মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলে, তদন্ত কর্মকর্তার দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দুদকের পক্ষে এর দায় কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। একই সাথে, ঘুষ লেনদেনে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তার সব অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দায়ও পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি দুদকের।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে আমরা জেনেছি যে ‘তথ্য পাচার, চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও অসদাচরণের অভিযোগে’ খন্দকার এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং দুদকের তদন্ত কমিটি পূর্ণাঙ্গ তদন্তের সুপারিশ করেছে।’’
‘এ ধরনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে রীতিমতো শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করতে না পারলে দুদকের ওপর মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা অসম্ভব হবে। একই সাথে, দুর্নীতিরও আরও ব্যাপক বিস্তার ঘটবে। দেশে দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষায়িত কর্তৃপক্ষের ওপর দেশের মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ তদন্ত শেষ করে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
দুদকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের কর্মকর্তাদের নিজেদের ক্ষেত্রে শূন্য সহনশীলতার কার্যকর চর্চা ও সে অনুযায়ী জনবল ঢেলে সাজানো এখন সময়ের দাবি বলে মনে করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
ব্যক্তির দায় প্রতিষ্ঠান নেবে না বলে দুদক যে অবস্থান নিয়েছে তাতে টিআইবি হতাশ এবং দেশে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত, বলেন ড. জামান।
‘একজন উচ্চপদস্থ তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণসহ দুর্নীতির অভিযোগ আসার পর আমাদের প্রত্যাশা ছিল দুদক একে প্রাতিষ্ঠানিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেবে এবং তাদের অন্য কোনো কর্মকর্তাও যে এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত নন তা নিশ্চিত করতে দৃশ্যমান, বিশ্বাসযোগ্য ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। দুদক নিজেই যদি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও দুর্নীতিমুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারে তাহলে তাদের কার্যক্রমের ওপর জনগণের আস্থা থাকবে কী করে,’ প্রশ্ন করেন তিনি।
পাশাপাশি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান ঘুষ দেয়ার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করার পরও তার স্বপদে বহাল থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
তিনি বলেন, ‘ঘুষ লেনদেনে জড়িত দুই পক্ষই সমানভাবে দায়ী। বিশেষ করে যখন কোনো ব্যক্তি দুর্নীতির অভিযোগ থেকে পার পেতে ঘুষ দেন তখন তার অপরাধের মাত্রা আরও গুরুতর হয়। অথচ গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে আমরা জেনেছি যে পুলিশ প্রশাসন এখনও কোনো পদক্ষেপই নেয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার যে ঘোষণা দিয়েছেন তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক এ ঘটনায় জড়িত দুপক্ষের বিরুদ্ধেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।