আইনশৃঙ্খলা
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের রায় প্রকাশ
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে পুর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ।
রায়ে আবেদনকারী এসব উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে ২০০৭ সালে বরখাস্তের পর থেকে প্রাপ্য বকেয়া বেতন ভাতা জ্যেষ্ঠতাসহ ফেরত দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া এসব কর্মকর্তার বরখাস্ত থাকাকালীন সময়কে বিশেষ ছুটি হিসেবে বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতির দেওয়া এই রায়ের ১৭ পৃষ্টার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেছেন।
এর আগে ২০২২ সালে আবেদনকারীদের আপিল খারিজ করে দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা পৃথক আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের ওই রায় দেন। আজ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হয়।
আদালতে আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া।
পড়ুন: ২৪-২৭ আগস্ট নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের আপত্তি শুনবে ইসি
২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮৫ জনকে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া এই ৮৫ জন কর্মকর্তাকে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়।
এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করেন। এই আপিল মঞ্জুর করে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল আপিল মঞ্জুর করে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকারপক্ষ পৃথক আপিল করে। ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর পুনর্বহাল করতে প্রায় এক যুগ আগে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সিদ্ধান্ত বাতিল করেন আপিল বিভাগ। ফলে তাদের চাকরিতে ফেরত আটকে যায়। পরে ২০২৩ সালে আপিল বিভাগের রায় রিভিউ চেয়ে তারা আবেদন করেন। সেই আবেদনের ওপর গত ২০ ফেব্রুয়ারি শুনানি হয়। পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি আবেদনকারীদের আবেদন মঞ্জুর করে এবং ২০২২ সালে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় বাতিল করে তাদের চাকরিতে পুর্নবহালের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
১১৯ দিন আগে
সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
গাজীপুরের জয়দেবপুরে জঙ্গি নাটক সাজিয়ে সাত যুবককে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (১৮ আগস্ট) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, মিজানুল ইসলামসহ অন্যরা।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ইসলামী মনোভাবাপন্ন কয়েকজন যুবক-কিশোরকে আটক করা হয়। তারা মাদরাসার ছাত্র অথবা ইসলামী মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন যাত্রাবাড়ীর একটি মাদরাসার ছাত্র ইবরাহীম। ১৯ বছর বয়সী ওই কিশোর গাজীপুরের সেই কথিত ‘জঙ্গি নাটকে’ খুন হন। বিচারবহির্ভূতভাবে ছেলেকে গুম ও হত্যার দায়ে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় অভিযোগ করেন ইবরাহীমের বাবা। পরে এ ঘটনার তদন্ত করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সাংবাদিকদের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বলেন, ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর সারাদেশ থেকে সাতজনকে গ্রেফতার করে গাজীপুরের জয়দেবপুরে একটি ভাড়া বাসার দোতলায় রাখা হয়। পরে বাইরে তালা ঝুলিয়ে সেখানে জঙ্গি আস্তানা রয়েছে বলে অভিযান চালান সিটিটিসি ও সোয়াতের সদস্যরা। একপর্যায়ে সরাসরি গুলি চালিয়ে সাতজনকেই হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর নিহতদের রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলে প্রচার করা হয়।
এ ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অংশ হিসেবে প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার সাবেক আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
অন্য আসামিরা হলেন— গাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশীদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম, বগুড়ার তৎকালীন এসপি ও এএসপি।
১১৯ দিন আগে
সাবেক ডিবিপ্রধান হারুনসহ পুলিশের ১৮ কর্মকর্তা বরখাস্ত
দায়িত্ব থেকে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ ১৮ কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার।
সোমবার (১৮ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে তিনজন ডিআইজি, ছয়জন অতিরিক্ত ডিআইজি, চারজন পুলিশ সুপার, চারজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং একজন সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা রয়েছেন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তা হলেন— ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ, ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার সঞ্জিত কুমার রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি রিফাত রহমান শামীম, একই কার্যালয়ের পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম, খুলনার পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান আরাফাত, সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান, খাগড়াছড়ির এপিবিএন ও স্পেশালাইজড ট্রেনিং সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, চট্টগ্রাম পার্বত্য জেলাসমূহের এপিবিএনের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি শ্যামল কুমার মূখার্জি এবং একই কার্যালয়ের অতিরিক্ত ডিআইজি (সংযুক্ত) আয়েশা সিদ্দিকা।
আরও পড়ুন: চোর সন্দেহে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা: ৮ পুলিশ বরখাস্ত, তদন্তে কমিটি
তালিকায় আরও রয়েছেন, কক্সবাজারে ৮ এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস, ঢাকার পুলিশ স্টাফ কলেজের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাউদ্দিন, একই প্রতিষ্ঠানের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবিবুল্লাহ দালাল, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার রাশেদুল ইসলাম, ঢাকা ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক উপকমিশনার ও বর্তমানে ঢাকায় অ্যান্টি-টেররিজম ইউনিটে (এটিইউ) কর্মরত মো. আবু মারুফ হোসেন এবং ডিআইজি (কমান্ড্যান্ট) মহা. আশরাফুজ্জামান।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই ১৮ জন কর্মকর্তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(গ) অনুযায়ী পলায়নের শাস্তিযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় বিধি ১২ উপবিধি (১) অনুযায়ী তাদের নামের পাশে উল্লিখিত তারিখ থেকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
সাময়িক বরখাস্তকালীন তারা খোরপোষ ভাতা পাবেন বলে জানানো হয়েছে।
১১৯ দিন আগে
৮৫ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের রায় প্রকাশ
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ। রায়ে আবেদনকারী এসব উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে ২০০৭ সালে বরখাস্তের পর থেকে প্রাপ্য বকেয়া বেতনভাতা জ্যেষ্ঠতাসহ ফেরত দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া এসব কর্মকর্তার বরখাস্ত থাকাকালীন সময়কে বিশেষ ছুটি হিসেবে বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতির দেওয়া এই রায়ের ১৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেছেন।
এর আগে ২০২২ সালে আবেদনকারীদের আপিল খারিজ করে দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা পৃথক আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের রায় দেন। আজ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়।
আদালতে আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া।
২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়। চার দলীয় জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮৫ জনকে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামের তৎকালীন জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া এই ৮৫ জন কর্মকর্তাকে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়।
এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করেন। এই আপিল মঞ্জুর করে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা-৯ নির্বাচনী আসন পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ
এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকারপক্ষ পৃথক আপিল করে। ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর পুনর্বহাল করতে প্রায় এক যুগ আগে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সিদ্ধান্ত বাতিল করেন আপিল বিভাগ। ফলে তাদের চাকরিতে ফেরত আটকে যায়। পরে ২০২৩ সালে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য তারা আবেদন করেন। সেই আবেদনের ওপর ২০ ফেব্রুয়ারি শুনানি হয়। পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি আবেদনকারীদের আবেদন মঞ্জুর করে এবং ২০২২ সালে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় বাতিল করে তাদেরকে চাকরিতে পূর্ণবহালের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
১১৯ দিন আগে
সিএমপি কমিশনারের ওয়্যারলেস বার্তা ফাঁসকারী কনস্টেবল গ্রেপ্তার
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজের ওয়াকিটকিতে দেওয়া বার্তা রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস করার অভিযোগে অভিক দাস নামে এক পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি সিএমপির খুলশী থানায় কর্মরত।
রোববার (১৭ আগস্ট) দিবাগত রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে খুলশী থানা পুলিশ।
অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিএমপির মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (ডিসি) মাহমুদা বেগম।
ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কে দেওয়া জরুরি বার্তায় কমিশনার হাসিব বলেছিলেন, “পুলিশের সামনে কেউ অস্ত্র বের করা মাত্রই গুলি করতে হবে; সেটা আগ্নেয়াস্ত্র হোক বা ধারালো অস্ত্র। হয় মাথায়, নয়তো বুকে, নয়তো পিঠে, ‘সরকারি’ গুলির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।”
এর আগে, গত ১১ আগস্ট (সোমবার) দিবাগত রাতে নগরীর বন্দর থানার সল্টগোলা এলাকায় নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা বন্দর থানার এসআই আবু সাঈদ রানাকে কুপিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করে। এ ঘটনায় ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: পুলিশ কমিশনারের ওয়্যারলেস বার্তা ফাঁসকারীদের খুঁজছে সিএমপি
এ ঘটনার পর গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ওয়্যারলেসে সিএমপি কমিশনার কঠোর নির্দেশ দেন— অপরাধীরা অস্ত্র বের করলেই গুলি চালাতে হবে। শুধু রাবার বুলেট নয়, প্রতিটি টহল ও মোবাইল টিমকে আগ্নেয়াস্ত্র ও লাইভ এম্যুনিশন সঙ্গে রাখতে হবে বলেও নির্দেশ দেন তিনি। তার এই বক্তব্য ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন অভিক দাস।
সিএমপি কর্মকর্তাদের মতে, পুলিশের জন্য দেওয়া গোপন বার্তা বাইরে চলে যাওয়া নিরাপত্তার জন্য বড় ঝুঁকি। একইসঙ্গে এটি বাহিনীর ভাবমূর্তির জন্যও নেতিবাচক।
যদিও ভিডিও প্রকাশের পর মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা নির্দেশনায় উজ্জীবিত হয়েছেন বলে দাবি তাদের।
১১৯ দিন আগে
ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার ঝিনাইদহ জেলা আ.লীগের সভাপতি
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম অপুকে রাজধানী ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে শফিকুল ইসলাম পলাতক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিএনপি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ তিনটি মামলা রয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঝিনাইদহে নেওয়া হচ্ছে।
তাকে আজ (সোমবার) সকালে আদালতে তোলা হবে বলেও জানিয়েছে সূত্রটি।
শফিকুল ইসলাম ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঝিনাইদহ-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী মসিউর রহমানকে পরাজিত করেন। তবে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকীর কাছে পরাজিত হন।
আরও পড়ুন: সাভারে ঘুমন্ত ব্যক্তিকে খুন, দায়ীদের গ্রেপ্তার দাবিতে সড়ক অবরোধ
এরপর ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি ও ঝিনাইদহ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল হাইয়ের মৃত্যুতে পদটি শূন্য হয়। পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শফিকুল ইসলামকে জেলা সভাপতি পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মনজুর মোরশেদ জানান, শফিকুল ইসলাম গ্রেপ্তার হয়েছেন। ডিবি পুলিশ তাকে ঢাকার একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। আইনি প্রক্রিয়ার জন্য তাকে ঝিনাইদহে নেওয়া হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে ঝিনাইদহে মামলা আছে।আজ (সোমবার) সকালে তাকে আদালতে তোলা হবে।
তিনি বলেন, ইতোমদধ্যে পুলিশের একটি দল ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।
১১৯ দিন আগে
পুলিশ কমিশনারের ওয়্যারলেস বার্তা ফাঁসকারীদের খুঁজছে সিএমপি
সন্ত্রাসীরা যে কোনো ধরণের অস্ত্র বের করলে গুলি নির্দেশ দেওয়ার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজের গোপন ওয়্যারলেস বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এতে বিব্রত হয়েছেন সিএমপির শীর্ষ কর্মকর্তারা। অভ্যন্তরীণ বার্তাটি কারা ফাঁস করেছে তা শনাক্তে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কে দেওয়া জরুরি বার্তায় কমিশনার বলেন, পুলিশের সামনে কেউ অস্ত্র বের করলে তাত্ক্ষণিকভাবে গুলি করতে হবে, সেটা আগ্নেয়াস্ত্র হোক বা ধারালো অস্ত্র। “হয় মাথায়, নয়তো বুকে, নয়তো পিঠে, সরকারি গুলির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।”
গত ১৪ আগস্ট রাতে নগরীর বন্দর থানার সল্টগোলা এলাকায় নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা বন্দর থানার এসআই আবু সাঈদ রানাকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। এ ঘটনায় পুলিশ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার পর গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ওয়্যারলেসে সিএমপি কমিশনার কঠোর নির্দেশ দেন — অপরাধীরা অস্ত্র বের করলে গুলি চালাতে হবে। “শুধু রবার বুলেট নয়, প্রতিটি টহল ও মোবাইল টিমকে আগ্নেয়াস্ত্র ও লাইভ এম্যুনিশন সঙ্গে রাখতে হবে” বলেও নির্দেশ দেন তিনি। তার এই বক্তব্য ভিডিও করে এক কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
ফাঁস হওয়া ৩ মিনিট ৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, কোনো ভবনের ভেতর থেকে ওয়াকিটকির মাধ্যমে কমিশনারের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে।
সিএমপি সূত্র জানায়, ভিডিওতে দেখা টাইলস মোড়ানো ফ্লোর ও অন্যান্য ক্লু বিশ্লেষণ করে ফাঁসকারীদের খুঁজছে পুলিশ। পাশাপাশি গোয়েন্দা সোর্সও ব্যবহার করা হচ্ছে।
কর্মকর্তাদের ধারণা, কমিশনারের ওপর ক্ষোভ থেকেই সিএমপির ভেতরের কেউ এটি করেছে।
সিএমপি কর্মকর্তাদের মতে, পুলিশের জন্য দেওয়া গোপন বার্তা বাইরে চলে যাওয়া নিরাপত্তার জন্য বড় ঝুঁকি। একই সঙ্গে এটি বাহিনীর ভাবমূর্তির জন্যও নেতিবাচক।
যদিও ভিডিও প্রকাশের পর মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা নির্দেশনায় উজ্জীবিত হয়েছেন। এই বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মাহমুদা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, “এটি আমাদের ইন্টারনাল একটি নির্দেশনা। এই বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না।”
তবে পুলিশ কমিশনারের ওয়্যারলেস বার্তাটিকে পজিটিভ হিসেবে নিয়েছে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি)। তাদের মতে, কমিশনারের এই নির্দেশ পুলিশের মনোবল চাঙ্গা করবে এবং মাঠে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের ভয়ভীতি দূর হবে।
পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, “কমিশনার স্যারের এই নির্দেশ মাঠে কাজ করা পুলিশকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। এখন আর গুলি চালাতে দ্বিধা থাকবে না।”
এর আগে গত সোমবার গভীর রাতে নগরের সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মিছিলে হামলার শিকার হন বন্দর থানার এসআই আবু সাঈদ রানা। গুরুতর আহত হওয়ার ওই ঘটনার পরই কমিশনার এই কঠোর নির্দেশ দেন।
১২০ দিন আগে
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের জামিন শুনানি পিছিয়েছে
গত বছরের জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুম হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের করা জামিন আবেদন ও মামলা বাতিলের শুনানি দুই মাস পিছিয়েছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আগামী ২৬ অক্টোবর নতুন শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে গত ১১ আগস্ট খায়রুল হকের আইনজীবীরা মামলা বাতিল ও জামিনের আবেদন শুনানির জন্য আদালতে দাঁড়ান। তখন রাষ্ট্রপক্ষ এক সপ্তাহ সময় চেয়ে আবেদন করলে দু’পক্ষের মধ্যে হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পরে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদন মঞ্জুর করে পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন।
খায়রুল হকের আইনজীবী মোনায়েম নবী শাহীন জানান, আমরা সময় চেয়ে আবেদন করেছি। আদালত এটি মঞ্জুর করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের ছুটি ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।
গত বছরের ১৮ জুলাই আব্দুল কাইয়ুম হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ২৪ জুলাই ঢাকার ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। একই দিনে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
১২০ দিন আগে
দেশে পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা হবে: প্রধান বিচারপতি
দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও বিচার ব্যবস্থার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি পৃথক বাণিজ্যিক আদালত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব ঘোষণা করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
রবিবার (১৭ আগস্ট) সকালে সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলে খসড়া বাণিজ্যিক আদালত গঠন বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারটির দ্বিতীয় সেশন বা মূল পর্ব শুরু হয় দুপুর সাড়ে ১২টায়।
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট ও জাতিসংঘের ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’র (ইউএনডিপি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত উক্ত সেমিনারের দ্বিতীয় সেশন বা মূল পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও বিচার ব্যবস্থার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি পৃথক বাণিজ্যিক আদালত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব ঘোষণা করে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কোনো পৃথক বিচারিক ফোরাম নেই।
তিনি বলেন, এখন কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যিক বিরোধগুলোকে ছোটখাটো দেওয়ানি মামলার সঙ্গে একই সারিতে নিষ্পত্তি করতে হওয়ায় দ্রুত, কার্যকর বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। এটি আমাদের বিচারকদের প্রতি কোনো সমালোচনা নয়। তাদের নিষ্ঠা প্রশ্নাতীত বরং এটি একটি কাঠামোগত অসংগতি। এর ফলে মামলার জট যেমন বাড়ছে, তেমনি ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও বিনিয়োগ পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত শুধু অর্থ ঋণ আদালতে প্রায় ২৫ হাজারেও বেশি মামলা অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি কারো একক কোন দাবি নয় বরং বাণিজ্যিক মামলাগুলো বিশেষায়িত আদালতে নির্দিষ্ট সময়সীমা ও কার্যকর রায়ের মধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়ার জন্য বৃহৎ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারী সবাই দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন সভা-সেমিনারে এই দাবি জানিয়ে আসছে।
তিনি বৈশ্বিক উদাহরণ তুলে ধরে বলেন রুয়ান্ডা, ভারত ও পাকিস্তানের মত দেশগুলো বাণিজ্যিক আদালত গড়ে তুলে একটি দক্ষ, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, এ সকল দেশের অভিজ্ঞতাগুলো বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা বহন করে।
পড়ুন: জামিন পেলেন সেই রিকশাচালক আজিজুর
প্রধান বিচারপতি প্রস্তাবিত বাণিজ্যিক আদালত ব্যবস্থার সাতটি মূল স্তম্ভের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো— স্পষ্ট ও একীভূত এখতিয়ার নির্ধারণ, আর্থিক সীমারেখা ও স্তরভিত্তিক কাঠামো, বাধ্যতামূলক কেস ম্যানেজমেন্ট ও কঠোর সময়সীমা, সমন্বিত মধ্যস্থতা ব্যবস্থা, প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার (যেমন, ই-ফাইলিং, ডিজিটাল ট্র্যাকিং, হাইব্রিড শুনানি), সবার জন্য ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার, এবং জবাবদিহি ও কর্মক্ষমতা পর্যবেক্ষণ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাণিজ্যিক আদালতের কার্যক্রম হবে পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর, জবাবদিহিমূলক এবং বাণিজ্যের পরিবর্তনশীল চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্রধান বিচারপতি আরও জানান, আদালত প্রতিষ্ঠার পর বিচারকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মিশ্র আইনব্যবস্থার (সিভিল ল ও কমন ল-এর সমন্বয়) সুফল কাজে লাগানো হবে এবং বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে। এটি আমাদের জন্য এক অনন্য সুযোগ। শুধু একটি নতুন আদালত গঠন নয়, বরং অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের জন্য এক নতুন ভিত্তি গড়ে তোলা। আজ আমরা সম্মিলিতভাবে সেই পথে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করছি।
সেমিনারটির দ্বিতীয় সেশন বা মূল পর্বে সূচনা বক্তব্য দেন সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান।
এই সেশনে আরও রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, ইউএনডিপি এর রেসিডেন্সিয়াল রিপ্রেজেনটেটিভ স্টিফান লিলার এবং সেমিনারটির সভাপতি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমেদ।
সেমিনারে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার।
উক্ত সেমিনারে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাবৃন্দের উপস্থিতির ব্যাপারে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের পরামর্শক্রমে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের প্রশিক্ষণ শাখা থেকে চলতি বছরের ১৩ আগস্ট এ সংক্রান্ত সরকারি আদেশ জারি হয়।
১২০ দিন আগে
জামিন পেলেন সেই রিকশাচালক আজিজুর
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ১৫ আগস্টে শ্রদ্ধা জানাতে গেলে হত্যা চেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে ঢাকার একটি আদালত জামিন দিয়েছেন।
রবিবার (১৭ আগস্ট) আজিজুরের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফারজানা ইয়াসমিন রাখির জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম। এর আগে শনিবার (১৬ আগস্ট) তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
গত ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে মারধরের শিকার হন আজিজুর। পরে তাকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ের একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, গত বছরের ৪ আগস্ট আন্দোলনের সময় মামলার বাদী আরিফুল ইসলাম নিউমার্কেট থেকে সায়েন্সল্যাবমুখী মিছিলে অংশ নেন। দুপুর আনুমানিক আড়াইটার দিকে আসামি (আজিজুর) গুলি চালান এবং পেট্রল বোমা ও হাতবোমা নিক্ষেপ করেন। একটি গুলি আরিফুলের পিঠে লাগে, ফলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই মাস চিকিৎসা নিয়ে তিনি সুস্থ হন।
পড়ুন: ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে রিকশাচালক আটক: ওসির কাছে ব্যাখ্যা তলব
গত ২ এপ্রিল আরিফুল বাদী হয়ে ওই ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।
এর আগে ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে গেলে গণপিটুনির শিকার হন রিকশাচালক আজিজুর রহমান। পরে তাকে ধানমন্ডি থানায় সোপর্দ করা হয়।
গতকাল (১৬ আগস্ট) ধানমন্ডি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান তাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
১২০ দিন আগে