বৈদেশিক-সম্পর্ক
হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠদের বিচার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার: ফিনিশ প্রেসিডেন্টকে প্রধান উপদেষ্টা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠদের বিচার অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বুধবার ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনমান অনুসরণ করেই এই বিচার পরিচালিত হচ্ছে। বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও তিনি (হাসিনা) উসকানিমূলক ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী মন্তব্য করছেন। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা প্রত্যর্পণ চেয়েছি।’
বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, জাতিসংঘ সংস্কার, রোহিঙ্গা সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আসিয়ানভুক্তির প্রচেষ্টা, শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার এবং নেপাল-ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ পাওয়ার উদ্যোগসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
এ সময় অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘গত ১৪ মাসে আমরা (অন্তর্বর্তী সরকার) অভূতপূর্ব আন্তর্জাতিক সমর্থন পেয়েছি।’
তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে আমাদের জনগণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এখন তারা ফেব্রুয়ারির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।’
বাংলাদেশে বড় ধরনের রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার চলছে এবং রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই চার্টারে সই করবে বলে আশা করা হচ্ছে বলেও ফিনিশ প্রেসিডেন্টকে জানান তিনি।
৮১ দিন আগে
অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে প্রধান উপদেষ্টাকে পাকিস্তানে আমন্ত্রণ
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদরদপ্তরে এই বৈঠক অুনষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দুই দেশের বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৈঠকের শুরুতে পাকিস্তানে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক ইউনূস।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ইতালি সম্পর্ক জোরদারে প্রধান উপদেষ্টা-মেলোনি বৈঠক
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জানান, এই বন্যার প্রধান কারণ জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্যান্য বিষয়।
এর আগে, এ বছরের আগস্টে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান তাদের জনগণের পারস্পরিক স্বার্থে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।
সে সময় পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও গভীর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছিল বাংলাদেশ।
৮১ দিন আগে
বাংলাদেশ-ইতালি সম্পর্ক জোরদারে প্রধান উপদেষ্টা-মেলোনি বৈঠক
বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যকার ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে দুই দেশের সরকার। এরই অংশ হিসেবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ঢাকা সফরে আসতে পারেন বলে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ অক্টোবর) নিউইর্য়কে জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদের সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও প্রধানমন্ত্রী মেলোনি। বৈঠকে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানান, চলতি বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরে আসার আশা প্রকাশ করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে নিরাপদ অভিবাসনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: আগস্টে বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী
শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ মানবপাচারের ফাঁদে পড়ে ইতালিতে যায়। অনেক ক্ষেত্রেই সেটি এক ট্র্যাজেডিতে পরিণত হয়। বহু বাংলাদেশি ভূমধ্যসাগরে প্রাণ হারিয়েছেন। তাই কীভাবে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বিস্তারের গুরুত্ব তুলে ধরলে ইতালির প্রধানমন্ত্রী ‘ইতালি-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম’ করার প্রস্তাব দেন।
এর আগে, ২৩ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফর করেন মেলোনি। সফরে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং এবং প্যারাগুয়ের প্রেসিডেন্ট সান্তিয়াগো পেনা পালাসিওসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন এবং পরে সংবাদ ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।
এদিকে, চলতি বছরের মে মাসে নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসন, মানবপাচার প্রতিরোধ এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ পারস্পরিক আগ্রহের বিষয়গুলোতে সহযোগিতা জোরদারের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ও ইতালির সরকার।
এ ছাড়াও নিরাপত্তা কাঠামো শক্তিশালী করতে সক্ষমতা বৃদ্ধি, তথ্য ও গোয়েন্দা আদান-প্রদান এবং যৌথ প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে দুই দেশ।
গত ৫-৬ মে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসির বাংলাদেশ সফরের পর এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, আন্তঃদেশীয় সংগঠিত অপরাধ প্রতিরোধে সহযোগিতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি ‘যৌথ কমিটি’ গঠনের উদ্যোগ নেবে দুই দেশ।
৮১ দিন আগে
সৌদি গ্র্যান্ড মুফতির মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি ও সিনিয়র স্কলারস কাউন্সিলের প্রধান শেখ আব্দুলআজিজ আল-শেখের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টম্বর) সৌদির রাজধানী রিয়াদে বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শেখ আবদুল আজিজ।
শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শেখ আব্দুলআজিজ আল-শেখের ইন্তেকালে মুসলিম বিশ্ব এক মহান আলেম ও ইসলামী চিন্তার দিকনির্দেশক কণ্ঠস্বর হারালো।
আরও পড়ুন: বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
ইসলামের সেবায় তার আজীবনের নিবেদন ও অমূল্য জ্ঞানচর্চা গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সেইসঙ্গে ইসলামী বিশ্ব তার অনুপস্থিতি গভীরভাবে অনুভব করবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
শেখ আব্দুলআজিজ জেনারেল প্রেসিডেন্সি অব স্কলারলি রিসার্চ অ্যান্ড ইফতা এবং মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের সুপ্রিম কাউন্সিলের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তার পাণ্ডিত্য ও নেতৃত্ব বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ছিল।
তিনি ১৯৬১ সালে রিয়াদের ইমাম মোহাম্মদ বিন সৌদ ইসলামিক ইউনিভার্সিটির শরিয়াহ কলেজে উচ্চশিক্ষা শুরু করেন এবং ১৯৬৫ সালে আরবি ও ইসলামি শরিয়াহ বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
৮২ দিন আগে
বাংলাদেশে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
আগামী ফেব্রুয়ারিতে দেশের ইতিহাসের অন্যতম স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সুষ্ঠুতা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা উপস্থিত থাকবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ৮০তম সাধারণ পরিষদের সভার ফাঁকে একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে আলোচনাকালে এসব বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী, নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক, চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং উরুগুয়ের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন অধ্যাপক ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, সাধারণ পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রেস সচিব বলেন, তাদের সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং অস্ট্রেলিয়ায় ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশি প্রবাসী সম্প্রদায়ের প্রসঙ্গ উঠে আসে।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে অধ্যাপক ইউনুস ও তার সফরসঙ্গীদের নিরাপত্তা জোরদার
এ সময় তার নির্বাচনী এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের অবদানের আন্তরিক প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ। এমনকি কথা প্রসঙ্গে তিনি কয়েক বছর আগে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগদানের কথাও স্মরণ করেন।
পরে জাতিসংঘ মহাসচিবের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন অর্থায়নবিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমার সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। তাদের আলোচনায় বৈশ্বিক দক্ষিণে স্বাস্থ্যবীমার সম্প্রসারণের বিষয়টি বিশেষভাবে উঠে আসে।
এ ছাড়াও আর্থিক খাতে উদ্ভাবন, যেমন জীবন ও স্বাস্থ্যবীমা, দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় এবং পেনশন স্কিম প্রসারেও গুরুত্বারোপ করেন তারা। এ সময় আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিষয়েও বিশেষ জোর দেওয়া হয়।
ড. ইউনূস মাতৃস্বাস্থ্যের জন্য বিশেষায়িত ঋণ সুবিধার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। ডিজিটাল স্বাস্থ্য পরীক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রামীণ নারীদেরকে শীর্ষ চিকিৎসকদের সঙ্গে যুক্ত করা গেলে অসংখ্য প্রাণ রক্ষা সম্ভব বলেও প্রস্তাব দেন তিনি।
বৈঠকে বৈশ্বিক ওষুধশিল্পের পুনর্গঠনেরও আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সামাজিক ব্যবসা হিসেবে পরিচালনার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
বৈঠক শেষে নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অন্তর্বতী সরকারপ্রধান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে উভয়ের যৌথ অগ্রাধিকারের বিষয় ও সাম্প্রতিক বৈশ্বিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়।
দিনের শেষে উন্নয়নে ফ্যাশনের ভূমিকা বিষয়ক অনুষ্ঠান এবং সামাজিক উদ্ভাবনে সরকারি-বেসরকারি খাতের সহযোগিতা নিয়ে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন ড.ইউনূস।
৮২ দিন আগে
নিউইয়র্কে অধ্যাপক ইউনুস ও তার সফরসঙ্গীদের নিরাপত্তা জোরদার
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে এসে সোমবার নিউ ইয়র্কের জন. এফ কেনেডি বিমানবন্দরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাসহ রাজনৈতিক নেতাদের ওপর উদ্দেশ্যমূলক হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
সরকারের দাবি, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সহযোগী এবং সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা দেশের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিকভাবে গণতান্ত্রিক নীতি ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার প্রতি আমাদের অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। রাজনৈতিক সহিংসতা এবং ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা, তা বাংলাদেশের ভেতরে হোক বা এর সীমানার বাইরে হোক, কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। এ ধরনের ঘটনায় যথাযথ আইনি ও কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, এ ঘটনার পর প্রধান উপদেষ্টা ও সরকারি প্রতিনিধিদলের সব সদস্যের নিরাপত্তা উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করা হয়েছে।
সরকার বলেছে, ‘এই নিন্দনীয় ঘটনার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার শাসনামলে গড়ে ওঠা বিধ্বংসী ও সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির এক স্পষ্ট ও মর্মান্তিক চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। এই বিধ্বংসী রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক নেতাদের সফরের সময় সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পর্যায়ে একাধিক সতর্কতামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করেছিল। জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর প্রতিনিধিদলটিকে প্রথমে একটি নির্দিষ্ট ভিভিআইপি গেট দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং একটি বিশেষভাবে সুরক্ষিত পরিবহন ইউনিটে ওঠানোও হয়েছিল। তবে, অপ্রত্যাশিত এবং শেষ মুহূর্তের ভিসা-সম্পর্কিত জটিলতার কারণে প্রতিনিধিদলটিকে পথ পরিবর্তন করে বিকল্প পথে অগ্রসর হতে হয়।
বিমানবন্দরে রাজনৈতিক নেতাদের জন্য ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার এবং নিরাপত্তা সুবিধা দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা সত্ত্বেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দুঃখজনকভাবে সেই অনুরোধ রাখেনি। এর ফলে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ঝুঁকির মুখে পড়েন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
ঘটনার পরপরই, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে দ্রুত এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
সরকার জানিয়েছে, ‘আমাদের জানানো হয়েছে যে ইতোমধ্যেই একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বর্তমানে ঘটনাটির আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলমান।’
সরকার আরও বলেছে, এই ঘটনার পর প্রধান উপদেষ্টা এবং প্রতিনিধিদলের সকল সদস্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিদেশে তার প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এবং স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে সার্বক্ষণিক ঘনিষ্ঠ এবং অবিচ্ছিন্ন সমন্বয় রেখে যাচ্ছে।
৮৩ দিন আগে
অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ সাধারণ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ নির্বাচন আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ সম্পূর্ণ প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সময় সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত বিশেষ দূত সার্জিও গোরের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
সার্জিও গোর প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন ও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের এ প্রচেষ্টায় সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে আশ্বাস দেন।
বৈঠকে উভয় পক্ষ বাণিজ্য, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা, সার্কের পুনরুজ্জীবন, রোহিঙ্গা সংকট এবং ঢাকাকে লক্ষ্য করে বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিস্তার-সহ বিস্তৃত দ্বিপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
কক্সবাজারের ক্যাম্পে বসবাসরত দশ লাখের বেশি রোহিঙ্গার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহায়তা কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা। এর জবাবে মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের জীবনরক্ষাকারী সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
ড. ইউনূস বলেন, সার্ক পুনরুজ্জীবনে তৎপরতা জোরদার করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, যা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা সম্মেলনের লক্ষ্য রাজনৈতিক সমাধান: মৌনির সাতৌরি
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ আসিয়ানে যোগদানে আগ্রহী। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনীতির সঙ্গে সংযুক্ত হলে বাংলাদেশের উন্নয়ন আরও দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ ছাড়া নেপাল, ভুটান ও ভারতের সাত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে পারলে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও দ্রুত হবে।
বৈঠক শেষে সার্জিও গোরকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি।
এর আগে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে সোমবার দুপুরে (নিউইয়র্ক সময়) এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম.
সফর সঙ্গী হিসেবে রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা ঢাকা থেকে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যোগ দেন। এ ছাড়া জামায়াত নেতা নকিবুর রহমান তারেক যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রতিনিধি দলে যুক্ত হন।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হচ্ছেন ৪ রাজনীতিবিদ
এ ছাড়া প্রতিনিধি দলে রয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, জ্বালানি উপদেষ্টা এম ফাওজুল কবির খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, প্রধান উপদেষ্টার প্রধান সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম ও প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
৮৩ দিন আগে
বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের সব ক্রয়প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে: যুক্তরাষ্ট্র
প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে সব ধরনের ক্রয়প্রক্রিয়া পুরোপুরি উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে সাবেক সরকারের অধীনে চলমান সব সরাসরি দরকষাকষি বা আলোচনাকে স্থগিত করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদন ২০২৫- এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের আর্থিক স্বচ্ছতা উন্নত করতে ওই প্রতিবেদনে বিভিন্ন পদক্ষেপের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আইন বা বিধির মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের জন্য চুক্তি ও লাইসেন্স দেওয়ার মানদণ্ড ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশের সরকার। কার্যক্ষেত্রে সেসব বিধিমালা অনুসরণ করা হচ্ছে বলেও মনে করে ওয়াশিংটন। তবে সরকারি ক্রয়চুক্তি সম্পর্কিত সীমিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সরকার পরিবর্তনের কারণে দেশের সর্বোচ্চ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারের হিসাব নিরীক্ষা করেনি, তবে সংক্ষেপে কিছু ফলাফল প্রকাশ করেছে, যেগুলো যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। তবে ওই নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মান অনুসারে স্বাধীন নয় বলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা সম্মেলনের লক্ষ্য রাজনৈতিক সমাধান: মৌনির সাতৌরি
বাংলাদেশের আর্থিক স্বচ্ছতা আরও বাড়াতে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো— অর্থবছর শেষে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা; বাজেট নথি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা অনুযায়ী প্রস্তুত করা; বাজেটে নির্বাহী দপ্তরগুলোর ব্যয় খাত আলাদাভাবে উপস্থাপন করা; সরকারের আয়-ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা; সর্বোচ্চ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্বাধীনতা প্রদান এবং যথেষ্ট সম্পদ ও সময়োপযোগী পূর্ণাঙ্গ বাজেট নথিতে প্রবেশাধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া; নিরীক্ষা প্রতিবেদনে সুপারিশ, বিশ্লেষণ ও পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা প্রকাশ করা; প্রাকৃতিক সম্পদ উত্তোলনের জন্য চুক্তি ও লাইসেন্স প্রদানের তথ্য প্রকাশ করা এবং সরকারি ক্রয়চুক্তির তথ্য জনসমক্ষে আনা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পর্যালোচনাকালীন সময়ে বাংলাদেশে অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারকে প্রতিস্থাপন করেছে। তারা আগের সরকারের বাজেট সুপারিশ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে এবং আর্থিক স্বচ্ছতা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার শুরু করেছে।
আগের সরকার তাদের নির্বাহী বাজেট প্রস্তাব ও অনুমোদিত বাজেট জনসমক্ষে প্রকাশ করেছিল, অনলাইনেও তা পাওয়া যেত। তবে অর্থবছর শেষে প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ে প্রকাশ করা হয়নি। বাজেটের তথ্য সাধারণভাবে নির্ভরযোগ্য হলেও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা অনুযায়ী বাজেট নথি তৈরি করা হয়নি বলে অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ঋণসংক্রান্ত তথ্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। বাজেট নথিতে পরিকল্পিত আয় ও ব্যয়ের চিত্র ছিল, যার মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পদের আয়ও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে নির্বাহী দপ্তরগুলোর ব্যয় আলাদা করে দেখানো হয়নি এবং পূর্ণাঙ্গ আয়-ব্যয়ের চিত্রও বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি। যদিও বাজেট নথিতে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দ ও আয়ের তথ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হচ্ছেন ৪ রাজনীতিবিদ
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, আর্থিক স্বচ্ছতা কার্যকর সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি বাজারে আস্থা তৈরি করে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে শক্তিশালী করে এবং মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য সমান প্রতিযোগিতার সুযোগ তৈরি করে।
তিনি আরও বলেন, আর্থিক স্বচ্ছতা সরকারকে আরও জবাবদিহিমূলক করে তোলে কারণ এতে সরকারের বাজেট ও ব্যয়ের স্বচ্ছতা জনসমক্ষে উন্মুক্ত হয়। বার্ষিক এই স্বচ্ছতা মূল্যায়ন মার্কিন করদাতাদের অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতেও সহায়ক বলেও মনে করেন তিনি।
২০২৫ সালের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১৪০টি সরকার ও সংস্থার মধ্যে ৭১টি ন্যূনতম আর্থিক স্বচ্ছতার মানদণ্ড পূরণ করেছে। বাকি ৬৯টি মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তবে এদের মধ্যে ২৬টি সরকার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ অর্থবছরের পররাষ্ট্র কার্যক্রম ও সংশ্লিষ্ট কর্মসূচি বরাদ্দ আইন অনুযায়ী ২০২৫ সালের প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে ২০১৪ সালের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে চিহ্নিত দেশ ও সংস্থাগুলো এবং গত এক বছরে ন্যূনতম আর্থিক স্বচ্ছতা মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ দেশগুলোকে মূল্যায়ন করা হয়েছে।
এ ছাড়াও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাজেট নথি, চুক্তি ও লাইসেন্স প্রকাশের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা কতটুকু নিশ্চিত হয়েছে এবং যেসব দেশ ন্যূনতম মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ, তারা এই সময়কালে কতটা অগ্রগতি করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বাজেট নথির প্রাপ্যতা, পূর্ণতা, নির্ভরযোগ্যতা এবং সরকারি চুক্তি ও লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা মূল্যায়ন করেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
৮৬ দিন আগে
নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা সম্মেলনের লক্ষ্য রাজনৈতিক সমাধান: মৌনির সাতৌরি
আসন্ন নিউইয়র্ক সম্মেলন রোহিঙ্গা সংকটের রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে সহায়ক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান মৌনির সাতৌরি।
সম্প্রতি, ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
মৌনির সাতৌরি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র দীর্ঘমেয়াদি সমাধান মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং বাস্তুচ্যুত জনগণের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা। ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) এই লক্ষ্য সমর্থন করে বলে জানান তিনি।
সাতৌরি বলেন, তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে এই সংকটের রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে পেতে সহায়ক হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
২০১৭ সালে মিয়ানমারে সামরিক দমনপীড়নের কারণে পালিয়ে আসা ১৩ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বর্তমানে আশ্রয় দিচ্ছে বাংলাদেশ। তবে শরণার্থী শিবিরগুলোতে অতিরিক্ত ভিড়, সীমিত সম্পদ ও চলমান মানবিক চ্যালেঞ্জের কারণে পরিস্থিতি দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে।
অন্যদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান
অর্থায়ন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে সাতৌরি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটে এখন ইইউ প্রধান দাতায় পরিণত হয়েছে। তবে তহবিল সংকট মোকাবিলায় অন্য দাতাদের, বিশেষ করে আঞ্চলিক দাতাদের সম্পৃক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধের ভার বাংলাদেশের বহন করা সম্ভব নয়, আবার সেটি স্বাভাবিকও নয়। তবে আপাতত শরণার্থীরা বাংলাদেশেই আছে এবং তাদের প্রয়োজন মেটাতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেখানে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একই সঙ্গে এটি বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টা স্বীকার ও প্রশংসা করার একটি রাজনৈতিক বার্তাও।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই প্রশংসা করি এবং স্বাগত জানাই যে বাংলাদেশ গত আট বছর ধরে দশ লাখেরও বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু এই বিশাল প্রচেষ্টা অনেক সময় অবহেলিত থেকে গেছে।’
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে সহায়তা করছে ইইউ: রাষ্ট্রদূত মিলার
ইইউ বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকটে অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি অব্যহত রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতিসংঘে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ৩০ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের সংকট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের প্লেনারি বৈঠক করবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে অংশ নেবেন।
এই বৈঠকের উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক মনোযোগ ধরে রাখা, বাস্তব পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং একটি কার্যকর, সময়সীমাবদ্ধ পরিকল্পনা প্রস্তাব করা যাতে টেকসই সমাধানসহ বাস্তুচ্যুত জনগণের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা যায়।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে অংশ নিতে ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন অধ্যাপক ইউনূস।
সম্প্রতি কক্সবাজারে ‘স্টেকহোল্ডার্স ডায়ালগ’-এ বক্তব্য রাখতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূস সাত দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন, যেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রোহিঙ্গাদের দ্রুত, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, স্বেচ্ছায় ও টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য একটি কার্যকর রোডম্যাপ প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা কেবল কথার জালে বন্দি থাকতে পারি না। এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার উপযুক্ত সময়।’
পড়ুন: জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হচ্ছেন ৪ রাজনীতিবিদ
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট শুধু বাংলাদেশের নয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও দায়িত্ব। সমাধান নিয়ে ভাবা এবং বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখা সবার কর্তব্য।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু ও এর টেকসই সমাধানকে অবশ্যই বৈশ্বিক এজেন্ডায় রাখতে হবে। কারণ তাদের প্রত্যাবাসনের আগ পর্যন্ত সহায়তার প্রয়োজন থাকবে।
৮৭ দিন আগে
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত গেল ১২০০ কেজি ইলিশ
শারদীয় দূর্গাপুজা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথম চালানে ১ হাজার ১৯২কেজি ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। এ বন্দর দিয়ে প্রায় ৯০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে ২টি পিকআপে করে মাছগুলো ত্রিপুরা রাজ্যের
আগরতলা স্থলবন্দরে প্রবেশ করে। প্রতি কেজি ইলিশের দাম ধরা হয়েছে সাড়ে ১২ মার্কিন ডলার।
এসব ইলিশ ভারতে রপ্তানী করেছে যশোরের বেনাপোলের মাহতাব এন্ড সন্স। মাছের আমদানীকারক আগরতলার পরিতোষ বিশ্বাস।
উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম বলেন, মাছের তাপমাত্রাসহ অন্যান্য বিষয় তারা পরীক্ষা করে দেখেছেন। মাছ রপ্তানিযোগ্য মনে হওয়া সেই অনুযায়ি ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি প্রক্রিয়া বন্দরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ করবেন।
এবার দুর্গাপূজা উপলক্ষে শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশ থেকে এক হাজার ২০০টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। মোট ৩৭টি প্রতিষ্ঠান এসব ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে।
প্রতি কেজি সাড়ে ১২ ডলার হিসেবে দাম পড়েছে ১৫২৫ টাকা। একেকটি ইলিশ প্রায় এক কেজির মতো ওজন।
স্থলবন্দরের মাছ রপ্তানীকারক মোঃ নেছার উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ২টি পিকআপে ৫৩টি বক্সে ১ হাজার ১৯২ মাছ পাঠানো হয়েছে।
আজ বিকালে আরও কিছু ইলিশ পাঠানোর কথা রয়েছে।
৮৮ দিন আগে