেশি।
তাই বাজেট ভ্রমণপিপাসুরা আরামদায়ক উষ্ণতার পাশাপাশি কম খরচে ভ্রমণ করতে বেছে নিতে পারেন নভেম্বরের শেষ বা মার্চের প্রথম দিকটা।
এখানে খেয়াল রাখতে হবে যে, বিকেলের দিকে জোয়ারের কারণে পিক টাইমেও মানুষের ভিড় হাল্কা থাকে।
অপরদিকে, প্রবাল দেখার জন্য ভাটা পর্যন্ত অপেক্ষার বিষয় আছে। তাই ইনানী ভ্রমণের জন্য নিদেনপক্ষে একটি দিন থাকার পরিকল্পনা নিয়ে আসা উচিত। এতে ভোরে সূর্যোদয় আর সন্ধ্যায় সূর্যাস্ত দেখারও সুযোগ থাকে।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের পাতায়া ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও যাবতীয় খরচ
৩৮৪ দিন আগে
কক্সবাজার থেকে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক ভ্রমণ গাইড
বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের সঙ্গে প্রতিধ্বনির মতোই ধ্বনিত হয় কক্সবাজারে অবস্থিত পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের কথা। বঙ্গোপসাগরের ফেনীল জলরাশিকে দৃষ্টি সীমায় রেখে এই সৈকত ধরে টেকনাফ পর্যন্ত রচনা করা যায় এক অতুলনীয় ভ্রমণের উপাখ্যান। বালুকাবেলার শুভ্রতার সঙ্গে সারি বেঁধে দাঁড়ানো ঝাউ গাছের গাড় সবুজ; এরই মাঝে হঠাৎ একঝাঁক দুধ রঙা পাখি যেন প্রকৃতির এক অদ্ভূত খেয়াল। এমন প্রাকৃতিক নৈসর্গকে প্রাণভরে উপভোগের জন্য এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সদ্য নির্মিত মেরিন ড্রাইভ। অপার সম্ভাবনাময় সড়কটি উপকূল ভ্রমণকে এক অপূর্ব মাত্রা দিয়েছে। চলুন, কক্সবাজার থেকে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কপথটি দিয়ে সৈকত ভ্রমণের বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
মেরিন ড্রাইভ সড়কের অবস্থান
বিখ্যাত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পাশ দিয়ে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটিই মেরিন ড্রাইভ। এর শুরু হয়েছে কক্সবাজারের কলাতলী মোড়ে আর শেষ হয়েছে টেকনাফের শাপলা চত্বরের জিরো পয়েন্টে।
মেরিন ড্রাইভের নির্মাণ ও তাৎপর্য
বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে এই দৃষ্টি নন্দন সড়কটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ২০১৭ সালের ৬ মে সড়কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। ২০১৮-এর ২৬ জুন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সড়কটিকে সংরক্ষিত পর্যটন অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে। শুধু পর্যটনই নয়, এই সড়ক নির্মাণের মধ্য দিয়ে দেশের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি,পরিবহন খাতে উন্নতি এবং সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি মঞ্চ স্থাপিত হয়েছে।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের কোহ সামুই দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ঢাকা থেকে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ যাওয়ার উপায়
এই সড়ক পরিদর্শনের জন্য প্রথমে সরাসরি কক্সবাজার চলে আসতে হবে। ঢাকার ফকিরাপুল, কলাবাগান, কল্যাণপুর, গাবতলী ও যাত্রাবাড়ী থেকে কক্সবাজারের নিয়মতি বাস রয়েছে। শ্রেণি ভেদে এগুলোর টিকিট মূল্য জনপ্রতি ৯০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। বাস যোগে কক্সবাজার আসতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে।
ট্রেনে আসার ক্ষেত্রে কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সরাসরি কক্সবাজারের ট্রেন রয়েছে। সিটের ধরনভেদে যাত্রীপ্রতি ভাড়া পড়ে ৬৯৫ থেকে ২ হাজার ৩৮০ টাকা। আর কক্সবাজার পৌঁছতে সময় নেয় প্রায় ৯ ঘণ্টা।
আরও দ্রুততম সময়ে যাওয়ার জন্য রয়েছে সরাসরি কক্সবাজার ফ্লাইট ব্যবস্থা। প্লেন যাত্রার মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১ ঘণ্টার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছা যায়।
কক্সবাজার পৌঁছার পর মেরিন ড্রাইভে যাওয়ার চাঁদের গাড়ি, ট্যুরিস্ট জিপ, ছাদ খোলা জিপও মাইক্রোবাস পাওয়া যাবে সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে। পর্যটন মৌসুমের ওপর ভিত্তি করে এই পরিবহনগুলোর ভাড়া কম-বেশি হয়ে থাকে। বিশেষত অফ সিজনে চান্দের গাড়ি ভাড়া ৬ হাজার টাকা, সেখানে পিক টাইমগুলোতে পড়বে প্রায় ৭ হাজার টাকা। খোলা জিপ বা চান্দের গাড়িগুলোতে ১০ থেকে ১২ জন পর্যন্ত এক সঙ্গে যাওয়া যায়।
আরো পড়ুন: বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণ: ঘুরে আসুন দ্বিতীয় সাজেক
পুরো মেরিন ড্রাইভ ঘুরে আসতে সময় লাগে প্রায় ৫ ঘণ্টা। সময় সংকুলান না হলে পুরোটা না ঘুরে হিমছড়ি বা ইনানী বিচ পর্যন্ত যেয়ে ফিরে আসা যেতে পারে।
৩৮৫ দিন আগে
থাইল্যান্ডের পাতায়া ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও যাবতীয় খরচ
আন্তর্জাতিক পরিব্রাজকরা এশিয়ার যে দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করে থাকেন সেগুলোর মধ্যে থাইল্যান্ড অন্যতম। শুধু শত বছরের ঐতিহ্য আর ভুবন ভোলানো প্রাকৃতিক নৈসর্গই নয়, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সর্বত্রে ছড়িয়ে আছে এক অফুরন্ত প্রাণের ছোয়া। আদিম সৈকত থেকে এক প্রশান্তিদায়ক উষ্ণ পর্বত চূড়া, অত্যাধুনিক উদ্যান থেকে জনাকীর্ণ বাজার সবটাজুড়ে যেন আতিথেয়তা। এরই মাঝে সারা বিশ্বে এক টুকরো থাইল্যান্ডকে সগৌরবে তুলে ধরে চলেছে পর্যটনকেন্দ্র পাতায়া। এখন থাইল্যান্ড ঘুরতে যাওয়ার প্রসঙ্গ এলে অকপটেই চলে আসে দর্শনীয় স্থানটির নাম। চলুন, কোরাল দ্বীপটিতে ভ্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক।
পাতায়ার অবস্থান ও বিশেষত্ব
থাইল্যান্ড উপসাগরের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত দেশের অষ্টম বৃহত্তম শহর পাতায়া। রাজধানী ব্যাংককের প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এর অবস্থান। পাতায়া বে এশিয়ার বৃহত্তম সৈকত রিসোর্টগুলোর মধ্যে একটি এবং ব্যাংককের পরে থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বাধিক দর্শনীয় শহর।
পাতায়ার নামকরণের ইতিহাস
১৭৬৭ সালে রাজা ফ্রায়া তাক (পরবর্তীতে যিনি তাক্সিন নামেই বেশি পরিচিতি পেয়েছেন) তার সেনাবাহিনী নিয়ে আয়ুথায়া থেকে চান্থাবুরি পর্যন্ত অগ্রসর হন। এটি বার্মিজ আক্রমণকারীদের কাছে পূর্বের রাজধানী পতনের আগের ঘটনা।
বর্তমানে যেখানে পাতায়া সেই স্থানে ফ্রায়া তাকের সেনারা নাই ক্লোম নামে একজন স্থানীয় নেতা ও তার সৈন্যদের মুখোমুখি হয়। প্রথম দিকে আক্রমণাত্মক হলেও ক্লোম ফ্রায়া তাকের নেতৃত্ব এবং তার সেনাবাহিনীর মধ্যে কঠোর শৃঙ্খলা দেখে মুগ্ধ হন। অতঃপর তিনি বিনা লড়াইয়ে আত্মসমর্পণ করে সদলবলে ফ্রায়া তাক বাহিনীতে যোগ দেন।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের কোহ সামুই দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
এই স্থানটি পরে পরিচিতি পায় ‘থাপ ফ্রায়া’ নামে, যার অর্থ ‘ফ্রায়ার সেনাবাহিনী’। থাপ ফ্রায়াকে পরে ‘পাতায়া’য় পরিবর্তন করা হয়, যার অর্থ ‘বর্ষার শুরুতে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত বাতাস’।
পাতায়ার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলো
.
নং নুচ বোটানিক্যাল গার্ডেন
থাইল্যান্ডের চনবুরি প্রদেশের ২ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই পর্যটনকেন্দ্রটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম বোটানিক্যাল গার্ডেন। পুরো গার্ডেনটি কতগুলো ছোট ছোট গার্ডেনে বিভক্ত।
প্রবেশের মুখেই রয়েছে ক্যাক্টাস গার্ডেন, যেখানে একটি লম্বা কাঁচের ঘরে দেখা মেলে বিভিন্ন প্রজাতির ক্যাক্টাসের। দ্যা গার্ডেন ইন দ্যা স্কাইয়ে গেলে দেখা যাবে মাটি থেকে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে এবং ছাদ থেকে ঝুলে রয়েছে বিভিন্ন জাতের উদ্ভিদ। ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বাগানটি ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে একটি লিফট বা স্কাইওয়াক।
নং নুচে আছে দুটি ফরাসি বাগান, যেগুলো তৈরি হয়েছে ফ্রান্সের ভার্সাই বাগানের আদলে। ফ্রেঞ্চ গার্ডেন-২-এর পাশেই রয়েছে ডাইনোসর ভ্যালী, যেখানে পরিচিত হওয়া যাবে ১৮০ টিরও বেশি ডাইনোসরের প্রতিলিপির সঙ্গে।
আরো পড়ুন: বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণ: ঘুরে আসুন দ্বিতীয় সাজেক
ইতালীয় বাগানে পুরোটাই বিভিন্ন ইতালীয় মার্বেল মূর্তিতে পরিপূর্ণ। স্টোনহেঞ্জের প্রতিরূপ দিয়ে বানানো হয়েছে স্টোনহেঞ্জ গার্ডেন। নং নুচের পূর্বদিকে রয়েছে দুটি হ্রদ, যেখানে দেখা যাবে আমাজন নদীর বিশেষ ধরনের মাছ অ্যারাপাইমাস গিগাস। পুরো বাগান ঘুরে দেখার পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য রয়েছে ধর্মীয় অনুষ্ঠান, মার্শাল আর্ট এবং হাতির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা। এমনকি এখানে থাকার জন্য আছে বেশ কিছু রিসোর্ট ও ভিলা এবং খাওয়া-দাওয়ার জন্য আছে রেস্তোরাঁও।
প্রাপ্তবয়স্ক বিদেশি পর্যটকদের জন্য নং নুচে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৬০০ থাই বাত বা ২ হাজার ৮১ টাকা (১ থাই বাত = ৩ দশমিক ৪৭ বাংলাদেশি টাকা)।
পাতায়া সমুদ্র সৈকত
শহরের কেন্দ্রের সমান্তরালে অবস্থিত এই সৈকতটি শহরের সব থেকে নান্দনিক স্থান। উপকূলকে একপাশে রেখে উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রায় ২ দশমিক ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকত। দক্ষিণে সৈকতের সীমান্তে রয়েছে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান ওয়াকিং স্ট্রিট।
উত্তর সৈকত দক্ষিণের তুলনায় সাধারণত একটু শান্ত থাকে। সারিবদ্ধ পাম গাছের এই অত্যাশ্চর্য সমুদ্র সৈকতটি সূর্যস্নান ও সাঁতারের জন্য বিখ্যাত।
আরো পড়ুন: ভিয়েতনামের হা লং বে দ্বীপপুঞ্জ ভ্রমণ: ঘুরে আসুন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
পাতায়ার সবচেয়ে বিখ্যাত নাইটলাইফ হাব। সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সৈকতের লাগোয়া ওয়াকিং স্ট্রীট ভরে ওঠে নিয়ন আলো, জমজমাট বার এবং পথশিল্পীদের কলাকৌশলে।
ফ্রা তাম্নাক পাহাড়
পাতায়া সৈকত এবং পাতায়ার দক্ষিণ দিকে জোমতিয়েন সৈকতের মাঝে অবস্থিত এই পাহাড়টি পর্বতপ্রেমিদের প্রিয় গন্তব্য। পাহাড়ে অবস্থিত চালোম ফ্রাকিয়াত পার্ক থেকে পাখির চোখে আশপাশের বিস্ময়কর দৃশ্যের পর্যবেক্ষণ করা যায়।
এই পাহাড়ের রয়েছে ওয়াত ফ্রা ইয়াই মন্দির, যার কারণে পর্বতটিকে বিগ বুদ্ধ হিলও বলা হয়ে থাকে। এই বৃহদাকার বুদ্ধের স্বর্ণ মূর্তিটি গোটা পাতায়ার ল্যান্ডস্কেপগুলোর একটি। এটি পাতায়া শহরের সর্বোচ্চ স্থান, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যার উচ্চতা ৯৮ মিটার। পাহাড়ের উত্তর প্রান্ত দিয়ে নিচেই রয়েছে শহরের জনপ্রিয় ওয়াকিং স্ট্রীট এবং ফেরি ঘাট বালি হাই পিয়ার।
পাতায়া আন্ডারওয়াটার ওয়ার্ল্ড
সাগরে সাঁতার না কেটেও জলজ জগতকে খুব কাছে থেকে দেখার সর্বোৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে এই দৈত্যাকার অ্যাকোয়ারিয়ামটি। ১৫০ মিটার দীর্ঘ টানেল পরিদর্শনের সময় দেখা মিলবে প্রায় ২০০-এর অধিক প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণীর। বিশাল শঙ্কর মাছ থেকে শুরু করে হাঙ্গর পর্যন্ত প্রাণীগুলো দর্শনার্থীদের ঘিরে তাদের রাজকীয় উপস্থিতি জানান দিতে থাকে।
আরো পড়ুন: মালয়েশিয়ার ল্যাংকাউই দ্বীপ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান, যাওয়ার উপায় এবং যাবতীয় খরচ
স্যাঙ্কচুয়ারি অফ ট্রুথ
এই জাদুঘরের অবকাঠামোটি মূলত মন্দির ও দুর্গের একটি সমন্বিত রূপ। স্থাপনাটি সম্পূর্ণভাবে কাঠের তৈরি।এর ভেতরের দর্শনীয় প্রতিটি বস্তুই কাঠের তৈরি। এই কাঠগুলো শত শত বছরের পুরনো। ধারণা করা হয় সবচেয়ে প্রাচীনতম ‘তাকিয়েন’ কাঠের বয়স প্রায় ৬০০ বছর।
জাদুঘর পরিদর্শনের পাশাপাশি এখানে থাই বোট রাইড, হাতির পিঠে চড়া, ঘোড়ার পিঠে বা ঘোড়া গাড়িতে চড়া, স্পিডবোট রাইড এবং থাই পোশাক ভাড়া নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
পাতায়ার বিখ্যাত যত উৎসব
থাইল্যান্ডের অনন্য প্রথা ও ঐতিহ্যের সিংহভাগই রয়েছে পাতায়াতে। বিশেষ করে এখানকার স্থানীয় উৎসবগুলো শত বছরের পুরনো; সেই সঙ্গে বিশ্ব পরিব্রাজকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
প্রথমেই বলা যেতে পারে জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির শুরু পর্যন্ত হওয়া চাইনিজ নববর্ষ অথবা বসন্ত উৎসবের কথা। এ সময় দেখা যায় পাতায়ার বৃহৎ থাই-চীনা সম্প্রদায়ের ড্রাগন প্যারেড, সিংহ নাচ ও আতশবাজি।
আরো পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার বাটাম দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
স্থানীয়ভাবে ওয়ান লাই নামে পরিচিত পাতায়া সোংক্রান উৎসব উদযাপন করা হয় প্রতি বছর এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে। এই উৎসবের প্রধান কার্যক্রমগুলো হলো জল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা, বাদ্যযন্ত্র পরিবেশন ও আতশবাজি।
থাই চন্দ্র ক্যালেন্ডারের দ্বাদশ মাসের পূর্ণিমাতে উদযাপিত আলোকের উৎসবটি লোই ক্রাথং নামে পরিচিত। ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবের সময়কাল সাধারণত নভেম্বর মাসে পড়ে। এ সময় ক্রাথং বা ভাঁজ করা কলা পাতার ওপর প্রজ্বলিত মোমবাতি যুক্ত করে সন্ধ্যার দিকে পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া রাতের আকাশে ফানুশও ওড়াতে দেখা যায়।
পাতায়া ভ্রমণের সেরা সময়
আবহাওয়া, উৎসব, এবং জল খেলার উপযুক্ত পরিবেশ সামগ্রিক বিচারে পাতায়া ঘুরে বেড়ানোর সেরা সময় হচ্ছে শীতকাল। সঙ্গত কারণেই নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারিতে থাকে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। সেই সঙ্গে থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় বিনোদন সেবার দামও থাকে আকাশচুম্বী।
তাই যারা সাশ্রয়ী মূল্যে পাতায়া ঘুরতে যেতে চান তাদের অফ পিক মৌসুমগুলো বেছে নিতে হবে। এ জন্য মে থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়টা উপযুক্ত হতে পারে। অল্প ভিড় এবং বাজেট ভ্রমণ সম্ভব হলেও এ সময় হাল্কা বা ভারী বৃষ্টির বিড়ম্বনা পোহাতে হবে।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের চিয়াং মাই ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডের পাতায়া যাওয়ার উপায়
পাতায়া ভ্রমণ পরিকল্পনার সর্বপ্রথম পদক্ষেপ হলো থাইল্যান্ডের পর্যটন ভিসার জন্য আবেদন করা। ভ্রমণের ন্যূনতম ২ সপ্তাহ আগে থেকে এই আবেদন কার্যক্রম শুরু করা উচিত। আবেদন প্রক্রিয়াকরণে সময় লাগে সাধারণত ৭ কর্মদিবস এবং ভিসা ফি ৩ হাজার ৫০০ টাকা।
ঢাকা থেকে সরাসরি ব্যাংককের বিমান আছে, যে যাত্রায় সর্বোচ্চ ৩ ঘণ্টার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়।
ঢাকা - ব্যাংকক রাউন্ড ট্রিপ বিমান ভাড়া নির্ভর করবে কিছু বিষয়ের উপর যেমন এয়ারলাইন্স কোম্পানি, বুকিংয়ের সময়, বিভিন্ন অফার, ইত্যাদি।
ব্যাংককের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর থেকে পাতায়া সড়কপথে প্রায় ১২০ কিলোমিটার। এ পথে সুখুমভিট রোড এবং মোটরওয়ে-৭ দিয়ে পাতায়ায় প্রবেশ করা যায়।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের ফুকেট ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাসে যেতে হলে ব্যাংককের উত্তর বাস টার্মিনাল বা মো চিত এবং পূর্বের একমাই থেকে বাস পাওয়া যাবে। এই বাসগুলো সুখুমভিট রোডের কাছে পাতায়া নুইয়ার (উত্তর পাতায়া রোড) প্রধান বাস স্টেশনে নামিয়ে দেয়।
ট্রেনে যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংককের হুয়ালুমফং থেকে পাতায়া পর্যন্ত নিয়মিত রেলপথ পরিষেবা পাওয়া যায়। এছাড়া যাত্রার সময় আরও দ্রুততর করতে প্লেনে করেও পাতায়া যাওয়া যেতে পারে।
ভ্রমণকালে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
পাতায়া ও জোমতিয়েন বীচসহ যেকোনো সৈকতের আশপাশের এলাকা এবং ওয়াকিং স্ট্রীটের আবাসিক হোটেলগুলো যথেষ্ট মান সম্পন্ন। তিন বেলা আহারের জন্য এগুলোর আশপাশে সাশ্রয়ী কিছু রেস্তোরাঁও রয়েছে। ফ্লোটিং মার্কেট খাবারের পাশাপাশি দর্শনীয় জায়গাও বটে।
পাতায়ায় ঘুরতে এলে যে খাবারটি সবাই চেখে দেখে সেটি হচ্ছে টম ইয়াম গোং। গোটা থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় এই স্যূপটি মূলত চিংড়ি, মাশরুম,টমেটো,লেবু,গালাঙ্গাল ও কাফির চুন পাতার সংমিশ্রণ।
আরো পড়ুন: হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
মশলাদার ও ক্রিমযুক্ত নারকেল দুধ,মুরগির মাংস বা তুলসী পাতাসহ নানা ধরনের সবজি দিয়ে বানানো গ্রিন কারি আরও একটি স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী খাবার।
নিরামিষ খাবারের মধ্যে সেরা হচ্ছে সোম ট্যাম, যেটি মিষ্টি, টক এবং মশলাদার স্বাদের মিশ্রণে এক ধরনের পেঁপে সালাদ। এটি পরিবেশন করা হয় সাধারণত চিনাবাদাম এবং শুকনো চিংড়ির সঙ্গে।
ভারী মিষ্টান্নের মধ্যে রয়েছে ম্যাঙ্গো স্টিকি রাইস, যেখানে মিষ্টি আমের টুকরো নারকেল দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ভাতের সঙ্গে খাওয়া হয়।
পরিশেষে সামুদ্রিক খাবারের কথা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না, যেখানে গ্রিল্ড স্কুইড বা শেলফিশে উদরপূর্তি না করলে পুরো ভ্রমণটাই অপূর্ণ থেকে যায়।
আরো পড়ুন: দার্জিলিংয়ের টংলু ও সান্দাকফু যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
পাতায়া ভ্রমণের সম্ভাব্য খরচ
এখানকার আবাসিক হোটেলগুলোতে থাকার জন্য প্রতিদিনের জন্য খরচ হতে পারে জনপ্রতি ৩৫৯ থেকে ৮৬৮ থাই বাত (১ হাজার ২৪৫ থেকে ৩ হাজার ১১ টাকা)।
শহরের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায় যেতে স্থানীয় পরিবহন ভাড়া পড়তে পারে মাথাপিছু ১৮৮ থেকে ৪৪৫ থাই বাত (৬৫২ থেকে ১ হাজার ৫৪৪ টাকা)।
৫৯৭ থেকে ১ হাজার ৪০৩ থাই বাতের (২ হাজার ৭১ থেকে ৪ হাজার ৮৬৬ টাকা) মতো বাজেট রাখতে হবে প্রতিবেলা আহারের জন্য।
আর পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে বিভিন্ন বিনোদনমূলক কার্যক্রমগুলোর সম্ভাব্য খরচ ৩০৮ থেকে ৭৫৩ থাই বাত (১ হাজার ৬৮ থেকে ২ হাজার ৬১২ টাকা)।
সব মিলিয়ে একজনের জন্য প্রতিদিন ১ হাজার ৪৪৯ থেকে ৩ হাজার ১২ থাই বাত খরচের পরিকল্পনা রাখতে হবে পাতায়া ঘুরে বেড়ানোর জন্য। বাংলাদেশি টাকায় এই বাজেট প্রায় ৫ হাজার ২৬ থেকে ১০ হাজার ৪৪৭ টাকার সমান।
আরো পড়ুন: নেপালের অন্নপূর্ণা ট্রেকিংয়ে যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ভ্রমণকালীন প্রয়োজনীয় সতর্কতা
• বাংলাদেশ থেকে রওনা হওয়ার পূর্বে কিছু থাই বাথ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উত্তম। এতে করে বিমানবন্দরে নেমেই নতুন সিম কেনা, ট্যাক্সি বা অন্যান্য পাবলিক পরিবহন ভাড়া করাতে সুবিধা হবে।
• ইতিপূর্বে একবার পাতায়াতে গিয়েছে এমন কাউকে সফরসঙ্গী করা হলে ভ্রমণ খরচ অনেকটা কম আসবে।
• পাতায়া শহরে দিনের উষ্ণতম সময়টা একটু বেশিই গরম। তাই শীত-গ্রীষ্ম যে মৌসুমেই যাওয়া হোক না কেন, সঙ্গে মানসম্মত সান প্রোটেকশন নেওয়া জরুরি।
• স্কুটি ভাড়া করে দ্বীপের সবগুলো বিচ সহজেই ঘুরে বেড়ানো যায়; সেই সঙ্গে এক ভিন্ন রকম আনন্দময় অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।
• বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে প্রবেশের সময় স্থানীয় প্রথা ও ভাবগাম্ভীর্যের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
আরো পড়ুন: ভুটান ভ্রমণ: জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
শেষাংশ
থাইল্যান্ডের পাতায়া ভ্রমণে উপসাগরীয় জনপদের জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখার এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। নং নুচ বোট্যানিক্যাল গার্ডেন, পাতায়া বীচ এবং ফ্রা তাম্নাক পাহাড়ের মত বৈচিত্র্যপূর্ণ জায়গাগুলো আলাদাভাবে উপস্থাপন করে দেশের প্রকৃতিকে। অথচ কোথাও সংস্কৃতি ও প্রাণের স্পন্দনে এতটুকু বিরাম থাকে না। চাইনিজ নববর্ষ এবং সোংক্রান উৎসবগুলো থাই সংস্কৃতিকে রাজকীয় ভঙ্গিমায় পরিবেশন করে পর্যটকদের সামনে। কেবল নিছক কোনো অবকাশ যাপন নয়, এ যেন প্রতিটি মুহূর্তে এক ভিন্ন জীবনধারাকে চেতনায় ধারণ করা, যা নিঃসন্দেহে কতক অবিস্মরণীয় স্মৃতির যোগান দেয়।
আরো পড়ুন: তুলনামূলক কম দামে বিমানের টিকিট কেনার কৌশল
৩৮৭ দিন আগে
শেরপুরে দুই দিন ধরে হবে ‘ওয়ানগালা’ উৎসব
নৃ-জনগোষ্ঠি গারোদের অন্যতম প্রধান উৎসব ‘ওয়ানগালা’। নতুন ফসল ঘরে তোলাকে কেন্দ্র করে নবান্ন উৎসব হিসেবে এ ওয়ানগালা উৎসব উদযাপন করা হয়।
এ বছর আগামী ২৩ ও ২৪ নভেম্বর শেরপুরে ঝিনাইগাতী উপজেলার মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীতে অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানগালা উৎসব।
মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর নিয়ন্ত্রণে জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতবাড়ী উপজেলা এবং পাশ্ববর্তী জামালাপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার গারো সমাজের ৪৭টি গ্রাম রয়েছে। ওইসব গ্রামের প্রায় ২২ হাজার খৃষ্টান ধর্মাবলম্বী গারো সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস।
জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য খৃষ্টভক্ত এবং গারাগানজিং, কতুচ, রুগা, মমিন, বাবিল, দোয়াল, মাতচি, মিগাম, চিবক, আচদক ও আরেং নামে ১২টি গোত্রের গারো সম্প্রদায়ের শত শত লোক ওয়ানগালা উৎসবে শামিল হন।
গারো সম্প্রদায়ের কয়েকশত মানুষ দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন।
এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গারোদের নিজস্ব ভাষায় গান ও নৃত্য পরিবেশিত হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠান শেষে র্যাফেল ড্র ও বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। উৎসব ঘিরে ধর্মপল্লীর পাশে গারোদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও শিশুদের নানা রকমের খেলনা নিয়ে এক মেলা বসে।
আগামী রবিবার (২৪ নভেম্বর) মরিয়মনগর সাধূ জর্জের ধর্মপল্লীতে ওয়ানগালা উৎসবের ধর্মীয় ও সামাজিক আনুষ্ঠানিকতা চলবে। তবে আগেরদিন শনিবার ময়িমনগর ধর্মপল্লী উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে দিনব্যাপী গারোদের ঐতিহ্যবাহী রান্না ও খাবারের প্রদর্শনী। এ উপলক্ষে গারোদের ঐতিহ্যবাহী রান্না ও খাবারের প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
ঝিনাইগাতী ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (টিডব্লিওএ) সাধারণ সম্পাদক অসীম ম্রং জানান, গারো জনগোষ্ঠির আধ্যাত্মিক ও মূল্যবোধকে আরও সমৃদ্ধ এবং ঐতিহ্যবাহী গারো কৃষ্টি ও সংস্কৃতি চর্চায় নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করা হয় এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। যাতে বর্তমান প্রজন্ম এখান থেকে বুঝতে ও শিখতে পারে। ওয়ানগালা উৎসবটি গারো সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবও বটে।
মরিয়মনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক অঞ্জন আরেং বনে, ওয়ানগালা উৎসব আয়োজনের মূল লক্ষ্য হলো লুপ্তপ্রায় গারো জনগোষ্ঠির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির চর্চায় উৎসাহিত করা এবং ঐতিহ্যবাহী এই সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্ম ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠির নিকট তুলে ধরা। যাতে আমাদের নতুন প্রজন্ম এই সংস্কৃতি চর্চা ও সংরক্ষণ করতে পারে।
৩৮৮ দিন আগে
থাইল্যান্ডের কোহ সামুই দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অংশের দ্বীপাঞ্চলগুলো ভ্রমণের আকর্ষণীয় গন্তব্যগুলোর মধ্যে অন্যতম থাইল্যান্ড। বিশেষ করে দেশটির বিচিত্র জনপদ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ভ্রমণপিপাসুদের এক অমোঘ আকর্ষণে কাছে টানে। এমন স্মরণীয় অভিজ্ঞতার হাতছানি দিয়ে যে দর্শনীয় স্থানগুলো দেশটির পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে রেখেছে, সেগুলোর মধ্যে কোহ সামুই অন্যতম। দ্বীপটির একাধিক সৈকতের প্রাকৃতিক নৈসর্গ ও সর্বত্র জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের। চলুন, কোহ সামুই দ্বীপের প্রধান পর্যটনকেন্দ্রগুলোর ব্যাপারে বিশদ জেনে নেওয়া যাক।
কোহ সামুই দ্বীপের অবস্থান ও বিশেষত্ব
স্থানীয়ভাবে সংক্ষেপে সামুই হিসেবে পরিচিত এই দ্বীপটি সুরত থানি শহরের প্রায় ৩৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে থাইল্যান্ডের উপসাগরে অবস্থিত। ভৌগলিকভাবে এটি সুরত থানি প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত চুমফোন দ্বীপপুঞ্জের অংশ। ফুকেটের পর এই ২২৮ দশমিক ৭ বর্গ কিলোমিটারের দ্বীপটি থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ।
কোহ সামুই নামকরণের ইতিহাস
দ্বীপটির নামের উৎপত্তি নিয়ে স্পষ্ট তেমন কিছু জানা যায় না। তবে ধারণা করা হয়, ‘সামুই’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত-তামিল শব্দ থেকে, বাংলায় যার অর্থ ‘সমুদ্রের আবহাওয়া’। কেউ কেউ বলেন এটি আসলে একটি গাছের নাম, দক্ষিণ থাইল্যান্ডে যাকে ‘টন মুই’ (যার পুরো নাম টন সামুই) বলা হয়। স্থানীয়দের মধ্যে কারো কারো বিশ্বাস, ‘সামুই’ শব্দটি এসেছে মালয় শব্দ ‘সাবোয়ে’ থেকে, যার অর্থ ‘নিরাপদ আশ্রয়’। ‘কোহ’ বা ‘কো’ একটি থাই শব্দ এবং এর মাধ্যমে কোনও দ্বীপকে বোঝানো হয়।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার বাটাম দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
কোহ সামুই দ্বীপ ভ্রমণে কি কি দেখবেন
ওয়াত ফ্রা ইয়াই
এটি মূলত একটি বৌদ্ধ মন্দির, যার অবস্থান কো সামুইয়ের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট এক দ্বীপ কো ফানে। এখানে রয়েছে ১২-মিটার উচ্চতার এক বিশালাকৃতির বুদ্ধ মূর্তি। মন্দিরটির কাছাকাছি সমুদ্র সৈকতের নাম ব্যাং রাক হলেও এই মূর্তির জন্য বিগ বুদ্ধ বিচ নামে ডাকা হয়। মন্দির প্রাঙ্গণে একটি বাজারে পর্যটন এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নানা ধরণের সামগ্রী বিক্রি করা হয়।
সিক্রেট বুদ্ধ গার্ডেন
এই দর্শনীয় স্থানটি বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন ম্যাজিক গার্ডেন, হ্যাভেন্স গার্ডেন, খুন নিম পিক, এবং তার্নিম ম্যাজিক গার্ডেন। এটি মূলত পম পর্বতের চূড়ায় (সামুই দ্বীপের সর্বোচ্চ চূড়াগুলোর মধ্যে অন্যতম) নির্মিত একটি ব্যক্তিগত ভাস্কর্য পার্ক। স্থানটিতে বুদ্ধের অনেকগুলো মূর্তির পাশাপাশি দেখা যায় পাখি ও সাপসহ নানা ধরণের প্রাণী। বাগানে একটি ঝর্ণাও আছে। পবর্ত চূড়া পর্যন্ত উঠে যাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য হলেও জায়গাটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে অনেক জনপ্রিয়।
মু কো আং থং জাতীয় উদ্যান
এই সামুদ্রিক উদ্যানটি থাইল্যান্ড উপসাগরের প্রায় ১০২ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। এর মধ্যে প্রায় ৫০ বর্গ কিলোমিটার স্থলভাগে পড়েছে ৪২টি দ্বীপ এবং বাকি ৫২ বর্গ কিলোমিটারের সবটুকু পানি। দ্বীপগুলোর বিশেষত্ব হলো অত্যাশ্চর্য শিলা গঠন এবং নির্জন লেগুন। সাঁতার, ক্যানোয়িং এবং কায়াকিংয়ের জন্য এই স্থানগুলো সেরা।
দ্বীপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় কো ফালুয়াই পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে একদম নতুন। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে কো উয়া তালাপ। এর আও ফি সৈকতে একটি রেঞ্জার স্টেশন, বাংলো, দোকান এবং রেস্তোরাঁ রয়েছে।
৩৮৯ দিন আগে
বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণ: ঘুরে আসুন দ্বিতীয় সাজেক
পর্বত, অরণ্য ও সমুদ্রপ্রেমী এই তিন শ্রেণির পরিব্রাজকদের জন্য সেরা গন্তব্য হচ্ছে বান্দরবান। অতিকায় উচ্চতার নিঃসীম শূন্যতা উপভোগ করতে করতে সবুজ বনে ঢাকা পাহাড়ি রাস্তা ট্রেকিং করা নিঃসন্দেহে কষ্টসাধ্য। এরই মাঝে দু-একটি সুদৃশ্য ঝর্ণা যেন বিস্ময়ের অববাহিকায় দিয়ে যায় রোমাঞ্চকর পরশ। চূড়ায় ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই সেই অনন্ত শূন্যতার সঙ্গে আলিঙ্গনটা যেন এত কষ্টের স্বার্থকতা এনে দেয়। এর সঙ্গে দৃষ্টিসীমানায় ফেনিল সাগরের দৃশ্য জুড়ে দিলেই তা মিলে যাবে মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণ অভিজ্ঞতার সঙ্গে। দ্বিতীয় সাজেক নামে পরিচিত এই জায়গাটি ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক দর্শনীয় স্থানটির বৃত্তান্ত।
মিরিঞ্জা ভ্যালির অবস্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জেলা বান্দরবানের অন্তর্গত লামা উপজেলা। অপরদিকে,কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে আলীকদম সড়কে লামার অবস্থান। এই উপজেলারই অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর মিরিঞ্জা ভ্যালি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভ্যালির অবস্থান প্রায় ১ হাজার ৫০০ ফুট উঁচুতে।
মিরিঞ্জা ভ্যালির ইতিহাস ও বিশেষত্ব
সরাসরি ভ্যালির ইতিহাস বা এর নামকরণের উৎপত্তি নিয়ে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্সের গোড়াপত্তন হয়েছিল ২০০৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর প্রায় ১৬ একর পাহাড়ি ভূমিকে ঘিরে। এর আগেও কতিপয় ট্রেকারদের আনাগোনা থাকলেও এই কমপ্লেক্সই মূলত স্থানটির জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করে। মিরিঞ্জা পাহাড়ের দক্ষিণ প্রান্তের চূড়ায় ইট পাথরে নির্মাণ করা হয় বিখ্যাত টাইটানিক জাহাজের ভাস্কর্য,যার উদ্বোধন হয় ২০০৫ সালের ১৯ এপ্রিল।
এখানকার প্রধান আকর্ষণ হলো পাহাড় ও মেঘের অসাধারণ মিথস্ক্রিয়া। এই কারণে পর্যটনকেন্দ্রটিকে বর্তমানে দ্বিতীয় সাজেক ভ্যালি হিসেবে অভিহিত করা হয়।
আরো পড়ুন: হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ঢাকা থেকে বান্দরবানের মিরিঞ্জা ভ্যালি যাওয়ার উপায়
মিরিঞ্জা যাওয়ার জন্য প্রথমত রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ,ফকিরাপুল বা সায়েদাবাদ থেকে কক্সবাজারের বাস ধরতে হবে। অতঃপর গন্তব্যের আগেই নেমে যেতে হবে চকরিয়া বা চিরিঙ্গা বাস টার্মিনালে।
এছাড়া কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে রেলপথে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যাওয়া যায়। অতঃপর বাসে করে সরাসরি চকরিয়া বাস টার্মিনাল।
দ্রুত সময়ে যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজারের ফ্লাইট ব্যবহার করা যেতে পারে। তারপর কক্সবাজার থেকে বাসে করে চকরিয়া পৌঁছাতে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগে।
চকরিয়া থেকে লামা-আলীকদম সড়ক ধরে মিরিঞ্জা ভ্যালিতে যাওয়ার সিএনজি, জিপগাড়ি বা লোকাল বাস পাওয়া যায়। এই পরিবহনগুলো লামা-আলীকদম পথে মিরিঞ্জা পাহাড়ের পাশে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে ১০ মিনিট হাঁটার দূরত্বে ভ্যালির অবস্থান।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের ফুকেট ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
যারা ট্রেকিং করতে ইচ্ছুক তাদের চকরিয়া থেকে চান্দের গাড়িতে করে মুরুম পাড়া পর্যন্ত আসতে হবে। এখান থেকে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে ভ্যালি পর্যন্ত ২০ মিনিটের একটি সহজ ট্রেকিং পথ আছে।
চান্দের গাড়িগুলো মিরিঞ্জা পাড়া পর্যন্তও যায়, যেখানে মেইন রোড থেকে ভ্যালি মাত্র ১০ মিনিট হাঁটা পথ।
মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণে কী কী দেখবেন
পাহাড়ি রাস্তা বা ঝিরিপথ পেরিয়ে চূড়ায় আরহণের পর দূরে দেখা যায় মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স এবং সাঙ্গু নদীসহ বিশাল পাহাড়জুড়ে বিস্তীর্ণ সবুজ বনভূমি। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার জন্য এই চূড়া উপযুক্ত একটি স্থান। এখান থেকে দিগন্তরেখায় কক্সবাজার অংশের বঙ্গোপসাগরের উত্তাল জলরাশি চোখে পড়ে। সেই সঙ্গে দৃশ্যমান হয় লাইট হাউস,যার ক্ষীণ আলোয় সরু রেখায় আলোকিত হয়ে ওঠে পৃথিবীর দীর্ঘতম সৈকত।
মুগ্ধতার পরিসর আরও একটু বাড়িয়ে দিয়ে কখনো কখনো সেই রেখায় ভেসে ওঠে একটি দুটি জাহাজ। পাহাড়ের দক্ষিণ প্রান্তের টাইটানিক জাহাজের কাঠামোটিও এখানকার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। পর্যটনকেন্দ্রের কাছেই উপজেলা শহরে ম্রো, ত্রিপুরা, ও মারমাসহ মোট ১১ জনগোষ্ঠির বসবাস।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের চিয়াং মাই ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
মিরিঞ্জা ভ্যালি ভ্রমণের সেরা সময়
বর্ষাকালের শেষ থেকে শরৎকাল পর্যন্ত প্রায় সারাদিনই পরিষ্কার আকাশে শুভ্র মেঘের খেলা দেখা যায়। পাহাড়ের চূড়া থেকে এই দৃশ্য দেখার অনুভূতির কোনো বিকল্প হয় না। তবে এ সময়টাতে পাহাড়ি পথ বেশ পিচ্ছিল থাকে। ট্রেকিং পথ খুব একটা দুর্গম না হলেও উষ্ণ মৌসুমের ফলে পুরো যাত্রাটা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই এখানে আসার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে শীতের শুরু, তথা নভেম্বর মাস। এ সময় কুয়াশার ঘনঘটা তেমন থাকে না, বিধায় পাহাড়ের উপরের দৃশ্যগুলো ভালোভাবে দেখা যায়।
৩৯১ দিন আগে
বাসা-বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধে করণীয়
মানুষের মৌলিক অধিকারের একটি হলো বাসস্থান। বাসা-বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ অত্যন্ত জরুরি। মূলত একটি বাড়ি কেবল একটি অবকাঠামোই নয়, বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জীবনের নিরাপত্তা। তাই এই পরম আশ্রয় যখন হুমকির মুখে পড়ে, তখন তা জীবনের অস্তিত্বের জন্যই ক্ষতিকর। বিশেষ করে, ডাকাতির মতো অপরাধগুলোর ক্ষেত্রে সম্পদের ক্ষতি থেকে শুরু করে প্রাণনাশেরও আশঙ্কা থাকে। তাই, এর জন্য প্রয়োজন অগ্রিম সতর্কতা। এই নিবন্ধে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে, যা বাড়ির মালিকদের পাশাপাশি ভাড়াটিয়াদের জন্যও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। চলুন, কৌশলগুলোর ব্যাপারে বিশদ জেনে নেওয়া যাক।
বাসা-বাড়িতে ডাকাতি এড়াতে ১১টি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা
বাসস্থানে চুরি বা ডাকাতির আশংকা কমাতে বাড়ির সদস্যদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সচেতনতার পাশাপাশি কিছু নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা বাসায় ডাকাতের আক্রমণের সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে।
আগন্তুকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া
বাসা-বাড়ির দরজায় করাঘাত বা কলিং বেলের আওয়াজ শুনে তৎক্ষণাৎ সদর দরজা না খুলে দরজার পীপ হোল দিয়ে আগন্তুককে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অপরিচিত কেউ দরজার ওপাশে থাকলে পরিচয় ও আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করে নিতে হবে। সন্দেহ জনক এক বা একাধিক ব্যক্তি যদি বাসায় ঢোকার চেষ্টা করে তৎক্ষণাৎ নিরাপত্তা রক্ষী বা প্রতিবেশীদের সাহায্য নিতে হবে। প্রয়োজনে নিকটস্থ থানা বা আর্মি ক্যাম্পে ফোন দিতে হবে।
আরো পড়ুন: মোবাইল ফোন বিস্ফোরণ: কারণ ও বাঁচার উপায়
সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন
সাম্প্রতিক দশকগুলোতে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের জন্য বাংলাদেশে বহুল ব্যবহৃত প্রযুক্তির মধ্যে একটি হলো ক্লোজড-সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা। মূল প্রবেশদ্বার ও গ্যারেজে ক্রমাগত নজরদারির জন্য এই ক্যামেরাগুলো স্থাপন করা যেতে পারে। অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে ভিডিও ফুটেজ রেকর্ড হয়ে থাকে, ফলে দুষ্কৃতিকারীরা এই ব্যবস্থা যুক্ত স্থাপনাগুলো থেকে দূরে থাকে।
আধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোতে হাই-ডেফিনিশন ভিডিও রেকর্ডিং, নাইট ভিশন ও স্মার্টফোনের মাধ্যমে পরিচালনা করার সুবিধা থাকে। এর ফলে, এগুলোর মাধ্যমে রাতের অন্ধকারে তাৎক্ষণিকভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত বা সন্দেহভাজন আনাগোনা তদারক করা সম্ভব হয়। এমনকি, বাড়িতে না থাকলেও দূরবর্তী স্থান থেকে এই নজরদারি অব্যাহত রাখা যায়।
মোশন সেন্সর লাইট এবং সাইরেন অ্যালার্ম স্থাপন
ঘরবাড়ির আঙিনায় এমন কিছু স্থান থাকে যেগুলো পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও তুলনামূলকভাবে অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে। মোশন সেন্সর লাইট লাগানোর ক্ষেত্রে এই স্থানগুলোতে অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে। এই উন্নত প্রযুক্তি যেকোনো নড়াচড়া শনাক্ত করে এবং নির্দিষ্ট স্থানটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলোকিত হয়ে ওঠে। এটি মূলত চোর বা গুপ্ত হামলাকারীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকর।
আরো পড়ুন: নারীর নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় মোবাইল অ্যাপ
এটির সঙ্গে যখন সাইরেন অ্যালার্ম যুক্ত করা হয়, তখন দুটো মিলিয়ে একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি হয়। একসঙ্গে কয়েক জোড়া কদমের অনুপ্রবেশ বা দরজায় কষাঘাতের জন্য প্রধান ফটক বা দরজা এই ডিভাইস সংযুক্ত করার উপযুক্ত স্থান হতে পারে। এতে করে অ্যালার্মের শব্দে শুধু বাড়ির ভেতরে থাকা লোকেরাই নয়; আশেপাশের প্রতিবেশীরাও সজাগ হয়ে যাবে। ফলে সংকটাপন্ন পরিবারকে বাঁচাতে তারাও এগিয়ে আসতে পারবে অথবা পুলিশকে জানাতে পারবে।
রাতে ঘুমানোর আগে সব দরজা-জানালা বন্ধ করা
বাড়ির প্রধান প্রবেশদ্বার এবং জানালাগুলো যদি অসাবধানে খোলা রাখা হয়, তবে বাড়িতে প্রবেশের জন্য প্রাথমিক প্রতিবন্ধকতাই থাকে না। চুরি বা ডাকাতি সাধারণত রাতের অন্ধকারে ঘটে এবং এই ধরনের ভুলের কারণে তখন চরম মূল্য দিতে হয়। অনেকেই বাতাস চলাচলের জন্য রাতভর জানালা খোলা রেখেই ঘুমিয়ে পড়েন। এটি বিশেষ করে বিল্ডিংয়ের নিচের ২-৩ তলার বাসাগুলোর জন্য ক্ষতিকর।
অনেক বাসায় বারান্দা বা জানালায় টেকসই গ্রিল থাকে না। তাই, অন্তত প্রধান ফটকে উচ্চমানের ডেডবোল্ট লক অথবা কমপক্ষে দুটি স্তরের তালা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা উচিত। এছাড়া, প্রতিদিন ঘুমানোর আগে প্রত্যেকটি লক ভালোভাবে চেক করে নেওয়া একটি ভালো অভ্যাস।
আরো পড়ুন: স্মার্টফোনে ভূমিকম্প সতর্কতা চালু করবেন যেভাবে
প্রতিটি ব্লক বা মহল্লায় টহলরক্ষীসহ গেট নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ
জানমালের নিরাপত্তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয় আমলে নিয়ে শুধু রাতের জন্যই নয়, ২৪ ঘন্টার জন্য অতন্দ্র প্রহরার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি বিল্ডিংয়ে তো থাকবেই, সেই সঙ্গে ব্লক বা মহল্লার প্রধান গেটেও নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ দিতে হবে। টহলের সময় গেটগুলোতে যেন শূন্যস্থান সৃষ্টি না হয় সেজন্য রক্ষীর সংখ্যা বাড়াতে হবে।
এর মধ্য দিয়ে এলাকায় প্রবেশাধিকার নিরীক্ষণের একটি ব্যবস্থা তৈরি হবে। সাধারণত কেবল ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সেই এই ব্যবস্থা বেশি চোখে পড়ে। কিন্তু নির্জন রাস্তার বাড়িগুলোর ক্ষেত্রেও গার্ড মোতায়েনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
নিকটস্থ থানা ও আর্মি ক্যাম্পের যোগাযোগ নম্বর সংগ্রহে রাখা
পরিস্থিতি একদম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো নিরাপত্তা বাহিনীর যোগাযোগের তথ্যগুলো সংগ্রহে রাখা। এতে দুর্ঘটনা সৃষ্টির আভাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফোন কলের মাধ্যমে তাদের জানানো যায়। নিরাপত্তা হটলাইনের পাশাপাশি নিকটস্থ থানা এবং আর্মি ক্যাম্পের মোবাইল নম্বরও সঙ্গে রাখা আবশ্যক।
খুব বেশি বিপজ্জনক অবস্থার ক্ষেত্রে প্রতিবেশীদেরও এগিয়ে আসা উচিত। এক্ষেত্রে তারা কাউকে বিপদগ্রস্ত দেখার সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে নিরাপত্তা বাহিনীর সাহায্য চাইতে পারে।
আরো পড়ুন:
অ্যাপার্টমেন্টে নতুন আগত ভাড়াটিয়াদের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া
শুধু অ্যাপার্টমেন্টের মালিক বা বাড়িওয়ালাদের জন্যই নয়, নতুন আসা ভাড়াটিয়াদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া পুরাতন ভাড়াটিয়াদেরও দায়িত্ব। কোনো ফ্ল্যাটে নতুন কাউকে সাবলেট দেওয়া হচ্ছে কি না এবং নবাগতদের পেশা নিয়ে সুক্ষ্মভাবে যাচাই করা উচিত।
বাড়ির মালিকরা নতুন ভাড়া নেওয়াদের নিকট থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পেশাগত পরিচয়পত্রাদি অবশ্যই সংগ্রহ করবেন। অপরদিকে, অন্যান্য ফ্ল্যাটবাসীরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের পাশের ফ্ল্যাটের ব্যাপারে খোঁজ রাখবেন। এভাবে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত গোটা ভবনেই একটি স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখা যাবে।
বাড়ির আঙিনা অন্ধকারাচ্ছন্ন না রাখা
দুষ্কৃতিকারীদের ডাকাতি করার ক্ষেত্রে অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং জংলা, ঝোপ-ঝাড়ে আবৃত বাসাগুলো সবচেয়ে বেশি সহায়ক হয়। দুই বাড়ির মাঝের সংকীর্ণ স্থান এবং বাড়ির পেছন ভাগে এমন কিছু অল্প জায়গা থাকে যেগুলোতে দিনের বেলায়ও আলো-আঁধারীর অবস্থা বিরাজ করে। যেসব বাড়িতে বাগান রয়েছে, সেখানে বাগানের সঠিক পরিচর্যা করা না হলে গাছপালা অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে। ফলে মধ্য দুপুরেও বাগান ও বাড়ির আঙিনায় সূর্যালোক পৌঁছাতে পারে না। তাই নিয়মিতভাবে ঝোপ, গাছ ও ঘাস ছাঁটাই করা জরুরি।
আরো পড়ুন: হ্যাকিং প্রতিরোধ: অনলাইন কেনাকাটায় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সাবধানতা
অন্ধকারাচ্ছন্ন জায়গাগুলোতে অতিরিক্ত লাইট বা মোশন সেন্সর লাইট দেওয়া যায়। দীর্ঘ দিন ধরে বাড়ির কাছাকাছি কোনো ল্যাম্প পোস্টের লাইট অকেজো হয়ে গেলে দ্রুত তা বদলে দিতে হবে।
বাড়ির সীমানা ঘিরে দুর্ভেদ্য কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন
অনুপ্রবেশে প্রাথমিকভাবে যতটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যায় ততই ভালো। বেশ পুরোনো উপায় হলেও বাড়ির সীমানা জুড়ে কাটাতারের বেড়া স্থাপন বাড়ির সার্বিক নিরাপত্তায় অতিরিক্ত স্তর যোগ করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগুলোতেও এসেছে যথেষ্ট পরিবর্তন। তাই বেড়া নির্বাচনে সূক্ষ্ম স্পাইক বা কোণযুক্ত ধারের মতো বৈশিষ্ট্যগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে তা যেন মানসম্পন্ন এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়।
প্রতিবেশীরা সঙ্ঘবদ্ধভাবে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ
যেকোনো প্রতিরোধে সম্মিলিত থাকার কোনো বিকল্প নেই। একের বিপদে অপরজন এগিয়ে আসার মতো তাৎক্ষণিক উদ্যোগ আর কিছুই হতে পারে না। পাশাপাশি দুইটি বাড়ির মালিক বা ভাড়াটিয়া তাদের নিজ নিজ বাড়ির আশেপাশে সন্দেহজনক আনাগোনার দিকে খেয়াল রাখা মানে পরস্পরের দিকেই খেয়াল রাখা। নবাগত ভাড়াটিয়ার ব্যাপারে পরস্পরকে শেয়ার করা হলে পরবর্তী অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যায় একে অপরের বিপদে এগিয়ে যেতে পারে।
এভাবে আগে থেকেই অস্বাভাবিক কার্যকলাপগুলো নিজেদের মধ্যে শেয়ারের মাধ্যমে সতর্ক থাকা যায়। তাছাড়া ভয়াবহ সংকটপ্রবণ মূহুর্তগুলোতে কেবল পুলিশের ওপর নির্ভর না করে নিজেরাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রহরার ব্যবস্থা করা যায়।
আরো পড়ুন: দামি ফ্ল্যাগশিপ ফোন কেনার সুবিধা-অসুবিধা
দীর্ঘ ছুটি কাটানো নিয়ে বাড়ির বাইরে কথা না বলা
বাড়ির বাইরে প্রতিবেশী বা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আড্ডায় অনেকেই নিজের আসন্ন দীর্ঘ ভ্রমণের কথা বলে ফেলেন। এতে করে তিনি যে একটা উল্লেখযোগ্য সময় যাবত বাড়িতে অনুপস্থিত থাকবেন তা বৃহৎ পরিসরে জানাজানি হয়ে যেতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডাকাত বা তাদের সহযোগীরা এলাকার ভেতরেই থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে পরিকল্পনা সাজানো হয় নির্দিষ্ট কোনো বাড়িতে ডাকাতির জন্য। এ সময় তারা সাধারণ মানুষের বেফাঁস কথাগুলোর সুযোগ নেয়।
তাই দীর্ঘ ভ্রমণ বা ৬-৭ ঘণ্টার জন্য বাসায় একজনকে রেখে যাওয়ার বিষয়গুলো গোপন রাখা অপরিহার্য। মহল্লার কোনো খাবার হোটেল, টঙের দোকান, পার্ক বা গোলির মোড়ে আড্ডায় এই বিষয়গুলো কোনোভাবেই প্রকাশ করা ঠিক নয়।
পরিশিষ্ট
বাসা-বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধের এই উপায়গুলো আবাসিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার নামান্তর। এর জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে সংঘবদ্ধ ভূমিকার সমন্বয় ঘটানো জরুরি। এ ক্ষেত্রে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং মোশন-সেন্সর লাইট ও অ্যালার্ম স্থাপনের সুদূরপ্রসারি তাৎপর্য রয়েছে। রাতে দরজা-জানালা বন্ধ রাখা, সীমানায় কাটাতারের বেড়া স্থাপন, মহল্লায় প্রহরা বাড়ানো এবং প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য সংগ্রহে রাখা সাধারণ সতর্কতা। তবে নতুন ভাড়াটিয়াদের যাচাই করা, দীর্ঘ ভ্রমণের ব্যাপারে ঘরের বাইরে আলাপ না করা, এবং প্রতিবেশীরা সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নেওয়া সক্রিয়তার পরিচয় দেয়।
সর্বসাকূল্যে, প্রত্যেকটি কৌশলকে একীভূত করার মাধ্যমে বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটিয়া উভয় শ্রেণি সমানভাবে উপকৃত হতে পারবেন।
আরো পড়ুন: আইফোন চুরি প্রতিরোধে অ্যাপলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
৩৯৩ দিন আগে
ভিয়েতনামের হা লং বে দ্বীপপুঞ্জ ভ্রমণ: ঘুরে আসুন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহ্যের পাশাপাশি বৈচিত্র্যপূর্ণ ও রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা মেলে এশিয়া ভ্রমণে। ভ্রমণবান্ধব এই মহাদেশে ভিন্ন সংস্কৃতির জনপদ যেমন রয়েছে,ঠিক তেমনি রয়েছে ঝর্ণাস্নাত শান্ত পাহাড়,প্রাণবন্ত রেইনফরেস্ট ও আদিম সৈকত। তবে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ভিয়েতনামে এমন কিছু প্রাকৃতিক নিদর্শন রয়েছে,যা দেখার জন্য কেবল এই দেশেই বারবার ফিরে আসতে হবে। তারমধ্যে অত্যাশ্চর্য দর্শনীয় স্থানটি হলো হা লং বে,আর বিশ্ব পরিব্রাজকদের এই জনপ্রিয় গন্তব্য নিয়েই আজকের ভ্রমণ কড়চা। চলুন,বিস্তারিত ভ্রমণ বৃত্তান্তের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক, ঠিক কোন বিষয়গুলো হা লং বে’কে অন্যান্য বিশ্ব পর্যটনকেন্দ্র থেকে আলাদা করেছে
হা লং বে দ্বীপপুঞ্জের ভৌগলিক অবস্থান
উত্তর-পূর্ব ভিয়েতনামের কোয়াং নিন প্রদেশে অবস্থিত হা লং বে। উপসাগরটি কোয়াং ইয়েন শহর থেকে শুরু হয়ে হা লং ও ক্যাম ফা শহর পেরিয়ে ভ্যান ডন জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ল্যান হা বে,উত্তরে হা লং শহর এবং পশ্চিমে বাই তু লং বে-এর সঙ্গে এর সীমান্ত।
১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলরেখার এই উপসাগরের প্রায় ১,৫৫৩ বর্গ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে প্রায় ২ হাজার ছোট দ্বীপ রয়েছে।
আরো পড়ুন: ভুটান ভ্রমণ: জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
হা লং বে-এর বিশেষত্ব
উপসাগরটির বিশেষত্ব হলো এর নানান আকার-আকৃতির চুনাপাথরের কার্স্ট এবং ছোট দ্বীপগুলো। একে ঘিরে বিশাল অঞ্চলগুলোর প্রত্যেকটিরই ভূতাত্ত্বিক ও জলবায়ু সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যগুলো একই রকম।
১৯৬২ সালে ভিয়েতনামের সংস্কৃতি,খেলাধুলা ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বে’টিকে একটি ‘বিখ্যাত জাতীয় ল্যান্ডস্কেপ স্মৃতিচিহ্ন’ হিসেবে আখ্যায়িত করে।
বিশ্ব জুড়ের শৈল্পিক মূল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ অঞ্চলটি ১৯৯৪ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। এছাড়া ২০০০ সালে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি হা লং বেকে তার স্বতন্ত্র ভূতাত্ত্বিক মূল্যের জন্য স্বীকৃতি দেয়।
২০১২ সালে নিউ সেভেন ওয়ান্ডার্স ফাউন্ডেশন আনুষ্ঠানিকভাবে উপসাগরটিকে প্রকৃতির নতুন ৭ আশ্চর্যের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করে।
আরো পড়ুন: তুলনামূলক কম দামে বিমানের টিকিট কেনার কৌশল
হা লং বে ভ্রমণে কি কি দেখবেন আশ্চর্য কয়েকটি গুহা
এখানকার রহস্যময় গুহাগুলোর বর্তমান আকৃতি পেতে লেগেছে লাখ লাখ বছর। দানবীয় আকার ছাড়াও,গুহাগুলোর প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে স্ট্যালাগ্মাইট এবং স্ট্যালাক্টাইট।
স্ট্যালাক্টাইট বা উষ্ণ প্রস্রবণ হলো এক ধরনের খনিজ গঠন, যা গুহার ছাদ থেকে বরফের মতো জমাট বেঁধে ঝুলে থাকে। মূলত গুহার চুনাপাথরের ছাদ থেকে পানি ঝরার সময় চুনাপাথর দ্রবীভূত হয়ে এগুলো তৈরি হয়।
অপরদিকে,স্ট্যালাগ্মাইটও একই ধরণের খনিজ গঠন;পার্থক্য শুধু এই যে,এই শিলাকৃতির গঠনগুলো গুহার মেঝে থেকে উর্ধ্বমুখী হয়ে বৃদ্ধি পায়। অনেকটা সুন্দরী গাছের শ্বাসমূলের মতো;তবে দেখতে বরফাকৃতির।
শুধুমাত্র এই খনিজ গঠনগুলো কাছ থেকে দেখার জন্যই এখানে ভিড় করেন দেশ-বিদেশের লাখ লাখ পর্যটক।
তন্মধ্যে,রঙিন স্ট্যালাক্টাইট দেখা যায় থিয়েন কুং গুহায়। সবচেয়ে জনপ্রিয় অত্যাশ্চর্য নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে সুং সট এবং ডাউ গো গ্রোটো গুহা দুটি। কায়াকিংয়ের জন্য উৎকৃষ্ট হচ্ছে লুওন গুহা। গুহার একদম ভেতর থেকে সূর্যালোক দেখতে যেতে হবে ত্রিন নু গুহায়। মেজ কেভ সত্যিই দর্শনার্থীদের গোলক ধাঁধায় ফেলে দেয়। সেই সঙ্গে গুহার দেয়ালে আলোর প্রতিফলনের কারণে সৃষ্ট পরিবেশ পর্যটকদের মনস্তত্ত্বের সঙ্গে খেলা করে|
আরো পড়ুন: নেপালের অন্নপূর্ণা ট্রেকিংয়ে যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
৩৯৪ দিন আগে
ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করে হত্যার প্রতিবাদে প্রদর্শনী দৃকের
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় গণহত্যার খবর প্রচার দমন করতে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করায় ১৯১ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে দৃক পিকচার লাইব্রেরির উদ্যোগে 'গাজা হলোকাস্ট: কিলিং দ্য ট্রুথটেলারস' শীর্ষক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
দৃকের পরিবারের সদস্য ও বন্ধুবান্ধবদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত দর্শনার্থীরা ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য চলমান লড়াইয়ে নিহত সাংবাদিকদের ছবি নিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন।
এ বছরের শুরুতে ৫ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৪ উপলক্ষে দৃক পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে একই শিরোনামে ৭ দিনব্যাপী একটি প্রদর্শনী এবং একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: গাজায় এক বছরের যুদ্ধে ৪৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত
গাজায় নিহত গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজিত প্রদর্শনীর ভূমিকায় বিশিষ্ট আলোকচিত্রী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল আলম বর্ণনা করেন, ‘আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকার ইসরায়েল বন্ধ করায় ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরাই হাসপাতাল ধ্বংসের একমাত্র সাক্ষী ছিলেন। যেখানে একসময় মৃত্যুর পথযাত্রীদের জীবন বাঁচাতে তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে শ্রম দিয়েছিল এবং পরিত্যক্ত শিশুরা নির্জন ইনকিউবেটরে পড়ে ছিল। জীবন্ত অবস্থায় তাদের গণকবর দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘তারা দেখেছে ক্ষুধার্ত মানুষগুলো খাবারের ট্রাকের বাইরে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং গর্ভবতী মায়েদের স্তন শুকিয়ে গেছে। তাদের হৃদয় ব্যথায় ভারি হয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। তারা অনেক কিছু দেখেছে। অনেক বেশি বলেছে এবং শুটিং আর্কেডে কার্নিভালের হাঁসের মতো তুলে ফেলা হয়েছিল। কখনো একা, কখনো পরিবারের সঙ্গে। প্রযুক্তি জায়ান্টদের পরিচালিত ড্রোনগুলো তাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।’
শহিদুল আলম বলেন, ‘এই সাহসী সাংবাদিকরা তাদের আত্মত্যাগে বিবেকের প্রদীপ জ্বালিয়ে দিয়েছেন। তারা মাংস এবং হাড়ের চেয়ে বেশি ছিল। সত্য বলার পবিত্র শিল্পের কাছে শহীদ হয়েছেন তারা। তাদের লেন্স এমন একটি আয়না মানবতার অন্ধকারতম কোণগুলোকে তুলে ধরে। তাদের গল্পের ওজন আমাদের সম্মিলিত বিবেকের উপর চাপ দেয়।’
এই সংহতি প্রদর্শনীটি ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং চলমান গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার অঙ্গীকারের অংশ।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত
৩৯৫ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদের ৭৬তম জন্মদিন আজ
নন্দিত কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ৭৬তম জন্মদিন আজ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কাজী নজরুল ইসলামের পরে প্রায়শই বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা লেখক হিসাবে বিবেচিত তিনি।বাংলা সাহিত্যকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয় হুমায়ূন আহমেদকে। তিনি 'হিমু', 'মিসির আলী', 'বাকের ভাই' এবং অন্যান্য আইকনিক কাল্পনিক চরিত্রায়নের পাশাপাশি জাদুকরি গল্পের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত।
হুমায়ূন তার প্রথম উপন্যাস নন্দিত নরকে (১৯৭২) এর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছিলেন। তিনি ২০০ টিরও বেশি উপন্যাস ও গল্পের বই লিখেছেন। যার সবগুলোই বাংলাদেশে সর্বাধিক বিক্রিত। এখনও সেগুলো পাঠকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়।
বাঙালি সংস্কৃতি ও বিনোদন জগতে অসামান্য অবদানের জন্য নব্বই ও ২০০০-এর দশকে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পদক, বাচসাস পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
টেলিভিশনে একজন সফল কন্টেন্ট নির্মাতা হিসেবে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) প্রথম প্রহর (১৯৮৩) নাটকের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক করেন। টেলিভিশনে তার সফল যাত্রা অব্যাহত ছিল জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক 'এই সব দিনরাত্রি', 'বহুব্রীহি', 'অসময়', 'নক্ষত্রের রাত', 'আজ রবিবার' এবং 'বাকের ভাই' চরিত্রে অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর অভিনীত 'কোথাও কেউ নেই' নাটকটি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য।
হুমায়ূন আহমেদ ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসাবে সাফল্য লাভ করেছিলেন এবং তার চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্যারিয়ারে আটটি চলচ্চিত্র তৈরি করেছিলেন। প্রতিটি তার নিজের উপন্যাস অবলম্বনে। তার দুটি চলচ্চিত্র, 'শ্যামল ছায়া' (২০০৪) এবং 'ঘেটুপুত্র কমলা' (২০১২) তাদের নিজ নিজ মুক্তির বছরে সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য একাডেমি পুরস্কারের জন্য অফিসিয়ালি বাংলাদেশি জমা দিয়েছিল।
শঙ্খনীল কারাগার (চিত্রনাট্যকার হিসেবে), 'আগুনের পরশমণি', 'দারুচিনি দ্বীপ' ও 'ঘেটুপুত্র কমলা' চলচ্চিত্রের জন্য তিনি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সাতবার বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
আরও পড়ুন: হুমায়ূন আহমেদের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
হুমায়ূন আহমেদের জীবন ও কর্ম স্মরণে তার পরিবার, বিভিন্ন সংগঠন এবং তার গুণগ্রাহীরা আজ জন্মদিন উদযাপন করবেন।
হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মেহের আফরোজ শাওন তাদের ছেলে নিষাদ হুমায়ূন ও নিনিথ হুমায়ূনকে নিয়ে এই দিনে প্রতি বছর রাত ১২টায় রাজধানীর দক্ষিণ হাওয়া বাসভবনে কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করেন।
বিশিষ্ট এই লেখকের বিখ্যাত ফ্যান গ্রুপ হিমু পরিবহন বেশ কয়েক বছর ধরে তার জন্মদিন পালন করে আসছে। সাহিত্যিকের জন্মদিন উপলক্ষে আজ গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে যাবেন তারা।
এদিকে লেখকের নিজ জেলা নেত্রকোনায় তরুণদের সংগঠন হিমু পাঠক আড্ডায় দিনব্যাপী 'হিমু উৎসব' অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে বিখ্যাত গ্রন্থ 'মিসির আলী' অবলম্বনে তাদের নাটক 'আমি এবং আমরা' বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চস্থ করবে নাট্যদল বহুবচন।
লেখকের ৭৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বিকাল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে বিশেষ সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।
স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির সংস্কৃতি, সংবাদপত্র ও মিলনায়তন বিভাগের পরিচালক ড. সরকার আমিন এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন কথাসাহিত্যিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেবেন অধ্যাপক আহমেদ মাওলা ও অধ্যাপক সুমন রহমান।
এছাড়া আজ সকালে নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের সমাধিতে বিভিন্ন সংগঠন ও গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিকালে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
আরও পড়ুন: পাওয়া গেছে হুমায়ূন আহমেদের আঁকা হারিয়ে যাওয়া চিত্রকর্ম
৩৯৭ দিন আগে