দীর্ঘ আড়াই বছর যাবত অ্যাম্বুলেন্সটি অলস অবস্থায় পড়ে আছে। চালক না থাকায় জটিল রোগীদের বাধ্য হয়ে দ্বিগুণ টাকা গচ্ছা দিয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে ভরসা করতে হচ্ছে। অকেজো পড়ে থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটির সাথের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রপাতিসহ মূল্যবান যন্ত্রপাতিগুলোও দিন দিন নষ্ট হতে চলেছে।
সিভিল সাজর্ন ও সংশ্লিষ্টরা এমন তথ্য জানিয়েছেন।
সিভিল সাজর্ন ডা. মো সাখাওয়াত উল্লাহ ইউএনবিকে বলেন, ‘আগের ড্রাইভার অবসরে চলে গেছেন। সেই থেকে আজও কোনো ড্রাইভারকে এখানে পদায়ন করা হচ্ছে না। অনেকবার ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষকে লিখেছি। সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম সাহেবকেও জানিয়েছি। কিন্তু এখনো কোনো খবর নেই।’
তিনি দু:খ করে বলেন, ‘আধুনিকমানের অ্যাম্বুলেন্স আছে কিন্তু ড্রাইভারই নেই।’
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। ৫০ শয্যায় উন্নীত করার সময় হাসপাতালে কোনো অ্যাম্বুলেন্স ছিল না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক লেখালেখির পর উক্ত হাসপাতালের নামে ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ নতুন একটি অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ আসে। তখন চালক অবসরে চলে যাওয়ায় সেই থেকেই চালক না থাকায় তা আজও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ঠিক কবে নাগাদ চালক পাওয়া যাবে তা জানেন না জেলা সিভিল সাজর্ন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার হিসেবে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্যে আসা অ্যাম্বুলেন্সটির জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জোরালো তদবির করেছিলেন। যার ফলে হাজীগঞ্জবাসীসহ সংশ্লিষ্ট পাশের উপজেলার অসংখ্য লোকের জন্য অ্যাম্বুলেন্সটি বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর স্থানীয় সংসদ সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে এটির উদ্বোধন করেন। কিন্তু এর জন্য চালক না থাকায় উদ্বোধনের দিন থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি অদ্যাবধি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ কারণে সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিকমানের এ অ্যাম্বুলেন্সটির চিকিৎসা সামগ্রীসহ মূল গাড়ির যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হচ্ছে। চালক না থাকার কারণে মূলত গরীব অসহায় আর দুঃস্থ রোগীদের বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
এখান থেকে মুমূর্ষু যে সকল রোগী কুমিল্লা বা ঢাকা মেডিকেলে রেফার করা হয়, তাদেরকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া দ্বিগুণ গুণতে হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রায় ৭ একর জমির ওপর হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠিত। ২০১৮ সালে এটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকার কারণে হাজীগঞ্জ ছাড়াও এই হাসপাতালে রামগঞ্জ, কচুয়া, শাহরাস্তি থেকে প্রতি মাসে গড়ে ১২/১৪ হাজার রোগী সেবা নিয়ে থাকে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস.এম. শোয়েব আহমেদ চিশতী জানান, সারা দেশের সরকারি হাসপাতালে প্রায় ১০০ চালকের পদ খালি আছে। চালকের পদায়ন হলেই চালক চলে আসবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ভারতের উপহার দেয়া প্রথম অ্যাম্বুলেন্সটি বেনাপোলে পৌঁছেছে
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, অ্যাম্বুলেন্স চালক পদায়নের জন্য সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো ভালো খবর নেই।