বন্যা পরিস্থিতি
ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি কমতে থাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং যমুনা নদীর পানি কমতে পারে।
এছাড়াও আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদ্মা নদীর পানির স্তরও অপরিবর্তিত থাকতে পারে বা কমতে পারে।
অন্যদিকে, দেশের উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানির স্তর বাড়ছে।
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় নদ-নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজ থাকতে পারে এবং তা বিপৎসীমার নিচেই থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশজুড়ে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা: আবহাওয়া অধিদপ্তর
এছাড়াও কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়লেও কমছে সুরমা নদীর পানি। আগামী ২৪ ঘণ্টায় অবস্থা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগে সাঙ্গু নদীর পানি বাড়ছে। অন্যান্য প্রধান নদ-নদীর পানি কমছে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ সময় এ অঞ্চলের প্রধান নদী মুহুরী, গোমতী, সাঙ্গু, মাতামুহুরী প্রভৃতি নদীর পানি কমতে পারে।
এদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত আরও আটজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ১১ জেলায় সাম্প্রতিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
নতুন করে নিহতদের মধ্যে ফেনী ও কুমিল্লায় তিনজন এবং নোয়াখালীতে দুজন মারা গেছেন।
এ পর্যন্ত ফেনীতে ২৬ জন, কুমিল্লায় ১৭ জন, চট্টগ্রামে ৬ জন, নোয়াখালীতে ১১ জন, কক্সবাজারে ৩ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার ও লক্ষ্মীপুরে ১ জন করে মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭
শুক্রবারও মেট্রোরেল চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছি: ডিএমটিসিএল এমডি
২ মাস আগে
বিপৎসীমার নিচে গোমতী নদীর পানি, কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
গোমতী নদীর পানি কমতে থাকায় কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এছাড়া গত কয়েকদিনে কুমিল্লাতে বৃষ্টি না হওয়ায় এবং উজান থেকে পানি না আসায় পানির স্তর নামছে।
গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদীর বুরবুড়িয়া বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি বের হয়ে যাওয়াও কমেছে। এর ফলে বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার পানি কমছে।
এছাড়া প্লাবিত কুমিল্লা জেলার দক্ষিণাঞ্চল লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।
জেলা প্রশাসনের হিসাব মতে, জেলায় ১০ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি আছে। ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৭৮ হাজারেরও বেশি মানুষ।
বন্যাদুর্গতদের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ৩৩ লাখ নগদ টাকা ও ৬০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কুমিল্লায় পর্যাপ্ত ত্রাণ এসেছে। বিভিন্ন সংগঠন ও শিক্ষার্থীরা ত্রাণলো বন্যার্তদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।
এছাড়াও বন্যার্তদের চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছে ২২৫টি মেডিকেল টিম।
২ মাস আগে
২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২৮ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা চলমান ত্রাণ তৎপরতার হালনাগাদ তথ্য তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: কমেছে গোমতী নদীর পানি, কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
এসময় অতিরিক্ত সচিব জানান, দেশের সব নদ-নদীর পানি নেমে যাচ্ছে এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কোনো পূর্বাভাস নেই। এছাড়া সাম্প্রতিক বন্যায় ১২ লাখের বেশি পরিবার এবং ১১টি জেলার মোট ৫৮ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে কুমিল্লার ১২ জন, ফেনীর ২ জন, চট্টগ্রামে ৫ জন, খাগড়াছড়ির একজন, নোয়াখালীর ৬ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন ও কক্সবাজারের ৩ জন রয়েছেন। এছাড়া মৌলভীবাজারে নিখোঁজ রয়েছেন ২ জন। বন্যায় বাস্তুচ্যুতদের সহায়তার জন্য সরকার ৪ হাজার ৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে এবং ৫ লাখ ৪০ হাজার ৫১০ জন মানুষ এবং ৩৯ হাজার ৫৩১টি গবাদিপশুকে আশ্রয় দিয়েছে। এছাড়া দুর্গতদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে মোট ৬১৯টি মেডিকেল টিম মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১, ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৫৯ লাখ মানুষ
এছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে এবং বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি বেসরকারিসহ সব পর্যায় থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সংগ্রহ করা মোট ৮৮ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার, কাপড় ও পানি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের (ডিডিএম) মাধ্যমে বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর (ডিডিএম) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
এছাড়া বন্যাকবলিত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স, মেডিকেল টিম ও স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইয়েমেনে আকস্মিক বন্যায় ২৫ জনের মৃত্যু
২ মাস আগে
নেই দাফনের সুযোগ, লাশ ভাসিয়ে দিতে হচ্ছে কলা গাছের ভেলায়
পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় বিধ্বস্ত ফেনী। বন্যা কেড়ে নিয়েছে সবকিছু। এই সব কেড়ে নেওয়ার মিছিলে যারা স্বজন হারিয়েছেন তাদের বেদনার ভয়াবহতা হৃদয়বিদারক। সব তলিয়ে যাওয়ায় মাটির অভাবে মৃত মানুষটির দাফন বা সৎকারের সুযোগ না পেয়ে ভাসিয়ে দিতে হচ্ছে কলা গাছের ভেলায়। স্বজনের মরদেহ যেন একটু মাটির ছোঁয়া পায় সে আশায় অনেকে মরদেহর সঙ্গে কাগজে দাফনের অনুরোধ লিখে দিচ্ছেন। জীবনের এমনই ভয়াবহতা ছুঁয়ে যাচ্ছে ফেনীবাসীকে।
স্থানীয় সংবাদকর্মী নাজমুল হক শামীম জানান, শনিবার রাতে ফেনী শহরের মিজান রোডে সোনালী ব্যাংকের সামনে হাঁটু পানিতে একটি শিশুর (৫) মরদেহ ভেলায় ভাসতে দেখি। কয়েকজন মানুষ সেই লাশটির জানাজা ও দাফনের জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু কোথায় সেটি দাফন করা হয়েছে তা আর জানা যায়নি।
রবিবার ফেনী সদর উপজেলার লালপোল এলাকার উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামে বন্যায় ভেসে আসে আরেকটি শিশুর লাশ।
উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা পপি মজুমদার বলেন, ‘রবিবার সকালে আমার স্বামী ডোবায় আনুমানিক পাঁচ বছরের এক শিশুর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে লোকজনকে খবর দেন। তারপর কয়েকজন ধরাধরি করে মরদেহটি এনে সড়কের পাশে রাখেন।’
স্থানীয় জয়নাল মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, শিশুটির চোখ দুটো ফুলে সাদা হয়ে গেছে। শরীরের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। শিশুটির শরীরের ভেতর পানি ঢুকে একদম ফুলে গেছে। লাশের সঙ্গে একটি কাগজে অনুরোধ করে লেখা হয়েছে- বন্যার মধ্যে মাটি না পেয়ে কলার ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়। কেউ লাশ পেলে যেন কবর দেওয়া হয়।
ফেনী জেলা জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক আ ন ম আব্দুর রহিম জানান, শনিবার সদর উপজেলার মৌটবী ইউনিয়নের সাতসতী গ্রামের নুরুল আলম (৬৫) মারা যান। পরে তার মরদেহ পরিবারের সদস্যরা কলার ভেলায় ভাসিয়ে দেন।
একই দিন সদরের কালীদহ রেললাইনের পাশে একটি অর্ধগলিত মরদেহ ভাসতে দেখেছেন বলে জানান তিনি।
ওমানপ্রবাসী মাসুদ খান ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, তার বাবা আলীম উল্লাহ (৭৩) মারা যাওয়ার পর লাশ কলার ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। আলীম উল্লাহ সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাতসতী গ্রামের নাছির ভূঁইয়া বাড়ির বাসিন্দা। শুক্রবার ভোরে মারা যান তিনি। তখন পুরো গ্রাম পানিতে তলিয়ে থাকায় তার দাফনের ব্যবস্থা করা যায়নি।
শনিবার স্বজনরা মরদেহ কলাগাছের ভেলায় ভাসিয়ে দেয়। সঙ্গে একটি চিরকুটে তাকে দাফনের অনুরোধ করা হয়। সেখানে ঠিকানাও দেওয়া হয়।
চিরকুটে লিখে দেওয়া হয়, ‘এই মৃতদেহটি অতিরিক্ত বন্যার কারণে আমরা দাফন করতে পারিনি। দুদিন অতিবাহিত হওয়ার পরে আমরা পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছি। সঙ্গে আমাদের এলাকার নাম-ঠিকানাসহ ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ শুকনো জায়গা পান, তাকে কবর দিয়ে দেবেন এবং আমাদের এই ঠিকানায় যোগাযোগ করবেন। আপনাদের কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ থাকব’।
ফেনী সদর উপজেলার একটি গ্রামে বন্যার পানিতে মরদেহ ভাসছে উল্লেখ করে সাংবাদিক ফারাবী হাফিজ তার ফেসবুকে একটি লাশের তথ্য জানিয়ে লেখেন, কলার ভেলায় মরদেহ ভাসছে। প্লাস্টিকে লেখা, মুসলিম মহিলা। পারলে জানাজা পড়ে দিয়েন।
জানা যায়, দাফনের জন্য জায়গা না পেয়ে বানের পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় শিফু (৪২) নামের ওই নারীকে। বৃহস্পতিবার বন্যায় মারা যান তিনি।
ফেনী সদর উপজেলার উত্তর ধলিয়া গ্রামের লতিফ হাজী বাড়ির মৃত নুরুল আমিনের মেয়ে শিফু। তার ভগ্নিপতি শাহেদুল হক জুয়েল জানান, শিফুর দাফনের ব্যবস্থা করে দিতে প্রশাসনের কাছে বারবার অনুরোধ করা হয়েছিল। সহযোগিতা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে পানিতে ভাসিয়ে দিতে হয়েছে।
এদিকে ফেনী নদীতে পড়ে নিখোঁজের তিন দিন পর মো, জাহেদুল ইসলাম (১৭) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এলাকাবাসী ফেনী নদীর আমলীঘাট সীমান্তে নিখোঁজ হওয়া যুবকের লাশটি ভাসমান অবস্থায় দেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এর আগে রবিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার ১ নম্বর করেরহাট ইউনিয়নের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে রেখার জিরো পয়েন্টের আমলীঘাট এলাকার মেরকুম নামকস্থানে নৌকা থেকে পড়ে নিখোঁজ হন জাহেদুল। তিনি পূর্ব অলিনগর গ্রামের মো. ফারুক ইসলামের ছেলে।
ফেনী আল জামিয়াতুল ফালাহিয়া আশ্রায়ন প্রকল্পের মো. আজিজুর রহমান জানান, বন্যার পানিতে ভেসে আসা পাঁচটি লাশ গত শনিবার ও রবিবার দাফন করেছেন। এছাড়াও আশ্রয়ন প্রকল্পে স্বাভাবিক মৃত্যু হওয়া তিনজনের লাশও দাফন করেছেন।
বন্যার পানিতে লাশ ভেসে আসার আরও কিছু তথ্য ফেসবুক পোস্টে দিয়েছেন অনেকে। তবে তাদের তথ্য যাচাই করা যায়নি।
এদিকে জেলা প্রশাসনের কাছে বন্যায় একজনের মৃত্যুর তথ্য রয়েছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার।
২ মাস আগে
কমছে প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি)।
এফএফডব্লিউসির এক বুলেটিনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী পূর্ব কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলা এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকায় তেমন বেশি বৃষ্টিপাত হয়নি এবং উজানের নদ-নদীগুলোর পানি কমতে শুরু করেছে।
ফলে ফেনী ও কুমিল্লা জেলার নিম্নাঞ্চলে বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি দেখা যাচ্ছে।
হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে গেছে।
আরও পড়ুন: ত্রাণ নয় টেকসই বেড়িবাঁধ চান খুলনার ১৪ গ্রামের মানুষ
আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীর পানি কমতে পারে।
আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজান অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় কুমিল্লা জেলার গোমতী নদীর পানি কমতে পারে এবং আশপাশের নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনী জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও কোথাও কোথাও স্থিতিশীল থাকতে পারে।
আবহাওয়া অফিসারদের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানাঞ্চলে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় চট্টগ্রাম জেলার সাঙ্গু, মাতামুহুরী, কর্ণফুলী, হালদাসহ অন্যান্য প্রধান নদ-নদীর পানি পর্যায়ক্রমে বাড়তে পারে।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীর পানির স্তর নামছে, অন্যদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির স্তর অপরিবর্তিত রয়েছে এবং উত্তরাঞ্চলের তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার নদীর পরিস্থিতিও স্বাভাবিক, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: সবাইকে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির
২ মাস আগে
লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, পানিবন্দি ৭ লাখ মানুষ
লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও নোয়াখালী থেকে আসা পানিতে রবিবার (২৫ আগস্ট) জেলার ৫টি উপজেলায় বন্যার পানির উচ্চতা বেড়েছে। এছাড়াও জেলার মেঘনা নদীসহ খাল-বিলের পানি বেড়ে গেছে।
এতে জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। রান্না-বান্নাসহ দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৭ লাখ মানুষ। ভেসে গেছে কয়েকশ মাছের প্রজেক্ট, মুরগি খামার।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বন্যায় ৩ উপজেলায় ৫ জন নিহত
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কয়েকদিনের মধ্যে বন্যার পানি কমতে পারে। এছাড়া বেশি ক্ষতি হয়েছে মৎস্য খাতে। প্রায় সব পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বন্যার পানিতে।
মৎস্য বিভাগ জানায়, বন্যার পানিতে লক্ষ্মীপুরের প্রায় ৪০ হাজার পুকুর ডুবে চাষের প্রায় সব মাছ ভেসে গেছে। এতে জেলায় মৎস্য খাতে প্রায় ৮০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘নদীতে ভাটা এলে জলাবদ্ধতা নিরসনে সবগুলো স্লুইচ গেট খুলে দেওয়া হয়। আবার জোয়ারের সময় গেটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: বন্যায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে ২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি
তিনি আরও বলেন, ‘এখনও মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এক-দুই দিনের মধ্যে পানি কমতে পারে।’
জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, ‘রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলার পানি কমতে শুরু করলেও নোয়াখালী বন্যার পানির চাপে লক্ষ্মীপুর সদরের দক্ষিণাঞ্চল, কমলনগর ও রামগতি উপজেলায় পানি বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘জেলার ৫৮টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভার সবগুলোতে কমবেশি জলাবদ্ধতা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ২০ হাজার মানুষ রয়েছে।’
এছাড়াও বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ দেওয়া চলছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বন্যার সময় বিদ্যুৎ ও গ্যাসজনিত দুর্ঘটনা থেকে সাবধান থাকতে করণীয়
২ মাস আগে
কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, পানিবন্দি ৭ লাখ মানুষ
গোমতী নদীর বাঁধ ভাঙা পানিতে আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার সাত লাখের বেশি মানুষ।
এখনো অনেকে আটকা পড়ে আছেন। উদ্ধার কর্মীরা শুকনো খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে দুর্গত এলাকায় পৌঁছার চেষ্টা করছে। তবে রাস্তা ডুবে যাওয়া ও নৌকা না থাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।
এদিক গেল ২৪ ঘণ্টায় গোমতী নদীর পানি ৮০ সেন্টিমিটার কমলেও এখনো বিপৎসীমার উপরে রয়েছে।
আরও পড়ুন: গণত্রাণ: বন্যার্তদের জন্য টিএসসি যেভাবে আশার আলো হয়ে উঠল
কুমিল্লা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, কুমিল্লায় ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এগুলোতে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে দুর্গত মানুষের জন্য ৩৪০ টন চাল ও নগদ ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত ২২৫টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি বিসিবির
২ মাস আগে
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে 'দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহায়তা সমন্বয় সেল' গঠন
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহায়তা সমন্বয় সেল গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব মো. হারুন-অর-রশিদ সেলের দৈনন্দিন কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবেন।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
'দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সহায়তা সমন্বয় সেল'-এ জরুরি যোগাযোগের জন্য-
টেলিফোন নম্বর: ০২-৪৭১১৮৭০০, ০২- ৪৭১১৮৭০১, ০২-৪৭১১৮৭০২, ০২-৪৭১১৮৭০৩, ০২-৪৭১১৮৭০৪ ও ০২-৪৭১১৮৭০৫
মোবাইল নম্বর: ০১৩১৭৭৪৯৯৮০ ও ০১৮২০১১৭৭৪৪।
এই সমন্বয় সেল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে তথ্য সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবে এবং সার্বক্ষণিক ফলোআপ দিতে থাকবে।
আরও পড়ুন: বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল
২ মাস আগে
বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল
সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতিতে বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
বুধবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দেশের উজানে ভারী বৃষ্টির কারণে সুরমা-কুশিয়ারা, ধলাই, মনু, খোয়াই, গোমতী, মুহুরী এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী ও হালদা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
এছাড়া বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
যেকোনো জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে যোগাযোগ করতে হবে যেসব নাম্বারে- ০১৩১৮২৩৪৯৬২, ০১৭৬৫৪০৫৫৭৬, ০১৫৫৯৭২৮১৫৮, ০১৬৭৪৩৫৬২০৮।
যোগাযোগ করতে পারেন এই ইমেইল ঠিকানাগুলোতেও- [email protected] ও [email protected]।
এছাড়াও বন্যা সংক্রান্ত তথ্য দিতে নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হানকে (যোগাযোগের নম্বর: ০১৫৫২৩৫৩৪৩৩) ফোকাল পয়েন্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
২ মাস আগে
কুমিল্লায় বন্যার আশঙ্কা, ফেনী-চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত: এফএফডব্লিউসি
কুমিল্লা জেলায় গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় নিচু এলাকাগুলোতে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি)।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, এই সময়ের মধ্যে ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী ও হালদা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এছাড়াও মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই ও ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও নিচু এলাকাগুলোর বন্যা পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হবে না।
আরও পড়ুন: আগামী ২৪ ঘণ্টা সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে: এফএফডব্লিউসি
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও গোমতী নদীর পানির স্তর নামার সম্ভাবনা নেই।
এদিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানেও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা নদীর পানি কমলেও পদ্মার পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এসব নদীর পানি আরও কমতে পারে। তবে বাড়ছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি।
আরও পড়ুন: দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে: এফএফডব্লিউসি
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে: এফএফডব্লিউসি
৩ মাস আগে