পুলিশ
সোনারগাঁওয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে হাতকড়াসহ আসামি ছিনতাই
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে হাতকড়াসহ আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সোনারগাঁও উপজেলার বৈদ্দেরবাজার খেয়াঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, সোনারগাঁ থানার পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানার নলচর গ্রামের একটি হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি মহসিন এবং যুবলীগ নেতা টিটু। তাদের গ্রেপ্তার করতে মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম, এসআই জিয়াউর রহমান ও দুই পুলিশ সদস্য সোনারগাঁও থানাকে অবহিত করে বৈদ্দেরবাজার এলাকায় অভিযান চালায়।
মহসিনকে গ্রেপ্তার করায় আসামিদের পক্ষে স্থানীয় সাতভাইয়াপাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেন, উজ্জল, ইকবাল, বাবুল লিটন দাসসহ প্রায় ৩০/৪০ জন লোক একত্রিত হয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে হাতকড়াসহ তাকে ছিনিয়ে নেন।
আরও পড়ুন: কাশিমপুর কারাগার থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩ আসামির পালানোর চেষ্টা
এ সময় খাজা মিয়া নামের এক বিকাশ দোকানদারের দোকান ভাঙচুর করে অর্থ লুট করা হয়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে সোনারগাঁও থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে। কিন্তু আসামির হাতে থাকা হাতকড়া উদ্ধার হলেও পরবর্তীতে আসামিকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয় পুলিশ।
থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাসেদুল হাসান খান বলেন, খবর পেয়ে আমাদের থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এ ঘটনায় মেঘনা থানা পুলিশ কোনো লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুমিল্লা জেলার হোমনা-মেঘনা সার্কেলের সিনিয়র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম জানান, আমি শুনেছি গ্রেপ্তার আসামি ওই মামলার ঘটনায় জড়িত নন দাবি করে গ্রামবাসী তাকে ছিনিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।
৯১ দিন আগে
চুয়াডাঙ্গায় ভিক্ষুকের ঘরে চুরি
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় এক ভিক্ষুকের ঘরে চুরির ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পেয়ে চুরি হওয়া টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) গভীর রাতে জেহালা ইউনিয়নের মুন্সিগঞ্জ বাজারের মদনবাবুর মোড় এলাকা থেকে তাদের আটক করে পুলিশ।
আটক দুজন হলেন— আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালার রাশেদুল ইসলাম রঞ্জু (৩৮) এবং একই এলাকার ভোলা হোসেন (৩৫)।
পুলিশ জানিয়েছে, জেহালার মুন্সিগঞ্জ রেলস্টেশন-সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত ঘরে প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন জোসনা খাতুন (৬৮)। ভিক্ষা করে সংসার চালান তিনি। গত ১৭ আগস্ট রাতে তারা বাড়ি ফিরে দেখেন ঘরের তালা ভাঙা, চিকিৎসার জন্য ভিক্ষা করে জমানো ৫০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। পরে পুলিশকে বিষয়টি জানালে অভিযান চালিয়ে ২৯ হাজার ৮০ টাকা উদ্ধারসহ দুজনকে আটক করা হয়। বাকি টাকা উদ্ধারে তৎপরতা চলছে বলে জানায় পুলিশ।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, দুজনকে আটক করা হয়েছে। অসহায় ভিক্ষুকের টাকা উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি এবং দ্রুততম সময়ে টাকা ফেরত দিতে পেরেছি।
ভিক্ষুকের পাশে দাঁড়ানোয় পুলিশের প্রশংসা করেন স্থানীয়রা।
১০৫ দিন আগে
অতিরিক্ত আইজি হলেন পুলিশের সাত কর্মকর্তা
পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার সাত কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত আইজি করেছে সরকার।
সোমবার (১১ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অতিরিক্ত আইজি হলেন যারা–এপিবিএনের ডিআইজি মো. আলী হোসেন ফকির, এসবির ডিআইজি জি এম আজিজুর রহমান, ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিআইজি) মো. সরওয়ার, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডিআইজি মো. মোস্তফা কামাল, পুলিশ অধিদপ্তরের ডিআইজি কাজী মো. ফজলুল করিম, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মো. রেজাউল করিম এবং চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এবং অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা-৫ শাখার ০৯-১০-২০২৪ তারিখের ০৭.১৫৫.০১৫.৪৪.০৩.০৩৪.২০১০ (অংশ-২)-৫৪০ নং পত্রে উল্লিখিত সব আনুষ্ঠানিকতা পালন শেষে নবসৃষ্ট সাতটি সুপারনিউমারারি পদের বিপরীতে উপরোক্ত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হলো।ৎ
আরও পড়ুন: বাধ্যতামূলক অবসরে ৯ পুলিশ পরিদর্শক
এতে আরও বলা হয়েছে, পদগুলোতে কর্মরত পদধারীদের পদোন্নতি, অবসর, অপসারণ কিংবা অন্য কোনো কারণে পদ শূন্য হলে পদগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিলুপ্ত হবে ও পদ সৃজনের তারিখ থেকে সাতটি সুপারনিউমারারি পদের মেয়াদ হবে এক বছর। পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা স্বপদে বহাল থেকে দায়িত্ব পালন করবেন। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
১১৫ দিন আগে
আসন্ন নির্বাচনে পুলিশের জন্য ৪০ হাজার ‘বডিক্যাম’ সংগ্রহের পরিকল্পনা
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশের জন্য কমপক্ষে ৪০ হাজার শরীরে ধারণ উপযোগী ক্যামেরা (বডি-ওয়্যার ক্যামেরা) সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
শনিবার (৯ আগস্ট) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় এই পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকস চৌধুরী এবং ফয়েজ তৈয়ব আহমেদও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ফয়েজ তৈয়ব আহমেদ বলেন, ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা সংগ্রহের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে যা সাধারণত ‘বডিক্যাম’ নামে পরিচিত। এই ডিভাইসগুলো হাজার হাজার ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অক্টোবরের মধ্যে বডিক্যামগুলো সংগ্রহ করতে চাই যাতে পুলিশ বাহিনী এসব ক্যামেরার এআই সক্ষমতাসহ মূল বৈশিষ্ট্যগুলোর ওপর পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ পেতে পারে।’
তিনি জানান, ক্যামেরা সরবরাহের জন্য জার্মানি, চীন ও থাইল্যান্ডের তিনটি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা নির্বাচনের সময় ডিভাইসগুলো তাদের বুকে পরবেন।
আরও পড়ুন: আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: সিইসি
এই ক্যামেরাগুলো দ্রুত কিনে হাজার হাজার পুলিশ কর্মীর জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে এ সময় কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই সমস্ত ভোটকেন্দ্রে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, তাতে খরচ যাই হোক না কেন। আমাদের লক্ষ্য হলো ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ করা।’
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেলিযোগাযোগ ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী আসন্ন ভোটের জন্য একটি নির্বাচনী অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনার কথাও জানান।
তার প্রস্তাব অনুসারে, অ্যাপটি ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ওপর বিশদ তথ্য প্রদান করবে। এর মধ্যে প্রার্থীর বিবরণ, ভোটকেন্দ্রের আপডেট ও অভিযোগ জমা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
প্রস্তাবিত অ্যাপটি দ্রুত চালু করতে এবং দেশের ১০ কোটিরও বেশি ভোটারের জন্য এটি ব্যবহার উপযোগী কিনা, তা নিশ্চিত করতেও কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।
১১৭ দিন আগে
গাজীপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনসহ ১০ দফা দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন আরএকে সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা। এ সময় পুলিশ তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাধা দিলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় শ্রমিকরা।
রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জৈনা বাজার এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন কারখানার কয়েক শ’ শ্রমিক।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময়ও বিক্ষোভ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া অব্যাহত ছিল। এ ঘটনায় মহাসড়কের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: এক দফা দাবিতে বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষাভরত শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থানা ও শিল্প পুলিশের বহু সদস্য এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। তাদের সরাতে টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে।’
১৩১ দিন আগে
ফেনীতে পুলিশ পিটিয়ে হাতকড়াসহ পালাল আসামি
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে হাতকড়াসহ এক আসামি পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পলাতক আসামি কবির আহম্মদ চৌধুরী প্রকাশ একটি নারী নির্যাতন মামলার আসামি। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফুলগাজীর আমজাদহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত পুলিশ সদস্যরা ছাগলনাইয়া থানায় কর্মরত। এ ঘটনায় হামলাকারী ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন— ফুলগাজী থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রাফিদ, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) দিদার ও কনস্টেবল সুমন।
পুলিশ জানায়, পলাতক আসামি কবির আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি ছাগলনাইয়া থানায় করা একটি নারী নির্যাতন মামলার আসামি।
আরও পড়ুন: আদালত থেকে পালালেন হত্যা মামলার আসামি
মঙ্গলবার রাতে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য তার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশের একটি দল। এ সময় তারা কবিরকে গ্রেপ্তার করলেও তিনি পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলে তার সহযোগী ও স্বজনদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আসামির স্বজনদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। হাতকড়াসহ পালিয়ে যাওয়া ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, ফুলগাজী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ফখরুল আলম জানান, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে গত বছরের ৬ অক্টোবর কবিরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছিল। তার জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তখন তার সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়।
১৪২ দিন আগে
সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিটি অভিযোগের তদন্ত করছে পুলিশ: প্রেস উইং
দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিটি অভিযোগ পুলিশ গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখছে এবং তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তদন্ত চালাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, ‘এখন পর্যন্ত কোনো ঘটনার পেছনে সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এগুলো পৃথক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সহিংসতা মাত্র। তবে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে।’
গত ১০ জুলাই বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও সংখ্যালঘু ঐক্য জোটের ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে ২৭ জন নিহত হয়েছেন এবং গত ১১ মাসে ২ হাজার ৪৪২টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
এ প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়, এর মধ্যে কোনো ঘটনাই সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। নিহত ২৭ জনের ঘটনায় ২২টি হত্যা মামলা এবং ৫টি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। খুনের পেছনে জমি সংক্রান্ত বিরোধ, আর্থিক লেনদেন, ডাকাতি, সন্ত্রাসী আক্রমণ এবং পারিবারিক কলহের মতো কারণ ছিল।
এ পর্যন্ত এসব ঘটনায় ৪৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ১৫ জন আত্মসমর্পণ করেছেন এবং ১৮ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানানো হয়।
পড়ুন: জুলাই শহীদ দিবস উপলক্ষে বুধবার রাষ্ট্রীয় শোক
বিবৃতিতে বলা হয়, সংবাদ সম্মেলনে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ২০টি ঘটনার কথা বলা হলেও এর মধ্যে ১৬টি ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং ২৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনটি ঘটনায় কোনো অভিযোগ হয়নি।
ঐক্য পরিষদের দাবি, ২০২৪ সালের ৪ থেকে ২০ আগস্টের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ১ হাজার ৭৬৯টি হামলা ও নিপীড়নসহ মোট ২ হাজার ১০টি সাম্প্রদায়িক ঘটনার কথা বলা হয়।
এ বিষয়ে প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশ পুলিশ এসব অভিযোগের মধ্যে ৫৬ জেলায় সংঘটিত ১ হাজার ৪৫৭টি ঘটনার সত্যতা পেয়েছে।
এ ছাড়া, ৬০টি ঘটনার মধ্যে মন্দিরে চুরি, প্রতিমা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, জমি দখল ও উচ্ছেদ চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। ঐক্য পরিষদ এসবসহ আরও কিছু ঘটনার তথ্য পরে তুলে ধরবে বলে প্রেস উইং’র বিবৃতিতে জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশ চূড়ান্ত তালিকা পাওয়ার পর পুনরায় তা পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট আপডেট জানাবে।
১৪২ দিন আগে
ছেলের কবরের পাশে দিন কাটে আবু সাঈদের মায়ের, বিচার নিয়ে সংশয়
ছেলের কবরের পাশে বসে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগমের। চোখে জল নিয়ে একাকী বসে থাকেন সন্তান হারানো এই মা।
বুধবার (৯ জুলাই) রংপুরের পীরগঞ্জের বাবনপুরে আবু সাঈদের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে এমন বেদনাদায়ক দৃশ্যের দেখা মেলে।
বছর পেরোলেও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদের হত্যার বিচারে কোনো অগ্রগতি নেই। এমন অভিযোগ করছেন তার পিতা মকবুল হোসেন ও মা মনোয়ারা বেগম। তাদের দাবি, আসামিরা বহাল তবিয়তে দিব্যি বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
আদৌ ছেলে হত্যার বিচার পাবেন কি না! এ কথা মনে পড়তেই অশ্রুস্নাত হন ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদের বাবা-মা।
‘আমার ছেলেকে যারা হত্যা করল, তারা এখনো বাইরে ঘুরে বেড়ায়, চাকরি করে! তাদের তো ধরে না। এখনো বিচারও হইল না, বিচার আর কোনো দিন হইবে?’, আক্ষেপ ও অভিমানের সুরে কথাগুলো বলে অঝোরে কান্নায় ভেঙে পড়েন আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম ও বাবা মকবুল হোসেন।
শোক, ক্ষোভ, বেদনায় জর্জরিত হয়ে ছেলে হত্যার বিচারের অপেক্ষায় থাকা শোকাহত মা মনোয়ারাকে ছেলের ছবির দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করতে দেখা যায়, ‘আমার ছেলের দোষটা কী ছিল?’
‘আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ’ না থেকে সন্তান হত্যার বিচার করার দাবি জানান আবু সাঈদের বাবা-মা।
কে ছিলেন আবু সাঈদ?
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গেল বছরের ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পার্ক মোড় এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন তৈরির পাশাপাশি আন্দোলনে গতি আসে। কোটা আন্দোলনের শুরু থেকেই আবু সাঈদ ছিলেন অন্যতম সক্রিয় মুখ। পুলিশের গুলিতে তার জীবনপ্রদীপ নিভে যাওয়ার দিন থেকে আবু সাঈদের পরিবারের শোকযাত্রা আর বিচারের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা শুরু হয়।
সন্তান হারানো এই মা বলেন, ‘হামার ব্যাটাক মারি ফেলাইছে। আমার ছেলের কি দোষ আছিল! সে তো কোনো দোষ করে নাই। কিন্তু গুলি কইরা হামার ব্যাটাক মারি ফেলাইছে। এক বছর হইয়া গেইলেও এখনো বিচার হইল না! হামার কোনো চাওয়া নাই, যারা খুন করছে তাদের যেন শাস্তি হয়।’
কথাগুলো বলতে গিয়ে কান্নায় কণ্ঠরোধ হয় তার। তবে, পাশে বসা বাবা মকবুল হোসেন গর্ব ও কষ্টে মেশানো কণ্ঠে বলেন, ‘দুনিয়ার সব মানুষ আছে, কিন্তু আমার ছেলে নাই— এ দিক দিয়া খুব দুঃখ পাই। কিন্তু আমার ছেলের উছিলায় অনেক আলেম-ওলামা জেল থেইকা ছাড়া পাইছে— এইটা ভাবলে গর্ব হয়।’
আরও পড়ুন: আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে জীবন দিছে, আমার ছেলেক তো শেখ হাসিনার নির্দেশেই পুলিশ গুলি কইরা হত্যা করছে, আমি কি শেখ হাসিনাসহ সব আসামির বিচার পাইমু? তবে, সন্তানের আত্মত্যাগ যে বড় পরিবর্তনের সূচনা করছে, এইটায় গর্বিত আমি।’
মকবুল হোসেন বলেন, ‘সরকার সুনজর দিয়ে অপরাধীর বিচার করুক। আমি চাই সরকার কঠিনভাবে বিচার করুক। আমার ছেলের সঙ্গে আরও হাজার হাজার মানুষ শহীদ হইছে, অনেক বাপ-মার বুক খালি হইছে। আমি চাই, এমনটা যেন আর কোনো মায়ের সঙ্গে না হয়। যা হইছে আমার, তা যেন আর কারও না হয়।’
মকবুল হোসেন বলেন, ‘এক বছর হইয়া গেলেও সরকার মাত্র ৪ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারছে। আর সবাই এখনো বহাল তবিয়তে আছে। এই জনমে ছেলে হত্যার বিচার কি পাইমু?’
মামলার বর্তমান অবস্থা
এদিকে, আবু সাঈদ হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে এ মামলার ৩০ আসামির মধ্যে পলাতক ২৬ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল-২ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তাদের মধ্যে আছেন বেরোবির সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদ।
ট্রাইব্যুনাল-২-এ এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে ৩০ জনকে আসামি করা হয়। যাদের মধ্যে মাত্র চারজন গ্রেপ্তার আছেন। গ্রেপ্তাররা হলেন— বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ।
এর আগে, গত ২৬ জুন আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা থেকে প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেওয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে অসন্তোষ
তবে এ প্রতিবেদন নিয়ে সন্দেহ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। তারা এ হত্যা মামলার প্রতিবেদন জমার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে গণশুনানির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।
আরও পড়ুন: আবু সাঈদ হত্যা মামলা: তদন্তে অভিযুক্ত ৩০ জন
এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তারা জানান, তদন্ত প্রতিবেদন জমার আগে ২৩ জুন রংপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি গণশুনানি আয়োজনের কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সন্দেহ ও অনাস্থা তৈরি হয়েছে।
আবু সাঈদ হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এক সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেখানে তারা এ ঘটনার সঙ্গে ৩০ জনের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করেন। তবে এবারও অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে তারা পুলিশের সম্পৃক্ততার বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।
‘ট্রাইব্যুনাল একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে প্রশাসনিক দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করলেও পুরো বক্তব্যে পুলিশের কোনো সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করেননি। অথচ জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড ছিল একটি পরিকল্পিত পুলিশি হত্যাকাণ্ড।’
শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, ‘দুটি বিষয় নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। প্রথমত, একটি পরিকল্পিত পুলিশি হত্যাকাণ্ডকে সচেতনভাবে ‘প্রশাসনিক হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, যেসব ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এ ঘটনার জন্য দায়ী, তাদের তদন্ত থেকে সূক্ষ্মভাবে পাশ কাটিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
তবে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ওপর আস্থার কথা জানিয়েছেন সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন। তিনি বলেন, ‘অভিযোগ দাখিল পিছিয়ে গেছে— এটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তবে আমার একটা বিশ্বাস আছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) থেকে যেটা প্রতিবেদন আসবে, সেটা সঠিক ও সত্যনিষ্ঠ হবে।’
তার পরিবার ন্যায়বিচার চায় উল্লেখ করে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশের আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আবু হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনটা কতটা যুক্তিসংগত, আমি জানি না। আবু সাঈদের যারা সহযোদ্ধা ছিলেন, যারা এখনো আন্দোলনে আছেন, তাদের সঙ্গে বসে, তাদের কথা শুনে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা উচিত। আমরা চাই ন্যায়বিচার— না কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি ফাঁসুক, না কোনো প্রকৃত অপরাধী ছাড় পেয়ে যাক।’
আরও পড়ুন: শহীদ আবু সাঈদকে 'বীরশ্রেষ্ঠ' বললেন এনবিআর চেয়ারম্যান
বেরোবির ভিসি ড. শওকাত হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব শহীদ আবু সাঈদ হত্যার সুষ্ঠু বিচার অবশ্যই হবে, সব আসামি গ্রেপ্তার হবে। কোনো আসামি ছাড় পাবে না।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী ও রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম বলেন, হত্যার বিচার অবশ্যই হবে, এ নিয়ে সংশয়ের কোনো কারণ নেই। যেসব আসামি দেশে আছে, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
১৪৮ দিন আগে
যমুনা অভিমুখে বিডিআরের চাকরিচ্যুত সদস্যরা, কাকরাইলে পুলিশের বাধা
রাজধানীর শাহবাগ থেকে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার অভিমুখে যাওয়ার পথে পুলিশি বাধার মুখে পড়েছেন পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা। কাকরাইল মসজিদের সামনে পুলিশ জলকামান, টিয়ার গ্যাস সেল ব্যবহার এবং লাঠিচার্জ করে তারেদ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তিন দফা দাবি নিয়ে যমুনা ঘেরাও’র ঘোষণা দিয়ে পদযাত্রাটি শুরু করেছিল তারা।
সোমবার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদের সামনে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের পুলিশি বাধার মুখে পড়েন।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস ফর বিডিআর মেম্বার’ ব্যানার নিয়ে তিন দফা দাবিতে এ দিন বেলা ১১টার দিকে শাহবাগ জাদুঘরের সামনে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা অবস্থান নেন। এরপর, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যমুনাভিমুখে যাত্রা শুরু হয় তাদের। এতে, পুলিশ বাধা দিলে পুনরায় শাহবাগ মোড় হয়ে মৎস্য ভবন আসেন তারা। মৎস্য ভবন মোড়ে পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
বিক্ষোভের সময় চাকরিচ্যুত এক বিডিআর সদস্যদের দাবির পক্ষে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: মব সন্ত্রাস জুলাই আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থি: অ্যাটর্নি জেনারেল
চাকরিচ্যুত এক বিডিআর সদস্য বলেন, ‘আমাদের চাকরি ফেরত দেওয়া হোক। যেসব নির্দোষ বিডিআর সদস্য জেলে আছেন, তাদের মুক্তি দেওয়া হোক।’
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশি ব্যারিকেড অতিক্রম করে কাকরাইল মসজিদের সামনে গেলে আবারও পুলিশি বাধার সামনে পড়েন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা। এসময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের চলে যেতে দশ মিনিটের আলটিমেটাম দেয়। কিন্তু চাকরিচ্যুতরা পিছু না হটে কাকরাইল মোড়ে বসে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এসময়, তাদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং জলকামান ব্যবহার করে।
এ বিষয়ে, রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক জানান, চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা যমুনাভিমুখে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে, পুলিশ জলকামান ব্যবহার ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের তিন দফা দাবি হলো— চাকরিচ্যুতদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে চাকরিতে পুনর্বহাল, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশনের বিভিন্ন ধারা বাতিল, বিডিআর নাম পুনর্বহাল এবং কারাগারে বন্দি থাকা বিডিআর সদস্যদের মুক্তি।
১৫০ দিন আগে
ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার ইস্যুতে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ, থানা ঘেরাও, মহাসড়ক অবরোধ
চট্টগ্রামের পটিয়ায় আসামি ধরিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সঙ্গে সংঘর্ষ ও তাদের ওপর লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির নেতারা।
এই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (২ জুলাই) সকাল থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে থানার সামনে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি শেষে থানার সামনে শান্তিপূর্ণ স্লোগান দেওয়ার সময় পুলিশ অতর্কিত লাঠিচার্জ করলে পটিয়া থানা চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সংঘটিত এ ঘটনায় অন্তত ১১ জন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আহত হন, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।
আহতদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আশরাফুল ইসলাম তৌকির (২১) ও সাইফুল ইসলাম (১৭) গুরুতর আহত হয়ে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ঘরে ফিরেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি শেষ করে থানার মোড়ে গেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা সেখানে রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগ নেতা দীপংককে দেখতে পেয়ে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার না করায় ছাত্ররা বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে গতকাল রাতেই বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
আহত আশরাফুল ইসলাম তৌকির অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলাম। দীপংকরকে দেখে পুলিশকে বুঝিয়ে দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই পুলিশ আমাদের ওপর আক্রমণ চালায়। কোনো কারণ ছাড়াই তারা লাঠিচার্জ করে।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়ক গোলাম মওলা মাশরাফ বলেন, ‘পুলিশ এখন বট, দুই নম্বর ও ফাও হয়ে গেছে। চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের রক্ষা করছে আর নিরীহ ছাত্রদের পেটাচ্ছে। আমরা মৃত্যুকে ভয় পাই না, এই বিপ্লব মরার জন্যই করছি।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ধরতে ব্যর্থ পুলিশ এখন আন্দোলনকারীদের হুমকি দিচ্ছে। তবে আমরা থেমে থাকব না।’
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. নওশাদ জানান, ‘আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি ছাত্রদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন।
এ সময় তারা বলেন, ‘ওসি ও সংশ্লিষ্ট এসআইদের অপসারণসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। এই ঘটনার বিচার না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দেব।’
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাহেদ মো. নাজমুন নূর বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ছাত্রলীগের এক নেতাকে থানায় নিয়ে এসে মব সৃষ্টি করে মারধর করেছিলেন। এ সময় তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে ৩-৪ জন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।’
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, বুধবার সকাল থেকে ওসির অপসারণের দাবি করে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন ছাত্ররা। তবে বিকল্প সড়ক বাইপাস দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
১৫৫ দিন আগে