ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ধারা অনুযায়ী সাজা ও দণ্ড স্থগিত চেয়ে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. রইস উদ্দিনের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে সাবিরার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এ জে মোহাম্মদ আলী ও আমিনুল ইসলাম। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট বায়েজিদ আহমেদ।
এর আগে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ ধারা অনুযায়ী বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, ড্যাব নেতা এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ পাঁচজনের দণ্ড স্থগিত চেয়ে করা আবেদন মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের বেঞ্চ খারিজ করে দেয়।
দুই বিচারপতির বেঞ্চটি পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারও অন্যূন দুই বছর কারাদণ্ড হলে এবং তার মুক্তির পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। কোনো আদালতের দেয়া দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল বিচারাধীন থাকলেও সাজা ও দণ্ড বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তা কার্যকর থাকে। এটা নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে পুরোপুরি বাধা। ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন এক্ষেত্রে সংবিধানের বিধানই প্রাধান্য পাবে।’
ওই দিনই দণ্ড স্থগিত চেয়ে এবং হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন জানান ড্যাব নেতা জাহিদ হোসেন। পরে বুধবার আপিল বিভাগও তার আবেদনে সাড়া দেয়নি। ফলে হাইকোর্টের আদেশই বহাল রয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাবিরার ছয় বছরের দণ্ড ও সাজার কার্যকারিতা স্থগিত করার পর তার আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬(১) ধারা অনুসারে আদালত সাবিরা সুলতানার সাজা ও দণ্ড স্থগিত করে। এখন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে তার আর কোনো বাধা থাকল না।’
আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা শুনানিতে বলেছি যে কোনো ব্যক্তির দণ্ড আপিল বিভাগে চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে দণ্ডিত বলার অবকাশ নেই। সে কারণে আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দণ্ডপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে সংবিধানের ৬৬(২) (ঘ) অনুচ্ছেদ প্রযোজ্য হবে না।’
মিথ্যা তথ্য ও জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় সাবিরা সুলতানাকে গত ১২ জুলাই ঢাকার বিশেষ আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম দুর্নীতি দমন আইনের ২৬(২) ধারায় তিন বছর এবং ২৭(১) ধারায় তিন বছর কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি সাবিরা সুলতানার এক কোটি ৭৮ হাজার ১৩৫ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেয়া হয়।