বৈদেশিক-সম্পর্ক
আইনজীবী ফাওজিয়া করিমের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজকে ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কারে ভূষিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন ৪ মার্চ (মার্কিন সময়) হোয়াইট হাউসে বার্ষিক আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
অন্য পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- বেনাফশা ইয়াকুবি (আফগানিস্তান), ভোলহা হারবুনোভা (বেলারুশ), আজনা জুসিচ (বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা), মিনৎজু উইন (মিয়ানমার), মার্থা বিয়াত্রিজ রোকে কাবেলো (কিউবা), ফাতিমা কোরোজো (ইকুয়েডর), ফাতৌ বালদেহ (গাম্বিয়া), ফারিবা বালুচ (ইরান), রিনা গনোই (জাপান), রাভা এল হায়মার (মরক্কো) এবং আকুয়াতে আতুহাইরে (উগান্ডা)।
আরও পড়ুন: এনায়েতউল্লাহ খানকে 'ন্যাশনাল অর্ডার ফর মেরিট' পদকে ভূষিত করেছে রোমানিয়া
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন বলেন, বৃহত্তর স্থিতিশীলতা, বৃহত্তর সমতা ও বৃহত্তর সুযোগ প্রতিষ্ঠায় কাজ করা প্রতিটি সাহসী নারীর পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, ‘নারী ও মেয়েদের পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছাতে যেসব বাধা বাধা সৃষ্টি করে, সেগুলো দূর করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। এই কারণেই নারী ও মেয়েদের অধিকারকে তাদের সমস্ত বৈচিত্র্যের মধ্যে বিজয়ী করা আমাদের পররাষ্ট্র নীতির একটি কেন্দ্রীয় অংশ।’
তিনি বলেন, গত তিন বছরে তারা বিশ্বজুড়ে নারী ও মেয়েদের সহায়তার জন্য সুনির্দিষ্ট কৌশল, নীতি এবং কর্মসূচি তুলে ধরেছেন।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে, ফাওযিয়া তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকারের জন্য লড়াই করে আসছেন।
তিনি বর্তমানে তার নিজস্ব আইন চেম্বারের প্রধান এবং ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এফএলএডি) এর চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী সম্মানসূচক “গ্লোবাল এম্বাসেডর ফর ডায়াবিটিস”-এর উপাধিতে ভূষিত
তার নেতৃত্বে এফএলএডি একটি রায়ে জয়লাভ করেছিল। রায়টিতে বলা হয়- ২০১৫ সালের গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষার জন্য অপর্যাপ্ত ছিল।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, ফাওজিয়া ব্যক্তিগতভাবে পোশাক শ্রমিকদের পক্ষে তাদের নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ৩ হাজার মামলা দায়ের করেছেন এবং বাংলাদেশ মুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশন (বিআইজিইউএফ) এবং গৃহকর্মী নির্দেশিকা প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছেন।
তিনি এর আগে ২০০৭-২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং অ্যাসিড সারভাইভারস ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি তিনি।
২০২৩ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন যৌন হয়রানির মামলাগুলো পর্যালোচনা এবং আদালতে সুপারিশ করার জন্য ফাওজিয়াকে প্রশাসনের পাঁচ সদস্যের কমিটিতে নির্বাচিত করে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের চ্যানেল এসের বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার পেলেন সাঈদা মুনা তাসনীম
মিয়ানমার সংঘাত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কঠিন করে তুলেছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের কাজ এখন খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, 'রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে এটি এখন খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।’
সোমবার সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অধ্যাপক পায়াম আখাভান তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
আখাভান আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) বাংলাদেশের নিযুক্ত আইনজীবী।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের জন্য বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার সীমান্তে আগের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের নাগরিকদের অনুপ্রবেশের কারণে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণ এখন সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে। তারা আমাদের পরিবেশের ক্ষতি করছে।’
তিনি বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা যাতে মর্যাদার সঙ্গে নিজ দেশে ফিরে যায় তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশের ভূখণ্ড কোনো ধরনের বিদ্রোহের জন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এই নীতিতে বিশ্বাস করে এবং ভবিষ্যতে কাউকে তা করতে দেবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা যুবকদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখার জন্য সরকার ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করেছে এবং এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার রোহিঙ্গাকে সেখানে স্থানান্তর করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, কিছু রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে অস্ত্র, নারী ও মাদক পাচারের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ যুদ্ধের বিপক্ষে, রক্ষা করা হবে সার্বভৌমত্ব: প্রধানমন্ত্রী
ড. পায়াম আখাভান প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশ এখন জলবায়ু ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে বিশ্ব নেতায় পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারো নির্ভরশীল না হয়ে, বাংলাদেশ কপ-১৫ এর পর জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে।
তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর সুরক্ষায় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলাসহ বাংলাদেশ অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
'জলবায়ু ব্যবস্থার সুরক্ষা নিশ্চিতে' রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতার বিষয়ে পরামর্শমূলক মতামতের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) বাংলাদেশের আইনি উপস্থাপনের প্রস্তুতিতে সহায়তা করায় অধ্যাপক পায়াম আখাভানকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে সংকট অবসানের পথ খুঁজতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে চায় বাংলাদেশ: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ ও ভারতের একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে।
সোমবার মন্ত্রীর দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে সাক্ষাতে নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমরা প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করতে চাই। নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়ায় ভালো অগ্রগতি হয়েছে।’
নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ আমদানির জন্য আগামী মাসে একটি চুক্তি সই হতে পারে বলেও তিনি ভারতীয় হাইকমিশনারকে জানান।
তিনি বলেন, ভারতীয় কোম্পানি জিএমআরের মাধ্যমে নেপাল থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি আমদানির কাজও এগিয়ে চলছে। মেঘালয়, ত্রিপুরা বা আসাম থেকে আমদানি ও রপ্তানি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
তিনি বলেন, এইচ-এনার্জির মাধ্যমে এলএনজি ও গ্যাস আমদানির প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত।
তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে চাই। আমরা ভারতের সহযোগিতা চাই।’
নসরুল হামিদ বলেন, নেপাল থেকে বাংলাদেশে ডেডিকেটেড লাইন হলে বিদ্যুৎ বাণিজ্যে গতি আসবে। এতে লাভবান হবে ভারতও।
তিনি আরও বলেন, সহযোগিতার ক্ষেত্র বাড়াতে প্রতি মাসে উভয় পক্ষের স্টেকহোল্ডারদের বৈঠক করা জরুরি। জৈব জ্বালানি নিয়েও আমরা একযোগে কাজ করে যেতে পারি।
তিনি বলেন, এলপিজির চাহিদা বাড়ছে। এসব খাতে বাংলাদেশি বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা ভারতে কীভাবে কাজ করতে পারে, সে বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতে হবে।
হাইকমিশনার বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সহযোগিতা বাড়ছে।
নেপাল থেকে বাংলাদেশে জলবিদ্যুৎ আমদানির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতও নেপাল থেকে প্রায় ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে।
হাই ভোল্টেজ সঞ্চালন লাইন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বিদ্যুৎ আমদানি-রপ্তানি, আর-এলএনজি, জ্বালানি সক্ষমতা বৃদ্ধি, জ্বালানি দক্ষতা এবং ভবিষ্যৎ আঞ্চলিক সংযোগ বিষয়ে আলোচনা হয়।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে চীনকে বাংলাদেশের আহ্বান
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে চীনের অংশগ্রহণ বাড়ানোর বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠকে আগামী পাঁচ বছরে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সোমবার প্রতিমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে গভীর সহযোগিতা ও পারস্পরিক স্বার্থ নিয়ে আলোচনা হয়।
হামিদ বলেন, ‘আমরা চীনের কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রত্যাশা করছি। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আগামী পাঁচ বছরে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
চীনের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ইয়াওকে স্বাগত জানান নসরুল হামিদ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘চীনা কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।’
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ: নসরুল হামিদ
তিনি বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো বের করতে একটি বিশেষ দল গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে একটি বিশেষ দল গঠন করা যেতে পারে।’
উষ্ণ অভ্যর্থনা এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাষ্ট্রদূত ইয়াও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য চীনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। ইয়াও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সহযোগিতা বাড়ছে।
তিনি বলেন, সহযোগিতার ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করতে উভয় দেশকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে।
আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ আরও সমৃদ্ধ, শক্তিশালী ও উন্নত দেশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন চীনা রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে তারা চীনা অর্থায়নে প্রকল্প, লিথিয়াম ব্যাটারি কারখানা স্থাপন, সেমি-কন্ডাক্টর কারখানা, বৈদ্যুতিক যানবাহন, ব্যাটারি স্টোরেজ সিস্টেম, স্মার্ট মিটার, সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, গ্যাস উত্তোলনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্দেশিকা প্রয়োগে জ্বালানির দাম কমতে পারে: নসরুল হামিদ
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুবকের তথ্য চেয়ে ২০ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা এফবিআইয়ের
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুহেল চৌধুরীকে ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)।
নিউ ইয়র্কের কুইন্সের হোলিস, কুইন্স ভিলেজ এবং জ্যামাইকা অঞ্চলের সঙ্গে রুহেলের সম্পর্ক রয়েছে। তিনি নিজের ব্যবহৃত গাড়ি পরিবহন ও বিক্রি করতে পারেন বলে জানিয়েছে এফবিআই।
রুহেল চৌধুরী ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ এবং ২০২৩ সালের ১১ মে নিউইয়র্কের কুইন্সে দুটি অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত।
আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে সশস্ত্র বিক্ষোভ সম্পর্কে সতর্ক করল এফবিআই
তিনি এবং অন্যরা ভুক্তভোগীদের রাস্তা থেকে অপহরণ করেছিলেন এবং তারপরে তাদের ছিনতাই, নির্যাতন এবং তাদেরকে মাদক সেবন করিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
একজন ভুক্তভোগীকে মুক্তিপণের জন্য আটক করা হয়েছিল এবং যৌন নির্যাতন করা হয়েছিল।
অপহরণের সময় রুহেল ভুক্তভোগীদের আটক করে কুইন্সের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত গাড়ি সরবরাহ ও চালিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
তিনি ভুক্তভোগীদের মারধর ও হুমকিও দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। রুহেলকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের পূর্বাঞ্চলীয় জেলা ব্রুকলিনর আদালতে অভিযুক্ত করা হয়। দুটি অপহরণ এবং অপহরণের ষড়যন্ত্রের জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পর ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে এফবিআই।
আরও পড়ুন: ফেডেক্স শুটারকে গত বছর জেরা করেছিল এফবিআই
ইসরায়েলি আগ্রাসন বিষয়ক ওআইসির বৈঠকে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অব্যাহত আগ্রাসন নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী ৫ মার্চ জেদ্দায় ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষদের বিশেষ বৈঠকে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সৌদি আরবের জেদ্দায় ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) জেনারেল সেক্রেটারিয়েটের সদর দপ্তরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, বৈঠকে যোগ দিতে তুরস্ক থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জেদ্দা যাবেন।
১-৩ মার্চ তুরস্কে অনুষ্ঠিত আনাতোলিয়া কূটনীতি ফোরামে অংশগ্রহণকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক সংলাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বর্ণনা করেন।
ফোরামে হাছান মাহমুদ গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জাতিগত নিধনের জন্য ইসরাইলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।
ওআইসি সদর দপ্তর জানিয়েছে,ওআইসি মহাসচিব হিসেইন ব্রাহিম তাহা ওআইসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে সোমবার (৪ মার্চ) খসড়া এজেন্ডা এবং কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা ও গ্রহণ এবং খসড়া রেজুলেশনটি বিবেচনার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিলে জমা দেবেন।
গত বছরের নভেম্বরে সৌদি আরব রিয়াদে ওআইসি ও আরব রাষ্ট্রসমূহের লীগ যৌথভাবে আয়োজিত বিশেষ যৌথ আরব ও ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: ১৭ মার্চ ঢাকায় আসছেন আয়ারল্যান্ডের এন্টারপ্রাইজ, বাণিজ্য, কর্মসংস্থানমন্ত্রী সাইমন কোভেনি
সম্মেলনে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সফরের জন্য সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসন বন্ধে অব্যাহত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গত বছরের ১৮ অক্টোবর ওআইসির সদর দপ্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে একটি উন্মুক্ত নির্বাহী কমিটির বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাছান মাহমুদ গাজায় সহিংসতা ও নৃশংসতা বন্ধে পর্যাপ্ত বৈশ্বিক পদক্ষেপের অভাবের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘গাজায় যা ঘটছে তা স্রেফ মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। শুধু মানবতাবিরোধী অপরাধ নয়, জাতিগত নিধন চলছে।’ এই সংঘাতে ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাকায় বিমস্টেকের পাঁচ দিনব্যাপী ফ্যাকাল্টি এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম উদ্বোধন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা এই 'যুদ্ধ ও গণহত্যা' বন্ধে যথেষ্ট প্রচেষ্টা দেখছেন না এবং ইসরায়েল যুদ্ধের সমস্ত নিয়ম লঙ্ঘন করছে।
তুরস্কে অনুষ্ঠিত ফোরামে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন হাছান মাহমুদ। এসব নৃশংসতা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সমবেত বিশ্ব সম্প্রদায়কে ভূমিকা পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ভিডিও সাক্ষাৎকারে তাকে বলতে শোনা যায়, 'আমি মনে করি, গাজায় এসব নৃশংসতা, জাতিগত নিধন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধ করতে এবং ইসরায়েলকে থামাতে আমরা আমাদের ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ তুলতে পারি।’
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের পৃষ্ঠপোষকতায় ফোরামটির বৈঠক ৩ মার্চ শেষ হয়।
'অ্যাডভান্সিং ডিপ্লোম্যাসি ইন টাইমস অব টার্ময়েল’ শীর্ষক এবারের আয়োজনে রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারি কর্মকর্তা, কূটনীতিক, ব্যবসায়ী নেতা, শিক্ষাবিদ এবং বিভিন্ন খাতের প্রতিনিধিরা আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে হাছান মাহমুদের বৈঠক
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে হাছান মাহমুদের বৈঠক
তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তুরস্কের স্থানীয় সময় রবিবার আনতালিয়ায় কূটনৈতিক ফোরামের তৃতীয় দিনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এ সময় হাকান ফিদানকে এ প্রস্তাব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি কৃষক ও বিশেষজ্ঞরা তুরস্কে মৌসুমি চাষ করবেন এবং ফলনের পর বাংলাদেশে ফিরে যাবেন।’
তুরস্ক বিষয়টি পরীক্ষা করবে এবং আগামী জুলাই মাসে ঢাকায় পররাষ্ট্র দপ্তরের পরবর্তী পরামর্শের সময় এটি নিয়ে আলোচনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু অভিবাসী ও শরণার্থীদের সংজ্ঞা পরিবর্তন করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করা এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে তার দেশের অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস দেন ফিদান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধ করতে এবং আরব দেশগুলোর সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে তুরস্কের বৃহত্তর ভুমিকা কামনা করেন।
বৈঠকে উভয় নেতা আশা প্রকাশ করেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ শিগগিরই শেষ হবে এবং এইভাবে জ্বালানি, এলএনজি ও ফসলের দাম কমবে। যা এখন উভয় দেশের পাশাপাশি উন্নয়নশীল বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
তুর্কি হোপ স্কুল নিয়ে তুরস্ক উত্থাপিত বিষয়ের প্রতিক্রিয়ায় ড. হাছান মাহমুদ আশ্বস্ত করেন, বাংলাদেশের শিক্ষা ও আইন মন্ত্রণালয় উভয়ই শিগগিরই তুর্কি হোপ স্কুল ব্যবস্থাপনার বিষয়টি নিষ্পত্তি করবে।
আনতালিয়া ফোরামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ফেরত চিঠি হাকান ফিদানকে হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় নয়জন রাষ্ট্রপ্রধান এবং ৭০ জন পররাষ্ট্রবিষয়ক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর উপস্থিতিতে অত্যন্ত সফলভাবে আনতালিয়া কূটনৈতিক ফোরাম আয়োজনের জন্য তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান তিনি।
তুরস্কের স্বাধীনতার শতবর্ষ এবং বাংলাদেশ ও তুরস্কের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে হাকান ফিদানকে অভিনন্দন জানিয়ে ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তুরস্কের জাতির পিতা কামাল আতাতুর্কের সংগ্রাম থেকে শক্তিশালী অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন এবং দুই ভ্রাতৃপ্রতিম জাতির বন্ধুত্বের উষ্ণ বন্ধন প্রতিনিয়ত দৃঢ়তর হচ্ছে।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উপযুক্ত সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ইউরোপ শাখার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী এবং তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ড: জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
গাজায় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বন্ধে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
ঢাকায় বিমস্টেকের পাঁচ দিনব্যাপী ফ্যাকাল্টি এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম উদ্বোধন
বিমসটেকের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ফরেন সার্ভিস একাডেমির অংশগ্রহণে প্রথমবারের মতো পাঁচ দিনব্যাপী ফ্যাকাল্টিজ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম ঢাকায় শুরু হয়েছে।
রবিবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিমস্টেক সম্মেলনে যোগ দিতে নেপালে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রোগ্রামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন- ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস, বিমসটেক সচিবালয়ের পরিচালক মাহিশিনি কোলন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্ক ও বিমসটেক উইংয়ের মহাপরিচালক রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকার।
বিমসটেকের সাতটি দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির ১৩ জন ফ্যাকাল্টি এ প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছেন।
৩ থেকে ৭ মার্চ এই পাঁচ দিনব্যাপী প্রোগ্রামে বিমস্টেকের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ফরেন সার্ভিস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
২০২২ সালের মার্চে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সই হওয়া সমঝোতা স্মারকের আলোকে প্রথমবারের মতো এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজন করা হলো।
সমঝোতা স্মারকের আওতায় সদস্য দেশগুলোর ফরেন সার্ভিস একাডেমিগুলোর প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে দেশগুলোর কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে শর্ট কোর্স আয়োজনসহ সামগ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে দেশগুলো কাজ করবে।
আরও পড়ুন: বিমস্টেক সম্মেলন: ৫০ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পগুলোতে ঐক্যমত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের
বিমস্টেক সম্মেলন: ৫০ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পগুলোতে ঐক্যমত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের
১৭ মার্চ ঢাকায় আসছেন আয়ারল্যান্ডের এন্টারপ্রাইজ, বাণিজ্য, কর্মসংস্থানমন্ত্রী সাইমন কোভেনি
বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে জোরদারে একযোগে কাজ করার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নবনিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনসাল মাসুদ জামিল খান।
রবিবার ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ অত্যন্ত দ্রুত প্রবৃদ্ধির দেশ এবং আয়ারল্যান্ড উন্নত ও শিক্ষিত দেশ। উভয় পক্ষ একসঙ্গে খুব ভালো কাজ করতে পারে।’
তিনি বলেন, আয়ারল্যান্ডের এন্টারপ্রাইজ, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী সাইমন কোভেনি টিডির ১৭ মার্চ ঢাকায় আসার কথা রয়েছে এবং সম্পর্ক জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন।
আরও পড়ুন: মাসুদ জামিল খান আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনসাল নিযুক্ত
মাসুদ বলেন, ‘মন্ত্রী সাইমন বাংলাদেশে আসছেন বলে আমরা সম্মানিত। দিল্লিতে আমার রাষ্ট্রদূত (ভারতে নিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত কেভিন কেলি) এই বিষয়কে সমর্থন করেছেন। আমি মনে করি, এটি একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সফর।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সঙ্গে বৈঠক করবেন কোভেনি।
সফরকালে সেন্ট প্যাট্রিক দিবস, আয়ারল্যান্ডের জাতীয় দিবস এবং 'বাংলাদেশে আয়ারল্যান্ডের অনারারি কনস্যুলেট'র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন তিনি।
ঢাকায় অবস্থানকালে আয়ারল্যান্ডের মন্ত্রী বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড সম্পর্ক নিয়ে একটি সংলাপে অংশ নেবেন।
১৯৭২ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশকে আয়ারল্যান্ডের স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিরাজ করছে।
কসমস গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাসুদ বলেন, 'আয়ারল্যান্ড প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে কাউকে নিয়োগ দিয়েছে। সম্পর্ক উন্নয়নে উভয় পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত ও উচ্ছ্বসিত।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত ২৬ বছরে আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশের রপ্তানি বার্ষিক ১৬.৩ শতাংশ হারে বেড়েছে। রপ্তানির এ পরিমাণ ১৯৯৫ সালে ৬.৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২১ সালে ৩৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ‘সুতরাং, এটি বিশাল আকারের রপ্তানি বৃদ্ধি।’
মাসুদ বলেন, আয়ারল্যান্ডকে এখন ইউরোপের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি হাব হিসেবে দেখা হয়। এটি হাবস্পট অ্যান্ড ইনডিড সহ বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ইএমইএ সদর দপ্তরও।
তিনি বলেন, ‘আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশ থেকে আইটি সেক্টরে দক্ষ পেশাজীবী নিতে পারে। আয়ারল্যান্ডের সহায়তায় বাংলাদেশও হতে পারে আইটি হাব। বাংলাদেশে তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে এবং তারা অত্যন্ত প্রশিক্ষিত।’
আরও পড়ুন: গ্যালারি অন হুইলস: ইউনেস্কোর ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় রিকশা পেইন্টারদের কসমস ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনা
মাসুদ বলেন, দুই দেশই ওষুধ খাতে ভালো করছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে পোশাক রপ্তানি হচ্ছে এবং এটি প্রতি বছরই বাড়ছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা অবশ্যই বিষয়টি দেখতে পারি।’
তিনি বলেন, আয়ারল্যান্ড থেকে কনসেন্ট্রেটেড মিল্ক বাংলাদেশে রপ্তানি হচ্ছে।
মাসুদ আরও বলেন, ‘আমরা আয়ারল্যান্ড থেকে গরু আনতে পারি। একই সঙ্গে আমরা তাদের প্রজননের জন্যও এখানে আনতে পারি। আয়ারল্যান্ড থেকেও মল্ট এক্সট্রাক্ট ও স্ক্র্যাপ আয়রন বাংলাদেশে আনা হচ্ছে। এই ক্ষেত্রগুলোতে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করার উদ্যোগ নিতে পারি।’
তিনি বলেন, শিক্ষা খাতে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এবং দুই পক্ষ এখানে আয়ারল্যান্ডের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শাখা স্থাপনের বিষয়ে কাজ করতে পারে।
আয়ারল্যান্ডে কিছু শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আয়ারল্যান্ড পড়াশোনার জন্য একটি চমৎকার জায়গা।’
নিয়োগ নিয়ে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে মাসুদ বলেন, 'সম্পর্ক উন্নয়নে উভয় পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত ও উচ্ছ্বসিত।’
মাসুদ বলেন, ‘এটি চমৎকার অনুভূতি। বর্ণনা করা খুব কঠিন। অবশ্যই, এটি অত্যন্ত আনন্দের। আমি এটি অর্জনের চেষ্টা করেছি।’
তার বাবা রোমানিয়ার অনারারি কনসাল এনায়েতুল্লাহ খানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনিও সেই সংস্কৃতির মধ্যে বড় হয়েছেন।
এই দায়িত্ব পালনে সফলতার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'একটি দেশের অনারারি কনসাল হওয়ার ইচ্ছা আমার সবসময়ই ছিল; যাতে সেই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করতে পারি।’
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রদর্শনীর আয়োজন করছে গ্যালারি কসমস
বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ড: জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
ঢাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়া।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের কাছে পাঠানো শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘ঢাকার একটি বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে আমি গভীরভাবে শোকাহত।’
ইয়োকো কামিকাওয়া বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
তার বার্তায় নিহতদের জন্য প্রার্থনা এবং তাদের প্রিয়জনদের হারানোর জন্য শোকাহত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেইলি রোডে আগুনের ঘটনায় মোদির শোক
বেইলি রোড ট্র্যাজেডি: ভোলার দুই যুবকের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া