দুর্নীতি
দুর্নীতি নিয়ে বিএনপির বক্তৃতাই বড় কৌতুক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দুর্নীতি নিয়ে বিএনপির বক্তৃতাই সবচেয়ে বড় কৌতুক বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বাংলাদেশ-সৌদি আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে 'পলিটিক্যাল কনসালটেশন' শেষে রিয়াদ থেকে বুধবার দুপুরে দেশে ফিরে বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ফরেন সার্ভিস একাডেমি জার্নাল প্রকাশনা ও ডিজিটাল লাইব্রেরি উদ্বোধন শেষে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
আরও পড়ুন: সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ওআইসি মহাসচিবের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
এ সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবস্থান নিয়ে বিএনপির মন্তব্য বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপিনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান উভয়েই দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত। বিএনপির শাসনামলে দেশ দুর্নীতিতে পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সুতরাং তাদের মুখে দুর্নীতি নিয়ে বক্তৃতা বা দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবস্থান নিয়ে কথা বলা -এটিই সবচেয়ে বড় কৌতুক।’
সৌদি বিনিয়োগ ও শ্রমশক্তি রপ্তানি
সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক ও বিনিয়োগ নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের সঙ্গে শ্রমশক্তি রপ্তানির সম্পর্ক বহু আগেই উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, বিনিয়োগসহ বহুমাত্রিক রূপ নিয়েছে। দেশে সৌদি বিনিয়োগ আছে এবং তারা আরও বিনিয়োগ করতে চায়। সৌদি আরব বাংলাদেশে ১ হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করবে, চট্টগ্রাম বন্দরে তাদের বিনিয়োগ আছে, বে-টার্মিনালেও তারা বিনিয়োগ করতে চায়, পাশাপাশি অনাবাসী বাংলাদেশি ও বিদেশিদের জন্য উন্মুক্ত অফশোর ব্যাংকিংসহ আমাদের এখানে ফিন্যান্সিয়াল উইন্ডো যেগুলো রয়েছে, সেসব ক্ষেত্রেও তাদের বিনিয়োগের বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সৌদি আরবকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং তারা ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের মিরের সরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনও করেছে।’
মন্ত্রী এ সময় শ্রমশক্তি রপ্তানির তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন।
তিনি জানান, ‘সৌদি আরবে এখন প্রায় ৩১ লাখ ৩৭ হাজার বাংলাদেশি প্রবাসী বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। করোনার সময় লাখ লাখ কর্মী ফেরত এসেছিলেন। কিন্তু গত তিন বছরে আবার প্রায় ১৭ লাখ বাংলাদেশি সৌদিতে গেছেন। সৌদি আরব এক্ষেত্রে খুব সহায়ক ছিল। এই শ্রমজীবীদের সঙ্গে দুই দেশের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যাতে প্রতারণা না করতে পারে, সেজন্য আমাদের উভয়পক্ষের প্রস্তাব ও সম্মতিতে যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেইসঙ্গে সেখানে বাংলাদেশিদের নিজেদের নামে ব্যবসা রেজিস্ট্রেশন না থাকায় তারা রেমিটেন্স পাঠাতে পারে না। সেই অসুবিধা দূর করতে আমরা বাংলাদেশিদের ব্যবসা রেজিস্ট্রেশনের অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি, তারা এটা বিবেচনায় নিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর
আগামী ৮ থেকে ১১ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর নিয়ে প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ দেশের কূটনীতির মূলমন্ত্র 'সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়' উল্লেখ করে বলেন, ‘আপনারা জানেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের কথাও হয়েছে। চীন আমাদের বড় উন্নয়ন অংশীদার। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সফরটিও আমাদের উন্নয়নকে বেগবান করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
এর আগে ফরেন সার্ভিস একাডেমি জার্নাল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। পরে তিনি একাডেমির ডিজিটাল লাইব্রেরি উদ্বোধন করেন। এ সময় একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামসের সভাপতিত্বে পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক, বিনিয়োগের সম্ভাবনা
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছানের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের এফসিডিও'র ইন্দো-প্যাসিফিক প্রতিমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
দুর্নীতির অভিযোগে বদলি-বরখাস্ত ও অবসরে পাঠানোর পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়: টিআইবি
সরকারি চাকরিতে দুর্নীতি রোধে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, বদলি, বরখাস্ত ও বাধ্যতামূলক অবসরের মতো পদক্ষেপগুলো অপর্যাপ্ত প্রতিবন্ধক এবং অজান্তেই বিচারহীনতার সংস্কৃতি লালন করতে পারে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রশাসনিক পদক্ষেপের পরিবর্তে দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জবাবদিহিতার আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও পুলিশের মতো সংস্থায় দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বদলি বা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বদলি বা অবসরের মতো প্রশাসনিক পদক্ষেপ আশাব্যঞ্জক মনে হলেও তাতে দুর্নীতির মূল কারণগুলো যথাযথভাবে তুলে ধরা হয় না।’
তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, এই ধরনের পদক্ষেপ এমন একটি চক্রকে স্থায়ী করতে পারে, যেখানে কঠোর আইনি পরিণতির অভাবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে থাকে না।’
তিনি সরকারি চাকরি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার সংশোধনী তুলে ধরে বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত সরকারি কর্মচারীদের জবাবদিহিতা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: সাবেক আইজিপি বেনজীরের ব্যাপক দুর্নীতির জবাবদিহিতা দাবি করেছে টিআইবি
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ ধরনের আইনি ফাঁকফোকরগুলো আইনের দৃষ্টিতে সমতার সাংবিধানিক নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘দুর্নীতির অভিযোগে ন্যূনতম শাস্তির ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা একটি ক্ষতিকর বার্তা দেয়।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘এটি ইঙ্গিত দেয় যে কিছু ব্যক্তি আইনের ঊর্ধ্বে, যা জনগণের আস্থা কমায় এবং নৈতিক শাসনের ভিত্তিকে নষ্ট করে।’
দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক নেতাদের ভূমিকার কথা তুলে ধরে ড. ইফতেখারুজ্জামান ক্ষমতার ঊর্ধ্বে উঠে একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের আহ্বান জানান।
রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রাতিষ্ঠানিক আঁতাতসহ দুর্নীতির বিকাশ ঘটায় এমন পদ্ধতিগত বিষয়গুলোর দায়িত্ব নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
টিআইব প্রধান বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতারা জবাবদিহিতা এড়িয়ে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি কার্যকরভাবে রোধ করা যাবে না।’ তিনি বলেন, ‘জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং নৈতিক মান বজায় রাখতে, আমাদের এমন দৃঢ় পদক্ষেপ দরকার যা স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার প্রতি সত্যিকারের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।’
দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সত্যিকারের প্রতিরোধের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন, যা অপরাধের তীব্রতাকে প্রতিফলিত করে। যাতে এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে অসদাচরণ রোধ করা যায়।
আরও পড়ুন: কালো টাকা সাদা করার বাজেট প্রণয়ন অসাংবিধানিক ও দুর্নীতিবান্ধব: টিআইবি
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার জাপার এমপি
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৯০ শতাংশই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘যারা কাস্টমসে চাকরি করেন তাদের প্রত্যেকেরই ঢাকা শহরে দুই-তিনটি বাড়ি রয়েছে।’‘বন বিভাগে যারা চাকরি করেন তাদেরও দুই-তিনটি স্বর্ণের দোকান আছে।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা নিলে আমরা দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবো।
জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন,‘আর তা না হলে বড় বড় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যে হারে দুর্নীতি করছে, আমরা কী করব? আমরা অসহায়। অনেক সরকারি কর্মকর্তা আছেন যারা অসহায়। কারণ এখানে ৯০ ভাগ মানুষ ওই দিকে (দুর্নীতি), ১০-১৫ শতাংশ মানুষ ভালো থেকে কী করবে?’
শনিবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থবিলের ওপর সংশোধনী প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।
প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনের সময় একটি হলফনামা দিতে হবে উল্লেখ করে হাফিজ বলেন, এই নথি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সিন্দবাদের দৈত্যের মতো দেশ শাসন করছে আ.লীগ সরকার: জিএম কাদের
তিনি বলেন,‘কিন্তু চাকরিতে আসা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি প্রথমে হলফনামা দেন, তারপর পাঁচ-দশ বছর হলফনামা দেন এবং তাদের আলোচনা-সমালোচনা হয়, তাহলে দুর্নীতির চাবিকাঠি বন্ধ হয়ে যাবে। অন্যথায় এটা বন্ধ হবে না।’
তিনি বলেন, সরকার অনেক প্রশংসা পেয়েছে। কিন্তু শুধু দুর্নীতি বন্ধ করতে পারলেই ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর নাম যেমন লেখা আছে তেমনি প্রধানমন্ত্রীর নামও স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
তিনি বলেন, 'ব্যবস্থা নিলে দুর্নীতি বন্ধ হবে। সংসদ সদস্যদের রেকর্ড থাকায় সব সরকারি কর্মকর্তার রেকর্ড তৈরি করলে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব বলে মনে হয়।’
কুড়িগ্রাম-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হামিদুল হক খন্দকার বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ সরকারের দ্বৈত নীতি।
তিনি বলেন, 'একদিকে আপনি বলবেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স, অন্যদিকে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন। এটা কি সম্ভব? যারা বৈধ আয় উপার্জন করেন তাদের ৩০ শতাংশ কর দিতে হবে, আর যারা কালো টাকা হোয়াইটওয়াশ করবেন তাদের ১৫ শতাংশ কর দিতে হবে। এতে স্বার্থ কার? এটা কোনো নৈতিকতার মধ্যে পড়ে বলে মনে হয় না।’
আরও পড়ুন: সংকট মোকাবিলায় অর্থনীতির দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করুন: জিএম কাদের
দুর্নীতির খবর প্রকাশের বিরুদ্ধে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্যে ক্রাইম রিপোর্টারদের উদ্বেগ
বর্তমান ও সাবেক পুলিশ কর্মকর্তাদের অবৈধ সম্পদের মালিকানা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব)।
বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এমন প্রতিবেদন প্রচারের সমালোচনা করে একটি বিবৃতি দেওয়ার পর সোমবার (২৪ জুন) প্রতিক্রিয়া জানায় ক্র্যাব।
ক্র্যাব বলছে, গণমাধ্যমগুলো দায়িত্বশীলতার সঙ্গে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার অস্বাভাবিক সম্পদের মালিক হওয়ার খবর প্রচার করেছে। তারা জোর দিয়ে বলেন, এই প্রতিবেদনগুলো কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে করা হয়নি, যেমনটি বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বিবৃতিতে দাবি করেছে।
বিবৃতিতে ক্র্যাব সভাপতি কামরুল জামান খান ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া বিবৃতিতে ‘ব্যবহৃত শব্দের’ ব্যবহার করা নিয়ে তাদের আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তারা মনে করেন, এটি নির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত অসদাচরণের প্রতি সহনশীলতার পরামর্শ দিয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতার নীতিগুলোকে সম্ভাব্যভাবে ক্ষুণ্ন করতে পারে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে পশুবাহী গাড়িতে চাঁদাবাজির অভিযোগে ৫ পুলিশ বরখাস্ত
ক্র্যাব আরও যুক্তি দিয়েছে, এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে তাদের সাংগঠনিক বক্তব্যের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ না করে আইনি প্রক্রিয়ার অবলম্বন করা উচিত। তাদের দাবি, গণমাধ্যমের সব প্রতিবেদনকে স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ হিসেবে আখ্যায়িত করা সমর্থনযোগ্য নয়।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের 'জিরো টলারেন্স' নীতিকে সমর্থনের ওপরও জোর দিয়েছে সংগঠনটি। তারা অসদাচরণের অভিযোগ মোকাবিলায় বাধা দেওয়ার পরিবর্তে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি সরকারি কর্মকর্তাদের আচরণ এবং সম্পদ সম্পর্কে প্রতিবেদনের নৈতিকতাকে নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত করেছে। এই বিতর্ক বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতার মধ্যে চলমান উত্তেজনাকে তুলে ধরেছে।
আরও পড়ুন: ইউএনবি’র সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ডিএসএ মামলার নিন্দা জানিয়েছে ক্র্যাব
দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার র্যাবের নতুন ডিজির
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক হারুন অর রশীদ দুর্নীতিতে জড়িত না হতে কর্মীদের সতর্ক করে বলেছেন, আইন অমান্য করলে সর্বোচ্চ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রবিবার কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে নতুন মহাপরিচালক জোর দিয়ে বলেন, র্যাব সদস্যদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
আরও পড়ুন: আরসার 'অপরাধীদের' বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত: র্যাব
দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স ঘোষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, 'নমনীয়তার কোনো সুযোগ নেই। যেকোনো অপরাধীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা এই ঘোষণার ফলাফল দেখতে চাই।’
ব্যারিস্টার রশিদ র্যাব সদস্যদের যেকোনো ধরনের বেআইনি ও অপেশাদার আচরণ পরিহার করার আহ্বান জানান। ‘এলিট ফোর্সের সদস্যদের অবশ্যই দক্ষ, মেধাবী ও অভিজ্ঞ হতে হবে। আইন মেনে চলাই পেশাদারিত্ব।’
মহাপরিচালক র্যাবের ওপর জনগণের আস্থা ও নির্ভরতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি র্যাবের সব সদস্যকে এ লক্ষ্যে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, পেশাদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তরুণ প্রজন্মের ওপর মাদকাসক্তির ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে র্যাবের নতুন ডিজি সমাজ থেকে মাদক নির্মূলে প্রচেষ্টা জোরদার করার অঙ্গীকার করেন। সারাদেশে কিশোর গ্যাং কার্যক্রম নির্মূলেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তিনি।
আরও পড়ুন: দায়িত্ব নিলেন র্যাবের নতুন ডিজি
র্যাবের নতুন ডিজি হারুন-অর-রশিদ
আছাদুজ্জামান মিয়ার দুর্নীতির অভিযোগ অনুমাননির্ভর: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘আমি যতটুকু জানি, অনুমানভিত্তিক কথাবার্তা চলছে।’
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
সাবেক আইজিপি এবং সাবেক ডিএমপি কমিশনারের বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের দায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এড়াতে পারেন কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনি যেগুলো বলেছেন, এখন পর্যন্ত কোনো মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কোনো খবর আমাদের কাছে আসেনি। আমি যতটুকু জানি, অনুমানভিত্তিক কথাবার্তা চলছে। এখনো তার বিরুদ্ধে সঠিকভাবে কোনো অভিযোগ উত্থাপন হয়নি। যেগুলো শুনেছি, তার অবৈধ সম্পত্তির কথা, তাকে তো ডাকা হয়নি, তাকে ডাকা হলে বুঝতে পারব, নিশ্চয়ই তার কোনো ব্যাখ্যা আছে।’
আরও পড়ুন: আনোয়ারুলের লাশ শনাক্ত হলে অনেক কিছুই জানা যাবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নিশ্চয়ই তার আয়ের উৎস আছে। সেটি দেখতে হবে।
অনেক আগে জমির দাম বেড়েছে। বেনজীর আহমেদ অনেকদিন মিশনে ছিলেন। তার ব্যাখ্যা থাকতে পারে। যদি ব্যাখ্যা দিতে না পারে তখন দুর্নীতির প্রশ্ন আসবে।’
এমপি আনার হত্যা বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, তদন্ত শেষ হলে সব বলতে পারব। ডিবি সুষ্ঠু ও স্বাধীনভাবে কাজ করছে।
আরও পড়ুন: এমপি আনোয়ারুল চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তা কখনোই বলিনি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সাবেক আইজিপি বেনজীরের ব্যাপক দুর্নীতির জবাবদিহিতা দাবি করেছে টিআইবি
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র্যাব প্রধান বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সোমবার (৩ জুন ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি এই উদ্বেগ প্রকাশ করে।
টিআইবি জোর দিয়ে বলেছে, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের লাগামহীন ক্ষমতার অপব্যবহার 'ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের মতো ব্যক্তিত্ব' তৈরি করে এবং রাষ্ট্রীয় জবাবদিহিতাকে ক্ষুণ্ন করে। সংস্থাটি এ ধরনের নির্যাতনে সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে সাবেক পুলিশ প্রধান যাদেরকে নিজেদের জমি বিক্রি করতে বাধ্য করেছিল- সেইসব লোকদের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।
খবরে বলা হয়েছে, সাবেক আইজিপি ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে জমি বিক্রি করতে মানুষকে বাধ্য করেছিলেন। মূলত তিনি প্রথমত সংখ্যালঘুদের বেছে নিয়েছিলেন। আর এই কাজগুলো করার জন্য তিনি নিজের এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় সংস্থার কর্মীদের নিয়োগ করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে জোরপূর্বক সম্পত্তি অর্জন করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচারের সম্ভাবনা কৌশলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যার ফলে মূল অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন:অনলাইনে জুয়া-বেটিংয়ের মাধ্যমে অর্থপাচারের মহোৎসবে টিআইবির উদ্বেগ
সাবেক আইজিপির দুর্নীতি নিয়ে চলমান তদন্তে তার অবৈধ সম্পদ সম্পর্কে নতুন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এসব গুরুতর অভিযোগের পরও কীভাবে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ইফতেখারুজ্জামান।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিদেশে অর্থ পাচারে ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশ বা সহায়তায় সাবেক পুলিশ প্রধান দেশ ছাড়ার আগে ব্যাংক থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করেছেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ন্যায়বিচার হলে শুধু সাবেক আইজিপি নয়, যারা তাকে সহযোগিতা করেছেন তাদেরও বিচার করতে হবে।
তিনি সাবেক পুলিশ প্রধানের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন। এটি সরকারের সম্পৃক্ততা বা তার দুর্নীতির সক্রিয় উৎসাহের ইঙ্গিত দেয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি প্রদর্শনের জন্য সকল দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির নাম প্রকাশ এবং জড়িত সকলের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছে ডিইউজে-ডিআরইউ ও টিআইবি
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে সরকারের দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টাকে নিছক নাটকীয়তা হিসেবে গণ্য করা হবে।
এতে আরও বলা হয়, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকারের কাছে সব দুর্নীতিবাজের তথ্য আছে। এ ধরনের স্বীকৃতি বিরল হওয়া সত্ত্বেও একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা কীভাবে দুর্নীতির এমন সুস্পষ্ট সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, তা সরকারকে অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।’
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি প্রদর্শনের জন্য দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ ও এর সঙ্গে জড়িত সবার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। এটি করতে ব্যর্থ হলে নাগরিকদের মধ্যে নিছক নাটকীয়তা হিসাবে এই ধারণাটি আরও দৃঢ় হবে।’
আরও পড়ুন: সবুজ জলবায়ু তহবিলের ব্যর্থতায় বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে বঞ্চিত: টিআইবি
ব্যাপক দুর্নীতিতে সরকারের অস্তিত্ব ইতোমধ্যেই কলঙ্কিত: ফখরুল
ব্যাপক দুর্নীতিতে সরকারের অস্তিত্ব কলঙ্কিত হওয়ায় কোনো কৌশল ছাড়াই ক্ষমতাসীনদেরকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এক আলোচনা সভায় তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সব বাধা উপেক্ষা করে সরকারের পতন নিশ্চিত করতে তাদের দল আন্দোলন জোরদার করবে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই সরকার নিয়ে আমাকে আর কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। কতটুকু বলতে পারি? তারা এত মোটা চামড়ার হয়ে গেছে যে তারা সমালোচনা নিয়ে অন্তত মাথা ঘামায় না... তাদের একমাত্র লক্ষ্য জনগণের টাকা লুটপাট করা।’
মঙ্গলবার (২৮ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও সাবেক কর্মকর্তাদের বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনা উন্মোচিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, লাগামহীন দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্য সরকার মারাত্মক কুখ্যাতি অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে জনগণ বিরক্ত: ফখরুল
ফখরুল বলেন, ‘তারা দুর্নীতিতে পুরোপুরি কলঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তারা যতই কথা বলুক, যাই বলুক না কেন, বাস্তবে তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। এর প্রমাণ সর্বত্র দৃশ্যমান। আমি বলি, তাদের সময় শেষ। সুতরাং কড়াকড়ি আরোপ বন্ধ করুন, যাতে আপনি যথাযথভাবে দাফন ও জানাজা পেতে পারেন এবং মানুষ আপনাকে স্মরণ করতে পারে।’
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে কারা পদোন্নতি দিয়েছে, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আজিজকে কে লালন-পালন করেছে? আজিজের অবস্থান কোথায় ছিল এবং তিনি কোথায় উন্নীত হয়েছিলেন? এখন বেনজীর আহমেদের অসংখ্য অপকর্ম ও লুটপাটের ইতিহাসও উন্মোচিত হচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, দলের সহকর্মী ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির দায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ করা উচিত।
তিনি বলেন, 'এ ধরনের একটি বা দুটি ঘটনা নয়, আছে অসংখ্য। তাদের চারপাশে দুর্নীতি ছাড়া আর কিছুই নেই। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তাদের তথাকথিত নির্বাচিত প্রতিনিধি বা মধ্যরাতের নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সবাই চরমভাবে দুর্নীতিতে জড়িত। তারা সবাই অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের ভারে ডুবে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা তাদের অবৈধ টাকায় বিদেশে সেকেন্ড হোম নির্মাণ করছেন। ‘সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রীর লন্ডনে ৩৬৫টি বাড়ি ছিল।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নতুন বিশ্বব্যবস্থা বিবেচনায় নতুন নতুন কৌশল নিয়ে দেশ রক্ষায় বিরোধী দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, সকল দেশপ্রেমিক ব্যক্তি, সকল রাজনৈতিক শক্তি, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম- যারা দেশকে ভালোবাসে, তাদেরকে এখনই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়ংকর দানবের থাবা থেকে দেশকে রক্ষা করতে এবং জাতিকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে হবে। ‘দেশ রক্ষার সংগ্রামে পরাজিত হলে আমরা নির্মূল হয়ে যাব।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের আওয়াজ তোলা এবং আন্দোলন করা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এখানে সবকিছুই বিপজ্জনক। এই বিপদের মধ্যেও আমাদের দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর সাহস সঞ্চয় করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের যৌক্তিক দাবি আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য আমাদের আন্দোলন জোরদার করতে হবে।’
আরও পড়ুন: ইরানের প্রেসিডেন্ট-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোক বইয়ে সই করেছেন ফখরুল
দুর্নীতির মামলায় ড. ইউনূসসহ ৮ জনের জামিন
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ আটজনকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (৩ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেন তার জামিন মঞ্জুর করেন।
আসামিদের পক্ষে জামিন শুনানি করেন- আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। দুদকের পক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধিতা করেন।
আরও পড়ুন: শ্রম আইন লঙ্ঘন মামলা: ড. ইউনূসসহ ৪ জনের জামিন মঞ্জুর
দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহাম্মদ আলী সালাম জানান, শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিনের আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ২ এপ্রিল ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণের তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। আদালত ৩ মার্চ আসামিদের উপস্থিতিতে অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন।
অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম, এস এম হুজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, ইউনিয়নের প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম ও দপ্তর সম্পাদক মো. কামরুল হাসান।
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত বছরের ৩০ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়- ১ এ সংস্থার উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
আরও পড়ুন: বিদেশ যেতে ড. ইউনূসকে আদালতের অনুমতি নিতে হবে: হাইকোর্ট
ড. ইউনূসের সাজা স্থগিত আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন
সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদক প্রতিরোধে কাজ করুন: স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের প্রধানমন্ত্রী
সমাজ থেকে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতি নির্মূলে সচেষ্ট থাকতে স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে হবে। আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’
রবিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে 'স্থানীয় সরকার স্মার্ট হবে: সেবার অধিকার নিশ্চিত হবে' প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত ‘স্থানীয় সরকার দিবস -২০২৪’ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
যুবসমাজের ওপর মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব এবং সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিকে উসকে দেওয়ার আশঙ্কার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী এসব সমস্যা মোকাবিলায় জনসচেতনতা গড়ে তুলতে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে এই গতিশীলতায় অবদান রাখার জন্য স্থানীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
জনপ্রতিনিধিদের তাদের দেওয়া অঙ্গীকার রক্ষা এবং সঠিক প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী, যাতে জনগণ সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু অ্যাপ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশকে একটি ব-দ্বীপ উল্লেখ করে তিনি নদ-নদী, খাল, নালা, বিল ও হাওরসহ জলাশয় সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
শেখ হাসিনা গ্রাম পর্যায়ের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং জলাশয় সংরক্ষণের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে পরিবেশ সুরক্ষার ওপরও জোর দেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে জটিলতা এড়াতে গ্রাম পর্যায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুরু করা জরুরি।
প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় প্রতিনিধিদের নিজস্ব স্থানীয় সংস্থার জন্য রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি, সমবায়ের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, আবাদি জমি রক্ষা এবং কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনা ও সেবার প্রতি মনোযোগ দিতে তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল মাত্র ৫ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা, কিন্তু ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে তা বাড়িয়ে ৪৬ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা করা হয়।
তিনি এমন একটি ভবিষ্যতের কল্পনা করেছিলেন যেখানে স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলো জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবে এবং স্থানীয় উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো সরবরাহে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার উপর জোর দিয়েছিলেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, শরীয়তপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেদুর রহমান খোকা সিকদার, রাজশাহীর বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন আহমেদ, পঞ্চগড় পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুন এবং সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদ্দল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন রশিদ লাবলু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানান এবং দেশব্যাপী স্থানীয় শাসন ও সেবা প্রদানের জন্য নিবেদিত একটি দিনের মঞ্চ তৈরি করেন।
আরও পড়ুন: নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের বিশেষ তহবিল চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের বিশেষ তহবিল চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী