বুধবার নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারী আয়োজিত ভোজ সভায় তিনি দুই দেশে অপার সম্ভাবনা থাকা সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, বিশেষ করে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ও পর্যটনের বিকাশ জোরদারে গুরুত্ব দেন।
নেপালের সাথে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অনেক গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি যোগ করেন যে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় নেপালের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও জনগণ যে নৈতিক ও বস্তুগত সমর্থন দিয়েছিল তা বাংলাদেশের মানুষ গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে।
দুই দেশ ও তাদের জনগণ ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ভাষার বন্ধনে আবদ্ধ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে নেপালের উন্নয়ন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং সুনিশ্চিত যে দেশটির সরকার আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য নেয়া কর্মপন্থা এবং রূপকল্প ‘সমৃদ্ধ নেপাল, সুখী নেপাল’ বাস্তবায়নে সফল হবে।’
আর্থসামাজিক সমৃদ্ধি অর্জনের এ প্রক্রিয়ায় নেপালকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রপতি হামিদ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের কর্মপন্থা গ্রহণ করেছে এবং সরকার নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে আপ্রাণ চেষ্টা করছে।
‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল তাদের ২০১৯ সালের হিসাবে ক্রয়ক্ষমতা সমতার ভিত্তিতে বাংলাদেশকে বিশ্বের ২৯তম বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে স্থান দিয়েছে। আমাদের জিডিপি বাড়ছে এবং ক্রমান্বয়ে দারিদ্র্য হ্রাস পাচ্ছে,’ বলেন তিনি।
আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে উল্লেখ করে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে সরকার বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ ও নেপাল বিদ্যমান ঐকতান বজায় রেখে নিজেদের মধ্যকার উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে সক্ষম হবে। ‘বহুপক্ষীয় ও আঞ্চলিক ফোরামে আমরা ঐতিহ্যগত নিবিড় সহযোগিতা বজায় রাখব এবং অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা অর্জনে কাজ করব।’
‘আমাকে অবশ্যই বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় দক্ষিণ এশিয়ার ঈর্ষণীয় ভূমিকার কথা, যেখানে বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা তাদের নেপালি কমরেডদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন,’ যোগ করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি হামিদ আরও বলেন, ‘এটা অনেক গর্বের বিষয় যে ২০২০ সালে যথাযথভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী আয়োজিত হবে এবং সেই সাথে ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হবে। আমি অপেক্ষায় আছি যে নেপালের বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণ আমাদের এ খুশি ও সুখ ভাগাভাগি করে নেবেন।’
রাষ্ট্রপতির স্ত্রী রাশিদা খানম, নেপালের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নন্দা বাহাদুর পোন, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি, নেপালের আইনপ্রণেতা ও বিশিষ্টজন, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক ও এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক, রাষ্ট্রপতির সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল শামীম-উজ-জামান, প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।