ক্রিকেট
২৫ বছর পর প্রতিশোধ নিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরল ভারত
সেই ২০০০ সালে তৎকালীন আইসিসি নক-আউট ট্রফির ফাইনালে ভারতকে চার উইকেটে হারিয়ে প্রথম এবং ওই একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ২৫ বছর পর আরও একবার ফাইনালের দেখায় সেই নিউজিল্যান্ডকে একই ব্যবধানে হারিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছে ভারত।
রবিবার (৯ মার্চ) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে কিউইদের চার উইকেটে হারিয়েছে রোহিত শর্মার দল।
এর ফলে টুর্নামেন্টের ইতিহাসের এক মাত্র দল হিসেবে সর্বোচ্চ তিনবার সেরাদের এই শিরোপা ঘরে তোলার গৌরব অর্জন করল ভারত।
এদিন টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং করে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে এক ওভার হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় টিম ইন্ডিয়া।
ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নেমে ইনিংস-সর্বোচ্চ ৭৬ রান করে ভারতের জয়ে ভিত্তি গড়ে দেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। এছাড়া প্রথম ইনিংসে বোলারদের সঠিকভাবে ব্যবহার করে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস বড় হতে না দেওয়ার পেছনেও দারুণ ভূমিকা ছিল তার নেতৃত্বের। ফলে ফাইনালের ম্যাচসেরার পুরস্কারটি তার হাতেই উঠেছে।
তিনি ছাড়াও মিডল অর্ডারে দলের হাল ধরেন শ্রেয়াস আইয়ার (৪৮) ও অক্ষর প্যাটেল (২৯)। এরপর শেষের দিকে বাকি কাজটুকু সারেন লোকেশ রাহুল (৩৪*)।
অন্যদিকে, দশ ওভার বোলিং করে একটি মেইডেনসহ মাত্র ২৬ রানের খরচায় দুই উইকেট তুলে নিলেও দলকে জেতাতে পারেননি মিচেল ব্রেসওয়েল।
২৮১ দিন আগে
ফাইনালে ভারতের সামনে নিউজিল্যান্ডের লড়াকু পুঁজি
শুরুতে রাচিন রবীন্দ্রর উড়ন্ত শুরুর পর ভারতের স্পিনারদের দাপট, এরপর শেষের দিকে ফের কিউই ব্যাটারদের ঘুরে দাঁড়ানোয় লড়াকু পুঁজি পেয়েছে নিউজিল্যান্ড।
রবিবার (৯ মার্চ) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন কিউই অধিনায়ক মিচেল সান্টনার। এরপর ড্যারিল মিচেলের ধৈর্যশীল ইনিংস ও মিচেল ব্রেসওয়েলের ক্যামিওতে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান সংগ্রহ করেছে দলটি।
দুবাইয়ের এই পিচে যে আড়াই শ বা তার আশপাশে তোলা সংগ্রহ প্রতিপক্ষের জন্য ভালো একটি চ্যালেঞ্জ, তা এই টুর্নামেন্টে ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত অন্যান্য ম্যাচগুলো থেকেই স্পষ্ট। এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে প্রথম ইনিংসে আড়ই শ-ও করতে ব্যর্থ হয় ভারত (২৪৯)। এমনকি ওই রান করেও কিউইদের বিপক্ষে ৪৪ রানে জেতে তারা।
আরও পড়ুন: কোহলির সেঞ্চুরি, পাকিস্তানকে বিপদে ঠেলে সেমির পথে ভারত
এদিন পুরো ম্যাচজুড়ে দেখা গেছে ভারতীয় স্পিনারদের দাপট। দুই পেসার— মোহাম্মদ শামি ও হার্দিক পান্ডিয়া যেখানে ১২ ওভার বোলিং করে এক উইকেটের বিনিময়ে গড়ে ৮.৬৭ রান রেটে ১০৪ রান দিয়েছেন, সেখানে ৩৮ ওভারে ১৪৭ রান দিয়ে পাঁচটি উইকেট তুলে নেন স্পিনাররা। তাদের ইকোনমিক রেটও চোখে পড়ার মতো; ৩৮ ওভারে গড়ে ৩.৮৭ রান রেটে বোলিং করেছেন কুলদীপ, বরুণ, অক্ষর ও জাদেজারা।
ফাইনাল ম্যাচে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে নিউজিল্যান্ডকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন রাচিন, আর তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকেন অপর ওপেনার উইল ইয়াং। এই দুই ব্যাটারের কল্যাণে টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে প্রথমবার কোনো দল প্রথম উইকেটজুটিতে ৫০ বা তার বেশি রান করতে সক্ষম হয়।
এরপর অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে বরুণ চক্রবর্তীর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ইয়াং। ফেরার আগে ২৩ বলে ১৫ রান করেন তিনি।
ইয়াং ফিরে গেলে কেইন উইলিয়ামসনকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম পাওয়ার প্লেতে স্কোরবোর্ডে ৬৯ রান তোলেন রাচিন। কিন্তু ব্যক্তিগত ২৮ ও ২৯ রানে পরপর দুবার জীবন পেয়েও ইনিংস খুব বেশি লম্বা করতে পারেননি তিনি। পাওয়ার প্লের পর প্রথম ডেলিভারিতেই কুলদীপের বলে বোল্ড হয়ে যান এই ব্যাটার। ২৯ বলে একটি ছক্কা ও চারটি চারের সাহায্যে ৩৭ রান করে ফিরতে হয় তাকে।
এরপর পাওয়ার প্লে শেষ হতেই আসে আরেক ধাক্কা, ত্রয়োদশ ওভারের দ্বিতীয় বলে কুলদীপের কাছে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে যান উইলিয়ামসনও।
পটাপট দুই উইকেট হারিয়ে খানিকটা চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড, আর এই সুযোগে স্পিন অ্যাটাক দিয়ে দলটির ব্যাটারদের কাবু করে ফেলেন রোহিত শর্মা।
এ সময় টম ল্যাথামকে নিয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেন ড্যারিল মিচেল। তবে দলীয় ১০৮ রানের মাথায় ৩০ বলে মাত্র ১৪ রান করে ফিরে যেতে হয় ল্যাথামকেও। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে তাকে বধ করেন রবীন্দ্র জাদেজা।
পরে গ্লেন ফিলিপসের সঙ্গে ৫৭ রানের জুটি গড়েন মিচেল। তবে ভারতীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১৪.৩ ওভার থেকে আসে ওই রান। মূলত প্রথম পাওয়ার প্লের পর থেকেই নিউজিল্যান্ডের রানের গতি একেবারে পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে ফাইনালে ভারত
দলীয় ১৬৫ রানে বরুণের বলে ফিলিপসও বোল্ড হয়ে গেলে ক্রিজে আসেন মিচেল ব্রেসওয়েল। তাকে নিয়ে ভালো সংগ্রহের দিকে এগোতে থাকেন ড্যারিল মিচেল। দুই ব্যাটারই এ সময় রান তোলায় মনোযোগী হন। তবে ব্রেসওয়েলের সঙ্গে বেশিক্ষণ থাকা হয়নি মিচেলের। ইনিংসের ২৬ বল বাকি থাকতে তাকে ফেরান শামি। আর এর মধ্য দিয়ে ১০১ বলে ৬৩ রানের ধৈর্যশীল একটি ইনিংসের পরিসমাপ্তি হয়।
পরবর্তীতে ব্রেসওয়েলের ৪০ বলে অপরাজিত ৫৩ রানের ইনিংসে ২৫১ রান তুলে বিরতিতে যায় নিউজিল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড: ২৫১/৭ (মিচেল ৬৩, ব্রেসওয়েল ৫৩*, রাচিন ৩৭; কুলদীপ ২/৪০, বরুণ ২/৪৫)।
২৮১ দিন আগে
ওয়ানডে ক্রিকেটকেও বিদায় বলে দিলেন মুশফিক
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যর্থতার পর দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষাপটে এবার এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন মুশফিকুর রহিম।
বুধবার (৫ মার্চ) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্ট করে নিজের অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন ৩৭ বছর বয়সী এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
ইংরেজিতে দেওয়া ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আজ থেকে ওয়ানডে সংস্করণ থেকে অবসরের ঘোষণা দিচ্ছি আমি।’
‘সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ। বৈশ্বিক পর্যায়ে আমাদের অর্জন হয়তো সীমিত, তবে একটি জিনিস নিশ্চিত যখনই আমি আমার দেশের জন্য মাঠে নেমেছি, নিবেদন ও সততার সঙ্গে নিজের শতভাগের বেশি দিয়েছি।’
এভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েই ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছিলেন মুশফিক। এবার ওয়ানডে ক্রিকেট থেকেও সরে দাাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন তিনি।
২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল মুশফিকের। তারপর কেটে গেছে ১৯টি বছর। এর মাঝে লাল-সবুজ জার্সি গায়ে জড়িয়ে ২৭৪ ম্যাচ খেলে অবশেষে থামালেন নিজের পথচলা।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মুশফিক। ৩৬ দশমিক ৪২ গড় ও ৭৯ দশমিক ৭০ স্ট্রাইক রেটে মোট ৭ হাজার ৭৯৫ রান করেছেন এই তারকা ব্যাটার। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৯টি শতক ও ৪৯টি অর্ধশতক।
তার বিদায়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের এমন একটি অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হলো যেখানে গৌরব, অর্জন, প্রাপ্তি যেমন আছে, তেমনই আছে কিছু ব্যর্থতা আর হতাশার ছোঁয়াও।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অনেক ভরসা করা হয়েছিল মুশফিকের ওপর। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের প্রথম বলেই আউট হন তিনি। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিদায় নেন মাত্র ২ রান করে। ওই ম্যাচে বাজে শটে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
প্রথম দুই ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। দলের ব্যর্থতায় আঙুল ওঠে অভিজ্ঞতম ব্যাটসম্যান মুশফিকের দিকে। আর এতে তার ওয়ানডে ক্যারিয়ার পড়ে যায় প্রশ্নের মুখে। নতুন বছরে বিসিবি তাকে ওয়ানডের চুক্তিতে রাখবে কিনা তা নিয়েও তৈরি হয় সংশয়।
শুধু এই টুর্নামেন্টে নয়, বেশ কিছুদিন ধরেই প্রত্যাশার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছিল না তার পারফরম্যান্সে। সবশেষ ১৪ ইনিংসে তার ব্যাট থেকে ফিফটি এসেছে মাত্র একটি। এর সাত ইনিংসেই আউট হয়েছেন দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে।
২০২৭ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী বিশ্বকাপের সময় তার বয়স হবে ৪০। বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে তাকে রাখা হবে কি না, দল গোছানোর জন্য (মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের পেছনে রেখে) সামনে তাকানো উচিত কি না—গত কিছুদিন ধরেই দেশের ক্রিকেটে চলছে এসব নিয়ে আলোচনা।
গত সোমবার বিসিবির সভা শেষে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন এসব প্রশ্নের জবাবেই বলেন, ‘আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর খেলা কঠিন।’ বোর্ডের মনোভাবের আভাস মিলে যায় সেখানেই। তারই ধারাবাহিকতায় এলো মুশফিকের এই সিদ্ধান্ত।
সময়ের ডাক যে মুশফিক নিজেও শুনতে পারছিলেন, বিদায়ী বার্তায় ফুটে উঠেছে তা-ও।
‘গত কয়েক সপ্তাহ আমার জন্য ছিল ভীষণ চ্যালেঞ্জিং এবং উপলব্ধি করতে পেরেছি যে, এটিই আমার নিয়তি।’
‘সবশেষে আমি গভীরভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও ভক্তদের, যাদের জন্য গত ১৯ বছর ধরে ক্রিকেট খেলেছি।’
টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে থেকে বিদায়ের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুশফিকের সামনে এখন শুধুই টেস্ট ক্রিকেট। এখানে বড় এক মাইলফলকের সামনে রয়েছেন তিনি। দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার কীর্তি গড়তে আর ছয়টি টেস্টে মাঠে নামতে হবে তাকে। সব ঠিকঠাক থাকলে তা হয়ে যেতে পারে এ বছরই।
২৮৫ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে ফাইনালে ভারত
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার দুঃস্বপ্ন এখনও তাড়া করে বেড়ায় ভারতীয় ক্রিকেটের সমর্থকদের। তবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে ফাইনালে উঠে এতদিন পর সেই ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছে রোহিত শর্মার দল।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে চার উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ভারত।
এদিন টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং করে ইনিংসের তিন বল বাকি থাকতেই ২৬৪ রান তুলে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ৯৬ বলে ৭৩ রান করে দলটির সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। এছাড়া মিডল অর্ডারে নামা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারি করেন ৬১ রান।
ভারতের হয়ে দশ ওভারে মাত্র ৪৮ রান দিয়ে তিন উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ শামি। এছাড়া দুই স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী ও রবীন্দ্র জাদেজা নেন দুটি করে উইকেট।
২৬৫ রানের জবাবে খেলতে নেমে প্রথম পাওয়ার প্লের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারালেও ১১ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ভারত।
তিনে ব্যাট করতে নামা বিরাট কোহলিই এদিন ভারতের জয়ের ভীত গড়ে দেন। ৯৮ বলে ৮৪ রান করার পথে শ্রেয়াস আইয়ার (৪৫), অক্ষর প্যাটেল (২৭) ও লোকেশ রাহুলের (৪২*) সঙ্গে গড়েন যথাক্রমে ৯১, ৪৪ ও ৪৭ রানের জুটি।
পাঁচ উইকেট হাতে রেখেই যখন জয়ের সুবাতাস পেতে শুরু করেছে ভারত, ঠিক তখনই একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে আউট হন ২৪ বলে ২৮ রান করা হার্দিক পান্ডিয়া। পরে জাদেজাকে নিয়ে ভারতীয়দের জাহাজ জয়ের বন্দরে নোঙর করেন রাহুল।
এদিন নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পেলেও কার্যকর সময়ে ভারতীয় ব্যাটারদের প্যাভিলিয়নে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুর দিকেই কেবল ভারতকে রুখে দেওয়ার ইঙ্গিত দেয় দলটি। পরে সময় যত গড়িয়েছে, জয়ের পাল্লা ভারতের দিকেই তত ভারী হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে নাথান এলিস ৪৯ রান খরচ করে এবং অ্যাডাম জ্যাম্পা ৬০ রানে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এবারের আসরে মাত্র একটি ম্যাচ হেরেই বিদায় নিতে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচটি জিতলেও বৃষ্টির কারণে পরের দুই ম্যাচ পণ্ড হয়। ফলে ওই এক ম্যাচ জিতেও অপরাজিত থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে দুবারের শিরোপাধারীরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া: ২৬৪/১০ (৪৯.৩ ওভার) (স্মিথ ৭৩, ক্যারি ৬১, হেড ৩৯; শামি ৩/৪৮, জাদেজা ২/৪০, চক্রবর্তী ২/৪৯)।
ভারত: ২৬৭/৬ (৪৮.১ ওভার) (কোহলি ৮৪, আইয়ার ৪৫, রাহুল ৪২*; এলিস ২/৪৯, জ্যাম্পা ২/৬০)।
ফলাফল: ভারত চার উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বিরাট কোহলি।
২৮৬ দিন আগে
কোহলির সেঞ্চুরি, পাকিস্তানকে বিপদে ঠেলে সেমির পথে ভারত
ম্যাচের ফল একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগেই। শেষ পর্যন্ত বিরাট কোহলি সেঞ্চুরি করতে পারেন কিনা, তা-ই দেখার বাকি ছিল। জয়ের জন্য যখন ২ রান দরকার, শতক হাঁকাতে কোহলির দরকার তখন ৪। তবে চার মেরেই সব হিসাব-নিকাশ মিলিয়ে দিলেন তিনি।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। এরপর ভারতীয় বোলারদের প্রতাপ সামলে ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতেই ২৪১ রান তুলে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস।
২৪২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৬ উইকেট হাতে রেখে ২৪৪ রান করে জয়োল্লাস করে ভারত। ইনিংসের ৪৫ বল বাকি ছিল তাদের।
ভারতের এই জয়ে মূল কাজটি করেন তাদের বোলাররা। দীর্ঘ সময় উইকেট না পেলেও নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাকিস্তানের রানের গতি এমনভাবে তারা কমিয়ে দেন যে প্রথম ইনিংসে একেকটি বাউন্ডারি দেখতেই ৪০-৪৫ বলের মতো অপেক্ষা করতে হয়েছে দর্শকদের।
শেষের দিকে রানরেট বাড়াতে গিয়ে একের পর এক উইকেট বিলিয়ে শেষ পর্যন্ত অলআউট হওয়ার লজ্জাও বরণ করতে হয় তাদের।
অপরদিকে, ফিল্ডিং চলাকালে বোলারদের পাশাপাশি ভারতের ফিল্ডারদেরও খানিকটা কৃতিত্ব দিতে হয়। তাদের পরিশ্রমী মানসিকতার কারণেই অনেকগুলো এক পাকিস্তানি ব্যাটাররা দুইয়ে রূপ দিতে পারেননি, অনেকগুলো সম্ভাব্য চার আটকে গেছে তিনে। এরপর রান তাড়ায় নেমে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাই উপহার দিয়েছেন ভারতীয় ব্যাটাররা।
অবশ্য শুরুর দিকে (পঞ্চম ওভারের শেষ বলে) রোহিত শর্মাকে ফিরিয়ে দিয়ে লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিলেও সময় যত গড়িয়েছে, জয়ের পাল্লা ততই ভারতের পক্ষে ভারী হয়েছে।
৩১ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর পাকিস্তান দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পায় ১০০ রানের মাথায়। ৫২ বলে ৪৬ রান করা শুভমান গিল এদিন অল্পের জন্য হাফ সেঞ্চুরি বঞ্চিত হলেও কোহলির সঙ্গে দারুণ একটি জুটি গড়ে জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে যান। এরপর শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে কোহলির ১১৪ রানের জুটিটি পাকিস্তানকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়।
৬৭ বলে ৫৬ রান করে শ্রেয়াস ফেরার অল্প সময় পর হার্দিক পান্ডিয়াও আউট হলে ভারতের তখন প্রয়োজন ৬০ বলে মাত্র ১৯ রান। এরপর শেষ মুহূর্তে সেঞ্চুরির মাধ্যমে দলকে জেতানোর পথে অনন্য এক কীর্তি গড়েন কোহলি।
২৯৫ দিন আগে
রেকর্ডের মালা গেঁথে নতুন ইতিহাস গড়ল অস্ট্রেলিয়া
৩৫১ রান তুলে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গড়া ২১ বছর আগের রেকর্ড ভেঙেছিল ইংল্যান্ড। তবে সেই রেকর্ড এক দিনও ধরে রাখতে পারল না জশ বাটলার অ্যান্ড কোং। দ্বিতীয় ইনিংসেই তা টপকে একাধিক রেকর্ড গড়ে ম্যাচ জিতে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করল অস্ট্রেলিয়া।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিয়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বেন ডাকেটের অনবদ্য ১৬৫ রানের ইনিংসে ভর করে আট উইকেটে ৩৫১ রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। ২০০৪ সালের আসরে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের গড়া ৩৪৭ রানের রেকর্ডটি ভেঙে এদিন রেকর্ড বইয়ে নিজেদের নাম তোলে ইংলিশরা।
এছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর গড়েন বেন ডাকেট। তবে ইংলিশদের এসব রেকর্ড ম্লান করে পাঁচ উইকেটের এক স্মরণীয় জয় তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
৩৫২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ১৫ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় স্টিভেন স্মিথ অ্যান্ড কোং। ৪৭.৩তম বলটিতে ছক্কা হাঁকিয়ে দারুণ নৈপুণ্যে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন অ্যালেক্স ক্যারি।
এর ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে যেকোনো ইনিংসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের রেকর্ড (৩৫৬) গড়ল অজিরা। তাছাড়া আইসিসির যেকোনো ওয়ানডে ইভেন্টে এটিই সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। এর আগে ২০১৭ সালে ওভালে ভারতের বিপক্ষে ৩২১ রান তাড়া করে জয়ই ছিল তাদের সর্বোচ্চ।
আরও আছে; এটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রান তাড়ার জয়।
এছাড়া এ জয়টি অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। তাদের সর্বোচ্চ রেকর্ডটি ৪৩৪ রানের; ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অবিস্মরণীয় সেই ম্যাচটি খেলে তারা।
আরও পড়ুন: ডাকেটের ব্যক্তিগত কীর্তির দিনে ইংল্যান্ডের রেকর্ড সংগ্রহ
পাকিস্তানের মাটিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সফল রান তাড়ার রেকর্ড। এর আগের রেকর্ডটিও এই গাদ্দাফি স্টেডিয়ামেই গড়ে অস্ট্রেলিয়া। ২০২২ সালের ২৯ মার্চ ৬ উইকেটে করা পাকিস্তানের ৩৬৮ রান তারা পেরিয়ে যায় এক ওভার বাকি থাকতেই। ৭ উইকেটে সেদিন ৩৭২ রান করে অস্ট্রেলিয়া। ওই ম্যাচে ১৫৬ রান করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন ট্র্যাভিস হেড।
আর টানা দুটি সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড দেখল গাদ্দাফি স্টেডিয়াম। ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন রেকর্ড অত্যন্ত বিরল।
আজকের ম্যাচে ৮৬ বলে আটটি চার ও ছয়টি ছক্কায় ১২০ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছেন জশ ইংলিস।
মাত্র ৭৭ বলে সেঞ্চুরি করে ব্যক্তিগত রেকর্ডেও নাম উঠিয়েছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বিরেন্দর শেবাগের সঙ্গে যৌথভাবে দ্রুততম শতকের মালিক এখন তিনি। এছাড়া ওয়ানডে ক্যারিয়ারের এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে চতুর্থ সর্বোচ্চ ইনিংস।
এ ছাড়াও আরও রেকর্ড হয়েছে ম্যাচটিতে। এই ম্যাচে দুই দল মিলে মোট ৭০৭ রান সংগ্রহ করেছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে যা এক ম্যাচে সর্বোচ্চ মোট রানের রেকর্ড। এর আগে এই রেকর্ড গড়ে ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল ম্যাচ। সেই ম্যাচে মোট ৬৫৯ রান সংগ্রহ করে দুই দল। সেদিন ভারতের চার উইকেটে ৩৩৮ রানের সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩২১ রান তুলতে সক্ষম হয় পাকিস্তান। ফলে ১৭ রানের হার দেখতে হয় দলটিকে।
ম্যাচটি আজ মোট ২৩টি ছক্কা হাঁকিয়েছে দুদলের ব্যাটাররা (ইংল্যান্ড ৭, অস্ট্রেলিয়া ১৬), যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির একটি ম্যাচে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড। অস্ট্রেলিয়ার ১৬টি ছক্কা এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এক ইনিংসে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এই রেকর্ডটি এখনও রয়েছে ভারতের দখলে। ২০১৩ সালের ১১ জুন ওভালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৮টি ছক্কা হাঁকান ভারতের ব্যাটাররা।
২৯৬ দিন আগে
ডাকেটের ব্যক্তিগত কীর্তির দিনে ইংল্যান্ডের রেকর্ড সংগ্রহ
রিয়ারে প্রথমবার আইসিসি ইভেন্টে খেলতে নেমেছেন ইংলিশ ব্যাটার বেন ডাকেট। নেমেই দিনটিকে শুধু ব্যক্তিগত পর্যায়ে নয়, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসেও স্মরণীয় করে রাখলেন তিনি।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৫১ রানের পুঁজি পেয়েছে ইংল্যান্ড।
এটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের রেকর্ড। ২০০৪ সালের আসরে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের গড়া ৩৪৭ রানের ইনিংসটিই এতদিন সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ছিল।
এদিন ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বেন ডাকেট। ১৪৩ বলে ১৭টি চার ও তিনটি ছক্কায় ১৬৫ রান করেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে এক ইনিংসে এটি ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর। এই রেকর্ড গড়ার পথে পথে তিনি ২০০৪ সালের ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের ন্যাথান অ্যাস্টলের করা অপরাজিত ১৪৫ রানের স্কোরটি ছাড়িয়ে যান।
আরও পড়ুন: ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নতুন দলে নাম লেখালেন সাকিব
ডাকেট ছাড়াও এদিন হাসে জো রুটের ব্যাট। শুরুর দিকে দুই উইকেট হারানোর পর ৭৮ বলে ব্যক্তিগত ৬৮ রান করে ডাকেটের সঙ্গে ১৫৮ রানের জুটি গড়েন তিনি।
দলীয় ৪৩ রানে দুই উইকেট হারানো ইংল্যান্ডের পরবর্তী উইকেটটি যখন পড়ে, তখন স্কোরবোর্ডে দেখা যায় তিন উইকেটে ২০১ রান। ৩১তম ওভারের শেষ বলে রুট আউট হলে তাই মনে হচ্ছিল স্কোর আরও বড় হবে। তবে রুটের উইকেটের মধ্য দিয়েই হারানো ছন্দ খুঁজে পায় অস্ট্রেলিয়া। তারপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলতে থাকেন দলটির বোলোররা।
ওই দুই ব্যাটার বাদে অধিনায়ক জশ বাটলারের ২৩ ও শেষের দিকে জোফলা আর্চারের ১০ বলে ২১ রানের ক্যামিও ইনিংসটিই কেবল বলার মতো।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৬৬ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন বেন ডুয়ারশিস, আর দুটি করে উইকেট গিয়েছে অ্যাডাম জ্যাম্পা ও মার্কাস লাবুশেনের ঝুলিতে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড: ৩৫১/৮ (ডাকেট ১৬৫, রুট ৬৮, বাটলার ২৩; ডুয়ারশিস ৩/৬৬, লাবুশেন ২/৪১, জ্যাম্পা ২/৬৪)।
২৯৬ দিন আগে
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নতুন দলে নাম লেখালেন সাকিব
দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে দেশে ফিরতে চেয়ে বারবার ব্যর্থ হয়েছেন সাকিব আল হাসান। এ কারণে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে চেয়েও পারেননি। এসব জটিলতার মাঝেই আসন্ন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে নতুন দলে নাম লিখিয়েছেন তিনি।
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জে নাম লিখিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়ক। অবশ্য দেশে ফিরে ক্লাবটির হয়ে তিনি খেলতে পারবেন কিনা, সে বিষয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
সাকিবকে দলে ভেড়ানোর খবর নিশ্চিত করে রূপগঞ্জের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘ক্রিকেটীয় কারণে আমরা সাকিবকে দলে নিয়েছি। সে দেশে আসতে পারলে আমাদের হয়ে খেলবে, না আসতে পারলে সেটা ভিন্ন ব্যাপার।’
গত আসরে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের হয়ে খেলেন সাকিব। তবে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক সরে যাওয়ায় ক্লাবটির সঙ্গে সম্পর্ক ধরে রাখাও সম্ভব হয়নি তার। পরে রূপগঞ্জের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: আবারও পরীক্ষায় ফেল, সাকিবের বোলিং নিষেধাজ্ঞা বহালই থাকছে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ নির্বাচিত হন সাকিব। গত জুলাই মাসে দেশের বাইরে যান তিনি। এরপর আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি হন তিনি।
এরপর দেশের জার্সিতে খেললেও তা ছিল দেশের বাইরে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে (পাকিস্তান ও ভারতে)। পরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রওনা হলেও দুবাই এসে ফিরে যেতে হয় তাকে।
ওই সময় থেকেই ক্রিকেটে ভালো সময় যাচ্ছে না এক সময়ের বিশ্বেসেরা এই অলরাউন্ডারের। সম্প্রতি তার বোলিং অ্যাকশন অবৈধ বলে গণ্য হয়। এর ফলে খেলার মাঠেও তার কার্যকারিতা কমে যায় অর্ধেক। এ কারণেই কেবল ব্যাটার হিসেবে তাকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে না নেওয়ার কথা জানান নির্বাচকরা।
আরও পড়ুন: সাকিব-লিটনকে ছাড়াই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাংলাদেশ দল ঘোষণা
বোলিং অ্যাকশন অবৈধ হলেও বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে বল করতে বাধা নেই সাকিবের। সে কারণেই তাকে দলে নিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। তবে দেশে ফিরে খেলতে মাঠে নামতে পারবেন কিনা, তা একদমই অনিশ্চিত।
মার্চের প্রথম সপ্তাহে শুরু হতে চলেছে এ বছরের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। তা আগে আগামীকাল (রবিবার) পর্যন্ত চলবে দলবদল। ক্রিকেটারদের অনলাইন ও অফলাইন দুভাবেই নিবন্ধন করানো যাচ্ছে।
২৯৬ দিন আগে
দুই সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানের সামনে নিউজিল্যান্ডের রানপাহাড়
অষ্টম ও নবম ওভারে দুই রানের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের দুই উইকেট তুলে নিয়ে ভালো বোলিংয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিল পাকিস্তান। তবে সময় অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই ইঙ্গিত আর জোরালো হয়ে বাস্তবে ধরা দেয়নি, বরং কিউই ব্যাটারদের কাছে নাকানিচুবানি খেয়ে খরুচে এক ইনিংস শেষ করেছে স্বাগতিকরা।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করে পাঁচ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানকে ৩২১ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
এই ম্যাচে রাচিন রবীন্দ্রর চোটে একাদশে ডাক পেয়েই ওপেনিংয়ে নেমে সেঞ্চুরি করেছেন উইল ইয়াং। ১১৩ বলে একটি ছক্কা ও ১২ চারে ১০৭ রান করে ফেরেন তিনি।
এরপর উইকেটরক্ষক-ব্যাটার টম ল্যাথামের ব্যাট থেকে আসে ইনিংস-সর্বোচ্চ অপরাজিত ১১৮ রান। ১০৪ বলে তিনটি ছক্কা ও ১০ চারে এই রান করেছেন তিনি। এছাড়া,৩৯ বলে চারটি ছক্কা ও তিনটি চারে ৬১ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন গ্লেন ফিলিপস।
এদিন টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেও প্রথম উইকেটের জন্য অষ্টম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় পাকিস্তানকে। ওভারের তৃতীয় বলে আবরার আহমেদের ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ১০ রান করে ফেরেন ডেভন কনওয়ে। পরের ওভারেই আরেকটি সাফল্য পায় পাকিস্তান। এবার নাসিম শাহের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ২ বলে ১ রান করে ফেরেন কেইন উইলিয়ামসন।
এরপর ডেরিল মিচেলকে সঙ্গে নিয়ে উইকেটের পতন ঠেকানোর চেষ্টা করেন ইয়াং। তাতে খানিকটা সফলও হন তিনি। তবে সপ্তদশ ওভারের দ্বিতীয় বলে ২৪ বলে ১০ রান করে মিচেলও ফিরে গেলে ল্যাথামের সঙ্গে বড় সংগ্রহের পথে এগোন ওপেনার ইয়াং।
নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর ১১৮ রানের জুটি গড়ে ইয়াং যথন ফিরে যান, তখন তিন উইকেটে ৭৩ রান থেকে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ চার উইকেটে ১৯১।
২০৭ রান নিয়ে শেষ দশ ওভারে প্রবেশ করে কিউইরা। এরপর রানের চাকার গতি বাড়িয়ে ৯৫ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন ল্যাথাম। তারপর ৩৪ বলে ফিফটি তুলে নিয়ে আরও বড় সংগ্রহের দিকে ছোটেন ফিলিপসও। তবে যখন মনে হচ্ছিল, এই দুই ব্যাটারের ব্যাটে ভর করেই ইনিংস উৎরে যাবে নিউজিল্যান্ড, ঠিক তখনই স্কুপ করতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যান অঞ্চলে ধরা পড়েন ফিলিপস।
ইনিংসের তখন আর দুই বল বাকি। এ সময় ব্যাটিংয়ে নেমে একটি লেগ বাই রান নিয়ে ল্যাথামকে স্ট্রাইক দেন মিচেল ব্রেসওয়েল, আর শেষ বলে তিন রান নিয়ে ৩২০ রানে ইনিংস শেষ করেন কিউই উইকেটরক্ষক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড: ৩২০/৫ (ল্যাথাম ১১৮*, ইয়াং ১০৭, ফিলিপস ৬১; নাসিম শাহ ২/৬৩, হারিস রউফ ২/৮৩, আবরার আহমেদ ১/৪৭)।
২৯৯ দিন আগে
ফিক্সিংকাণ্ডে ৫ বছর নিষিদ্ধ বাংলাদেশের সোহেলী
আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী কোডের পাঁচটি ধারা ভঙ্গের দায়ে সব ধরনের ক্রিকেট ও ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটার সোহেলী আক্তার।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোহেলীকে সাজা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
জাতীয় দলের জার্সিতে সর্বশেষ ২০২২ সালে খেলেছেন এই ক্রিকেটার। তবে ২০২৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালে বাংলাদেশের এক ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন তিনি।
আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের (আকসু) কাছে দায় স্বীকার করে নিয়েছেন সোহেলী। গত ১০ ফেব্রুয়ারি তার নিষেধাজ্ঞা থেকে কার্যকর হয়েছে।
২০২৩ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচের আগে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার লতাকে মোবাইল ফোনে ফিক্সিংয়ের বার্তা পাঠান। সে সময় বড় অঙ্কের টাকার লোভ দেখান তিনি। ওই ক্রিকেটার অবশ্য অসাধু পথে পা না দিয়ে আইসিসির দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানান।
ওই সময় সোহেলী সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছিলেন, তিনি সতীর্থ লতাকে মজা করে মিথ্যা মিথ্যা প্রস্তাব দিয়েছিলেন মাত্র। তবে সেই কারণে এবার নিজে ফেঁসে যাচ্ছেন তিনি।
সোহেলীর আইসিসির দুর্নীতি বিষয়ক ২.১.১ ধারা ভেঙেছেন। সেখানে তিনি ম্যাচ বা স্পট ফিক্সিং করতে প্ররোচিত করেছেন। ২.১.৩ ধারাও ভেঙেছেন, যেখানে বলা হয়েছে, তিনি ম্যাচ পাতানোর জন্য অন্যকে উৎসাহিত করার দরুণ অর্থ বা পুরস্কার নিয়েছেন কিংবা চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
আইসিসির প্রতিবেদনে ২.১.৪ ধারা ভঙ্গের কথা বলা হয়েছে, যেখানে তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কাউকে ম্যাচ বা স্পট ফিক্সিংয়ে সম্পৃক্ত হতে উৎসাহিত করেছেন বা প্ররোচিত করেছেন। ২.৪.৪ ধারায় বলা হয়েছে, আইসিসিকে তিনি তদন্তের স্বার্থে তথ্যাদি দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। ২.৪.৭ ধারায় বলা হয়েছে, এই নারী ক্রিকেটার তদন্তে বাধা দিয়েছেন, তথ্যা দিতে বিলম্ব করেছেন বা তথ্যাদি নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন।
সোহেলী বাংলাদেশ নারী দলের হয়ে দুটি ওয়ানডে খেলেছেন। ২০১৩ সালে তার অভিষেক হয় ও ২০১৪ সালে শেষ ওয়ানডে খেলেন। দেশের জার্সিতে তিনি ১৩টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। যার প্রথমটি ২০১৩ এবং শেষটি খেলেছেন ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর।
৩০৭ দিন আগে