বৈদেশিক-সম্পর্ক
বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তিতে গুরুত্ব দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া
বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) বিষয়ক আলোচনা ত্বরান্বিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং-সিক।
তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের আগে বাংলাদেশের হাতে খুব বেশি সময় নেই।
তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে বাংলাদেশের আসন্ন উত্তরণ এবং পরে জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) সুবিধা হারানো কোরিয়া-বাংলাদেশ বাণিজ্য ব্যবস্থার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে।’
রবিবার সন্ধ্যায় নিজ বাসভবনে কূটনৈতিক সংবাদ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্টের (আপটা) কিছু অংশ জিএসপির সঙ্গে যুক্ত এবং বাংলাদেশ যদি এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণ করে, তবে আপটার আওতায় কোনো ট্যারিফ সুবিধা না পাওয়ায় কিছু পণ্য শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।
কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত বলেন, শুধু জিএসপি সুবিধা বাড়ানো দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হতে পারে না। উভয় পক্ষকে ইপিএর মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান করতে হবে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) বিভিন্ন নাম রয়েছে যেমন ইপিএ বা কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ)। ‘আমার দৃষ্টিতে, এই ধরনের এফটিএ একই।’
কোরিয়ায় এফটিএ চালুর জন্য জাতীয় সংসদের অনুমোদনসহ অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ইপিএ শুরু হবে বলে আশা করছেন তারা।
রাষ্ট্রদূত পার্ক বলেন, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে ইপিএ নিয়ে ২০২৩ সালের শুরু থেকেই আলোচনা চলছে তবে বাস্তব কোনো অগ্রগতি হয়নি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাপানের সঙ্গে যৌথ গবেষণা শেষ করেছে এবং চীনের সঙ্গে এটি শেষ করার কাছাকাছি পৌঁছেছে এবং ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করছে।
এর আগে রাষ্ট্রদূত ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) সদস্যদের সঙ্গে এক ইফতার-কাম-নৈশভোজের আয়োজন করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই
ডিক্যাব সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব আন্তঃকোরীয় সম্পর্ক, আঞ্চলিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক কূটনীতি, সফট পাওয়ার অ্যান্ড কালচার, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি এবং বহুপাক্ষিক যোগাযোগের মতো আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমিকা সম্পর্কে কূটনৈতিক সাংবাদিকদের জানাতে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন।
১৯৭২ সালের ১২ মে কোরিয়া বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ২০২৩ সালে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে।
বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই
বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সোমবার তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে।
এগুলো হচ্ছে- কুড়িগ্রামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, থিম্পুতে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন এবং ভোক্তা অধিকার বিষয়ে কারিগরি সহযোগিতা।
এ ছাড়া সাংস্কৃতিক বিনিময়সংক্রান্ত আরেকটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমেদ বাংলাদেশের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন ভুটানের রাজা
ভুটানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তানদিন ওয়াংচুক, ভুটানের বাণিজ্যমন্ত্রী তাশি ওয়াংম্যাক এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেমা চোডেন নিজ নিজ পক্ষে সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সমঝোতা স্মারক সইয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বছরে ভুটানের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যা ২২ থেকে বাড়িয়ে ৩০টি করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভুটানের ফরেন সার্ভিস কর্মকর্তাদের জন্য প্রতি বছর দুটি আসনও প্রস্তাব করেছে। ভুটানে একটি কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপনেও বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে (বিএআরসি) প্রতি বছর ভুটানের কর্মকর্তাদের তিন বছরের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
শুভেচ্ছা ও বন্ধুত্বের বিশেষ নিদর্শন হিসেবে ভুটানের সরকারি কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য কম্পিউটার ও ল্যাপটপ হস্তান্তর করে বাংলাদেশ।
এর আগে ভুটানের রাজা বঙ্গভবনে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে ভুটানের রাজা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠক করেন।
এ ছাড়াও তাদের দুজনের মধ্যে একটি বৈঠক হবে।
আরও পড়ুন: ভুটানের রাজাকে ঢাকায় লাল গালিচা সংবর্ধনা
বাণিজ্য-যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত ঢাকা-থিম্পু
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সঙ্গে তার সফরকালীন আবাসস্থলে সাক্ষাৎ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সাক্ষাৎকালে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার বর্তমান চমৎকার স্তর নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে উভয় পক্ষ।
তারা ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ, কৃষি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হন।
সোমবার(২৫ মার্চ) সকালে ঢাকায় আসেন ভুটানের রাজা।আরও পড়ুন: চার দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় আসছেন ভুটানের রাজা
গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠনের পর এটিই কোনো বিদেশি অতিথির প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর।
একটি বিশেষ বিমানে রাজা এবং তার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ঢাকায় অবতরণের পর তাদেরকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং ফার্স্ট লেডি।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটানের তৃতীয় রাজা টেলিগ্রামের মাধ্যমে স্বীকৃতির বার্তা পাঠানোর মধ্য দিয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেয় ভুটান।
সেই থেকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে একটি বিশেষ বহুমাত্রিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে। স্বাধীনতার পরপরই ভুটান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয় এবং ফলস্বরূপ, ১৯৭৩ সালের ১২ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন ভুটানের রাজা
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন ভুটানের রাজা
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছেছেন।
সোমবার(২৫ মার্চ) দুপুরে ভুটানের রাজা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছান।
ওয়ান টু ওয়ান মিটিংও করবেন তারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজাকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান।
আরও পড়ুন: চার দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় আসছেন ভুটানের রাজা
স্বাধীনতা দিবস উদযাপনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে আজ সকালে ঢাকায় পৌঁছান ভুটানের রাজা।
গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠনের পর এটিই কোনো বিদেশি অতিথির প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর।
বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে তিনটি নতুন সমঝোতা স্মারক সই হবে এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় সংক্রান্ত আরও একটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হবে।
ভুটানের রাজা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমঝোতা স্মারক সই প্রত্যক্ষ করবেন।
আরও পড়ুন: ভুটানের রাজাকে ঢাকায় লাল গালিচা সংবর্ধনা
ঢাকার সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ফাতাহ কর্মকর্তার, ইসরায়েলকে থামাতে আরো বেশি পদক্ষেপের আহ্বান
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে ইসরায়েল সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অব্যাহত যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন কামনা করেছেন ঢাকায় সফররত ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফাতাহর কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিবরিল রাজৌব।
মহাসচিব আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) সমর্থনসহ ফিলিস্তিনের সমর্থনে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রবিবার (২৪ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সফররত জিবরিল রাজৌব।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মহাসচিব গাজা উপত্যকায় চলমান সংঘাত নিয়ে মতবিনিময় করেন।
মহাসচিব গাজা ও পশ্চিম তীরে চলমান ইসরাইলি নৃশংসতার ফলে নজিরবিহীন গণহত্যা, অবকাঠামো ধ্বংস এবং মানবিক সহায়তা প্রাপ্তির সুযোগ সীমিত হওয়ার ফলে গাজায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে সে সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
সাক্ষাৎকালে মহাসচিব গাজায় নতুন বসতি স্থাপন এবং গাজা, পশ্চিম তীর ও এর বাইরেও ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ আরোপের মাধ্যমে যুদ্ধোত্তর গাজার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর অবৈধ নতুন সংযুক্তি পরিকল্পনা সম্পর্কে তাকে অবহিত করেন।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরাইলের তাণ্ডব ঠেকাতে বিশ্বের ব্যর্থতায় প্রধানমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজা উপত্যকায় কঠিন মানবিক পরিস্থিতিতে শিশু ও নারীসহ বেসামরিক হতাহত এবং কষ্টের জন্য গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তিনি এই যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সমন্বিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন। গাজা ও পশ্চিম তীরে পর্যাপ্ত মানবিক প্রবেশাধিকারসহ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বানও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি মহাসচিবকে আশ্বস্ত করে বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় অবস্থান অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরব দেশগুলোর ঐকমত্য অর্জনে গাজায় যুদ্ধ অবসানে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানান।
তারা বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও উন্নয়নে সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
এর আগে সকালে ফাতাহ মহাসচিব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ফিলিস্তিনে মানবিক বিপর্যয় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যা মানব সভ্যতার কলঙ্কজনক অধ্যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সুপেয় পানি সরবরাহই হবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবিলায় অন্যতম চ্যালেঞ্জ: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
ভবিষ্যতের বাংলাদেশে সুপেয় পানির সরবরাহ ঠিক রাখাই হবে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
বিকালে ঢাকায় ইউনিসেফ আয়োজিত বিশ্ব পানি দিবস-২০২৪ উপলক্ষে ‘শান্তির জন্য পানি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পৃথিবীর শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে একটি। পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে, সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, লবণাক্ত পানির কারণে জীববৈচিত্র্য এবং কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সুপেয় পানির উৎসস্থল সংকুচিত হচ্ছে। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ সুপেয় পানির সরবরাহ ঠিক রাখাই হবে আমাদের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ভূগর্ভস্থ পানের স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে তাই ভবিষ্যতে পান করার জন্য পানি সরবরাহ একটি চ্যালেঞ্জ হবে। সেজন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির পানি অর্থাৎ ভূউপরিভাগের পানি সংগ্রহ করে কাজে লাগানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- সুইডেনের এম্বাসেডর আলেক্সান্ডরা বার্গ ভন লিনডে, ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এমা ব্রিগহাম, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার টিম লিড ড. রাজেন্দ্র বোহরা এবং সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহীম।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ।
এর আগে সকালে আগারগাঁওয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে দুটি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি জাইকা, এডিবি ও এএফডি নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (আইইউজিআইপি) ও দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্প (এসসিআরডিপি) নামক প্রকল্প দুটির অর্থায়ন করে।
জুন ২০২৮ সাল নাগাদ নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (আইইউজিআইপি) সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে যেখানে মোট ৬০২ মিলিয়ন ইউএস ডলার খরচ হবে এবং ডিসেম্বর ২০২৮ সালে শেষ হবে দক্ষিণ চট্টগ্রাম আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্প (এসসিআরডিপি) যেখানে মোট প্রায় ৩ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
প্রকল্প দুটির উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিকল্পনা অনুযায়ী টেকসই নগরায়ন, নগর পরিচালন ব্যবস্থার উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করা, দক্ষিণ চট্টগ্রামের জীবন মানের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন- স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. শের আলী, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং, এএফডি বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সিসিলিয়া কট্রিস, জাইকার বাংলাদেশ প্রধান ইচিগুচি তোমোহিডে। এছাড়াও প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন পৌরসভার মেয়রগণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
গাজায় গণহত্যা মানব সভ্যতার কলঙ্কজনক অধ্যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ফিলিস্তিনে ৭ অক্টোবরের পর থেকে যেভাবে শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে সেটি মানব সভ্যতার জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এখনই যদি আমরা এটি বন্ধ করতে না পারি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমরা দায়ী হয়ে থাকব।
রবিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র উত্থাপিত গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাশিয়া ও চীনের ভেটোদানের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত এ নিয়ে মনোবেদনায় ভুগছি এবং বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এর প্রতিবাদ অব্যাহত আছে। যুক্তরাষ্ট্রে, কানাডায়, যুক্তরাজ্যে, আয়ারল্যান্ডে, কন্টিনেন্টাল ইউরোপে, অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিবাদ চলছে। কারণ মানুষ এই অপরাধের বিরুদ্ধে।’
ড. হাছান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব কিছুটা আশার আলো জাগিয়েছিল, কিন্তু ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিদের মতে সেই প্রস্তাবে কিছু ত্রুটি ছিল। রাশিয়া ও চীনের ভেটোদানের কারণ বোধগম্য নয়, কিন্তু আমরা চাই অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি হোক, এই বর্বরতা বন্ধ হোক।’
আরও পড়ুন: ভুটানের বিনিয়োগকারীদের জন্য কুড়িগ্রামে ১৯০ একর জমি দেবে বাংলাদেশ
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস ফ্রান্সের
কার্বন নিঃসরণ হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে ফ্রান্স।
রবিবার সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আশ্বাস দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই।
সাক্ষাৎকালে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা, নির্মাণখাতে সবুজায়ন, পরিবেশ সুরক্ষাসহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।
উল্লেখ্য, ৭-৮ মার্চ ২০২৪ তারিখ ফ্রান্সের প্যারিসে ৭০টি দেশের ১৪০০ প্রতিনিধি ‘বিল্ডিং অ্যান্ড গ্লোবাল ফোরাম ২০২৪- এ মিলিত হন।
ফোরামে ফ্রান্স সরকারের আমন্ত্রণে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করে।
ফোরামে কপ- ২৮ সম্মেলনের সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস ও পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ৯ দফা সিদ্ধান্ত সম্বলিত ‘ডিক্লারেশন দে শ্যালট’ গৃহীত হয়।
ওই ঘোষণার আলোকে ফ্রান্স ও বাংলাদেশ সরকারের পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে সাক্ষাতে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
ভুটানের বিনিয়োগকারীদের জন্য কুড়িগ্রামে ১৯০ একর জমি দেবে বাংলাদেশ, আলোচনা চলছে জলবিদ্যুৎ আমদানির
ভুটানের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে কুড়িগ্রামে ১৯০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে চায়। আর এ বিদ্যুৎ ভারতের মধ্য দিয়ে আনতে হবে। তাই ত্রিপক্ষীয় চুক্তি প্রয়োজন।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করছি।’
তিনি বলেন, সেখানে ভুটানের ২৫ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নেপাল থেকেও জলবিদ্যুৎ আমদানি করবে এবং এ বিষয়ে প্রাথমিক পদক্ষেপগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, শুভেচ্ছা স্বরুপ বাংলাদেশ থিম্পুতে একটি বার্ন ইউনিট নির্মাণ করবে, যা দেশের সক্ষমতারও বহিঃপ্রকাশ।
তিনি ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুকের সফর সম্পর্কেও জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ সময় বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে তিনটি নতুন সমঝোতা স্মারক সই হবে। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক বিনিময় সংক্রান্ত আরও একটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হবে।
১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে যে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তার ই ধারাবাহিকতায় চার দিনের সফরে ভুটানের রাজার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্য, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ভুটানের রানী সোমবার সকালে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, 'ভুটানের সঙ্গে আমাদের বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে।’
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং ফার্স্ট লেডি গান স্যালুট ও গার্ড অব অনার দিয়ে বাদশাহকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
সোমবার সকাল ১০টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে রাজার।
বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যাবেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে দেশের বাজারকে অস্থিতিশীল করাই বিএনপির উদ্দেশ্য: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করবেন ভুটানের রাজা। তারা দুজনের মধ্যে বৈঠক হবে।
বৈঠকের পর দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
একই দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে রাজার সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার রাজা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটও পরিদর্শন করবেন রাজা।
তিনি বঙ্গভবনে যাবেন, সেখানে রাষ্ট্রপতি ও ফার্স্ট লেডি তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজা।
রাষ্ট্রপতি সফররত রাজপরিবারের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
বুধবার সকালে রানী জেটসুন পেমা ওয়াংচুক ও ভুটানের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা একটি বিশেষ ফ্লাইটে ভুটানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বিমানবন্দরে তাদের বিদায় জানাবেন।
ভুটানের রাজা পদ্মা সেতু ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
বৃহস্পতিবার রাজা কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
একই দিন বিকেলে সোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে আসামের গোলকগঞ্জের উদ্দেশে বাংলাদেশ ভূখণ্ড ত্যাগ করবেন।
সেখানে তাকে বিদায় জানাবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিংগে ওয়াংচুক সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে এক চিঠিতে বলেন, তার গতিশীল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা বিরাজের পাশাপাশি অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে।
তিনি ভুটানকে 'ঘনিষ্ঠ বন্ধু' হিসেবে উল্লেখ করেন।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটানের তৃতীয় রাজা টেলিগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বীকৃতির বার্তা পাঠান। এর মধ্যে দিয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ ভুটান।
সেই থেকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে একটি বিশেষ বহুমাত্রিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে। স্বাধীনতার পরপরই ভুটান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। এর ফলে ১৯৭৩ সালের ১২ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: দেশকে মগের মুল্লুক বানাতে ব্যর্থ হয়ে খেই হারিয়েছে বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
চার দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় আসছেন ভুটানের রাজা
ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক ৪ দিনের সফরে সোমবার ঢাকায় আসছেন। ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে তারই ধারাবাহিকতায় রাজার এই সফর।
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও ফার্স্ট লেডি গান স্যালুট ও গার্ড অব অনার দিয়ে রাজাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
সোমবার(২৫ মার্চ) সকাল ১০টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাজার পৌঁছানোর কথা রয়েছে বলে ইউএনবি জানিয়েছেন সরকারের এক জেষ্ঠ কর্মকর্তা।
বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যাবেন রাজা ওয়াংচুক।
সোমবার বিকেলে ভুটানের রাজা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করবেন। তাদেরও দুজনের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকের পর দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
একই দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ রাজার সঙ্গে তার অবস্থানকালীন আবাসস্থলে সাক্ষাৎ করবেন।
মঙ্গলবার(২৬ মার্চ) রাজা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করবেন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
সেখানে তিনি একটি বৃক্ষরোপণ করবেন।
পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করবেন ভুটানের রাজা।
তিনি বঙ্গভবন পরিদর্শন করবেন, সেখানে রাষ্ট্রপতি ও ফার্স্ট লেডি তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজা।
রাষ্ট্রপতি সফররত রাজপরিবারের সম্মানে ইফতার ও নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
বুধবার(২৭ মার্চ) সকালে ভুটানের রানী জেটসুন পেমা ওয়াংচুক ও ভুটানের নির্বাচিত প্রতিনিধি দলের সদস্যরা একটি বিশেষ ফ্লাইটে ভুটানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।আরও পড়ুন:অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘিরে ভাগ্য বদলের আশা কুড়িগ্রামসীর
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বিমানবন্দরে তাদের বিদায় জানাবেন।
ভুটানের রাজা পদ্মা সেতু ও বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ পরিদর্শন করবেন।
বৃহস্পতিবার রাজা কুড়িগ্রামের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে সোনাহাট স্থলবন্দর হয়ে আসামের গোলকগঞ্জের উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী তাকে বিদায় জানাবেন।
ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিংগে ওয়াংচুক সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে এক চিঠিতে বলেন, তার গতিশীল ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
তিনি ভুটানকে 'ঘনিষ্ঠ বন্ধু' হিসেবে উল্লেখ করেন।
১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভুটানের তৃতীয় রাজা টেলিফোনের মাধ্যমে স্বীকৃতির বার্তা পাঠানোর মধ্য দিয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ ভুটান।
সেই তখন থেকে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে একটি বিশেষ বহুমাত্রিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে। স্বাধীনতার পরপরই ভুটান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। ফলস্বরূপ, ১৯৭৩ সালের ১২ এপ্রিল আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামের অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করবেন ভুটানের রাজা