আইনশৃঙ্খলা
হরতাল: সারা দেশে ২৩৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
আজ (১৯ নভেম্বর) সকাল থেকে বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার দেশব্যাপী হরতাল শুরু হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সারা দেশে ২৩৫ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) শরিফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আজ ৪৮ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিনে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোতে ২৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজিবি’র এই কর্মকর্তা বলেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সীমান্ত বাহিনীর বাকি ২০৭ প্লাটুন সারা দেশে মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াতের হরতাল: সারা দেশে র্যাবের ৪৬০ টহল দল মোতায়েন
গত মাসের শেষ দিক থেকে বিরোধী দলগুলো অবরোধ ও হরতাল পালন শুরু করার পর থেকে আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি, জামায়াতসহ সমমনা বিরোধী দলগুলো দেশব্যাপী সর্বশেষ ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে।
আরও পড়ুন: নাটোরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে দুর্বৃত্তের আগুন
বিএনপি ও অন্যান্যদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল চলছে
বিএনপি-জামায়াতের হরতাল: সারা দেশে র্যাবের ৪৬০ টহল দল মোতায়েন
ঢাকা, ১৯ নভেম্বর (ইউএনবি)- বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালকে সামনে রেখে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ৪৬০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
র্যাব সদর দপ্তরের (মিডিয়া উইং) সহকারী পুলিশ সুপার ইমরান খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রবিবার (১৯ নভেম্বর) ৪৮ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিনে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঢাকায় র্যাবের ১৬০টি টিম মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি ও অন্যান্যদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল চলছে
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, র্যাবের বাকি ৩০০ টহল দল অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি সারা দেশে মোতায়েন করা হয়েছে।
গত মাসের শেষ দিক থেকে বিরোধী দলগুলো অবরোধ ও হরতাল পালন শুরু করার পর থেকে এলিট ফোর্সের সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিএনপি, জামায়াতসহ সমমনা বিরোধী দলগুলো দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেয়।
হরতালকে সামনে রেখে শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাত থেকে আজ রবিবার সকাল পর্যন্ত দুর্বৃত্তরা একটি কমিউটার ট্রেনসহ অন্তত ৯টি যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টা হরতালের আগের রাতে ঢাকার গুলিস্তানে বাসে আগুন
হবিগঞ্জে বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশের হাতে দুই সাংবাদিক লাঞ্ছিত
হবিগঞ্জে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দুই সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা বিএনপির একটি মশাল মিছিলে ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগী বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি জাকারিয়া চৌধুরী ও এস এ টিভির প্রতিনিধি আব্দর রউফ সেলিম।
জানা যায়, শনিবার বিএনপির একটি মশাল মিছিল বের করে। এ সময় খবর সংগ্রহ করতে শহরের পোদ্দার বাড়ি এলাকায় যান কয়েকজন সাংবাদিক।
তারা মিছিলের ছবি ও ফুটেজ তোলার সময় ডিবির এক সদস্য তাদের চ্যালেঞ্জ করেন। এ সময় তারা পরিচয় দিলেও তাদেরকে লাটিপেটা ও অকথ্য গালিগালাজ করে গোয়েন্দা অফিসে নিয়ে যান।
আরও পড়ুন: ১০৩ বার পেছালো সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন
আটকরা দাবি করেন, পরিচয় দেওয়া সত্বেও সাদা পোশাকধারী উপপরিদর্শক (এসআই) রিয়াজ এর নেতৃত্বে দেন থাকা পুলিশ সদস্যরা মারমুখী ছিল।
হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলির জানান, বিষয়টি ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে।
ডিবিকে ওই দুই সাংবাদিক ভালভাবে পরিচয় দেননি। তাদেরকে অবিলম্বে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেছি।
প্রেসক্লাবে বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠক করছেন সাংবাদিকরা।
আরও পড়ুন: করোনা টিকা নিয়ে ৩২ মাস ধরে অসুস্থ সাংবাদিক বিষ্ণু প্রসাদ
নাশকতার অভিযোগে গত ২২ দিনে প্রায় ৫০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব
দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতা ও সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার (১৮ নভেম্বর) বিএনপির নেতা-কর্মীসহ ৮জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব সদর দপ্তরের মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ইমরান খান জানান, গত ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত সহিংসতা ও নাশকতার সঙ্গে জড়িত মোট ৪৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার ঘটনায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে পুকুরপাড় থেকে ১৬টি ককটেল উদ্ধার
গত ১৮ নভেম্বর কক্সবাজারে অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আবু তালেব মাসুম, নারায়ণগঞ্জ জেলা জিয়ামঞ্চের সভাপতি জজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ঢাকার কদমতলী এলাকা থেকে ৬১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নুরনবী পাশা সবুজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দলগুলোকে সহনশীল হওয়ার আহ্বান প্রধান বিচারপতির
রাজনৈতিক দলগুলোকে সহনশীল হওয়ার আহ্বান প্রধান বিচারপতির
রাজনৈতিক দলগুলোকে সহনশীল হওয়ার আহ্বান প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু প্রতিটি রাজনৈতিক দলের একে-অপরের প্রতি সহনশীল হতে হবে। অন্যথায় একটি সুন্দর সমাজ গঠন করা যাবে না।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘মানবাধিকার সুরক্ষায় প্যানেল আইনজীবীদের ভূমিকা’- শীর্ষক কর্মশালার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজনীতির মাঠে সম্প্রতি ঘটনাগুলো মানবাধিকারের লঙ্ঘন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্প্রতি কিছু ঘটনা ঘটেছে, সেখানে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের মানবাধিকার রয়েছে। তেমনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশেরও মানবাধিকার রয়েছে। রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের উপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করলে যেমন মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, তেমনি পুলিশের ওপরও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করলে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, মানবাধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব আইনজীবীদের। লিগ্যাল এইডের মতো মানবাধিকার প্যানেল আইনজীবীদের কাজ করতে হবে। মামলার এজাহারে আসামির নাম বিকৃত করে উপস্থাপন করাও মানবাধিকার লঙ্ঘন।
আদালতের অনুমতি নিয়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরানোর অনুমতি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু ভয়ংকর আসামিদের আদালতের অনুমতি নিয়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো যাবে। একটা রায়ে আমরা এটা বলে দিয়েছি। কারণ, ডাণ্ডাবেড়ি পরানো না থাকার কারণে কিছুদিন আগে ঢাকার আদালত থেকে আসামিরা পালিয়েছে।
কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, পরিচালক কাজী আরফান আশিক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার ব্যারিস্টার সাইফুর রহমান প্রমুখ।
সারা দেশ থেকে আসা ২৫০ জন প্যানেল আইনজীবী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
বেনাপোলে পুকুরপাড় থেকে ১৬টি ককটেল উদ্ধার
বেনাপোলের বালুন্ডা গ্রাম থেকে ১৬টি ককটেল উদ্ধার করেছে পোর্ট থানার পুলিশ।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে ওই গ্রামের একটি পুকুরপাড় থেকে ককটেলগুলো উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বালুন্ডা গ্রামের একটি পুকুরপাড়ে অভিযান চালিয়ে ১৬টি ককটেল করা হয়েছে। ককটেলগুলো লাল কস্টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, বালুন্ডা গ্রাম থেকে ১৬টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। ককটেলগুলো নাশকতাও কাজে ব্যবহার করার জন্য সেখানে মজুদ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: রাজশাহী রেল স্টেশনে ককটেল, আতঙ্কিত যাত্রীরা
যশোরে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত ১, আহত ২
গাইবান্ধায় ৮টি ককটেল ও ৬টি পেট্রলবোমা উদ্ধার
হক গ্রুপের চেয়ারম্যান আদম তমিজির বাসায় র্যাবের অভিযান
রাজধানীর গুলশানের ১ নম্বর রোডে হক গ্রুপের চেয়ারম্যান আদম তমিজি হকের বাসায় অভিযান চালিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
অভিযানে অংশ নেয়া নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, তমিজি হক গ্রেপ্তার হলে আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে তমিজি হকের বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাব-১ এর একটি দল। মধ্যরাতের পর পর্যন্ত চলে এই অভিযান।
আরও পড়ুন: ১০৩ বার পেছালো সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, তমিজি হককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: সরকার নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবে না, রুটিন কাজ করবে: আইনমন্ত্রী
যশোরে সোনা চোরাচালান মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
যশোরের শার্শা সীমান্ত থেকে বহুল আলোচিত ৭২ কেজি সোনা উদ্ধারের মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ভারতীয় দুই নাগরিকের যাবজ্জীবন এবং চারজনকে ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ২টায় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- যশোরের শার্শার শিকারপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার তোফাজ্জেল হোসেন তরফদারের ছেলে মহিউদ্দিন তরফদার, জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম এবং নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মুজিবুর রহমান।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- ভারতীয় নাগরিক ভারতের গোকর্ন গ্রামের মাঝের পাড়ার আলী হোসেন সরদারের ছেলে মাসুদ রানা এবং ২৪ পরগনা জেলার বাগদা থানার গাংগুলিয়া গ্রামের নুর জালাল মণ্ডল।
২০ বছর সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- শার্শার আব্দুল মোমিনের ছেলে ইমরান হোসেন, আব্দুল কাদেরের ছেলে রুবেল হোসেন, রামচন্দ্রপুর গ্রামের নওসাদ আলীর ছেলে কবির হোসেন ও ওরফে মেছের আলীর ছেলে এবং যশোরের শার্শার কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল মণ্ডল ওরফে মোল্যা ওরফে লিদু।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: যশোরে ছুরিকাঘাতে দোকান কর্মচারীকে খুন, ২ যুবক আটক
মামলার বিবরণে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট রাতে নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের সীমান্ত পিলারের পাশে অবস্থান নেয় বিজিবি। রাত ১০টার দিকে কয়েকজন লোক নারিকেলবাড়িয়া মাঠের মধ্য দিয়ে ভারতের দিকে যাওয়ার সময় তাদের চ্যালেঞ্জ করে। এ সময় মহিউদ্দিন নামে একজনকে আটক এবং দুইজন ব্যাগ ফেলে পালিয়ে যায়। মহিউদ্দিনের কাছে থাকা ব্যাগ থেকে ২২৪টি সোনার বার এবং ফেলে যাওয়া দুইটি ব্যাগ থেকে ৪০০টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ৭২ কেজি সাড়ে চারশ’ গ্রাম।
পরদিন শিকারপুর বিওপির বিজিবির হাবিলদার মুকুল হোসেন বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের আসামি করে চোরাচালান দমন আইনে শার্শা থানায় মামলা করেন।
মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ পরে সিআইডি পুলিশ তদন্তের দায়িত্ব পায়। মামলার তদন্তকালে গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকায় ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার আদালত তার রায়ে মহিউদ্দিন তরফদার শান্তি, জাহিদুল ইসলাম ও মুজিবুর রহমানকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা; ভারতীয় নাগরিক মাসুদ রানা ও শফিকুল মণ্ডলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং সাফি, ইমরান হোসেন, কবির হোসেন ও রুবেল হোসেনকে ২০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের এপিপি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, যশোর অঞ্চলের এই যাবৎ সবচেয়ে বড় সোনা চালানের মামলায় দৃষ্টান্তমূলক রায় হয়েছে। এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।
অন্যদিকে, রায়ের খবরে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের স্বজনেরা রায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, এই রায়ে তারা অসন্তুষ্ট। তারা উচ্চ আদালতে যাবেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আরিফুল ইসলাম শান্তি বলেন, সরকার যে দ্রুত বিচার ব্যবস্থা কার্যকর করেছে, এতে বিচারকরা সঠিকভাবে মামলা তদন্ত করতে পারছে না। ফলে আসামিপক্ষ প্রকৃত রায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা এই রায়ের বিপক্ষে আপিল করব।
আরও পড়ুন: যশোরে ১৬৫ রাউন্ড গুলি-অস্ত্র-মাদক জব্দ, গ্রেপ্তার ২
যশোরে ট্রাকচাপায় এনজিও কর্মকর্তা নিহত
সরকার নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবে না, রুটিন কাজ করবে: আইনমন্ত্রী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বর্তমান সরকার রুটিন কাজ চালিয়ে যাবে, কোনো নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবে না বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।
আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে গতকাল বুধবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
আইনমন্ত্রী বলেন, 'যেহেতু গতকাল তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী কাজ-কর্ম নির্বাচন কমিশন দায়িত্বশীলভাবে করবে। নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী কাজে যেসব সরকারি বিভাগ, সংস্থা বা অফিস তাদের প্রয়োজন হবে এবং নির্বাচনকে প্রভাবিত করবে না সেই সব কাজ করবে বর্তমান সরকার। এ সরকার রুটিন কাজগুলো করে যাবে। এটাই গণতন্ত্রের মূল বক্তব্য যখন নির্বাচন আসে।'
তিনি আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এখন থেকে রুটিন কাজ করে যাবে। পলিসি ডিসিশন (নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত) নেওয়া হবে না, কারণ একটা নির্বাচন আছে। জনগণের কাছে আমাদের ম্যান্ডেট দেব। পলিসি ডিসিশন হবে না নির্বাচন পর্যন্ত রুটিন কাজ করে যাবেন।'
আরও পড়ুন: যা কিছু হবে সংবিধান ও আইনের মধ্যেই হতে হবে: আইনমন্ত্রী
সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘ব্যাপারটা হচ্ছে গণতন্ত্রকে সঠিকভাবে চালিত করার জন্য নির্বাচনকালীন যে সরকার থাকে তারা পলিসি ডিসিশন নেয় না, যাতে একটা লেভেল প্লেইং ফিল্ড থাকে। তারা এমন কিছু করে না, যেটাতে সরকারকে জনগণ ভোট দেওয়ার জন্য, আকৃষ্ট করার জন্য কিছু করছে, এরকম একটা ব্যাপার হয়।'
আইনমন্ত্রী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। ঠিক গণতান্ত্রিক উপায়ে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসিতে শিডিউল ঘোষণার পর যেভাবে সরকার চালিত হবে, ঠিক সেভাবেই হবে'
এই মন্ত্রিসভায় টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীরা থাকবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সেই সিদ্ধান্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর।'
এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, 'আইন তো হবেই না, কারণ সংসদ বসবে না। কিন্তু এমন কথা আমি বলতে পারি না... এটা একটা স্বাধীন দেশ। যদি প্রয়োজন হয় অর্থাৎ অধ্যাদেশ দিয়ে আইন জারি করতে হবে কোনো বিশেষ প্রয়োজনে, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কোনো পরিস্থিতিতে। আইন হবে না এমন কথা তো আমি বলতে পারি না।'
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক: জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলকে আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন,'রুটিন কাজ হচ্ছে গতানুগতিক অফিস চলার জন্য যে কাজ সেগুলো। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার বেতন পাওয়ার বিষয়, দৈনন্দিন কার্যক্রম- এসব কাজ বর্তমান সরকার করবে। উন্নয়ন কাজ যেগুলো আছে সেগুলো চলবে। নতুন করে কোনো উন্নয়ন কাজ শুরু হবে না। নতুন করে কোনো প্রজেক্টও নেওয়া হবে না।'
কর্মকর্তাদের বদলি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, 'সেটা নির্বাচন কমিশন নেবে কি না সেটাও নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। সেটা আমি বলে দিতে পারব না।'
আনিসুল হক বলেন, 'পুলিশের ব্যাপারে যদি নির্বাচন কমিশনের কোনো বক্তব্য থাকে। সেটা নির্বাচন কমিশন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাবে। নির্বাচন কমিশন যেটা বলছে, সেটা যদি যৌক্তিক হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেটার ব্যবস্থা নেবে।'
পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়ে ইসির এখতিয়ার প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, 'আইনের আওতায় বলতে হবে সবকিছুই।'
আরও পড়ুন: বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি অসাংবিধানিক, বেআইনি: জাতিসংঘকে আইনমন্ত্রী
ডিজিটাল আইনে গ্রেপ্তার জবি শিক্ষার্থী খাদিজার জামিন
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কোবরাকে জামিন দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। আদালতে খাদিজার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি ও ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।
আজকের এই আদেশের ফলে খাদিজার মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানান তার আইনজীবী।
আরও পড়ুন: জবি শিক্ষার্থী খাদিজার জামিন ৪ মাসের জন্য স্থগিত
অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজাতুল কোবরা এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ।
মামলার পর নিউমার্কেট থানার মামলায় পরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ২৫ মিনিটের সময় মোবাইলফোনে মেজর (অব.) দেলোয়ারের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও দেখতে পান। ‘হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামের ভিডিওর সঞ্চালক খাদিজাতুল কোবরার উপস্থাপনায় দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বৈধ গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। মামলাটি রেকর্ড করা হয় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে। মামলার এজাহারের সঙ্গে তিন পাতার স্ক্রিনশট ও ভিডিও–সম্বলিত সিডি সংযুক্ত করা হয়।
এ মামলায় গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর থেকেই তিনি কারাগারে আছেন।
একপর্যায়ে দুই মামলায় বিচারিক আদালতে কয়েক দফায় খাদিজার জামিন আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি খাদিজাতুল কুবরাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। তবে পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। চেম্বার আদালতের দেওয়া জামিন স্থগিতের আদেশ বাতিল চেয়ে খাদিজার করা আবেদনের শুনানি চার মাসের জন্য স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রাখার আদেশ দেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতির হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগ। অবশেষে চার মাস পর আজ বৃহস্পতিবার খাদিজাকে জামিন দিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ।
আরও পড়ুন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজার মুক্তির দাবিতে ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ