নেপাল
বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
নেপালে বিক্ষোভ ১৯ জনের মৃত্যুর পর পদত্যাগ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী খড়গ প্রসাদ (কে পি) শর্মা অলি।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি)।
এর আগে, বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করেন।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানী কাঠমান্ডুসহ দেশটির অন্তত সাতটি শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়, বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই তরুণ বা জেন-জি প্রজন্মের।
কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীরা একপর্যায়ে পুলিশের প্রতিবন্ধকতা ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। সে সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামান ব্যবহার করে নেপালের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে গুলিও চালানো হয়।
আরও পড়ুন: ১৯ মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলল নেপাল সরকার
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে তরুণদের নেতৃত্বে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে দেশটির সরকার।
গত সপ্তাহে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম ও বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে নেপাল সরকার। নতুন নিয়মনীতি মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়ার কারণ দেখিয়ে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে নিয়ম মানায় টিকটকসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠান বিধিনিষেধের আওতার বাইরে ছিল। এর প্রতিবাদে দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়।
৮৬ দিন আগে
১৯ মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলল নেপাল সরকার
নেপালে তরুণদের নেতৃত্বে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে দেশটির সরকার।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানী কাঠমান্ডুসহ দেশটির অন্তত সাতটি শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়, বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই তরুণ বা জেন-জি প্রজন্মের।
কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীরা একপর্যায়ে পুলিশের প্রতিবন্ধকতা ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। সে সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামান ব্যবহার করে নেপালের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে গুলিও চালানো হয়।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
সহিংসতার পর রাজধানীসহ আরও দুটি শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘পুরনো বন্ধু’ পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ‘প্রিয় বন্ধু’ শি
এরপর মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে সামাজিক মাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেয় দেশটির প্রশাসন।
এদিকে, বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী খড়গ প্রসাদ শর্মা অলি এক বিবৃতিতে বলেছেন, সহিংসতার ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও নিহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি।
বিক্ষোভের শুরু যেভাবে
গত সপ্তাহে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম ও বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে নেপাল সরকার। নতুন নিয়মনীতি মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়ার কারণ দেখিয়ে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে নিয়ম মানায় টিকটকসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠান বিধিনিষেধের আওতার বাইরে ছিল।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, মূলত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, ভুয়া খবর ও অনলাইন অপরাধ দমনের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর ওপর নতুন নিয়মনীতি কার্যকর করা হয়েছে।
তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে নেপালের জনগণ। একে সেন্সরশিপের হাতিয়ার এবং অনলাইনে সরকারের সমালোচনা করা বিরোধীদের শাস্তি দেওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের বন্দিশিবিরগুলোতে নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ
এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে ইউটিউবের মালিক গুগল কিংবা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা ও ইলন মাস্কের এক্স প্ল্যাটফর্মের মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে, এর আগে ২০২৩ সালে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে ৯ মাস টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকে। পরে টিকটক কর্তৃপক্ষ সরকারের নিয়ম মেনে নিবন্ধন নেওয়ার পর তাদের আবার কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হয়।
৮৬ দিন আগে
হিন্দুকুশ হিমালয় নিয়ে ভারত-চীন সংলাপের সেতুবন্ধন নেপাল: দেবপ্রিয়
হিন্দুকুশ হিমালয় (এইচকেএইচ) উদ্যোগ সফল করতে হলে ভারত ও চীনকে ‘সরাসরি ও চোখে চোখ রেখে’ দেখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, “নেপালকে ভারত ও চীনের মাঝখানে কৌশলগতভাবে অবস্থান করতে হবে, যাতে সেই সংলাপ এগিয়ে নেওয়া যায়। আমি আশা করি ভবিষ্যতেও তা হবে।”
সোমবার (১৮ আগস্ট) নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু শহরের একটি হোটেলে শুরু হওয়া হিন্দুকুশ হিমালয় (এইচকেএইচ) সংসদ সদস্যদের সম্মেলন-২০২৫-এর ফাঁকে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, দুর্যোগ ঝুঁকি এবং সংসদ সদস্যদের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় এক প্রশ্নের উত্তরে দেবপ্রিয় এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “দেখুন, আমরা এমন একটি নীতিগত বিষয় নিয়ে কথা বলছি, যা সীমান্ত অতিক্রম না করে সফল হতে পারে না। এটি একটি আঞ্চলিক বিষয়।”
দেবপ্রিয় বলেন, যে আটটি দেশ—আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, চীন, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল এবং পাকিস্তান—নিয়ে তারা আলোচনা করছেন, তাদের মধ্যে এই মুহূর্তে বিভিন্ন ধরণের সম্পর্ক রয়েছে।
তার দৃষ্টিতে এই দেশগুলোর প্রতিটি দেশই তাদের গণতান্ত্রিক ও উন্নয়নমূলক পরিবর্তনের বিভিন্ন স্তরে রয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “কিন্তু আসল কথা হলো, এই আটটি দেশের মধ্যে প্রধান সমস্যা হলো ভারত ও চীন এবং কেউই এই বিষয়ে কথা বলছে না।”
অর্থনীতিবিদ হিসেবে দেবপ্রিয় মনে করেন, যদি তাদের বিনিয়োগ করার জন্য কোনো রাজনৈতিক পুঁজি থাকে, তাহলে তা এই খাতে ব্যবহার করা উচিত এবং তাদের সঙ্গে জড়িত হওয়া উচিত। পাশাপাশি বোঝানো উচিত যে, দেশের স্বতন্ত্র পদ্ধতি সফল হবে না যদি আঞ্চলিক বা সম্মিলিত পদ্ধতিতে নতুন বহুকেন্দ্রিকতা গ্রহণ না করা হয়।
পড়ুন: আবারও জাতিসংঘ উন্নয়ন নীতি বিষয়ক কমিটিতে ড. দেবপ্রিয়
দেবপ্রিয় বলেন, “আমি আশা করি এবং প্রার্থনা করব, ভবিষ্যতে যখন জনপ্রতিনিধিরা জড়িত হবেন, তখন তারা চীন ও ভারতের জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সংস্থাগুলোর সঙ্গে আরও জোরালোভাবে জড়িত হবেন, যারা ইতোমধ্যেই বিভিন্নভাবে এতে অংশগ্রহণ করছে।”
পার্বত্য চট্টগ্রাম (সিএইচটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার নেতৃত্বে একটি বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল হিন্দুকুশ হিমালয় (এইচকেএইচ) সংসদ সদস্যদের সম্মেলন-২০২৫-এ যোগ দিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ‘এইচকেএইচ অঞ্চলে জীববৈচিত্র্যের কথোপকথন এবং মানব কল্যাণের ভারসাম্য রক্ষায় সংসদ সদস্যদের ভূমিকা’ শীর্ষক পৃথক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন—জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা এবং যুগ্ম সদস্য সচিব মীর আরশাদুল হক।
নেপালের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেল প্রধান অতিথি হিসেবে সভায় উপস্থিত ছিলেন, এবং স্পিকার দেবরাজ ঘিমিরে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, আন্তর্জাতিক কেন্দ্র ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি)-এর মহাপরিচালক পেমা গ্যামটশো এবং অন্যান্য অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিনিধিরাও উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য দেন।
পড়ুন: জাতিসংঘের এলডিসি সংক্রান্ত কমিটির সদস্য হলেন ড. দেবপ্রিয়
উদ্বোধনী অধিবেশনের পর বিভিন্ন প্রযুক্তিগত অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
এই অনুষ্ঠানটি হিন্দুকুশ হিমালয় অঞ্চলের দেশগুলোর সংসদ সদস্যদের মধ্যে সাধারণ বোঝাপড়া, সংলাপ এবং সমন্বয় অন্বেষণ করছে। হিন্দুকুশ হিমালয় মানব সভ্যতার প্রায় এক-চতুর্থাংশ টিকিয়ে রাখে। পাহাড়ের ২৪ কোটি এবং ভাটির ১৬৫ কোটি মানুষের জন্য পানি, খাদ্য এবং জীবিকা সরবরাহ করে।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অঞ্চলটি জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, দুর্যোগ এবং বায়ু দূষণের কারণে জরুরি এবং আন্তঃসংযুক্ত হুমকির সম্মুখীন। নেপালের ফেডারেল পার্লামেন্ট হিন্দুকুশ হিমালয় সংসদ সদস্যদের সম্মেলন আয়োজন করছে—যা এই অঞ্চলের আইন প্রণেতাদের সর্ববৃহৎ সমাবেশ।
এই যুগান্তকারী অনুষ্ঠান নীতিনির্ধারকদের চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে আলোচনা করার এবং আরও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের জন্য সম্মিলিত আন্তঃসীমান্ত সমাধান এগিয়ে নেওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে।
যুক্তরাজ্য আন্তর্জাতিক উন্নয়ন (ইউকেআইডি) এর বিদেশি কমনওয়েলথ এবং উন্নয়ন অফিস (এফসিডিও) এবং সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোঅপারেশন (এসডিসি) উদ্যোগে এইচকেএইচ পার্লামেন্টারিয়ানদের সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সম্মেলনটির লক্ষ্য—এইচকেএইচ দেশগুলোর পার্লামেন্ট সদস্যদের একত্রিত হওয়া, এইচকেএইচ অঞ্চলের সমস্যা, চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ সম্পর্কে সর্বশেষ জ্ঞান ও তথ্য পাওয়ার সুযোগ দেয়া, সেরা সংসদীয় অনুশীলনের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা এবং ভবিষ্যতমুখী নীতিগত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা।
হিন্দুকুশ হিমালয় (এইচকেএইচ) অঞ্চল ক্রমবর্ধমানভাবে জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ঝুঁকি, জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি এবং দূষণের তীব্র প্রভাবের পাশাপাশি ত্বরান্বিত আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের মুখোমুখি, যার ফলে বাস্তুতন্ত্র, প্রাকৃতিক সম্পদ, জীবিকা এবং মানব জীবনের উপর গুরুতর প্রভাব পড়ছে।
পড়ুন: বাজেটে নতুন চমক থাকছে না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
আয়োজকরা বলেছেন, নীতি নির্ধারণ, আইন প্রণয়ন এবং জনমত গঠনে সংসদ সদস্যদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে, এইচকেএইচ দেশগুলোর সংসদ সদস্যরা এই অঞ্চলের জলবায়ু কর্মকাণ্ড এবং স্থিতিস্থাপকতা বিষয়ক কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
তবে জাতীয়, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক ফোরামে লিঙ্গ সমতা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তিমূলক, গ্রহ-বান্ধব, পর্বত-বান্ধব এবং জলবায়ু-বান্ধব নীতিমালা সক্রিয়ভাবে এগিয়ে নিতে তাদের প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও প্রমাণের সুবিধা প্রয়োজন।
বিভিন্ন পরিবেশগত এবং আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জ ভাগাভোগ সত্ত্বেও, এইচকেএইচ সংসদ সদস্যদের তাদের ভাগ করা চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ নিয়ে আলোচনা এবং সম্মিলিতভাবে সমাধান চিহ্নিত করার জন্য আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্মের অভাব রয়েছে বলে আয়োজকরা উল্লেখ করেছেন।
১০৮ দিন আগে
নেপালে আদালতের কোনো রায় সম্পর্কে জানে না ইউএস-বাংলা
নেপালের একটি সংবাদমাধ্যমে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিরুদ্ধে আদালতের রায় হয়েছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য বা আদালতের রায়ের অনুলিপি পায়নি সংস্থাটি।
শনিবার (২৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, আদৌ এমন কোনো রায় হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তাদের আইন বিভাগ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যদি এ ধরনের কোনো রায় দিয়ে থাকে আদালত, তাহলে সেটি আইনগতভাবে বিশ্লেষণ করে যথাসময়ে গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট পক্ষকে অবহিত করা হবে।
আদালতের নির্ভরযোগ্য তথ্য বা অনুলিপি ছাড়া এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক কোনো সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রচার না করার আহ্বান জানিয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।
১৩১ দিন আগে
বাংলাদেশকে আরও জলবিদ্যুৎ দিতে আগ্রহী নেপাল
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাংলাদেশকে আরও জলবিদ্যুৎ দিতে আগ্রহী নেপাল।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) পরিবেশ উপদেষ্টার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে নেপালের পরিবেশমন্ত্রী আই বাহাদুর শাহী ঠাকুরি এই আগ্রহের কথা জানান।
বাকুতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বৈঠক শেষে এই তথ্য জানান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ভুটান, নেপাল ও ভারতের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন আছে। এছাড়া জানুয়ারিতে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা নিয়ে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার বন্ধ করতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
তিনি আরও বলেন, বৈঠকে অংশ নেবে নেপাল, ভূটান ও বাংলাদেশ। এটি কোথায় হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। এছাড়া ওই বৈঠকে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলার প্রশমন, অভিযোজন ও লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান পরিবেশ উপদেষ্টা।
লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে এক হয়ে কাজ করার ওপর জোর দেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বড় দেশগুলোর চেয়ে ছোট দেশগুলোর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা সক্ষমতা অনেক কম।
নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রায় একই। জলবায়ু পরিবর্তন কোনো সীমানা মানে না। এর প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের সবাইকে একই কাজ করতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: নদী-খাল দখলদারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের এখনই সময়: পরিবেশ উপদেষ্টা
আগামী প্রজন্মকে দূষণমুক্ত নদী-খাল দেখাতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
৩৮১ দিন আগে
বাংলাদেশ-ভারত, নেপাল ও ভুটানকে দক্ষিণ এশিয়ার গ্রিড তৈরির চিন্তা করা উচিত: অধ্যাপক ইউনূস
নেপাল ও ভুটানের উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ ভাগাভাগির জন্য দক্ষিণ এশিয়ার গ্রিড গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘নেপাল মাত্র ৪০ মাইল দূরে হওয়ায় বাংলাদেশ সহজেই জলবিদ্যুৎ আনতে পারে। নেপালের জলবিদ্যুৎও সস্তা হবে,’ উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানকে দক্ষিণ এশিয়ার গ্রিড তৈরির কথা ভাবতে হবে।
বাকুতে জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে সোশ্যাল বিজনেস গ্রুপের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে বিদ্যুৎ গ্রিডের অভাবে হিমালয়ের দেশগুলোর জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনার বেশিরভাগই অব্যবহৃত রয়ে গেছে।
নেপালের কর্মকর্তারা বলেছেন, তার দেশের ৪০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভারত ও বাংলাদেশের মতো বড় দেশগুলোতে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে সহায়তা করতে পারে।
আজারবাইজানের রাজধানীতে কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বন্যা প্রতিরোধ এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পানির সর্বোত্তম ব্যবহারে বাংলাদেশ পানি ব্যবস্থাপনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পানি আমাদের প্রধান পরিবেশগত সমস্যা। আমাদের পানি ব্যবস্থাপনা এমনভাবে করতে হবে যাতে তা প্রকৃতিকে সহায়ক হয় ‘
সামাজিক ব্যবসা সভায় তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুব উন্নয়ন ও দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের ওপরও জোর দিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সরকার আগামী জানুয়ারিতে তরুণদের জন্য একটি উৎসবের আয়োজন করবে। এই আয়োজনে দেশের ক্রিকেট বোর্ডের বার্ষিক টি-টোয়েন্টি বিপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: কপ২৯: বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
৩৮৬ দিন আগে
নেপালের অন্নপূর্ণা ট্রেকিংয়ে যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
অজানা ও রহস্যময় জনপদ অন্বেষণের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার নাম ট্রেকিং, যেখানে ভাঙতে হয় দুঃসাহসিকতা ও শারীরিক সহনশীলতার বাঁধ। পিলে চমকে দেওয়া উচ্চতায় বিস্তৃত বীথিকাজুড়ে আন্দোলিত হয় ভয়ঙ্কর সুন্দরের উপাখ্যান। নতুন কিংবা অভিজ্ঞ; যে কোনো ট্রেকারের মনেই এই নৈসর্গ সৃষ্টি করে দুর্গমকে আলিঙ্গনের এক অদম্য নেশা। আর ঠিক এ কারণেই অবিস্মরণীয় হিমালয়ের বুকে নেপালের অন্নপূর্ণা পরিণত হয়েছে ট্রেকারদের স্বর্গরাজ্যে। এই জনপ্রিয় ট্রেকিং গন্তব্য নিয়েই আজকের ভ্রমণ নিবন্ধ। চলুন, অন্নপূর্ণা ভ্রমণের উপায় ও প্রয়োজনীয় খরচ নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
অন্নপূর্ণার ভৌগলিক অবস্থান
উত্তর-মধ্য নেপালের গন্ডাকি প্রদেশের অন্নপূর্ণা পর্বতশ্রেণীর প্রধান পর্বত অন্নপূর্ণা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৮ হাজার ৯১ মিটার। এর সুপরিচিত ট্রেকিং অঞ্চলটি হলো ৭ হাজার ৬২৯ বর্গ-কিলোমিটারের অন্নপূর্ণা কন্জার্ভেশন এরিয়া। এখানকার ট্রেকিং রুটগুলোর মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় হলো-
· অন্নপূর্ণা অভয়ারণ্য থেকে অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্পের রুট
· অন্নপূর্ণা হিমাল ও জমসম রুটসহ অন্নপূর্ণা সার্কিট
· জমসন থেকে জোমসম ও মুক্তিনাথ মন্দিরের রুট
এছাড়াও ঘোরেপানি বা ঘান্ড্রুকের মতো আরও কিছু প্রসিদ্ধ রুট রয়েছে। প্রায় সবগুলো রুটেরই শুরু হয় পোখারা শহর থেকে। বিভিন্ন আকারের হওয়ায় প্রত্যেকটি রুট অতিক্রম করতে ভিন্ন ভিন্ন সময়ের প্রয়োজন হয়। ন্যূনতম ৩ থেকে ৪ দিন থেকে শুরু করে কোনো কোনো রুটে ২ সপ্তাহেরও অধিক সময় লেগে যায়।
আরো পড়ুন: ট্রেকিং, হাইকিং, ক্যাম্পিং ও ভ্রমণের সময় সাপের কামড় থেকে নিরাপদে থাকার উপায়
নেপালের পর্যটন ভিসা আবেদনের পদ্ধতি
সার্কভুক্ত দেশ হওয়ায় বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য নেপালে রয়েছে বিনামূল্যে অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা। মূলত ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য ভ্রমণ করা হলে কোনো ভিসা ফি’র প্রয়োজন হয় না। বিমানবন্দরেই কাস্টম্সের সময় ‘পর্যটন ভিসা’ এবং ‘আগমন কার্ড’-এর জন্য দরকারি ফর্ম পূরণ করা যায়। তবে বাংলাদেশে থাকা অবস্থায় নেপাল অভিবাসনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকেও ভিসার আবেদন করা যায়। এতে করে কাস্টম্সে সময় বাঁচে। ভ্রমণের ন্যূনতম ১০ দিন আগে থেকে আবেদন জমা দেওয়া যায়।
আবেদনের লিংক: https://nepaliport.immigration.gov.np/on-arrival/IO01
এই পর্যটন ভিসার আবেদনের জন্য যে নথিপত্র লাগবে, তা হচ্ছে-
· নেপালে পৌঁছার দিন থেকে কমপক্ষে ৬ মাসের মেয়াদ থাকা বৈধ পাসপোর্ট
· সম্পূর্ণ পূরণ করা ভিসা আবেদন ফর্ম
· সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
· জন্ম সনদ অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড)
বিমানবন্দরে অভিবাস সংক্রান্ত কাজের সময় সঙ্গে রিটার্ন টিকেট, নেপালে হোটেল বুকিংয়ের কাগজ, এবং পাসপোর্ট রাখতে হবে।
এরপর ট্রেকিংয়ের জন্য অতিরিক্ত পার্মিট নিতে হবে। একটি এসিএপি (অন্নপূর্ণা কন্জার্ভেশন এরিয়া প্রোজেক্ট) অফিস থেকে এসিএপি পার্মিট। এর জন্য পাসপোর্ট আর ৪ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগে। পার্মিট ফি ১ হাজার নেপালি রুপি বা ৮৮৯ টাকা (১ নেপালি রুপি = ০ দশমিক ৮৯ বাংলাদেশি টাকা)।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে- টিআইএমএস (ট্রেকিং ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) কার্ড, যার জন্য খরচ হবে আরও ১ হাজার রুপি (৮৮৯ টাকা)।
আরো পড়ুন: এভারেস্টজয়ী ৬ বাংলাদেশি: লাল-সবুজের পতাকা হাতে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয়ের অনুপ্রেরণা
অন্নপূর্ণা ভ্রমণে কি কি দেখবেন
রাজকীয় পর্বতমালার পটভূমিতে এখানে রয়েছে অবারিত রডোডেনড্রন বন, আলপাইন তৃণভূমি ও হিমবাহ উপত্যকা। চোখে পড়ে তুষার চিতাবাঘ, নীল ভেড়া ও দুর্লভ প্রজাতির পাখি। অনন্য সংস্কৃতির প্রতিনিধিরূপে বহুকাল ধরে এখানে বসবাস করছে গুরুং, থাকালি ও মানাঙ্গির মতো সম্প্রদায়গুলো। ফলে পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় জন কোলাহলের গ্রামগুলোতে দেখা যায় প্রাচীন মঠের মতো নানা ধর্মীয় স্থান।
তন্মধ্যে ঘোরেপানি গ্রামের কাছাকাছি অবস্থিত পুন হিল অন্নপূর্ণা ও ধৌলাগিরি রেঞ্জ সূর্যোদয় দর্শনের জন্য বিখ্যাত।
তিব্বতি শৈলীতে প্যাগোডার মতো ছাদ ও জটিল কাঠের খোদাইয়ে গড়ে তোলা হয়েছে মুক্তিনাথ মন্দির। এখানে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ১০৮টি জলধারা সম্বলিত স্থাপনা মুক্তিধারা। ভূগর্ভস্থ প্রাকৃতিক গ্যাসের কারণে মন্দির কমপ্লেক্সের মধ্যে রয়েছে একাধিক চিরন্তন শিখার ‘জ্বালা মাই’।
মন্দিরের পেছনে অভিজাত থুরং লা পাস এবং অন্নপূর্ণা ও ধৌলাগিরি পর্বতমালার তুষারাবৃত শৃঙ্গ।
নার্ফু নদীর পাশে রয়েছে নিঃসঙ্গ অথচ অপরুপ সুন্দর নার্ফু ভ্যালি। মাস্তাঙ জেলার উপরের অংশে পাওয়া যাবে নেপালের প্রাচীন গুপ্ত শহর লো মান্থাংর দেখা। তিলিকো লেকের স্বচ্ছ পানিতে চারপাশের পাহাড়ের প্রতিফলন যেন সম্মোহনের নামান্তর।
ট্রেকারদের যাত্রা বিরতির জন্য জনপ্রিয় স্টপেজ ঘান্ড্রুক গ্রাম, যেখান থেকে পাহাড়ি বীথিকার সবচেয়ে আশ্চর্য রূপটা দেখা যায়।
থুরং লা পাস ধরে ৫ হাজার ৪১৬ মিটার পথ পাড়ি দেওয়ার সময় চোখে পড়ে অন্নপূর্ণা ১, ২, ৩ ও ৪, মানাস্লু, গঙ্গাপূর্ণা ও ল্যাংট্যাং হিমাল।
আরো পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপ ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
অন্নপূর্ণা ট্রেকিংয়ের সেরা সময়
অতিরিক্ত তুষারপাতের কারণে শীতকালে প্রায়ই ট্র্যাক বন্ধ থাকে। অন্নপূর্ণা ট্রেকিংয়ের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হচ্ছে বসন্তকাল। অর্থাৎ মার্চ থেকে এপ্রিল মাসের সময়কে বেছে নেওয়া যেতে পারে। তাছাড়া শীতের আগ দিয়ে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মৌসুমটাও ভালো।
সরাসরি নেপালের ফ্লাইট এবং হোটেল বুকিং করবেন যেভাবে
অভিবাসন সংক্রান্ত কাজের জন্য আগাম ফ্লাইট টিকেট এবং হোটেল বুকিং করে নেওয়াটা জরুরি। বিমানের টিকেটের জন্য অনলাইন পোর্টালগুলোর মধ্যে রয়েছে গোজায়ান, ফ্লাইট এক্সপার্ট ও শেয়ার ট্রিপ। এগুলোতে রাউন্ড ট্রিপের বিমান ভাড়া নির্ভর করবে কিছু বিষয়ের উপর যেমন এয়ার লাইনস কোম্পানি, বুকিংয়ের সময়, বিভিন্ন অফার, ইত্যাদি।
শেয়ার ট্রিপ ও গোজায়ানের মাধ্যমে প্রতি রাতের জন্য জনপ্রতি ৬৯৪ টাকা থেকে ৪ হাজার ৫১৩ টাকার মধ্যে হোটেল বুকিং দেওয়া যাবে।
কাঠমান্ডু ও পোখারার অনেক ট্রাভেল স্টোরে স্লিপিং ব্যাগ ও ডাউন জ্যাকেট ভাড়া পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে স্লিপিং ব্যাগ ভাড়া প্রতিদিনের জন্য ২০০ থেকে ৫০০ রুপি বা ১৭৮ থেকে ৪৪৪ টাকা। অপরদিকে, ডাউন জ্যাকেট ভাড়া দিনপ্রতি ২০০ থেকে ৪০০ রুপির (১৭৮ থেকে ৩৫৬ টাকা) মধ্যে।
আরো পড়ুন: ভিয়েতনাম ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
অন্নপূর্ণার সামগ্রিক ভ্রমণ খরচ কেমন হতে পারে
একদম নতুনদের জন্য অন্নপূর্ণা ভ্রমণে গাইড সঙ্গে নেওয়া আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিনের জন্য গাইডকে দিতে হতে পারে ৩ থেকে ৪ হাজার রুপি (২ হাজার ৬৬৬ থেকে ৩ হাজার ৫৫৫ টাকা)।
বিভিন্ন আকারের পাহাড়ি পথগুলোতে যাত্রা পথে থাকার জন্য ট্রেকারদের প্রথম পছন্দ থাকে ট্রি-হাউসগুলো। প্রতি রাতের জন্য এখানে ভাড়া দিতে হয় ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ রুপি (৩৫৬ থেকে ১ হাজার ৩৩৩ টাকা) পর্যন্ত। এখানে সরবরাহকৃত খাবারের দাম সাধারণত ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ রুপির (৪৪৪ থেকে ১ হাজার ৩৩৩ টাকা) মধ্যে হয়ে থাকে।
তবে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো যাত্রার জন্য খাবারের জন্য দিনপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার রুপি (১ হাজার ৭৭৮ থেকে ২ হাজার ৬৬৬ টাকা) বাজেট রাখা উচিত। শহরের রেস্তোরাঁ বা স্ট্রিট ফুডগুলোতে খরচ হতে পারে ২০০ থেকে ৫০০ রুপি (১৭৮ থেকে ৪৪৪ টাকা)।
পদব্রজে ভ্রমণ শুরুর পূর্বে যানবাহনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে শেয়ার্ড জিপের খরচ জনপ্রতি ৫০০ থেকে ৮০০ রুপি (৪৪৪ থেকে ৭১১ টাকা)। তবে লোকাল বাসে এই খরচটা ২০০ থেকে ৩০০ রুপিতে (১৭৮ থেকে ২৬৭ টাকা) নেমে আসে। তবে কাঠমান্ডু থেকে সরাসরি পোখারার ট্যুরিস্ট বাসের টিকেট মূল্য জনপ্রতি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ রুপি (৮৮৯ থেকে ১ হাজার ৬৭ টাকা)।
সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১৪ দিনের ট্রেকিংয়ের উদ্দেশ্যে নেপাল ভ্রমণের জন্য সম্ভাব্য বাজেট ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার রুপি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই বাজেট ৫৩ হাজার ৩২৭ থেকে ১ লাখ ৬ হাজার ৬৫৪ টাকার সমান।
আরো পড়ুন: থাইল্যান্ডের ক্রাবি ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ট্রেকিংয়ের জন্য যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি
· মাইনাস ১৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় থাকার জন্য উপযোগী কাপড়-চোপড় সঙ্গে নেওয়া
· কাপড়ের ফেব্রিক পলেস্টার বা সিনথেটিক হওয়া উচিত। এতে করে ঘামে ভিজে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা থাকে না।
· পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটার জন্য আরামদায়ক বুট, ট্রেকিং স্যান্ডেল ও ৩ থেকে ৪ জোড়া মোজা
· ক্যামেরার সঙ্গে চার্জারসহ অতিরিক্ত ব্যাটারি ও পাওয়ার ব্যাংক
· ব্যাগ খুব ভারী হওয়া চলবে না
· পাঞ্চ টাইপের রেইনকোর্ট
· ত্বকের আর্দ্রতার জন্য পেট্রোলিয়াম জেলি
· পোলার্ড আইস সানগ্লাস
· পাতলা ও মোটা মোট ২ রকমের গ্লাভ্স
· পাসপোর্ট ও এনআইডির মূল্য কপির সঙ্গে ফটোকপি ও কমপক্ষে ৬ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি |
আরো পড়ুন: ভুটান ভ্রমণ: জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান, যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
ট্রেকিংয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধ
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ নিতে হবে। এছাড়াও নিতে হবে:
· মেডিকেল ফার্স্ট এইড
· হেক্সিসল (বিমানে বহন নিষেধ, তাই নেপালে প্লেন থেকে নেমে কিনে নিতে হবে)
· ওয়ান টাইম ব্যান্ড এইড ও মাইক্রোপোর ব্যান্ডেজ
· আইস কুল ম্যাক্স
শেষাংশ
নেপালের অন্নপূর্ণা ট্রেকিং মানেই অমূল্য এক অভিজ্ঞতা, যেখানে বিস্ময়কর প্রকৃতির সঙ্গে সন্নিবেশ ঘটে অনন্য জনগোষ্ঠীর সান্নিধ্য। এই অভিজ্ঞতা লাভের জন্য নেপালের অন-অ্যারাইভাল ভিসার পাশাপাশি নিতে হবে এসিএপি ও টিআইএমএস পার্মিট। বৈচিত্র্যপূর্ণ পাহাড়ি পথগুলোর কোনো কোনোটি অতিক্রম করতে ২ সপ্তাহেরও বেশি সময় লেগে যায়। তাই ভ্রমণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকা জরুরি। ট্রেকিংয়ের সময় যাত্রা বিরতির জন্য স্লিপিং ব্যাগ বা ডাউন জ্যাকেট নেওয়া একই সঙ্গে আরামদায়ক ও রোমাঞ্চকর। সর্বোপরি, একটি স্বাস্থ্যকর ট্রেকিং অভিজ্ঞতার জন্য ওষুধপত্রসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো সঙ্গে রাখা অপরিহার্য।
আরো পড়ুন: তুলনামূলক কম দামে বিমানের টিকিট কেনার কৌশল
৪১৪ দিন আগে
ভারত ও নেপালের সঙ্গে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি সই
নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভারত ও নেপালের সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ।
চুক্তির আওতায় জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসের জন্য নেপাল থেকে ভারত হয়ে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাবে বাংলাদেশ। নেপালের
রাজধানী কাঠমান্ডুতে ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় চুক্তি সই হয়।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি), নেপালের বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ (এনইএ) এবং ভারতের এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যবসা নিগম লিমিটডের (এনভিভিএন) প্রতিনিধিরা চুক্তি সই করেন।অনুষ্ঠানে নেপালের জ্বালানি, পানি সম্পদ ও সেচমন্ত্রী দীপক খাড়কা, বাংলাদেশের পানিসম্পদ সচিব নজমুল আহসান এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারি উপস্থিত ছিলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এই চুক্তি আঞ্চলিক জ্বালানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি শুধু তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের বিষয় নয়, বরং আমাদের দেশগুলোর দীর্ঘমেয়াদি এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়াও।’
এর আগে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সঙ্গে সিংহ দরবারে সাক্ষাৎ করেন পরিবেশ উপদেষ্টা।
দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তারা।এই ঐতিহাসিক বিদ্যুৎ চুক্তি সইয়ের সাক্ষী হতে পরিবেশ উপদেষ্টা দুই দিনের সফরে নেপালে অবস্থান করছেন। এটি বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারতের মধ্যে জ্বালানি সম্পর্ক জোরদারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের দুর্নীতি তদন্তে অভিযোগ জানানোর আহ্বান এনআরসির
৪২৭ দিন আগে
নেপালে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দুইশ ছাড়িয়েছে
নেপালে টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০৫ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির পুলিশ জানায়, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ জন নিখোঁজ এবং ১৩০ জন আহত হয়েছে।
এ অবস্থায় দেশটিতে মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের জাতীয় শোক পালন করা হচ্ছে।
সরকারের মুখপাত্র ও যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং বলেন, 'শোকের সময় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।
শোকসন্তপ্ত প্রতিটি পরিবারকে ২ লাখ নেপালি রুপি বা ১ হাজার ৪৯৭ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেপাল সরকার।
আরও পড়ুন: নেপালে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯৩
সরকারের মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে জানান, টানা বৃষ্টিতে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে পরিবারের সদস্য নিখোঁজ রয়েছে এমন পরিবারকেও একই পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
এই দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর দুর্যোগ ত্রাণ তহবিলে ১০০ কোটি রুপি বা ৭ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা।
আরও পড়ুন: নেপালে বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৮
৪২৯ দিন আগে
নেপালে বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৮
নেপালে টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট ভূমিধস ও বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দেশটির পুলিশ এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখন পর্যন্ত ১০১ জন আহত এবং ৫৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ৩ হাজার ৬৬১ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধার অভিযানে ২০ হাজারের বেশি পুলিশ মোতায়েন করেছে নেপাল সরকার।
আরও পড়ুন: নেপালে বন্যা-ভূমিধসে ৬৬ জনের মৃত্যু, আবারও অনেক নিখোঁজ
কাঠমান্ডুর জেলা পুলিশ রেঞ্জের মুখপাত্র নওয়ারাজ অধিকারী সিনহুয়াকে জানান, মধ্য নেপালের ধাদিং জেলার জায়াপল খোলায় ভূমিধসে চাপা পড়া তিনটি যাত্রীবাহী বাস থেকে ৩৫টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, 'অবরুদ্ধ মহাসড়কগুলোতে তল্লাশি, উদ্ধার ও পরিষ্কার করার জন্য বিভিন্ন নিরাপত্তা দল মোতায়েন করা হয়েছে।’
শুক্রবার টানা বর্ষণের কারণে ভূমিধস ও বন্যায় দেশের বেশিরভাগ প্রধান মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও রাতে মহাসড়কে রাতে বাস চলাচল নিষিদ্ধ করা হয় এবং গাড়ি চলাচল না করতে আহ্বান জানানো হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক জানান, কর্মকর্তারা বন্যার বর্তমান ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছেন। লোকজনকে উদ্ধার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার।
এছাড়াও সারা দেশে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করা হয়।
গত ১০ জুন থেকে শুরু হওয়া বর্ষা মৌসুমে নেপালে গড় পরিমাণের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আরও পড়ুন: নেপালে বন্যা ও ভূমিধসে নিহত ৫৯, আহত ৩৬
৪৩১ দিন আগে