ইউএস-ও-কানাডা
সাড়ে ৫ কোটি ভিসাধারীর রেকর্ড খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র: পররাষ্ট্র দপ্তর
যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ ভিসাধারী প্রায় সাড়ে ৫ কোটি বিদেশির তথ্য নতুন করে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হতে পারে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বিদেশিদের ওপর মার্কিন প্রশাসনের চলমান কঠোর অভিযানের অংশ।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) একটি প্রশ্নের লিখিত জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, সব ভিসাধারীই সার্বক্ষণিক নজরদারির আওতায় থাকেন। যদি দেখা যায় যে কেউ ভিসার নিয়ম ভেঙেছে কিংবা ভিসার যোগ্য নন, তাহলে তার ভিসা বাতিল করা হবে। আর তিনি যদি যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন, তবে তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে।
গত জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অবৈধ অভিবাসন দমনে একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু অবৈধ নয়, অনেক ক্ষেত্রে বৈধভাবে থাকা অভিবাসীরাও মার্কিন প্রশাসনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, জননিরাপত্তার জন্য হুমকি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তা করার মতো বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তারা আরও বলেছে, তারা আইনপ্রয়োগকারী বাহিনীর রেকর্ড, অভিবাসন নথিপত্র এবং অন্য যেকোনো তথ্যও বিবেচনায় নিয়ে থাকে। এমনকি ভিসা দেওয়ার পর নতুন কোনো তথ্য সামনে এলে সেগুলোও খতিয়ে দেখা হয়।
ট্রাকচালকদের আর ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র
বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ঘোষণা দেন, আপাতত বিদেশি ট্রাকচালকদের জন্য কোনো কর্মভিসা দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, বিদেশি চালকেরা মার্কিন নাগরিকদের জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছেন এবং স্থানীয় চালকদের কাজ নষ্ট করছেন।
আরও পড়ুন: ‘ফিলিস্তিনপন্থি’ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
এর আগে, ট্রাকচালকদের জন্য ইংরেজি ভাষায় কথা বলা ও পড়তে পারার শর্ত কঠোরভাবে কার্যকর করার পদক্ষেপ নিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। ইংরেজি পড়তে বা বলতে না পারার কারণে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল বলে জানায় ওয়াশিংটন।
রুবিওর ওই ঘোষণার পরই মূলত সব ভিসাধারীর তথ্য খতিয়ে দেখার বিষয়টি সামনে আসে।
সব ভিসাধারীর ওপর নজরদারি
যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা আবেদনকারীদের ওপর অব্যাহতভাবে নতুন নতুন বিধিনিষেধ ও শর্ত আরোপ করে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এমনকি এসব নিয়মের মধ্যে সরাসরি সাক্ষাৎকারে অংশ নেওয়ার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে।
এই নজরদারি মূলত ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে চালু করা হয়েছিল। পরে সেটিকে আরও সম্প্রসারণ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপের আওতায় ভিসাধারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট, নিজ দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও অভিবাসন-সংক্রান্ত রেকর্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে মার্কিন আইন ভঙ্গের যেকোনো তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনকারীদের জন্য নতুন নির্দেশনা
এ ছাড়া অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সব ভিসা আবেদনকারীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করা হবে। পাশাপাশি ভিসা সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হওয়ার সময় আবেদনকারীদের মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস বা অ্যাপের গোপনীয়তা (প্রাইভেসি) সেটিংস বন্ধ রাখতে হবে।
ট্রাম্পের একের পর এক কঠোর পদক্ষেপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দিন দিন ‘সোনার হরিণ’ হয়ে উঠছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্যমতে, ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকে ৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। ওই ৬ হাজার ভিসার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ভিসা বাতিল হয়েছে সরাসরি আইন ভঙ্গের কারণে। এ ছাড়া সন্ত্রাসবাদে সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে বাতিল হয়েছে আরও ২০০ থেকে ৩০০ ভিসা।
১১৫ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে স্কুলে মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকির লুইসভিলের ডস হাই স্কুলে শেষ বর্ষের ক্লাস শুরু করেছেন জামেল বিশপ। তার ক্লাসে পাঠদানের সময় এখন মোবাইল ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। যে কারণে শ্রেণিকক্ষের পরিবেশে নাকি বড় পরিবর্তন চোখে পড়েছে তার।
জামেল বলেন, আগের বছরের ক্লাসগুলোতে শিক্ষার্থীরা তেমন মনোযোগ দিতেন না, একই প্রশ্ন বারবার করে সময় নষ্ট করতেন। তবে এখন যেসব শিক্ষার্থীদের সহায়তা প্রয়োজন তাদের এক এক করে আরও বেশি সময় দিতে পারছেন শিক্ষকরা।
নতুন শিক্ষাবর্ষে শ্রেণিকক্ষে মোবাইল নিষিদ্ধের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া মার্কিন ১৭টি অঙ্গরাজ্যে ও ডিসট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার একটি হলো কেন্টাকি। এতে স্কুলে মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা আরোপকারী অঙ্গরাজ্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫টিতে। ২০২৩ সালে প্রথম এই নিয়ম চালু করেছিল ফ্লোরিডা।
মোবাইল ফোনের ব্যবহার শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এবং শিক্ষা থেকে তাদের মনোযোগ সরিয়ে দেয় বলে যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রাট ও রিপাবলিকান উভয় দলই এই উদ্যোগের সমর্থন করেছে। যদিও প্রভাবগুলো অতটা স্পষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন অনেক গবেষক।
গত সপ্তাহে আটলান্টায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর আয়োজিত এক আলোচনায় জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি স্কট হিলটন বলেন, ক্যালিফোর্নিয়া ও ফ্লোরিডায় যদি কোনো বিল পাস হয়, তাহলে বুঝতে হবে সেটি বেশ জনপ্রিয় উদ্যোগ।
নতুন নীতিমালার আওতায় ১৮টি অঙ্গরাজ্য এবং ডিসট্রিক্ট অব কলম্বিয়ায় পুরো স্কুলেই সারা দিন মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ। তবে জর্জিয়া ও ফ্লোরিডায় এই নিষেধাজ্ঞা কিন্ডারগার্টেন থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয় শুরু থেকে ছুটির ঘণ্টা পড়ার আগ পর্যন্ত প্রযোজ্য। আরও সাতটি অঙ্গরাজ্যে কেবল ক্লাস চলাকালে ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ, তবে ক্লাসের ফাঁকে বা দুপুরের খাবারের সময় তা ব্যবহার করা যাবে।
অন্যদিকে, স্থানীয়ভাবে স্কুল পরিচালনার ঐতিহ্য রয়েছে— এমন কিছু অঙ্গরাজ্যে কেবল একটি মোবাইল ফোন নীতিমালা বাধ্যতামূলক করেছে। অন্যরাও ইঙ্গিতটি বুঝে নিয়ে ফোন ব্যবহারে কঠোর সীমাবদ্ধতা আরোপ করবে বলে তাদের বিশ্বাস।
অভিভাবকদের আপত্তি
এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পরিচালিত জর্জিয়ার ১২৫টি স্কুলে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আরোপের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের আপত্তিই সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
অড্রিয়ান্নার মা অড্রেনা জনসন বলেন, তার সন্তানরা স্কুলে সহিংসতা থেকে নিরাপদ আছে কি না এই নিয়ে তিনি সবচেয়ে বেশি চিন্তিত থাকেন।
তিনি জানান, বিভিন্ন হুমকির বিষয়ে স্কুল কতৃপক্ষ যেসব সতর্কবার্তা পাঠায় বেশিরভাগ সময়ই তা দেরিতে কিংবা অসম্পূর্ণভাবে আসে।
একটা উদাহরণ দিয়ে অড্রেনা বলেন, একবার ম্যাকনেয়ারের শিক্ষার্থী নন, এমন একজন স্কুল প্রাঙ্গণে মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ক্লাস চলাকালীন তার মেয়ের পাঠানো মেসেজের মাধ্যমেই তিনি সে বিষয়ে জানতে পেরেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানের কাছে ফোন থাকাটা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তাহলে কখন কী হচ্ছে, আমি সঙ্গে সঙ্গেই তা জানতে পারি।’
ন্যাশনাল পেরেন্টস ইউনিয়নের জাতীয় পার্টনারশিপস পরিচালক জেসন অ্যালেন বলেন, অনেক বাবা-মা অড্রেনার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। তারা নীতিনির্ধারণে নিজেদের মত দিতে চান। সন্তানের নিরাপত্তার বিষয়ে তারা আরও কার্যকর যোগাযোগ চেয়েছেন।
অভিভাবকদের ভাষ্য, বাচ্চাদের সময়সূচির সঙ্গে সমন্বয় করা প্রয়োজন। তাছাড়া সন্তানরা কোনো সমস্যায় পড়লে তা দ্রুত জানতে পারাটাও তাদের জন্য জরুরি।
অ্যালেন বলেন, ‘আমরা কেবল মোবাইল ফোন নীতির পরিবর্তন করেছি। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে অভিভাবকদের যে চাহিদা, তা পূরণ করছি না। এমনকি শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও মানসিক উন্নয়নে কাজ করার জন্য শিক্ষকদের যথাযথভাবে প্রশিক্ষণও দিচ্ছি না।’
১১৬ দিন আগে
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের চার কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
আমেরিকান ও ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে করা মামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) চার কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই পদক্ষেপ একটি নিরপেক্ষ বিচারিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতার ওপর ‘সুস্পষ্ট আক্রমণ’ বলে নিন্দা জানিয়েছে আইসিসি।
স্থানীয় সময় বুধবার (২০ আগস্ট) আইসিসির ওই চার কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
তিনি জানান, আমেরিকান ও ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে করা মামলায় সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে আইসিসির দুই বিচারক ও আইনজীবীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় ওই চার ব্যক্তির যুক্তরাষ্ট্রে কোনো সম্পদ থাকলে তা জব্দ করা হবে।
দ্য গার্ডিয়ান বলেছে, গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত বছর নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার সঙ্গে এসব কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন।
তাৎক্ষণিকভাবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ ও আইসিসি। তবে ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপ স্বাগত জানিয়েছে ইসরায়েল।
নেদারল্যান্ডের হেগে অবস্থিত এই আদালত বিশ্বের প্রথম আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর আগে আইসিসির সাবেক প্রধান প্রসিকিউটর করিম খানসহ আরও চার বিচারকের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। গত মে মাসে যৌন অসদাচরণের অভিযোগে তদন্তের মুখে দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান করিম খান।
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছেন আইসিসির বিচারক কানাডার কিম্বারলি প্রোস্ট ও ফ্রান্সের নিকোলা গিলু, এবং ফিজির আইনজীবী নাজহাত শামিম খান ও সেনেগালের মামে মানদিয়ায়ে নিয়াং।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্র জড়িত নয়: ট্রাম্প প্রশাসন
যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের নাগরিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত, গ্রেপ্তার, আটক বা বিচারপ্রক্রিয়ায় এই চারজন সরাসরি যুক্ত ছিলেন বলে দাবি করেন রুবিও।
আলাদা এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে তদন্ত অনুমোদনের রায়ে অংশ নেওয়ার কারণে প্রোস্টকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে, যদিও পরে সে তদন্ত বাতিল করা হয়।
অন্যদিকে, গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নেতানিয়াহু ও ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্তের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির অনুমোদনের জন্য নিকোলা গিলুর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের তদন্ত চালিয়ে যাওয়া এবং নেতানিয়াহু ও গালান্তের বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল রাখার কারণে শামিম খান ও নিয়াংকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।
এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে আইসিসি জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নিরপেক্ষ বিচারিক প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতার ওপর সুস্পষ্ট আক্রমণ। তাছাড়া এই আদালতের সদস্য রাষ্ট্রগুলো, আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা ও বিশ্বের লাখ লাখ নিরাপরাধ ভুক্তভোগীর প্রতি এই পদক্ষেপ চরম অবমাননা বলেও মন্তব্য করেছে হেগের এই আদালত।
আইসিসির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে জাতিসংঘ অত্যন্ত উদ্বিগ্ন বলে জাানিয়েছে সংস্থাটির মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিখ। তাছাড়া, আইসিসি তাদের কাজের জন্য জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
১১৬ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন না করলে কম্পিউটার চিপে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন না করলে কম্পিউটার চিপ ও সেমিকন্ডাক্টরে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বুধবার (৭ আগস্ট) ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর ইলেকট্রনিক পণ্য, গাড়ি, গৃহস্থালী যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য ডিজিটাল পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে অ্যাপলের সিইও টিম কুকের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, আমরা চিপ ও সেমিকন্ডাক্টারে প্রায় ১০০ শতাংশ শুল্ক বসানোর কথা ভাবছি। যুক্তরাষ্ট্রে কম্পিউটার চিপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোনো শুল্ক দিতে হবে না।
ট্রাম্প প্রশাসনের আগের সিদ্ধান্তে ইলেকট্রনিক পণ্য শুল্কের আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল।
ট্রাম্প আরও বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময় চিপ সংকটের কারণে গাড়ির দাম বেড়ে গিয়েছিল এবং তা মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিয়েছিল।
ট্রাম্পের এই ঘোষণাকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। টেক জায়ান্ট অ্যাপল ও অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে চিপ উৎপাদনে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের অভিষেকের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বৃহৎ প্রযুক্তি খাত মিলিয়ে প্রায় ১৫ লাখ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি এসেছে। এর মধ্যে শুধু টেক জায়ান্ট অ্যাপলই ৬০০ হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
পড়ুন: ভারতকে ট্রাম্পের শাস্তি, শুল্ক বেড়ে দাঁড়াল ৫০ শতাংশ
বুধবার ট্রাম্প ও কুকের বৈঠকের পর, বাজারে অ্যাপলের শেয়ারমূল্য ৫ শতাংশ বেড়েছে এবং লেনদেন শেষ হওয়ার পর আরও ৩ শতাংশ বেড়েছিল।
মার্কিন এআই চিপ নির্মাতা এনভিডিয়া এবং ইন্টেল-এর শেয়ারও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। চিপ নির্মাতাদের সংগঠন সেমিকন্ডাক্টর ইন্ড্রাস্টি অ্যাসোসিয়েশনও ট্রাম্পের এই নতুন সিদ্ধান্তে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
বিশ্ব সেমিকন্ডাক্টর ট্রেড স্ট্যাটিস্টিক্স জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে চিপের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। গত অর্থবছরে চিপের বিক্রি বেড়েছে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ।
ট্রাম্প বলছেন, উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকিই প্রতিষ্ঠানগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা স্থাপন করতে বাধ্য করবে। এতে কোম্পানিগুলোর মুনাফা কমতে পারে এবং মোবাইল ফোন, টিভি, ফ্রিজসহ অনেক পণ্যের দাম বাড়তে পারে— তবুও ট্রাম্প মনে করেন, দেশীয় উৎপাদনই এখন মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
১৩০ দিন আগে
অস্তিত্ব সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র: জো বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী চরম আক্রমণের শিকার হচ্ছে এবং দেশ অস্তিত্ব সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) শিকাগোতে অনুষ্ঠিত দেশটির ন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের ১০০তম বার্ষিক পুরস্কার গালায় দেওয়া বক্তব্যে বাইডেন এই মন্তব্য করেন।
আফ্রো-আমেরিকান বিচারক, আইনজীবী ও আইন পেশাজীবীদের সবচেয়ে বড় সংগঠনটির অনুষ্ঠানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের ইতিহাস স্মরণ করেন এবং বর্তমান প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেন।
বাইডেন বলেন, ‘১৯৬০’র দশকের উত্তাল দিনগুলোর পরও আমেরিকার জনগণকে এমন গভীর অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে যেতে হয়নি।’
তিনি দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে রাজনীতিবিদরা আইনি অভিবাসীদের হাতকড়া পরিয়ে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে তাড়িয়ে দিতে দেখে খুশি হন।
বাইডেন অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান প্রশাসন ‘ইতিহাস মুছে দিয়ে সমতা ও ন্যায়বিচার বিলুপ্ত করতে চায়।’বক্তৃতায় তিনি বলেন, আইনবিরোধী পদক্ষেপে যেসব আইন সংস্থা ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধিতা করেছে, সেগুলোকে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এই চাপের কারণে বাধ্য হয়ে কিছু আইনি প্রতিষ্ঠান নতজানু হয়েছে, অন্যায়ের সামনে মাথা নত করেছে।’
বাইডেন আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিচারকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে এবং অনেকে নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের কথা ভাবছেন।
পড়ুন: আরও ৬৯ দেশের ওপর নতুন হারে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপ
স্বাস্থ্য ও স্মৃতিশক্তি নিয়ে সমালোচনার মধ্যে বক্তব্য
প্রসঙ্গত, সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে বিতর্ক চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। তিনি জানিয়েছেন, তিনি তার প্রেসিডেন্সি নিয়ে একটি স্মৃতিকথা লিখছেন এবং প্রোস্টেট ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন।
তবে বৃহস্পতিবারের বক্তব্যে তিনি তার পুনঃনির্বাচনের দৌড় থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত বা প্রেসিডেন্ট থাকার সময় সহকারীদের ভূমিকা নিয়ে চলমান কংগ্রেস তদন্ত নিয়ে কিছু বলেননি।
যদিও তিনি পূর্বে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, প্রতিটি ক্ষমা মুক্তির সিদ্ধান্ত তিনি মৌখিকভাবে অনুমোদন করেছিলেন এবং এসব বিষয়ে রিপাবলিকানদের ‘মিথ্যাবাদী’ আখ্যা দেন।
এই বক্তব্য দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে তার সাবেক উপদেষ্টা মাইক ডনিলন এবং স্টিভ রিচেত্তি মার্কিন কংগ্রেসের ওভারসাইট কমিটির সামনে সাক্ষ্য দেন।
সবশেষে বাইডেন বলেন, ‘আমাদের কঠিন সত্যের মুখোমুখি হতে হবে। এখনই সময় সঠিক ইতিহাসের পাশে দাঁড়ানোর।’
সূত্র: ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান
১৩৬ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রে ৮২৯ কিমি দীর্ঘ বজ্রপাত, বিশ্বে রেকর্ড
২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে ঘটে যাওয়া একটি বজ্রপাত বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) ৫১৫ মাইল বা ৮২৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই বজ্রপাতকে ইতিহাসের দীর্ঘতম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর বজ্রপাতের ঘটনাটি ঘটে। এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব টেক্সাস অঙ্গরাজ্য থেকে মিসৌরির কানসাস সিটি পর্যন্ত বিস্তৃত। যা ইউরোপের প্যারিস থেকে ভেনিস পর্যন্ত দূরত্বের সমান।
এই বজ্রপাতটি পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত রেকর্ডকৃত সর্বাধিক দৈর্ঘ্যের বজ্রপাত। এর আগের রেকর্ডটিও গ্রেট প্লেইন্স নামের একই অঞ্চলে ঘটেছিল। ২০২০ সালের ২৯ এপ্রিলের ওই বজ্রপাতটি ছিল ৭৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ।
২০১৬ সাল থেকে স্যাটেলাইটভিত্তিক উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এমন বিস্তৃত বজ্রপাত পর্যবেক্ষণ সম্ভব হচ্ছে। ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সর্বশেষ ভূ-স্থির কক্ষপথে থাকা আবহাওয়া স্যাটেলাইটের সহায়তায় ২০১৭ সালের বজ্রপাতটি শনাক্ত করা হয়।
স্যাটেলাইট চিত্র দিয়ে বজ্রপাতের বিভিন্ন অংশে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক শাখাগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। এর আগে স্থলভিত্তিক সেন্সরের মাধ্যমে বজ্রপাতের সময় ও দূরত্ব পরিমাপ করা হতো, তবে এতে সীমাবদ্ধতা থাকত বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
পড়ুন: বাল্যবিবাহ ঠেকাতে প্রধান শিক্ষকের কাছে স্কুলছাত্রীর দরখাস্ত
এ ছাড়া সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী বজ্রপাতের রেকর্ডও প্রযুক্তির সহায়তায় শনাক্ত করা হয়েছিল। ২০২০ সালের ১৮ জুন উরুগুয়ে ও উত্তর আর্জেন্টিনার আকাশে একটি বজ্রপাত টানা ১৭ দশমিক ১ সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছিল।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আবহাওয়া ও জলবায়ুর চরম অবস্থা বিষয়ক প্রতিবেদক অধ্যাপক র্যান্ডাল সারভেনি বলেন, ‘এমন দীর্ঘতম বজ্রপাতের ঘটনার দৈনন্দিন প্রভাব রয়েছে। বজ্রপাত মূল উৎস থেকে অনেক দূরেও আঘাত হানতে পারে। তাই বজ্রসহ ঝড়-বৃষ্টি চলাকালে মানুষকে বাইরে থাকা থেকে বিরত থাকতে হবে।’
বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগ ও পানির লাইন আছে এমন মজবুত ভবন অথবা সম্পূর্ণ বদ্ধ ধাতব ছাদবিশিষ্ট গাড়ির মধ্যে আশ্রয় নেওয়ার সুপারিশ করেছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও)।
১৩৭ দিন আগে
নিউইয়র্কে অফিস ভবনে গুলিতে বাংলাদেশি অভিবাসীসহ নিহত ৪
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি বহুতল অফিস ভবনে এক বন্দুকধারীর হামলায় এক বাংলাদেশি অভিবাসীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছেন। এরপর হামলাকারী নিজেও আত্মহত্যা করেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নিউইয়র্কের ৩৪৫ পার্ক অ্যাভিনিউ নামের একটি বাণিজ্যিক অফিস ভবনে এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বন্দুকধারীর হামলায় পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে ৪ জন নিহত হয়েছেন। আরেকজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ৩৬ বছর বয়সী পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশি অভিবাসী এবং নিউ ইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগে তিন বছর ছয় মাস কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুকধারীর নাম শেন তামুরা, তিনি লাস ভেগাসের বাসিন্দা ছিলেন। হামলার পরপরই তিনি আত্মহত্যা করেন। তার মানসিক স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ইতিহাস রয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে শেন এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানান জেসিকা।
আরও পড়ুন: ইরানে আদালতে সশস্ত্র হামলায় নিহত ৯, আহত ২২
নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস জানিয়েছেন, হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন, একজন গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাছাড়া ঘটনাস্থল থেকে পালাতে গিয়ে আরও চারজন সামান্য আহত হয়েছেন।
ওই এলাকার একটি নজরদারি ক্যামেরায় অস্ত্র হাতে সানগ্লাস পরা একজন ব্যক্তিকে হেঁটে যেতে দেখা যায়, যাকে সন্দেহভাজন হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
অন্য একটি পর্যবেক্ষণ ক্যামেরায় দেখা যায়, এক ব্যক্তি একটি ডাবল পার্ক করা বিএমডব্লিউ গাড়ি থেকে নেমে এম৪ রাইফেল হাতে ভবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।
পুলিশ কমিশনার জেসিকা জানান, তিনি ভবনে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ কর্মকর্তার ওপর গুলি চালান এবং এরপর এক নারীকে গুলি করেন। পরে লবির ভেতর এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন ওই বন্দুকধারী।
এরপর তিনি লিফটের দিকে এগিয়ে যান এবং নিরাপত্তা ডেস্কের পেছনে লুকিয়ে থাকা এক নিরাপত্তারক্ষীকে গুলি করেন। একই সঙ্গে লবিতে থাকা আরও একজনকে গুলি করেন বলে জানান কমিশনার।
পরে লিফটে করে ৩৩ তলায় একটি রিয়েল এস্টেট ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে যান এবং সেখানে একজনকে গুলি করে হত্যা করেন। এরপর তিনি আত্মহত্যা করেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় ৫০ বছর পুরোনো বিমান বিধ্বস্তে সব আরোহী নিহত
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কমিশনার বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তির গাড়ি থেকে একটি এম৪ রাইফেল ও গুলিভর্তি ম্যাগাজিনসহ একটি রিভলবার উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী জেসিকা চেন জানান, তিনি দ্বিতীয় তলায় একটি প্রেজেন্টেশন দেখছিলেন, তখন প্রথম তলা থেকে একাধিক গুলির শব্দ শুনতে পান। পরে তারা একটি সম্মেলনকক্ষে আশ্রয় নেন এবং দরজার সামনে টেবিল ঠেলে ব্যারিকেড তৈরি করেন।
জেসিকা চেন বলেন, ‘আমরা সত্যিই খুব, খুব ভয় পেয়েছিলাম।’
১৩৯ দিন আগে
‘ফিলিস্তিনপন্থি’ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
গত বসন্তে গাজা যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এ আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার, প্রবেশন ও ডিগ্রি বাতিলসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সেরা আটটি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গঠিত গ্রুপ ‘আইভি লীগের’ একটি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পরই গাজা যুদ্ধ নিয়ে ক্যাম্পাসে হওয়া আন্দোলন প্রতিহত করতে না পারার অজুহাতে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ৪০০ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করে প্রশাসন।
সম্প্রতি এই তহবিল ফেরাতে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে কলাম্বিয়া প্রশাসন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শৃঙ্খলাবিষয়ক প্রক্রিয়া পুনর্গঠন ও ইহুদিবিদ্বেষের নতুন সংজ্ঞা গ্রহণকরাসহ প্রশাসনের বেশ কয়েকটি দাবিতে সম্মতি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, ‘একটি সমৃদ্ধ অ্যাকাডেমিক পরিবেশ গড়ে তুলতে পরস্পরের প্রতি এবং প্রতিষ্ঠানের মৌলিক কাজ, নীতিমালা ও নিয়মকানুনের প্রতি সম্মান থাকা আবশ্যক। অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটানো বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা ও নিয়মের লঙ্ঘন, এবং এমন লঙ্ঘনের জন্য অবশ্যই পরিণতি ভোগ করতে হবে।’
মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিচারিক বোর্ডের মাধ্যমে আরোপিত শাস্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রবেশন, ডিগ্রি বাতিলসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্ট আটক: যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
তবে যেসব শিক্ষার্থীদের এই শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে তাদের পরিচয় প্রকাশ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এর আগে মে মাসে তারা জানিয়েছিল, অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ১৮০ জন কর্মী ছাঁটাই করবে এই বিশ্ববিদ্যালয়। একইসঙ্গে গবেষণার পরিসরও সীমিত করবে।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের একটি অধিকার-সংগঠন থেকে জানানো হয়েছে, আন্দোলনে অংশ নেওয়ার দায়ে প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থীকে ১-৩ বছরের জন্য বহিষ্কার বা তাদের স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আগের যেকোনো আন্দোলনের শাস্তির নজিরকে ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছে সংগঠনটি।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসতে হলে তাদের ক্ষমা চাইতে হবে, নাহলে তাদের স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের মুখে পড়তে হবে। তবে অনেকেই এটি করতে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন বলে মনে করছে তারা।
এর আগে, গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংঘঠিত বিক্ষোভে জড়িত থাকার কারণে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে গ্রেপ্তার করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কর্মকর্তারা। বিষয়টি নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়।
এরপর তাকে অবৈধভাবে বন্দি, বিদ্বেষপূর্ণভাবে মামলা ও ইহুদিবিদ্বেষী হিসেবে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মাহমুদ।
ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরেই অঙ্গীকার করেছিলেন, গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থি প্রতিবাদী আন্দোলনে জড়িত কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন। এই আন্দোলনকে তিনি ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করেন।
আরও পড়ুন: আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল
ট্রাম্পের মতে, গাজার ক্ষমতায় থাকা ‘সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসকে’ সমর্থন করে ওই শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অধিকার হারিয়েছেন।
তবে ট্রাম্পের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছেন, তারা কেবল যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। এমনকি তাদের সঙ্গে কিছু ইহুদি শিক্ষার্থী ও তাদের কয়েকটি সংগঠনও ছিল।
১৪৫ দিন আগে
মার্কিন পণ্যে পাল্টা ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ব্রাজিলের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রাজিলের রপ্তানিপণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এর জবাবে পাল্টা একই হারে মার্কিন পণ্যে শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ব্রাজিলের একটি সংবাদমাধ্যমের বরাতে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে জানানো হয়, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক বসালে আমরাও তাদের পণ্যে ৫০ শতাংশ বসাবো।’
আরও পড়ুন: কানাডায় ৩৫ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের, অনিশ্চয়তায় ইউএসএমসিএ চুক্তি
ট্রাম্প সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে চলমান বিচার কার্যক্রমকে ইঙ্গিত করে দেশটিকে ‘উইচ-হান্ট’ চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।
শুল্ক আরোপের বিষয়ে তিনি আরও জানান, ব্রাজিল সরকার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে আপিল করে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান এবং ব্যাখ্যা দাবি করতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে লুলা তার মন্ত্রিসভার সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। ট্রাম্পের ঘোষণার জবাব কীভাবে দেওয়া হবে—তা নির্ধারণে একটি স্টাডি গ্রুপ গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ব্রাজিল পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে আরও বেশি হারে শুল্ক বসানো হবে।
চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প বাংলাদেশ, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ একাধিক দেশকে নতুন শুল্কের বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। চুক্তি না হলে ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
১৫৭ দিন আগে
কানাডায় ৩৫ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের, অনিশ্চয়তায় ইউএসএমসিএ চুক্তি
কানাডার পণ্যে অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ বাণিজ্যিক অংশীদার দেশের ওপর অতিরিক্ত ১৫ বা ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকিও দিয়েছেন তিনি। এতে, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ইউএসএমসিএ) নতুন করে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নেকে লেখা চিঠি আপলোড দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আগামী ১ আগস্ট থেকে এই শুল্কহার বাস্তবায়িত হবে।’ কানাডা পাল্টা পদক্ষেপ নিলে শুল্ক হার আরও বাড়ানোর হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
চলতি বছর মার্চে ট্রাম্প কানাডা থেকে আমদানি করা গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এরপর জুনে তিনি কানাডার স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামে ৫০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেন। এবার তিনি জানালেন, এই শুল্কহার অন্যান্য কানাডিয়ান পণ্যের ওপরও কার্যকর হতে পারে।
এর আগে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এক্সে লিখেছিলেন, ‘আমরা আমাদের শ্রমিক ও ব্যবসার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় অটল থাকব।’ তবে, নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর চলমান আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ, রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা
২০২০ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নাফটা বাতিল করে এই নতুন ইউএসএমসিএ চুক্তি চালু করা হয়। বর্তমানে, কানাডা ও মেক্সিকো তিন দেশের চুক্তি স্থিতিশীল করতে নতুন করে সমঝোতার পথ খুঁজছে।
চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প দুই প্রতিবেশী দেশের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, যদিও কানাডার জ্বালানি রপ্তানিতে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়। তিনি অভিযোগ করেন, এই দুই দেশ অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার রোধে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
যদিও ইউএসএমসিএ’র আওতায় কিছু পণ্য এখনও শুল্কমুক্ত থাকছে। গত ৬ মে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও কার্নির মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর কার্নি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর প্রস্তাবিত ডিজিটাল সার্ভিস কর প্রত্যাহার করেন।
তবে, ট্রাম্প ক্রমেই বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করছেন। তিনি সম্প্রতি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের পণ্যে নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, ‘সরাসরিই বলি, বাকি দেশগুলোকে এখন থেকে ১৫ বা ২০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে।’
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের এসব পদক্ষেপের বৈধতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে গড়িয়েছে। দেশটির একটি ফেডারেল আদালত এরই মধ্যে রায় দিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট তার ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছেন। এই আপিলের শুনানি আগামি ৩১ জুলাই ওয়াশিংটনের আদালতে অনুষ্ঠিত হবে।
১৫৭ দিন আগে