বৈদেশিক-সম্পর্ক
দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে ব্যর্থ হয়ে খেই হারিয়েছে বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপি দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে গিয়ে না পেরে খেই হারিয়ে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে চেয়েছিল। সেজন্য তারা নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছে।’
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় চলমান রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, “স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে ৯.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বেগে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ঠিক সে সময় অপশক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পটভূমি তৈরি করেছিল। শুধু বঙ্গবন্ধু নয় স্বাধীনতারও বিরোধিতা করেছিল তারা। সেই অপশক্তির ধারাবাহিকতা এখন দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি ভেস্তে দিতে, দেশকে পেছনে নিয়ে যেতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা প্রকাশ্যেই দেশকে পেছনে নেওয়ার জন্য ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ স্লোগান দেয়।”
তিনি আরও বলেন, ‘এই রাজনৈতিক অপশক্তি বারবার দেশে গণতন্ত্র নস্যাৎ করতে চেয়েছে, সেই চক্রান্তেই বিএনপি গত নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে দিবাস্বপ্নের চূড়া থেকে ধপাস করে পড়ে গিয়ে এখন হাঁটছে, লিফলেট দিচ্ছে। আপনারা হাঁটেন, দৌড়ান কিন্তু আবার যদি মানুষ পোড়ানোর অপচেষ্টা করেন, জনগণ উচিত শিক্ষা দেবে।’
‘কিছু ব্যক্তিবিশেষও এই অপশক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যারা বিশ্বের সামনে দেশকে দরিদ্র বলে অপপ্রচার চালিয়ে নিজে নানা পুরস্কার নেয়’-এমন মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে তার কোনো চিন্তা নেই। দেশে যখন বন্যা হয় তখন তাকে পাওয়া যায় না, দেশে যখন মানুষ পোড়ানো হয় তখন তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় না, দেশে যখন দুর্যোগ হয় তখন ড. ইউনুসকে বিদেশে পুরস্কার নিতে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।'
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ড. ইউনুসের লবিস্ট ফার্ম পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় যত পুরস্কার দেওয়া হয় সেসব জায়গায় যোগাযোগ করে পুরস্কার আনে অথচ তিনি দেশের কাজে নেই -এটি অত্যন্ত হাস্যকর।’
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর পরম আত্মত্যাগী জীবনের ওপর সংক্ষেপে আলোকপাত করেন।
ঢাকার সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে ও স্বাধীনতা পরিষদের সভাপতি জিন্নাত আলী খান ও সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টয়েলের পরিচালনায় স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, ইসলামী চিন্তাবিদ শাইখ আকরামুজ্জামান মাদানী, যুবলীগ নেতা মানিক লাল ঘোষ, বঙ্গবন্ধু একাডেমির মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন।
আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধু ও সব শহীদের আত্মার শান্তি এবং দেশ ও মানুষের কল্যাণ প্রার্থনা করে মোনাজাত পরিচালিত হয়।
ইন্দোনেশিয়ায় নৌকাডুবির ঘটনায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় প্রস্তুত ইউএনএইচসিআর-আইওএম
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম আচেহ প্রদেশের মেউলাবোহ উপকূলে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার ঘটনায় জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম 'বিস্মিত ও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন'।
বৃহস্পতিবার উদ্ধার অভিযান চলার সময় প্রায় ৭৫ জনকে নিরাপদে তীরে নিয়ে আসা হয়েছে।
ইউএনএইচসিআর ও আইওএম সম্ভাব্য প্রাণহানির পরিমাণ সম্পর্কে ‘অত্যন্ত উদ্বিগ্ন’। কারণ, উদ্ধার হওয়া শরণার্থীরা নৌকায় মোট ১৫১ জন থাকার কথা জানিয়েছেন।
প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০ মার্চ পশ্চিম আচেহ’র স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে স্থানীয় জেলেরা উদ্ধার করা ৬ শরণার্থীর কথা জানান। একই দিনের প্রথম দিকে উপকূল থেকে প্রায় ১২ নটিক্যাল মাইল দূরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার উত্তর উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে ৬৯ রোহিঙ্গা শরণার্থী উদ্ধার
বান্দা আচেহ থেকে জাতীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থা একটি উদ্ধার অভিযান শুরু করে এবং ডুবে যাওয়া নৌকাটি ২১ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে শনাক্ত হয়।
ইউএনএইচসিআর ও আইওএম দলকে পশ্চিম আচেহে মোতায়েন করা হয়েছে এবং এই মর্মান্তিক ঘটনায় বেঁচে যাওয়াদের সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য আরও ৫২ লাখ পাউন্ড সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য
শুক্রবার ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, বিষয়টি নিশ্চিত হলে তা হবে এ বছরের সবচেয়ে বড় প্রাণহানির ঘটনা।
ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নৌকায় আগমনের উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ার মধ্যে এই ঘটনা ঘটল।
শুধু ২০২৩ সালেই ২ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী এসেছে, যা নভেম্বরের পর থেকে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। যা আগের ৪ বছরের সম্মিলিত আগমনের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।
ইউএনএইচসিআর ও আইওএম ইন্দোনেশিয়ায় আগত শরণার্থীদের জরুরি মানবিক সহায়তা ও সুরক্ষা প্রদানের প্রচেষ্টা জোরদার করছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় প্রদানকারীদের জন্য জাতিসংঘ ও সহযোগী সংস্থাগুলোর ৮৫২.৪ মিলিয়ন ডলার আহ্বান
জি টু জি পদ্ধতিতে বাংলাদেশ বিমানের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী কানাডা
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিভিন্ন উড়োজাহাজের ইঞ্জিন মেরামত, ওভারহুইলিং ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে কানাডা।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এই আগ্রহের কথা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলাস।
হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্প বিশেষ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায় কানাডা। জি টু জি ভিত্তিতে সরকারি প্রতিষ্ঠান কানাডিয়ান কমার্শিয়াল কর্পোরেশনের মাধ্যমে বিমানের বিভিন্ন উড়োজাহাজের ইঞ্জিন মেরামত, ওভারহুইলিং ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করার বিষয়ে আগ্রহী দেশটি।
আরও পড়ুন: দেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন ও এভিয়েশন খাতের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি: ফারুক খান
এছাড়াও, এ সময় অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক রুটে ব্যবহারের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছে আরও ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ বিক্রির ব্যাপারে কানাডার আগ্রহের কথা জানান তিনি।
বৈঠকে পর্যটনমন্ত্রী বলেন, বিমানের বহরে নতুন ও অত্যাধুনিক ১৫টি উড়োজাহাজ যুক্ত হয়েছে। বিমানের বহর সম্প্রসারণের পাশাপাশি নতুন আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক রুট চালু করার বিষয়ে কাজ করছে সরকার। ইতোমধ্যে বিমানের বহরে কানাডিয়ান কোম্পানি ডিহ্যাভিল্যান্ডের তৈরি ৩টি নতুন ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজও রয়েছে বলে জানান তিনি।
ফারুক খান বলেন, বিমানের কাছে উড়োজাহাজ বিক্রির বিষয়ে কানাডার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেলে বিমানের প্রয়োজন এবং দেশের মানুষের মঙ্গল বিবেচনায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পর্যটনমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে দেশেই বিমানের নিজস্ব প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানদের মাধ্যমে উড়োজাহাজের সি-চেক পর্যন্ত সব টেকনিক্যাল কাজ সম্পন্ন হচ্ছে।
বিমানের বিভিন্ন উড়োজাহাজের ইঞ্জিন মেরামত ও ওভারহুইলিংয়ের বিষয়ে কানাডার প্রস্তাবের ওপর আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এছাড়াও কানাডায় পড়তে যাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রক্রিয়া আরও সহজ করার উদ্যোগ নিতে রাষ্ট্রদূতকে আহ্বান জানান ফারুক খান।
আরও পড়ুন: এসআরএফবির সভাপতি ফারুক খান, সম্পাদক আফরিন জাহান
জ্বালানি খাতে সবুজ রূপান্তর সংলাপে ইউএনডিপির শুভ্চ্ছোদূত
বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সবুজ রূপান্তর শীর্ষক সংলাপে যোগ দিয়েছেন সুইডেনের রাজকন্যা এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)’র শুভেচ্ছাদূত ভিক্টোরিয়া।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ঢাকায় ইউএনডিপি ও সুইডেন দূতাবাসের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সবুজ রূপান্তর ত্বরান্বিত করা: টেকসই আগামীর জন্য সরকারি-বেসরকারি-উন্নয়ন সহযোগিতা’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তথা এসডিজি অর্জনের জন্য বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সবুজ রূপান্তর প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে এ সংলাপ আয়োজন করা হয়।
টেকসই উন্নয়ন বলবৎ রাখার যৌথ প্রয়াস হিসেবে, এই সংলাপে সরকারি, বেসরকারি ও উন্নয়ন সংস্থার মূল অংশীজনদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।
গত বছরের অক্টোবর থেকে টেকসই উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও জলবায়ু মোকাবিলায় এসডিজির পক্ষে বৈশ্বিক জনমত তৈরির উদ্দেশ্যে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করছেন সুইডিশ রাজকন্যা ভিক্টোরিয়া। এই সংলাপে তার উপস্থিতি পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৈশ্বিক সহযোগিতার গুরুত্বকেই আরও জোরদার করে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া
বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের সবুজ রূপান্তরে বেসরকারি খাতের ভূমিকার ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ‘পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ’-এর প্রতিষ্ঠাতা মাসরুর রিয়াজ।
জ্বালানিখাতে সবুজ রূপান্তরের জন্য চালিকা শক্তি, চ্যালেঞ্জ ও কৌশলগুলো নিয়ে ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমানের তত্ত্বাবধানে সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার যৌথ সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সভায় ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক সুইডিশ মন্ত্রী ইয়োহান ফরসেল, জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এবং ইউএনডিপির এক্সটারনাল রিলেশনস ও অ্যাডভোকেসি পরিচালক উলরিকা মদির এবং ‘এসবিকে টেক ভেঞ্চারস’-এর প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির।
বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে সালমান এফ. রহমান বলেন, বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক স্বীকৃত পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানা রয়েছে, আর এতেই স্পষ্ট হয় টেকসই পরিবেশ ও নিরাপত্তাকে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়। টেকসই পণ্যের জন্য অবশ্যই বেশি বিনিয়োগ করতে হবে এবং ক্রেতাদেরও বাড়তি মূল্য পরিশোধের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব রাখতে হবে।
সুইডিশ মন্ত্রী ইয়োহান ফরসেল বলেন,‘এখানে প্রচুর পরিমাণে বেসরকারি বিনিয়োগ রয়েছে এবং আমরা যদি এর কিছু শতাংশ দারিদ্র্যদূরীকরণে ব্যয় করতে পারি তবে এটি একটি বিশাল প্ল্যাটফর্মে পরিণত হবে। বাংলাদেশে আমাদের ৫০টিরও বেশি সুইডিশ কোম্পানি কাজ করছে। আমি মনে করি এটা বেশ ভালো একটা খবর কিন্তু আমাদের সামনে আরও ভালো কিছু করার সম্ভাবনা আছে।’
বাংলাদেশে সুইডিশ কোম্পানির বিনিয়োগ বাড়বে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোও সুইডেন ও ইউরোপে বিনিয়োগ করবে। এই অংশীদারিত্বকে আরও মজবুত জায়গায় নিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব উলরিকা মদির বলেন, ‘উন্নয়নের পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা সত্যিই অসাধারণ। তাছাড়া, বাংলাদেশকে এমন কিছু সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে যার জন্য আদতে তার নিজের জনগণ দায়ী নয়। আর এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা প্রয়োজন পারস্পরিক সংহতি, কারণ কিছু সমস্যা সবাইকে একসাথে সমাধান করতে হবে। আমাদের একে অন্যের কথা শুনতে হবে, নিজ নিজ আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করতে হবে এবং সবাই নিজ নিজ অঙ্গীকারকে কার্যকর করতে হবে।’
জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীববৈচিত্র্য উভয়ের জন্য আলোচনার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ সমাধানে পৌঁছানোর জন্য জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান তিনি।
বেসরকারি খাতের দায়িত্ব সম্পর্কে সোনিয়া বশির কবির বলেন, ‘বাংলাদেশে বেসরকারি খাতকে উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিতে হবে এবং তা অবশ্যই নীতিমালা মেনে। অন্যান্যদের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে আমাদের বেসরকারি খাতকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’
আলোচনা সভায় সরকার ও উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি এইচএন্ডএম, গ্রামীণফোন, এরিকসন, ম্যারিকো, ইউনিলিভার, ভলভো, অ্যাটলাস কপকো এবং স্ক্যানিয়ার মতো বিভিন্ন বেসরকারি খাতের কোম্পানির প্রতিনিধিরা ছিলেন।
আরও পড়ুন: খুলনা-চট্টগ্রামে জলবায়ু সহনশীল উদ্যোগ পর্যবেক্ষণে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত
আয়ারল্যান্ডকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বন্ধু হিসেবে দেখা উচিত বাংলাদেশের: আইরিশ মন্ত্রী
আয়ারল্যান্ডের এন্টারপ্রাইজ, ট্রেড অ্যান্ড ইমপ্লয়মেন্ট বিষয়ক মন্ত্রী সাইমন কোভনি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) বন্ধু হিসেবে আয়ারল্যান্ডকে পাবে বাংলাদেশ এবং দুই দেশ বৃহত্তর ক্ষেত্রে 'ঘনিষ্ঠ ও আরও কাঠামোগত সহযোগিতা' গড়ে তুলতে ইচ্ছুক।
চলতি সপ্তাহে ঢাকায় দুই দিনের সরকারি সফর শেষ করার আগে ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
কোভনি বলেন, 'আমি যেটি বলতে চাই তা হলো বাংলাদেশের উচিত আয়ারল্যান্ডকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বন্ধু হিসেবে দেখা। যদি তারা ইউরোপীয় কমিশনের সঙ্গে কিছু কঠিন বিষয় নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করে, তাহলে আয়ারল্যান্ড তাদের জন্য সমস্যাগুলো উত্থাপন করতে পারে এবং সম্ভাব্যভাবে তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারে।’
আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ থেকে ২০২৯ সাল পর্যন্ত উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে অন্তর্বর্তীকালীন সময় এবং এরপর বাংলাদেশ জিএসপি প্লাস সুবিধা চাইবে, যা শুল্ক ও বাণিজ্যের সুযোগের ক্ষেত্রে কার্যকরভাবে অগ্রাধিকারমূলক অবস্থান।
কোভনি বলেন, ‘আমি মনে করি ইইউ এ ব্যাপারে উন্মুক্ত। অবশ্যই, কিছু শর্ত থাকবে যা ইইউ বাংলাদেশের কাছ থেকেও চাইবে, শ্রম আইন, শ্রমিক অধিকার, পরিবেশগত বিষয়গুলোর সামগ্রিক আধুনিকীকরণ। ইইউর জন্য এটাই স্বাভাবিক। এটি প্রতিটি দেশের জন্য।’
তিনি বলেন, তারা সবসময় পরিবেশগত উন্নতি, কাজের পরিবেশ ও শ্রম উন্নয়নে জোর দেওয়ার চেষ্টা করেন। ‘আমি মনে করি যে এসব পুরণ করা সম্ভবপর।’
কোভেনির সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলডিসিতে উন্নীত হওয়ার সময়ে ২০২৯ সাল পর্যন্ত ইইউর বাজারে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা উপভোগে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় আয়ারল্যান্ডের সমর্থন কামনা করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী বলেন, আয়ারল্যান্ড ও বাংলাদেশের অংশীদার হতে পারে এমন ক্ষেত্রগুলো নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটু কথা বলেছেন।
বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে, তিনি বলেছিলেন, প্রযুক্তি, বিমানচালনা, খাদ্য ও পুষ্টি এবং ফার্মাসিউটিক্যালের মতো ক্ষেত্রে আইরিশ সংস্থাগুলোর জন্য এখানে অবশ্যই সুযোগ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে কোভনি বলেন, এই সম্পর্ককে ঘিরে কীভাবে পরিকল্পনা তৈরি করা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'তিনি (সালমান) পরিষ্কার করেছেন যে, তিনি কয়েকজন মন্ত্রী ও ব্যবসায়ীকে নিয়ে আয়ারল্যান্ড সফর করতে চান, যাতে আমরা আয়ারল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার চেষ্টা করতে পারি।’
মন্ত্রী কোভনি বলেন, তারা অন্যান্য উপায়গুলোও দেখেছেন যাতে তারা এখানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সম্ভাব্য ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে।
এখানে তৈরি করা অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে অন্য দেশগুলোর কোম্পানিগুলোকে আসতে এবং মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান ও আয়ের ব্যবস্থা করতে উৎসাহিত করার বিষয়ে কথা বলেছেন তারা।
দুই দিনের সফরে কোভেনি নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উচ্চতর আয়ের দেশে পরিণত হওয়া বাংলাদেশের অবস্থা এবং ইইউতে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে এটি কীভাবে সম্পর্কের পরিবর্তন করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে আয়ারল্যান্ড এমন একটি দেশ যারা ইইউতে বাংলাদেশের বন্ধু হতে চায়। ইইউ যাতে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝে তা নিশ্চিত করতে তারা ভবিষ্যতে তাদের সঙ্গে কাজ করতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, 'আমি এখানে ইইউ দূতাবাসের উপপ্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক কখনোই এখনকার চেয়ে ভালো ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলতে চাচ্ছি কোনো সম্পর্কই নিখুঁত নয়, তবে বর্তমানের সম্পর্কটি একটি ইতিবাচক, দৃঢ় সম্পর্ক।’
শিগগিরই ‘প্রবাসী কল্যাণ সেল’ গঠন করা হবে: প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
প্রবাসী ও রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সমস্যা সমাধানে শিগগিরই ‘প্রবাসী কল্যাণ সেল’ গঠন হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে (২১ মার্চ) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে লেসন লার্নিং ফরম দ্যা স্ট্রেংদেন অ্যান্ড ইনফরমেটিভ মাইগ্রেশন সিস্টেম (এসআইএমএস) প্রকল্পের আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় পর্যায়ে, বিভাগীয় পর্যায়ে, জেলা পর্যায়ে ও উপজেলা পর্যায়ে পৃথক পৃথক কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ সেল প্রবাসীদের সমস্যা তড়িৎগতিতে সমাধানে সর্বদা তৎপর থাকবে বলে জানান শফিকুর রহমান চৌধুরী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো পুরাতন আমলের যন্ত্রপাতি দিয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে যা নতুন প্রজন্মের কাজে লাগছে না। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে আধুনিক যুগোপযোগী যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শুধু প্রবাসীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলেই হবে না, প্রশিক্ষকদের ও প্রতিনিয়ত আধুনিক প্রযুক্তির সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে কিছুদিনের মধ্যে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো ঢেলে সাজানো সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিএমইটির ট্রেনিং প্রসঙ্গে প্রতিনিধিদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএমইটির মাধ্যমে মাত্র তিন দিনের প্রি-ওরিয়েন্টেশন কোর্স করা হয়। দ্রুত এটা আরও বাড়ানো হবে।
আরও পড়ুন: চলতি অর্থবছর ফেব্রুয়ারিতে সর্বোচ্চ ২১৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে
তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের মোটিভেশন কাজ করতে হবে। তাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে কেন মানুষ বিদেশে যেতে চায়? বাংলাদেশে শিক্ষার হার বেড়েছে। সবাইকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রী চেষ্টা করছেন। তারপরও আরও কর্মসংস্থান ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী কর্মীর মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি দেয় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। কল্যাণ বোর্ড প্রবাসীর পরিবারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সুদৃঢ় করণের লক্ষ্যে তাদের প্রতিবন্ধী সন্তানদের উন্নয়নে ও সহায়তা ভাতা দেওয়া হয়। যা প্রবাসীর পরিবারের অর্থবহ ও টেকসই কল্যাণ নিশ্চিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
তিনি বলেন, মানুষকে জানতে হবে তাদের জন্য কী ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে। বিদেশে যাওয়ার পরে তাকে কী করতে হবে, বিদেশে সে কী কী সুযোগ সুবিধা পাবে। দেশে ফেরত আসার পরে তার কী কী সুযোগ সুবিধা আছে। প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসীদের নানাবিধ সমস্যা সমাধানে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠাতে ফি দিতে হবে না প্রবাসীদের
সভায় এসআইএমএস প্রকল্পের মাধ্যমে অভিবাসী সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। এসব প্রতিবন্ধকতা ও সম্ভাবনা কাজে লাগাতে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের ওপর জোর দেন এখাতের সংশ্লিষ্ট এনজিও প্রতিনিধিরা।
সভায় ছিলেন, হ্যালভেটাস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর বেনঞ্জামিন ব্লুলু মেন্থালের সভাপতিত্বে পার্লামেন্টারি ককাসের সদস্য তানভীর শাকিল জয়, জনশক্তি কমর্সংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফর, বিভিন্ন এনজিওর প্রতিনিধিরা।
দেশে উৎপাদিত শস্য ও খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করতে কর্মসূচির আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
দেশে উৎপাদিত শস্য ও খাদ্য গ্রহণে মানুষকে উৎসাহিত করা ও জনসচেতনতা বাড়াতে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রতিনিধিকে সেমিনার ও উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির দেশ প্রতিনিধি ডোমেনিকো স্কালপেলির সঙ্গে সাক্ষাতে এ আহ্বান জানান তিনি।
পৃথক বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘ নারী সংস্থার দেশ প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং।
দুই কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভের সঙ্গে খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও নারী উন্নয়ন বিষয়ে মত বিনিময় করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকে হাছান মাহমুদ বলেন, বিশ্বের সর্বোচ্চ জনঘনত্ব আর সর্বনিম্ন মাথাপিছু জমির বাংলাদেশে খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে আবাদযোগ্য জমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের বিকল্প নেই। মালিকানা চিহ্নিত করতে জমির মধ্যে 'আইল' দেওয়ায় বহু জমি চাষের আওতা থেকে বাদ পড়ে যায়। এই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার বিষয়েও ডব্লিউএফপিকে উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
বিষয়গুলোতে গুরুত্ব দেবেন বলে জানান ডব্লিউএফপির কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ডোমেনিকো স্কালপেলি।
বৈঠকে তিনি বিদ্যালয় পর্যায়ে ও রোহিঙ্গাদের জন্য তার সংস্থার খাদ্য কর্মসূচির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: দ. কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে চুক্তির কথা ভাবছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২০১১ সাল থেকে পরিচালিত স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম ও পরবর্তীতে রোহিঙ্গাদের জন্য ডব্লিউএফপির খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির প্রশংসা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে এবং তাদের কল্যাণে পরিচালিত বিভিন্ন সহায়তা পরিষেবা সম্পর্কে ধারণা নিতে ভাসানচর ও কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছা দূত ও সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া।
বুধবার (২০ মার্চ) এ সফরে ইউএনএইচসিআর, ডব্লিউএফপি, আইওএম, ইউনিসেফ, ইউএনউইম্যান এবং ইউএনএফপিএসহ একাধিক জাতিসংঘ সংস্থার কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি।
এছাড়াও, ভূমিধস এড়াতে নরওয়ের অর্থায়নে ইউএনডিপির উদ্যোগে পরিচালিত দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান নির্ভর উদ্যোগসমূহ পরিদর্শন করেন ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত। তার এই সফর ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবনের জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্বকে আরও জোরদার করবে।
আরও পড়ুন: উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে সুইডেনের রাজকুমারী
এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য টেকসই আবাসন নিশ্চিত করতে কক্সবাজারে সরকারের খুরুশকুল আশ্রয়ণ হাউজিং প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগরের জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দ্বীপ হাতিয়া পরিদর্শনে যান ক্রাউন প্রিন্সেস। আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে কীভাবে এটি হাতিয়ার মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ভূমিকা রাখছে সে সম্পর্কে ধারণা নেন তিনি।
এ সময় সুইডিশ ক্রাউন প্রিন্সেসের সঙ্গে ছিলেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এবং ইউএনডিপির এক্সটারনাল রিলেশনস ও অ্যাডভোকেসি পরিচালক উলরিকা মদির, সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী ইয়োহান ফরশেল।
আরও পড়ুন: খুলনা-চট্টগ্রামে জলবায়ু সহনশীল উদ্যোগ পর্যবেক্ষণে ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত
গত সোমবার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) নিয়ে প্রচারণার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ও ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত ভিক্টোরিয়া। ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হওয়ার পর এই প্রথম বাংলাদেশ সফরে এসেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করলেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস
দ. কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে চুক্তির কথা ভাবছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তির (ইপিএ) মতো দ্বিপক্ষীয় উপকরণকে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার(২০ মার্চ) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক।
এ বৈঠকে দুটি দেশের অর্থনৈতিক কূটনীতির বিষয়াদি প্রাধান্য পায়। বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি, কোরিয়া পরিচালিত প্রকল্প, চুক্তি, প্রযুক্তি বিনিময়সহ দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশের 'এলডিসি' থেকে উত্তরণের পর সহযোগিতার ধারাবাহিক বৃদ্ধির জন্য নতুন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ও এর গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দক্ষিণ কোরিয়াকে বাংলাদেশে অন্যতম প্রধান বিদেশি বিনিয়োগকারী হিসেবে বর্ণনা করে দেশের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির ওপর আলোকপাত করেন এবং হালকা প্রকৌশল, ইলেকট্রনিক্স, হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস, অবকাঠামো উন্নয়ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ নানা ক্ষেত্রে আরও বিনিয়োগকে স্বাগত জানান।
চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু করার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী দক্ষিণ কোরিয়ার আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা কোইকাকে ধন্যবাদ জানান ও প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল দ্রুত সরবরাহের ব্যবস্থার অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি জনগণের নয়, বিদেশিদের সহযোগিতা চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশি পণ্যকে অগ্রাধিকারমূলক বাজার প্রবেশে অনুমতি ও দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশকে ৭টি বিলাসবহুল গাড়ি দেওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া সরকারকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এছাড়াও কোরিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি নিয়ে আলোচনায় কোরিয়ার এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) স্কিমের অধীনে বাংলাদেশি দক্ষ কর্মীদের জন্য কোটা বাড়ানোর জন্য কোরিয়াকে ধন্যবাদ জানান ড. হাছান।
এ সময় কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ভাষা শেখার সমস্যার কারণে বাংলাদেশ গত বছর ১০ হাজার ২০০ জনের কোটা পূরণ করতে পারেনি।
তবে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিষয়টির সমাধান করতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে দুটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) মনোনীত করেছে। যেখানে কোরিয়ার প্রশিক্ষকরা ভাষা ও প্রযুক্তির প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন।
পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রদূত বৈঠকে ম্যান-মেইড ফাইবার (এমএমএফ) এবং দক্ষতা এবং প্রযুক্তি বিনিময়, দ্বৈত কর পরিহার, বিমান পরিষেবা চুক্তির সংশোধন, উচ্চ-পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় সফর এবং সরাসরি ও যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিল্পখাত বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্পের আরও আধুনিকায়নের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্য প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি জনগণের নয়, বিদেশিদের সহযোগিতা চায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এভিয়েশন শিল্পে কারিগরি সহযোগিতা দিতে আগ্রহী জার্মানি
বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে কারিগরি সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জার্মানি।
বুধবার(২০ মার্চ) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোস্টার।
জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘অর্থনৈতিক, কারিগরি এবং প্রশিক্ষণের বিষয়ে আমরা বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে একত্রে কাজ করছি। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে আমরা কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করতে চাই। এই খাতে দক্ষ টেকনিক্যাল জনবল তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ প্রদানের বিষয়টিও আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে। সরকার 'স্মার্ট বাংলাদেশ' বিনির্মাণের যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা ত্বরান্বিত করতে আমরা বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্পের 'মর্ডান লজিস্টিক পার্টনার' হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী।’
আরও পড়ুন: সৈয়দপুর বিমানবন্দর হচ্ছে আঞ্চলিক এভিয়েশন হাব: পর্যটনমন্ত্রী
এছাড়াও বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে অভ্যন্তরীণ পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে বাংলাদেশের গৃহীত কর্মসূচি সম্পর্কেও জানতে চান তিনি।
বৈঠকে পর্যটন মন্ত্রী বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্পের প্রবৃদ্ধি হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এই শিল্পের যথাযথ বিকাশ এবং উন্নয়নে বর্তমান সরকার গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতে জার্মানির কারিগরি সহযোগিতা পাওয়ার প্রস্তাব আনন্দের। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো আলোচনা সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ফারুক খান আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত নানা ব্যবস্থার ফলে ইতোমধ্যে দেশের অভ্যন্তরীণ পর্যটকের সংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। বিদেশি পর্যটক আকর্ষণের জন্য বিশেষ পর্যটন অঞ্চল নির্মাণ, ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোকে নিয়ে পর্যটন সার্কিট তৈরিসহ বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন সম্পন্ন হয়েছে। এবছরই এই মহা-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু হবে। এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কলকাতা থেকে আসা সাইক্লিস্টদের সঙ্গে পর্যটনমন্ত্রীর সাক্ষাৎ