পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, মঙ্গলবার ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, করতোয়া নদীর পানি ২৪ ঘণ্টায় ৫০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা বন্যাকবলিত হচ্ছে এবং এলাকাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির আরও মারাত্মক অবনতি হচ্ছে। সেইসাথে গোবিন্দগঞ্জের করতোয়া এবং ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে নদী ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
এছাড়া গাইবান্ধা সদরের নতুন ব্রীজ থেকে ডেভিড কোম্পানিপাড়ার আগের বাড়ি পর্যন্ত শহর রক্ষা বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যার আগে তড়িঘড়ি করে বালু দিয়ে সংস্কার শুরু করে। বন্যার পানির তোড়ে বালু সরে গিয়ে বাঁধের ৪টি পয়েন্টে ফুটো দিয়ে পানি চুইয়ে পড়ছে। সেইসাথে বাঁধের নিচের মাটি ধসে যাচ্ছে। ফলে শহর রক্ষা বাঁধটি এখন চরম হুমকির মুখে পড়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ পৌর চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের ২৫টি গ্রামে বসতবাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় প্রায় ৫০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এছাড়া ব্যাপক এলাকার ফসলী জমি তলিয়ে গেছে। করতোয়া নদীর ভাঙনে ওই ইউনিয়নের ধনদিয়া গ্রাম জুড়ে ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে দুদিনে ওই গ্রামে ২০টি পরিবার ও ফুলছড়ি উপজেলার পশ্চিম জিগাবাড়ি গ্রামের ৪২টি পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে গৃহহারা হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম পারভেজ সেলিম জানান, উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপক নদী ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনে চরম হুমকির মুখে পড়েছে এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের জিগাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি বাজার, নুরানী হাফিজিয়া মাদরাসা, ঈদগাহ মাঠ, একটি বিএস কোয়াটার, এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, দুটি জামে মসজিদ, তিনটি মোবাইল টাওয়ার ও একটি বাজার। নদী ভাঙন এলাকা থেকে মাত্র কয়েক গজ দূরেই এসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে তিনি জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও গাইবান্ধা শহর রক্ষা বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তবে বাঁধ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন বলেন, ‘জেলায় মোট ১৮টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সুন্দরগঞ্জে ৪, ফুলছড়িতে ৬, সাঘাটায় ৫ ও সদর উপজেলায় ৩টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত।’