এশিয়া
দ্বিতীয় দিনও জ্বলছে হংকংয়ের বহুতল ভবন কমপ্লেক্স, নিহত বেড়ে ৫৫
আগুন লাগার এক দিন পরও হংকংয়ের তাই পো এলাকার বহুতল ওয়াং ফুক কোর্ট ভবন কমপ্লেক্স থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুরেও ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টায় ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে এই আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। অগ্নিকাণ্ডে ইতোমধ্যে ৫৫ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মীও আছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭০ জন।
হতাহতের ব্যাপারে আজ (বৃহস্পতিবার) কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঘটনাস্থল থেকে ৫১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সময় বিকেলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কমপ্লেক্সের আটটি বহুতল ভবনের মধ্যে সাতটিতে আগুন লেগেছিল। ইতোমধ্যে চারটি ভবনের আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে। বাকি তিনটি ভবনের আগুনও নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সন্ধ্যার মধ্যে অভিযান শেষ করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছে ফায়ার সার্ভিস।
এ ঘটনায় একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও একজন প্রকৌশল পরামর্শদাতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির নাম এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি পুলিশ।
এ ব্যাপারে স্থানীয় পুলিশের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট আইলিন চুং বলেছেন, ‘আমরা ধারণা করছি, নির্মাণ কোম্পানিটির দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের গুরুতর অবহেলার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
ভবন কমপ্লেক্সের সংস্কার কাজের দায়িত্বে থাকা প্রেস্টিজ কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির কার্যালয়ও আজ (বৃহস্পতিবার) তল্লাশি করেছে পুলিশ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে থেকে নথিপত্রভর্তি বাক্স জব্দ করা হয়েছে। তবে প্রেস্টিজের অফিসে ফোন করা হলেও অ্যাসোসিয়েট প্রেসের সেই ফোনকলে কেউ সাড়া দেয়নি।
কর্তৃপক্ষের ধারণা, বহুতল ভবনগুলোর বাইরের দেওয়ালে এমন কিছু নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিল, যেগুলোর অগ্নিরোধী মান ছিল না। এ কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিকাণ্ডের পরও অক্ষত থাকা পাশের একটি ভবনের প্রতিটি তলার লিফট লবির জানালার পাশে স্টাইরোফোম পেয়েছে পুলিশের তদন্ত দল, যা অত্যন্ত দাহ্য পদার্থ। ধারণা করা হচ্ছে, নির্মাণ কোম্পানিই এগুলো লাগিয়েছিল, কিন্তু এসব স্টাইরোফোম ব্যবহারের উদ্দেশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। এগুলো নিয়ে আরও তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন হংকংয়ের নিরাপত্তা সচিব ক্রিস ট্যাং।
১৮ দিন আগে
হংকংয়ে ৭টি বহুতল ভবনে আগুন, নিহত ১৩
হংকং’র নিউ টেরিটরিজের তাই পো এলাকায় একটি আবাসিক কমপ্লেক্সের সাতটি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ৯ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন, বাকিরা হাসপাতালে মারা যান। এছাড়া অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৭০০ বাসিন্দাকে অস্থায়ী আশ্রয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আগুন কমপ্লেক্সের বাইরের বাঁশ ও নির্মাণ জাল বরাবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।
কমপ্লেক্সে ৮টি আবাসিক ব্লক রয়েছে, প্রায় ২,০০০ অ্যাপার্টমেন্টে প্রায় ৪,৮০০ জন বসবাস করেন।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে একাধিক ভবনে একসাথে আগুন লেগে ধোঁয়া ও শিখা ছড়িয়ে পড়ছে। ফায়ার ক্রু ল্যাডার ট্রাক ব্যবহার করে উপরের দিকে পানি ছিটিয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের সময় একজন ফায়ারফাইটার নিহত হয়েছেন।
অগ্নিনির্বাপনে ১২৮টি ফায়ার ইঞ্জিন ও ৫৭টি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, অনেক বাসিন্দা আগুনে আটকা পড়ে ফোন করেন।
স্থানীয় কাউন্সিলের একজন সদস্য জানিয়েছেন, আটকে পড়াদের মধ্যে বেশিরভাগই প্রবীণ।
তাই পো হলো চীনের শেনজেন সীমান্তের নিকটে একটি শহরতলি।
১৯ দিন আগে
আফগানিস্তানে বিমান হামলার অভিযোগ নাকচ করল পাকিস্তান
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের তিনটি প্রদেশে বিমান হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় তালেবান সরকার পাকিস্তানকে দায়ী করলেও, ইসলামাবাদ এ অভিযোগ নাকচ করেছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ দাবি করেন, পাকিস্তান আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের তিনটি প্রদেশে এ হামলা চালিয়েছে। এতে ১ জন নারীসহ ৯টি শিশু মারা গেছে।
তিনি আরও দাবী করেন, কুনার ও পাকতিয়া প্রদেশে পৃথক হামলায় আরও ৪ জন আহত হয়েছে।
মুজাহিদ এ আক্রমণকে নৃশংস উল্লেখ করে একে আফগান ভূখন্ডের ওপর হুমকি হিসেবে মন্তব্য করেছেন। এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে সঠিক সময়ে জবাব দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এদিকে, রাওয়ালপিণ্ডির গ্যারিসন শহরে সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আহমদ শরিফ চৌধুরী হামলায় সংশ্লিষ্ঠতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পাকিস্তান কখনও সাধারণ জনগনকে হামলা করে না। দেশে সহিংসতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী পাকিস্তানের তালেবানদের টার্গেট করে এ অভিযান শুরু হয়েছিল বলে জানান তিনি।
এর আগে, চলতি বছরের অক্টোবরে কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্ততায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়। তবে, দুই দেশের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা অব্যাহত রয়েছে। কাতার ও তুরস্ক এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।
সম্প্রতি, ইরান বিবাদমান পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধে নতুন করে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে।
ইরানের জাতীয় সুপ্রিম সিকিউরিটি কাউন্সিরের সেক্রেটারি আলী লারিজানি মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ জানান, সাম্প্রতিক পাকস্তান সফরে তিনি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন।
এ হামলার আগের দিন (সোমবার) সকালে ২ জন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ও ১ জন বন্ধুকধারী পাকিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শহর পেশোয়ারের ফেডারেল কন্সটেবুলারিতে হামলা চালিয়েছিল। এতে সংস্থাটির ৩ জন কর্মকর্তা নিহত ও ১১ জন আহত হয়।
এ হামলায় পাকিস্তানের সন্দেহের তীর সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান বা তাহরিক-ই-তালেবান’র (টিটিপি) দিকে।
ফেডারেল কনস্টেবুলারি হলো পাকিস্তানের একটি আধা-সামরিক বাহিনী, যা সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত।
এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র শরিফ চৌধুরী দাবি করেন, আফগানিস্তান থেকে আগত ৩ জঙ্গি এই হামলা চালিয়েছে।
টিটিপি তালেবান থেকে পৃথক একটি গোষ্ঠী।
তবে পাকিস্তানের দাবি, আফগান তালেবানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এই গোষ্ঠীর। টিটিপির অনেক নেতা আফগানিস্তানে লুকিয়ে আছে বলেও ধারণা তাদের।
এর আগে ২০২২ সালে কাবুল টিটিপি এবং পাকিস্তানের সাথে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করে। এরপর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি যুদ্ধবিরতি ভেঙে দেয়।
সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান জঙ্গিদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তথ্য-ভিত্তিক অভিযান জোরদার করেছে। জানুয়ারি থেকে, পাকিস্তানের জঙ্গিবিরোধী এই অভিযানে ১ হাজার ৮৭৩ জন জঙ্গিকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর এই মুখপাত্র।
মঙ্গলবার, সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে আফগান সীমান্তের কাছে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম খাইবার পখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নুতে ‘ভারত-সমর্থিত’ যোদ্ধাদের একটি আস্তানায় অভিযান চালানোর সময় নিরাপত্তা বাহিনী ২২ জন জঙ্গিকে হত্যা করেছে।
সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে নিহত বিদ্রোহীদের আফগানিস্তান এবং ভারত সমর্থিত খাওয়ারিজ হিসেবে উল্লেখ করেছ। তবে কাবুল এবং নয়াদিল্লি এই ধরনের গোষ্ঠীগুলিকে সহায়তা প্রদানের কথা অস্বীকার করেছে।
২০ দিন আগে
বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
নেপালে বিক্ষোভ ১৯ জনের মৃত্যুর পর পদত্যাগ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী খড়গ প্রসাদ (কে পি) শর্মা অলি।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি)।
এর আগে, বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করেন।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানী কাঠমান্ডুসহ দেশটির অন্তত সাতটি শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়, বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই তরুণ বা জেন-জি প্রজন্মের।
কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীরা একপর্যায়ে পুলিশের প্রতিবন্ধকতা ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। সে সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামান ব্যবহার করে নেপালের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে গুলিও চালানো হয়।
আরও পড়ুন: ১৯ মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলল নেপাল সরকার
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে তরুণদের নেতৃত্বে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে দেশটির সরকার।
গত সপ্তাহে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম ও বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে নেপাল সরকার। নতুন নিয়মনীতি মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়ার কারণ দেখিয়ে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে নিয়ম মানায় টিকটকসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠান বিধিনিষেধের আওতার বাইরে ছিল। এর প্রতিবাদে দেশটিতে বিক্ষোভ শুরু হয়।
৯৭ দিন আগে
১৯ মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলল নেপাল সরকার
নেপালে তরুণদের নেতৃত্বে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর থেকে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে দেশটির সরকার।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানী কাঠমান্ডুসহ দেশটির অন্তত সাতটি শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়, বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগই তরুণ বা জেন-জি প্রজন্মের।
কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীরা একপর্যায়ে পুলিশের প্রতিবন্ধকতা ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। সে সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামান ব্যবহার করে নেপালের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে গুলিও চালানো হয়।
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন নিহত এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
সহিংসতার পর রাজধানীসহ আরও দুটি শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘পুরনো বন্ধু’ পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে ‘প্রিয় বন্ধু’ শি
এরপর মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে সামাজিক মাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেয় দেশটির প্রশাসন।
এদিকে, বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী খড়গ প্রসাদ শর্মা অলি এক বিবৃতিতে বলেছেন, সহিংসতার ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও নিহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি।
বিক্ষোভের শুরু যেভাবে
গত সপ্তাহে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্ম ও বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে নেপাল সরকার। নতুন নিয়মনীতি মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়ার কারণ দেখিয়ে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে নিয়ম মানায় টিকটকসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠান বিধিনিষেধের আওতার বাইরে ছিল।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, মূলত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, ভুয়া খবর ও অনলাইন অপরাধ দমনের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর ওপর নতুন নিয়মনীতি কার্যকর করা হয়েছে।
তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে নেপালের জনগণ। একে সেন্সরশিপের হাতিয়ার এবং অনলাইনে সরকারের সমালোচনা করা বিরোধীদের শাস্তি দেওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের বন্দিশিবিরগুলোতে নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ
এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে ইউটিউবের মালিক গুগল কিংবা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা ও ইলন মাস্কের এক্স প্ল্যাটফর্মের মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে, এর আগে ২০২৩ সালে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে ৯ মাস টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকে। পরে টিকটক কর্তৃপক্ষ সরকারের নিয়ম মেনে নিবন্ধন নেওয়ার পর তাদের আবার কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হয়।
৯৭ দিন আগে
আফিগানিস্তানে তৃতীয় ভূমিকম্পের আঘাত, নিহত ২২০০ ছাড়িয়েছে
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ২০০ ছাড়িয়েছে। এরই মধ্যে দেশটিতে তৃতীয় দফায় ৬.২ মাত্রার আরও একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
জার্মানির হেলমহোলৎস সেন্টার ফর জিওসায়েন্সের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ স্পষ্ট হয়নি।
রোববারের (৩১ আগস্ট) ৬ দশমিক শূন্য মাত্রার ভূমিকম্পের পর গত মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ৫.৫ মাত্রার একটি আফটারশক আঘাত হানে। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, ফলে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এ সময় ভূমিধসে আরও অনেক সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
তালেবান সরকারের মুখপাত্র হামদুল্লাহ ফিত্রাত দ্য গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন, রোববারের ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২০৫ জনে। এই ভূমিকম্প সাম্প্রতিক দশকগুলোতে দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর একটি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
রোববারের ভূমিকম্পটি আফগানিস্তানের দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় আঘাত হেনেছিল। ভূমিকম্পটি পাকিস্তানের সীমান্তঘেঁষা কয়েকটি প্রদেশে আঘাত হানে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুর্গম কুনার প্রদেশ।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ১৪০০ ছাড়াল
এই অঞ্চলে মাটি ও কাঠের তৈরি বাড়িগুলো ভূমিকম্পের ধাক্কা সহ্য করতে না পেরে ধ্বংস হয়ে অনেক গ্রাম মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এতে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে অসংখ্য মানুষ।
তালেবার সরকার জানিয়েছে, উদ্ধারকর্মীরা ইতোমধ্যে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া কিছু গ্রামে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন। বৃহস্পতিবারও ধ্বংসস্তূপ থেকে লাশ উদ্ধার অব্যাহত ছিল।
দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থার কারণে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাই তালেবান কর্তৃপক্ষ আহতদের হেলিকপ্টার বা অন্যান্য পরিবহন ব্যবস্থায় যাতায়াত সম্ভব না— এমন স্থান থেকে সরাতে কমান্ডো মোতায়েন করেছে।
কুনার প্রদেশের বাসিন্দা মুহাম্মদ ইসরায়েল জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে কারণে হওয়া ভূমিধসে তার বাড়ি, গবাদিপশু ও যাবতীয় সম্পদ চাপা পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘পাহাড় থেকে সব পাথর নেমে এলো। আমি অতি কষ্টে সন্তানদের বের করতে পেরেছি। ভূমিকম্পের ঝাঁকুনি এখনও অনুভব হচ্ছে। ওখানে থাকা একেবারেই অসম্ভব।’
ভূমিকম্পে ক্ষতিগুস্ত নুরগাল অঞ্চলে জাতিসংঘের একটি চিকিৎসা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন মুহাম্মদ ইসরায়েল। তিনি জানান, ওই শিবিরের অবস্থাও ভালো নয়।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯০০, আহত ৩ হাজারের বেশি
মুহাম্মদ ইসরায়েল বলেন, ‘আমাদের আসলে কোনো আশ্রয়ই নেই। খোলা আকাশের নিচে ছাড়া আমাদের আর থাকার জায়গা নেই।’
আন্তর্জাতিক সহায়তা ও সম্পদের ঘাটতির কারণে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ২০২১ সালে তালেবান পুনরায় ক্ষমতা দখল করার পর কঠোর ধর্মীয় আইন চাপিয়ে দেওয়ায় এনজিও ও সাহায্য সংস্থাগুলোর কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এসব কারণে দেশটিতে আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যাপক হারে কমে গেছে।
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল জানিয়েছে, বর্তমানে তাদের আফগানিস্তানে ৪৫০ জনেরও কম কর্মী আছেন। অথচ ২০২৩ সালে সর্বশেষ ভূমিকম্পের সময় কর্মী সংখ্যা ছিল ১ হাজার ১০০। তাদের হাতে কেবল একটি গুদামঘর আছে, তাতেও কোনো জরুরি মজুত নেই।
আফগানিস্তানে সংস্থাটির যোগাযোগ ও অ্যাডভোকেসি পরামর্শক মাইসাম শাফিয়ি বলেন, তহবিল পেলেই আমাদের সরঞ্জাম কিনতে হবে। এতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে, কিন্তু মানুষের তো এখনই প্রয়োজন। আমাদের হাতে কেবল ১ লাখ ডলার আছে। জরুরি ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে ১৯ লাখ ডলারের ঘাটতি রয়েছে।
নুরগালের জাতিসংঘ শিবিরে আহতদের চিকিৎসা করছেন চিকিৎসক শমশের খান। তিনি জানান, সরবরাহ ইতোমধ্যেই ফুরিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, ‘ওষুধও যথেষ্ট নয়, সেবাও যথেষ্ট নয়। এসব মানুষের আরও ওষুধ দরকার, তাঁবু দরকার। তাদের খাবার ও নিরাপদ পানি দরকার। তাদের আরও সাহায্য প্রয়োজন। তারা চরম কষ্টে আছে।’
সাম্প্রতিক সময়ে খরা ও তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে আফগানিস্তান। এরই মধ্যে আঘাত হানল এই ভয়াবহ ভূমিকম্প।
এদিকে, চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসনের কাটছাঁটের পর যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি অর্থায়ন প্রত্যাহার করায় বহু হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে।
এর সঙ্গে পাকিস্তান ও ইরান থেকে ২০ লাখেরও বেশি আফগান নাগরিককে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোয় সংকট আরও বেড়েছে। তাদের অনেকেরই বসবাস বা কাজের কোনো জায়গা নেই।
১০১ দিন আগে
প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে কিম-কন্যা, বেইজিংয়ে তার উপস্থিতি কী বার্তা দিচ্ছে?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দিতে ছয় বছর পর প্রথমবারের মতো চীন সফরে গেছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) যখন বেইজিংয়ে পৌঁছে নিজের সবুজ ট্রেন থেকে নামেন কিম, তখন তার পেছনে দেখা যায় হাস্যেজ্জ্বল এক তরুণীকে। ওই তরুণী কিমের কন্যা কিম জু আয়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত কয়েক বছর ধরেই উত্তর কোরিয়ার বিভিন্ন সামরিক অনুষ্ঠানে কিমের সঙ্গে দেখা গেছে তাকে। তবে নিজ দেশের বাইরে এটিই ছিল জুয়ের প্রথম সফর। তার বেইজিং সফর নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হলো, তাহলে জু-ই কি কিমের উত্তরসূরি হতে চলেছেন?
সিএনএন বলছে, উত্তর কোরিয়ার বাইরে তার এই প্রথম প্রকাশ্য সফর নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এই আয়োজনে তার বাবা কিম বিশ্বের অপর দুই ক্ষমতাধর নেতা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একই মঞ্চে দাঁড়াবেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের সম্পর্ক তাকেও সামলাতে হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) কুচকাওয়াজে যখন লাল গালিচায় হাঁটছিলেন কিম, তখন জু কে তার সঙ্গে দেখা যায়নি।
পড়ুন: চীনে এসসিও সম্মেলন ও সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিচ্ছেন কারা
১০৩ দিন আগে
এক ফ্রেমে পুতিন-শি-কিম, ‘ষড়যন্ত্রের গন্ধ’ পাচ্ছেন ট্রাম্প
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কুচকাওয়াজের আয়োজন করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তবে এই আয়োজনে সবচেয়ে বেশি যে দৃশ্যটি বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে তা হলো, লাল গালিচায় একসঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে শি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের আলাপ ও করমর্দন।
বিরল এই দৃশ্যটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের অনেকে। দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরেই শুল্ক যুদ্ধকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গে মিত্র ও প্রতিপক্ষদের প্রতি তার পরিবর্তিত নীতির কারণে অনেক দেশই প্রভাবিত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি দেশের নেতা আজ একসঙ্গে দাঁড়িয়েছেন।
কুচকাওয়াজে সামরিক শক্তি ও সৈন্যদের ব্যাপক প্রদর্শনী করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট। আর এ সময় তার পাশে ছিলেন দুই শক্তিধর নেতা পুতিন ও কিম। বিষয়টিকে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি এক ধরনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
দ্য গার্ডিয়ান বলছে, বর্তমান বিশ্বের শীর্ষ তিন নেতার এই মেলবন্ধনে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন ট্রাম্প।
এ বিষয়ে ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি এবং চীনের চমৎকার জনগণকে মহান ও দীর্ঘস্থায়ী উদযাপনের শুভেচ্ছা। আপনারা যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন, তখন দয়া করে পুতিন ও কিমকে আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাবেন।’
শি বলেছেন, ‘মানবজাতি এমন একটি পর্যায়ে রয়েছে যখন শান্তি বা যুদ্ধ, সংলাপ অথবা মুখোমুখি সংঘর্ষ, পারস্পরিক কল্যাণ কিংবা সবার অকল্যাণ— এর মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে।’ তবে চীনের জনগণ ইতিহাসের সঠিক পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, কিছু দেশ ‘বুলিং আচরণ’ করছে। তবে চীনকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না বলেও সতর্ক করে দেন তিনি।
অ্যাটলান্টিক কাউন্সিলের গ্লোবাল চায়না হাবের নন-রেসিডেন্ট ফেলো ওয়েন-তি সাং বলেন, ‘চীনের এই আয়োজন আরও একটি বার্তা দিচ্ছে। সেটি হলো, পশ্চিমারা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা চালিয়ে গেলেও বন্ধুর পাশে দাঁড়াতে ভয় পায় না চীন।’
কুচকাওয়াজে আরও উপস্থিত ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান ও মিয়ানমারের সামরিক জান্তার প্রধান মিন অং হ্লাইং। কিমের সঙ্গে ছিলেন তার মেয়ে কিম জু। তবে কোনো বড় পশ্চিমা নেতা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেননি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক শৃঙ্খলা পুনর্গঠনে আগ্রহী— এমন কিছু দেশের কাছে এই কুচকাওয়াজ ছিল শিয়ের প্রভাব প্রদর্শনের একটি কৌশল।
এর আগে, তিয়ানজিন শহরে সাংহাই কো-অপারেশন অরগানাইজেশনের (এসসিও) দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের ২০ জনের বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা। সেখানেও পুতিন উপস্থিত ছিলেন। তবে এসসিও সম্মেলনে যোগ দেননি কিম। তবে ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন সম্প্রতি শুল্কারোপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এই মুহুর্তে বিশ্লেষকদের নজর এখন শি, পুতিন ও কিমের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয় কি না, সেদিকে আটকে রয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনে এসসিও সম্মেলন ও সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিচ্ছেন কারা
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ অন এশিয়ার গবেষক লিম চুয়ান-তিয়ং বলেন, যদি এই তিনজনের ত্রিপক্ষীয় কোনো বৈঠক হয়, সেটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ হবে। এমনকি সেটি বিশ্বকে আরেকটি স্নায়ুযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
লিমের ভাষ্যে, যদি এমন কোনো বৈঠক না হয়, তাহলে বুঝতে হবে চীন যুক্তরাষ্ট্রকে খুব বেশি উসকানি দিতে চায় না। তাছাড়া ত্রিপক্ষীয় কৌশলগত অস্পষ্টতাও বজায় রাখতে চান শি।
কুচকাওয়াজে প্রদর্শিত সামরিক সরঞ্জামও পর্যবেক্ষণ করেছেন বিশ্লেষকরা। সেখানে ছিল— ট্যাংক, ড্রোন, দূরপাল্লার ও পারমাণবিক হামলায় সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান ও স্টেলথ বিমান। আবার কয়েকটি নতুন উন্নত অস্ত্রও উন্মোচন করা হয়।
এস রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো ড্রু থম্পসন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ চীনের যেসব প্রতিবেশি দেশ তাদের মৌলিক জাতীয় স্বার্থ চ্যালেঞ্জ করার কথা চিন্তা করে, এই প্রদর্শনী তাদের প্রতি এক ধরনের সতর্কবার্তা।
তিনি বলেন, মৌলিক জাতীয় স্বার্থের মধ্যে সরাসরি নাম উচ্চারণ না করা হলেও যা সবকিছুতে উপস্থিত থেকেছে, তা হলো তাইওয়ান। শি নিজের বক্তব্যে বারবার ‘চীনা জাতির পুনর্জাগরণের’ কথা বলেছেন। এটি তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ এবং এর মূল ভিত্তি তাইওয়ানকে চীনের ভূখণ্ড হিসেবে সংযুক্ত করা।
তাইওয়ানকে বরাবরই চীনের একটি প্রদেশ হিসেবে দাবি করে আসছেন শি ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। তবে চীনের এই দাবি মানতে নারাজ তাইওয়ানের সরকার ও সেখানকার জনগণ।
১০৩ দিন আগে
আফগানিস্তানে ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ১৪০০ ছাড়াল
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ ছাড়িয়েছে। ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে আহতের সংখ্যাও তিন হাজারের অধিক বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ।
সরকারের মুখপাত্র মুজাহিদের দেওয়া হতাহতের সংখ্যাটি কেবল কুনার প্রদেশের।
জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রবিবার (৩১ আগস্ট) রাতে আফগানিস্তানে ৬ দশমিক শূন্য মাত্রার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত দুর্গম ও দূরবর্তী পাহাড়ি এলাকায় পৌঁছাতে উদ্ধারকারীদের ব্যাপক কাঠখড় পোহাতে হচ্ছে।
জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা হতাহতদের সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধির সতর্কবার্তাও দিয়েছেন।
রবিবারের ভূমিকম্পটি পাকিস্তানের সীমান্তঘেঁষা কয়েকটি প্রদেশে আঘাত হানে। এর মধ্যেসবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুর্গম কুনার প্রদেশ। ভূমিকম্পের পাশাপাশি ভূমিধস ও তীব্র বন্যাও আঘাত হেনেছে।
এই অঞ্চলে মাটি ও কাঠের তৈরি বাড়িগুলো ভূমিকম্পের ধাক্কা সহ্য করতে না পেরে ধ্বংস হয়ে অনেক গ্রাম মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এতে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে অসংখ্য মানুষ।
দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থার কারণে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাই তালেবান কর্তৃপক্ষ আহতদের হেলিকপ্টার বা অন্যান্য পরিবহন ব্যবস্থায় যাতায়াত সম্ভব না—এমন স্থান থেকে সরাতে কয়েক ডজন কমান্ডো মোতায়েন করেছে।
পড়ুন: সুদানে ভূমিধসে প্রাণহানি হাজার ছাড়াল
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আফগানিস্তানে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী ইন্দ্রিকা রাটওয়াটে বলেন, আমরা আফগানিস্তানের মানুষদের ভুলতে পারি না। তারা একাধিক সংকট ও একাধিক ধাক্কার মুখোমুখি হয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, একের পর এক নিষেধাজ্ঞা, বিদেশি সহায়তা ফিরিয়ে নেওয়া, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আফগানদের ফেরত পাঠানোসহ নানা সমস্যায় ইতোমধ্যেই জর্জরিত ছিল তালেবান প্রশাসন। এরই মধ্যে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশটির প্রশাসনকে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতে তালিবান সরকার আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জরুরি সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। তবে তালেবানের প্রশাসনের মাধ্যমে নয়, বরং বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
আফগানিস্তানের প্রয়োজন ও নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা দিতে চীনও প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র।
এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, কাবুলে ইতোমধ্যে এক হাজার পরিবারের জন্য তাঁবু সরবরাহ করা হয়েছে এবং কুনার প্রদেশে ১৫ টন খাদ্যসামগ্রী পাঠানো হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার থেকে ভারত আরও ত্রাণ পাঠাবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরো সোমবার সামাজিক মাধ্যম এক্সে ভূমিকম্পে প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র কোনো সহায়তা দেবে কিনা—এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলেও তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য জানাননি।
১০৪ দিন আগে
আফগানিস্তানে ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯০০, আহত ৩ হাজারের বেশি
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯০০-তে দাঁড়িয়েছে। এই দুর্যোগে আহতের সংখ্যাও তিন হাজার ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া উদ্ধারকাজ এখনো চলমান থাকায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে দেশটির প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ইউসুফ হাম্মাদ।
তিনি বলেন, আহতদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, তাই এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হতে পারে।
ইউসুফ হাম্মাদ আরও জানান, ভূমিকম্পে কিছু এলাকায় ভূমিধস হয়ে সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, সেগুলো আবার খুলে দেওয়া হয়েছে। দুর্গম এলাকায় পৌঁছানের জন্য বাকি সড়কগুলোও খুলে দেওয়া হবে।
রোববার (৩১ আগস্ট) রাতে আফগানিস্তানে ৬ দশমিক শূন্য মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে ভূমিকম্পটি পাকিস্তানের সীমান্তঘেঁষা কয়েকটি প্রদেশে আঘাত হানে, এর মধ্যে দুর্গম কুনার প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পের পাশাপাশি ভূমিধস ও বন্যার ঘটনাও ঘটেছে।
ইউসুফ হাম্মাদ জানান, কুনার প্রদেশেই সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।
ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, দুর্গম ভূপ্রকৃতি ও ভেঙে যাওয়া সড়কের কারণে তাদের দলগুলো অনেক জায়গায় হেঁটে পৌঁছাতে বাধ্য হচ্ছে।
এদিকে, একের পর এক নিষেধাজ্ঞা, বিদেশি সহায়তা ফিরিয়ে নেওয়া, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আফগানদের ফেরত পাঠানোসহ নানা সমস্যার ইতোমধ্যেই জর্জরিত ছিল তালেবান প্রশাসন। এরই মধ্যে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশটির প্রশাসনকে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন কাবুলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শরাফাত জামান। তিনি দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ভূমিকম্পটি যে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে, তা মোকাবিলায় বাইরের সহায়তা জরুরি।
সোমবার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জরুরি সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। তবে তালেবানের প্রশাসনের মাধ্যমে নয়, বরং বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি এক বিবৃতিতে বলেন, আফগানিস্তানের জনগণের পাশে রয়েছে যুক্তরাজ্য। এই জরুরি সহায়তা আমাদের অংশীদারদের মাধ্যমে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে জরুরি চিকিৎসা ও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে সহায়তা করবে।
আফগানিস্তানের প্রয়োজন ও নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা দিতে চীনও প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে ভূমিকম্প: নিহত ৮০০ ছাড়িয়েছে, আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান তালেবানের
এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, কাবুলে ইতোমধ্যে এক হাজার পরিবারের জন্য তাঁবু সরবরাহ করা হয়েছে এবং কুনার প্রদেশে ১৫ টন খাদ্যসামগ্রী পাঠানো হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার থেকে ভারত আরও ত্রাণ পাঠাবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরো সোমবার সামাজিক এক্সে ভূমিকম্পে প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র কোনো সহায়তা দেবে কিনা— এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলেও তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য জানানো হয়নি।
১০৪ দিন আগে