বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও উন্নয়ন সমন্বয়ের চেয়ার ড. আতিউর রহমান বলেছেন, সামগ্রিক বাজেটের উন্নতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের কয়েকটি কর প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করা দরকার।
শনিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত উন্নয়ন সমন্বয়ের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পর্যালোচনা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এ কথা বলেন ড. আতিউর।
সব কোম্পানির সুদের আয়ের ওপর উৎস কর বৃদ্ধি সংক্রান্ত ট্যাক্স প্রস্তাব; মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবার ওপর কর বৃদ্ধি এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার সুযোগ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাজেটে নিম্ন-মধ্যম আয়ের জনগণের জন্য কোনো সুখবর নেই: সিপিডি
ড. আতিউর বলেন, অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের জন্য আরও বরাদ্দ নিশ্চিত করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য একটি সতর্ক বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে যেখানে আমদানি হ্রাসের প্রয়োজনীয়তা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বরাদ্দের চাহিদা উভয়ই বিবেচনা করা হয়েছে। জনগণের আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে ও প্রবৃদ্ধির গতি বজায় রেখে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অধিবেশনে আরও উপস্থিত ছিলেন- উন্নয়ন সমন্বয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ রবার্ট শুভ্র গুডা, নীতি বিশ্লেষক জিনিয়া শারমিন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন ও সমাজবিজ্ঞানী খন্দকার সাখাওয়াত আলী।
রবার্ট শুভ্র গুডা বলেন, অধিকাংশ নাগরিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য প্রচুর ব্যয় করেন যেটার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ওষুধ ক্রয়ে ব্যয় হয়।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বাজেটের চিকিৎসা ও সার্জিকাল সরঞ্জাম উপখাতের জন্য অতিরিক্ত ১২’শ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ করলে এ সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেট লুটেরা বান্ধব: মির্জা ফখরুল
অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় নিশ্চিত করেছেন, প্রয়োজনে জ্বালানি ও সারে ভর্তুকি বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য বরাদ্দের ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসরণ করা উচিত বলে মনে করেন জিনিয়া শারমিন।
জামাল উদ্দিন কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানো এবং এনবিআরের কর আদায়ের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে উপজেলা পর্যায় থেকে কার্যকরভাবে কর আদায়ের প্রস্তুতি এনবিআরের নেই।
সমাপনী বক্তব্যে খন্দকার সাখাওয়াত আলী অসংখ্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে বাজেট দিতে পারার জন্য সরকারের প্রশংসা করেন।
তিনি নীতিনির্ধারকদের বিভিন্ন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের বাজেট পর্যালোচনা থেকে আসা সুপারিশগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার আহ্বান জানান।