বাজেট
বাজেট বাস্তবায়নে সুশাসন বড় চ্যালেঞ্জ: এফবিসিসিআই
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে সুশাসন একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
শনিবার মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবনে বাজেট-উত্তর প্রতিক্রিয়া বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মুদ্রাস্ফীতির মুখে জনগণের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বাজেটের আকার খুবই সময়োপযোগী।
আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেটের কয়েকটি কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করা দরকার: ড. আতিউর
তিনি প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নে দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও তত্ত্বাবধানের গুণমান ক্রমাগত উন্নয়নের জন্য সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা ও পরিকল্পনা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, সার ভর্তুকি অব্যাহত রাখা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়নের ওপর জোর দেয়া, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, গ্রামীণ উন্নয়ন, প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা প্যাকেজের সম্পূর্ন বাস্তবায়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা উদ্যোগ সম্প্রসারণের বিষয়গুলো বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন তিনি।
কর ও ভ্যাট সংক্রান্ত এফবিসিসিআইয়ের সুপারিশ বাস্তবায়ন না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যবসায়িক এই সংগঠন অর্থপাচার সমর্থন করে না। এটা দেশে সৎ ব্যবসায়ীদের নিরুৎসাহিত করবে।
আরও পড়ুন: বাজেটে নিম্ন-মধ্যম আয়ের জনগণের জন্য কোনো সুখবর নেই: সিপিডি
বাজেট অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে: অর্থমন্ত্রী
প্রস্তাবিত বাজেটের কয়েকটি কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করা দরকার: ড. আতিউর
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও উন্নয়ন সমন্বয়ের চেয়ার ড. আতিউর রহমান বলেছেন, সামগ্রিক বাজেটের উন্নতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের কয়েকটি কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করা দরকার।
শনিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত উন্নয়ন সমন্বয়ের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পর্যালোচনা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এ কথা বলেন ড. আতিউর।
সব কোম্পানির সুদের আয়ের ওপর উৎস কর বৃদ্ধি সংক্রান্ত ট্যাক্স প্রস্তাব; মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবার ওপর কর বৃদ্ধি এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার সুযোগ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাজেটে নিম্ন-মধ্যম আয়ের জনগণের জন্য কোনো সুখবর নেই: সিপিডি
ড. আতিউর বলেন, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের জন্য আরও বরাদ্দ নিশ্চিত করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য একটি সতর্ক বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে যেখানে আমদানি হ্রাসের প্রয়োজনীয়তা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বরাদ্দের চাহিদা উভয়ই বিবেচনা করা হয়েছে। জনগণের আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ও প্রবৃদ্ধির গতি বজায় রেখে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অধিবেশনে আরও উপস্থিত ছিলেন- উন্নয়ন সমন্বয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ রবার্ট শুভ্র গুডা, নীতি বিশ্লেষক জিনিয়া শারমিন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন ও সমাজবিজ্ঞানী খন্দকার সাখাওয়াত আলী।
রবার্ট শুভ্র গুডা বলেন, অধিকাংশ নাগরিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য প্রচুর ব্যয় করেন যেটার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ওষুধ ক্রয়ে ব্যয় হয়।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বাজেটের চিকিৎসা ও সার্জিকাল সরঞ্জাম উপখাতের জন্য অতিরিক্ত ১২’শ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করলে এ সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেট লুটেরা বান্ধব: মির্জা ফখরুল
অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় নিশ্চিত করেছেন, প্রয়োজনে জ্বালানি ও সারে ভর্তুকি বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য বরাদ্দের ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসরণ করা উচিত বলে মনে করেন জিনিয়া শারমিন।
জামাল উদ্দিন কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানো এবং এনবিআরের কর আদায়ের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে উপজেলা পর্যায় থেকে কার্যকরভাবে কর আদায়ের প্রস্তুতি এনবিআরের নেই।
সমাপনী বক্তব্যে খন্দকার সাখাওয়াত আলী অসংখ্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে বাজেট দিতে পারার জন্য সরকারের প্রশংসা করেন।
তিনি নীতিনির্ধারকদের বিভিন্ন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের বাজেট পর্যালোচনা থেকে আসা সুপারিশগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বাজেট অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে: অর্থমন্ত্রী
বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে আনার সুযোগ বাতিলের আহ্বান টিআইবির
সরকারি ব্যয়ে সংকুলান এবং বেসরকারি খাতকে চাঙ্গা করার যুক্তিতে দেশ থেকে পাচার করা অর্থ বিনা প্রশ্নে ফেরত আনতে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রস্তাব বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, `নামমাত্র কর দিয়ে প্রশ্নহীনভাবে পাচার করা অর্থ বিদেশ থেকে আনার সুযোগ স্পষ্টতই অর্থ পাচারকারীদের অনৈতিক সুরক্ষা ও পুরস্কার প্রদান। অথচ অর্থপাচার রোধ আইন ২০১২ এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অর্থপাচার গুরুতর অপরাধ, দেশের আইন অনুযায়ী যার শাস্তি পাচারকৃত অর্থ বাজেয়াপ্ত করা এবং তার দ্বিগুন জরিমানা ও ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড নির্ধারিত রয়েছে। এই সুযোগ অর্থ পাচার তথা সার্বিকভাবে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে।’
তিনি বলেন, যারা বৈধ উপার্জননির্ভর করদাতা তাদের জন্য এই প্রস্তাব প্রকটভাবে বৈষম্যমূলক, কারণ তারা ৭ শতাংশের কমপক্ষে তিনগুণ হারে কর দিয়ে থাকেন। এটি বৈষম্য ও সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থী। অবিলম্বে এ সুযোগ বাতিল করতে হবে এবং অর্থপাচারকারীদের জবাবদিহীতা নিশ্চিতের জন্য যে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আইনি প্রক্রিয়া নির্ধারিত রয়েছে তা অনুসরণ করে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: মূল্যস্ফীতিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অর্থমন্ত্রী
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, পাচারকৃত অর্থ বৈধ করার সুযোগ প্রদান বিগত বছরগুলোর মতই কালো টাকা সাদা করার বেআইনি ও অন্যায় সুযোগের ধারাবাহিকতা মাত্র, যা স্থানিক থেকে বৈশ্বিক করা হলো।
প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আমদানি মূল্যস্ফীতির চাপ, ডলারের বিপরীতে টাকার মান ধরে রাখা, আমদনি ব্যয় বেড়ে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকার মতো বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকটগুলোকে স্বীকার করলেও এগুলোকে মোকাবিলায় কার্যকর কৌশল বা পথ নির্দেশিকা দিতে পারেননি মন্তব্য করে ড. জামান বলেন, ‘প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীকে আরো বড় করার প্রত্যাশা থাকলেও প্রস্তাবিত বাজেটে তার তেমন কোনো নিদর্শন দেখা যায়নি। বরং সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ব্যয়কে বড় করে দেখাতে সরকারি কর্মচারীদের পেনশন, সঞ্চয়পত্রের সুদ, করোনার অভিঘাত উত্তরণে দেয়া ঋণের সুদ মওকুফকে অর্ন্তভূক্ত করে দেখানো হয়েছে, যেগুলো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর অংশই নয়।
আরও পড়ুন: বাজেট অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে: অর্থমন্ত্রী
পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনলে কোনো প্রশ্ন করা হবে না: অর্থমন্ত্রী
এমপিওভুক্তির ঘোষণা এক সপ্তাহের মধ্যে: দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, সরকারের বেতন আদেশের আওতায় আনতে এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করবে সরকার।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন এমপিও (মাসিক পে অর্ডার) তালিকাভুক্তির জন্য কাজ করছি, এক সপ্তাহের মধ্যে তালিকা প্রকাশ করা হবে।’
শুক্রবার বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সরকার নিশ্চয়ই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করবে, তবে তিনি সংখ্যা প্রকাশ করেননি।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: দেশে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
এর আগে অর্থমন্ত্রী বৃহস্পতিবার জাতীয় বাজেট পেশ করেছেন।
শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দীপু মনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেট বেড়েছে ১৯ দশমিক ৭২ শতাংশ (প্রায় ২০ শতাংশ)। এছাড়া গবেষণা ও উন্নয়ন খাতেও বরাদ্দ বেড়েছে।
তিনি বলেন, শুধু তার মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় নয়, মোট ২৮টি মন্ত্রণালয় শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে কাজ করছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে ও কমতে পারে
শিক্ষা খাতে বরাদ্দ এখনও দেশের জিডিপির ২ শতাংশেরও কম।
আসন্ন অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিপরীতে ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বিপরীতে ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের বিপরীতে ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এবার স্বাস্থ্য খাতে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা (মূলত ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা) বরাদ্দ করা হয়েছে, যা মোট বাজেটের প্রায় ৫.৫ শতাংশ (৫.৪৩ শতাংশ)।
তিনি বলেন, বাজেটে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ওপর বেশি জোর দেয়া হয়েছে। তাই, আমরা খুবই খুশি।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: পাচার হওয়া অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ
বাজেটে নিম্ন-মধ্যম আয়ের জনগণের জন্য কোনো সুখবর নেই: সিপিডি
সদ্য ঘোষিত বাজেটে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের জনগণের জন্য কোনো সুখবর নেই বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার ৬.২৯ শতাংশ (বিবিএস অনুসারে এপ্রিলে) থেকে ৫.৬ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করলে সিপিডি নেতারা এ ব্যাপারে সরকারের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, মুদ্রাস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে পৌঁছেছে।
১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া আসন্ন অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের ৬ দশমিক ৭৮ ট্রিলিয়ন টাকার জাতীয় বাজেট পেশের একদিন পর শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: বাজেট অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে: অর্থমন্ত্রী
সিপিডির মতে, নিম্ন, মধ্যবিত্ত এবং স্থির আয়ের গোষ্ঠীগুলো একটি পরিবার চালানোর জন্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে কেননা মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা বেশি থাকলে পণ্যের দাম কমার সম্ভাবনা নেই।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ডা. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করার পর থেকে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম বাড়ছে।
তিনি বলেন, বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। চাল-ডালসহ ২৯টি পণ্যের দাম কমানোর প্রয়োজন ছিল, কিন্তু তা হয়নি। সিপিডি এক্ষেত্রে কর কমানোর সুপারিশ করেছিল কিন্তু তাও রাখা হয়নি।
ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, অর্থমন্ত্রী অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলোর কথা উল্লেখ করলেও তিনি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পথ উল্লেখ করেননি।
সিপিডি বলছে, বেসরকারী খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে যা বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিলে প্রভাবিত হবে।
এক্সচেঞ্জ রেট ২৩ অর্থবছরে গড়ে প্রতি মার্কিন ডলারের জন্য ৮৬.২ টাকায় পৌঁছাবে বলে বলা হলেও কীভাবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে তা বাজেটে বলা হয়নি।
কৃষি খাতে এবং খাদ্য উৎপাদনে ভর্তুকি বাড়ানোর জন্য বাজেটের প্রশংসা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: কৃষিযন্ত্রে বিশাল ভর্তুকি
প্রতিবন্ধকতা থাকলেও জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
করোনার সময়েও দেশের প্রবৃদ্ধির হার সাফল্যজনক ছিল উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তবে আগামী বাজেটের জিডিপি লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করা সম্ভব।তিনি বলেন, করোনার সময়ও দেশের প্রবৃদ্ধির হার ছিল সাফল্যজনক। যা পৃথিবীর মধ্যে উল্লেখযোগ্যও ছিল। দেশের খেটেখাওয়া মানুষের শ্রম আর প্রধানমন্ত্রীর সঠিক সিদ্ধান্ত ও দিকনির্দেশনার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।শুক্রবার দুপুরে সিলেট সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত বিভাগীয় আন্তঃ প্রাতিষ্ঠানিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রীজাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের যাতে উন্নয়ন হয়, মঙ্গল হয় সেই লক্ষ্যেই সরকার কাজ করছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী খুবই সাহসী নারী ও দেশের উন্নয়নে একাগ্রচিত্ত। কোভিডের সময় অনেক গণমাধ্যম বলেছিল গেল গেল, দেশ শেষ। দেশের আর উন্নয়ন হবে না। কিন্তু আল্লাহ মেহেরবান কোভিডের সময় আমাদের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৯৪। যা অত্যন্ত সাফল্যজনক ও বিশ্বের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল।মন্ত্রী বলেন, ‘বাজেটে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫ ধরা হয়েছে। অনেক বড় বাজেট। এগুলো অর্জনে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। কোভিডের প্রতিবন্ধকতা আছে, ইউক্রেনের প্রতিবন্ধকতা আছে। এরপরও আমরা আশাবাদী। কারণ আমরা প্রতিবন্ধকতা জয় করে সফলতা অর্জন করতে জানি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার প্রতিহত করতে প্রবাসীদের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহবানজনপ্রতিনিধিরা বেশি দুর্নীতি করেন না মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ‘দেশে ৬৫ হাজার জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। এর মধ্যে মাত্র ৫২ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। ৬৫ হাজারের মধ্যে ৫২ জন এটা ‘নাথিং’। দেশে সুশাসন আছে বলেই জনপ্রতিনিধিরা দুর্নীতিতে জড়ান না।’এর আগে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশে দারিদ্র্যতার হার ২০ শতাংশে নেমে এসেছে এবং অতি দারিদ্যতার হার ১০ শতাংশ। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এ হার আরও নেমে আসবে।তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় দেশের মানুষের অর্থনৈতিক কল্যাণের পাশাপাশি বিশ্বে অন্যান্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে বাংলাদেশ।সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিলেটের উপ মহা পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মফিজ উদ্দিন আহমদ, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেসা হক, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করতে ইউএনএইচসিআরের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
প্রস্তাবিত বাজেট লুটেরা বান্ধব: মির্জা ফখরুল
লুটকারীদের সাধারণ ক্ষমার প্রস্তাব দেয়ায় সরকারের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট লুটেরা বান্ধব, সাধারণ মানুষের জন্য নয়।
তিনি বলেন, ‘যারা জনগণের টাকা চুরি, ছিনতাই ও লুটপাট করেছে এবং পিকে হালদারের মতো তা বিদেশে জমা করেছে তাদের সাহায্য করবে এ বাজেট। তারা এখন ৭ শতাংশ কর দিয়ে বিদেশ থেকে কালো টাকা আনতে পারবে এবং কেউ এর বিরুদ্ধে কোনও প্রশ্ন তুলতে পারে না।’
শুক্রবার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে বক্তব্যে বিএনপি নেতা আরও বলেন, অর্থ পাচারকারীরা দুদকের হাতে ধরা পড়বে না এবং কর দিলে তাদের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট কোনো প্রশ্ন তুলবে না।
আরও পড়ুন: এটি লুটের বাজেট: ফখরুল
ফখরুল বলেন, সরকার এখন জনগণের পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভারী করছে, দেশের অর্থনীতি ও সম্ভাবনাকে ধ্বংস করছে।
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটে প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ৭ থেকে ১৫ শতাংশ করের বিনিময়ে বৈধ করা যাবে।
তিনি বলেন, বাজেট নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, বাড়ি ভাড়া, পরিবহন ভাড়া এবং সারের দাম কমাতে সাহায্য করবে না। গ্যাসের দাম যেমন বাড়বে, তেমনি সার ও সব পণ্যের দামও বাড়বে। কিন্তু মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তেমন বাড়েনি।
বাজেটে জনপ্রশাসনে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের পকেট থেকে টাকা কেটে পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট, ডিসি, ইউএনও এবং সচিবালয়ে যারা কাজ করেন তাদের বেতন ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য সরকার এটা করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ফলে দেশের ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে।
আরও পড়ুন: বাজেট অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে: অর্থমন্ত্রী
বাজেট ২০২২-২৩: কৃষিযন্ত্রে বিশাল ভর্তুকি
বাজেট অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট বাস্তবায়ন অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত করবে।
শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আশা করি এই বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত হবে।’
অর্থমন্ত্রী করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ওপর বিশেষ মনোযোগ দিয়ে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার জাতীয় বাজেট উন্মোচন করেছেন।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: সম্পূর্ণ অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা করেছেন অর্থমন্ত্রী
এটি লুটের বাজেট: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের আগামী বছরে জনগণের টাকা লুটপাটের সুযোগ বাড়াতে নতুন জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই আমরা বাজেট নিয়ে আমাদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে আসি, কিন্তু এবার আমরা কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে চাই না...এই বাজেট কে দিচ্ছে? তারা জনগণের প্রতিনিধি নয়।’
কাফরুল থানাধীন ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির চারটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলে ফখরুল আরও বলেন, বাজেট পেশ করার অধিকার যাদের নেই তারাই এই বাজেট দিয়েছে।
তিনি বলেন, তারা (সরকার) শুধু লুটপাটের জন্য বাজেট তৈরি করে। তারা ভবিষ্যতে কত টাকা লুট করবে তার একটি হিসাব করে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছে। এখন তারা সেখান থেকে কত টাকা লুটপাট করবে তার একটি হিসাব করবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, জাতীয় বাজেট নিয়ে তিনি বেশি কথা বলতে আগ্রহী নন, কারণ এই বাজেট কেবল ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের লুটের সুযোগ বাড়িয়ে দেবে।
ফখরুল বলেন, যারা ক্ষমতা দখল করে দেশের মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে, পুরো জাতি খারাপ সময় পার করছে। শুধু তাই নয় তারা দেশে লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট এবং তার চতুর্থ বাজেট।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে উন্নয়নের হারানো গতি ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট রেখেছেন কামাল।
পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: উৎসবের আমেজ ফিরল সংসদে
বাজেট ২০২২-২৩: দেশে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে
বাজেট ২০২২-২৩: পাচার হওয়া অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ
বাজেট ২০২২-২৩: ১৫ টাকা কেজি দরে চাল পাবে ৫০ লাখ পরিবার
নিম্ন আয়ের ৫০ লাখ পরিবার প্রতি মাসে ১৫ টাকা দরে ৩০ কেজি চাল সহায়তা পাবে।
বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কর্মাভাবকালীন সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এবং মার্চ ও এপ্রিলে এই সহায়তা দেয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, জাতীয় বাজেটে দেশীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং খাদ্য সামগ্রীর সরবরাহ ব্যবস্থাপনাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
মুস্তফা কামাল বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন, সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং কৃষি বিপণন ব্যবস্থাসহ সার্বিক পণ্য উৎপাদন অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী থেকে সৃষ্ট সংকট সত্ত্বেও সরকারের সময়োপযোগী উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশ নিরবচ্ছিন্নভাবে কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: কৃষি, খাদ্য ও মৎস খাতে ৩৩,৬৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ
বাজেট ২০২২-২৩: রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা