সোমবার বিকালে আপিল ও আবেদনের শুনানি শেষ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ রায়ের এই দিন ধার্য করেন।
এছাড়াও কারাবন্দী দুই আসামি কাজী সলিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের করা আপিল এবং সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনের ওপরও একইদিন রায় দেবে আদালত।
এর আগে সকালে আপিল নিষ্পত্তির সময়সীমা বৃদ্ধি করতে আপিল বিভাগে করা আবেদন খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চ। এছাড়া এ মামলায় অতিরিক্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চেয়ে করা আবেদনও আপিল বিভাগ খারিজ করে দেয়।
আপিল বিভাগ পূর্ব নির্ধারিত ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই আপিল নিষ্পত্তি করতে বলে। আপিল বিভাগের এই আদেশের কপি দুদক দুপুরেই হাইকোর্টে দাখিল করে। পরে বিকাল ৪টার দিকে হাইকোর্ট আদেশ দেয়।
আদেশে হাইকোর্ট বলে, ‘আপিল বিভাগের আদেশের কপি হাতে পেয়েছি। আদেশে ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশনা রয়েছে। এ অবস্থায় অতিরিক্ত সাক্ষ্যগ্রহণের আবেদনটি খারিজ করা হলো। একইসাথে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত নেই। এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকও শুনানি শেষ করেছে। এ অবস্থায় আপিল শুনানি শেষ হয়েছে ধরে নেয়া হলো এবং মঙ্গলবার রায়ের দিন ধার্য করা হলো।’
গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয় বিচারিক আদালত। সেই থেকেই তিনি কারাবন্দী রয়েছেন। তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচ আসামিকে দেয় ১০ বছর করে কারাদণ্ড।
এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় খালাস চেয়ে খালেদা জিয়া আপিল করেন। এছাড়া কারাবন্দী দুই আসামি কাজী সলিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদও আপিল করেন।
অপরদিকে, এ মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া অপর্যাপ্ত হয়েছে উল্লেখ করে তা বৃদ্ধির জন্য হাইকোর্টে আবেদন জানায় দুদক।
হাইকোর্ট এ মামলায় খালেদা জিয়াকে জামিন দিলে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক তার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগ গত ১৬ মে খালেদা জিয়ার জামিন বহাল রেখে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেয়। পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপিল নিষ্পত্তির সময়সীমা বাড়াতে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন জানায়।
গত ৩১ জুলাই আপিল বিভাগ ওই রিভিউ আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল নিষ্পত্তির সময় তিন মাস বাড়িয়ে ৩১ অক্টোবর নির্ধারণ করে। সর্বশেষ গত রবিবার আবারও আপিল নিষ্পত্তির সময়সীমা বাড়াতে আপিল বিভাগে আবেদন জানায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এই আবেদনটি সোমবার সকালে খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ।
এদিকে গত ১২ জুলাই থেকে হাইকোর্টে এসব আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ কার্যদিবস শুনানি হয়েছে। এ অবস্থায় গত ২২ অক্টোবর হাইকোর্টে অতিরিক্ত সাক্ষ্যগ্রহণের আবেদন জানানো হয়। কিন্তু হাইকোর্ট আবেদনটি নথিভুক্ত করে রাখে। এই নথিভুক্ত করে রাখার আদেশের বিরুদ্ধে গত ২৪ অক্টোবর আপিল বিভাগে আবেদন জানায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এ আবেদনটিও সোমবার খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ।
দুটি আবেদন সকালে খারিজ হওয়ার পর আদেশের কপিটি দুদকের আইনজীবীরা দুপুরের পরপরই হাইকোর্টে দাখিল করে। আপিল বিভাগের আদেশ দেখে হাইকোর্ট রায়ের দিন ধার্য করে।