বৈদেশিক-সম্পর্ক
পাকিস্তানের ইসলামাবাদে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত
পাকিস্তানের ইসলামাবাদের বাংলাদেশ হাইকমিশনে আজ জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস, ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল পৌনে ৯টায় ইসলামাবাদের ডিপ্লোমেটিক এনক্লেভে নবনির্মিত বাংলাদেশ চ্যান্সেরি কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
এ সময় মিশনের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্য ও স্থানীয় পাকিস্তানি নাগরিকসহ চার শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
পরে দূতালয়ের সম্মেলনকক্ষে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে উপজীব্য করে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
পরে মিশনের কর্মকর্তা ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা আলোচনায় অংশ নেন। আলোচকগণ জুলাই পুনর্জাগরণে ছাত্র-জনতার সাহসী ভূমিকার স্মৃতিচারণ করেন। আলোচকরা বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানান।
পড়ুন: জুলাই ঘোষণাপত্র: চব্বিশের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানকে ‘রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে’
হাইকমিশনার রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানকে বৈষম্যমুক্ত করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সুসংহত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
আলোচনা শেষে ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে শীদ ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
হাইকমিশনার অতিথিদের সাথে নিয়ে দূতালয়ে স্থাপিত আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে ঘুরে দেখেন।
১৩২ দিন আগে
হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে এখনো ভারতের ইতিবাচক সাড়া মেলেনি: তৌহিদ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করার জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ করলেও এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে নতুন করে বলার মতো কিছু নেই। শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে ভারতকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। এখনও ভারতের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখনও নয়া দিল্লির জবাবের অপেক্ষায় আছে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়ে গেছে। কেউ আসুক বা না আসুক, বিচার চলবে।
পড়ুন: পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রীর সফরে ১৯৭১ সালের বিষয় তুলবে ঢাকা: তৌহিদ হোসেন
আন্তর্জাতিক সহায়তা নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার প্রয়োজন মনে করলে এমন সহায়তা চাইতে পারে। তবে এখনই আমি এর প্রয়োজনীয়তা দেখছি না।
তিনি জানান, গত বছর ডিসেম্বর মাসে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়ে ভারতকে কূটনৈতিক বার্তা (নোট ভারবালে) পাঠানো হয়েছিল। এতে প্রয়োজনীয় কিছু দলিলপত্রও সংযুক্ত করা হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের চাপে দেশ থেকে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
গত মাসেও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছিলেন, সরকারের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেষ্টার বিষয়টি অব্যাহত থাকবে।
১৩৩ দিন আগে
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রীর সফরে ১৯৭১ সালের বিষয় তুলবে ঢাকা: তৌহিদ হোসেন
বাংলাদেশে আগামী ২৩ আগস্ট সফর করবেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী। তাকে স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ প্রস্তত এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো ঢাকা আলোচনার টেবিলে তুলে ধরবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
সোমবার (৪ আগস্ট) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
পাকিস্তানের কাছ থেকে জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়ার এবং যথাযথ ক্ষতিপূরণের বিষয়গুলো বাংলাদেশ উত্থাপন করবে কিনা—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিটি বিষয়ই আলোচনার টেবিলে থাকবে।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘বাস্তবসম্মত উপায়ে’ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, চলতি মাসের শেষের দিকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের নির্ধারিত সফরের সময় সবকিছু আলোচনায় থাকবে।
চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের আলোচনায় পাকিস্তানের সঙ্গে ঐতিহাসিক অমীমাংসিত বিষয়গুলো উত্থাপন করে বাংলাদেশ। এর মধ্যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী বাংলাদেশে যে নৃশংসতা চালিয়েছে—তার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়া এবং পাকিস্তানের কাছ থেকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি আদায়ের বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের দৃঢ় ভিত্তি তৈরি করতে এই বিষয়গুলোর সমাধান করা প্রয়োজন, বলেছেন তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন।
এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারত কীভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবে—তা বাংলাদেশ নির্ধারণ করে না এবং একইভাবে ভারতও কীভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবে—তা নির্ধারণ করে না।
পড়ুন: ২৩ আগস্ট ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী
হোসেন বলেন, তারা সম্পর্কের একটি দিক অন্য দিকে আটকে যেতে দেখতে চায় না।
তিনি বলেন, ১৫ বছর পর ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়ায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই বিষয়গুলোতে জড়িত থাকার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে সমন্বয় জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ২৩ আগস্ট ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।
অন্যান্য ব্যস্ততার পাশাপাশি তিনি ২৪ আগস্ট পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। এর আগে গত এপ্রিলের তার পূর্ব নির্ধারিত বাংলাদেশ সফর স্থগিত করা হয়।
ভারত-শাসিত কাশ্মীরে এক প্রাণঘাতী হামলার পর পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার কারণে সফরটি স্থগিত করা হয়েছিল।
সে সময় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ‘অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কারণে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২৫ সালের ২৭-২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করতে পারছেন না।’
পরবর্তীতে, উভয় পক্ষ পারস্পরিক পরামর্শের মাধ্যমে নতুন তারিখ চূড়ান্ত করে।
গত সপ্তাহে জুলাই মাসে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন এবং ফিলিস্তিনে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ফিলিস্তিনি জনগণ এবং তাদের ন্যায্য দাবির প্রতি নিজেদের অটল সংহতি পুনর্ব্যক্ত করে।
পড়ুন: হাসিনা ও তার দোসরদের অপরাধ পাকিস্তানি বাহিনীকে হার মানিয়েছে: আইন উপদেষ্টা
জাতিসংঘে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফাঁকে ইসহাক দার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই বার্তাটি জানানো হয়। ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর এটি ছিল তাদের চতুর্থ বৈঠক।
ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশন জানিয়েছে, তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পর্যালোচনা করে এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। পাশাপাশি সংযোগ এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির উপায় অনুসন্ধান করে।
উভয় পক্ষ অদূর ভবিষ্যতে উচ্চ পর্যায়ের সফর করতে সম্মত হয়েছে।
১৩৩ দিন আগে
২৩ আগস্ট ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার আগামী ২৩ আগস্ট ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। তিনি এ সময় বাংলাদেশের সঙ্গে সমন্বয় জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২৪ আগস্ট তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন এবং অন্যান্য কার্যক্রমেও অংশ নেবেন। সোমবার (৪ আগস্ট) এ তথ্য বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।
এর আগে, এ বছরের এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের এই সফর স্থগিত হয়। পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে প্রাণহানির এক ভয়াবহ ঘটনার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় সফরটি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
সেদিন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ‘অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কারণে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২৫ সালের ২৭-২৮ এপ্রিল বাংলাদেশের সফর করতে পারছেন না।’
পরবর্তীতে দুই পক্ষ পরস্পরের পরামর্শে নতুন তারিখ চূড়ান্ত করে।
২০২৫ সালের ১৭ এপ্রিল পাকিস্তানের কাছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর করা বর্বরতার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা এবং বকেয়া আর্থিক দাবিসহ ঐতিহাসিক অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো উত্থাপন করে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সেসময়ের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সম্পর্কের দৃঢ় ভিত্তি গড়ার জন্য এসব বিষয় সমাধান হওয়া প্রয়োজন।’
বাংলাদেশ মনে করছে, ওই বিষয়গুলো আলোচনায় থাকার জন্য পাকিস্তান ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, যদিও ঢাকা-ইসলামাবাদ মধ্যকার কথাবার্তা ১৫ বছর পর শুরু হয়েছে।
গত জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন ও মানবিক সংকটের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামের প্রতি তাদের অটুট সংহতি পুনর্ব্যক্ত করে।
১৩৩ দিন আগে
ইসলামাবাদে ‘জুলাই বিয়ন্ড বর্ডার’ শীর্ষক আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন
পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ‘জুলাই বিয়ন্ড বর্ডার’ শীর্ষক আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) জুলাই যোদ্ধাদের স্মরণে আয়োজিত ১ থেকে ৫ আগস্ট ২০২৫ পাঁচ দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান।
এ উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণ ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে সুসজ্জিত করা হয়। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদ এবং ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানকে উপজীব্য করে নির্মিত পোস্টার ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এর পর মিশনের কর্মকর্তারা জুলাই-আগস্ট পুনর্জাগরণে ছাত্র-জনতার ভূমিকার স্মৃতিচারণ করে আলোচনা করেন। বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তারা।
২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুথান বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করার এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন হাইকমিশনার। বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত, সুখী, সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গঠনে সকলকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার অনুরোধ করেন তিনি।
আলোচনা শেষে ২৪ এর জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশিসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।
১৩৫ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি সাপেক্ষে চুক্তির তথ্য প্রকাশ করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পর দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের পর সম্মতি সাপেক্ষে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের তথ্য অধিকার (তথ্য অধিকার আইন-আরটিআই) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতির ভিত্তিতে আমরা অবশ্যই চুক্তিটি প্রকাশ করব।’ চুক্তি সই হওয়ার পরে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে, বলেন তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, চুক্তির বিষয়টি ফাঁস হওয়া কিছুটা দুর্ভাগ্যজনক। ‘আপনিও দেখেছেন। আসলে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কিছুই নেই।’
শনিবার (২ আগস্ট) ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে মন্ত্রী (প্রেস) গোলাম মোর্তোজার সঙ্গে কথোপকথনের সময় তিনি এই মন্তব্য করেন। গোলাম মোর্তোজা নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজ গণমাধ্যমের জন্য এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, তারা স্পষ্টতই সেই বিষয়গুলো থেকে বেরিয়ে এসেছেন, যা পরোক্ষভাবে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যেতে পারে এবং মূলত তারা বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করে।
তিনি বলেন, যদি তারা বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়ন করতে চায়—তাহলে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। ‘একই সঙ্গে, এ বিষয়ে আত্মতুষ্টিরও কোনো সুযোগ নেই,’ বলেন উপদেষ্টা।
পড়ুন: শুল্ক নিয়ে আলোচনায় সোমবার যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা
তিনি আরও বলেন, ‘এর সাফল্য বা ব্যর্থতা আমাদের সক্ষমতা এবং প্রতিযোগিতার উপর নির্ভর করবে। এর সুফল পেতে হলে আমাদের সক্ষমতা এবং প্রতিযোগিতা বাড়াতে হবে। আমি শুনেছি, আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। আমি এতে শতভাগ একমত। কোনো অবস্থাতেই আমাদের আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার বিষয়ে জানতে চাইলে বশির বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় বিষয়টি মোটেও উত্থাপন করেনি। ‘এই বিষয়টি একতরফা। বোয়িং গত বছর ১২টি বিমান তৈরি করেছিল। তাই এই চুক্তি অনুসারে, তারা ২০৩৭ সালে প্রথম বিমান সরবরাহ করতে সক্ষম হতে পারে।’
কৃষি পণ্যের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী ছিল। বাংলাদেশ দেড় থেকে দুই হাজার কোটি ডলার মূল্যের খাদ্যপণ্য আমদানি করে এবং যুক্তরাষ্ট্রও কৃষিপণ্যের একটি বৃহৎ উৎপাদক।
বাংলাদেশ মূলত জ্বালানি ও কৃষিপণ্যের ভিত্তিতে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর কথা বলেছে। যে পণ্যগুলো বাংলাদেশকে ইতোমধ্যেই আমদানি করতে হচ্ছে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ৬০০ কোটি ডলার। তুলা, সয়াবিন, ভুট্টা এবং গমজাত পণ্য আমদানি বাড়িয়ে বাংলাদেশ ২০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা করতে পারে।
তিনি বলেন, এই পদ্ধতি বাংলাদেশকে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে উল্লেখযোগ্যভাবে সাহায্য করবে। ‘বোয়িং বিমান খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়,’ উল্লেখ করে বশির বলেন, ‘আপনি প্রতিদিন এটি(বোয়িং) কিনবেন না, তবে আপনাকে প্রতিদিন সয়াবিন কিনতে হবে।’
উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিমানের পরিচালনা ক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অতিরিক্ত ১ কোটি যাত্রী পরিবহনের সম্ভাবনা রয়েছে। ২৫টি বিমান খুব বেশি নয়, বলেন তিনি।
পড়ুন: দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি সম্পূর্ণ অবান্তর: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের উপর ৩৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে পারস্পরিক শুল্ক কমানোর বিনিময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো গোপন চুক্তির জল্পনা-কল্পনা উড়িয়ে দেন। বলেন, পুরো আলোচনায় জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের নিজের দেশের স্বার্থকে উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা যা কিছু করেছি, আমরা আমাদের দেশকে অগ্রাধিকার দিয়ে করেছি—যেমন আমেরিকা তার জাতীয় নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। ‘তারা এমন কিছু করবে না—যা তাদের নিজেদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়।’
১৩৫ দিন আগে
১৭ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠালো বিএসএফ
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে ১৭ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ।
শুক্রবার সকালে (১ আগস্ট) চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) সঙ্গে ভারতের ১৬১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে শূন্য রেখায় মেইন পিলার ১০৫ এর কাছে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে হস্তান্তর প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়।
বিজিবির মুজিবনগর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার তপস কুমার বৈঠকে নেতৃত্ব দেন, আর বিএসএফের পক্ষে হ্নাদায়পুর ক্যাম্পের ইনস্পেক্টর ধর্মেন্দ্র দাহ অংশ নেন।
ফেরত আসা ১৭ জনের মধ্যে ৮ জন পুরুষ, ৫ জন নারী ও ৪ জন শিশু রয়েছে। তারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতের ভেতরে প্রবেশ করেছিল বলে জানা গেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সবাই স্বীকার করেছে, তাদের কারোরই ভারতে প্রবেশের উপযুক্ত কাগজপত্র ছিল না।
দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এসব বাংলাদেশিকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
১৩৬ দিন আগে
শুল্ক হ্রাসে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচন
বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যে পাল্টা শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে তারা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হলেও এখনই একটি কার্যকর, বৈচিত্র্যময়, প্রতিযোগিতামূলক ও সহনশীল বাণিজ্য কৌশল নেওয়া জরুরি।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘ভবিষ্যতের দিকে তাকালে দেখা যায়, প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখতে এবং স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও সরকারের সক্রিয় উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বর্তমানে ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করা রুবেল বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি ও স্থিতিশীলতা নিয়ে যথেষ্ট ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে দেশ সামনে এগিয়ে যাওয়ার ভালো সম্ভাবনাও রয়েছে।’
অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস এই চুক্তিকে একটি ‘সুস্পষ্ট কূটনৈতিক বিজয়’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘আজকের সাফল্য প্রমাণ করে বাংলাদেশ কতটা প্রতিকূলতার মধ্যেও এগিয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা ও অগ্রগতিতে অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা দেখিয়েছে।’
তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি থেকে আলোচকরা নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন এবং শুল্ক, অশুল্ক ও জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক জটিল আলোচনার মধ্য দিয়ে সফলভাবে পথ অতিক্রম করেছেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলমের মাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে আমাদের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অক্ষুণ্ন থাকল। সেই সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা বাজারে প্রবেশাধিকার আরও বাড়ল এবং আমাদের জাতীয় স্বার্থও সুরক্ষিত হলো।
এই অর্জন শুধু বাংলাদেশের বৈশ্বিক অবস্থানকেই শক্তিশালী করেনি বরং আরও বেশি সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে, যা ভবিষ্যতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি ও স্থায়ী সমৃদ্ধির পথ তৈরি করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি
বাণিজ্যিক গতিশীলতায় এটিকে ‘দারুণ অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করে মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, বাংলাদেশ প্রতিযোগী দেশ পাকিস্তান, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পারস্পরিক শুল্কহার ২০ শতাংশে নির্ধারণ করেছে, যা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে দেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে।
তিনি বলেন, ভারতের ২৫ শতাংশ ও চীনের তুলনামূলক উচ্চ শুল্কহারের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের এই অবস্থান বাণিজ্য পরিবেশ অনুকূল করে তুলতে পারে এবং চীনের কিছু বাজারও বাংলাদেশে সরতে পারে।
রুবেল আরও বলেন, খুচরা দামে সম্ভাব্য বাড়তির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে স্বল্পমেয়াদে বিক্রয়ে কিছু প্রভাব পড়তে পারে, তবে অতীতের দৃঢ়তা ও সহনশীলতা ইঙ্গিত দেয় যে, বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদে সফলতার জন্য ভালোভাবেই প্রস্তুত।
খুচরা সাময়িক বাড়তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রিতে স্বল্পমেয়াদে কিছু প্রভাব পড়লেও, অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে যে বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদে সাফল্যের জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, কোভিড-পরবর্তী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ যে দৃঢ়তা ও অটলতা দেখিয়েছে, তা প্রশংসনীয়।‘যদিও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনের কারণে স্বল্পমেয়াদে প্রবৃদ্ধির গতি কিছুটা ওঠানামা করতে পারে, বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান ও অতীত দক্ষতা ভবিষ্যতে স্থায়ী অগ্রগতির ইঙ্গিত দেয়,’ বলেন রুবেল।
একটি সুযোগ, একটি সতর্কবার্তা
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, ‘এটি যেমন একটি সুযোগ, তেমনি একটি সতর্কতাও। বাংলাদেশকে এখনই একটি বৈচিত্র্যময়, প্রতিযোগিতামূলক এবং সহনশীল বাণিজ্য কৌশল গড়ে তুলতে হবে।’
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের ওপর পাল্টা শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করাকে দেশের রপ্তানি খাতের জন্য একটি ইতিবাচক ও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
তিনি বলেন, ‘এই হ্রাস মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক পাল্টা শুল্ক কাঠামোর পুনর্বিন্যাসের অংশ, যা তাদের অনেক বাণিজ্য অংশীদার দেশেই প্রযোজ্য হচ্ছে।’
উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, শ্রীলঙ্কার ওপর শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ এবং পাকিস্তানের ২৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৯ শতাংশ করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর মধ্যে ভিয়েতনাম ২০ শতাংশ ও ভারতের শুল্ক হার ২৫ শতাংশে রয়েছে।
পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সুস্পষ্ট কূটনৈতিক বিজয়: প্রধান উপদেষ্টা
এই প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের নতুন শুল্কহার এখন প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে তুলনামূলক সামান্তরালে এসেছে, যা রপ্তানি বিশেষত তৈরি পোশাক খাতে বাণিজ্য ঝুঁকি কমিয়ে আনবে এবং বড় ধরনের অস্থিরতার সম্ভাবনাও হ্রাস করবে।
তবে বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতিতে একটি উল্লেখযোগ্য অনিশ্চয়তা এখনও রয়ে গেছে—চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কহার এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
বিশ্ব উৎপাদনে চীনের প্রধান ভূমিকা এবং বেশ কিছু রপ্তানি খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের প্রতিযোগিতামূলক সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে, চীনের ওপর শুল্ক নির্ধারণ সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রবাহ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সেলিম রায়হান বলেন, ‘যদি চীনের ওপর উল্লেখযোগ্য হারে শুল্ক আরোপ করা হয়, তাহলে—বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জন্য চাহিদা স্থানান্তরের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। বিপরীতে, চীনের জন্য অনুকূল হার নির্ধারিত হলে প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হতে পারে।’
তাই, আগামী দিনে বৈশ্বিক বাণিজ্যের ভারসাম্য কোন দিকে ঝুঁকবে—তা নির্ধারণে চীনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের চূড়ান্ত শুল্ক শর্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের কৌশলগত বিজয়
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যে পাল্টা শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার সিদ্ধান্তকে অন্তর্বর্তী সরকারের কূটনৈতিক কৌশলের ‘একটি বড় কৌশলগত বিজয়’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় কর্মরত সাবেক মার্কিন কূটনীতিক জন ড্যানিলোভিজ।
তিনি বলেন, ‘হোয়াইট হাউসের ঘোষণায় স্পষ্ট যে, এই আলোচনার কৃতিত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিগত অবস্থান ও কৌশলগত সক্ষমতারই প্রতিফলন।’
তিনি আরও বলেন, চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বিবরণ সামনে আসার বাকি থাকলেও এটি উভয় দেশের জন্যই একটি ইতিবাচক অর্জন।
পড়ুন: আরও ৬৯ দেশের ওপর নতুন হারে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কারোপ
গত চার মাস ধরে অন্তর্বর্তী সরকার এবং প্রধান আলোচক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান নানা দিক থেকে প্রবল চাপের মুখে থেকেও ধারাবাহিক অগ্রগতি ধরে রেখেছেন বলেও মন্তব্য করেন ড্যানিলোভিজ।
‘আলোচনার ফলাফল ইতিবাচক হওয়ায় এখন সমালোচকদের নিজেদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে,’ বলেন ঢাকায় দায়িত্ব পালন করা এই সাবেক কূটনীতিক।
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই সনদে অগ্রগতি, জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা এবং যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক বিষয়ে ইতিবাচক খবর—সব মিলিয়ে এটি বাংলাদেশের জন্য একটি ভালো সপ্তাহ।’
এ বিষয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ মূল্য স্থিতিশীলতা থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফল শুল্ক আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন প্রমাণ করেছেন, তিনি দায়িত্ব পালনে দৃঢ় এবং কার্যকর।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা তার প্রতি সন্দেহ পোষণ করেছিলেন, এই অর্জনের পর তাদের হতাশই হতে হবে।’
আমরা সতর্কতার সঙ্গে আলোচনা করেছি
বাংলাদেশের প্রধান আলোচক ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খালিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা দায়িত্বশীলভাবে আলোচনা করেছি যাতে আমাদের অঙ্গীকারগুলো জাতীয় স্বার্থ ও সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে। আমাদের পোশাক শিল্পকে রক্ষা ছিল সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষিপণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে সহায়তা করবে এবং মার্কিন কৃষিভিত্তিক রাজ্যগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল আমাদের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানই ধরে রাখিনি, বরং বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা বাজারে প্রবেশের নতুন সুযোগও তৈরি করেছি।’
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের অংশ হিসেবে সরকার বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি বিমান কেনার কার্যাদেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম ও সয়াবিন আমদানি বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত ২৭ জুলাই বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বোয়িংয়ের ২৫টি বিমান কেনার আদেশ দেওয়া হয়েছে এবং পাশাপাশি গম ও সয়াবিন আমদানিও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী কয়েক বছরে বিমানের প্রয়োজন মেটাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারতের অর্ডার ১০০, ভিয়েতনামেরও ১০০ এবং ইন্দোনেশিয়ার ৫০। আমরা তুলনামূলকভাবে কম কিনলেও, আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী তা যথেষ্ট।’
পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যে শুল্ক কমানো ‘সন্তোষজনক’: আমীর খসরু
এ দিকে বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন শুল্ক কার্যকর করার কথা জানালেও তা সাত দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এপির মতে, যদিও এই পরিবর্তন এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি না করা দেশগুলোর জন্য সম্ভাব্য শুভ সংবাদ হলেও, এতে কখন-কি ঘটবে তা নিয়ে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন এক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
১৩৬ দিন আগে
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগে প্রতারণার বিষয়ে হাইকমিশনের সতর্কবার্তা
মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশে বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের ব্যাপক প্রতারণার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে দেশটিতে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের এসব অসাধু চক্রের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন।
শুক্রবার (১ আগস্ট) কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশনে থেকে এ বিষয়ে এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশে কর্মী পাঠানোর কথা বলে সেখানে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের কাছ থেকে পাসপোর্ট ও নগদ টাকা সংগ্রহ করছে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র। বিষয়টি বাংলাদেশ হাইকমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
হাইকমিশন জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ার সাবাহ প্রদেশে কর্মী নেওয়ার জন্য বর্তমানে মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের কোনো চুক্তি বা সমঝোতা নেই। এ ছাড়া, সাবাহ প্রদেশ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগর কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: ৯৬ জন বাংলাদেশিসহ ১৩১ জনকে মালয়েশিয়ায় প্রবেশে বাধা
তাই সাবাহ প্রদেশ ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে কর্মী নেওয়ার বিষয়ে কোনো চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের প্রতারকচক্রের মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হতে এবং এদের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের অনুমতি দেওয়া হলে সেটি কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সবাইকে অবহিত করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
১৩৬ দিন আগে
বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির সঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজমুল হক নান্নুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময়ের ইতিহাস পর্যালোচনা করা হয়।
দুই দেশের জনগণের মধ্যে বিনিময় আরও জোরদার করার মাধ্যমে উভয় দেশের মানুষের জন্য বেশি সুফল নিশ্চিত করার বিষয়েও তারা মতবিনিময় করেন।
সাক্ষাতকালে চীনা দূতাবাসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা লি শাওপেং উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ‘সুশৃঙ্খল, সফল ও অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচন চায় চীন
১৩৬ দিন আগে