একনেক চেয়ারপার্সন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১০ হাজার ১১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট সাতটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়।
একনেক পুরান ঢাকার রাসায়নিক শিল্প ও গুদামগুলো পরিবেশবান্ধব জায়গায় স্থানান্তরের জন্য এক হাজার ৬১৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকায় প্রথম সংশোধিত বিসিক রাসায়নিক শিল্প পার্ক, মুন্সিগঞ্জ প্রকল্পও অনুমোদন করেছে।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের বৈঠকে ১০ হাজার ১১৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকার সাতটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।’
প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয়ের মধ্যে চার হাজার ৪০৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা সরকারি তহবিল, ৪৮৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা সংস্থাগুলোর নিজস্ব তহবিল ও পাঁচ হাজার ২২০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা প্রকল্প সাহায্য হিসেবে পাওয়া যাবে, বলেন মান্নান।
সাতটি প্রকল্পের মধ্যে তিনটি নতুন এবং চারটি সংশোধিত।
মন্ত্রী জানান, পুরান ঢাকা থেকে ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক দ্রব্য নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থা (বিসিআইসি) ৭৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য গুদাম নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পের আওতায় ৫৪টি গুদাম, দুটি তিন তলা অফিস, বিসিআইসির জন্য একটি অফিস ভবন, একটি মসজিদ ও প্রতিটি এক লাখ গ্যালন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি পানির ট্যাংক নির্মাণ করা হবে। সেই সাথে দুটি তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার (ইটিপি) স্থাপন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
মুন্সিগঞ্জের বিসিক রাসায়নিক শিল্প পার্ক প্রকল্প সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি পুরান ঢাকার চুরিহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এর মূল উদ্দেশ্য পুরান ঢাকার রাসায়নিক কারখানা ও গুদামগুলো মুন্সিগঞ্জে পরিবেশবান্ধব ও কম জনবহুল এলাকায় স্থানান্তর করা।
জেলার সিরাজদিখানে ৩১০ একর জমিতে এ রাসায়নিক শিল্প পার্ক স্থাপন করা হবে। পার্কে দুই হাজার ১৫৪টি শিল্প প্লট থাকবে এবং এতে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, পুরান ঢাকায় চার হাজার রাসায়নিক কারখানা ও গুদাম রয়েছে এবং এগুলো ওই এলাকার বাসিন্দাদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি করে আছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরান ঢাকার রাসায়নিক ব্যবসায়ীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিল্প পার্কে প্লট বরাদ্দ দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরান ঢাকায় কোনো রাসায়নিক কারখানা বা গুদাম থাকতে পারে না।
দুই হাজার ৪৭৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম-ফেনী-বাখরাবাদ গ্যাস সঞ্চালন সমান্তরাল পাইপ লাইন নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প অনুমোদনকালে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যে ভূমির নিচ দিয়ে গ্যাস লাইন যাবে তা চিহ্নিত করার নির্দেশ দেন।
বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া বাকি প্রকল্পগুলো হলো- তিন হাজার ৯৭১ কোটি ২৯ লাখ টাকার ‘সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প, ৭৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকার ‘সমাজকল্যাণ ভবন নির্মাণ’ প্রকল্প, এক হাজার ৭৪৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকার ‘প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন (তৃতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প ও ১৪৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকার ‘নীলফামারী জেলার চড়ালকাটা নদী সোজাকরণ এবং বুড়িতিস্তা নদী তীর সংরক্ষণ’ প্রকল্প।