অপরদিকে এখন পর্যন্ত দৌলতপুর উপজেলায় প্রায় আড়াই শতাধিক প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরে আসা প্রবাসীদের মধ্যে গত দুদিনে ১৫০ জনের বাড়ির সামনে লাল নিশানা টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী প্রাগপুর ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার বেশকিছু মানুষ ভারতের কেরালা রাজ্যসহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে দিন মজুরির কাজ করে আসছিলেন। করোনার প্রবণতা দেখা দেয়ায় তাদের সে দেশ থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। এমনকি দেশটির কারাগারে বন্দি থাকা বাংলাদেশিদের বেশ কয়েকজনকেও মুক্তি দেয়া হয়েছে।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) রাতের আঁধারে তাদের সীমান্ত পথ দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছে। ভারত থেকে অবৈধভাবে ফেরত আসা এ পর্যন্ত প্রায় ১০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে চিহ্নিত করেছে উপজেলা প্রশাসন। আইনি জটিলতার কারণে তাদের বাড়ির সামনে লাল নিশানা দেয়া না হলেও নির্দিষ্ট ঘরের বাইরে না বেরোনোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের শুধু একটি এলাকারই চার ব্যক্তি ভারতের দমদম কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে অবৈধভাবে দেশে চলে এসেছেন। এরা হলেন মহিষকুন্ডি পাকুড়িয়া সীমান্ত এলাকার ভিকু মন্ডলের ছেলে আশরাফুল (২৮), জিন্নাত আলীর ছেলে বজলু (৩২), মৃত আব্দুল হান্নানের ছেলে সোনারুল (৩৭) ও কালু শেখের ছেলের নুরুল শেখ (৩৫)।
অপরদিকে এ উপজেলার প্রায় আড়াই শতাধিক প্রবাসী এখন পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন। বিভিন্ন দেশে থেকে ফিরে আসা প্রবাসীদের মধ্যে গত দুদিনে ১৫০ জনের বাড়িতে লাল নিশানা তোলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তারের নির্দেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজগর আলী এবং দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আরিফুর রহমান পর্যাপ্ত ফোর্স নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের সতর্ক ও সচেতন করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইওএনও) শারমিন আক্তার জানান, ভারত অবস্থানকারী বাংলাদেশিদের কয়েকজন সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন এরকম তথ্য তাদের কাছেও এসেছে। এজন্য নজরদারি বাড়ানোর জন্য বিজিবিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা সতর্কাবস্থায় রয়েছে। ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে জনসমাগম এড়িয়ে চলার জন্য গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এক সাথে পাঁচজনের অধিক মানুষ দেখা গেলে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি), নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আজগর আলী জানান, এখন পর্যন্ত ১০ জন ভারতের কেরালা থেকে অবৈধ পথে ফেরত আসার তথ্য তার কাছে রয়েছে। তাদেরকে নজরদারিতে রেখে রাষ্ট্রীয় বিধি-বিধান মেনে চলতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রবাসীদের ঘর থেকে না বেরিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আরিফুর রহমান জানান, প্রতিদিনই কমবেশি প্রবাসী এলাকায় আসছেন। এ পর্যন্ত ২৪৭ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে গত দুদিনে প্রায় ১৫০ জনের বাড়িতে লাল নিশানা তুলে দেয়া হয়েছে। অনেকে এলাকায় ফিরে এলেও পুলিশের কাছে তথ্য দিতে গড়িমসি করছেন। তাদের খুঁজে বের করতে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।